গল্প:#নেট_দুনিয়ার_কিং লেখক:#মোঃ_শাহরিয়ার_ইফতেখায়রুল_হক_সরকার পর্বঃ ৯ এবং শেষ

 

গল্প:#নেট_দুনিয়ার_কিং

লেখক:#মোঃ_শাহরিয়ার_ইফতেখায়রুল_হক_সরকার

পর্বঃ ৯ এবং শেষ 


___ সরি শব্দটা কানে যেতেই শান্তার বুকে 


কম্পনের আবির্ভাব শুরু হয়ে গেলো?কেনো যানি


শান্তার পা থরথর করে কাপছে।এবং শান্তা তার 


বাবার দিকে কান্না ভেজা চোখে তাকালে শান্তার


বাবা দ্রুত ডাক্তারের কলার চেপে ধরে 


ধমক দিয়ে বলল.........


শান্তার বাবাঃ সরি মানে...........


ডাক্তারঃ ওহ মাই গড?আগে আমার পুরো কথাটা


তো শুনুন।


শান্তার বাবাঃ আমি কিছু শুনতে চাইনা শুধু এটা


আমাকে বলুন।শাহরিয়ার ঠিক আছে তো?


ডাক্তারঃ হ্যা সে ঠিক আছে?


শান্তার বাবাঃ তাহলে প্রথমে সরি কেনো বললেন?


ডাক্তারঃ আমরা অনেক চেষ্টা করছি কিন্তু তার


মুখটা সম্পূর্ন আগের মতো করতে পারিনি।


তার কারন তাকে যদি আরো আগে আমাদের 


কাছে আনা হতো তাহলে নিশ্চয়ই সম্পূর্ন ঠিক 


হওয়ার চান্জ ছিলো এখন মোটামোটি তার চেহারা


ঠিক হয়েছে বলে আশা করা যায়। আর মাত্র 


কয়েক ঘন্টা পর তার মুখ থেকে বেন্টিজ খুলে


ফেলা হবে তাই প্লিজ ধর্য সহকারে ততক্ষন পর্যন্ত


অপেক্ষা করুন।


___ কথাগুলো বলেই ডাক্তার চলে যাওয়ার সাথে 


সাথে শান্তা তার বাবা কে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে 


লাগলে?শান্তার বাবা শান্তার মাথায় হাত বুলিয়ে 


দিতে দিতে বলল.........


শান্তার বাবাঃ কিরে মা?ডাক্তারের কথা কি শুনতে 


পাশনি শাহরিয়ার তো ঠিক আছে তারপরেও 


কেনো কাঁদছিস?


শান্তাঃ জানো বাবা ডাক্তারের সরি শব্দটা শুনে


আমি প্রচুর ভয় পেয়ে গেছিলাম? তখন আমার 


নিশ্বাসটাও কেনো জানি নিতে কষ্ট হয়েছিলো।


হাজারো কষ্টের মধ্যে একটা কথাই মনে আসছিলো


আমি কি সত্যিই শাহরিয়ার কে চিরতরে হারিয়ে 


ফেলবো?যদি সত্যিই শাহরিয়ারের কিছু হয়ে 


যেতো তাহলে আমি নিজেকে কখনো ক্ষমা নামক


জিনিসটা করতে পারতাম না(কাঁদতে কাঁদতে)


শান্তার বাবাঃ আরেহ মা এখন আর কাদিস না?


সব কিছু ঠিক আছে তো?


শান্তিঃ হুম?


___অবশেষে শাহরিয়ারের মুখের ব্যান্টিজ খোলার 


সময় হয়ে গেছে। শান্তার পরিবারের সবাই গভির 


আগ্রহে শাহরিয়ার কে দেখার জন্য বসে আছে।


ডাক্তার আস্তে আস্তে করে এক সময় সম্পূর্ন


ব্যান্টিজ খুলে ফেললে সবাই শাহরিয়ারের দিকে 


তাকিয়ে দেখলো শাহরিয়ারের মুখটি আগের চেয়ে 


বেশ স্বাভাবিক হয়ে গেছে যা দেখে সবার মনেই 


আনন্দের ছাপ ফুটে উঠেছে। 


___ নিজেকে আর ধরে রাখতে না পেরে শাহরিয়ার 


কে নিজের বুকে সাথে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে শান্তা।


যা দেখে সবাই মুচকি হেসে লজ্জায় সেখান 


থেকে চলে যায়। 


___ শান্তা এখনো শাহরিয়ার কে বেশ শক্ত করে 


জড়িয়ে ধরে বসে আছে এবং মাঝে মধ্যে বারবার


শাহরিয়ারের কপালে মিষ্টি ঠোঁটের স্পর্স বসিয়ে 


দিচ্ছে?


___ হঠাৎ করেই শান্তার এমন পাগলের মতো 


আচারন কেনো যানি শাহরিয়ার মেনে নিতে পারছে


না।খুব অসুস্থিও লাগছে তার এবং একটু ধমকের 


সুরেই শাহরিয়ার বলল........


শাহরিয়ারঃ আহা কি করছো এসব? ছাড়ো আমাকে


শান্তিঃ চুপচাপ মুখ থেকে কোনো কথা বের করা


ছাড়া বসে থাকো?


শাহরিয়ারঃ বসে তো থাকতাম কিন্তু আমার যে 


ওয়াস রুমে যেতে হবে?কিন্তু আমার শরীরটা 


বেশ দুর্বল দুর্বল লাগছে আমাকে একটু ওয়াস 


রুম পর্যন্ত নিয়ে যাবে?


শান্তাঃ তুমি না বললেও আমি তোমাকে ঠিকি 


নিয়ে যেতাম?এখন চলো।


___ অতএব শাহরিয়ার শান্তাকে ধরে ধরে ওয়াস 


রুমের সামনে পর্যন্ত এসে হঠাৎ করেই থেমে যায়। 


এবং ডানপাশে থাকা আয়নায় নিজের মুখটি 


বারবার দেখে বলল........


শাহরিয়ারঃ শান্তা,শান্তা, এই যে দেখো আমার 


চেহারাটা তো আগের চেয়ে বেশ স্বাভাবিক হয়ে 


গেছে। উফফফ শান্তা শান্তা আজ আমি বেশ খুশি।


____বেশ কয়েকটা দিন শাহরিয়ারের এখানে


 কেটে গেলো হঠাৎ 


একদিন তার ফোনে একটা অনান্য নাম্বার দিয়ে 


একটা কল আসে শাহরিয়ার সেই কলটা রিসিব 


করে সেই চেনা পরিচিত কান্না জড়িত একটি কণ্ঠ


শুনতে পেলো এবং তার এটা বুঝতে বেশ দেড়ি


হলো না যে এটা তার নিজের মায়ের গলা?


শাহরিয়ারের আম্মুঃ হ্যারে বাবা আমরা তোর সাথে 


অনেক বড় অন্যায় কাজ করে ফেলছি রে..


ভুল বুঝে তোকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলাম।


প্লিজ বাবা আমাদের তুই পারলে ক্ষমা করে দিস।


আর সবচেয়ে বড় কথা ফারিয়া পৃথিবীতে আর 


কয়েকটা দিনের অতিথি মাত্র? সে মরন ব্যাধি ব্রেন 


ক্যান্সারে আক্রান্ত? তাই মৃত্যুর আগে তোকে কিছু 


শেষ কথা বলে যেতে চায় প্লিজ বাবা তুই আর রাগ 


অভিমান করিস না ফিরে আয় আমাদের কাছে? 


____ নিজের মায়ের কান্নার কন্ঠটা শুনে শাহরিয়ার 


ও কেঁদে ওঠে এবং কান্না জড়িত কন্ঠে হ্যা সূচক


উত্তর দেয় অর্থাৎ সে আসবে?


___ অতএব শাহরিয়ার শান্তাকে সব কিছু খুলে


বলার পর আজকেই দেশে যাওয়ার ফ্লাইটে উঠে 


তারা এবং তারপরের দিন ভোর বেলা বাংলাদেশ


পৌঁছে ঢাকার একটা হাসপাতালের উদ্দেশ্যে যাচ্ছে 


তারা।হাসপাতালে যাওয়ার প্রধান কারন 


শাহরিয়ারের পরিবারের সবাই এখন হাসপাতালে 


ফারিয়ার কেবিনে রয়েছেন।


অবশেষে শাহরিয়ার হাসপাতালে গিয়ে ফারিয়ার


কেবিনে প্রবেশ করার সাথে সাথে তার বাবা মা


তাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে।


তার সাথে বাকি সদস্যের চোখের কোনের অশ্রু ও


জড়ছে।শাহরিয়ার কোনো মতে সবাই কে 


বহু কষ্টের সম্মুখীন হয়ে শান্ত করে শান্তার সাথে 


সবাই কে পরিচয় করিয়ে দিয়ে এক পা দুপা করে


দীড়ে দীড়ে ফারিয়ার সামনে গিয়ে 


দেখলো মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগানো এবং 


ফারিয়ার এমন করুন অবস্থা 


দেখে শাহরিয়ার বুঝতে পারলো ফারিয়ার অবস্থা 


তেমন একটা ভালো না।ফারিয়া কে দেখে


শাহরিয়ারের প্রচুর রাগ হচ্ছে এবং আবার কেনো 


যানি ফারিয়ার এমন অবস্থা দেখে বেশ মায়া ও 


হচ্ছে তার।


___ সেই চিরচেনা পারফিউম এর মিষ্টি সুগন্ধ পেয়ে 


চোখের পাতা মেলে শাহরিয়ার কে দেখতে পেয়ে 


চোখের কোনের অশ্রুর সব বাধ ভেঙ্গে দিয়ে 


আস্তে আস্তে অক্সিজেন মাস্ক টা খুলে ফ্যাস ফ্যাস 


গলায় বলল.........


ফারিয়াঃ ভাইরে........ বেশির ভাগ মানুষ সেটার 


প্রতিই আকৃষ্ট হয় যেটা তার জন্য নিষিদ্ধ হ্যা 


বেশির ভাগ মানুষ নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতিই বেশির 


ভাগ আকৃষ্ট হয়ে থাকে।আমি অনেক চেষ্টা 


করেছিলাম নেট দুনিয়ার নিষিদ্ধ কালো আধারে 


ডাকা জগত থেকে বের হওয়ার জন্য কিন্তু পারলাম


নারে...যতই চেষ্টা করি ততোই বারবার আমার


এই বেহাইয়া মনটা সেগুলোর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে 


যায়।একদিন আমি গভির সিদ্ধান্তে অটল হয়ে


যাই যে আমি সেগুলো থেকে বের হবোই কিন্তু 


নিষিদ্ধ জগতের কালো ছায়াটা আমাকে বের হতে 


দিলো না?নিজের যৌবন শান্তির জন্য তোর 


প্রতি এক সময় আকৃষ্ট হয়ে পড়ি এবং যার কারনে


তোকে আমি সেদিন আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক


করার প্রস্তাব দিয়ে ছিলাম এবং তুই যখন প্রত্যাখান


করে ছিলি তখন রাগের বসে তোকে মিথ্যা অপবাদে


ফাসিয়ে দিয় এবং তাতেও যখন আমার শান্তি


হচ্ছিলো না তখন তোর ওই সুন্দর চেহারাটা নষ্ট 


করার জন্য পরবর্তী সময়ে আমি তোকে এসিড 


নিক্ষেপ করি।আমি খুব বড় পাপী রে, নেট দুনিয়ার 


কালো জগতে মগ্ন হয়ে ভুলেই গেছিলাম একদিন 


সবাই কে নিজের সব কু কর্মের হিসেব দিতে হবে 


সৃষ্টি কর্তার কাছে।আমার কোনো ক্ষমা হয়না রে


আমি বড় পাপী।তোর সাথে মস্ত বড় অন্যায়


করারা জন্য হয়তো আমার এ অবস্থা? আমি জানি 


আমার কোনো ক্ষমা হয়না তারপরেও আমি তোর


কাছে ক্ষমা নামক জিনিসটা চাইছি....... 


পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিস....রে.....ভাই........


____ কথাগুলো বলার পরপরি ফারিয়া জোড়ে


 জোরে শ্বাস নিতে থাকে আর এক সময় তার 


নিশ্বাস নেওয়াটা চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়। ঘুমিয়ে পড়ে


চিরোদিনের জন্য যে ঘুম আর কখনো ভাঙ্গার নয়।


সেদিন শাহরিয়ার কিছুই বলতে পারেনি নিরবে 


কয়েক ফোটা চোখের জল ফেলা ছাড়া।


সত্যিই কি শাহরিয়ার ফারিয়া কে ক্ষমা করতে 


পারবে না পারবে না সেটা সে নিজেই ঠিক ভালো 


করে যানে না।


____ প্রায় ছয়টা বছর পার হয়ে গেছে এখন 


শাহরিয়ারের পাঁচ বছরের একটা ফুটফুটে কিউট


একটা মেয়ে ও রয়েছে।


___ সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠে শাহরিয়ার ওয়াস


রুমে ফ্রেস হওয়ার জন্য যাওয়ার চেষ্টা করছে


কিন্তু পারছে না তার কারন নেট দুনিয়ার কালো 


জগতে আসক্ত কিছু বাজে ব্যাক্তিরা পরিকল্পনা 


করে শাহরিয়ারকে একা পেয়ে তার পা দুটো ড্যামেজ 


করে দেয় অর্থাৎ শাহরিয়ার আর কোনো দিন 


নিজের পায়ে দাড়াতে পারবে না।এতে শাহরিয়ারের 


কোনো আফসোস নেই কারন ভালো মানুষের 


শত্রু থাকে এটা স্বাভাবিক ব্যাপার এবং শাহরিয়ার 


আল্লাহর কাছে সব সময় প্রার্থনা করে হাত দুটো বিপদ


মুক্ত রাখার জন্য। কারন এই হাত দিয়ে শাহরিয়ার 


এখনো লড়ে যাচ্ছে কালো দুনিয়া ধংস করে আলোর 


প্রতিফলন করার জন্য। 


____ রুমে এসে শাহরিয়ার কে বারবার বিছানা 


থেকে নামার চেষ্টা করতে দেখলে শান্তা শাহরিয়ার 


কে ধমক দিয়ে বলল......


শান্তাঃ তোমাকে কত বার বলেছি কখনো নিজে


নিজে কোথাও যাওয়ার চেষ্টা করবে না।


শাহরিয়ারঃ না মানে তোমাকে কত দিক সামলাতে


হয়।তাই তোমাকে আর ডাকতে চাইনি?


শান্তাঃ চুপ আমার কাছে সব কিছুর চেয়ে আমার 


শামীর কদর বেশি বুঝতে পারছো?


শাহরিয়ারঃ তোমার মতো মেয়ে জীবন সঙ্গী হিসেবে 


পেয়ে আমি সত্যিই নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি?


_____ এভাবেই খুব সুখেই কাটতে লাগলো তাদের


সুন্দর সাজানো গুছানো মিষ্টি সংসার.............. 


_______________ সমাপ্ত_________________


প্লিজ কেউ কোনো রকম বাজে কমেন্ট করবেন না


এই গল্পের লেখক মোঃ শাহরিয়ার ইফতেখায়রুল 

হক সরকার অর্থাৎ আমি।আমার নাম ছাড়া এই

গল্প যেখানে দেখবেন মনে করবেন কপিবাজ আর

কপিবাজ কে সবাই উপহার হিসেবে নিশ্চয়ই 

রিপোর্ট মারবেন🙂


          ভুল ক্রটি ক্ষমার চোখে দেখবেন 



Post a Comment (0)
Previous Post Next Post