গল্পঃ অবহেলায় ভালোবাসা পর্বঃ ২ | Obohelay Valobasha Part 2

 
গল্পঃ অবহেলায় ভালোবাসা পর্বঃ ২ | Obohelay Valobasha Part 2

#অবহেলায়_ভালোবাসা
#লেখকঃRabi_Al_Islam
#পর্বঃ২
মেঘা আয়ানকে বলল, আমি আপনার ভাইয়ের সাথে কথা বলেছি বলে রবি আপনার ভাইকে মেরেছে

আমি থামানোর অনেক চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু রবি আমার কোনো কথা শুনেনি। ও লাঠি দিয়ে রিয়ানের মাথায় আঘাত করেছে। আর বার বার আপনার কথা বলছিলো

ও রিয়ানকে মারছিলো আর বলছিলো, ডাক তোর ভাইকে। আমি কাউকে ভয় পাইনা। পরে রবির বন্ধুরা ওকে এখান থেকে নিয়ে গেছে

আয়ান খুবই রেগে আছে। ও রবিকে হাতের কাছে পেলে খুন করে ফেলবে। ওর ভাইকে রবি মেরেছে। এর শাস্তি তো রবিকে পেতে হবে।

এর ভিতরে প্রিন্সিপ্যাল চলে এসেছে। সে এসে আয়ানকে বলল, আমি সব শুনেছি। আমি অবশ্যই রবিকে এর জন্য শাস্তি দেবো। কলেজটাকে ওরা কি পেয়েছে। যখন যা ইচ্ছা তাই করবে

আয়ান প্রিন্সিপ্যালকে বলল, আপনার কিছু করতে হবেনা। আমার ব্যাপার আমি দেখে নিবো। ওকে এর জন্য কড়া মূল্য দিতে হবে। ওর সাহস কত বড় আমার ভাইকে মারে

- এরকমটা করলে কলেজের পরিবেশ নষ্ট হবে। আমাদের কলেজের মান- সম্মান নষ্ট হয়ে যাবে। এরকম করলে স্টুডেন্টরা সবাই কি ভাববে?  তখন কেও আর কলেজে লেখাপড়ার জন্য আসবেনা

- রবি যখন সবার সামনে আমার ভাইকে মেরেছে তখন কি কলেজের মান- সম্মান নষ্ট হয়নি? তখন কি কলেজের স্টুডেন্টরা তা দেখেনি? 

- মানছি আমি যা হয়েছে তা খুবই খারাপ হয়েছে। তুমি তো সবকিছু বুঝো। তারপরও যদি এমন করো তাহলে কিভাবে হবে বলো। আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি আমি অবশ্যই রবিকে শাস্তি দিবো

- রবি আমার ভাইকে মেরেছে আর আমাকে ওকে ছেড়ে দিতে বলছেন। আমি রবিকে ছেড়ে দিলে কলেজে আমার মান- সম্মানের কি হবে?  রবি সবার সামনে আমার ভাইকে মেরেছে আমিও সবার সামনে ওকে মারবো। আপনার রবিকে কোনো শাস্তি দিতে হবেনা। যা করার আমিই করবো

- বুঝার চেষ্টা করো এরকমটা করলে কলেজের ভাব- মূর্তি নষ্ট হবে।

এর ভিতরে কলেজের ভিপি আবির চলে এসেছে। আবিরকে দেখে প্রিন্সিপ্যাল বলল, ভালো হয়েছে তুমি এসেছো। তুমি আয়ানকে বোঝাও। ও যা করতে চলেছে তাতে কলেজের সম্মান নষ্ট হয়ে যাবে 

- দোস্ত রবি আমার ভাইকে সবার সামনে মেরেছে। আমরা কি ওকে ছেড়ে দিবো। ওই মেহেদীর ইশারায় ও এসব করেছে। এখনই যদি ওদের কিছু না করি তাহলে সামনে ওরা আমাদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে

- আমরা ওদেরকে ছেড়ে দিবো না। কিন্তু কলেজ ক্যাম্পাসে কিছু করবো না। কলেজের প্রতি আমাদের যে দায়িত্ব তা পালন করতে হবে। আমি শুনেছি সব। যা করার প্লান করে করতে হবে। রবিকে হালকাভাবে নিলে হবেনা

আবির প্রিন্সিপ্যালকে বলল, স্যার আপনি নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন। কলেজের সম্মান নষ্ট হয় এমন কোনো কাজ আমরা করবো না। আর স্টুডেন্টরা যে যার ক্লাসে যাও

মেঘাকে ওর বান্ধুবিরা বলল, তুই কি পাগল হয়ে গেছিস? যেখানে কলেজের কেও রবির কথা বলল না সেখানে তুই কেনো বলতে গেলি?  এখন যদি রবির বন্ধুরা তোর কোনে ক্ষতি করে?

- কেও কিছু করবে না আমার। আমি রবিকে এত সহজে ছেড়ে দিবো না। ও আমার সামনে রিয়ানকে মেরেছে আমিও ওকে মার খেতে দেখতে চাই। তবেই আমি শান্তি পাবো

- তুই পাগল হয়ে গেছিস। তুই রবিকে চিনিস না। ও খুবই ভয়ংকর

- খুব ভালোভাবেই চিনি। এখন দেখ আয়ান ভাইয়া রবির কি অবস্থা করে 

রবিকে ওর বন্ধুরা মেহেদীর কাছে নিয়ে আসলো। রবির বন্ধুরা মেহেদীকে বলল, ভাই একটা ঘটনা ঘটে গেছে। রবি তো ক্যাম্পাসে রিয়ানকে মেরেছে

- কি বলিস?  কি হয়েছিলো?

- রবি যেই মেয়েটাকে ভালোবাসে রিয়ান সেই মেয়েটার সাথে কথা বলছিলো। পরে রবি নিষেধ করায় রিয়ান রবিকে ভয় দেখাচ্ছিলো। তখন রবি রাগের মাথায় রিয়ানকে মেরেছে

- তোদের কি কোনদিন বুদ্ধি হবেনা। এরকম বোকার মত কাজ করলি তাও সবার সামনে। আমি বারবার বলেছিলাম এখন যা করবি ভেবেচিন্তে করবি। আমাদের শত্রু চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এখন ওরা ভাববে রিয়ানকে মারার পিছনে আমার হাত রয়েছে

আমি ওদের ভয় পাচ্ছিনা। কিন্তু এর ভিতরে অনেক কিছু জড়িয়ে আছে। এর ফলে কলেজের স্টুডেন্টদের কাছে আমাদের প্রতি যে আস্থা ছিলো তা চলে গেছে

রবির না হয় রাগ বেশি কিন্তু তোরা তো ওকে বুঝাতে পারতি। তাহলে তো আর এরকম ঘটনা ঘটতো না  

- আমরা কিছু বুঝে উঠার আগেই রবি ওকে মারা শুরু করলো। রিয়ান যা বলেছে তাতে তো আমাদেরই রাগ উঠে গেছিলো রবির কথা তো বাদ ই দিলাম

- খুবই ভালো কাজ করেছেন আপনারা। এখন তোদের কি মনে হয় ওরা তোদের এত সহজে ছেড়ে দিবে। কিছুদিন ক্যাম্পাস থেকে দূরে থাকিস তোরা। একা একা কোথাও যাবিনা। বাসার বাইরে নামলেও সবাই একসাথে থাকবি

হঠাৎ রবি বলে উঠলো, আমি কাউকে ভয় পাইনা। যা হবার হবে। ওদের ভয়ে কলেজে আসা বন্ধ করতে পারবো না। কলেজে আসা বন্ধ করলে স্টুডেন্টদের সামনে আমাদের মান- সম্মান থাকবেনা 

ঘটনার পরেরদিনই রবিকে ক্যাম্পাসে দেখে সবাই অবাক হয়ে গেলো। সবাই ভাবতেছে, আজকে কলেজে অনেক বড় একটা ঝামেলা হতে চলেছে। আয়ান ভাই এত সহজে রবিকে ছেড়ে দিবেনা

রবি কলেজে এসে মেঘাকে খুজতে লাগলো। রবি দূর থেকে দেখলো মেঘা ওর বান্ধুবিদের সাথে আড্ডা দিতেছে। রবি মেঘার সামনে গিয়ে বলল, কেমন আছো জানপাখি?

মেঘা অবাক হয়ে রবির দিকে তাকিয়ে আছে। মেঘা ভাবেনি রবি ওই ঘটনার পর আজকেই আবার কলেজে আসবে।

মেঘাকে এভাবে রবির দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে রবি বলল, কি হলো জানপাখি এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো? তুমি ভাবতে পারোনি আজকে আমি কলেজে আসবো তাইতো?

আমি তোমাকে দেখা ছাড়া এক পলক থাকতে পারিনা সেখানে এতদিন কিভাবে তোমার থেকে দূরে থাকবো বলো। যা কিছুই হয়ে যাক না কেনো আমি তোমাকে না দেখা ছাড়া থাকতে পারবো না

রবির কথা শুনে মেঘা বলল, না থাকতে পারলেও অভ্যাস করে নাও কারন আজকের পর হয়তো কয়েক মাস তুমি কলেজে আসতে পারবে না

- হাহা, এই রবির গায়ে হাত দেওয়া এত সহজ না। আমি তোমার জন্য সবার সাথে লড়তে রাজি আছি

- আমি যা বলবো তাই করবে?

- হ্যা করবো তো। শুধু একবার বলে দেখো

- পারবে না তুমি। এটা তোমার দ্বাড়া সম্ভব না

- সবকিছু করতে পারবো তোমার জন্য

- তাহলে যাও আয়ান ভাইয়ের সামনে গিয়ে বলো তুমি তার ভাইকে মেরেছো

এটা শুনার পর মেঘার বান্ধুবিরা সবাই অবাক হয়ে গেছে। মেঘাকে বলছে, তোর কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে?  কি বলছিস এসব?

- মাথা আমার ঠিকই আছে। কি হলো ভয় পেয়ে গেলে। আমি জানতাম তুমি পারবে না

এটা শুনে রবি ওখান থেকে চলে আসলো

চলবে---

1 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post