গল্প/:::: এতিম ছেলে বনাম সিনিয়র আপু। * * * লেখক/::::: রাসেল চৌধুরী * * *পর্ব/::::::: ( ৬ - ৭ ) :::::: ( ছয়-- সাত ) এবং শেষ।

 


গল্প/:::: এতিম ছেলে বনাম সিনিয়র আপু।

*

*

* লেখক/::::: রাসেল চৌধুরী 

*

*

*পর্ব/::::::: ( ৬ - ৭ ) :::::: ( ছয়-- সাত ) এবং শেষ।

*

*

*

*

*

* আমি বিছানা থেকে নেমে ওয়াস রুমে চলে গেলাম। ফ্রেশ হয়ে একটা জামা গায়ে দিয়ে নিচে আসলাম। নিচে এসে একজন কে দেখে আমি পুরো অবাক হয়ে গেলাম। 


এ আর কেউ নয়, আপূর সাথে যে ছেলের বিয়ে ঠিক হয়েছে, সেই ছেলে। আমি এখনো ওনার নাম জানি না। আমাকে দেখে ডাক দিলো। 


আমি/: আসসালামুয়ালাইকুম দুলাভাই কেমন আছেন। 


ওনি/: আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি, তুমি কেমন আছো। 


আমি/: আমিও ভালো আছি। দুলাভাই র নাম টা তো জানা হলো না। তা হঠাৎ বিয়ের আগে শশুর বাড়িতে। 


ওনি/: আমার নাম রনি। নিজেদের অফিস দেখাশোনা করছি। আর আজকে নাদিয়া কে নিয়ে মার্কেটে যাবো। বিয়ের কেনাকাটা করতে। আমি চাই নাদিয়ার পছন্দ মতো সবকিছু কিনে দিতে। 


আমি/: খুব ভালো। তা আপু কোথায়। 


রনি/: নাদিয়া রেডি হয়ে আসছে। তুমিও আমাদের সাথে চলো। 


আমি/: না দুলাভাই। আনকেল আমাকে বিয়ের সবকিছুর দায়িত্ব দিছে। আমি নাস্তা করে বাহিরে গিয়ে বিয়ের কাট এর ওয়াডার , ডেকোরেশন , সবকিছু করে আসতে হবে। আমার হাতে অনেক কাজ, আপনি আপুকে নিয়ে যান।


রনি/: তোমার যখন কাজ আছে। তাহলে তো আর জোর করা যাবে না। 


আমি/: চলুন, নাস্তা করবেন।


রনি/: আমি বাসা থেকে করে এসেছি। তুমি করে নাও। 


ঠিক আছে বলে নাস্তার টেবিলে চলে আসলাম। খালা আমাকে নাস্তা দিয়ে গেলো। হঠাৎ সিঁড়ির ওপর চোখ গেলো। দেখি আপু সুন্দর ভাবে সেজে গুজে নিচে নামছে। আপুকে দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে। 


আপু আমার দিকে তাকাতেই আমি চোখ সরিয়ে নিলাম। তার পর তারা দুজনে বাসা থেকে বেরিয়ে গেল। আমি হালকা নাস্তা করে বাসা থেকে বেরিয়ে। 


রিকশা নিয়ে রাফিদের বাসার সামনে চলে আসলাম। ভাড়া মিটিয়ে কলিং বেল চাপ দিলাম। কিছুক্ষণ পর রাফির আম্মু দরজা খুলে দিলো। 


আমি/: আসসালামুয়ালাইকুম আম্মু কেমন আছো।


আম্মু/: কে তোর আম্মু। আমি কারো আম্মু না। ( অভিমান করে)


আমি/: আম্মু কাজে অনেক বিজি ছিলাম। তাই তোমার সাথে দেখা করতে পারি নাই। প্লিজ আম্মু তুমি আমার ওপর রাগ করে থেকো না। 


আম্মু আমাকে জড়িয়ে ধরে কপালে দুইটা চুমু দিলো। তার পর বললো। 


আম্মু/: এতো দিন পর তোর এই আম্মুর কথা মনে পড়ছে। 


আমি/; সরি আম্মু, আমার ভুল হয়ে গেছে। আর কখনো এমন ভুল করবো না। 


আম্মু/: ঠিক আছে। এখন ভিতরে আয়। রাফি তার রুমে আছে। তুই ওর রুমে যা। আমি কপি পাঠিয়ে দিচ্ছি। 


আমি/: ঠিক আছে আম্মু। ( কপালে একটা চুমু দিয়ে)


আমি ভিতরে ঢুকে ওপরে রাফির রুমে যেতে লাগলাম। 


এবার আপনাদের বলি। রাফির আম্মু জানে আমার আব্বু আম্মু নেই। আমি একটা এতিম ছেলে। তখন রাফির আম্মু আমাকে বলে , ।


আম্মু/: কে বলেছে তোর আব্বু আম্মু নেই। আজকে আমি তোর আম্মু, । এখন থেকে আমাকে আম্মু বলে ডাকবি, । এখন আমার দুই ছেলে। 


এর পর থেকে রাফির আম্মুকে আমি আম্মু বলে ডাকি। 


রাফির রুমে এসে দেখি , রাফি বিছানায় শুয়ে মোবাইল টিপতে আছে। আমাকে দেখে উঠে বসলো। 


রাফি/: কিরে তুই কখন আসলি। 


আমি/: এইতো কিছুক্ষণ আগে। 


রাফি/: তা তুই আসবি , আমাকে তো বললি না।


আমি/: আমি তো এমনে আসি নাই। আপুর বিয়ের সব দায়িত্ব, আনকেল আমাকে দিছে। আমি তো একা একা সবকিছু করতে পারবো না। তাই তোকে নিয়ে সবকিছু করবো। 


রাফি/: নিজের ভালোবাসার মানুষের বিয়ের সব দায়িত্ব তুই পালন করবি।তোর কি একটুও কষ্ট হচ্ছে না। 


আমি/: কষ্ট হলে তো কিছুই করার নেই। আনকেল আন্টির সুখের জন্য, আমি সবকিছু করতে রাজি আছি। এখন তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নেয়। হাতে অনেক কাজ আছে। 


রাফি/: ঠিক আছে, তুই বস, আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি। 


এ বলে রাফি ওয়াস রুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে আসলো। আম্মু এসে আমাদের কপি দিয়ে গেলো। দুজনে কপি খেয়ে আম্মুর থেকে বিদায় নিয়ে বাহিরে চলে আসলাম। 


বাইক নিয়ে দুজনে বেরিয়ে পড়লাম। প্রথমে বিয়ের কাট এর ওয়াডার দিলাম। তার পর বাকি যে কাজ ছিলো সবকিছুর কাজ শেরে বাসায় চলে আসলাম। 


রাফি আমাকে বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে চলে গেল। আমি বাসার ভিতরে ঢুকে কলিং বেল চাপ দেওয়ার পর খালা এসে দরজা খুলে দিল। সব কাজ শেষ করে আসতে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। আমি আর বাহিরে দুপুরে খাবার খেলাম। 


ভিতরে ঢুকে দেখি আনকেল আন্টি সোফায় বসে কফি খাচ্ছে আর কথা বলছে। আমাকে দেখে আনকেল ডাক দিলো। আমি গিয়ে তাদের পাশে বসলাম। 


আনকেল/: রাসেল, সব কাজ কি শেষ।


আমি/: জি আনকেল। কালকে সকালে ডেকারেশন এর সব লোক মাল পত্র নিয়ে চলে আসবে। আর বিয়ের কাট , কালকে বিকালে নিয়ে আসতে বলছে। ফুলের লোক গায়ে হলুদের দিন সকালে আসবে। 


আনকেল/: ঠিক আছে। তুমি এখন রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে, কিছুক্ষণ রেস্ট নাও। কালকে আবার কাজে লেগে পড়তে হবে। 


আমি/: ঠিক আছে আনকেল।


এ বলে নিজের রুমে চলে আসলাম। ওয়াস রুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লাম। 


রাতে খাবার খাওয়ার জন্য খালা ঠেকে গেছে। তাই বিছানা থেকে উঠে নিচে চলে আসলাম। টেবিলের সামনে গিয়ে দেখি, আনকেল আন্টি আর আপু বসে আছে। 


আমি একটা চেয়ার টেনে বসলাম। আন্টি খাবার বেড়ে দিলো। আপুর দিকে তাকিয়ে দেখি একমনে খাবার খেয়ে চাচ্ছে। আমার দিকে একটা বার তাকালো না।


আমি খাবার খেয়ে নিজের রুমে চলে আসলাম। তার পর বিছানায় শুয়ে পড়লাম। 


পরের দিন বিকালে বিয়ের কার্ড নিয়ে আসলাম। তখন আমি আনকেল কে বললাম।


আমি/: আনকেল বিয়ের কার্ড গুলো কি করবো।


আনকেল/: তোমার বন্ধু বান্ধব কতো জন আছে। তাদের একটা করে দিয়ে আসো। আমি কিছু রাখছি, আর বাকি গুলো নাদিয়া কে দিয়ে আয়। 


আমি/: আনকেল আমার তেমন বন্ধু নেই। আমার একমাত্র বন্ধু শুধু রাফি এবং তার পরিবার। 


আনকেল/: ঠিক আছে। তাদের বিয়ের কার্ড দিয়ে এসো। আমি কিছু রাখছি। বাকি গুলো নাদিয়াকে দিয়ে আয়। 


আনকেল কিছু কার্ড রাখলো। বাকি গুলো নিয়ে আপুর রুমের সামনে গেলাম। বাহির থেকে বললাম।


আমি/: আপু ভিতরে আসতে পারি।


নাদিয়া/: হুম আয়।


আমি ভিতরে ঢুকে দেখি, আপু বিছানায় বসে আছে। কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো, আপুর চোখ দুটো লাল হয়ে আছে। আমাকে দেখে বললো।


নাদিয়া/: কেনো এসেছিস , 


আমি/: আসলে আপু , আনকেল বলেছে, বিয়ের কার্ড গুলো তোমাকে দিতে। তোমার বন্ধু বান্ধব কে দেওয়ার জন্য। 


নাদিয়া/: ঠিক আছে, রেখে যা। 


আমি বিছানার ওপরে কার্ড গুলো রেখে যেইনা রুম থেকে বেরিয়ে যাবো। তখন আপু আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো। 


আমি আপুকে আমার দিকে ঘুরিয়ে, বললাম।


আমি/: আপু তুমি কান্না করছো কেন। 


নাদিয়া/: তুই কি মানুষ, না কি অন্য কিছু।


আমি/: আপু হঠাৎ এ কথা বললে কেনো। 


নাদিয়া/: আমাকে রিয়া ফোন করে সব বলে দিছে। তুই আমাকে ভালোবাসার কথা বললি না কেন। 


আমি/: আমি তোমাকে যেদিন বলতে যাবো। সেদিন দেখি , তোমাকে ছেলে পক্ষ দেখতে এসেছে। তাই আর বলি নাই। 


নাদিয়া/: তুই তো আমাকে একটা বার বলে দেখতি। তোকে আমি এখনো অনেক ভালোবাসি। 


আমি/: সেটা আর কখনো সম্ভব না। তোমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। এ বিয়েতে আনকেল আন্টি অনেক খুশি। আমি চাইনা তাদের মনে কষ্ট দিতে। 


নাদিয়া/: তুই মা বাবার সুখের কথা চিন্তা করে। নিজের ভালোবাসা কোরবানি করে দিবি।


আমি/: এ ছাড়া আমার কোনো উপায় নেই। 


নাদিয়া/: ঠিক আছে। তুই যখন মা বাবার সুখের কথা চিন্তা করে। আমাকে বিয়ে করবি না। তাহলে আমি রনিকে বিয়ে করবো। কিন্তু কখনো রনিকে স্বামীর অধিকার দিবো না। আমি তোকে ভালবাসি। আর সারাজীবন বেসে যাবো। 


আমি/: আপু তুমি এমন পাগলামি করো না। আমাকে তুমি ভুলে যাও। নিজের বাবা মার কথা একটা বার চিন্তা করো। তোমার এ বিয়েতে , তারা অনেক খুশি। 


নাদিয়া/: তুই আমার রুম থেকে বেরিয়ে যা। যে ছেলে নিজের ভালোবাসার মানুষ কে অন্য ছেলের হাতে তুলে দিতে রাজি আছে। সে কখনো কাউকে ভালোবাসতে পারে না। 


আমি আর কোনো কথা না বলে নিজের রুমে চলে আসলাম। নিজের চোখ দিয়ে দু ফোঁটা পানি পড়ে গেল। 


আপু আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। তুমি যদি আমার জায়গায় হতে, তাহলে তুমি তাই করতে। আমার কিছু করার নেই। 


দেখতে দেখতে বিয়ের দিন চলে এসেছে। আপুর বিয়েতে সবাই এসেছে। আজকে আপুর গায়ে হলুদ। আপুকে স্টেজে আনা হয়েছে। এক এক করে সবাই আপুকে হলুদ লাগাতে লাগলো। 


আমি একটু দুরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে লাগলাম। হলুদ শাড়িতে আপুকে অনেক সুন্দর লাগছে। যেনো একটা পরি সামনে বসে আছে। 


রিয়া আমার সামনে এসে বললো।


রিয়া/: কিরে এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন। 


আমি/: এমনে দাঁড়িয়ে আছি। 


রিয়া/: তুই কি মনে করেছিস। আমি কিছু বুঝি না। এখনো সময় আছে। তুই মামা মামী কে সবকিছু খুলে বল। 


আমি/: নারে , আমি চাই না, তাদের মনে কষ্ট দিতে।


রিয়া/: তোর কি কষ্ট হচ্ছে না। 


আমি চুপ হয়ে গেলাম। মনে মনে বললাম। আমার ভিতর টা পেটে যাচ্ছে। কিন্তু আমি এখন কি করবো। আমাকে চুপ থাকতে দেখে রিয়া আবার বললো। 


রিয়া/: কিরে কথা বলছিস না কেন। 


আমি/: আমার ভালো লাগছে না। তুই আমাকে একটু একা থাকতে দেয়। 


রিয়া আর কোনো কথা না বলে চলে গেল। হঠাৎ আনকেল আমার সামনে এসে বললো।


আনকেল/: কি ব্যাপার রাসেল। তুমি এখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন। যাও নাদিয়া কে হলুদ লাগিয়ে দিয়ে আসো। 


আমি/: যাচ্ছি আনকেল। 


বলে স্টেজে উঠে নাদিয়া আপুর সাথে বসলাম। আপু আমার দিকে করুন চোখে তাকালো। আমি একটু হলুদ আপুর গালে লাগিয়ে দিলাম। তার পর মিষ্টি আপুর মুখের সামনে ধরলাম। 


কিন্তু আপু খাচ্ছে না। আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তখন আন্টি বললো।


আন্টি/: কিরে নাদিয়া, রাসেল তোর মুখের সামনে মিষ্টি ধরে রাখছে। তুই খাস না কেনো।


আন্টির কথা শুনে আপু হালকা একটু মিষ্টি খেলো। তার পর আপু আমাকে একটু মিষ্টি খাইয়ে দিলো। আমি আর বসে না থেকে ছাদে চলে গেলাম। 


অনেক কষ্টে আপুর সামনে চোখের পানি আটকে রেখেছি। ছাদের কিনারে দাঁড়িয়ে কান্না করতে লাগলাম। আজকের রাতটা পার হলে, কালকে আপুর বিয়ে হয়ে যাবে। 


নিজের চোখের সামনে কি ভাবে দেখবো আপুর বিয়ে। আমার চোখের পানি কোনো বাধা মানছে না। অঝোর ধারায় পানি পড়তে লাগল। 


ছাদে কতোক্ষণ ছিলাম বলতে পারবো না। আমার একটা জিনিস কিছুতেই মাথায় ঢুকছে না। রাফি কে আজকে গায়ে হলুদে দেখলাম না। ও কোথায়। আমাকে তো বলছে সন্ধ্যার পর চলে আসবে। 


আম্মু আব্বু তারা এসেছে। কিন্তু তাকে দেখলাম না। পকেট থেকে মোবাইল বের করে, রাফি কে ফোন দিলাম। কিন্তু তার মোবাইল বন্ধ বলছে। 


আমি আর কিছু না ভেবে নিচু নামতে যাবো। হঠাৎ ছাদে কারো আসার শব্দ পেলাম। নিচের দিকে তাকিয়ে দেখি আপু ছাদের দিকে আসছে। 


আপু আমাকে দেখে হাত ধরে টেনে ছাদের কিনারে নিয়ে আসলো। তখন আপু বললো।


নাদিয়া/: নিজেকে এতো কষ্ট দিচ্ছিস কেনো। রাসেল এখনো সময় আছে। তুই আব্বু আম্মু কে সবকিছু খুলে বল। তুই যদি বলতে ভয় পাস, তাহলে আমি বলি। 


আমি/: না আপু, তুমি এই কাজ কখনো করবে না। তারা শুনলে অনেক কষ্ট পাবে। আমি চাইনা তারা আমার কথা শুনে কষ্ট পাক। 


নাদিয়া/: তুই কি পারবি , আমাকে ছেড়ে থাকতে। 


আমি/: আমাকে পারতেই হবে। 


নাদিয়া/: রাসেল শেষ বারের মতো আমার একটা কথা রাখবি। 


আমি/: কি কথা বলো। 


নাদিয়া/: তুই কালকে আমার সামনে আসিস না। আমি তোকে সামনে দেখলে কবুল বলতে পারবো না। 


আমি/: ঠিক আছে। আমি তোমার সামনে থাকবো না। 


নাদিয়া/: আমাকে জড়িয়ে ধরে একটা কিস করবি। কালকের পর তো অন্য পুরুষের সাথে থাকতে হবে। 


আমি/: এখানে অন্য পুরুষ কোথায় থেকে আসলো। সে তো হবে তোমার স্বামী। 


নাদিয়া/: কিন্তু আমি তো তাকে কখনো স্বামী হিসেবে মানবো না। আমি শুধু তোকে ভালবাসি। 


আমি/: প্লিজ আপু , তুমি আমাকে ভুলে যাও। স্বামী সংসার নিয়ে নতুন জীবন শুরু করো। 


নাদিয়া/: আমি কখনো তোকে ছাড়া নতুন জীবন শুরু করতে পারবো না। 


আমি): আপু তোমাকে আমার কসম দিয়ে বলছি। তুমি আনকেল আন্টির মনে কষ্ট দিওনা। সব বাবা মা চায়, তার মেয়ে যেনো সুখি থাকে। 


নাদিয়া/: ঠিক আছে, তুই যা বলছিস, তাই হবে। এখন আমাকে শেষ বারের মত জড়িয়ে ধরে একটা কিস কর। তোর কাছে এটাই আমার শেষ চাওয়া। 


আমি/: আপু তোমাকে জড়িয়ে ধরতে পারবো। কিন্তু কিস করতে পারবো না। এটা একমাত্র তোমার স্বামীর অধিকার। 


নাদিয়া/: ঠিক আছে। তাহলে জড়িয়ে ধর।


আমি আপুকে জড়িয়ে ধরলাম। আপু শুধু চোখের পানি ফেলছে। আমাকে কিছুক্ষণ জড়িয়ে ধরে নিচে নেমে গেল। 


পরের দিন আমি কাজে বিজি থাকতে শুরু করলাম। সবকিছু ঠিকঠাক মতো দেখিয়ে দিতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পর আম্মু আমার সামনে আসলো।


আম্মু/: কিরে রাসেল। তোকে গতকাল থেকে ঠিক ভাবে দেখতে পাচ্ছি না। কোথায় কোথায় থাকিস। 


আমি): আসলে আম্মু আপুর বিয়ের সব দায়িত্ব আমার হাতে। তাই কাজে কামে এদিক ওদিক দৌড়াতে ছিলাম। 


আম্মু/: তোর চোখ দুটো দেখি লাল হয়ে আছে। কি হয়েছে তোর।


আমি/: আমার কিছু হয়নি আম্মু। এমনে রাতে একটু ঘুম কম হয়েছে। বেশি রাতে ঘুমাইছি তো। আবার সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে কাজে লেগে পড়ছি। 


আম্মু/: ঠিক আছে। তুই থাক। আম্মু ভিতরে যাচ্ছি। 


আমি/: ওকে আম্মু। আচ্ছা আম্মু রাফি কোথায়। কালকে থেকে রাফি কে দেখছি না। ওর মোবাইল ও বন্ধ।


আম্মু/: আমাকে তো বলছে, তার কি একটা কাজ আছে। তাই সে আসতে পারবে না। কিন্তু আজকে দুপুরে চলে আসবে বলছে। মোবাইল বন্ধ কেনো। সেটা তো বলতে পারবো না। 


আমি/: ওহ।


আম্মু আর কোনো কথা না বলে চলে গেল। আমি আবার কাজে রেগে পড়লাম। দেখতে দেখতে দুলা আসার সময় হয়ে গেছে। এদিকে আমার সবকিছু ঠিকঠাক মতো হয়ে গেছে। 


আমি রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে একটা পাঞ্জাবি গায়ে দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে হঠাৎ রিয়া আমার রুমে আসলো। 


আমি/: কিরে , তুই হঠাৎ আমার রুমে। 


রিয়া/: রাসেল তোর অনেক কষ্ট হচ্ছে, তাই না রে।


আমি/: আমি সব কষ্ট মাটি চাপা দিয়ে দিছি। হয়তো নাদিয়া আপু আমার কপালে ছিলো না। তাই এরকম আমার সাথে হয়েছে। আমি তার জন্য দোয়া করি। সে যেনো স্বামী সংসার নিয়ে সুখে থাকে। 


রিয়া/: তোকে কিছু বলার ভাষা আমার নেই। তুই আসলে মানুষ না, তুই একটা ফেরেস্তা। 


আমি/: ঠিক আছে। দুলা আসার সময় হয়ে গেছে। এখন বাহিরে যেতে হবে। চল দুজনে একসাথে যাই। 


রিয়া/: ঠিক আছে চল। 


আমি আর রিয়া রুম থেকে বেরিয়ে গেটের সামনে গেলাম। দেখি জামাই চলে এসেছে। আমি জামাইকে দেখে অন্য দিকে চলে গেলাম। 


সবাই জামাইকে নিয়ে ভিতরে ঢুকলো। তার পর স্টেজে নিয়ে বসালো। কিছুক্ষণ পর নাদিয়া আপুকে নিয়ে আসলো। আজকে আপুকে লাল বেনারসিতে। অনেক সুন্দর লাগছে। 


আপুকে জামাইর সাথে বসানো হলো। তার পর চার দিকে তাকাতে লাগলো। হয়তো আমাকে খুঁজতে আছে। কিন্তু আমি লুকিয়ে লুকিয়ে তাকে দেখছি। 


কিছুক্ষণ পর কাজি এসে বিয়ে পড়াতে লাগলো। যখন নাদিয়া আপুকে কবুল বলতে বললো। তখন আপু চুপ করে আছে। সবাই আপুকে বলছে। কবুল বলার জন্য। কিন্তু আপু বলছে না। 


যেই না আপু সবার জোরাজুরিতে কবুল বলতে যাবে, তখন হঠাৎ রাফি কোথায় থেকে এসে বললো। 


রাফি): এই বিয়ে বন্ধ করুন। 


আনকেল/: কি হয়েছে রাফি। তুমি বিয়ে বন্ধ করতে বললে কেনো। 


রাফি/: আপনারা যার সাথে আপুকে বিয়ে দিচ্ছেন। তার সমন্ধে ভালো করে খুঁজ খবর নিয়েছেন। 


আনকেল/: কি বলতে চাও তুমি। সবাই তো বলছে ছেলে ভালো। 


রাফি/: এই ছেলে ভালো না। ও একটা মেয়েকে বিয়ে করবে বলে। তার সব কিছু কেড়ে নিয়ে গেছে। 


আনকেল/: তোমার কাছে কি প্রমাণ আছে। যে রনি খারাপ ছেলে। 


রাফি/: আমি জানতাম, আপনারা এটাই বলবেন। তাই তো ওই মেয়েকে সাথে করে নিয়ে এসেছি। কোথায় আপু , সামনে আসো। 


রাফির কথা শুনে একটা মেয়ে সবার সামনে আসলো। মেয়েটা কে দেখে রনির চোখ বড় বড় হয়ে গেল। তখন রাফি বললো। 


রাফি/: বোন , তুমি সবার কাছে সত্যি টা খুলে বলো। 


মেয়েটা/: আমার নাম মিম। রনি আর আমার এক বছরের রিলেশন। সে আমাকে বিয়ে করবে বলে। আমার সবকিছু কেড়ে নিয়ে গেছে। কিছুদিন আগে সে আমাকে বলে, তাকে ভুলে যেতে। তার নাকি অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক হয়েছে। আমার সাথে নাকি প্রেমের অভিনয় করছে। 


রনির বাবা/: আমার ছেলে যে তোমার সাথে খারাপ কিছু করেছে। তার কি প্রমাণ আছে। 


মিম/: আমার মোবাইলে, আমার আর রনির একসাথে ছবি আছে। এবং কিছু নেকেটিভ ছবি আছে। চাইলে দেখতে পারেন। 


বলে মোবাইল টা রনির বাবার হাতে দিলো। তখন রনির আব্বু বললো।


রনির বাবা/: আমি তোমাদের দুজনের ছবি শুধু দেখছি। আর ওগুলো দেখতে চাই না। রহমান সাহেব আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন। আমি জানতাম না, আমার ছেলে এতো খারাপ। যদি জানতাম, তাহলে কখনো আপনার মেয়ের জন্য বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসতাম না। আমি আজকে ওদের দুজনকে বিয়ে দিবো। পারলে আমাকে মাফ করে দিবেন। 


এ বলে রনির বাবা মিম এবং রনিকে নিয়ে তারা বাসা থেকে বেরিয়ে গেল। সবাই এখন চিন্তা করছে। নাদিয়ার কি হবে। তখন আনকেল বললো।


আনকেল/: এখন আমার মেয়েটার কি হবে। এখন ওকে কে বিয়ে করবে। 


তখন রাফি আর রিয়া আনকেল এর সামনে গিয়ে বললো। 


রাফি/: আনকেল আপনি কোনো চিন্তা করবেন না। আপুর বিয়ে আজকে এবং এখনি হবে। 


আন্টি/: তুমি কি বলছো রাফি। আমার মেয়েকে কে বিয়ে করবে। 


রিয়া/: মামী ছেলে আমাদের এবং আপনাদের সবার পরিচিত। 


আনকেল/: আমি তোর কথা কিছুই বুঝলাম না। তুই কার কথা বলছিস রিয়া। 


রিয়া/: সে আর কেউ নয়। আমি রাসেল এর কথা বলছি। রাসেল আর নাদিয়া আপু দুজন দুজনকে পাগলের মত ভালবাসে। 


রাফি/: শুধু আপনাদের সুখের কথা চিন্তা করে। নিজের ভালোবাসা কোরবানি দিতে চেয়েছে। 


রিয়া/: কারন মামা। তুমি ওকে রাস্তা থেকে তুলে এনে নিজের বাসায় ঠাঁই দিছো। তাই তোমাদের নুন খেয়ে, তোমাদের মনে কষ্ট দিতে চাইনি।


রাফি/: আমি আপনাকে সবকিছু খুলে বলি। ( তার পর রাফি, আপুর সাথে আমার কি কি হয়েছে, সবকিছু খুলে বললো) 


আনকেল রাফির কথা শুনে, আমার সামনে এসে ঠাসসসস করে একটা থাপ্পর মেরে বলতে লাগলো। 


আনকেল/: নিজেকে খুব মহান মনে করছিস তাই না। আমি কি কখনো তোর চাওয়া পাওয়া অপূর্ণ রেখেছি। তোকে আমি বাহিরের ছেলে মনে করছি। তুই কেনো এমন করছিস। 


আমি/: আমি তোমাদের সাথে প্রতারণা করতে পারবো না। আমি আপনাদের দুজনকে সবসময় নিজের মা বাবার মতো দেখে এসেছি। আমি একটা এতিম ছেলে কে ঠাঁই দিয়ে , নতুন জীবন দিছেন। আমি কি করে আপনাদের মনে কষ্ট দিই। 


আন্টি/: আরে আমি তোকে কখনো অন্য ভাবে দেখিনি। আমি তোকে নিজের ছেলের মতো জানি। 


আনকেল): তুই আমাদের কাছে একটা বার বলে দেখতি। আমি কখনো মানা করতাম না। এটা শুনে আমি তো আরো খুশি হয়েছি। 


আন্টি): আচ্ছা তোর কথা বাদ দিলাম। নাদিয়া তো আমাদের খুলে বলতে পারতি। 


নাদিয়া): আমি তোমাদের সবকিছু খুলে বলতে চেয়েছি। কিন্তু রাসেল আমাকে মানা করছে। আবার আমাকে কসম দিছে। 


আনকেল/: ঠিক আছে। এখন সব বাদ । এখন রাফি , তুমি রাসেল কে তৈরি করে নিয়ে আসো। 


রাফি/: ঠিক আছে আনকেল। 


এ বলে রাফি আমাকে নিয়ে ওপরে চলে আসলো। আমি সাথে সাথে রাফি কে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলাম। তার পর বললাম। 


আমি/: কিরে কেমনে কি। আমার পাঠক পাঠিকা রা তো কিছুই বুঝতে পারছে না। একটু সবাইকে খুলে বল। 


রাফি): ঠিক আছে বলছি। আমি গতকাল দুপুরে মার্কেটে যাচ্ছিলাম, আপুর বিয়ের উপহার কিনতে। তখন হঠাৎ দেখি একটা মেয়ে রনির মতো একটা ছেলের সাথে কথা বলছে। হঠাৎ ছেলেটা মেয়েটাকে ঠাস করে দুইটা থাপ্পড় মেরে চলে যায়। ছেলেটা যে সময় গাড়িতে উঠবে, তখন তার চেহারা দেখে অবাক হয়ে যাই। কারন সে ছিলো রনি ভাই। আমি আর দাঁড়িয়ে না থেকে মেয়েটার কাছে গেলাম। তখন তাকে জিজ্ঞেস করি, ওই ছেলেটার সাথে তোমার কি সম্পর্ক। তার পর মেয়েটি সব খুলে বলে। ( কি বলেছে , আপনারা তো সব জানেন। 


আমি/; তুই মিমের সব কথা শুনে কি বলছিস। 


রাফি): আমি ওর কথা শুনে, তাকে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। আব্বু আম্মু কে বললাম। আমার বন্ধু, তোমরা সবাই বিয়ে বাড়িতে চলে যাও ‌ আমি বিয়ের দিন যাবো। আমার বন্ধুর সাথে আমার কিছু কাজ আছে। 


আমি/: আব্বু আম্মু পরে কিছু বলে নাই। মানে একটা মেয়ের সাথে তোর কি কাজ। 


রাফি/: তুই তো জানিস। আব্বু আম্মু আমাকে অনেক বিশ্বাস করে। তার ছেলে কখনও খারাপ কাজ করবে না। আব্বু আম্মু চলে আসার পর, কোনো রকম রাতটা কাটিয়ে, পরের দিন বিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসলাম। আমি সবার সামনে রনির মুখোশ খুলে দেওয়ার জন্য বিয়ের দিন মিম কে নিয়ে আসি। 


আমি/' আজকে তোর কারনে , আমার ভালোবাসার মানুষ কে আপন করে পেয়েছি। তোর এই ঋণ কখনো শোধ করতে পারবোনা।


রাফি/: হয়েছে হয়েছে, তোর ঋণ শোধ করা লাগবে না। শুধু আমার একটা হেল্প করে দিতে হবে। 


আমি)' বল তোর কি হেল্প লাগবে।


রাফি/: আমার সাথে একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে যখন আনকেল এর সাথে কথা বলছে। ওই মেয়েটাকে আমার পছন্দ হয়েছে। ওর সাথে আমার লাইন ক্লিয়ার করে দিবি। 


আমি/: তার মানে তুই রিয়ার করা বলছিস। আরে তোকে তো ওর কথা বলছি। 


রাফি/: মানে, আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।


আমি/: তোকে বলছি না। আমাকে আপুর মামাতো বোন রিয়া প্রফোজ করছে। এই সে মেয়ে। 


রাফি): কিহ, তার মানে এই সে রিয়া। কিন্তু চেহারা কিন্তু মাশাআল্লাহ। এখন আমার সাথে লাইন করে দেয়। 


আমি/: ঠিক আছে দিবো। আগে আমার বিয়েটা শেষ হোক। 


রাফি/: ঠিক আছে। এখন ফ্রেশ হয়ে আয়। আমাদের জন্য সবাই অপেক্ষা করছে। 


আমি আর কোনো কথা না বলে, ওয়াস রুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে, একটা পাঞ্জাবি গায়ে দিয়ে , রাফির সাথে নিচে চলে আসলাম। আমাকে নিয়ে আপুর পাশে নিয়ে বসালো। তখন আপু আমার কানের কাছে মুখ এনে বললো। 


নাদিয়া/: আজকে তোর খবর আছে। শুধু বিয়েটা হয়ে যেতে দেয়। তুই আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছিস। 


আমি/: সেটা বাসর ঘরে দেখা যাবে। আমি ও কিন্তু কম কষ্ট পাইনি। 


কাজি বিয়ে পড়ানো শুরু করলো। আগে আপুকে কবুল বলতে বললো। আপু সাথে সাথে কবুল বলে ফেললো। সবাই মুচকি মুচকি হাসছে। এবার আমাকে বলতে বললো। কিন্তু আমি বলছি না, আমি আপুকে একটু লাগানোর জন্য দেরি করছি। 


আপু আমাকে কনি দিকে গুঁতা দিলো‌ আমি সাথে সাথে কবুল বলে ফেললাম। সবাই জোরে জোরে হাসা শুরু করলো। তার পর কাজি মোনাজাত ধরলো। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করলো। 


তার পর সবাই খাওয়া দাওয়া করে বাসায় চলে গেলো। আব্বু আম্মু আমার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেল। রাফি আমার সাথে থেকে গেলো। এখন আমি আর রাফি ছাদে বসে আছি। ছাদে আসার সময় রিয়া কে বলেছি ছাদে আসার জন্য। আমি আর রাফি বসে বসে কথা বলছি। কিছুক্ষণ পর রিয়া ছাদে আসলো। তখন আমি বললাম।


আমি/: কিরে তোর আসতে এতো দেরি হলো কেন।


রিয়া/: দেরি কি আর এমনে হয়েছে। তোর বাসর ঘর সাজাতে দেরি হয়ে গেছে। এখন বল কি জন্য ডাকলি। 


আমি/: আজকে বিয়ে বাড়িতে একটা ছেলে, তোকে দেখে পছন্দ করে। সে নাকি তোর সাথে প্রেম করতে চায়। 


আমার কথা শুনে রাফি মাথা নিচু করে ফেলছে। তখন রিয়া বললো।


রিয়া/: ছেলেটা কে জানতে পারি। 


আমি/: সে আর কেউ নয়। আমার কলিজা , আমার জানের বন্ধু রাফি। 


রিয়া/: ও তাই নাকি। তাহলে ও না বলে , তোকে বলতে বলছে কেনো। 


আমি/: আসলে আজ পর্যন্ত রাফি কোনো মেয়ের সাথে প্রেম করে নাই। কেনো জানি তোকে দেখে পছন্দ হয়। কিন্তু লজ্জার কারনে বলতে পারছে না। তাই আমাকে বললো, তোর সাথে লাইন করে দেওয়ার জন্য। 


রিয়া/: ঠিক আছে, তুই রুমে যা। আপু রুমে তোর জন্য অপেক্ষা করছে বাসর ঘরে। 


আমি/: আমার অনেক ভয় করছে রে।


রিয়া/: এতো ভয় কিসের। বিড়াল টা ঠিক মতো মারিস। 


আমি/: ওই এই বিড়াল আবার কোথায় থেকে আসলো। 


রিয়া/: সেটা বাসর ঘরে গেলে, আপু তোকে দেখিয়ে দিবে। এখন তুই যা, আমি ওর সাথে কথা বলবো। 


আমি/: আচ্ছা ঠিক আছে যাচ্ছি। আমার বন্ধুর যেনো কিছু না হয়। তাহলে কিন্তু তোর মাথা পাঠিয়ে ফেলবো।


রিয়া/: ওই আমার জামাইয়ের সাথে, আমি যেটা করি। তোর সমস্যা কি। 


আমি): কিহ, তার মানে তুই রাজি। 


রিয়া/: আরে ওকে তো প্রথম দেখে , আমি প্রেমে পড়ে গেছি। এখানে রাজি হওয়ার কি আছে। তুই বাসর ঘরে যা, আমি আমার জানের সাথে একটু রোমান্স করি। 


আমি): তাহলে তোরা থাক। আমি গেলাম। 


আমি আর কোনো কথা না বলে বাসর ঘরের সামনে চলে আসলাম। দোয়া দরুদ পড়ে আস্তে আস্তে রুমে ঢুকলাম। তার পর দরজা বন্ধ করে দিলাম। 


দরজা বন্ধ করে বিছানার দিকে তাকিয়ে যেটা দেখলাম, সেটা দেখে আমি পুরো অবাক হয়ে গেলাম। দেখি নাদিয়া আপু একটা লাঠি নিয়ে বিছানায় বসে আছে ‌ আমি আপুর সামনে গেলাম। তখন আমি বললাম।


আমি/: আপু তুমি লাঠি নিয়ে বসে আছো কেন। 


ঠাসসস করে একটা বারি মেরে দিলো। তখন আমি বললাম। 


আমি/: তুমি আমাকে মারলে কেনো।


নাদিয়া/: প্রথমে আপু বললি কেন।


আমি/: আপুকে আপু বলবো না তো কি বলবো।


আবার ঠাস করে আরেক টা বারি মারলো। তখন নাদিয়া বললো।


নাদিয়া/: আর একবার যদি আপু বলে ডাকিস, তাহলে তোর মাথা পাঠিয়ে দিবো। এখন থেকে আমার নাম এবং তুমি করে বলবি। 


আমি/: তুমি করে তো সবসময় বলি। কিন্তু নাম ধরে কি ভাবে বলবো। তুমি তো আমার থেকে বড়।


নাদিয়া/: কারন এখন আমি তোর স্ত্রী। আমাকে নাম ধরে ডাকবি। 


আমি/: ঠিক আছে , এখন থেকে নাম ধরে ডাকবো। 


নাদিয়া/: হুম, তো এতোক্ষণ কোথায় ছিলি। তোর আসতে এতো লেট হলো কেনো।


আমি/: আগে বলো, তুমি আমাকে তুই করে বলছো কেন। আমি তোমার স্বামী। আমাকে তুমি করে বলবে। 


নাদিয়া): ঠিক আছে বলবো। এখন বল আসতে দেরি হলো কেন। 


আমি): তাহলে শুনো ( তার রাফি আর রিয়ার কথা খুলে বললাম)


নাদিয়া): সেটা তো খুশির খবর। আজকে রাফির জন্য , তোমাকে আমি আপন করে পেয়েছি ‌ । ও না থাকলে এতোক্ষণ আমাকে বাসর ঘরে রনি থাকতো। 


আমি/: হুম ঠিকই বলেছো। ওর মতো বন্ধু পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার ‌।


নাদিয়া/: ঠিক আছে। এখন অযু করে আসো। দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করতে হবে। 


আমি): করবো, আগে আমাকে একটা কথার উত্তর দাও। বিয়ের আগে তোমাকে দেখছি , সবসময় কার সাথে যেন হেসে হেসে কথা বলতে। তুমি কার সাথে কথা বলতে। 


নাদিয়া আমার কথা শুনে হাসতে হাসতে বলল।


নাদিয়া/: আরে পাগল এটা আমি অভিনয় করছি। আমি তোমার সামনে মোবাইল নিয়ে অন্য ছেলের সাথে কথা বলার অভিনয় করছি। এবং তোমাকে এড়িয়ে চলছি। তুই এগুলো সয্য করতে না পেরে যেনো, আমাকে ভালোবাসার কথা বলিস। কিন্তু হাদারাম তুমি আমাকে কখনো বলো নাই। কিছুদিন দেখার পর যখন তোমার রিয়াকশন দেখলাম না। তার পর ওই ছেলেকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে যাই। তার পর কি হলো , তুমি তো জানো। 


আমি/: আমার টা আর কি শুনবে, সব তো তুমি জানতে ফেরেছো। এখন চলো দুজনে অযু করে আসি। 


নাদিয়া/: ঠিক আছে চলো। 


আমি আর নাদিয়া ওয়াস রুমে ঢুকে অযু করে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করে খাটে গিয়ে বসলাম। তখন নাদিয়া বললো।


নাদিয়া/: আজকে তোমার ভালোবাসা দিয়ে, আমার সব কষ্ট দুর করে দাও। 


আমি/: তোমার কষ্ট দূর করলে। আমার কষ্ট গুলো দুর করবে কে। 


নাদিয়া/: আমি ও তোমার সব কষ্ট দুর করে দিবো, ভালোবাসা দিয়ে। 


আমি/: ঠিক আছে। তাহলে মিশনে নেমে পড়ি। আমার তো আর সয্য হচ্ছে না। 


নাদিয়া/: বাহ বাহ আমার সিনিয়র জামাইর দেখি সয্য হচ্ছে না। আসো । 


তার পর আর কি, নাদিয়ার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লাম। নাদিয়ার ঠোট দুটো নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসলাম। আস্তে আস্তে কাপড় খুলতে লাগলাম। তার পর ওর পুরো শরিরে কিস করতে লাগলাম। ধবধবে সাদা দেহ। তার পর হারিয়ে গেলাম সাগরের বুকে। 


ইসরে আরেক টু বললে , এখনি বাড়িতে বিয়ের জন্য মা বাবাকে পাগল করে ফেলতো। অনেক দেখেছেন। এবার আপনারা আসতে পারেন। 


এখন আমি আর নাদিয়া সবসময় কলেজে যাওয়া আসা করি। রিয়া আর রাফির প্রেম ভালোই চলছে। তাদের পড়ালেখা শেষ হলে বিয়ে হবে। আমি আমার সিনিয়র আপুর ভালোবাসা পেয়ে অনেক সুখে আছি।


- হঠাৎ এসে মায়া বাড়িয়ে দাও কেন।

 - সব হৃদয় কি পাথর,কিছু হৃদয় কাঁচের টুকারো ও হয়.।


- প্রিয় শেষ বিদায়ে লাশের পাশে এসো না।

 - আমার অতৃপ্ত আত্না কষ্ট পাবে.।

*

*

*

*

*

* ::::::::::::::::::::::::::::::::::: সমাপ্ত:::::::::::::::::::::::::::::::

*

*

*

*

* তো পুরো গল্পটা কেমন হয়েছে। যদি ভালো লেগে থাকে। তাহলে প্লিজ সবাই একটা লাইক এবং কমেন্ট করে মূল্যবান মতামত জানাবেন। আপনাদের লাইক এবং কমেন্ট দেখলে গল্প লেখার আগ্ৰহ বাড়ে। 


ধন্যবাদ সবাইকে পরবর্তি গল্পের জন্য অপেক্ষা করুন 🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷 রোমান্টিক গল্প লেখক রাসেল চৌধুরী 🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿 লাইক এবং কমেন্ট বেশি না পড়লে , আর সময় নষ্ট করে গল্প লিখবো না। 🌿🌷🌿🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🧡🌿🌷🌿🌷🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌿🌿🌷🌿🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷

2 Comments

  1. কি বলবো ভাই এক কথায় অসাধারণ
    আর আমি তো ভাই অলরেডি গল্প পড়েই প্রেমে পরে গেছি

    ReplyDelete
Post a Comment
Previous Post Next Post