গল্পঃ মামাতো বোনের সাথে বিয়ে পর্বঃ ৩

গল্পঃ মামাতো বোনের সাথে বিয়ে পর্বঃ ৩



মামাতো বোনের সাথে বিয়ে
পর্বঃ৩ 
#আবির হাসান নিলয়

জান্নাতঃঐ ঘুম থেকে উঠ(ঝাঁজালো কন্ঠে)
আমিঃকেনো কি হয়ছে(ঘুম ঘুম নিয়ে)
জান্নাতঃতুই মামুনকে মারছিস কেনো
আমিঃআমি ওকে কিভাবে মারবো
জান্নাতঃসেটা তো তুই জানিস
আমিঃআরে আমি তো তোদের বাসায় তাহলে
ওকে কিভাবে মারবো
জান্নাতঃকেনো তোর বখাটে বন্ধুরাতো ঠিকি আছে
আর মামুন নিজেই বলছে তুই ওকে মার খাওয়াইছিস
সেটাও নাকি আমার জন্য(রেগে গিয়ে)
আমিঃহুম আমি মারাইছি কি করবি তুই
জান্নাতঃতুই ওকে মারাবি কেনো
আমিঃও তোর সাথে প্রেম করবে কেনো
জান্নাতঃও আমার সাথে প্রেম করলে তোর তাতে 
কি,আমি তোর কে শুনি?
আমিঃতুই আমার এই হার্ট যাকে ছাড়া আমি
চলতে পারি না আর কখনো পারবো না।তুই কি
আমাকে বুঝিস না আমি তোকে কতটা ভালোবাসি
তুই তোর বুকে থুক্কু আমার বুকে হাত দিয়ে দেখ
আমার হার্ট কি বলে(ওর হাত আমার বুকে নিয়ে)

কিছু সময় চুপ থেকে.........

জান্নাতঃআইছে ঢং করতে।যদি ভালোবাসতি তাহলে
এতোদিন ভালোবাসি কথাটা ঠিকি বলতি
আমিঃকিন্তু এখন তো বললাম
জান্নাতঃতো আমি কি করবো
আমিঃতোর কিছু করতে হবে আমি চলে যাবো
তোর জীবন থেকে
জান্নাতঃতাহলে আমার কি হবে
আমিঃতুই তো আমাকে ভালোই বাসিস না
জান্নাতঃকে বলছে?
আমিঃতোর স্বভাব আর আচরণ
জান্নাতঃসেটা শুধু তোকে পরিক্ষা করার জন্য ছিলো
আমিঃমানে......(অবাক হয়ে)
জান্নাতঃমানে আমিও তোকে ভালোবাসি
আমিঃকিন্তু মামুন?
জান্নাতঃআরে ও শুধু আমার ভালো বন্ধু আর কিছু না
আমিঃসত্যি...?
জান্নাতঃহুম সত্যি
আমিঃতাহলে চল বিয়া করে নেই দুজন

বিয়ের কথা বলতেই জান্নাত লজ্জায় মাথা নিচু
করে দিলো।লজ্জা মাখা মুখ খানা দেখতে অপরূপ
লাগছে।
------------------------
জান্নাতের লজ্জামাখা মুখ দেখতে যখন আমি ব্যস্ত
ঠিক সেই সময় উপর থেকে জল পড়লো।মনে
হচ্ছে আমি টাইটানিক জাহাজ থেকে ডুবে যাচ্ছি।
কিন্তু আমি তো জান্নাতের সাথে কথা বলছিলাম।
লাফ দিয়ে উঠতেই দেখলাম ভাবি বালতি নিয়ে
দাঁড়িয়ে আছে।তারমানে এতো সময় ধরে স্বপ্ন
দেখছিলাম।ধুর.......😤
-----------
ভাবিঃঘুম ভাঙলো তাহলে আপনার
আমিঃভাবি তুমি একটু দেরিতে ঘুমটা ভাঙাতে
পারলে না।মাত্র জান্নাত আমার ভালোবাসা
গ্রহন করেছে আর তুমি সব নষ্ট করে দিলে
ভাবিঃএতো স্বপ্ন দেখতে হবে না।ঘড়ির দিকে দেখ
কয়টা বাজে।পরে তো সারাদিন আমার মাথা খাবি
কেনো তোকে ডেকে দেয়নি।
ঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখি ৯টা বাজে।আল্লাহগো
আমার এতো ঘুম কোথা থেকে আসে।
ভাবিঃকিরে আমার কি জল দেয়া ভুল হয়ছে
আমিঃএকদমই না
ভাবিঃভুল হলে বল কাল থেকে আর ডাকবো না
আমিঃকেনো ডাকবে না।মনে রেখো তোমাদের বিয়ে
কিন্তু আমিই করিয়ে দিয়েছি
ভাবিঃহুহ পাইছিস তো সেই এক কথা এখন 
শাওয়ারে যা
আমিঃহুম
-----------------------------
না জানি ঘুমে মধ্যে আপনাদের কি থেকে কি
বলছি তাই আবার নতুন করে পরিচয় দেই।নামটা
ঠিকি আছে।কিন্তু আমি পড়াশোনা করি অনার্স
থার্ড ইয়ারে আর জান্নাত সেকেন্ড ইয়ারে।স্বপ্নের
মতো জান্নাত আমার নিজের মামাতো বোন হলেও
ও আমাকে একদম সহ্য করতে পারে না।আর
ভাইয়া আর ভাবির বিয়েটার কথা স্বপ্নে সঠিকটাই
বলছি তাই আর নতুন করে বলতে হবে না।

রুমে এসে রেডি হয়ে নিচে এলাম।
আমিঃআম্মু ভাইয়া অফিসে চলে গেছে নাকি
আম্মুঃহুম। কেনো
আমিঃনা এমনি।আর আব্বু দেশে আসবে কবে
আম্মুঃপরশু আসবে
তারপর নাস্তা করে বাইক নিয়ে কলেজে আসলাম।
অবশ্য সচরাচর বাইক কলেজে আনা হয়না।বেশির
ভাগ সময় রিক্সা করে কলেজে আসি।কারণ
জান্নাত বাইকওয়ালা ছেলে নাকি ওর পছন্দ হয়না।
কেনো করে না সেটা জানিনা।কিন্তু আজ দেরি
হওয়ায় বাইক নিয়ে আসলাম।
বাইকটা রেখে ক্যাম্পাসে ডুকতেই দেখলাম হারামিরা
বসে আছে।কাছে যেতেই জয় বলল....
জয়ঃকিরে আজ দেরি হলো যে
আমিঃএমনি
রাহুলঃদোস্ত ভাবি কিন্তু আজ প্রচুর রেগে আছে
আমিঃকেনো
রাহুলঃসেটা আমরা কি করে বলবো।তুই গিয়ে
জিজ্ঞাস করে নে তাহলেই তো হয়
আমিঃকিন্তু জান্নাত কোথায়
রাফিঃঐযে দেখছো মেয়েদের গ্রুপ সেখানে আছে
আমিঃঠিক আছে। তোরা থাক আমি আসছি
-----------------------
প্রিয়াঃভাইয়া আপনি এখানে(জান্নাতের বান্ধুবী)
আমিঃদেখতে আসলাম
রিয়াঃদেখা হয়ে থাকলে এবার যান
আমিঃএকটু কথা তো বলতে দাও।
জান্নাতের কাছে গিয়ে বসলাম.....
আমিঃশুনলাম আজ নাকি রেগে আছো?
জান্নাতঃ.........(নিশ্চুপ)
আমিঃকেনো রেগে আছো
জান্নাতঃ........
আমিঃকি হলো(কাদে হাত দিয়ে)
জান্নাতঃভালো লাগছে না
আমিঃকেউ কিছু বলছে
জান্নাতঃনা
আমিঃতাহলে
জান্নাতঃ..........(চুপ করে গেলো)
আমিঃআমি তোমার সাথে কথা বলছি আর তুমি
চুপ করে আছো কেনো(রেগে গিয়ে বললাম)
জোড়ে কথা বলাই জান্নাত একটু ভয় পেয়ে যায়।
জান্নাতঃতোকে বলবো কেনো,আর তুই যা এখান থেকে
আমিঃযাবোনা
জান্নাতঃঠিক আছে ওয়েট
তারপর জান্নাত ব্যাগ থেকে ফোন বের করে কাকে
যেনো কল দিতে লাগলো।
জান্নাতঃহ্যালো আব্বু
.....................
জান্নাতঃতোমার বোনের গুণধর ছেলে কিন্তু আবারো
আমাকে বিরক্তি করছে।গতকালের মতো আজকেও
কিন্তু আমি ওকে থাপ্পড় মারবো।
....................
জান্নাত কথা বলছে হঠাৎ গতকালের ঘটনা মনে
পড়তেই দিলাম এক দৌড়।সালি গতকাল যেভাবে
দুটো থাপ্পড় দিছে এখনো গালটা চিন চিন ব্যথা
করছে।দৌড়ে বন্ধুদের কাছে এলাম।
রাহুলঃকিরে সালা কুত্তার মতো দৌড়াচ্ছিস কেন
আমিঃযখন কেউ জানতে পারে সে নিশ্চিত মার
খাবে ঠিক তখন তার করনীয় কি
রাফিঃপালানো
আমিঃআমি ঠিক সেটাই করছি।
জয়ঃওহ।এখন চল ক্লাসে

তিনটা ক্লাস করে আমি একাই বাইরে চলে আসলাম।
কারণ জান্নাতের এখন ক্লাস নাই।আর ভিততের
ক্লাসের চাইতে বাইরের ক্লাস বেশি ইম্পরট্যান্ট 😁
বাইরে আসতেই দেখলাম জান্নাত মনমরা হয়ে
একা বসে আছে।তাই কাছে গেলাম।
আমিঃশুনেছি মন খারাপ থাকলে কারো সাথে
কথা বলতে হয়।তাহলে মন ভালো হয়ে যায়।আর
তা না করলে মন কেনো খারাপ সেটা কাছের
একজনকে বলতে হয়
জান্নাতঃতুই কি আমার কাছের মানুষ যে তোকে
বলতে হবে
আমিঃতো আমি দূরের কবে হলাম
জান্নাতঃভাই তোর পায়ে ধরি তুই প্লিজ যা
আমিঃযাবোনা
জান্নাতঃতাহলে আমি নিজেই যাচ্ছি(উঠে)
আমিঃশোন(হাত ধরে)
জান্নাতঃকিহহ
আমিঃআই লাভ ইউ মামাতো বোইন
জান্নাতঃঠাসসস ঠাসসস
নিয়মিত এটা।যখনি ভালোবাসি কথাটা বলি
তখনি গালে দুটা পরে।তবে প্রতিদিনের মতো
আজ তেমন জোড়ে মারলো না।হয়তো সত্যি
মন খারাপ।
---------------
গালে হাত দিয়ে বসে আছি এমন সময় হারামি
গুলো এসে হাজির।
জয়ঃখাইছিস
আমিঃহুম
জয়ঃকয়টা
আমিঃপ্রতিদিন যে কয়েকটা দেয়
জয়ঃওহ
সবাই মিলে আড্ডা দিতে লাগলাম।কারণ এখন
আমাদের ক্লাস নেই।হঠাৎ চোখ পড়লো সুমুর 
দিকে(জান্নাতের বেস্ট ফ্রেন্ড)।
আমিঃঐ সুমু এদিকে আয়
সুমুঃকি হয়ছে তাড়াতাড়ি বলো
আমিঃতোর এতো তাড়া কিসের রে
সুমুঃদেখো.....(থামিয়ে)
আমিঃতোর প্রতি ইন্টারেস্ট নাই
সুমুঃধুর তোমার সাথে কথা বলা ভুল
আমিঃআরে কই যাস
সুমুঃবাসায়
আমিঃকেনো
সুমুঃজান্নাত বাসায় চলে গেছে আমি এখানে
থেকে কি ঘোড়ার ডিম পারবো
আমিঃচলে গেলো কেনো
সুমুঃওর আম্মু বকা দিছে তাই
আমিঃএখন কি বাসায় গেছে
সুমুঃনা। ওর আন্টির বাসায় গেছে
আমিঃছোট আন্টির বাসায়
সুমুঃহুম
আমিঃঠিক আছে বোইন সাবধানে যাস

তারপর ক্লাসগুলো করে আমিও বাসায় চলে
আসলাম।বিকেলবেলা বন্ধুদের সাথে কিছু সময়
আড্ডা দিয়ে বাসায় চলে এলাম।
-----------------------
পরেরদিন.......
কলেজে গিয়ে জান্নাতকে খুঁজতে লাগলাম। কিন্তু
কোথাও পেলাম না।মেয়েটার যে রাগ অভিমান
মনে হচ্ছে ওর আন্টির বাসায় থেকে এখনো আসেনি।জান্নাতকে কল দিলাম কয়েকবার রিং
হচ্ছিলো কিন্তু ধরেনি।তাই মামাকে কল দিলাম।
আমিঃ আসসালামু আলাইকুম মামা
মামাঃ(সালামের উত্তর দিয়ে)তা কি মনে করে কল
দিলে ভাগ্নে
আমিঃজান্নাতকে মামি কি বলেছ
মামাঃসেটা আমি জান্নাতকে এবং ওর মাকেও
কয়েকবার জিজ্ঞাস করছি কিন্তু কেউ কিছু বলেনি
আমিঃআপনি এখন কোথায় মামা
মামাঃবাসায় আছি
আমিঃমামিকে ফোনটা দাও
মামাঃহুম
মামিঃহ্যা নিলয় বল
আমিঃমামি তুমি কি আমাকে ভালোবাসো?
মামিঃসেটা তুই জানিস না।আর কি হয়ছে সেটা
তোকে বলতে পারবো না
আমিঃসেটা জানতে চাইনি আমি।তুমি এখন জান্নাতকে
সরি বলে বাসায় নিয়ে আসো
মামিঃপ্রতিবার কি আমাকেই সরি বলতে হবে
আমিঃযদি আমাকে তোমার ছেলে মনে করো
তাহলে তোমাকে তাই করতে হবে
মামিঃঠিক আছে।তবে এটাই শেষ বলে রাখলাম
আমিঃআমার কিউট মামি

তারপর কল কেটে দিয়ে ভাবতে লাগলাম কি এমন
হয়েছে যেটা আমাদের কাউকে বলতে চাইছে না
তারা।কি এমন কথা থাকতে পারে।ধুর আজ
ক্লাসই করবো না।
ক্লাস না করেই বাসায় চলে আসলাম।বাসায় 
আসতেই ভাবি বলল....
ভাবিঃকিরে চলে আসলি যে
আমিঃএমনি ভালো লাগছে না
ভাবিঃশরির খারাপ?
আমিঃআরে না।আম্মু কোথায়
ভাবিঃরুমে আছে
আমিঃচলো ডার্লিং আমাদের কিউটিকে রাগাই আসি
ভাবিঃহিহিহিহি চল
-----------------------------
আমিঃহাই কিউটি
আম্মুঃতোরা এখানে কি মনে করে
ভাবিঃকেনো আমরা বুঝি আসতে পারি না
আম্মুঃসেটা কি বলছি
আম্মুর সাথে কিছু সময় কাটিয়ে রুমে এসে ঘুমিয়ে
গেলাম।বিকেলবেলা ঘুম ভাঙলেও আর বাসার
বাইরে যাওয়া হয়নি।
রাতে.......
জান্নাতকে কল দিতেই রিসিভ করলো
আমিঃকি করো জানু
জান্নাতঃপ্রেম করি
আমিঃআমার সাথে বুঝি
জান্নাতঃআমাকে কি পাগল কুত্তা কামড়াইছে
যে তোর সাথে প্রেম করবো
আমিঃঐ সালি এতো ভাব নিস কেনো?

চলবে............
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post