গল্পঃ ডেঞ্জারাস মামাতো বোন পর্ব ৩২ | Dangerous Mamato Bon Part 32

 

#ডেঞ্জারাস_মামাতো_বোন
(৩২তম পার্ট)
Writer:- SA Shaheen Alam
.
.
-- ইশশ, বড্ড দেরি করে বলেছে তোমাকে। আগে বললে হয়তো তুমি কিছু করতে পারতে কিন্তু এখন আর কিছু করতে পারবে না। (রিমি)
.
-- মানে.? (ভ্রু-কুঁচকে)
.
-- মানে আমি সত্যি-ই তোমাদের বিয়েটা হতে দিব না। (রিমি)
.
রিমির কথা শুনে তরী প্রচন্ড রেগে যায়। রাগে তরী হাত কাচলাতে থাকে। তরীর এমন অবস্থা দেখে রিমি বেশ মজা পায়। সে মুচকি মুচকি হাসতে থাকে। এতে তরী আরো রেগে যায় এবং রাগের মাথায় রিমির গালে ঠাস করে একটা চড় মারে.!
.
রিমিকে চড় মারার পর তরী বুঝতে পারে বড্ড ভুল করে ফেলেছে সে। তার রিমিকে চড় মারাটা ঠিক হয় নি। রাগকে কন্ট্রোল করা উচিত ছিল।
.
এদিকে,
চড় খেয়ে রিমি ভ্রু-কুঁচকে তরীর দিকে তাকিয়ে আছে। রিমির চোখে-মুখে রাগের আভা.! সে চোখ বড় বড় করে অগ্নিদৃষ্টিতে তরীর দিকে তাকিয়ে আছে। তরী রিমির এভাবে তাকানো দেখে ভয় পেয়ে গেল। সে কি করবে বুঝতে পারছে না। তাই চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো। আর রিমি তরীর দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
.
-- তুমি আমাকে চড় মারলে.? (রিমি)
.
-- আই'ম স্যরি, রিমি। রাগের মাথায় চড়টা মেরে দিয়েছি। প্লিজ, কিছু মনে করো না। আমাকে ক্ষমা করে দাও। (তরী)
.
-- ক্ষমা.? তোমার হাত আমি ভেঙে ফেলবো.! সাহস হলো কি করে আমাকে চড় মারার.? (রিমি)
.
রিমির কথা শুনে তরী আরো ভয় পেয়ে গেল। একদম জড়সড় হয়ে অপরাধীর মত মাথা নিচু করে রইলো। কিছু সময় চুপ থেকে আমতা আমতা করে রিমিকে বলল,
.
-- আমি স্যরি বললাম তো। (তরী)
.
-- তোমার স্যরি তোমার কাছেই রাখো। তোমাকে আমি পরে দেখে নিব। চড়টা হিসাবের খাতায় তোলা রইলো। সময়মত সুদ সমেত ফেরত দিয়ে দিব। (রিমি)
.
কথাটা বলেই রিমি উঠে দাঁড়ালো। চলে আসতে যাবে এমন সময় তরী পিছন থেকে বলল,
.
-- তুমি আমার সাথে এমন করছো কেন.? আমি কি দোষ করেছি.? আমি কি তোমার কোন ক্ষতি করেছি.? (তরী)
.
তরীর কথা শুনে রিমি পিছন ফিরে তাকালো। তারপর তরীর দিকে কিছু সময় তাকিয়ে থেকে শান্ত গলায় বলল,
.
-- তোমার কোন দোষ নেই। সব দোষ শাহিনের। (রিমি)
.
-- শাহিন আবার কি করেছে.? (তরী)
.
-- সেটা তোমার না জানলেও চলবে। (রিমি)
.
-- আচ্ছা, আমার একটা প্রশ্নের উত্তর দিবে.? (তরী)
.
-- বলো। (রিমি)
.
-- তুমি কি শাহিনকে ভালবাসো.? (তরী)
.
-- What.? তোমার কি মাথা খারাপ.? কি বলছো এসব। (রিমি)
.
তরীর কথা শুনে রিমি এমন রিয়েক্ট করলো যেন শাহিনকে ভালবাসা তো দূরে থাক, রিমি শাহিনকে চিনেই না। রিমি ভেংচি দিয়ে বলল,
.
-- শাহিনের মত ছেলেকে আমি ভালবাসবো.? অসম্ভব। (রিমি)
.
-- কেন শাহিনকে কি ভালবাসা যায় না.? (তরী)
.
-- না। শাহিনের মত অপদার্থ কে কেবল তোমার মত মেয়েই ভালবাসবে, আমি নই। (রিমি)
.
-- তাহলে তুমি কেন আমাদের পিছে লেগেছো.? আমাদের বিয়ে ভেঙে তোমার কি লাভ.? (তরী)
.
-- কোন লাভ নেই কিন্তু তবুও আমি এমনটা করবো। কারণ আমি তোমাকে পছন্দ করি না। (রিমি)
.
-- আমি তোমাকে বন্ধু ভাবি আর তুমি আমার সাথে শত্রুর মত আচরণ করছো.? (তরী)
.
-- তাহলে আজ থেকে তুমিও আমাকে শত্রু ভাবো। খেলাটা জমে উঠবে.! (রিমি)
.
কথাটা বলেই রিমি হনহন করে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। আর তরী হা করে রিমির চলে যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো। তার মাথায় কিচ্ছু ঢুকছে না। রিমি কেন এমন করছে তার উত্তর তরীর কাছে নেই।
.
তরী মনে মনে ভেবেছিল, রিমি শাহিনকে ভালবাসে তাই তাদের বিয়েটা হতে দিবে না। কিন্তু রিমি তো সাফ সাফ মানা করে দিল। তাহলে আর কি হতে পারে.?
তরী এসব ভাবতে ভাবতে ছাদে গেল। ছাদে গিয়ে দেখে শাহিন একা দাঁড়িয়ে আছে।
.
তরী পিছন থেকে শাহিন কে জড়িয়ে ধরলো। শাহিন চমকে উঠে। পিছন ফিরে তরীকে দেখে বলে,
.
-- কি ব্যাপার, আজ এত ভালবাসা দেখাচ্ছো কেন.? (আমি)
.
কথাটা বলে আমি ভাল করে তরীর দিকে তাকালাম। দেখি, তরী মুখ ভার করে মাথা নিচু করে আছে। তরীর মন খারাপ দেখে আমারও মনটা খারাপ হয়ে গেল। আমি তরীর থুতনিতে হাত দিয়ে মুখটা উচু করে ধরলাম। তারপর তরীর চোখে চোখ রেখে বললাম,
.
-- আজকে এমন খুশির দিনেও মুখ ভার করে আছো কেন.? কি হয়েছে.? (আমি)
.
-- রিমি আমাদের সাথে এমন করছে কেন.? (তরী)
.
-- কি করেছে.? (আমি)
.
-- রিমি নাকি আমাদের বিয়ে ভেঙে দিবে। (তরী)
.
-- তুমি আমাদের বিয়ে নিয়ে রিমির সাথে কথা বলেছো.? (আমি)
.
-- হুমম, একটু আগে বলেছি। শাহিন, আমার না খুব চিন্তা হচ্ছে। তুমি প্লিজ, কিছু একটা করো। (ভয়ার্ত কন্ঠে)
.
-- আরে ধুরর, চিন্তা করো নাতো। কিচ্ছু হবে না। রিমি ওসব মজা করে বলেছে। (আমি)
.
-- আমার সেরকম মনে হচ্ছে না। ঐ মেয়েটা একটা সাইকো। যে কোন কিছু করে ফেলতে পারে। (তরী)
.
-- আরে তেমন কিছু না। আসলে রিমিকে আমরা কেউ বুঝতে পারি না। ওর সাথে আমার এত বছরের পরিচয় তবুও ওকে আমি প্রতিদিন নতুন রূপে আবিষ্কার করি। ওর শুধু একটাই সমস্যা, রাগ বেশি। রেগে গেলে যা ইচ্ছা করে ফেলে। তুমি রিমির ওসব কথাকে পাত্তা দিও না। আমার বিশ্বাস, রিমি বিয়েতে কোন অঘটন ঘটাবে না। (আমি)
.
-- তাই যেন হয়। তবে রিমির আচরণ আমার কাছে ঠিক লাগছে না। আচ্ছা, রিমি কি তোমাকে ভালবাসে.? (তরী)
.
-- তোমার হটাৎ এমন কেন মনে হলো.? (অবাক হয়ে)
.
-- না, আসলে রিমি আর তুমি অনেক ক্লোজড তো তাই বললাম। (তরী)
.
-- রিমি আর আমি তো ছোটবেলা থেকেই এমন। তাছাড়া রিমি অন্য একজনকে ভালবাসে.! ছেলেটার নাম শোভন। কিন্তু শোভন রিমিকে ধোকা দিয়ে অন্য একটা মেয়েকে বিয়ে করেছে। (আমি)
.
-- কি বলো.! (চোখ বড় বড় করে)
.
-- সত্যি বলছি। তারপর থেকেই রিমি আরো বেশি খিটখিটে হয়ে গেছে। ভালো কথাও শুনতে পারে না। (আমি)
.
-- ওহ, সো স্যাড.! (মন খারাপ করে)
.
-- আচ্ছা, রিমির কথা এখন বাদ দাও। অন্যকিছু বলো। (আমি)
.
তরী কিছু বলতে যাবে এমন সময় নিচে থেকে আমাদের ডাক পড়লো। আমি আর তরী নিচে গেলাম। দেখি, সবাই এখন বাড়ি যাওয়ার জন্য রওনা দিবে। অতঃপর তরী এবং আঙ্কেল-আন্টির থেকে বিদায় নিয়ে আমরা সবাই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
.
.
.
পরের দিন সকাল বেলা একটু দেরি করেই ঘুম ভাঙলো। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি, ১০'টা বাজে। কি ব্যাপার এত বেলা পর্যন্ত ঘুমালাম অথচ রিমি আমাকে একবারও ডাক দিলো না। আজব ব্যাপার.!
.
আমি ফ্রেশ হয়ে ড্রইংরুমে গেলাম। দেখি, বাবা-মা কার সাথে যেন কথা বলছে। আমি সামনে এগিয়ে গেলাম। সোফায় দু'জন মধ্যবয়সী পুরুষ এবং মহিলা বসে আছে। মনে হয়, তারা স্বামী-স্ত্রী হবে।
আমি তাদের সালাম দিলাম। মা আমাকে দেখিয়ে উনাদের বললেন,
.
-- এটা আমার একমাত্র ছেলে, শাহিন.! (মা)
.
-- বাহ্.! আপনার ছেলে তো অনেক বড় হয়ে গেছে। (আঙ্কেল)
.
আমি সামান্য হাসলাম। তারপর মা'কে বললাম,
.
-- রিমি কোথায়, মা.? (আমি)
.
-- ওর ঘরে আছে। (মা)
.
তারপর আমি উনাদের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে রিমির ঘরে গেলাম। তবে এই মানুষ দু'টো কে চিনতে পারলাম না। কোনদিন দেখিও নি। হয়তো বাবার কলিগ হবে।
.
আমি এসব বাদ দিয়ে রিমির ঘরের সামনে গেলাম। দরজা খুলে ভিতরে যা দেখলাম, তা দেখার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।
.
দেখি, রিমির কোলে একটা ছেলে মাথা রেখে শুয়ে আছে আর রিমি ছেলেটার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। সত্যি বলতে, এমন অবস্থার জন্য আমি মোটেও তৈরি ছিলাম না। আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে। আমি চিৎকার করে রিমিকে ডাক দিলাম।
.
চলবে..... ??????
.
#প্রেম_বিশেষজ্ঞ
.
(বন্ধুরা, এখন শুধু রিমির খেলা দেখবেন। পুরো জমে ক্ষীর হয়ে যাবে। সাথে রিমি আর তরীর মর্ধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই তো থাকবেই। ইনশা আল্লাহ, পরের পার্টে আরো ধামাকা ওয়েট করছে আপনাদের জন্য.!
.
আজকের পার্ট টা কেমন হয়েছে কমেন্টে বলেন। অবশ্যই গঠনমূলক কমেন্ট করে উৎসাহ দিবেন। গল্প কেমন হয়েছে বা কি করলে আরো ভালো হবে এসব বিচার করার দায়িত্ব আপনাদের। ছোট করে রিভিউ দিবেন।
নেক্সট পার্ট কাল অথবা পরশু দিব।)
ধন্যবাদ সবাইকে.!
হ্যাপি রিডিং... ♥♥♥
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post