গল্প/::: অফিসের বস যখন বউ।
*
*
* লেখক/::;: রাসেল চৌধুরী
*
* পর্ব/::::; ( সাত × আট ) :::; ( ৭+৮ ) এবং শেষ।
*
*
*
*
*
* কিছুক্ষণ পর প্রেমা এসে দরজা খুলে দিলো। আমার হাত ধরে ভিতরে ঢুকিয়ে দরজা লাগিয়ে , রুমে নিয়ে আসলো। তার পর এমন কিছু করবে, সেটা আমি কখনো ভাবিনি।
প্রেমা আমাকে রুমে ঢুকিয়ে জড়িয়ে ধরে ঠোঁটের সাথে ঠোট লাগিয়ে দিলো। দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে কিস করতে লাগলাম। প্রায় পাঁচ মিনিট পর ছেড়ে দিলাম।
প্রেমা/: তোমাকে ছাড়া ঘুম আসছে না। এখন আমাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়ো।
আমি/: আরে তোমার আব্বু আম্মু আমাকে দেখলে কি বলবে।
প্রেমা/; সমস্যা নেই, আমি তোমাকে সকাল ভোরে ঘুম থেকে জাগিয়ে দিবো।
আমি/: ঠিক আছে। এখন বলো ফারহান এর সাথে আর কথা হয়েছে।
প্রেমা/: হয়েছে। আমি অফিস থেকে ওকে ফোন দিয়ে বলেছি, তোমাকে অফিস থেকে বের করে দিছি। কয়দিন পর ডিভোস পেপার পাঠিয়ে দিবো।
আমি/: তখন ফারহান কি বললো।
প্রেমি/: সে বলছে, আমি অনেক ভালো করেছি, । তোমাকে বের করে দিয়ে। এখন আমাকে বিয়ে করে নতুন করে সংসার শুরু করবে।
আমি/: ওকে ভালো করে বিয়ে করাবো। ওকে উচিত শিক্ষা না দেওয়া পর্যন্ত আমার মন শান্তি হবে না।
প্রেমা/: নদীর সাথে তোমার কি কথা হয়েছে।
আমি/: হুম। তার পর সবকিছু খুলে বললাম।
প্রেমা/: তাহলে তো ভালোই। তুমি যদি গতকাল রাতে , আমাকে ওই কথা গুলো না বলতে। তাহলে আমি এসব ব্যাপারে জানতাম না। ফারহান ছেলেটা কে অনেক ভালো মনে করছি।
আমি/: হুম। আর তোমাকে কালকে থেকে কিছু লোক প্রো করবে, তোমার নিরাপত্তার জন্য। ফারহান যাতে কিছুই বুঝতে না পারে। ওকে তোমার শরীরের টাচ করতে দিবে না কখনো।
প্রেমা/: আমি ভুলেও ওকে আমার হাত ধরতে দিবো না। আমি বলবো যা হবে বিয়ের পর।
আমি/: ঠিক আছে, এখন ঘুমিয়ে পড়ো।
তার পর প্রেমা আমাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়লো।
দেখতে দেখতে দশটা দিন চলে গেল। এখন আমি নদীদের অফিসে কাজ করি। নদীর আব্বু্ আমার কাজ দেখে অনেক খুশি হয়েছে। আর আমার বিয়ের কথা জেনে গেছে।
আমি বলছি আরো কিছুদিন পরে ডিভোস দিয়ে দিবো প্রেমা কে। তিনি মেয়ের সুখের কথা ভেবে রাজি হয়ে গেল।
নদী আমাকে জড়িয়ে ধরতে আসলে। আমি তাকে বলি বিয়ের পর সবকিছু করতে। তাই নদী আর জোর করে না।
আর ওদিকে প্রেমা ফারহানের সাথে , আমার কথা মতো কাজ করে যাচ্ছে। লোক গুলো সবসময় প্রেমার আশে পাশে থাকে।
প্রেমার সাথে প্রতিদিন রাতে ফোনে কথা হয়।
দেখতে দেখতে আরো একটা মাস চলে গেছে। আমাদের কাজ সব হাতের মুঠোয় নিয়ে আসছি। সবকিছু কিছুক্ষণ পর জানতে পারবেন।
হঠাৎ নদী আমার কেবিনে আসলো । একটা চেয়ারে বসে বললো।
নদী/: আমার জান টা কি করে।
আমি/; দেখতেই তো পারছো। কাজ করছি।
নদী/: তুমি আমার সাথে এভাবে কথা বলছো কেন।
আমি/: আমি আবার কি ভাবে কথা বললাম। তুমি তো দেখতেই পারছো কাজ করছি।
নদী/: ঠিক আছে। তুমি কাজ করো। আমি আমার কেবিনে গেলাম।
আমি/: আরে রাগ করছো কেন। আমি একটা জায়গায় মিলাতে পারছি না। তাই মাথা গরম ছিল। এখন মিলাতে পারছি। প্লিজ তুমি রাগ করো না। তুমি রাগ করলে পেত্নীর মত লাগে।
নদী আমার কথা শুনে বললো।
নদী/: কি আমাকে পেত্নীর মতো লাগে। আজকে তোমাকে মেরেই ফেলবো।
আমি/: সরি সরি আর বলবো না। এখন এখানে তোমার একটা সাইন করে দাও।
নদী/: দাও , দিচ্ছি।
আমি/: ফাইল টা একটু দেখে সাইন করো।
নদী/: দেখা লাগবে না।
আমি মনে মনে বললাম। নদী তুমি জীবনের ভুলটা আজকে করলে। ফাইল টা একটুও দেখলে না। নদী সাইন করে , কিছুক্ষণ আমার সাথে দুষ্টুমি করে, নিজের কেবিনে চলে গেল।
আর ওদিকে প্রেমা আর ফারহান রেস্টুরেন্টে বসে কথা বলছে। চলুন দেখি তারা কি কথা বলছে।
ফারহান/: প্রেমা চলো আমরা দুজন বিয়ে করে ফেলি। আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারছি না।
প্রেমা /: ঠিক আছে, কালকে কাজি অফিসে বিয়েটা সেরে নিবো। তবে বাচ্ছা হওয়ার আগে, আমাদের মাঝে কিছুই হবে না।
ফারহান/: ঠিক আছে, তুমি যা বলবে, তাই হবে।
ফারহান মনে মনে বলতে লাগলো। আগে বিয়েটা হয়ে যাক। তার পর তোমাকে জোর করে ভোগ করবো।
প্রেমা/: ওকে আজকে আমি বাসায় যাই। কালকে *** এই কাজি অফিসে চলে আসবে। বিকাল পাঁচটায় আসবে। আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করবো।
ফারহান/: আচ্ছা ঠিক আছে।
প্রেমা রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে গাড়ি নিয়ে সোজা বাসায় চলে আসলো।
রাতে প্রেমা আমাকে ফোন দিলো।
আমি/: কেমন আছো। কি করো।
প্রেমা/:: আমি ভালো থাকি কি করে তোমাকে ছাড়া।
আমি/:: আর দুই তিন টা দিন ধৈর্য্য ধরো। তার পর আবার আগের মতো থাকতে পারবে।
প্রেমা/: আজকে আমি ফারহান কে বিয়ের কথা বলার আগে। ফারহান নিজেই বললো। আমি তাকে কালকে কাজি অফিসে আসতে বলছি।
আমি/: ওকে সমস্যা নেই। আমি কাজির সাথে কথা বলে সবকিছু ঠিক রাখতে বলছি।
প্রেমা/; ঠিক আছে। এখন বলো, ওদিকের কি খবর।
আমি/: আজকে আমার কাজ শেষ হয়েছে। নদীর থেকে সাইন নিয়ে নিছি। এখন শুধু তোমার টার অপেক্ষা। ওটা হাতে আসলে। আমাদের কাজ শুরু হয়ে যাবে।
প্রেমা/: আমার না ভয় হচ্ছে। যদি উল্টা পাল্টা কিছু হয়ে যায়।
আমি/: আরে কিছুই হবে না। আমি আছি তো তোমার পাশে।
প্রেমা/: আচ্ছা কালকে কথা বলবো। ফারহান ফোন দিচ্ছে।
আমি/: ঠিক আছে বায়।
এবলে আমি ফোন কেটে দিলাম। আর ওদিকে প্রেমা ফারহান এর ফোন রিসিভ করার পর ফারহান বললো।
ফারহান/: কি ব্যাপার, তুমি কার সাথে কথা বলছিলে।
প্রেমা/: আরে আমার অফিসের ম্যানেজার আনকেল ফোন দিছে। অফিসের কাজের ব্যাপারে কথা বলছি।
ফারহান/: ওহ, তা এখন কি করো। খাওয়া দাওয়া করছো।
প্রেমা/: খাওয়া দাওয়া হয়েছে, আর এখন তোমার সাথে কথা বলছি। তোমার খাওয়া দাওয়া হয়েছে।
ফারহান/: হুম হয়েছে।
তার পর তারা আরো কিছুক্ষণ কথা বলে ফোন কেটে দিলো। প্রেমা ঘুমিয়ে পড়লো।
আসুন আপনাদের সাথে কিছু কথা বলি।
প্রেমা কে আমি প্রথমে কষ্ট দিবো মনে করছি। কিন্তু পরে ফারহান আর নদীর পরিবারের ব্যাপারে কিছু কথা বলার পর, প্রেমা রাজি হয়ে যায়। আর আমি কাজ টা একা করতে পারবো না। তাই প্রেমার সাথে শেয়ার করি। প্রেমা আমার কথায় রাজি হয়ে যায়।
রাজি হওয়ার কারনে, , তাকে কষ্ট দিই নি। পরে আমরা একটা প্লান করি। কি প্লান করছি, তা দুই দিন পর জানতে পারবেন।
ফারহান আর নদীকে নকল একটা ডিভোস পেপার দেখালাম। তারা মনে করছে আমাদের মধ্যে ডিভোস হয়ে গেছে।
এবার চলুন ফারহান আর নদীর মধ্যে কি হচ্ছে।
ফারহান/: কি ব্যাপার নদী, তুমি এখন আমার সাথে আগের মতো কথা বলো না কেনো।
নদী): তুমি আমাকে ভুলে যাও ফারহান। আমি রাসেল কে ভালোবেসে ফেলেছি। ওকে আমার মনের ভেতর জায়গা দিয়ে দিছি।
ফারহান): এটা তুমি কি বলছো। আমাদের আজ এক বছরের রিলেশন। আর তুমি এখন কি বলছো। তোমার সাথে মিলে, রাসেল আর প্রেমার সংসার ভাঙ্গছি। আর এখন তুমি কি বলো।
নদী/: সেটার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। তুমি প্রেমা কে বিয়ে করে নাও। আমি রাসেল কে বিয়ে করে নি।
ফারহান/: আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না।
নদী/: তুমি কেমন ছেলে। আমার ভালো করে জানা আছে। তুমি মেয়েদের ফাঁদে ফেলে, তাদের জীবন টা নষ্ট করে, নতুন আরেকটা ধরো।
ফারহান/: বাহ বাহ, তুমি আমার কথাই বললে। তুমি কেমন মেয়ে। সেটা আমি জানি না। তুমি সিহাবের সাথে কি করছো। আমি সবকিছু জানি।
নদী/: ওর সাথে তো মিথ্যা প্রেমের অভিনয় করছি। একমাত্র তাদের সম্পতির লোভে। তাই ওর থেকে সবকিছু নিয়ে, রাস্তায় নামিয়ে দিছি।
ফারহান/: ওহ, তার মানে আমার সাথেও এমন কিছু করতে তাই না। কিন্তু আমার কিছুই তুমি নিতে পারলে না।
নদী/: হুম ঠিকই ধরেছিস। এখন ফোন রাখ। তোর সাথে কথা বলতে আমার ভালো লাগে না।
এ বলে নদী ফোন কেটে দিলো। আর ফারহান মনে মনে বলতে লাগলো।
আরে নদী তুই কি মনে করেছিস। আমি তোকে হাড়ে হাড়ে চিনি। তাই তোর সাথে আমিও প্রেমের অভিনয় করে গেছি। এখন প্রেমা কে বিয়ে করে তাদের সব সম্পত্তি দখল করে নিবো।
তার পর প্রেমা কে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাসা থেকে বের করে দিবো।
পরের দিন বিকালে কাজি আমার কথামতো সবকিছু ঠিক করে রেখেছে। প্রেমা আর ফারহান সাইন করলো। কিন্তু ফারহান সাইন করার আগে পেপার টা পড়ে দেখলো না।
তার পর প্রেমা আর ফারহান কাজি অফিস থেকে বেরিয়ে যে যার বাসায় চলে আসলো। আর এদিকে আমি নিজের কেবিনে ক্যামেরা সিটিং করে নদীকে আমার কেবিনে আসতে বললাম।
কিছুক্ষণ পর নদী আমার কেভিনের ভিতরে ঢুকে একটা চেয়ারে বসলো। তখন নদী বললো।
নদী/: বলো , কেনো ডেকেছো আমাকে।
আমি/: আচ্ছা নদী, তুমি আমার কাছে একটা সত্যি কথা বলবে।
নদী/: কি কথা বলো।
আমি/: তুমি কি সিহাব নামে কাউকে চিনো।
নদী/: সিহাব নামে আমি একজন কে চিনতাম। কেনো বলোতো।
আমি/: তুমি কি সিহাব কে ভালোবাসতে।
নদী/: হুম আমি ওকে ভালোবাসতাম। তবে এখন আর ভালোবাসি না। এখন তোমাকে ভালোবাসি। ওর কথা আমি ভুলেই গেছি।
আমি/: তুমি কি তাকে সত্যি কারের ভালোবেসেছো।
নদী/: আসলে আমি তাকে সত্যি কারের ভালোবাসি নাই। তার সাথে প্রেমের অভিনয় করে, তাদের সব সম্পত্তি দখল করে নিয়েছি।
আমি/: তুমি এটা ওর সাথে করলে কেন। এটা কি তুমি একাই করেছো।
নদী): এটা আমি একা করি নাই। সাথে আমার বাবাও ছিলো। আর ওর সাথে এটা করার কারন। সে মেয়েদের নিয়ে মজা করতো, বেশি ভাব দেখাতো। তাই ওর সাথে প্রেমের অভিনয় করে , আমি আর আব্বু ওদের সবকিছু নিয়ে রাস্তায় নামিয়ে দিছি।
আমি): তাই বলে এমন টা করবে ওর সাথে।
নদী/: করেছি বেশ করেছি। আচ্ছা তুমি ওর কথা বলছো কেন। তুমি কি সিহাব কে চিনো।
আমি/: আমি ওকে চিনি না। গতকাল রাস্তায় হঠাৎ আমার গাড়ির সামনে এসে ধাক্কা খায়। তখন আমি তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। তার পর আমাকে এ কথা গুলো বললো।
নদী/: ওর কথা তোমাকে চিন্তা করতে হবে না। এখন আমাদের বিয়ের ব্যাপারে চিন্তা করো।
আমি/: ঠিক আছে। কালকে আমি আব্বু আম্মু কে নিয়ে তোমাদের বাসায় যাবো। বিয়ের কথাবার্তা বলতে।
নদী/: ঠিক আছে। এখন আমি কেবিনে গেলাম। হাতে কিছু কাজ আছে।
আমি): ওকে যাও।
নদী আর কোনো কথা না বলে কেভিন থেকে বেরিয়ে গেলো। আমি বসে বসে কাজ করতে লাগলাম।
সন্ধ্যায় গাড়ি নিয়ে আমি সোজা ফারহান এর বাসায় চলে গেলাম। কলিং বেল চাপ দেওয়ার পর একজন কাজের লোক এসে দরজা খুলে দিলো। আমাকে দেখে বললো।
কাজের লোক/; কাকে চাই।
আমি/: আমি ফারহানের আব্বুর সাথে একটু কথা বলতে চাই।
কাজের লোক/: ঠিক আছে। আপনি ভিতরে সোফায় বসুন। আমি সাহেব কে ঠেকে দিচ্ছি।
এ বলে কাজের লোক ভিতরে চলে গেল। আমি ভিতরে ঢুকে সোফায় বসলাম। কিছুক্ষণ পর ফারহানের আব্বু আসলো। আমাকে দেখে বললো।
ফারহাননের আব্বু/: তুমি কে, তোমাকে তো চিনতে পারলাম না।
আমি/: আমাকে আপনি চিনবেন না। শুধু আপনাকে কিছু কথা জিজ্ঞেস করতে আসলাম।
ফারহানের আব্বু/: কি কথা বলো।
আমি/: শিল্পপতি নাজমুল হাসান কে চিনেন আপনি।
ফারহান আব্বু/: হুম চিনি। ও আমার বন্ধু ছিলো। সে তো এখন বেঁচে নেই।
আমি/: ওনাকে তো আপনি মেরেছেন। আপনার কারনে ওনি মরতে বাধ্য হলো। কেনো করেছেন ওনার সাথে এমন কিছু। আপনি ওনার বন্ধু ছিলেন। বন্ধু হয়ে বন্ধুর ক্ষতি করতে আপনার একটুও কষ্ট হয়নি।
ফারহান আব্বু/: করেছি বেশ করেছি। সে আমার থেকে ওপরে ওঠাতে চাইছে, তাই ওকে রাস্তায় বসিয়ে দিলাম।
আমি/: এখন যদি আপনার নামে, আমি থানায় মামলা করি। তখন আপনার কি হবে।
ফারহান আব্বু/: প্রমান শাক্ষি ছাড়া পুলিশ আমার কিছুই করতে পারবে না। আর আমার হাত মন্ত্রী পর্যন্ত আছে। তুমি আমার কিছুই করতে পারবে না।
আমি/: আমি আপনাকেও দেখে ছাড়বো।
ফারহান আব্বু/: তোর সাহস তো কম না। তুই আমার বাড়িতে এসে আমাকে হুমকি দিচ্ছিস। আমি চাইলে এখনি তোকে থানায় ভরে দিতে পারি। কিন্তু আমি তা করবো না। তুই এখনি আমার বাসা থেকে বেরিয়ে যা।
আমি/: ঠিক আছে, আমি চলে যাচ্ছি। তবে আমি আবার আসবো, ।
এ বলে আমি বাসায় চলে আসলাম। রাতে আব্বু আম্মুর সাথে খাবার খাওয়ার সময় আব্বু বললো।
আব্বু/: কিরে তোর কাজ কতোটুকু আগালো।
আমি/: আব্বু কালকে সব শেষ হয়ে যাবে। আমাদের কাছে সব প্রমান চলে এসেছে।
আম্মু/: রাইসা ফোন করে বললো। সামনের শুক্রবার বাসায় আসবে।
আমি/; ওহ। ওরা কি বাহির থেকে বাংলাদেশে আসছে।
আম্মু/: না হ, কালকে আসবে বলছে। তোর মোবাইলে ফোন দিছি, কিন্তু তোকে বিজি পাইছে। তাই আমার মোবাইলে ফোন দিয়ে বলেছে।
আমি/: রাইসার সাথে কথা হয়না, আজ দুই দিন হয়েছে। কি করবো বলো । ওদিকের কাজ করে সময় পাইনা।
আব্বু/: ওটা সমস্যা নেই। তো কালকে পুলিশ সাথে করে নিবি।
আমি/: হুম আব্বু।
তার পর খাওয়া দাওয়া করে রুমে চলে আসলাম। বিছানায় শুয়ে প্রেমা কে ফোন দিলাম। ফোন দেওয়ার সাথে সাথেই রিসিভ করলো।
আমি): আমার জানুটা কেমন আছে।
প্রেমা): তোমাকে ছাড়া , ভালো থাকি কি করে।
আমি/: কালকে থেকে তো আমার সাথে থাকবে। আজকে রাত টা কষ্ট করো। তা কাগজ পত্র সবগুলো আনছো।
প্রেমা/: হুম, সব আমার সাথে আছে। আর ফারহানের সাথে আমি একটা ভিডিও করছি। ও আগে কার সাথে কি করছে, সবকিছু আমাকে খুলে বলছে। আমি বলেছি, তার কথা শুনে আমি তাকে ছেড়ে যাবো না। তার পর সবকিছু খুলে বলছে।
আমি/: খুব ভালো করছো। কালকে সকালে বাসায় চলে আসবে। তোমাকে নিয়ে আর সাথে পুলিশ নিয়ে ফারহান আর নদীর বাসায় যাবো।
প্রেমা/: আমার মন বলছে, এখনি তোমার বাসায় চলে আসতে।
আমি/: না জানু। রাতটা কষ্ট করে কাটিয়ে সকালে চলে এসো।
প্রেমা/: ঠিক আছে।
তার পর আরো কিছুক্ষণ কথা বলে ঘুমিয়ে পড়লাম। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠতে বুকটা কেমন ভারি লাগছে। চোখ খুলে দেখি যাকে দেখলাম, তাকে দেখে তো অবাক হয়ে গেলাম। হুম ঠিকই ধরেছেন প্রেমা।
আমি উঠতেই প্রেমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। তখন আমি তাকে বললাম।
আমি/: প্রেমা তুমি কখন আসলে।
প্রেমা): আমি সকাল ভোরে চলে এসেছি। তোমাকে ছাড়া ভালো লাগছে না। তাই চলে আসলাম।
আমি/: ঠিক আছে, এখন ওঠো। আমি ফ্রেশ হবো।
প্রেমা/: আরেকটু থাকো না। অনেক দিন পর তোমাকে জড়িয়ে ধরলাম।
আমি/: ঠিক আছে থাকো। এখন বলো আব্বু আম্মু কি জানে তুমি বাসায় এসেছো।
প্রেমা/: আম্মু তো দরজা খুলে দিলো।
আমি/: তোমার আব্বু আম্মু জানে। তুমি আমার কাছে আসবে।
প্রেমা): তারা কেউ যানে না। শুধু দারোয়ান চাচা জানে।
আমি/: ওহ।
প্রেমা আমাকে কিছুক্ষণ জড়িয়ে ধরার পর দুজনে ফ্রেশ হয়ে সবার সাথে নাস্তা করে বেরিয়ে পড়লাম থানার উদ্দেশ্যে। থানায় এসে একজনের কেভিনের ভিতরে ঢুকে গেলাম।
আমি/: ওসি সাহেব আপনার সাথে কিছু কথা ছিলো। আপনি আপনার বউকে কেমন আদর করেন।
ওসি আমার দিকে তাকিয়ে, বললো।
রকি/: ওই হারামি, ভাবীর সামনে এমন কথা বলতে লজ্জা করে না।
আমি/: তুই তো জানিস, আমার লজ্জা নেই।
রকি/: চুপ হারামী। ভাবী কেমন আছেন।
প্রেমা): আমি ভালো আছি। তুমি কেমন আছো।
রকি/: আমিও ভালো আছি। তো বলুন কি খাবেন।
প্রেমা/: আমরা কিছু খাবো না।
রকি/: এ কথা বললে তো হবে না। আপনি এই প্রথম আমার থানায় আসলেন। একটা কিছু তো খেতে হবে।
প্রেমা): শুরু কপি হলে চলবে।
তার পর রকি একজন কনস্টেবল কে বললো। তিন টা কফি নিয়ে আসতে। কিছুক্ষণ পর কনস্টেবল কফি নিয়ে আসলো।
তিন জনে কফি খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম। সাথে আরো কিছু পুলিশ নিয়ে বের হলাম। রকি হচ্ছে আমার কলেজ ফ্রেন্ড। কিছুদিন আগে সে ওসির পদ ফেয়েছে। তার সাথে মাঝে মাঝে যোগাযোগ হতো।
এবার যেতে যেতে আসল ঘটনা আপনাদের খুলে বলি। একদিন আমি অফিস থেকে বেরিয়ে এসে বাসায় যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে একটা ছেলেকে দেখে গাড়ি দাঁড় করাই।
আমি ছেলেটা কে দেখি মাথা নিচু করে বসে আছে। তখন আমি তাকে বললাম।
আমি/: কি হয়েছে তোমার। তুমি এভাবে মাথা নিচু করে বসে আছো কেন।
ছেলেটা মাথা ওঠার সাথে সাথে আমাকে দেখে বললো।
সিহাব/: আরে রাসেল তুই। তোর সাথে অনেক দিন পর দেখা।
আমি/: আমার কথা বাদ দেয়। কিন্তু তুই এখানে এভাবে বসে আছিস কেন।
সিহাব/: এটা আমার কপালে লেখা ছিলো।
আমি/: কি হয়েছে আমাকে খুলে বল। তোর জামা কাপড় এর এই অবস্থা কেনো।
সিহাব/: তাহলে শুন। আমি নদী নামে একটা মেয়েকে ভালোবাসতাম। মেয়েটা আমার সাথে প্রেমের অভিনয় করে, আমাদের সব সম্পত্তি দখল করে নেয়। আমি তাকে অনেক বিশ্বাস করছিলাম। কিন্তু সে আমার সাথে এমন কিছু করবে। আমি কখনো ভাবি নি।
আমি/: এটা তোর পাপের ফল। তোর যে সময় সবকিছু ছিলো। তখন তুই মানুষের সাথে কেমন আচরণ করতি। সে জন্য আল্লাহ তোর সাথে এমন করছে। এখন বল তোর আব্বু আম্মু কোথায়।
সিহাব/: আমার বাবার বন্ধু জাহিদ খান। আব্বুর অফিস নিজের নামে করে নেওয়ার পর, আব্বু হার্ড এটাক করে মারা যায়। এরপর শেষ সম্বল ছিলো,আমাদের বাড়িটা, এটা নদী এবং তার বাবা মিলে আমার থেকে দখল করে নেয়। কারন বাড়িটা আমার নামে ছিলো। কিছুদিন পর আব্বু অফিস টা আমার নামে করে দিলেও। কিন্তু তার আগে জাহিদ হাসান আমার আব্বুর থেকে নিয়ে যায়।
আমি/: সবকিছু হারিয়ে এখন কি করছিস।
সিহাব/: একটা ছোট বাসা ভাড়া নিয়ে, আম্মু আর থাকতাম। তার পর একটা অফিসে চাকরি নি। কিন্তু সে জায়গায় নদী, আমার নামে নানান কথা বলে বসের কাছে। তার পর আমাকে অফিস থেকে বের করে দেয়। চাকরির জন্য অনেক জায়গায় ঘুরছি, কিন্তু কোথাও চাকরি পাইনি। নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছি, কিন্তু আম্মুর কথা চিন্তা করে পারলাম না। পরে এই রাস্তার কাগজ বোতল এগুলো টোকাই বিক্রি করে , কোনো রকম চলি। এখন আম্মু অনেক অসুস্থ, ডাক্তার বলেছে, আম্মুর চিকিৎসা করাতে অনেক টাকার প্রয়োজন। কিন্তু আমি টাকা কোথায় থেকে ব্যবস্থা করবো। তাই এখানে বসে চিন্তা করতে লাগলাম।
আমি/: এখন দেখছিস, যে সময় তোর সব কিছু ছিলো। তখন গরীবদের মানুষ মনে করতি না। আর এখন সবকিছু হারিয়ে রাস্তায় বোতল কাগজ কুড়িয়ে চলতে হয়।
সিহাব/: হুম ঠিকই বলেছিস। তোকে দেখে মনে হচ্ছে, অনেক টাকা পয়সার মালিক হয়ে গেছিস। আমাকে কিছু টাকা দিবি, আর একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিবি। আমি চাকরি করে তোর সব টাকা দিয়ে দিবো।
আমি /: ঠিক আছে, তুই আমার গাড়িতে উঠ। আগে তোর আম্মুকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। তার পর তোর ব্যবস্থা করবো।
তার পর সিহাব কে গাড়িতে উঠিয়ে, তার ভাড়া বাসায় চলে গেলাম। বাসায় এসে দেখি সিহাব এর আম্মু কেমন করে শুয়ে আছে।
আমি দেখে অনেক মায়া লাগলো। তার পর আমি আর সিহাব ওর আম্মু কে গাড়িতে উঠিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দিলাম। ডাক্তার কে বলেছি, ওনার চিকিৎসা করাতে যতো টাকা লাগে আমি দিবো।
তার পর ডাক্তার সিহাব এর আম্মুর চিকিৎসা শুরু করলো। সিহাব তার আম্মুর সাথে আছে। এখন তার আম্মু কিছুটা সুস্থ আছে। এই ছিলো আসল ঘটনা।
এবার বাস্তবে ফিরে আসি। আমি প্রেমা আর রকি নদীদের বাসায় চলে আসলাম। নদী জানে আজকে তাকে দেখার জন্য আমার আব্বু আম্মু আসবে। কিন্তু সে তো জানে না, আজকে ওকে আর ওর বাবাকে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দিবো।
আমরা নদীদের বাসায় চলে আসলাম। কলিং বেল চাপ দেওয়ার পর কাজের বুয়া দরজা খুলে দিলো। আমরা কাজের বুয়ার কোনো কথা না শুনে ভিতরে ঢুকে গেলাম।
আমরা ভিতরে ঢুকে দেখি নদীর আব্বু্ সোফায় বসে আছে। আমাকে এবং আমার সাথে পুলিশ দেখে বললো।
নদীর আব্বু্): আরে রাসেল তুমি। তা তোমার আব্বু আম্মু কোথায়। তোমার সাথে মেয়েটা এবং পুলিশ কেনো।
আমি/: এরা আপনাকে এবং আপনার মেয়েকে ধরতে এসেছে।
নদীর আব্বু্/: আমাদের অপরাধ কি।
আমি/: আপনি আর আপনার মেয়ে নদী। অভিনয় করে সিহাবের বাড়ি দখল করে নিয়েছেন। সে জন্য পুলিশ আপনাদের ধরতে এসেছে।
নদীর আব্বু্/: তুমি হয়তো জানো না। পুলিশ প্রমান ছাড়া কাউকে ধরতে পারে না।
রকি/: আমরা প্রমান ছাড়া , আপনাকে এবং আপনার মেয়েকে ধরতে আসি নাই। প্রমান নিয়ে এসেছি। আর এই রাসেল আপনাদের নামে থানায় মামলা করছে।
হঠাৎ নদী রুম থেকে বেরিয়ে এসে বললো।
নদী/: রাসেল এখানে কি হচ্ছে। আর প্রেমা তুই এখানে, সাথে দেখি পুলিশ এসেছে।
প্রেমা/: পুলিশ এমনে আসে নাই। তোকে আর তোর বাপকে থানায় নিয়ে যেতে এসেছে।
নদী/: আমাদের অপরাধ।
আমি/: তোরা কি অপরাধ করছিস, এই দেখ।
তার পর নদী আমার সাথে যে কথা বললো। সবগুলো দেখালাম। তখন নদী বললো।
নদী/: রাসেল তুমি আমার সাথে বেইমানি করলে। আমি তোমাকে বিশ্বাস করে সবকিছু খুলে বলছি।
আমি/: বিশ্বাস তো আমার ফ্রেন্ড সিহাব ও তোদের করেছে। বিনিময়ে তোরা কি করছিস ওর সাথে। তার শেষ সম্বল বাড়িটাও নিয়ে নিলি, তুই আর তোর বাপ।
নদীর আব্বু্/: চিন্তা করিস না নদী। আমাদের থানায় বেশিক্ষণ আটকিয়ে রাখতে পারবে না। টাকা দিলে এমনে আমাদের ছেড়ে দিবে।
আমি/: আপনি ভুল ভাবছেন। কারন এখন আপনাদের কিছুই নেই। আমি জানি আপনার সব সম্পদ এর মালিক নদী। তাই ওর কাছ থেকে সবকিছু সাইন করে নিয়ে নিছি। এখন আপনি রাস্তার ফকির। আপনারা যে ভাবে সিহাব থেকে অভিনয় করে সব সম্পত্তি দখল করে নিছেন। আমিও আপনার মেয়ের সাথে অভিনয় করে সবকিছু লিখে নিচি।
নদী/: আমাদের কি ক্ষমা করে দাওয়া যায় না। আমরা আর এমন ভুল কখনো করবো না।
আমি/: আমি কেনো , সিহাব ও তোদের ক্ষমা করবে না। রকি তাদের নিয়ে যা।
রকি/: এই এদের থানায় নিয়ে চলো।
রকির কথা মতো পুলিশ নদী আর নদীর বাবাকে ধরে নিয়ে বাহিরে চলে গেল।
বাহিরে আসার পর, গাড়ি নিয়ে ফারহানের বাসায় যেতে লাগলাম। সাথে নদী আর নদীর বাপ ছিলো।
কিছুক্ষণ পর আমরা তাদের বাসায় চলে আসলাম। আমরা সবাই দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কলিং বেল চাপ দিলাম, কাজের বুয়া এসে দরজা খুলে দিল। এখানে ও কোনো কথা না বলে ভিতরে ঢুকে গেলাম।
ভিতরে ঢুকে দেখি বাপ ছেলে সোফায় বসে কফি খাচ্ছে আর গল্প করছে। আমাদের দেখে ফারহান বললো।
ফারহান/: আরে প্রেমা, তুমি হঠাৎ আমাদের বাসায়। আবার সাথে দেখি রাসেল এবং পুলিশ। মানে কি।
প্রেমা/: সেটা কিছুক্ষণ পর বুঝতে পারবি।
ফারহান আব্বু/: তুই আবার এসেছিস আমার বাসায়। সাথে পুলিশ নিয়ে এসেছিস। তুই জানিস আমি একটা ফোন দিলে, তোর সাথের পুলিশ ভয়ে বেরিয়ে যাবে।
রকি/: তাই নাকি মি: জাহিদ হাসান। তো দেখি আপনি কাকে ফোন দিবেন। আমি এখান থেকে এক পাও লড়বো না।
ফারহানের আব্বু মোবাইল নিয়ে কাকে জেনো ফোন দিলো। তখন তার সাথে কথা বলে রকির কাছে ফোন দিলো।
ফারহান আব্বু): নেয় , কথা বল।
রকি): হ্যালো কে বলছেন।
মন্ত্রী/: আমি বর্তমান মন্ত্রী বলছি। যদি চাকরি হারাতে না চাও। তাহলে এখনি হাসান সাহেবের বাসা থেকে বেরিয়ে যাও।
রকি/: তোমাকে আমি গুলি করে মারবো। আমাকে তুমি চাকরির ভয় দেখাচ্ছো।
মন্ত্রী/: আরে রকি তুই। তা বাবা জাহিদ হাসান কে কেনো ধরতি গেলি।
রকি/: তার পর সবকিছু খুলে বললো।
মন্ত্রী): বাবা আমি এসব জানতাম না। তুই ওকে ধরে থানায় নিয়ে আয়। পরের টা আমি দেখছি।
রকি/: ঠিক আছে আব্বু।
এ বলে ফোন কেটে দিলো। তখন ফারহান এর আব্বু রকিকে বললো।
ফারহান আব্বু/: তুই মন্ত্রীকে আব্বু বললি কেন।
রকি/: আমার আব্বু কে আব্বু বলবো না তো কি বলবো।
ফারহান আব্বু): মানে , ।
রকি/: কারন তোর মন্ত্রী বন্ধু হচ্ছে। আমার জম্মদাতা আব্বু। আমার ছোট থেকে সখ, বড় হয়ে আমি পুলিশ অফিসার হবো। আব্বু চাইলে আমাকে অফিসার বানিয়ে দিতে পারতো ক্ষমতা দিয়ে। কিন্তু আমি ক্ষমতা দিয়ে অফিসার হতে চাই না, । নিজের যোগ্যতা অর্জন করে হবো। এখন বর্তমানে ওসি হয়েছি।
ফারহান/: আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। আমাদের কেনো ধরতে আসলো।
আমি/: তুই মেয়েদের সাথে প্রেযের অভিনয় করে।তাদের দেহ ভোগ করে ছেড়ে দিস। এটা হয়েছে তোর অপরাধ, । আর তোর বাবার অপরাধ বন্ধুর সাথে বেইমানি করে, তার কম্পানি নিজের করে নেওয়া। তাই তোদের পুলিশ ধরে নিয়ে যেতে এসেছে। এখন হয়তো টাকার ভড়াই দেখাবি। কিন্তু সেটাও এখন তোদের নেই। কারন তোদের এখন সবকিছু আমাদের হাতে।
প্রেমা/: আমি বলছি, যখন তোকে কাজি সাইন করতে বলে, তখন তোদের সব সম্পত্তির দলিল ছিলো ওটা। আর তুই না বুঝে সাইন করে দিছিস। আর আমার আর রাসেল এর ডিভোস হয়নি। তোকে নকল পেপার দেখিয়েছি। এখন তোরা রাস্তার ফকির।
আমি/: তা জাহিদ হাসান, এখন আপনার টাকা , ক্ষমতা গেলো কোথায়। আপনি যে রকম বন্ধুর সাথে বেইমানি করছেন। তেমন আমার স্ত্রী, আপনার ছেলের সাথে প্রেম এবং বিয়ের অভিনয় করে সবকিছু নিয়ে নিছে। আমরা জানি, আপনার সয় সম্পদ আপনার ছেলের নামে।
ফারহান/: আচ্ছা তুই যে আমাদের নামে এতো কিছু বলছিস। তোর কাছে কি প্রমাণ আছে।
তার পর ফারহানের আব্বুর ভিডিও এবং ফারহানের সাথে প্রেমার কথা বলার ভিডিও দেখালাম।
রকি সবাইকে থানায় নিয়ে গেলো। আমি আর প্রেমা বাসায় চলে আসলাম। আজ পাঁচ দিন পর।
ফারহান কে দশ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তার আব্বু আম্মুকে যাবদ জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর নদী এবং তার আব্বু আম্মুকে বিশ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এখন আমি আর প্রেমা হাসপাতালে যাচ্ছি। সিহাবের আম্মু এখন পুরোপুরি সুস্থ আছে। আজকে তাদের রিলিজ দিবে।
হাসপাতালে গিয়ে, সিহাব আর ওর আম্মুকে বাহিরে এনে গাড়িতে করে তাদের বাসার সামনে চলে আসলাম। সবাই গাড়ি থেকে নামার পর সিহাব বললো।
সিহাব/: রাসেল তুই আমাদের এখানে নিয়ে এসেছিস কেনো। এই বাসা তো নদী এবং তার আব্বু আমার থেকে নিয়ে গেছে।
আমি/: আগে তাদের ছিলো। এখন তোদের হয়ে গেছে।
সিহাব/: মানে।
আমি/: মানে হলো। ( তার পর সবকিছু খুলে বললাম)
সিহাব কোনো কথা না বলে আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো। তখন আমি বললাম।
আমি/: এই পাগল কান্না করছিস কেন।
সিহাব/: তুই আমাদের জন্য এতো কিছু করছিস। আমাদের বাড়ি ফিরে দিয়েছিস।
আমি/: শুধু বাড়ি না। তোদের কম্পানি ও , আমি ফিরে এনেছি। এই হচ্ছে তোদের সম্পতির দলিল।
সিহাবের আম্মু/: বাবা তুমি আমাদের জন্য যা করেছো। আমরা কখনো তোমার ঋণ শোধ করতে পারবোনা।
প্রেমা/: এখানে কিন্তু আমি ও আছি।
আমি/: তুমি তো আমার কথামতো সবকিছু করেছো।
প্রেমা/: করেছি তো। তুমি তো করো নাই।
আমি/: ঠিক আছে। আমরা দুজনে করছি। তো যাবার আগে সিহাব তোকে একটা কথা বলে যাই। কখনো গরীব দুঃখীদের অবহেলা করবি না। তাদের পাশে সবসময় দাড়াবি। তুই তো দেখছিস, গরীব হলে কেমন কষ্ট । তাই এগুলো মাথায় নিয়ে সামনে এগিয়ে যাবি।
সিহাব/: আমি তোর কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবো।
তার পর সিহাব আর তার আম্মুকে ভিতরে নিয়ে গেলাম। পরের দিন অফিসের সবকিছু বুঝিয়ে দিলাম।
দেখতে দেখতে সে দিনটা চলে আসলো। মানে প্রেমা কে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলো। আজকে সকালে হঠাৎ প্রেমার ব্যথা উঠে, তার পর প্রেমা কে হাসপাতালে নিয়ে আসি। ডাক্তার অপারেশন রুমে আছে।
প্রায় এক ঘন্টা পর ডাক্তার বেরিয়ে আসলো। আমরা সবাই ডাক্তারের কাছে গেলাম।
আমি/: ডাক্তার , আমার স্ত্রীর কি অবস্থা।
ডাক্তার/: ভয়ের কোনো কারণ নেই। আপনার স্ত্রীর মেয়ে হয়েছে। আপনি বাবা হয়েছেন। সবাইকে মিষ্টি খাওয়ান।
আমি/: সত্যি বলছেন ডাক্তার।
ডাক্তার/: হুম সত্যি।
আমি/: আমরা কি তার সাথে দেখা করতে পারি।
ডাক্তার/: অবশ্যই পারবেন।
এ কথা বলে ডাক্তার চলে গেলো। আমরা সবাই কেভিনের ভিতরে ঢুকলাম। আব্বু আম্মু শশুর শাশুড়ি আমার মেয়েকে কোলে নিয়ে আদর করতে আছে। সবাই বলছে, মেয়েটা আমার মতো হয়েছে।
আব্বু আম্মু শশুর শাশুড়ি কিছুক্ষণ থেকে কেভিন থেকে বেরিয়ে গেল। আমি আমার মেয়েকে কোলে নিয়ে প্রেমার পাশে বসলাম। তখন প্রেমা বললো।
প্রেমা/: মেয়ে হওয়াতে তুমি খুশি না।
আমি/: কে বলছে, আমি খুশি না। আমি অনেক খুশি হয়েছি।
প্রেমা/: কিন্তু আমি খুশি হতে পারি নাই।
আমি/: কেনো।
প্রেমা/: আমি ভেবেছি তোমার মতো একটা ছেলে হবে। কিন্তু হয়েছে মেয়ে।
আমি): তো কি হয়েছে। মেয়ে হচ্ছে ঘরের লক্ষী।
প্রেমা/: তা ঠিক আছে। কিন্তু এখন তো আমার আদর কমে যাবে। তুমি এখন তোমার মেয়েকে সবসময় আদর করবে।
আমি/: কে বলছে, আমার আদর সবসময় তুমি পাবে।
প্রেমা/: তাহলে আমাকে এখন জড়িয়ে ধরে, একটা কিস করো।
আমি/: ঠিক আছে করছি।
আমি মেয়েটাকে রেখে, প্রেমার ঠোঁটের সাথে ঠোট লাগিয়ে দিলাম। তার পর দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরলাম।
দেখতে দেখতে আজ পাঁচ টা বছর কেটে গেল। আমি এখন অফিস দেখাশোনা করি। প্রেমা বাসায় আব্বু আম্মু এবং আমার মেয়ে তিথির খেয়াল রাখে। সবাইকে নিয়ে অনেক সুখেই আছি।
সিহাব এর ফাঁকে বিয়ে করছে, তার একটা ছেলে আছে। রিয়া আর রাফির বিয়ে হয়ে গেছে। রিয়ার জমজ দুই টা মেয়ে হয়েছে।
আর রাইসার একটা ছেলে সন্তান হয়েছে। আমার বোন স্বামী এবং ছেলে সন্তান নিয়ে অনেক সুখে আছে। রাইসা কিছুদিন আগে আমাদের বাসা থেকে বেড়িয়ে গেলো।
এবার আসি রকির কথায়। আমি, রাফি, সিহাব এবং রকি , আমরা সবাই একসাথে পড়াশুনা করছি। রকি ছেলেটা অনেক ভালো। তার বাপ মন্ত্রী থাকার পরেও কোনো অহংকার নেই তার ভিতর। সে কেমন গল্পের ভিতরে দেখছেন।
রকি এখন একজন পুলিশ অফিসার। রকি চাইলে আরো ওপরের লেবেলে যেতে পারতো। কিন্তু সে টাকা আর বাবার ক্ষমতা দিয়ে ওপরে উঠতে চায় না। কিছুদিন আগে রকির বিয়ে হয়েছে। আমরা সবাই তার বিয়েতে গেছি। তো যাই হোক।
রাতে সবার সাথে খাবার খেয়ে রুমে আসলাম। কিছুক্ষণ পর প্রেমা রুমে এসে দরজা লাগিয়ে বিছানায় এসে আমাকে জড়িয়ে ধরল।
আমি/: কি ব্যাপার, তিথি কোথায়।
প্রেমা/: ওকে ওর দাদা দাদির কাছে রেখে এসেছি।
আমি/: ওর দাদা দাদির কাছে রেখে আসলে কেনো।
প্রেমা/: কারন আজকে তুমি আমাকে অনেক আদর করবে। ওর জন্য তোমাকে একটু আদর করতে পারি না। আমি আরেক টা ছেলে চাই।
আমি/: ওমা তাই নাকি। আরেক টা লালন পালন করতে পারবে।
প্রেমা/: অবশ্যই পারবো। তুমি আমাকে তিথির একটা ভাই এনে দাও।
আমি/: আমাকে তো অনেক পরিশ্রম করতে হবে।
প্রেমা/: করতে হলে করবে। এখন কথা না বলে আমাকে আদর করো। আমি তোমার মাঝে হারিয়ে যেতে চাই।
আমি/: তাহলে আর দেরি কিসের। আমি তাহলে শুরু করে দিই।
এই বলে প্রেমা কে জড়িয়ে ধরে ঠোঁটের উপর আক্রমণ করা শুরু করলাম। তার পর প্রেমার পুরো শরীরে কিস করতে লাগলাম। আস্তে আস্তে হারিয়ে গেলাম অজানা ঠিকানায়।
হয়েছে অনেক দেখছেন। এবার আপনারা আসতে পারেন। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।
*
*
*
*
*
*
* :::::::::::::::::::::::::::::: সমাপ্ত::::::::::;;::::::::::;;;;;;
*
*
*
*
* তো কেমন হয়েছে জানাবেন। হয়তো লাষ্ট পর্ব ভালো ভাবে সাজিয়ে লিখতে পারি নাই। তার পরেও লাইক এবং কমেন্ট দিয়ে জানাবেন কেমন হয়েছে।
*
*
* ধন্যবাদ সবাইকে পরবর্তি গল্পের জন্য অপেক্ষা করুন 🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿 রোমান্টিক গল্প লেখক রাসেল চৌধুরী 🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿