গল্পঃ #রাগী_বউ - ২ [Love♥️Story]
লেখক: #আবির_মাহমুদ শান্ত।
পর্ব - ০১ (এক)🍂🍂🍂🍂🍂
অামি অতি সাধারন একটি ছেলে। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। তাই বাবা মা অামাকে খুব ভালোবাসে অামি যেমন বাবা মা কে ছেড়ে কখনো থাকতে পারিনা,,তেমনি বাবা মাও অামাকে ছেড়ে কখনো থাকতে পারে না।
পৃথিবীতে অামার বাবা মা সব। বর্তমানে অামি একটি বেকার ছেলে।। লেখাপড়া শেষ করে এখনো কোনো চাকরি পায়নি। অনেক জায়গায় চাকরির জন্য অবশ্য অাবেদন করেছি কিন্ত কোনো চাকরির দেখা এখনো মেলেনি।
সারাদিন বাসায় শুয়ে থাকা টিভি দেখা অার বিকালের দিকে বন্ধুদের সাথে অাড্ডা দেওয়া ছাড়া কোনো কাজ নেয়। এর জন্য বাবা মায়ের কাছে বকনিও খেতে হয়। কারন লেখাপড়া শেষ করেও বাবার হোটেলে খেতে হচ্ছে।
কিন্ত অামি কি করবো চাকরির জন্যতো অনেক জায়গায় অাবেদন করেছি দুরভাগ্য এখনো চাকরি পায়নি। এদিকে বাবা মা অামাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। অনেক জায়গায় মেয়েও দেখেছে কিন্ত অামি বিয়ে করতে কখনো রাজি হয়নি।
বাবা মা কে অামি সাফ জানিয়ে দিয়েছি যতো দিন না কোনো চাকরি পাচ্ছি ততোদিন অামি বিয়ে করবোনা। অনেকের মুখে শুনেছি বিয়ে মানে একটি প্যারাময় জীবন।।
শুনেছি মেয়েদের সাজুগুজু করতে নাকি মাসে পাচ হাজার+ টাকার
কসমেটিকস ইত্যাদি কতো কিছু লাগে এসব জিনিসের অামি এতো নামও জানি না।। অামার তো একটাকাও রোজগার নেই।
বিয়ে করে বউকে এসব চাহিদা মেটানো অামার দ্বারা সম্ভব না।
এভাবেই চলছিলো অামার জীবন। হঠাৎ একদিন একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে কল অাসলো ফোনটা রিসিভ করে সালাম দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করার পর বললো অাপনি কি আবির বলছেন,,
--হ্যা অামি আবির বলছি,,। (আমি)
--অাপনার জন্য একটা খুশির খবর অাছে অাপনি অমাদের অফিসে যে চাকরির জ্যন্য অবেদন করেছিলেন সেই চাকরিটা অাপনি পেয়েগেছেন।(অফিস থেকে)
অামি খুশিতে লুঙ্গী ড্যান্স দিতে লাগলাম।
অামি চাকরি পাওয়ার কথাটা বাবা মা কে জানালাম বাবা মা খুবই খুশি হলেন। বাবা মা কে দেখে মনে হচ্ছে পৃথিবীর সব সুখ যেনো তাদের মাঝে এসে বিরাজমান করছে।
চাকরিটা পেয়ে নিজেকে আনেক ভাগ্যমান মনে হচ্ছে।
যাই হোক কাল থেকে নতুন অফিন নতুন চাকরি। তাই রাতের খাবার খেয়ে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়লাম।। তাছাড়া অামি কখনো রাত ১২ টা না বাজলে অামার চোখে ঘুম অাসেনা অার সকালে ৮ টার অাগে কোনোদিন ঘুম থেকে উঠিনা।
তাই সকাল সকাল উঠার জন্য মোবাইলে এলার্ম দিয়ে রাখলাম।
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে কিছু হালকা নাস্তা করে বাইকটা নিয়ে অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।। সারাদিন অফিস করে বাসায় অাসলাম। বাড়ি অাসতে না অাসতেই মায়ের অাবদার,,,,
--বাবা তুই এবার বিয়ে কর এখনতো চাকরি পেয়েছিস অামি অার কতো দিন তোকে রান্না করে খাওয়াবো।(আম্মু)
অামি কোনো ভাবেই যেনো অাম্মাকে বোঝাতে পারলাম না । মা জোর ধরে বসলো সামনে সপ্তাহে ছুটির দিনে মেয়ে দেখতে যেতে হবে। শেষ পর্যন্ত মাকে বোঝাতে না পেরে রাজি হলাম।
--অামি (মনে মনে) বিয়েতো এখন করবোই না জাস্ট মায়ের অাবদার টা রাখার জন্য যাবো।
অবশেষে মেয়ে দেখার জন্য পাত্রী পক্ষের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম বাবা মা অার অামি। পাত্রীর বাড়ি এসে পৈছালাম অামি কিছুটা লজ্জা বোধ করছি,,কিন্ত মনে মনে নিজেকে বললাম আবির এতোটা লাজ্জা বোধ না করে বাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়।
সবাই সবার সাথে কথা বলছে অামি একটি অসহায় বাচ্চা শিশুর মতো চুপ করে থাকলাম। কিছুক্ষন পর মেয়ে অাসলো নীল শাড়ি পড়ে চেহারা দেখা যায়না। ইয়া বড়ো একটা ঘুমটা দিয়ে হাতে চায়ের কাপ নিয়ে। অামার সামনের সোফার সিটে এসে বসলো।
কোথা থেকে যেনো একটা ছোট বাচ্চা এসে বললো অাদো অাদো গলায় অাপু অাপু এতাকি অামাল দুলাভাই হপে। কথাটি বলা মাত্রই ঘুমটার ভিতর থেকে একটা হাসির শব্দ পেলাম। অামি নিজেও লজ্জা বোধ করলাম।শেষ পর্যন্ত বাবা মার মেয়ে পছন্দ হলো। অামি একটি বারের জন্যও মেয়ের মুখের দিকে তাকায়নি।
কারন, এখন অামার বিয়ে করার কোনো ইচ্ছে নাই। অামাদের দুইজনকে কথা বলার জন্য একটি সাইড রুমে যেতে বললো। এই
কথা শোনা মাত্রই অামার গলা শুকিয়ে গেলো সামনে ছিলো পানির গ্লাস এক গ্লাস পানি খেয়ে নিলাম। সেই সাথে অামার হাটুর বাটি কাপতে শুরু করলো। মনে মনে বললাম আবির নিজের বেলেন্স ঠিক রাখ।
এই বলে ঝাড়ামেরে উঠে দুজনে পাশের রুমে গেলাম।অামি মাথা নিচু করে অাছি দুজনেই চুপচাপ মনে হচ্ছে যেনো অামাদের এখানে পাঠিয়েছে কথা বলার জন্য না,,। পাঠিয়েছে নিরবতা পালন করার জন্য।
অামি কথা বলবো কিভাবে অামি তো মেয়ের নামটা পর্যন্ত জানি না। কিছুক্ষন পর মুখ পানে তাকিয়ে দেখি মেয়ে মাশা অাল্লাহ অসাধারন সুন্দর। নিজের জড়তা কাটিয়ে জিগাসা করলাম এই যে অাপনার নাম কি,,?
এই কথা বলা মাত্রই মেয়েটি রাগি কন্ঠে,, শুনুন অামার নাম জেনে অাপনার কোনো কাজ নেই অামি এই বিয়েতে রাজি না। অামি লেখাপড়া করতে চাই। শুধু মাত্র অাব্বু অাম্মুর জন্য অামি অাপনাদের সামনে এসেছি।
--এই যে অাপনিও শুনে রাখুন অামারও বিয়ে করার কোনো ইচ্ছে নাই শুধু মাত্র মায়ের কথা রাখার জন্য এসেছি। সব যাই হোক বিয়ে তো অামরা করছিনা অাপনার নামটা তো জানতে পারি,,,। (আমি)
--অামার নাম রূপসী আক্তার রিয়া অার অাপনার নাম,,?( রিয়া)
--অামি আবির। এই বলে অামি রুম থেকে চলে অাসলাম।(আমি)
রিয়ার বাবা মা অার অামার বাবা মা এদিকে বিয়ে জন্য দিনখান ঠিক করা শেষ। সামনের সপ্তাহে নাকি অমাদের বিয়ে। সেখানে অামার কথা বলার কোনো চান্স নাই।
বাড়ি ফিরে অামি সাফ মাকে জানিয়ে দিলাম অামি এই মেয়েকে বিয়ে করবোনা।
--বিয়ে করবিনা মানে এই মেয়ের সাথেয় তোর বিয়ে দেবো এতো সুন্দর একটা মেয়ে।(আম্মু)
এই বলে মা রুম থেকে চলে গেলো। সেই রাতে অামার ঘুম হয়নি যে মেয়ে একটি অপরিচিত ছেলের সাথে এমন রাগি লুক নিয়ে ঝাড়ি মেরে কথা বলতে পারে না জানি বিয়ের পর সে অামার সাথে কেমন করবে। কিন্ত বিয়ে অাটকানো অামার দ্বারা সম্ভবনা। কারন মায়ের কথার অামি কখনো অবাধ্য হয়নি। অবশেষে অবুজ শিশুর মতো অামাকে হ্যা সম্মতি দিতে হলো।
অামি (মনে মনে) এতোদিন চাকরি ছিলোনা ভালোই ছিলো চাকরি পাওয়া মাত্রয় অামাকে বিয়ে করতে হবে।
অবশেষে অামাদের বিয়েটা হয়ে গেলো। এমন করে অামার বিয়ে করতে হবে কখনো কল্পনাও করিনি অামি। অাজ অামাদের বিয়ের প্রথম রাত মানে বাসর রাত। শুনেছি বিয়ের প্রথম রাতটা নাকি স্বামী স্ত্রীর বিশেষ একটি রাত। কিন্ত অামার এসব কিছুই মনে হচ্ছে না। বাসর ঘরে ঢুকতে নিজেকে অলসতা বোধ করছি। বন্ধুরা সবাই মিলে অামাকে জোর করে বাসর ঘরে ঢুকিয়ে দিল।
।
।
রুমের ভেতরে ঢুকে দেখি লাল শাড়ির একটা বড়ো ঘোমটা দিয়ে বসে রিয়া মানে এখন অামার বউ।অামি ছোটো করে গলা ঝেড়ে সামনে এগিয়ে গেলাম।
অামি গিয়ে খাটের উপরে বসতে না বসতেই রিয়া উচ্চ কন্ঠে,,,
--এখন কয়টা বাজে একলা একটা মেয়েকে রুমের ভিতরে রেখে অাপনি কোথায় ছিলেন?? (রিয়া)
নতুন বউ এর এমন অাচরন দেখে মনে মনে এই মেয়ে অামার জীবন তেজপাতা করে দেবে এটা অামি সিওর। অামি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি রাত ১২ টা বাজে।
--অার অাপনি না বলেছিলেন অাপনি অামাকে বিয়ে করবেন না তাহলে কেনো অামাকে বিয়ে করলেন।(রিয়া)
বউ এর এমন সাহস দেখে অামিতো অবাক হয়ে গেলাম।
চলবে,,,,,,,,,,,,,,,[waiting for next part]
প্রিয় বন্ধু গণ আশা করছি গল্পটি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে। যারা এই রকম গল্প পড়তে পছন্দ করেন আমার সাথেই থাকবেন।। ধন্যবাদ।।
#পরবর্তী_পর্বের_জন্য_অপেক্ষা_করুন।