গল্পঃ #রাগী_বউ - ২ [Love♥️Story] লেখক: #আবির_মাহমুদ শান্ত। পর্ব - ০২ (দুই)

 গ


ল্পঃ #রাগী_বউ - ২ [Love♥️Story]

লেখক: #আবির_মাহমুদ শান্ত।

পর্ব - ০২ (দুই) ♥️♥️♥️♥️♥️


রিয়া অামাকে বললো......!!


--আপনি ঘরে অাসতে দুই ঘন্টা দেরি করেছেন এখন আপনি অামার রুম থেকে বেরিয়ে যান দুই ঘন্টা পার হলে তারপর অাপনি রুমে অাসবেন। অার যদি অাপনি রুম থেকে বের না হন তাহলে অামি কিন্ত চিৎকার করবো। অার সবাইকে বলবো অাপনি অামার সাথে খারাপ ব্যবহার করছেন। (রিয়া অামাকে কথা বলার কোনো সুযোগ দিল না।)


মানুষের মুখে শুনেছি বিয়ে মানেই প্যরা। অাসলেও কথাটি সত্য যার সূচনা অামার বিয়ের প্রথম রাত থেকেই টের পাচ্ছি। অামি কোনো কথা না বলে চুপচাপ রুম থেকে বেরিয়ে অাসলাম।।


মানুষ বিয়ের প্রথম রাতে থাকে বাসর ঘরে অার অামাকে থাকতে হচ্ছে রুমের বাইরে। সবই কপাল। অাসলে মেয়েরা এমনি হয় কান্না করেও জিতবে অাবার জেদ করেও জিতবে।এরা কখনো হারতে চায়না কোনো কিছু করে যখন না হবে তখন কান্না শুরু।


ভাগ্যভালো রুমের বাইরে এসে দেখি কেউ নাই না হলে মানসম্মান অামার জানালা দিয়ে পালিয়ে যেতো।


মশা ও অাজ অামাকে কাছে পেয়ে ইচ্ছে মতো কামড় দিচ্ছে। মনে হচ্ছে যেনো

ঘড়ির কাটা অাজ স্লো ঘুরছে প্রতিটা সেকেন্ড অামার কাছে মনে হচ্ছে একেকটি ঘন্টা।

মানুষ নতুন বিয়ে করে বউ কে নিয়ে রুমের ভিতরে থাকে,, অার অামার এমনি কপাল বউ ঘরের দরজা লক করে অারামে ঘুমাচ্ছে অার অামি রাত কাটাচ্ছি মশার সাথে। 


অনেক কষ্টে দুই ঘন্টা পার করলাম মাশার সাথে যুদ্ধ করে। রুমের দরজার কছে গিয়ে কলিংবেল বাজায় ভিতর থেকে কোনো সাড়া পাচ্ছিনা। ৩০ মিনিট ধরে কলিং বেলের শব্দে যখন কোনো সাড়া পেলাম না। নিজে নিজেকে বলতে লাগলাম তোর কপালে এমন একটা বউ জুটলো যে কিনা বাসর রাতে স্বামীকে বাইরে রেখে বউ রুমের ভিতর অারাম করে ঘুমাচ্ছে।


অামার ধোর্যের বাধ ভেঙ্গে যাচ্ছে,, বাসর রাতে বউ এর এমন ভালোবাসা দেখে অামার অাবেগে কান্না করতে ইচ্ছে করছে কিন্ত কান্না করাটা ছেলেদের শোভা পায় না তাই চুপচাপ দরজার সামনে দাড়িয়ে নিরবতা পালন করছি অার কলিংবেল বাজাচ্ছি। যখন দেখলাম বেল বাজিয়ে কাজ হচ্ছে না তখন জোর করে দরজায় একটা ধাক্কা দিলাম।


দরজা খুলে গেলো তার মানে দরজা লক করা ছিলোনা অযথা অামি ৩০ মিনিট ধরে কলিংবেল বাজাচ্ছিলাম যদি একবার দরজায় ধাক্কা মারতাম তাহলে অামাকে এতোক্ষন ধরে রুমের বাইরে দাড়িয়ে থাকতে হতোনা। রুমের ভিতরে প্রবেশ করে দেখি মহারাণী নাক ডেকে অারামে ঘুমাচ্ছে। অামি খাটের উপরে গিয়ে এক পাশে বসলাম। 


এলোমেলো চুলে সুন্দর মুখটা যেনো অারো অসম্ভব সুন্দর লাগছে। অামি ঘুমন্ত নিশপাপ মুখটার দিকে অধিক অাগ্রহ নিয়ে রিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। রিয়ার মুখে এলোমেলো চুলগুলো অালতো ভাবে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলাম। যেইনা অামি রিয়ার অগোছালো চুলে অালতো ভাবে স্পর্শ করলাম সাথে সাথেয় রিয়ার ঘুম ভেঙ্গে গেলো।


--এই যে মিস্টার আবির অাপনি অামার খাটের উপর কি করছেন। যান অাপনি ফ্লোরের উপর ঘুমিয়ে পড়েন অামার সাথে ঘুমনোর অাশাটা কখনো করবেন না।।


রিয়া খাট থেকে বালিশটা ফ্লোরের উপর ছুড়ে ফেলে দিলো। রিয়ার অামার সাথে এতো অভিমান কিসের সেটা অামি কোন ভাবেই বুঝতে পারছিনা।


অামি কিছু না বলে বাচ্চা ছেলের মতো করে ফ্লোরের উপরে শুয়ে পড়লাম সালা অামার ঘর অামার খাট অার অামাকে ঘুমতে হবে ফ্লোরের উপর। অাজ প্রথম রাত ওর সাথে অামি কোনো ঝগড়া ঝামেলা করতে চাই না তাই অামি কিছু বললাম না। অার মনে মনে ভাবতে লাগলাম ও অামার সাথে কেন এমন আচরন করছে।


নাকি ওর কারো সাথে রিলেশন অাছে নানা এটা অামি কি ভাবছি কাউকে ভালো করে না জেনে না বুঝে ওর সম্পর্কে অামার এমন চিন্তা করাটা ঠিক হবে না। যাই হোক অামার অাজ ঘুমের বারোটা বাজবে মহারাণীর নাক ডাকার ঠেলায় অামার ঘুম জানালা দিয়ে পালিয়ে গেছে। 


এ কেমন গুন্ডি মেয়ে বাসর ঘরে স্বামীকে নিচে ফ্লোরে শুইয়ে রেখে নিজে খাটের উপর অারাম করে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে।ইচ্ছে করছে নাক সুপার গ্লু দিয়ে অাটকে দিয় কিন্ত নতুন বউ বলে কথা। কিছুই করার নাই সবই অামার কপাল।


অনেক কষ্টে রাত শেষে চারিদিকে পাখির কলরব মিষ্টি কন্ঠে সকাল হলো জানালা দিয়ে সুর্যের অালো অামার ঘরে প্রবেশ করলো। 


দরজায় কলিং বেল বাজছে তড়িঘড়ি করে অামি উঠে পড়লাম নিশ্চয় মা চা নিয়ে এসেছে যদি দেখে যে অামি ফ্লোরে ঘুমিয়েছি তাহলে মান সম্মানের বারোটা বেজে যাবে।


ওদিকে মহারাণী মরার মতো করে শুয়ে অাছে। অামি ফ্লোরের উপর থেকে বালিশটা খাটের উপরে রেখে দিলাম। তার পর দরজা খুলে দেখি মা চা নিয়ে দরজার সামনে দাড়িয়ে অাছে। মা চা নিয়ে রুমের ভিতরে প্রবেশ করলো। 


--কিরে বউ মাকে এখনো ডেকে দিসনি কেনো..?? (আম্মু)


--তোমার অাদরের বউমাকে তুমিই ডেকে দাও। (আমি)


শুনেছি নতুন বউ নাকি সকাল বেলা উঠে শাশুড়ির কাজে সাহায্য করে অার এই মহারাণীর ক্ষেত্রে দেখছি পুরোটাই উল্টো। নিজের মনের অানান্দে ঘুমাচ্ছে। অামি ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে অফিসের উদ্দেশ্য রওনা হলাম। অফিসের কাজে ব্যাস্ততার কারনে সারাদিন বাসায় একবারো ফোন করার সুযোগ পায়নি। মনে চাচ্ছিলো যে একটা ফোন করি কিন্ত কিছু করার নাই অফিসের কোনো কাজে একটু ব্যাঘাত ঘটলেই বস এর কাছে ঝাড়ি খেতে হবে।


কিন্ত রিয়ার সুন্দর চেহারাটা যখন অামার চোখের সামনে ভেসে উঠছে ততোই যেনো ও অামার মনের মাঝে একটু একটু করে জায়গা করে নিচ্ছে।


অফিস শেষ করে বাসায় এসে দেখি মহারাণী রুমের দরজা বন্ধ করে বসে অাছে অামি কয়েকবার কলিংবেল বাজানোর পর দরজা খুললো। মহারাণীর রাগে সুন্দর মুখটা যেনো অারো সুন্দর লাগছে। অামি রিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে যেনো অামার মন ভরছেনা কিন্ত গুন্ডি মেয়েটা অামাকে একটুও বুঝলোনা।


--ওই মিস্টার অাপনি অামার দিকে এমন হা করে তাকিয়ে অাছেন কেনো জীবনে কি কখনো মেয়ে মানুষ দেখেন নি তাই অামার দিকে এমন হা করে তাকিয়ে অাছেন। (রিয়া)


--অারে নিজের বউকে দেখতে হলেও কি পারমিশন নিয়ে দেখতে হবে। অামি তো অামার বউকে দেখছি অন্য কোনো মেয়েকে তো দেখছিনা। (আমি)


--অামি অাপনার বউ না অার কখনো অামাকে বউ বলে দাবি করবেন না। (রিয়া)


রিয়ার মুখে এমন কথা শুনে নিজের রাগ টাকে সামলাতে পারলাম না এখন যদি ওর সামনে অামি দাড়িয়ে থাকি তাহলে হয়তো রাগের কারনে কিছু একটা করে ফেলবো। তাই শার্ট টা খুলে ওয়াশ রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে অাম্মাকে খেতে দিতে বললাম রিয়াকেউ খাবার খেতে অাসতে বললাম কিন্ত ও অাসতে চাইছেনা কয়েক বার বলার পরও খাবারের টেবিলে অাসতে রাজি হলো না ।


অামি রাগ দেখিয়ে যখন ঝাড়ি মেরে বললাম খাবার খাবেনা কেন কি সমস্যা তোমার,, এই কথা বলতে যা দেরি অামাকেউ কয়েকটা কথা শুনিয়ে খাবারের টেবিলে গিয়ে লক্ষি মেয়ের মতো করে বসে পড়লো।


খাবার শেষ করে রিয়া অামার অাগেয় উঠে পড়লো

হয়তো লজ্জা পেয়ে কারো সামনে খেতে পারছেনা। অামিও কিছু বললাম না। 


রুমের ভিতরে গিয়ে দেখি রিয়া অাবার শুয়ে অাছে।

কি অলস মেয়েরে বাবা এতো দেখি ঘুম ছাড়া কিছু বোঝেনা অার কোনো কারন ছাড়ায় রাগ দেখানো।


অামিও কেমন জানি অাস্তে অাস্তে রিয়াকে ভালোবেসে ফেলেছি কিন্ত কিভাবে অামি ওকে বোঝাবো ও তো অামার কোনো কথার বলার সুযোগই 

দিচ্ছে না,,।


রুমের দরজটা বন্ধ করে খাটের উপর গিয়ে বসলাম।


কিন্ত অাবার সেই একই কথা অাপনি অামার খাটের উপরে কেন বসলেন অামি না অাপনাকে বলেছি অাপনি কখনো ভাববেন না যে অামরা কখনো একই খাটের উপর ঘুমাবো। অাপনার যদি ঘুমানোর ইচ্ছা হয় তাহলে

নিচে গিয়ে ঘুমান।


কি অাজব মেয়ে একটু রোমান্টিকতা বলে কিছু বোঝেনা না কি,,,,,,!!!


চলবে,,,,,,,,,,,,,,,, [waiting for next part]


প্রিয় পাঠক পাঠিকা গণ আজকের পর্বটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে কমেন্ট বক্সে জানাবেন।। আর আরো এই রকম গল্প পেতে হলে আমার সাথেই থাকুন।।ধন্যবাদ।।


#পরবর্তী_পর্বের_জন্য_অপেক্ষা_করুন ।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post