গল্পঃ #রাগী_বউ - ২ [Love♥️Story]
লেখক: #আবির_মাহমুদ শান্ত।
পর্ব - ০3 (তিন) ♥️♥️♥️♥️♥️
মনে মনে অামিও ঠিক করলাম অামি ঘুমাবো নিচে অার তুমি ঘুমাবে খাটের উপরে অাজ তোমার ঘুমেরও বারোটা অামি বাজাবো।
অামি গিয়ে চুপচাপ ফ্লোরের উপর শুয়ে পড়লাম অাজ ইচ্ছে করে অামিও নাক ডাকা শুরু করলাম শুয়ে শুয়ে মনের অানান্দে অামি নাক ডাকছি। ওর দিকে অামি মিছি মিছি মাঝে মাঝে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছি ও কি করছে মনে হচ্ছে ও বিরক্ত বোধ করছে কারন ও দুই কান হাত দিয়ে চেপে ধরে অাছে।
কিছুক্ষন পরে রিয়া চেচিয়ে......
--এই যে মিস্টার অাপনি এতো গরুর মতো করে নাক ডাকছেন কেনো অামার ঘুমের সমস্যা হচ্ছে নাক না ডেকে ঘুমাতে পারেন না। (রিয়া)
অামি মনে মনে মিছি মিছি হাসছি অার নাক ডাকার ভলিউম অারো বাড়িয়ে দিলাম। অবশেষে রিয়া অামার নাক ডাকা শব্দ সহ্য করতে না পেরে অামার কানের কছে এসে জোর গলায় অাপনি নাক না ডেকে ঘুমাতে পারেন না। অামিও একটু অভিনয় করে লাফ মেরে উঠলাম......
--ওই তুমি এতো চিল্লাছো কেনো কি হয়েছে।(আমি)
--কি হয়েছে মানে গরুর মতো করে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছ অাবার বলছেন চিল্লাছো কেনো এবার যদি নাক ডাকো তাহলে নাকের উপরে বালিশ দিয়ে চেপে ধরে থাকবো। (রিয়া)
--ওই তুমি যখন নাক ডেকে অামার ঘুমের বারোটা বাজাও তার বেলায় কিছু হয়না। (আমি)
--কিহ অামি নাক ডাকি তাইনা এমন মিথ্যা কথা অাপনি কিভাবে বলতে পারলেন অার অামি কখনো নাক ডাকিনা। (রিয়া)
--হে অাল্লাহ এই মেয়েকে অামি কেমনে বোঝায় যে নাক ডাকে সে কখনো কি নিজের নাক ডাকার শব্দ শুনতে পায়।
তোমার যদি বিশ্বাস না হয় তাহলে তুমি গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো যখন তুমি ঘুমের ভিতরে নাক ডাকবে তখন অামি তোমার নাক ডাকা মোবাইলে রেকোডিং করে তোমাকে শোনাবো তখন তো বিশ্বাস করবে। (আমি)
এই কথা বলা মাত্রয় রিয়া মনে মনে বিড় বিড় করে কি যেনো বললো কিছুই বুঝতে পারলাম না।
--থাক অাপনাকে অার এতো কিছু করতে হবেনা। এবার দয়া করে অাপনি নাক ডাকা বন্ধ করে অামাকে একটু ঘুমানোর সুযোগ দিন। (রিয়া)
--অামার নাক ডাকা বন্ধ হবে যদি অামাকে খাটের উপর ঘুমানোর সুযোগ দাও। এখন তুমিই সিদ্ধান্ত নাও কি করবে,,ঘুমাতে চাও কি না। (আমি)
রিয়া কিছুক্ষন চুপ করে থাকলো কোনো কথা বলছেনা।
অামি (মনে মনে) নিরবতা সম্মতির লক্ষন যদি রাজি হয়ে যায় তাহলে তো কোনো কথায় নাই।
রিয়া অনেক চিন্তা করে হ্যা সম্মতি দিলো কিন্ত তার সাথে শর্তও জুড়ে দিলো।
রিয়ার শর্ত হলো অামরা একই খাটে ঘুমাবো কিন্ত মাঝখান দিয়ে কোল বালিস থাকবে অাপনি কখনো যেনো অামার কাছে অাশার চেষ্টা করবেন না। অার যদি কোনো রকম ভাবে অাপনি অামার কাছে অাশার চেষ্টা করেন তাহলে কিন্ত অামি চিতকার করবো এবং অাব্বু অাম্মুকে বলে দেবো যে অাপনি অামার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছেন।
অামি রিয়ার দেওয়া শর্তে হ্যা সম্মতি দিলাম। সব যাই হোক ফ্লোর থেকে যখন খাটের উপরে ঘুমানোর পারমিশন পেয়ে গেছি,, তখন মাঝখান থেকে কোলবালিশ সরাতে বেশি সময় লাগবেনা।
অামি ফ্লোরের উপর থেকে বালিস টা হাতে নিয়ে একটা গান গাইতে লাগলাম (অাহা কি অানান্দ এখন অামি ফ্লোর ঘুমানো বাদ দিয়ে ঘুমাবো খাটের উপরে) গানটি শেষ করেই অামি খাটের উপরে লাফ দিয়ে উঠে বাচ্চাদের মতো করে শুয়ে পড়লাম। কিন্ত এই শুয়ে থাকাটা অামার এক মিনিটও স্থায়ী হয়নি,,। খাটের উপরে গিয়ে শুয়া মাত্রয় অামার বালিশটা রিয়া জোর করে নিয়ে নিলো অাবার নিচে ফেলে দিলো। অামিতো ভেবাচাকা খেয়ে গেলাম......
--কি হলো অামার বালিস নিচে ফেলে দিলে কেনো। (আমি)
--অাপনার বালিশ নিচে ফেলে দিলাম কেনো সেটার কারন অাপনি এখনো বুঝতে পারেননি। অাপনিতো একটা পাগল কারন মাঝরাতে পাগলে ছাড়া কখনো অার কাউকে গান গাইতে দেখেছেন। ( রিয়া)
শেষ পর্যন্ত বউ অামাকে পাগল বানিয়ে দিলো বিদায় পৃথিবী বিদায় এই জীবন রাখার চাইতে নিমগাছের নিচে তশক রেখে গাছে উঠে সেই তশকের উপরে লাফ দিয়ে অাত্নহত্যা করা অনেক ভালো।😜
মরে যেতে মন চাইলেও রাগ অামার ২১৮ পর্যন্ত উঠে পড়েছে। কিন্ত নতুন বউ বলে কোনো রকম ভাবে রাগটা কন্ট্রোল করলাম। রিয়াকে বোঝানোর চেষ্টা করলাম অানান্দের ঠেলায় অামার মুখ দিয়ে গান বেরিয়ে পড়েছে এরকম ভুল অার কখনো হবেনা মহারাণী।
--ঠিক অাছে এবারের মতো অাপনাকে ক্ষমা করে দিলাম কিন্ত দ্বিতীয় বার যেনো এমন ভুল অার না হয়।। (রিয়া)
অামি রিয়ার কথায় হ্যা সম্মতি দিয়ে অাবার খাটের উপরে গিয়ে শুয়ে পড়লাম।
অামরা দুজন স্বামী স্ত্রী হলেও অামাদের মাঝখানে রয়েছে চীনের প্রাচীর মানে কোল বালিস।
কিছুক্ষন পরে দেখি অাবার সেই নাক ডাকা শুরু হলো অামি মনে মনে ভাবলাম মহারাণীর যে ভাবে নাক ডাকছে যদি রেকোডিং করে অামার মোবাইলে রিংটোন তৈরি করি কেমন হবে। না থাক এমনটা করা ঠিক হবেনা এমনিতেই অনেক রাগি অাবার যদি এমন কাজ করি তাহলে হয়তো অামার অার রুমের ভিতরে ঘুমানোর সুযোগটাও থাকবেনা।
এসব কিছু ভাবতে ভাবতে ঘুমের দেশে হারিয়ে গেলাম।
সকাল বেলা উঠেয় রিয়ার রুপের সোন্দর্যের দিকে অামার দুটি চোখের ছোয়া লাগলো। কিছুক্ষনেরর জন্য অামি রিয়ার সোন্দর্যের সাগরে অামি ডুবে গেলাম এলোমেলো চুল গুলো যেনো রিয়ার সোন্দর্য অারো বাড়িয়ে দিয়েছে।
কিন্ত এভাবে তাকিয়ে থাকা অার সম্ভবনা অফিসের দেরি হলে বসের উল্টা পাল্টা বকুনি শুনতে হবে। তাই অামি ফ্রেশ হয়ে সকালের নাস্তা খেয়ে বাইকটা নিয়ে অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
মেয়েটা রাগি হলেও চেহারাটা অনেক মায়াবি অাস্তে অাস্তে অামি রিয়াকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছি । কিন্ত অামার এই ভালোবাসাটা ওকে বোঝাবো কি করে।
অফিসের ব্যাস্তার মাঝেও রিয়ার কাছে ফোন করলাম কিন্ত রিয়া ফোন রিসিভ করলো না । কয়েকবার ফোন দিলাম তবুও রিয়া ফোন রিসিভ করলো না।
অফিস টাইমটা বেশ ভালোয় যাচ্চিলো কিন্ত রিয়া যখন অামার ফোন রিসিভ করলো না তখন অামার মনটা অনেক খারাপ হয়ে গেলো। অফিসের কাজের ব্যাস্তার মাঝেও যেনো প্রতিটা ঘন্টা অামার কাছে অভিশপ্ত মনে হচ্ছে। অনেক প্রতিক্ষার পর অফিস ছুটি হলো। বাসায় এসে অাম্মাকে জ্বিগাসা করলাম রিয়া কোথায় ওর কাছে কয়েকবার ফোন করেছিলাম কিন্ত ফোন রিসিভ করে নাই।
অাম্মা বললো ওর অাম্মু ফোন করেছিলো ওর ছোট ভাইয়ের শরীর নাকি খুব অসুস্থ তাই ও বাসায় গেছে।
যাক বাবা অাজকে রাতটা ভালো করে একটু ঘুমাতে পারবো। রাতের খাবার খেয়ে রুমে এসে শুয়ে পড়লাম। রুমটা যেনো অাজকে অনেক ফাকা লাগছে। রিয়াকে অাবার ফোন করলাম কিন্ত ফোন রিসিভ করলো না সাথে কয়েকটা মেসেজও করলাম কিন্ত
একটা মেসেজও রিপ্লে পেলাম না। পাগলিটা অামার সাথে যতোই অভিমান করে না কেন তার অভিমান গুলো কেনো জানি অামার কাছেও ভালো লাগতে শুরুকরে দিয়েছে।
এই ঘরটা যেনো অাজ অনেকটা অন্যরকম লাগছে,,কোনো কিছুর একটা অপুরনতা রয়েগেছে।
কোনো ভাবেই অামি অামার মনটাকে স্থির করতে পারছিনা বার বার রিয়া কথা মনে পড়ছে। রিয়াদের বাসা আমাদের বাসা কয়েক কিলোমিটার দুরে। কিন্ত রাতের বেলায় যদি নতুন জামায় শশুর বাড়িতে যায় তাহলে শশুর বাড়ির লোকে কি বলবে।
এখন অামি না পারছি ঘুমাতে না পারছি শশুড় বাড়ি যেতে। নিজে নিজেয় সিদ্ধান্ত নিলাম কালকে সকালেই রিয়াদের বাসায় গিয়ে ওকে একটি বারের জন্য হলেও দেখে অসবো।
কিন্ত রিয়া অামার ফোন রিসিভ করলো না কেনো।।
যাই হোক এসব কিছু চিন্তা করে কোনো লাভ নেই কালকে যখন রিয়াদের বাসায় যাবো তখন না হয় রিয়ার কাছে সব কিছু জেনে নেবো,,,,,,,,,,!!!
চলবে............. (waiting for next part)
প্রিয় বন্ধু গণ আজকের পর্ব আপনাদের কাছে কেমন লাগলো কমেন্ট করে জানাবেন।। আজকের মত এটুকুই আবার দেখা হবে পরবর্তী পর্বে।। ধন্যবাদ।।
#পরবর্তী_পর্বের_জন্য_অপেক্ষা_করুন ।