গল্পঃ #রাগী_বউ - ২ [Love♥️Story] লেখক: #আবির_মাহমুদ শান্ত। পর্ব - ০৪ (চার) ♥️♥️শেষ পর্ব

 


গল্পঃ #রাগী_বউ - ২ [Love♥️Story]

লেখক: #আবির_মাহমুদ শান্ত।

পর্ব - ০৪ (চার) ♥️♥️শেষ পর্ব ♥️♥️


সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে বাইকটা নিয়ে রিয়াদের বাসার উদ্দেশ্য রওনা দিলাম।

বিয়ের পর অাজকে প্রথম দিন শশুর বাড়িতে যাচ্ছি। রিয়াকে অামি এতোটা ভালোবেসে ফেলেছি সেটা অামি বোঝাতে পারবোনা। কিন্ত রাগি বান্দরনীটা তো অামারে একটুও বুঝেনা।


অামি কখনো ভাবিনি যে রিয়াকে অামি এতোটা ভালোবেসে ফেলবো এ সব কিছু ভাবতে ভাবতে রিয়াদের বাসার সামনে এসে পৌছালাম। ভিতরে ঢুকার সাহস পাচ্ছিনা। গেটের সামনে এসে দশ মিনিট ধরে দাড়িয়ে দাড়িয়ে ভাবছি ভিতরে যাবো কি যাবো না।


রিয়া যদি কোনো ভাবে অামাকে অপমান করে কারন ও অামাকে তো একটুও সহ্য করতে পারে না। কিন্ত অামি অার থাকতে পারছিনা একটি বার হলেও রিয়ার সাথে অামার দেখা করতে হবে।,

সব ভয় ত্যাগ করে গেটের সামনে দাড়িয়ে না থেকে বাসার ভিতরে ঢুকে পড়লাম।


বাসার ভিতরে ঢুকতেই দেখি রিয়ার ছোট ভাই রিফাত খেলা করছে। রিফাত অামাকে দেখেয় অাদো অাদো স্বরে জোর গলায় অাপু অাপু দেখো ভাইয়া এসেছে।


অামি( মনে মনে) গলার কি ভয়েজ মাইরি যেমন রিয়ার গলার ভয়েজ তেমনি রিফাতের। রিফাতকে নিয়ে অামি রুমের ভিতরে গেলাম।


রুমের ভিতরে যেতেই দেখি রিয়ার বাবা মা বসে অাছে অামি সালাম দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করে জ্বিগাসা করলাম রিয়া কোথায়। 


-- রিয়া রুমের ভিতরে বাবা।


অামি সোজা রিয়ার রুমে চলে গেলাম গিয়ে দেখি রাগিনি রুমে ভিতরে খাটের উপরে বসে মোবাইলে গেমস খেলছে।


অামি অাস্তে অাস্তে রিয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি অার মনে মনে ভাবছি হে অাল্লাহ তুমি অামার মানসম্মান টা রেখো। নিশব্দ পায়ে হেটে রিয়ার কাছে গিয়ে,,,,


--কেমন অাছো তুমি অার তুমি অামার ফোনও রিসিভ করছো না অাবার কোনো মেসেজ ও রিপ্লে দিচ্ছো না কেনো,,। (আমি)


--অামি কেমন অাছি সেটা অাপনাকে জানার দরকার নাই।

অার অাপনি অামার কে তাই অামি অাপনার সাথে কথা বলবো। (রিয়া)


--অামি কে তুমি জানোনা। অার সবসময় তুমি অামার সাথে এমন রাগ দেখিয়ে কথা বলো কেনো। অামি তোমার স্বামী তাই তোমার ভালো মন্দ দেখার দায়িত্ব এখন অামার। (আমি)


--অামি অাপনাকে কখনো অামার স্বামী বলে স্বীকার করিনা। অাপনি এখন অাসতে পারেন। (রিয়া)


এই কথা শোনা মাত্রয় অামার মেজাজ ৩৬০ পর্যন্ত উঠে পড়েছে। অামি রুমের দরজটা বন্ধ করে দিলাম।


--অাপনি রুমের দরজা বন্ধ করছেন কেনো দেখুন অামি কিন্ত চিৎকার করবো। (রিয়া)


--তুমি চিৎকার করবা অার যা করবা করো,,।(আমি)


অামি রিয়ার হাত চিপে ধরে বললাম এবার বলো অামি তোমার কে,,।


--অাপনি অামার কেউ না। (রিয়া)


কয়েক বার জ্বিগাসা করলাম প্রত্যেক বার একই উত্তর দিলো অামি অাপনার কেউ না।

অামি অামার রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে দিলাম দুই গালে দুইটা থাপ্পড়। সেই সাথে রিয়াও অামাকে দুইটা থাপ্পড় কষিয়ে দিলো।


অামি( মনে মনে) তুমি যখন বউ হয়ে স্বামীর গালে থাপ্পড় মারতে পারো অামি কেনো পারবোনা,। পরপর দিলাম অাবার তিনটা থাপ্পড় তার পর রিয়ার হাত দুইটা ধরে থাকলাম ও যেনো অামাকে অার না মারতে পারে। রিয়াকে থাপ্পড় মারার পর (মনে মনে) পাগলিটাকে এমন জোরে থাপ্পড় মারাটা মনে হয় অমার ঠিক হয়নি। 


না জানি হাত খানা ছেড়ে দিলে অামার অবস্থা কি হবে। শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে রিয়ার হাত দুইটা ধরে রাখলাম,,। 


--এবার বলো তুমি অামার কে?


রিয়া কান্না স্বরে নরম সুরে ভয়ে ভয়ে তুমি অামার স্বামী। 


--অামার সাথে অার কখনো খারাপ ব্যবহার করবে না তো। 


--না অার কখনো তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করবোনা।


তার পর হাত দুইটা ছেড়ে দিলাম। 


--এবারলক্ষি মেয়ের মতো করে বাসায় চলো। ওদিকে অামার অফিসের সময় হয়ে যাচ্ছে।


রিয়া একটুও দেরি করলোনা দশ মিনিটের মধ্য রিয়া একটা নীল শাড়ি পড়ে অামার সামনে উপস্থিত। মনে মনে ভাবতে লাগলাম মাত্র পাচটা থাপ্পড় দিয়া রাগিনী বউটা এখন অামার সাথে এতো ভালো ব্যবহার করছে।


 রিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখি নীল শাড়িতে অসম্ভব সুন্দর লাগছে। অামি অধির অাগ্রহ নিয়ে রিয়ার মুখের দিকে চেয়ে থাকলাম।


রিয়া অামার সামনে এসে......


--এই যে তুমি মিস্টার আবির এমন করে কি দেখছো।


অামি চমকে উঠলাম।


--উফ তুমি এমন কেনো একটু মন ভরে দেখতেও দিলেনা।


--তোমার না অফিসের দেরি হয়ে যাচ্ছে চলো তাড়াতাড়ি।


--ও হ্যা অামার তো অফিসের দেরি হয়ে যাচ্ছে এই বলে রুম থেকে বেরিয়ে পড়লাম।


রিয়ার মা.......


--অারে এইতো অাসলে অাবার এখনই চলে যাচ্ছো,।


--হ্যা অাবার কোনো একদিন সময় করে অাসবো এখন অামার অফিসের দেরি হয়ে যাচ্ছে। (এই বলে বিদায় নিলাম। )


বাড়িতে এসে রিয়া বাচ্চাদের মতো করে বায়না ধরলো চলোনা অাজকে অামরা অনেক ঘুরব অার অনেক শপিং করবো।


অামি এটা চিন্তা করে উঠতে পারছিনা রাগিনী টা এতো ভালো কি করে হয়ে গেল।


অাজ প্রথম রিয়া অামার সাথে ঘুরতে যাওয়ার বায়না করছে অার সেটা যদি অামি পুরন করতে না পারি তাহলে বিষয়টা অন্য রকম হয়ে যায়।


তাই রিয়ার কথায় হ্যা সম্মতি দিলাম। রিয়া অামার সম্মতিতে একটা মুচকি হাসি দিলো। এই প্রথম অামি রিয়ার মুখে হাসি দেখলাম। মনে হচ্ছে যেনো রিয়ার সুন্দর মুখের হাসিতে মুক্ত ঝরে পড়ছে।


রিয়ার মুখের মুক্ত ঝরা হাসিটা দেখে অামার মনটা শীতল হয়ে গেলো। 


রিয়ার মুক্ত ঝরা হাসিতে অামি অফিসে যাওয়ার কথা ভুলে গেলাম। কোনো এক অজানা পথে পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশ্যে দুজনে বেরিয়ে পড়লাম,,।


সারা দিন ঘুরাঘুরির মধ্য দুজনের পছন্দ মতো অনেক শপিং করে সন্ধার দিকে বাসায় ফিরলাম।


দুজনেই ফ্রেশ হয়ে রাতের খাবার খেয়ে রুমে অাসলাম।


রুমে অাসতে না অাসতেই রিয়া অাবার বায়না ধরলো চলোনা ছাদে যায়।


অাজ দুজনে অনেক গল্প করবো। অামি অার না করতে পারলাম না।


অাজ রিয়া যেনো পুরোটা পরিবর্তন হয়ে গেছে। যে মেয়েটা কখনো অামাকে তার কাছে যাওয়ার সুযোগ দিতো না কোনো কথা বলার অাগেই অামার উপর অভিমান করতো অাজকে সেই মেয়েটা অামাকে তার নিজের মনে জায়গা করে নিয়েছে। অাজ নিজেকে অনেক ভাগ্যমান মনে হচ্ছে।,


অার দেরি না করে দুজনে ছাদের উপরে গিয়ে দোলনায় বসে অাকাশের দিকে তাকিয়ে মনে হচ্ছে অাকাশের চাঁদটাও যেনো অসম্ভব সুন্দর লাগছে। 


অামি রিয়ার নিস্তব্ধ মুখের দিকে একবার অার ঐ দুর অাকাশের চাঁদটার দিকে একবার তাকাচ্ছি। 

চাঁদের অালোয় রিয়ার মুখের সোন্দর্য অামাকে কোনো এক নেশার অার্বিরভুত করছে।


হঠাৎ রিয়া অামার হাতের উপর তার হাত রেখে বললো 

......


--অামি কখন থেকে দেখছি তুমি একবার অামার দিকে অার একবার ঐ অাকাশের চাঁদটার দিকে তাকাচ্ছ কি হয়েছে তোমার।


--অামি চমকে উঠে কই কিছু না তো।


--তুমি কিছু বলবে,,


--এই যে লাজুক ছেলে, এত ভয় পাচ্ছো কেন? আমার একাটা জিনিষ চাই, সেটা পারবেন তো দিতে?


--হুম পারব।


—একটা রাজকন্যা গিফট করতে পারবে? 


আমি লজ্জ্বাকন্ঠে বললাম...


—তুমি শুধু অামাকে ভালোবেসে যাবে, আমি তোমায় পৃথিবীর সব সুখ দিয়ে দিব,,,,,,,,,,,।


------------------------♥️সমাপ্ত♥️------------------


প্রিয় পাঠক পাঠিকা গণ....আজকের মত এখানেই শেষ করছি। আশা করছি গল্পটি আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে। গল্প দেরি করে দেওয়ার জন্য আমি সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।


সবাই ভালো থাকবেন দেখা হবে পরবর্তী গল্পে। আল্লাহ হাফেজ।।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post