#কালো ছেলে Vs সুন্দরী বউ
#লেখকঃরনি হাসান
#পর্বঃ৫
আমি:মিমি এভাবে বলে আমাকে কষ্ট দিওনা তাছাড়া আমার আব্বু আম্মুও তো তোমাকে নিজের মেয়ের মতো আদর করে|তাদের দিকে চেয়ে থাকো প্লীজ!!
মিমি:না সেটা সম্ভব না|সবচেয়ে বড় কথা হলো আমি রহিতকে অনেক পছন্দ করি| সে আমাকে প্রোপজ করেছিল,আমি তার প্রোপজে রাজি হয়ে যায়| আর আমার বিয়ে কথাটি বলেছিলাম সে বলেছিল কোনো ব্যাপার না| তুমি আমাকে তো ভালোবাসো এতেই অনেক। আর রনিকে না হই ডিভোষ দিয়ে আমার কাছে চলে আসলে
আমি:কি বলছ তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে?
মিমি:আমি একদম ঠিক আছি!
আমি:তুমি কীভাবে পারলে তার প্রোপজ জালটা গ্রহন করতে! একবারো ভাবলে না আল্লাহর তায়া’লার কালাম পড়ে বিবাহ বন্ধন আমরা আবদ্ধ হয়েছি সে কথা!
মিমি:আমি এই বিয়ে মানি না!
আমি:দেখ মিমি বিয়েটা যেহেতু আল্লাহর রহমতে আমাদের হয়েই গেছে| তাছাড়া প্রকতপক্ষে বিয়ে একবারি হয়|
মিমি:আমাকে এত জ্ঞান দিতে হবে না| তোর কাছ থেকে আমাকে মুক্তি দে প্লীজ! আর কালো জামাইয়ের সংসার করতে পারবো না
আমি:আমি কালো বলে| আমাকে ভালোবাসা যায় না| যায় না কি স্বামী হিসেবে মেনে নিতে
মিমি:না মেনে নেওয়া যায় না| কি করে তোকে মেনে নিব বল| তুই দেখতেও সুদর্শন না, স্মাটনেস বলতে তোর মধ্যে কিছুই নেই|আর গায়ের রং একটু কালো হলে কোনো ব্যাপার ছিল না|তুই এতটাই কালো যে তোকে দেখলে আমার রাগে মাথা ফেটে যায়|
আমি:আমি কোনোদিন আমার চেহারা নিয়ে কারো কাছে অভিযোগ করনি| কিন্তু আজ আল্লাহ তায়ালার কাছে আমার অভিযোগ করব, কেন আমাকে কালো বানালে|আমি তো কোনো দোষ করনি| আজ কালো বলে নিজের বিয়ে করা বউয়ের কাছ থেকে অবহেলা পেতে হচ্ছে
মিমি:তোর ফালতু বকবক বন্ধ করবি!(অনেকটা বিরক্তি নিয়ে)
আমি:হুমম অবশ্যই করব,তবে আমাকে সুযোগ দেওয়া যায় না?
মিমি:তোকে কি সুযোগ দিবো বল?
আমি:আমি তোমাকে একমাসের মধ্যে আমার প্রেমে ফেলব যদি না পারি তাহলে আমি নিজেই ডিভোষ দিয়ে দিব,শর্তে তুমি রাজি?
মিমি:হ্যা রাজি!(১মাস কেন সারাজীবনেও আমি তোর প্রেম পড়ব না| মনে মনে বলল)
আমি:আচ্ছা ঠিক আছে! এবার ঘুমাও অনেক রাত হয়েছে! তারপর কিছুক্ষন পর ঘুমিয়ে পড়ল মিমি কিন্তু আমি ঘুমাতে পারলাম না| আমাকে কোনো ভাবে বাজিতে হার মানলে চলবে না| আমার ভালোবাসার জন্য আমাকে লড়াই করতে হবে|
অনেক তো সুয়ে বসে খেয়ে আসলাম! এখন একটা চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে! আচ্ছা আব্বুকে বলি!
আমি:আব্বু একটা কথা ছিল!
আব্বু:হুমম বল?
আমি:আব্বু আমার একটা চাকরি লাগবে!
আব্বু:কেন?
আমি:সুয়ে বসে অনেক খেয়েছি!এবার নিজের পায়ে দাড়াতে চাই!
আব্বু:আচ্ছা ঠিক আছে তুই যখন বলছিস তখন একটা চাকরির ব্যবস্থা করাই যায়!
আমি:ওকে আব্বু!
অবশেষ আব্বু একটা চাকরি ব্যবস্থা করে দিতে পারছে! বেতন মাসে 30 হাজার টাকা| যাই হক কাল সকালে আমার অফিস জীবনে প্রথম দিন| তাহলে কাল সকালে কথা হবে গুড নাইট|
সকালে
আমি:ঘুম থেকে উঠলাম হঠাৎ করে মিমির ঘুমন্ত চেহারার দিকে চোখ আটকে গেল! ঘুমন্ত অব্যস্থায় একটা মানুষকে এতসুন্দর দেখা যায়, আমার কল্পনার বাহিরে!তাতে আমার কি সে তো আমাকে পছন্দ করে না| আজ যেহেতু অফিসের প্রথম দিন তাই একটু সকালে উঠলাম| যাই ফ্রেশ হয়ে নেই|
ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি মিমি এখনোও ঘুমিয়ে আছে! তাই একটু ডাক দিলাম!
আমি:মিমি...! মিমি...!মিমি...|তিনবার ডাক দেবার পর মিমিকে হাত দিয়ে আলতো ভাবে ধাক্কা দিয়ে ঘুম ভাঙ্গুনো চেষ্টা করছিলাম| তখন ঘুম থেকে উঠে আমার পাওনাটা বুঝিয়ে দিল!
ঠাসসস ঠাসস করে দুইটা থাপ্পর বসিয়ে দিল!
মিমি:তোকে নিষেধ করেছিলাম না| আমাকে ভুলেও স্পর্শ করবি না|(রেগে চিৎকার দিয়ে বলল)
আমি:গালে হাত দিয়ে অবাক হয়ে গেলাম! আমি কি বলব!ভেবে পাচ্ছি না!
মিমি:কি হলো কথা বলছিস না কেন?(রেগে বলল)
আমি:আজকে প্রথম অফিসে যাচ্ছিলাম| এর জন্য তোমাকে জানাতে চেয়েছিলাম(মন খারাপ করে বললাম)
মিমি:তোর চাকরির কথা আমি শুনে কি করব!
আমি:অহহ সরি আমি ভুলে গেছিলাম! আমি তো তোমার কেউ না!
মিমি:বুঝতেই যখন পেরেছিস! কেন আমার পিছে পড়ে থাকিস?
আমি:খুব বেশি ভালোবেসে ফেলেছি তোমাকে!
মিমি:কোনো লাভ নেই| আমি তোর মতো ক্ষ্যাতকে কখনো মেনে নিতে পারব না!
আমি:কোনো উত্তর না দিয়ে অফিসে চলে গেলাম!মনটা নিমিষেই খারাপ হয়ে গেল!
অফিসে ভিতরে গেলাম! গিয়েই অবাক হয়ে গেলাম!
তিথি বলতে শুরু করল?
তিথি:অনেক দিন পর দেখলাম! তো কেমন আছিস?
আমি:খুব ভালো আছি! কিন্তু তোর কি খবর?
তিথি:ভালো! এখানে কেন?
আমি:আজকেই জয়েন করলাম| কিন্তু তুই এখানে?
তিথি:এই কোম্পানিতে আমি চাকরি করছি ২মাস আগে থেকে!
আমি:অহ আচ্ছা| তাহলে চল স্যারের কাছে যায়!
তিথি:আচ্ছা চল!
এই তিথি সঙ্গে ক্লাস ষষ্ট থেকে দশম শ্রেনি পর্যন্ত পড়ে আসছি| তারপর তিথি বাহিরে মানে বকশীগন্জ থেকে ময়মনসিংহ চলে যাওয়াতে আর দেখা হয়নি|আজ হঠাৎ কয়েক বছর পর দেখা হলো। তবে তিথি আমাকে মনে মনে পছন্দ করত| কিন্তু বলে নাই|তার চলাফেরাতে বুঝতে আমার বাকি ছিল না|
তারপর স্যারের সাথে কথা বলে আমার কেবিন দেখিয়ে দিল| আর সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিল| আজ যেহেতু প্রথম কাজ করছি তাই ভুল হচ্ছে! কিন্তু তিথি থাকাই আমার ভুলটা সমাধানও তিথি বের করে দিচ্ছে|
কাজ করতে গিয়ে কখন যে লান্সের সময় হয়ে গেল!আমার সেদিকে কোনো খেয়াল নেই! হঠাৎ তিথির ডাকে কাজের ঘোর কাটল!
তিথি:এই যে সাহেব একদিনে এত কাজের চাপ নিতে হবে না!
আমি:হুমম একদম ঠিক বলছিস! কাজের চাপে মাথা কেমন ঘোরে পড়েছে!
তিথি:চল খেতে যায়!
আমি:আচ্ছা চল! এরি মধ্যে মিমির কথা মনে পড়ল,তাই একটু ফোন দিলাম !
আমি:তিথি তুই ক্যান্টিনে যা, আমি ফোন একটু কথা বলে আসছি!
তিথি:ওকে!
মিমিকে ফোন করলাম! কিন্তু ফোনটা ওয়েটিংএ পেলাম|তারপর কয়েকবার ফোন দিবার পর রিসিব করল..!
আমি:হেলো!
মিমি:এই অসময়ে কেন ফোন করলি ?
আমি:আগে বলো বল কার সাথে বললে?
মিমি:তোকে বলতে আমি বাধ্য নই! আচ্ছা শুনতে যখন চাচ্ছিস তাহলে শুন ঐটা রুহিত ছিল!
আমি:মিমি কথাটি শুনে বুকের বাম পাশে চিন চিন ব্যথা অনুভব করলাম| তারপর বললাম... মিমি রুহিতের সাথে কথা বলো না প্লিজ | তুমি যখন রুহিতের কথা আমার কাছে বলো তখন খুব কষ্ট হয়!
মিমি:তোর কষ্ট হলে আমার কি!
আমি:ঠিক বলছ! আমার কষ্ট হলে তোমার তো কিছু আসে যায় না| আমি তো তোমার কেউ না|
মিমি:তোর বক বক বন্ধ করবি?
আমি:অবশ্যই করব|তার আগে বলো এখন কি কর?
মিমি:খুশির ঠেলাই ডান্স করছি!(রেগে বল)
আমি:আমার সাথে কেন এমন আচরন করো?
মিমি:এই ফোন রাখতো! তোর কথা আমার একদম ভালো লাগে না| কেন গায়ে পড়ে এত কথা বলিস!
আমি:খুব ভালোবেসে ফেলছি তোমাকে!তুমি যেটা বলবা আমি সেটাই করব তাও আমার সাথে এমন আচরন করো না প্লীজ!
মিমি:আমি যেটা বলব সেটা করবি তো!
আমি:তুমি বল?
মিমি:আমাকে তোর কাছ থেকে মুক্তি দে!
আমি:আমি কোনো কিছু না বলে ফোন কেটে দিলাম| মিমিকে ডিফোষ কখনো দিতে পারব না| এজন্য ফোন কেটে দিলাম!
আচ্ছা এবার ক্যান্টিনে যায় নইত আবার তিথি আমার উপর রেগে যাবে! অবশ্য আমারও অনেক ক্ষুদা লাগছে
আমি:ক্যান্টিনে গিয়ে দেখলাম তিথি অনেক রেগে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলল
তিথি:এখন তোর আসা সময় হলো! ফোনে এত কথা কার সাথে বলছিলি
আমি:না তেমন কিছু না|
তিথি:নাম কি?
আমি:কার নাম!
তিথি:কার আবার তোর জিএফ এর!
আমি:হা হা হা!
তিথি:হাসিস কেন?
আমি:হাসলাম এর জন্য আমার মতো কালো আনস্মাট ক্ষ্যাতকে কে ভালোবাসবে?
তিথি:তুই মোটেও ক্ষ্যাত না|
আমি:আচ্ছা ঠিক আছে! এবার খাওয়া যাক| (কিন্তু তিথিকে একথা বলাতে কেমন একটা রিয়েক্ট করল)
তারপর খাবার খেয়ে অফিসের কিছু কাজ করে রাত ১০ টায় বাড়িতে গেলাম..!
!
!
(চলবে)