#কালো ছেলে Vs সুন্দরী বউ
#লেখকঃরনি হাসান
#পর্বঃ৬
কিন্তু যাবার আগে বাজার থেকে মিমির জন্য ফুসকা আর কয়েকটা আইক্রীম নিয়ে বাড়িত ফিরলাম | তারপর দরজা গিয়ে নক করতেই আম্মু খুলে দিল... আম্মুকে বললাম!
আমি:আম্মু মিমি কই?
আম্মু:ঘুমিয়ে গিয়েছে হয়ত!
আমি:অহহ!
আম্মু:ফ্রেশ হয়ে খেতে আই!
আমি:আচ্ছা
ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে রুমে গেলাম..! মিমিকে এই অবস্থাই দেখি আমি অবাক!!!
আমি:রুমে প্রবেশ করে দেখি মিমি ফোনে কথা বলছে কথা বলার ধরন দেখি যে কেউ বলবে যে এটা কে হতে পারে! তারপর একটু কাশি দিলাম মিমি আমাকে দেখি একটা বিরক্তির চোখে তাকালো!
মিমি:আসার আর সময় পেলি না!
আমি:কেনো?
মিমি:তোর আসাতে আমার কথা বলার মুডটাই নষ্ট হয়ে গেলো
আমি:আচ্ছা আর হবে না..!
মিমি:মনে যেন থাকে!
আমি:হঠাৎ করে আমার মনে পড়ল মিমির জন্য ফুসকা আর আইসক্রীমটা দিতে ভুলে গেছিলাম| তাই ফুসকা আর আইসক্রীম মিমি দিকে দিয়ে বললাম
আমি:মিমি তোমার জন্য(ফুসকা আর আইসক্রীম এগিয়ে দিয়ে)
মিমি:কি?
আমি:ধরো! তারপর মিমি নিল আর অনেক রেগে গিয়ে ফুসকা আর আইসক্রীম ফেলে দিয়ে বলল?
মিমি:যতসব ঢং!
আমি:মিমি তুমি এগুলো ফেলে দিলে কেন?
মিমি:তোর কোন বিশ্বাস নেই| খাবার মধ্যে কিনা কি! যাদু করে আনছিস তোর হাতের খাবার আমাকে খেতে হবে, অসম্ভব!
আমি:মিমির কথা শুনে আমার মাথাই যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল! তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম
আমি;মিমি কি বল এসব?
মিমি:হ্যা ঠিক বলছি!
আমি:আমি কেন তোমাকে ঐসব খাওয়াতে যাব!
মিমি:তোকে একদম বিশ্বাস করা যায় না..!
আমি:আমাকে এতটাই অযোগ্য মনে বলে মনে করো তুমি?
মিমি:হ্যা তাই করি| তোকে বিশ্বাস করি না|
আমি:মিমি তোমাকে তো আমি বলেছি একমাসে যদি তোমাকে আমার প্রেমের ফাদে না ফেলাতে পারি| তাহলে তোমাকে আমার কাছ থেকে সারাজীবনের জন্য আলাদা করে দিব?
মিমি:তোকে দেখলে আমার মুড খারাপ যায় কি বিশ্রী দেখতে একদম কালো ভুত একটা
আমি:(মিমির কথায় আমার কোনো জবাব নাই যা বলছে সত্যি বলছে কালো ভুত)
মিমি:কলেজ জীবনে কত স্মাট ছেলেরা আমার জন্য পাগল ছিলো কিন্তু আমি তাদেরকে পাত্তা দিতাম না| কিন্তু আমার কপালে তোর মতো কালো আনস্মাট ছেলেকে আমার কপালে জুলিয়ে দিবে কে জানে!
আমি:আমি কালো আনস্মাট বলে আমার সাথে এমন আচরন করছো
মিমি:একখন তোর বকবক বন্ধ করতো আমি ঘুমাব!
আমি:আচ্ছা ঘুমিয়ে পড়| আর বিরক্ত করব না|
তারপর মিমি, মিমির স্থানে,আমি আমার স্থানে!মানে মিমি তো খাটে ঘুমাই আর আমার সেই সৌভাগ্যে নেই যে তার সাথে এক বিছানাই ঘুমাতে পারবো !তাই বাধ্য হয়ে সোফাই ঘুমাতে হয়| আচ্ছা এখন ঘুমাই সকালে বেচে থাকলে আবার কথা হবে| গুড নাইট!!
সকালে
আমি:মিমি আমার ঘুড়ি একটু বের করে দাও তো!
মিমি:এমনভাবে বলছিস,যেন আমি তোকে মেনে নিয়েছি!
আমি:অহহ সরি, আমারি বুঝার ভুল ছিল আমি তো তোমার কেউ না| শুধুমাত্র কাগজে কলমে আমরা স্বামী স্ত্রী..!
মিমি:নিশ্চুপ
আমি:অফিসে গেলাম| তুমি নিজের খেয়াল রেখ!
মিমি:তোকে বলতে হবে না
আমি:একটু ভালোভাবে কথা বললে কি হয়!
মিমি:তোকে আমার একদম সহ্য হয় না| কেন বুঝিস না!
আমি:একয়েক দিনে অনেক ভালোবেসে ফেলছি তোমাক! প্লীজ মিমি এবার আমাকে নিয়ে ভেবে দেখো|
মিমি:তোকে নিয়ে ভাবার মতো আমার সময় নাই| আমার সামনে থেকে এখন যা তো ভালো লাগছে না!
আমি:খুব খারাপ লাগছে!
মিমি:হ্যা খুব খারাপ লাগতাছে!
আমি:চলে গেলে ভালো লাগবে?
মিমি:হ্যা অবশ্যই ভালো লাগব! তুই যখন আমার সামনে থাকস তখন খুব বিরক্ত লাগে তা তোকে বলে বুঝাতে পারব না!
আমি:এতটাই আমি অসহ্যকর যা তুমি আমাকে একটু সহ্য করতে পারো না..!
মিমি:হ্যা ঠিক তাই!
আমি:কি বলব বলার মতো ভাষা নেই| তাই কোনো কিছু না বলে চলে গেলাম অফিসে!
এভাবে কেটে গেল ২০ দিন!
কিন্তু মিমি একটুও পরিবর্তন হলে না| যখন কথা বলতে যেতাম তখন অপামানজনক কথা শুনাত| আমি কালো বলে| আর তার বয়ফেন্ড রুহিত নাকি অনেক স্মাট তাই মিমি তাকে অনেক ভালোবাসে| আর আমাকে কষ্ট দিবার জন্য মিমি ফোনে জোড়ে জোড়ে কথা বলে যে রুহিত আর মিমি কাপল হলে নাকি তাদের কাপুল অনেক সুন্দর মানাবে!
বেস
আমি শুনতাম আর মিমির দিকে করুন চোখে ইশারা করতাম প্লীজ মিমি আমাকে ছেড়ে যেও না !
কখনো আমাকে বুঝতে চেষ্টা করত না| সব সময় তুই তুককারি করত, শুধুমাত্র আব্বু আম্মুর সামনে ভালো ব্যবহার করত| আর আমি যে বলছিলাম যে একমাসে মিমিকে প্রেমে ফেলব| কিন্তু তা হলো না! মিমি আমাকে একদম সহ্য করতে পারে না| তাহলে ভালোবাসা কোন থেকে সৃষ্টি হবে| যখন কাছে গেছি তখন কটু কথা ছাড়া কখনো ভালো ব্যবহার করনি এইকয়েক দিন
হঠাৎ রাতে মিমির জ্বর আসল...!
মিমি জ্বরের ঘোরে আবোল তাবোল বকছে!
আমি:হঠাৎ মিমির ঘুমের মাঝে গুনগুন শব্দে আমার ঘুম ভাঙ্গল! তারপর লক্ষ্য করলাম মিমি কুকড়ে সুয়ে গুন গুন শব্দ করছিল! ইচ্ছা না থাকার পরও মিমির কপালে হাত রেখে আমি তো অবাক!
মিমির কপাল এতটাই গরম ছিল যে আমার ঠান্ডা হাত নিমিষে গরম হয়ে গেল!তারপর উপায় না পেয়ে মিমির মাথায় অনেক ক্ষন পানি দিলাম| তারপর কপালে জলপট্টি দিয়ে কখন যেন মিমির পাশে ঘুমিয়ে গেছি বুঝতে পারিনি
সকালে..!
মিমি:হঠাৎ লক্ষ্য করল আমি তারপাশে আছে! দেখি একদম রাগে আগুন হয়ে! আমার শার্টের কলার ধরে গালে শরীরে সব শক্তি দিয়ে ঠাসস ঠাসস ঠাসস তিনটা থাপ্পর মেরে বলতে শুরু করল..! অই লুচ্ছা তোর এত বড় সাহস আমার বিছানাই ঘুমাস বলে আরেকটা ঠাসস করে থাপ্পর মারল বলল আর কোনদিন আমার সাথে কথা বলবি না মনে যেন থাকে!
আমি:মিমি আমাকে এত জুরে গালে চারটি থাপ্পর দেওয়াতে আমার ঠোট কেটে গেছে! তারপর ঠোটের রক্ত মুছতে মুছতে বললাম!
আমি;তুমি ভুল ভাবছ তোমার কোনো ক্ষতি আমি করিনি| রাতে তোমার জ্বর আসছিল| আর ঘুমের ঘোরে আবোল তাবোল বকছিলে তাই আমি উপায় না পেয়ে তোমার মাথায় জলপট্টি দিতে কখন যেন তোমার পাশে ঘুমিয়ে পড়ছিলাম তা বুঝতে পারি নি| এর জন্য আমাকে মাপ করে করে দিও|আসলেই তুমি আমাকে সহ্য করতে পারেন না(এই বলে ফ্রেশ হতে গেলাম)
মিমি:তারপর দেখল তার বিছানাই জলপট্টি, মেঝেতে বালতি ভরা পানি|দেখেই অবাক হলো মনে মনে বলতে থাকল আমি এটা কি করলাম..! ও তো সারারাত আমাকে সেবা করেছে আর আমি ও কে ভুল বুঝে থাপ্পর দিলাম.... আজ নিজে কে অপরাধী লাগছে!
আর দিকে
আমি:মিমি ঠিকই বল তো! আমাকে কোনোদিন সে মেনেও নিবে না| আর ভালোবাসবে না|তার চেয়ে বরং মিমিকে মুক্ত করে দেয়!তারপর মিমিকে বললাম ?
আমি:মিমি আমি তোমার কাছে হেরে গেছি!অবশেষে তুমি জিতে গেল!
মিমি:আসলে আমিমমই! বলতে মিমির কথা থামিয়ে বললাম
আমি:আর নতুন করে অপমান না করলে খুশি হবো!তুমি তো আমার কাছ থেকে মুক্তি চাও পেয়ে যাবে! এই বলে অফিসে চলে গেলাম
!
!
(চলবে)
Next
ReplyDelete