বাড়িওয়ালার দাজ্জাল মেয়ে পর্বঃ 4


 বাড়িওয়ালার দাজ্জাল মেয়ে❤

লেখক: সানভি আহম্মেদ আবির ❤

পর্বঃ 4🙏


মা কথা বল, কথা বল মা আমার, আমি এক্ষুনি তোকে ফাহাদের কাছে নিয়ে যাবো😭😭😭😭😭

তাড়াতাড়ি এম্বুলেন্স কে খবর দাও হাস্পাতালে নিয়ে যেতে হবে।

কাজের মেয়ে এম্বুলেন্স কে ফোন দিলে মধুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো।

ঃডাক্তার ডাক্তার দেখেন আমার মেয়ের কি হয়েছে প্লিজ দেখুন,(মধুর বাবা)

ঃএতো অস্থির হবেন না আমরা উনাকে ইমার্জেন্সিতে নিয়ে যাচ্ছি।

তারপর মধুকে ইমার্জেন্সিতে নেওয়া হলো। কিছক্ষন পরে ডাক্তার আসলো।

ঃআমার মেয়ের কি হয়েছে, আমার মেয়ে ঠিক আছে তো?

ঃজি আপনার মেয়ে এখন প্রায় সুস্থ। আমার মনে হচ্ছে তিনি কয়েকবেলা উপোস আর অতিরিক্ত কান্না করার জন্য অজ্ঞান হয়ে গিয়েছেন।

ঃআলহামদুলিল্লাহ। ধন্যবাদ ডাক্তার।

ঃধন্যবাদ দিতে হবে না। এটা আমাদের কর্তব্য। আর উনার ভালোভাবে খেয়াল রাখবেন। ভবিষ্যতে যেন এরুপ না হয়।

তারপর মধুকে নিয়ে বাসায় আসা হলো। 

ঃবাবা ফাহাদ কোথায়, আমি ফাহাফের কাছে জাবো।

ঃমা আমি তোকে আজই ফাহাদের কাছে নিয়ে যাবো।

আচ্চা ফাহাদের বাসার ঠিকানা বলতো।

ঃফাহাদের বাড়ি সিলেট। 

ঃসিলেটের কোথায়? 

ঃসেটাতো জানিনা আর আমি কখনো অকে জিজ্ঞেস করিনি।

ঃঅহ সিট তাহলে জাবো কেমনে আমারা। সিলেট কোথায় থাকে কেমনে জানবো। আর এতো বড় সিলেট কোথায় খুজে বের করবো।

ঃতাহলে কি আমি আমার ফাহাদকে খুজে পাবো না।

ঃমা ভেঙে পড়িস না। ফাহাদকে আমরা অবশ্যই খুজে পাবো। আনি ভার্সিটির ফ্রেন্ডদের জিজ্ঞাসা করবো তারা কেউ না কেউ তো বলতে পারবে? আর না হলেও সে তো মাসখানেক পর এমনিতেই ভার্সিটি আসবে।

ঃআব্বু আমি এতো দিন অকে ছাড়া থাকতে পারবো না। 

ঃআমি এক্ষুনি অদের ভার্সিটিতে যাচ্ছি।

এদিকে আমি মধুকে ভুলতে পারছিনা। সব সময় মধুর হাসিমাখা মুখটি ভেসে উঠছে। বড্ড মিস করছি মধুকে।

তাহলে কি আমি মধুকে ভালবেসে ফেলেছি। কিন্তু এখন চাইলেও সম্ভব নয়। কি মুখে মধুর সামনে যাবো। আমি যেতে পারবো না। 

ভালবাসতে সবাই জানে সবার ভালভাসা হয়। তবে কারো কপালে ভালবাসার মানুসের সাথে ঘর সংসার করার সুযোগ থাকে। কারো ক্ষেত্রে নয়। আমারটা না হয় থাক।

সারাদিন ঘরে বাসে থাকি মধুর কথা মনে পড়ে 

না আজ একটু বাহিরে গিয়ে বন্ধদের সাথে আড্ডা দিয়ে আসি। হয়তো মন ভালো হবে।

আডডা দিয়ে ভালো লাগলো। 

এদিকে আংকেল ভার্সিটিতে এসে আমার পরিচিত ফ্রেন্ডদেরকে আমার কথা জিজ্ঞেস করলে তারা শুধু বল্ল আমার বাড়ি সিলেট। তারা আর কিছু জানেনা। 

ঃআব্বু ফাহাদের বাসার ঠিকানা পেয়েছো।(মধু)

ঃনা রে মা ওর বন্ধুরা বলে শুধু ওর সিলেট বাড়ি সিলেট। এছাড়া আর কিছু জানেনা। 

মধু কান্না করতে করতে চলে যায়।

না আমি মরে যাবো।আমি এ জীবন আর রাখবো না। যাকে নিয়ে আমি এই বুকে বাসা বেধেছি,যারে নিয়ে আমি দিনের পর দিন স্বপ্ন দেখেছি। আজ সে অনেক দুরে। সে আমাকে ভাল বাসেনা তাহলে আমি এ জীবন রেখে কি করবো। 

ঃমারে পাগলামি করিস না। একটা কথা একবার ভেবে দেখেছিস,তোর কিছু হলে আমি কি নিয়ে বাচবো। আমি বড্ড একা হয়ে যাবো। তোর মা মারা যাওয়ার পরে আমি তোকে কখনো কস্ট দিতে চাই নি। তোর কথা ভেবে আমি দ্বিতীয় বিয়ে করি নি, সৎ মা তোকে কস্ট দিবে বলে। আজ তুই কি আজে বাঝে বকছিস, তোর সামান্ন্য কিছু হলে আমি সহ্য করতে পারি না। আর তুই যদি মরে যাস তাহলে আমি কাকে নিয়ে বাঁচবো।

আর তুই মরে গেলে তোর ভালবাসার কি হবে। ফাহাদ তো আর অন্য কাউকে বিয়ে করেনি বা কাউকে ভালবাসে নি। ও আমার বিশ্বাস রক্ষা করতে গিয়ে চলে গেছে। আমি তোকে আর ফাহাদকে বিয়ে দিবো। এই আমি কথা দিলাম।

ঃবল আজ পর্যন্ত তুই আমার কাছে যা চেয়েছিস সব আমি দিয়েছি। কখনো কি কখনো আমার কথার নড়েচড়ে হয়েছিলো? 

ঃনা 😭😭

ঃতাহলে আজও হবে না।

এখন তুই খেয়ে শুয়ে পড়।

ঃঠিক আছে আব্বু।

রাতে সে আমার রুমে আসে। 

আমার রুমে কিছু কাপড় ফেলে এসেছি, সব একসাথে নিতে পারি নি তাই।

মধু আমার কাপড় গুলো নিয়ে বুকে জড়িয়ে কাদছে।

হঠাৎ মধু বাবা বলে চিতকার দেয়


ঃকি হয়েছে মা কি হয়েছে?

ঃআব্বু এই দেখ?

ঃএটা কি?

ঃএটা ফাহাদের ভার্সিটির ক্রিড়া প্রতিযোগিতার ফরম। যেখানে ফাহাদের সব ঠিকানা দেওয়া আছে।

ঃতাহলে তো খুব ভালো হয়েছে। আমরা কালই ওর বাড়িতে যাবো।

ঃকাল কেন আমরা আজই জাবো।

ঃআচ্চা তাহলে রেডি হয়ে নে। আমিও রেডি হচ্ছি।

এদিকে বিকেলে আজ আমি পাড়ার ক্রিকেট খেলতে চলে গেলাম।ক্রিকেটে খেলা শেষ করে যখনই বাড়ি আসবো।তখনই আমার একবন্ধু বলে উঠে। 

ঃমামা চলনা ডাব খেয়ে আসি।

ঃশালা আজ পর্যন্ত দেখলাম না যে তোর বাড়িতে ডাব গাছ আছে। আমি এই একছর শহরে যাওয়ায় কি তোর বাড়িতে ডাব গাছ চলে এসেছে?

ঃআরে মামা ভুলে গেছিছ আগের কথা? 

ঃনাহ এসব ছেড়ে দিয়ে আমি এখন ভালো মানুষ হয়ে গেছি।

দেখনা কতোটুকু দাড়ি হয়েছে। দেখতে একদম হুজুর লাগে আর আমি করবো ডাব চুরি।

ঃহুজুর হয়েছিস! আজ আসর মাগরিব এর নামাজ কই পড়লি। আর দাড়ি এতো ছ্যাকা খেয়ে ব্যাকা হয়ে আছিস। তুই ঢোপ দিবে আর আমরা বুঝবো না, তাতাও হতে পারে না।

ঃএতো করে বলছিস যখন চল।কিন্তু এক শর্ত আছে?

ঃকি শর্ত? 

ঃডাব কিন্তু তোর হবু শশুর বাড়ি থেকে চুরি করবো।যাতে ধরা খেলে আমাদের আদরের নিলা ভাবি ছুটিয়ে দেয়।

ঃএই তুই কি করে যানলে যে চৌধুরি বাড়ির নিলার সাথে আমার রিলেশন চলছে। এই তোরা কেউ অকে বলেছিস। আমিতো অকে বলিনি।

ঃএসব খবর আমার জানা আছে মজনু। চল যাই।

ঃভাই এইখানে না গেলে হয় না। ধরা খেলে ছুটেতো যাবো কিন্তু আমার মানসম্মানের বলিদান দিতে হবে।

তার আমরা চার জন গেলাম ডাবচুরি করতে।

ঃএই গাছে কে উঠবে?

ঃআমাদের জামাইবাবু আছে না। উনার গাছ উনি উঠবে না তো কে উঠবে? (আমি)

ঃএই না না আমি উঠবো না(রনি জামাইবাবু)

ঃতো তোর ফ্যামিলিতে বলে দিব তর চক্করের কথা।

ঃশালা তোর অভ্যাস ছাড়লি না। আচ্চা উঠছি।

ঃতারপর রনি গাছে উঠে ডাব নিচে ফেলছে। আর আমরা তা লুফে নিচ্ছি। হঠাৎ একটা ডাব পুকুরে পড়ে গেলো তাই অনেক শব্দ হলো।

ঃএই কে কে অখানে? লাইট মেরে

ঃএই ঝুপে লুকা তাড়াতাড়ি। 

ঃমেয়েলি কন্ঠ, তার মানে আমাদের ভাবি। ভয় নাই চল সামনে যাই!

ঃআসসালামু আলাইকুম ভাবিজান। কেমন আছেন?

ঃআরে ফাহাদ ভাইয়া এতো রাতে আমাদের বাড়িতে আর বাড়িতে কবে আসছেন।

ঃএই দুই দিন হলো।

ঃআমাকে ভাবি বললে কেন?

ঃতা ভাভিকে ভাবি বলবো না কি বলবো।

ঃতার মানে জেনে গেছেন। 

আচ্চা ভাইয়া এখানে কিসের শব্দ হলো আব্বু বাসায় নাই তাই আমি বের হয়ে আসলাম। কিছু দেখছেন?

ঃএই রনির সাথে এখানে আসলাম, না তো কিছু দেখিনি।

হঠাৎ নিলা নিচের দিকে তাকিয়ে দেখলো অনেকগুলো ডাব পড়ে আছে।

ঃঅহ তার মানে তোমরাই ডাব চুরি করতে আসছো। আমি কিন্তু আব্বুকে বলবো।

ঃআচ্চা কার কার কথা বলবে?

ঃএই বলবো ফাহাদ, জিবান, শামিম, রাহিম এরা আমাদের ডাব চুরি করছে।

ঃআর রনির কথা বলবে না।(আমি)

ঃরনি এইসব কাজ করতেই পারে না। ও খুব ভালো। আমি কালকে অকে বলবো ও জেন তোমাদের সাথে মিলামিশা না করে। না হলে রনিও নস্ট হয়ে যাবে।

ঃবেচারা রনি তার গার্লফ্রেন্ড এর কথা শুনে মনে মনে খুব খুশি।

ঃতা ভাবি একবার গাছের উপরে লাইট মারেন তো?(জিবান)

ঃনিলা গাছের দিকে লাইট মেরে দেখে রনি গাছের বসে আছে চুপ করে।

এদিকে মধু আর আংকেল আমদের বাড়িতে এসেছেন।

ঃজি আপনাদের তো চিনলাম না।

ঃএই হচ্ছে আমার মেয়ে মধু। তারপর সব বললেন। 

এই জন্য বলি সারাদিন শুধু ঘরে বসে থাকে কেন?

ঃআচ্চা ফাহাদ কই এখন?

ঃও আজ বন্ধুদের সাথে বাহিরে গেছে?

তারা সবাই আমার আসার অপেক্ষা করছেন।

আর আমরা করছি ডাব চুরি।

ঃতো তুমি এদের সর্দার। আমি তোমাকে কতো ভালো মনে করেছি আর তুমি ডাব চুরি করছো।

ঃভাবি চেতেন কেন। চুরি করছি কোথায়। ও তো ওর শশুর বাড়ি থেকে নিচ্ছে।(শামিম)

ঃআচ্চা সমস্যা নাই মনে করেন যৌতুক হিসেবে নিচ্চি।

ঃবাবু তুমি নেমে আসো তো।(নিলা)

ঃনা আমি নামবো না।

ঃমানুষ ডাকবো? 

ঃনা জা নামছি।

ঃএই চল আমরা যাই। 

ভাবি ভালো ভাবে ওর ক্লাস নিয়েন।

ঃএই বলে আমরা চলে আসলাম।

এই এগুলা খাবে কি ভাবে। কাটবো যে বটি নাই।

ঃচল আমাদের বাসায়। ছাদের উপর দিয়ে বাসায় চলে যাবো।

তারপর আমরা আমাদের বাসায় আসলাম। বাসার সামনে একটি গাড়ি রাখা। ব্যাপার কি গাড়ি কেন?

ধুর আমার কি আমারা তো এখন ডাব খাবো।

তারপর চুপি চুপি আমার রুপে সবাই প্রবেশ করলাম। ডাব খেয়ে শেষ। 

এদিকে আম্মু আব্বু চিন্তা করছেন এখনো বাসায় আসি না কেন?

এওরখম তো কখনো হয় না। ফোন ও সাথে না যে কল দিবো।

আম্মু হঠাৎ উপরের তলায় আসলেন। আমার রুমের সামনে এসে শুনতে পেলেন রুমের ভিতর কথা চলছে। 

ঃএই তুই রুমের ভিতর আর আমরা চিন্তা করে মরছি।(আম্মু)

ঃআর এই ডাব গুলো কই থেকে এনেছো তোমরা। চুরি করনিতো।

ঃআসতাগফিরুল্লাহ আম্মু। তুমি এটা ভাবতে পারলে? 

ঃআচ্চা নিচে আয়, দেখ কে এসেছে?

ঃআমি নিচে গিয়ে অভাব!

মধু আর আংকেল? 

উনারা আমার বাসার ঠিকানা কেমনে জানলো।

ঃমধু আমাকে দেখেই দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে কাদতে লাগলো। 

ঃএখানে সব গুরুজন আমার কেমন লজ্জা লাগছে। আমি মধুকে জুর করে ছাড়িয়ে নিলাম।

ঃহঠাত তাকিয়ে দেখি আব্বু রাগিভাবে আমার দিকে আসছে?

ঃডাব চুরি করছি জেনে গেলো নাকি?

ঃআব্বু সুজা এসে আমার গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিলেন। 

ঃআব্বু মারলে কেন?

ঃতুই আমার ছেলে বলতে লজ্জা লাগে। তোর ভিতর কি মন নাই। একটা মেয়েকে কেউ এভাবে কস্ট দিতে পারে।

ঃআব্বু সরি।

ঃআর হা শুন আজ রাতে আমি তোদের বিয়ে দিবো। জিবান এদিকে আয় তো?

ঃজি আংকেল 

ঃএই নে টাকা অর জন্য পাঞ্জাবি আর বউ মা এর জন্য একটি শাড়ি নিয়ে আয়।

এখন আপাতত বিয়েটা হোক। কালকে শপিং করবো।

ঃআব্বু এখন বিয়ে। আর আমি কিছু শুনতে চাই না। 

আমি আর কিছু বললাম। বলে কোন লাভ হবে জা। সুজা এসে আমার রুমে চলে আসলাম। 

একটু পর মধু আসল

ঃআমি কি দেখতে খারাপ?

ঃকি বলছো এসব। তুমি অনেক সুন্দরী। 

ঃতাহলে আমাকে কেন ভালবাস না। আমাকে ফেলে আসলে কেন?

ঃআসলে আমি ধীরে ধীরে তোমার প্রেমে পড়ে যাচ্ছি। আর এসব শুনলে আংকেন কস্ট পাবেন। তাই আমি চলে আসছি।

ঃএখন কি আমাকে ভালো বাসবে?

ঃহম্ম।

ঃতাহলে জড়িয়ে ধরো।

ঃআগে বিয়ে হয়ে যাক পরে ধরবো।

কিছুক্ষণ পর জিবান কাপড় নিয়ে আসলো। রাতেই আমার বিয়ে হয়ে হয়ে গেলো। 

আমি ছাদে বসে আছি বন্ধুদের সাথে। এমন সময় রনি আসলো।

ঃতোরা হারামির দল আমাকে ফেলে এসে ঠিক করিস নি।

একটুর জন্য বেচে ফিরে এসেছি। না হলে ও আমার ইজ্জত লুটে নিতো।

ঃআরে রাখ তো বাজে খবর। এর থেকে তাজা খবর হইছে একটু আগে ফাহাদের বিয়ে হইছে।

ঃকিহহ

তারপর সব বন্ধুরা আমাকে বাসর ঘরে নিয়ে গেলো

!

Waiting for next part.

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post