মা বাবা হারা ছেলেটা যখন মাফিয়া কিং পর্ব 5+6

 

গল্প/:: মা বাবা হারা ছেলেটা যখন মাফিয়া কিং।

*

*

*

* লেখক/:::: রাসেল চৌধুরী 🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷

*

*

* পর্ব/:::::; ( পাঁচ ) :::::::::: ( ৫ ) :::::::

*

*

*

*

*

* আমার কথাটা শেষ হতে না হতেই পায়েল এমন কিছু করবে, সেটা আমি কখনো ভাবতে পারিনি। পায়েল আমার সাথে এটা কি করলো। 


আমার কথা শেষ হতেই পায়েল আমার ঠোঁটের সাথে ঠোট লাগিয়ে দিলো। আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কিস করতে লাগলো। প্রায় পাঁচ মিনিট পর ছেড়ে দিলো। আমি হাঁপাতে হাঁপাতে বললাম।


আমি/: পায়েল এটা তুমি কি করলে। আমি তোমার কাছে এমন কিছু আসা করি নাই। আমি বলছি না, আমাদের বিয়ের আগে কিছু হবেনা।


পায়েল/: আমি তো বেশি কিছু করি নাই। শুধু তোমাকে কিস করছি। আর আমি তোমাকে ভালোবেসে কিস করেছি। 


আমি/: ঠিক আছে। এখন তুমি আমার রুম থেকে যাও। দেখো রাইসা একা একা কি করছে। 


পায়েল ঠিক আছে বলে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। দেখতে দেখতে এক টা মাস চলে গেল। পায়েল আর আমার ভালোবাসা আগের মতো আছে। 


কালকে নির্বাচন। এই এক মাসে আর কোনো কাজ করি নাই। নির্বাচন শেষ হলে, আমার একটা মিসন আছে। 


দেখতে দেখতে নির্বাচন শেষ হল। এবারো জাহিদ খান পাস হয়েছে। তার বিপক্ষ প্রার্থী বসে গেছে। তাই জাহিদ খানের কাছ থেকে কেউ নিতে পারে নাই। 


আজকে পায়েল তাদের বাড়িতে চলে যাবে। সবকিছু গুছিয়ে নিচে আসলো। সাথে রাইসা ও আছে। রাইসা আমার পাশে একটা চেয়ার টেনে বসলো। পায়েল রাইসার পাশে চেয়ার টেনে বসলো। তখন রাইসা বললো। 


রাইসা/: আম্মু তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না। প্লিজ তুমি তাড়াতাড়ি চলে এসো। 


পায়েল/: ঠিক আছে আম্মু। কিছুদিন অপেক্ষা করো। তার পর আম্মু একেবারের জন্য তোমার কাছে চলে আসবো। তোমার নানা নানী কে তো রাজি করাতে হবে। 


রাইসা/: তুমি যদি রাজি করাতে না পারো। তাহলে আমি তাদের কাছে তোমাকে ভিক্ষা চাইবো। তার পরেও তোমাকে আমার আম্মু বানাবো। 


পায়েল রাইসা কে জড়িয়ে ধরে কান্না করে বললো।


পায়েল/: তুমি আমাকে এতো ভালোবাসো কেনো।  তোমাকে ছেড়ে যেতে মন চাইছে না। 


রাইসা/: কারন তোমাকে আমি অনেক ভালবাসি। নিজের আপন মা বানিয়েছি। তোমাকে ছাড়া থাকবো কি করে। আমি নানা নানীর সাথে কথা বলে, তোমাকে এই বাসায় নিয়ে আসবো। 


পায়েল/: তুমি চিন্তা করো না আম্মু। তোমার নানা নানী রাজি না হলেও, আমি তোমার কাছে চলে আসবো। 


আমি/: এখন কান্না থামাও। নাস্তা শেষ করে নাও। আর তোমার আব্বু বলেছে, কেনো তোমাকে এতো জরুরি বাসায় যেতে।


পায়েল/: সেটা বলে নাই। তবে বলছে, আমার জন্য নাকি খুশির সংবাদ আছে। সেটা বাড়িতে গেলে বলবে। 


আমি/: ওহ। নাস্তা শেষ করে নাও। তোমার আব্বু গাড়ি পাঠিয়ে দিছে। রাফি আমাকে বলছে, তোমার গাড়ি চলে এসেছে। 


পায়েল আর কোনো কথা না বলে নিজে নাস্তা করলো সাথে রাইসা কে খাইয়ে দিলো। নাস্তা শেষ করার পর আমার লোক গুলোকে বললাম, পায়েল এর ব্যাগ গাড়িতে নিয়ে রাখতে। পায়েল রাইসা কে বললো।


পায়েল/: রাইসা মামুনি , তুমি একটু বাহিরে যাও তো। তোমার আব্বুর সাথে আমি একটু কথা বলে আসছি। 


রাইসা ঠিক আছে বলে, রাফির সাথে বাসার বাহিরে চলে গেল। রাইসা আর রাফি বেরিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে পায়েল আমাকে জড়িয়ে ধরে ঠোঁটের সাথে ঠোট লাগিয়ে দিলো। প্রায় পাঁচ মিনিট পর ছেড়ে দিয়ে নিজেই কান্না করতে লাগলো। তখন আমি বললাম। 


আমি/: এই পায়েল, তুমি কান্না করছো কেন। তোমাকে শক্ত হতে হবে। তুমি এভাবে ভেংগে পড়লে তো কিছুই হবে না। 


পায়েল/: তোমাকে ছেড়ে যেতে মন চাইছে না। আমার মনের ভিতর কেমন জানি ভয় লাগছে। আমি না তোমাকে হারিয়ে ফেলি। 


আমি/: এরকম ভয় পেলে চলবে। তুমি তোমার আব্বু আম্মু কে বুঝিয়ে বললে , হয়তো তারা রাজি হয়ে যাবে। আর না হলে,মনে করবো, তুমি আমার কপালে ছিলে না। 


পায়েল/: যদি আব্বু আম্মু রাজি না হয়। তাহলে তুমি গিয়ে আমাকে নিয়ে এসো। আব্বু তোমাকে দেখলে, আমাকে এমনে তোমার হাতে তুলে দিবে। 


আমি/: শুন পায়েল, আমি নিজের ক্ষমতা দেখিয়ে তোমাকে তুলে আনতে পারবো না। তোমার আব্বু আম্মু যদি আমার হাতে তোমাকে তুলে দেয়। তাহলে আমি তোমাকে নিয়ে আসবো। 


পায়েল/: আব্বু আম্মু রাজি না হলে, তুমি আমাকে ভুলে যাবে। আমার কথা তোমার একটুও মনে পড়বে না। 


আমি/: আমাকে ভুলে থাকতে হবে। হয়তো কিছুদিন খারাপ লাগবে। পরে এমনে ঠিক হয়ে যাবে। 


পায়েল/: রাসেল শেখ বারের মতো, আমাকে আরেকটা কিস করবে। হয়তো এটা আমার শেষ কিস, আর আব্বু আম্মু রাজি হলে সারাজীবন তোমার ওই ঠোঁট দুটো নিজের করে রাখবো। 


আমি আর কোনো কথা না বলে পায়েল এর ঠোঁটের সাথে ঠোট লাগিয়ে দিলাম। কিছুক্ষণ পর দুজন দুজনকে ছেড়ে দিয়ে বাহিরে চলে আসলাম। পায়েল গাড়িতে উঠার আগে রাইসা কে কিছুক্ষণ জড়িয়ে ধরে কান্না করেছে। 


অনেক কষ্টে রাইসা কে পায়েল এর কাছ থেকে ছাড়িয়ে আনলাম। তার পর পায়েল চলে গেল। আমি রাইসা কে কোলে করে রুমে নিয়ে আসলাম। তখন রাইসা বললো।


রাইসা/: আব্বু, আম্মু কি আর ফিরে আসবে না। আমি আম্মুকে ছাড়া থাকতে পারবো না। আমি অনেক ভালবাসি আম্মুকে। 


আমি/: কে বলেছে, তোমার আম্মু আসবে না। দেখবে কিছুদিন পর তোমার আম্মু তোমার কাছে চলে আসবে। তুমি কান্না করো না। 


রাইসা/: তোমার কথা যেনো সত্যি হয় আব্বু। 


এ বলে রাইসা আমার কোলে শুয়ে পড়লো। রাইসার ঘুম আসার পর, তাকে রেখে রুম থেকে বেরিয়ে আসলাম। নিচে আসার পর রাফি বললো।


রাফি/: শুন রাসেল। আমজাদ খানের আস্তানায়, আমাদের লোক পাঠিয়েছি। বলেছি যে করেই হোক, তার সব খবর আমাদের দেওয়ার জন্য। 


আমি/: ভালো করছিস। এখন বল , রনি আর রকির কি খবর। তারা এখনো কি হাসপাতালে আছে। নাকি তারা বেরিয়ে গেছে।


রাফি/: শুনেছি, তাদের লোক এসে রনি আর রকিকে নিয়ে গেছে। তবে কোথায় নিয়ে গেছে, সেটা বলতে পারবো না। আর ওদের খুজ খবর নেই তুই কি করবি। ওরা তো আর কিছুই করতে পারবে না। 


আমি/: আমি জানি তারা আমাকে মারার জন্য আমজাদ খানের কাছে যাবে। ওদের তো এখনো একটা হাত, আর একটা পা আছে। তারা এখন আলগা হাত পা লাগাবে। 


রাফি/: এবার যদি আমাদের ক্ষতি করতে আসে। তাহলে তাদের আর বাঁচিয়ে রাখবো না। ওরা এখনো তোকে ভালো করে চিনে নাই। 


আমি/: ঠিক আছে, তুই এখন রুমে যা। যদি কোনো খবর আসে। তাহলে আমাকে যানাস। আমি একটু রুমে গেলাম।


রাফি/: ঠিক আছে যা ‌ তবে আজকে মন্ত্রী তোকে, রাতে তার সাথে দেখা করতে বলেছে। 


আমি ঠিক আছে বলে ওপরে এসে, নিজের রুমে চলে আসলাম। রুমে এসে বিছানায় শুয়ে পড়লাম। পায়েল এর কথা খুব মনে পড়ছে। পায়েল এর সামনে নিজেকে অনেক শক্ত রেখেছি। 


যদি আমি ভেংগে পড়তাম, তাহলে পায়েল ভুলেও তাদের বাড়িতে যেতো না। পায়েল এসেছে অনেক দিন হয়েছে। তার আব্বু আম্মু অনেক চিন্তা করছে। তাই ওকে যেতে দিলাম। কিন্তু আজ পর্যন্ত পায়েল এর আব্বু আম্মুর সাথে আমি কথা বলি নাই। 


পায়েল কে ছাড়া পুরো বাসা ফাকা ফাকা লাগে। আর আমি জানি পায়েল এর আব্বু কখনো রাজি হবে না। সেখানে একটা রহস্য আছে। গল্পের সাথে থাকুন সব জানতে পারবেন। 


রাতে রাফি আর আমি বাসা থেকে বেরিয়ে, সাথে লোক নিয়ে মন্ত্রীর বাসায় চলে আসলাম। কলিং বেল চাপ দেওয়ার পর আন্টি এসে দরজা খুলে দিলো। আমাদের দেখে আন্টি বললো।


আন্টি/: আরে রাসেল এবং রাফি, হঠাৎ আমার বাসায়। তোমরা তো আমার বাসায় আসো না। তা আজকে আসলে যে।


আমি/: আসলে আন্টি , আনকেল বলছে ওনার সাথে দেখা করতে। কি জন্য দেখা করতে বলেছে, তা বলতে পারবো না। 


আন্টি/: তোমার আনকেল বললে আসো। তোমার এই আন্টির কথা একটুও মনে পড়ে না। আর পড়বেই কেমন করে। আমি তো তোমাদের আপন কেউ না। 


আমি/: তুমি রাগ করো না আন্টি। এবার কিছুদিন পর পর তোমাকে দেখতে আসবো। এবার খুশি।


আন্টি/: অনেক খুশি। এবার ভিতরে গিয়ে বসো। আমি তোমাদের আনকেল কে ডেকে দিচ্ছি। 


বলে আন্টি ভিতরে চলে গেল। আমি আর রাফি ভিতরে ঢুকে সোফায় গিয়ে বসলাম। কিছুক্ষণ পর মন্ত্রী আমাদের সামনে আসলো। তখন আমি বললাম।


আমি/: তো বলুন। কেনো ডেকেছেন আমাকে। আপনি তো আবার কোনো কাজ ছাড়া আমাকে মনে করেন না। 


মন্ত্রী/: আজকে তোমাকে কাজের জন্য ডাকি নাই। আজকে তোমাকে একটা জিনিস দিবো। সালাম সুটকেস টা নিয়ে আয় তো। 


মন্ত্রীর কথা মতো সালাম ভিতর থেকে একটা সুটকেস নিয়ে আসলো। তার পর মন্ত্রী আবার বললো। 


মন্ত্রী/: এখানে পুরো দুই কোটি টাকা আছে। এগুলো তুমি গরীব দুঃখী মানুষের মাঝে বিলিয়ে দিবে। আজ তোমার কারনে মন্ত্রী পদ হাত ছাড়া হয়নি। তোমার কারনে আমি আবার মন্ত্রী হয়েছি।


আমি/: আচ্ছা আমাকে একটা কথা বলুন তো। হঠাৎ আপনার কি হলো। আপনার ভিতরে হঠাৎ গরীবদের জন্য মায়া হলো কেনো। 


মন্ত্রী/: আমি জীবনে গরীবের হোক মেরে খেয়েছি। আমি আর গরীবের হোক মেরে খাবো না। দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য এবং গরীব দুঃখীদের জন্য কিছু করতে চাই। আমি এখন থেকে হোক পথে চলবো।


আমি/: আপনার কথা গুলো শুনে অনেক ভালো লেগেছে। এখন থেকে আপনি আমাকে সবসময় আপনার সাথে পাবেন। তবে কখনো খারাপ কাজে আসবো না। সবসময় ভালো কাজে আসবো। 


মন্ত্রী/: ঠিক আছে। এখন টাকা গুলো রাখো। 


আমি/: রাফি টাকা গুলো নেয়। তাহলে আমরা এখন আসি। কখনো প্রয়োজন হলে ডাক দিবেন। আমি হাজির হয়ে যাবো। আসসালামুয়ালাইকুম।


এই বলে যেইনা উঠতে যাবো। তখন আন্টি এসে হাজির। তখন আন্টি বললো।


আন্টি/: কোথাও যাওয়া হচ্ছে না। আমি টেবিলে সবকিছু রেডি করে রেখেছি। তোমরা ফ্রেশ হয়ে আসো। খাবার খেয়ে তার পর যাবে। 


কি আর করার। আন্টির কথা আর ফেলতে পারলাম না। আমি আর রাফি ফ্রেশ হয়ে এসে খাবার খেয়ে আন্টি আর মন্ত্রীর থেকে বিদায় নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে আসলাম। 


বাসায় আসতে হঠাৎ রাফির মোবাইলে ফোন আসে। রাফি ফোন ধরে আমাকে দিলো। তখন আমি হ্যালো বললাম। ওপাশ থেকে সিহাব ( আমার লোক) বললো।


সিহাব/: ভাই আমজাদ খানের সব খবর পেয়েছি। আমজাদ খান এক বছর আগে বাংলাদেশের বাহিরে ছিলো। এই বছর বাংলাদেশে থেকে ইয়াবা  অস্ত্র ড্রাগ এগুলোর অবৈধ ব্যাবসা করে যাচ্ছে। আর এটাও জানছি, তার সাথে নাকি বাহিরের লোকের সাথে হাত আছে। কিন্তু এখনো আমজাদ খান কে দেখতে পাইনি। তার কিছু লোক কে আটক করে কথা গুলো বের করতে পেরেছি। কিন্তু আমজাদ খান কোথায় আছে সেটা বলে নাই। তার পর ওদের গুলি করে মেরে ফেলেছি। 


আমি/: আমার মনে হয়, আমজাদ খান কোথাও লুকিয়ে আছে। সবার সামনে আসে না। হয়তো লুকিয়ে লুকিয়ে অন্য কিছুর প্লান করছে। কিন্তু আমি ওই আমজাদ খান কে কখনো ছাড়বো না। তাকে আমি খুঁজে বের করবোই। 


সিহাব/: ভাই , আপনি কোনো চিন্তা করবেন না। আমি আরো লোক বাড়িয়েছি, বডারের চার পাশে তন্ন তন্ন করে খুঁজতে আছি। একদিন ঠিকই ওই আমজাদ খানকে ধরতে পারবো। 


আমি/: ঠিক আছে, , তোরা একটু সেবে থাকবি। আমজাদ খানের লোক যেনো , তোদের কিছু করতে না পারে। আর কোনো কিছু লাগলে রাফির কাছে বলবি। যদি আমজাদ খানের সন্ধান পাওয়া যায়। তাহলে তোরা কিছু করবি না। যা করার আমি নিজেই ওকে করবো। 


সিহাব ঠিক আছে বলে ফোন কেটে দিলো। সিহাবের সাথে কথা বলতে বলতে বাসায় চলে আসলাম। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কলিং বেল চাপ দেওয়ার পর খালা এসে দরজা খুলে দিল। আমি খালাকে দেখে বললাম।


আমি/: খালা রাইসা কি ঘুমিয়ে গেছে। রাতের খাবার খেয়েছে। 


খালা/: তার আম্মুকে ছাড়া, ও বলেছে কিছুই খাবে না। তার আম্মুকে নিয়ে আসলে, সে খাবার খাবে। 


আমি/: ঠিক আছে খালা, তুমি আমাকে এক প্লাট খাবার দাও। আমি নিজ হাতে ওকে খাইয়ে দিবো।


খালা আর কোনো কথা না বলে এক প্লাট খাবার আমার হাতে দিলো। আমি রুমে এসে দেখি রাইসা কোল বালিশ জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে। রাইসার মুখটা কান্না করতে করতে কেমন যেনো হয়ে গেছে। 


আমি রাইসার পাশে বসে , তাকে ডাকতে লাগলাম। রাইসা আমার ডাক শুনে চোখ খুলে আমাকে জড়িয়ে ধরে আবার কান্না করে দিলো। তখন রাইসা বললো।


রাইসা/: আব্বু তুমি এসেছো। দেখো না আমার আম্মু সেই সকাল বেলা বাসায় গেছে। আমার কাছে একটা মিনিট ফোন দেয় নাই। আব্বু, আমার আম্মুকে ছাড়া আমার কিছুই ভালো লাগছে না। তুমি আমার আম্মুকে ফিরিয়ে এনে দাও। আমি তোমার কাছে আর কিছুই চাইনা। 


রাইসার কথা শুনে কি বলবো। কোনো ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা। মেয়েটা পায়েল কে অনেক ভালোবেসে ফেলেছে। এখন যদি পায়েল কে রাইসার কাছে না এনে দিই, তাহলে রাইসা অসুস্থ হয়ে পড়বে। আমাকে যে করেই হোক, পায়েল কে এই বাড়িতে নিয়ে আসতে হবে। 


কিন্তু আমার একটা জিনিস মাথায় ঢুকছে না। পায়েল সেই সকাল বেলা বাসা থেকে বেরিয়ে গেল। এখন পর্যন্ত একটা ফোন দিয়ে বললো না। নাকি পায়েল কোনো বিপদে পড়েছে। আগে রাইসা কে বুঝিয়ে খাবার খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে, রুমে গিয়ে পায়েল কে ফোন দিবো। 


আমি/: রাইসা মামুনি , তুমি কান্না করো না। আমি কথা দিচ্ছি, তোমার আম্মুকে কিছুদিন পর, তোমার কাছে নিয়ে আসবো। তবে তোমাকে খাওয়া দাওয়া ঠিক মতো করতে হবে, তা না হলে আমি তোমার আম্মুকে এনে দিবো না। 


রাইসা/: না না আমি খাওয়া দাওয়া ঠিক মতো করবো। তুমি শুধু আমার আম্মুকে আমার কাছে নিয়ে আসবে। আমি তোমার কাছে আর কিছুই চাইবো না। 


আমি/: ঠিক আছে। তাহলে এখন আমার হাতে খাবার খেয়ে নাও। আমি কালকে তোমার আম্মুর বাসায় যাবো। 


রাইসা চোখের পানি মুছে আমার হাতে খাবার খেতে লাগলো। রাইসা কে খাবার খাইয়ে দিয়ে, ঘুম পাড়িয়ে ওয়াস রুমে চলে আসলাম। ফ্রেশ হয়ে মোবাইল হাতে নিয়ে পায়েল কে ফোন দিলাম। 


কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো পায়েল এর মোবাইল বন্ধ বলছে। আমি অনেক বার পায়েল এর মোবাইলে ফোন দিছি, কিন্তু বার বার মোবাইল বন্ধ বলছে। 


তাই আর পায়েল কে ফোন দিলাম না। আর কিছু চিন্তা না করে রাইসা কে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পরলাম। 


পরের দিন রাইসা কে বুঝিয়ে, রাফির এবং খালার কাছে বলে গাড়ি নিয়ে সেই দিনাজপুরে রওয়ানা দিলাম। আসার সময় রাফি কে বলে আসছি, রাইসা এবং খালাকে দেখে রাখতে। 


আর মন্ত্রী আমার কথা জিজ্ঞেস করলে বলতে বলছি, আমি একটা কাজের জন্য ঢাকার বাহিরে গেছি। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর চিরো চেনা সেই শহরে চলে আসলাম। 


আমার আসার কোনো ইচ্ছে ছিলো না, এই শহরে , শুধুমাত্র রাইসার জন্য এসেছি। এ শহরে না আসার কারন, আব্বু আম্মু আমাকে ফেলে রাখার পর নানা নানী এবং মামা মামী আমার কোনো খুঁজ খবর নেয় নাই। তাই আব্বু আম্মুর মতো ওদের আমি গিন্না করি। 


আগের থেকে অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে, এই দিনাজপুর। স্কুল টা নতুন করে , আবার বানিয়েছে। কতো স্মৃতি জমে আছে এই শহরে, এখানে আমার কিছু বন্ধু ছিলো। কিন্তু যাওয়ার পর তাদের সাথে আর যোগাযোগ হয়নি। তো যাই হোক।


দেখতে দেখতে পায়েল দের বাসার সামনে চলে আসলাম। গাড়ি একটু চাইড করে দারোয়ান এর সামনে গেলাম। তখন দারোয়ান আমাকে দেখে বলল।


দারোয়ান/: কাকে চাই। আর তোমাকে তো চিনতে পারলাম না। কোথায় থেকে আসছো তুমি।


আমি/: আসলে চাচা , আমি ঢাকা থেকে আসছি। পায়েল আর আমি বন্ধু। ওর সাথে একটু দেখা করতে আসছি। কাল সকাল থেকে ওর মোবাইল বন্ধ। 


তার পর দারোয়ান যেটা বললো। সেটা শোনার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। দারোয়ান চাচা এটা কি বললো। পায়েল এটা কি ভাবে করতে পারলো। 


জীবনে এমন একটা সম্পর্ক করা উচিৎ 

যার সাথে সকল কিছু শেয়ার করা যায় ,

রাগ করা যায় , অভিমান করা যায় ,ঝগড়া করা যায় ।

কিন্তু তাকে কখনোই ভুলে থাকা যায় না.

*

*

*

*

* চলবে

*

*

*

* কাজের অনেক ছাপ। তাই ঠিক টাইমে গল্প দিতে পারি না। আজকের পর্ব কেমন হয়েছে, তা আমি বলতে পারবো না। ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। ভালো লাগলে লাইক এবং কমেন্ট করবেন। ভালো না লাগলে ইগনোর করবেন।

*

*

* ধন্যবাদ সবাইকে পরবর্তি পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন 🌿🌷



গল্প/::: মা বাবা হারা ছেলেটা যখন মাফিয়া কিং।

*

*

* লেখক/:::: রাসেল চৌধুরী 🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷

*

*

*

* পর্ব/::::::: ( ৬ ) :::::::: ( ছয় ) 

*

*

*

*

* তার পর দারোয়ান যেটা বললো। সেটা শোনার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। দারোয়ান চাচা এটা কি বললো। 


দারোয়ান/: পায়েল মামুনির জন্য, স্যারে বিয়ে ঠিক করেছে। ছেলে স্যারের বন্ধুর ছেলে। কিন্তু পায়েল মামনি এই বিয়েতে রাজি না, তাই স্যারে জোর করে পায়েল মামুনিকে বিয়ে দিতে চাইছে। আর ওর মোবাইল নিয়ে গেছে। 


আমি/: এখন পায়েল কোথায় আছে। ওর সাথে কি কথা বলা যাবে। আমি ওর সাথে দুই মিনিট কথা বলতে চাই। 


দারোয়ান/: পায়েল কে তো রুমের ভিতরে আটকে রেখেছে। তাকে ঘর থেকে বের হতে দিচ্ছে না। 


হঠাৎ গতকালের সেই ডাইভার ভিতর থেকে বেরিয়ে আসলো। যে পায়েল কে বাসায় নিয়ে আসছে।আমাকে দেখে ডাইভার বললো। 


ডাইভার/: আরে ভাই আপনি এখানে। হঠাৎ আজকে পায়েল ম্যামদের বাসায়। 


দারোয়ান ডাইভার এর কথা শুনে, তাকে বললো।


দারোয়ান/: তুমি ওকে ভাই বলছো কেন। তুমি কি ওনাকে চিনো। 


ডাইভার/: ওনাকে চিনে না, বাংলাদেশের এমন কোনো মানুষ নেই।ওনি হচ্ছে সেই মাফিয়া রাসেল।যে গরীব দুঃখী মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। যার নাম শুনলে বড় বড় নেতারা ভয়ে প্রস্রাব করে দেয়।


দারোয়ান/: সরি ভাই, আমি আপনাকে চিনতে পারি নাই। আপনি আমাকে ক্ষমা করে দেন। আপনাকে এতোক্ষণ দাড় করিয়ে কথা বলছি।


আমি/: চাচা আপনি আমার বাবার বয়সি। আমাকে আপনি তুই করে বলবেন। আর আপনি তো কোনো দোষ করেন নাই। তাহলে ক্ষমা কেনো চাইছেন। 


দারোয়ান/: তুমি অনেক ভালো একটা ছেলে। তোমার মতো ছেলে হয়না। তোমার নাম অনেক বার শুনেছি, কিন্তু কখনো দেখি নাই। আজকে তোমাকে সরাসরি দেখবো, তা কখনো ভাবিনি। 


আমি/: আচ্ছা এসব কথা বাদ দেন। এখন বলেন, আমি কি পায়েল এর সাথে কথা বলতে পারবো। তার সাথে কিছু কথা বলতে চাই। 


ডাইভার/: ভাই চাচা কিছু করতে পারবে না। আমি ম্যামের সাথে কথা বলার সুযোগ করে দিচ্ছি। আপনি গিয়ে গাড়িতে বসুন। 


এ কথা বলে ডাইভার ভিতরে চলে গেল। আমি আমার গাড়িতে গিয়ে বসলাম। প্রায় আধাঘণ্টা ঘন্টা পর দেখি ডাইভার বোরখা পড়া একটা মেয়েকে নিয়ে আমার গাড়ির সামনে আসলো। 


আমি গাড়ির দরজা খুলে দিলাম। মেয়েটা ভিতরে ঢুকে আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো। মেয়েটা আর কেউ নয় পায়েল। আমি পায়েল কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। পায়েল আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো।


পায়েল/: রাসেল আমি অন্য ছেলেকে বিয়ে করতে পারবো না। তুমি আমাকে এখান থেকে নিয়ে চলো। তা না হলে আব্বু আম্মু আমাকে জোর করে তার বন্ধুর ছেলের সাথে বিয়ে দিবে। আমি তোমাকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারবো না।


আমি/: এই পাগলি, তোমাকে আমি অন্য ছেলের সাথে বিয়ে হতে কখনো দিবো না। তুমি জানো, তুমি বাসা থেকে আসার পর পুরো বাসা ফাকা ফাকা লাগে।রাইসা সারাক্ষণ তোমার জন্য কান্না করে। আমি রাইসা কে কথা দিয়েছি, তোমাকে নিয়ে আমি ঢাকায় ফিরে যাবো। 


পায়েল/: তাহলে আমাকে এখান থেকে নিয়ে চলো। আব্বু আমাকে জোর করে বিয়ে দিবে। আমি তোমাকে এবং রাইসা কে ছাড়া থাকতে পারবো না। 


আমি/: তুমি কোনো চিন্তা করো না। আমি তোমার আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলবো। দেখি ওনারা কি বলে। যদি রাজি হয়, তাহলে তো ভালোই, আর রাজি না হলে তোমাকে আমি উঠিয়ে নিয়ে যাবো। 


পায়েল/: তাহলে এখন আব্বুর সাথে কথা বলো। আব্বু বলছে ,খুব শীঘ্রই বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করবে। 


আমি/: ঠিক আছে। এখন কি তোমার আব্বু বাসায় আছে। 


পায়েল/: হুম, আব্বু এখন বাসায় আছে। তুমি আমাকে নিয়ে আব্বুর সামনে যাবে। 


আমি/: নাহ, তুমি আগে ভিতরে চলে যাও। আমি কিছুক্ষণ পরে আসতেছি। আমার জরুরী একটা কাজ আছে। 


পায়েল ঠিক আছে বলে আমার কপালে একটা চুমু দিয়ে বাসার ভিতরে চলে গেল। আসলে আমার মোবাইলে রাফি অনেকক্ষণ থেকে ফোন দিয়ে যাচ্ছে। তার সাথে কথা বলার জন্য পায়েল কে ভিতরে পাঠিয়ে দিলাম। 


আমি এবার রাফি কে ফোন দিলাম। ফোন ঢুকার সাথে সাথে রাফি রিসিভ করলো। তখন আমি বললাম। 


আমি/: কিরে এতো ফোন দিচ্ছিস কেনো। আমি পায়েল এর সাথে কথা বলছিলাম। তাই তোর ফোন কেটে দিছি বার বার। 


রাফি/:: ওহ, আসলে তোকে যে কারণে এতো ফোন দিচ্ছি, তা হলো, কিছুক্ষণ আগে খবর পেয়েছি, মন্ত্রীর বিপক্ষ প্রার্থী তোকে মারার জন্য আমজাদ খানের সাথে হাত মিলিয়েছে। তারা যেনে গেছে, তুই এখন দিনাজপুরে আসছিস, তাই আমজাদ খানের লোক তোকে মারার জন্য দিনাজপুরে রওয়ানা দিছি। 


আমি/: আমাকে মারার জন্য আমজাদ খানের লোক দিনাজপুরে আসছে। সমস্যা নেই আসুক। দেখি আমজাদ খানের লোক আমার কি করতে পারে। 


রাফি/: তুই চিন্তা করিস না। নাজিম দিনাজপুরে আছে। আমি তার সাথে কথা বলছি। তোকে সেফ করার জন্য, তার লোক নিয়ে তোর কাছে যাচ্ছে। এখন বল তুই কোথায় আছিস। 


আমি/: আমি এখন পায়েল দের বাসার সামনে আছি। ওর আব্বু আম্মুর সাথে কিছু কথা বলবো। তুই নাজিম কে বলিস, দিনাজপুর হাই স্কুলের সামনে থাকতে। আমি এক ঘন্টা পর আসতেছি। 


রাফি ঠিক আছে বলে ফোন কেটে দিলো। আমি গাড়ি থেকে বের হয়ে পায়েল দের বাসার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কলিং বেল চাপ দিলাম। কিছুক্ষণ পর একটা কাজের বুয়া এসে দরজা খুলে দিলো। আমাকে দেখে কাজের বুয়া বললো। 


কাজের বুয়া/: আপনি কে। 


আমি/: আমি পায়েলের বন্ধু। ঢাকা থেকে এসেছি। পায়েলের আব্বু আম্মুর সাথে আমার কিছু কথা আছে। 


কাজের বুয়া/: ঠিক আছে, আপনি ভিতরে আসুন। আমি স্যার আর ম্যাডাম কে ঠেকে দিচ্ছি। 


এ বলে কাজের বুয়া ভিতরে চলে গেল। আমি ভিতরে ঢুকে সোফায় গিয়ে বসলাম। কিছুক্ষণ পর পায়েল এর আব্বু আম্মু আমার সামনে আসলো। তখন পায়েল এর আব্বু বললো।


পায়েলের আব্বু/: তুমি কে। তোমাকে তো চিনতে পারলাম না। 


আমি/' আসলে আপনাদের সাথে আমার কিছু কথা আছে। যদি আপনাদের একটু সময় হতো। 


পায়েলের আম্মু/: সমস্যা নেই। তুমি বলো, কি কথা বলবে। 


আমি/: আসলে আমি আর পায়েল দুজন দুজনকে ভালোবাসি। আমি চাই পায়েল কে বিয়ে করতে। পায়েল বলেছে তাকে এখান নিয়ে যেতে, কিন্তু আমি তা কখনো করবো না। আমি চাই আপনারা নিজ হাতে পায়েল কে আমার হাতে তুলে দিবেন। 


পায়েলের আব্বু/: তুমি কি জানো, আমি পায়েল এর বিয়ে ঠিক করে ফেলেছি। ছেলের বাবা আমার বন্ধু। তাদের নিজস্ব ব্যবসা আছে। 


আমি/: পায়েল কে আপনারা জোর করে বিয়ে দিতে পারবেন, কিন্তু কখনো আপনার মেয়ে আমাকে ছাড়া সুখি হবে না। 


পায়েলের আব্বু/: তোমার কি যোগ্যতা আছে, যে আমার মেয়েকে বিয়ে করবে। টাকা পয়সা,বাড়ি গাড়ি, ব্যাংক ব্যালেন্স। এসব কিছু আছে তোমার। 


আমি/: আমার যা কিছু আছে, সেটার পাঁচ ভাগের এক ভাগ আপনার নেই। আর আপনি এখনো আমার আসল পরিচয় পান নাই। আমি কে। 


পায়েলের আব্বু/: তা বলো, তুমি কে। আর তোমাকে দেখে তো মনে হয় না, তুমি আমার থেকে বড়লোক। 


আমি/: আমি বড়লোক ভাব নিয়ে চলি না। আমি সাধারন মানুষ এর মতো চলাফেরা করি। আর বাংলাদেশের রাসেল নামে কোনো মাফিয়ার নাম শুনেছেন। 


পায়েলের আব্বু/: হুম শুনেছি। তবে সে খারাপ মানুষের ক্ষতি করে। তাদের মেরে রাস্তায় ফেলে রাখে। সরকার তার কিছুই করতে পারে না। 


আমি/: হুম ঠিকই শুনেছেন। আর সেই মাফিয়া রাসেল আমি। আপনার মেয়ে এতো দিন আমার ওখানে ছিলো। আর আপনি আমাকে আগে থেকে চিনেন। হয়তো অনেক বছর পর দেখছেন, তাই চিনতে পারেন নাই। 


পায়েলের আব্বু/: তোমাকে আমি চিনি মানে। আর তুমি একজন মাফিয়া হয়ে, আমার বাসায় এভাবে আসলে কেনো। তোমার সাথের লোক জন কোথায়। 


আমি/: আমি সাথে করে কাউকে নিয়ে আসি নাই। আমি যে শহরে যাই, সেই শহরে আমার লোক আছে। আর আপনি একটু মনে করে দেখেন তো, কয়েক বছর আগে, একদিন রাস্তায় একটা ছেলে আপনার ডাইভার কে থাপ্পড় মারতে গিয়ে, আপনার গায়ে থাপ্পড় টা পড়লো। থাপ্পড় টা কেনো মারতে গেছি, সেটা হয়তো আপনি ভালো করে জানেন। 


পায়েলের আব্বু/: হুম, আমার মনে পড়ছে। রাতে বৃষ্টি হওয়ার কারণে পরেরদিন রাস্তায় পানি জমে ছিলো। আমার ডাইভার জোরে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় তোমার গায়ে পানি পড়ে। তুমি একটা ইটের টুকরা নিয়ে আমার গাড়িতে মারো। তখন আমার ডাইভার গাড়ি দাঁড় করিয়ে, তোমাকে গিয়ে একটা থাপ্পর মারে, এর ভিতরে আমি তোমাদের সামনে চলে আসলাম। তখন তুমি ডাইভার কে থাপ্পড় মারতে গিয়ে আমার গালে মেরে দাও। 


আমি/: হুম ঠিকই ধরেছেন। কিন্তু ওখানে আপনাদের দোষ ছিলো। আমার কোনো দোষ ছিলো না। আপনার ডাইবারের উচিত ছিলো, গাড়ি আস্তে আস্তে চালিয়ে যাওয়া। এখন তার পরেও ওই ঘটনার জন্য আপনার কাছে আমি ক্ষমা চাচ্ছি। আপনি আমাকে মাফ করে দিবেন। 


পায়েলের আম্মু/: তোমার তো কোনো দোষ নেই। তাহলে ক্ষমা চাচ্ছো কেনো। আর আমি রাজি আছি, পায়েলের সাথে তোমার বিয়ে দেওয়ার জন্য। 


পায়েলের আব্বু/: তোমার মতো ছেলের সাথে, আমার মেয়েকে বিয়ে দিবো না। এটা কি করে হয়। তুমি তোমার আব্বু আম্মু আমার বাসায় পাঠিয়ে দিও।


আমি/: একটা কথা বলি রাগ করবেন না। আমার আব্বু আম্মু কেউ নেই। তারা আমার কাছে মৃত । আজ তাদের জন্য , আমি একজন মাফিয়া নামে পরিচিত। 


পায়েলের আম্মু/: কেনো, তোমার আব্বু আম্মু কি করেছে। যে কারণে তোমার কাছে, তারা মৃত।


হঠাৎ আমার মোবাইল টা বেজে উঠে। তখন আমি একটু চাইডে গিয়ে ফোনটা রিসিভ করি। তখন ওই পাশ থেকে বললো। 


ওপাশ/: ভাই আমি নাজিম। রাফি আমাকে আপনার নাম্বার দিয়েছে। আমি লোক নিয়ে হাই স্কুলের সামনে আছি। আপনি কোথায় আছেন। 


আমি/: আমি এক জায়গায় আছি। আধা ঘন্টা পর আসতেছি। তোমরা ওখানে অপেক্ষা করো। 


নাজিম ঠিক আছে বলে ফোন কেটে দিলো। আমি পায়েলের আব্বু আম্মুর সামনে গিয়ে বললাম।


আমি/: আপনাদের পরে সবকিছু খুলে বলবো। আমি চাই পায়েল কে আজকে সন্ধ্যায় কাজি ঠেকে বিয়ে করবো। তার পর তাকে নিয়ে ঢাকায় চলে যাবো। আমার একটা কাজ বাকি আছে। ওটা শেষ করে বড় করে একটা অনুষ্ঠান করবো। যদি আপনাদের মত থাকে। 


পায়েলের আব্বু/: তুমি যেভাবে বলবে, সেভাবে হবে। আমি সবকিছু রেডি করতে আছি। আর আমার বন্ধুকে মানা করে দিচ্ছি। 


আমি/: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। তাহলে আমি এখন আসি। সন্ধ্যায় আপনার বাসায় আসবো। আপনি সবকিছু রেডি করে রাখবেন। 


পায়েলের আম্মু/: তুমি এখনো আমাদের আপনি করে বলছো কেন। এখন থেকে আমাদের আব্বু আম্মু বলে ডাকবে। আর তুমি তো কিছুই খেলে না। 


আমি/: এখন কিছু খাবো না। সন্ধ্যায় বিয়ে করার পর খাবো। আমার সাথে আরো কিছু লোক আসবে। 


এই বলে তাদের থেকে বিদায় নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে আসলাম। আমি এতোক্ষণ পায়েলের আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলছি, আর পায়েল এক কোনায় দাঁড়িয়ে সব শুনেছে। 


পায়েল তার আব্বু আম্মুর কথা শুনে , খুশিতে রুমে চলে গেল। আমি তাদের বাসা থেকে বেরিয়ে গাড়ি নিয়ে সোজা স্কুলের সামনে চলে আসলাম। স্কুলের সামনে এসে দেখি নাজিম পাঁচ গাড়ি লোক নিয়ে অপেক্ষা করছে। আমি তাদের সামনে গাড়ি দাঁড় করালাম। গাড়ি থেকে নামার পর নাজিম আমার সামনে এসে বললো। 


নাজিম/: আসসালামুয়ালাইকুম ভাই কেমন আছেন। আজকে আপনাকে সামনাসামনি দেখবো, সেটা কখনোই স্বপ্নে ভাবি নাই। 


আমি/: ওহ, আচ্ছা এখন বলো , আমজাদ খানের লোক দিনাজপুরে আসছে। 


নাজিম/: আমরা তো কাউকে দেখি নাই। রাফি ভাই আমাকে বলার পর আমি লোক নিয়ে চলে আসি। 


হঠাৎ আমার মোবাইল টা বেজে উঠলো। তাকিয়ে দেখি পায়েল ফোন দিছে। আমি রিসিভ করার পর পায়েল ওপাশ থেকে যেটা বললো।সেটা শুনার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। 


পায়েলের কথা শুনে আমার মাথা পুরো গরম হয়ে গেল। 


  আমার ডানা নেই, তাই উড়তে ইচ্ছে করে। পাখির হাত নেই, তাই লিখতে ইচ্ছে করে। তোমার মন নেই, তাই আমায় অবহেলা করতে ইচ্ছে করে।


  তুমি সেই কবিতা, যা প্রতিদিন ভাবি... লিখতে পারি না। তুমি সেই ছবি, যা কল্পনা করতে পারি, আঁকতে পারি না... তুমি সেই ভালোবাসা, যা প্রতিদিন চাই... কিন্তু তা কখনোই পাই না।

*

*

*

* চলবে


গল্পের কাহিনী এখনো মাথায় কিছুই ঢুকবে না। পাশে থাকেন সবকিছু বুঝতে পারবেন। 

*

*

* দেরি করে দেওয়ার জন্য দুঃখিত। আমার মোবাইলে এমবি ছিলো না। কিছুক্ষণ আগে এমবি ঢুকাইছি। তার পর এখন পোস্ট করলাম। জানি না আজকের পর্ব কেমন হয়েছে। 


যদি ভালো লাগে, তাহলে লাইক এবং কমেন্ট দিয়ে পাশেই থাকবেন। ভালো না লাগলে ইগনোর করবেন। 

*

* ধন্যবাদ সবাইকে পরবর্তি পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন 🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿 রোমান্টিক গল্প লেখক রাসেল চৌধুরী 🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post