গল্প/:: সিনিয়র চাচাতো বোন যখন বউ।
*
*
* লেখক/:: রাসেল চৌধুরী 🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷
*
*
* পর্ব/::::::: ( ৪ ) :::::::: চার
*
*
*
*
*তার পর কলিং বেল চাপ দিলাম। কিছুক্ষণ পর একজন এসে দরজা খুলে দিলো। আমি তাকে দেখে পুরো অবাক হয়ে গেলাম। আরে আপনারা অন্য ভাইবেন না। যে দরজা খুলে দিলো, ওনি আর কেউ নয়, আমার বড় আব্বু মানে মারিয়া আপুর আব্বু।
আমি/: আসসালামুয়ালাইকুম বড় আব্বু কেমন আছো। তুমি কখন আসলে, আমি তো জানলাম নাহ।
বড় আব্বু/: আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। তুই কেমন আছিস রাসেল। আর আমি কাউকে বলে আসি নাই, সবাইকে সারপ্রাইজ দিবো বলে।
আমি/: তাই বলে , তোমার এই ছেলেটা কে বলবে না। আমি তোমার ওপর রাগ করছি।
বড় আব্বু/: সরি আব্বু, সামনের দিকে, তোকে না বলে আসবো না। এখন ভিতরে আয়।
আমি/: যাচ্ছি, তার আগে বলো, আমার জন্য বাহির থেকে কি এনেছো।
বড় আব্বু/: সেটা ভিতরে আসলে দেখবি। আগে চল সবাই মিলে খাওয়া দাওয়া করে নি।
আমি/: ঠিক আছে চলো। আম্মু বলছিলো, আপু নাকি সকালে কলেজ থেকে এসে দরজা বন্ধ করে শুয়ে আছে।
বড় আব্বু/: হুম, কিন্তু আমি আসার পর সব ঠিক হয়ে গেছে। তোর আপু খাবার টেবিলে বসে আছে।
তার পর বড় আব্বু আর আমি খাবার টেবিলের সামনে গেলাম। টেবিলের সামনে গিয়ে দেখি আপু মাথা নিচু করে মোবাইল টিপতে আছে। আর বড় আম্মু টেবিলে সাজাচ্ছে।
আমি আর বড় আব্বু দুইটা চেয়ার টেনে বসলাম। কিন্তু আপু আমার দিকে তাকাচ্ছে না। তখন বড় আম্মু বললো।
বড় আম্মু/: কিরে রাসেল এসেছিস। আর মারিয়া এবার মোবাইল রাখ, খাবার খেয়ে নেয়।
আমি/: হুম আম্মু এসেছি, । তা আপু আজকে সকালে দরজা বন্ধ করে শুয়ে ছিলেন কেনো।
মারিয়া/: এমনেই, আমার ভালো লাগছে না। তাই রুমের দরজা বন্ধ করে শুয়ে ছিলাম।
কথাটা একটু রাগ করে বলছে, আমি আর কিছু বললাম না। বড় আম্মু খাবার বেড়ে দিলো। তার পর খাওয়া শুরু করলাম। আজকে অনেক আইটেম রান্না হয়েছে।
খাবার দেখে জিবে পানি চলে এসেছে। বড় আব্বু আসাতে এতো কিছু রান্না করছে। হঠাৎ বড় আব্বু বললো।
বড় আব্বু/: তা রাসেল এর পড়ালেখা কেমন চলছে।
আমি/: হুম বড় আব্বু, আল্লাহ রহমতে ভালোই চলছে। সামনে তো পরিক্ষা আসছে। তাই এখন থেকে পড়াশোনার মধ্যে আরো ভালো করে মন দিতে হবে।
বড় আব্বু/: আমি জানি তো এবারো পাস করবি। পাস করার পর তোর জন্য একটা সারপ্রাইজ থাকবে।
আমি ঠিক আছে বলে খাবার খেতে লাগলাম। মারিয়া আপু কোনো কথা বলছে না। খাবার খেয়ে আপু তার রুমে চলে গেল। আমি আর বড় আব্বু খাবার খেয়ে সোফায় গিয়ে বসলাম। তখন আমি বললাম।
আমি/: বড় আব্বু, এবার বলো, আমার জন্য কি এনেছো। আমার তো আর সইছে না। তাড়াতাড়ি দাও।
বড় আব্বু/: আরে বাবা দিচ্ছি। আগে একটু রেস্ট নেয়। মাএ তো খাবার শেষ করলি।
আমি/; তুমি আমার জন্য কি এনেছো। আগে সেটা দাও। আমার রেষ্ট নেওয়া লাগবে না।
বড় আব্বু/: ওরে আল্লাহ। আমার ছেলেটার দেখি সয্য হচ্ছে না। কোথায় মারিয়ার আম্মু। রাসেল এর জন্য যে জিনিসটা এনেছি, সেটা নিয়ে আসো।
বড় আম্মু ভিতর থেকে বললো আনছি। কিছুক্ষণ পর বড় আম্মু রুম থেকে বেরিয়ে আমাদের সামনে আসলো। হাতের মধ্যে দেখি একটা ব্যাগ। তখন বড় আম্মু ব্যাগ টা আমার হাতে দিলো। আমি বললাম।
আমি/: বড় আব্বু, এই ব্যাগের ভেতর কি আছে।
বড় আম্মু/: আগে তুই ব্যাগ টা খুলে দেখ।
আমি ব্যাগটা খুলে দেখি , বড় আব্বু আমার জন্য এক আই ফোন ১২ কিনে আনছে। আমি খুশিতে বড় আব্বুকে জড়িয়ে ধরলাম। কারন বড় আব্বু কে অনেক দিন আগে বলছি, আমার জন্য একটা মোবাইল নিয়ে আসতে।
আমার হাতের টা পুরোনো হয়ে গেছে। আমি চাইলে বাংলাদেশ থেকে কিনতে পারতাম, কিন্তু সেগুলো তেমন ভালো পড়ে না। তাই বড় আব্বুকে বলেছি, বাংলাদেশে আসার সময় একটা আই ফোন নিয়ে আসতে। কিন্তু এতো দামি নিয়ে আসবে , সেটা কখনোই ভাবি নাই।
বড় আব্বু/: আমার ছেলেটা কি খুশি হয়েছে।
আমি/; বড় আব্বু , আমি অনেক খুশি হয়েছি। কিন্তু এটার দাম তো এক লাখ বিশ হাজারের ওপরে। তুমি এতো দামি মোবাইল আনছো কেনো।
বড় আব্বু/: আমার কি ৪/৫ টা ছেলে। আমার মাএ একটা ছেলে , । তোর জন্য দামি মোবাইল আনতে পারবো না। আমার কি টাকা কম আছে।
আমি/: তুমি আমার লক্ষী আব্বু। এবার বলো আপুর জন্য কি এনেছো।
বড় আব্বু/: ওর জন্য , তোর মতো একটা মোবাইল নিয়ে এসেছি। কিন্তু এখনো দেওয়া হয়নি। ভাবছি রাতে দিবো।
আমি/: বড় আব্বু কিছু না মনে করলে, তুমি আপুর মোবাইল টা , আমার কাছে দাও। আমি আপুর রুমে গিয়ে দিয়ে আসি।
বড় আম্মু/: আরে এখানে মনে করার কি আছে। তুই তো আর বাহিরের কেউ নয়। আমাদের পরিবারের একজন। তুই বস , আমি ওর মোবাইল নিয়ে আসছি।
এ বলে বড় আম্মু রুমে গেল। কিছুক্ষণ পর রুম থেকে বেরিয়ে এসে আমার হাতে আপুর মোবাইল দিলো। আমার আর আপুর মোবাইল সেম কালার।
আমি আপুর রুমের সামনে এসে দাড়িয়ে দরজা টোকা দিলাম। তখন আপু ভিতর থেকে বললো।
মারিয়া/: কে, দরজা খোলাই আছে। ভিতরে আসো।
আমি ভিতরে ঢুকে দেখি আপু বিছানায় মনমরা হয়ে বসে আছে। আমাকে দেখে আপু বললো।
মারিয়া/: ওহ তুই। তা আমার রুমে কেনো আসলি। কিছু বলবি না কি।
আমি/: বারে তোমার রুমে কাজ ছাড়া কি আসা যাবে না। আগে বলো তুমি এরকম মনমরা হয়ে বসে আছো কেন।
মারিয়া/: আমার ভালো লাগছে না। বল কেনো এসেছিস। কোনো কথা থাকলে বলতে পারিস। আর না হয় , আমার রুম থেকে বেরিয়ে যা। আমাকে একটু একা থাকতে দেয়।
আমি/: আপু তুমি কি আমার ওপর রাগ করে আছো। আমি কি কোনো অপরাধ করছি। তোমাদের বাসায় আসার পর , তুমি আমার সাথে একটা কথাও বলো নাই।
মারিয়া/: তুই কোনো অপরাধ করিস নি। আমার কাছে এমনে ভালো লাগছে না। আমাকে একটু একা থাকতে দেয়।
আমি/: ঠিক আছে, তুমি তাহলে থাকো। আমি আমাদের বাসায় গেলাম। আর হে বড় আব্বু তোমার জন্য এই মোবাইল টা এনেছে।
মারিয়া/: টেবিলের ওপর রেখে যা। আমি পরে দেখবো।
আমি আর কোনো কথা না বলে আপুর রুম থেকে বেরিয়ে নিচে চলে আসলাম। বড় আব্বু আম্মুর থেকে বলে , আমাদের বাসায় চলে আসলাম।
কলিং বেল চাপ দেওয়ার পর আম্মু এসে দরজা খুলে দিলো। তখন আমাকে দেখে বললো।
আম্মু/: কিরে , মারিয়া কি রুম থেকে বের হয়েছে। আর তোর হাতে এই নতুন মোবাইল কোথায় থেকে আসলো।
আমি/: আপু রুম থেকে বের হয়ে খাবার খেয়ে আবার রুমে শুয়ে আছে। আপুর নাকি খারাপ লাগছে। আর মোবাইল টা বড় আব্বু বাহির থেকে আমার জন্য এনেছে।
আম্মু/: কিহ, মারিয়ার আব্বু বাসায় আসছে। আমি তো কিছুই জানি না।
আমি/: আম্মু, বড় আব্বু কাউকে বলে আসে নাই। আমি দুপুরে তাদের বাসায় গিয়ে দেখলাম।
আম্মু/: ঠিক আছে, তুই রুমে যা। সন্ধ্যায় তোর আব্বু আর আমি তাদের বাসায় যাবো।
আমি আর কোনো কথা না বলে না নিজের রুমে চলে আসলাম। বিছানায় বসে ভাবতে লাগলাম। হঠাৎ আপুর কি হলো। কলেজ থেকে আসার পর আপুর মন খারাপ।
তাহলে আমি যেটা ভাবছি, সেটাই নাকি। আপু কি তাহলে আমাকে ভালোবাসে। দেখি কিছুদিন। তার পর না হয় প্রফোজ করবো।
আমি মোবাইলের ভিতরে আমার সিম কার্ড ঢুকালাম। তার পর মোবাইল চালু করলাম। সবকিছু চেটিং করে , মোবাইল বালিশের পাশে রেখে একটা ঘুম দিলাম।
দেখতে দেখতে কিছুদিন চলে গেছে। আপু এখন ঠিক মতো আমার সাথে কথা বলে না। আমি যদি বলতে যাই, তাহলে এড়িয়ে চলে। আপুর এরকম কাজ আমার অনেক খারাপ লাগে।
নাহ আমি আর থাকতে পারছি না। আপু এখন নীলার সাথেও তেমন কথা বলে না। কলেজে আসলে, বেশিরভাগ রিয়ার সাথে সময় কাটায়।
সকালে রেডি হয়ে কলেজে গেলাম। ও আপনাদের তো একটা কথা বলতে ভুলে গেছি। আপু এখন একা একা কলেজে যায়। তাদের বাসায় গেলে, নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।
আমাকে পড়াবার কথা ছিলো। কিন্তু ওইদিনের পর থেকে আমাকে পড়ার কথা বলে না। তো যাই হোক,।
কলেজের গেট দিয়ে ঢুকে, যেটা দেখলাম, সেটা দেখে মাথা খারাপ হয়ে গেল। এটা আমি কি দেখেছি।
কিছু কথা ভাবতে ভাবতে চোখে এল জল, জলকে বলিলাম তুই হঠাৎ কেন বাইরে এলি বল?জল বললো চোখটি তোমার সুখের নীড়,কি করে সইবো বলো এত দুঃখের ভীড়।
হেমন্তে পাওয়া প্রেম তুমি,বলেছিলে কোন এক দিন রয়ে যাবে মোর মনের গহীনে।চিরকাল ভালোবেসে মোরে মাতাবে হেমন্তগন্ধে।মনের হেমন্তে বেঁচে থাকার সরণিতে এক ফোঁটা ভালোবাসা দিও মোরে।সেই ভালোবাসা দিয়ে হেমন্তের নিশিতে সাজিয়ে তোমারে আনব আপন আলয়ে।
চলবে
সরি কাজের অনেক ছাপ। তাই ছোট হয়ে গেছে। বিকালে আরেক পর্ব দিয়ে শেষ করে দিবো। তো কেমন হয়েছে জানাবেন, সবাই লাইক এবং কমেন্ট দিয়ে পাশেই থাকবেন। ভালো না লাগলে ইগনোর করবেন।