#গল্পঃ_অবহেলিত_ছেলের_ভালোবাসা
#লেখক_ইসমাইল_মাহমুদ
(#পর্বঃ____০৪____)
আদিবাঃ কি বললি তুই?? ( রেগে গিয়ে বললো) কেনো আসলে কি হবে??
ইসমাইলঃ--- আসলে সেখানে কত বড় বড় লোক থাকবে।। আর আমি সামান্য একটা হোটেলে কাজ করা এতিম ছেলে।।
তুই অনেক কথা শুনবি।। সবাই বলবে আমার মত একটা ছেলে কি করে তোর বন্ধু হলো।।
আদিবাঃ সবাই কি বললো তা আমি পরোয়া করি না।। তুই যদি আমাকে তোর বন্ধু মনে করিস তাহলে অবস্যই আসবি।।
আর এভাবে খালি খালি জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালে হবে না।।
আমার গিফট কই ( হাসতে হাসতে বললো)
ইসমাইলঃ---- ইয়ে মানে গিফট ( গিফটের কথা শুনেই আমার মনটা খারাপ হয়ে গেল)
আচ্ছা নিয়ে আসবো।।
আদিবাঃ এই আমি খুবই দুঃখিত।। আমি তো মজা করছিলাম।। তোর কোনো গিফট আনতে হবে না।। তুই আসলেই আমি খুশি।।
ইসমাইলঃ-- না তা কি করে হয়। সেখানে সবাই তো গিফট নিয়ে আসবে।।
আদিবাঃ---সবাই আর তুই এক না।। তোর কাছে আমার কোনো গিফট চাই না।। আমার কাছে তুই আমার জন্য গিফট।।
তোর সাথে সময় কাটানোর পর যে ভালো লাগা কাজ করে তা আমার জীবনে আর কখনও হয়েছে কিনা যানি না।।
তোর কোনো গিফট আনতে হবে না।। শুধু তুই আসলেই আমি অনেক বেশি খুশি হবো।।
ইসমাইলঃ--- আচ্ছা দেখা যাবে।। এখন চল।
তারপর ক্লাসে গেলাম।।
আজকে আদিবা কলেজ থেকে একটু তাড়াতাড়িই চলে গেল।।
আদিবা চলে আসার পর কেমন যানি ভালো লাগছিলো না।।
তাই আমিও বাসায় চলে আসলাম।।
বাসায় এসে ভাবতে থাকলাম
আমার কি করা উচিত?? সেখানে যাওয়া কি ঠিক হবে??
না শুধু গিফটা দিয়ে আসবো।।
যদি যাই তাহলে আদিবা অনেক কথা শুনবে সেটা আমি নিশ্চিত।।
আর যদি না যাই তাহলো তো আদিবা অনেক কষ্ট পাবে।।
না আমি আদিবাকে জেনে শুনে কষ্ট দিতে পারি না।।
ওই জিবনে প্রথম কোনো ব্যাক্তি যে আমার এতটা খেয়াল রেখেছিল।।
আমি আদিবাকে কখনও কষ্ট দিতে পারি না।।
কিন্তু আদিবার জন্য কি গিফট কিনবো।। যাই কিনি না কেনো সেটা ওর জজন্মদিনের সব থেকে কম দামি গিফট হবে ।
অনেক কষ্ট করে ২০০০ টাকা জমিয়ে ছিলাম।।
ভেবেছিলাম বাবা- মায়ের জন্য মিলাদ পড়াবো।।
ভাবছি সেটা পড়ে পড়িয়ে ওই টাকা দিয়ে আদিবার জন্য একটা শাড়ি কিনবো।।
সন্ধ্যার সময় দোকান থেকে একটা শাড়ি কিনে। আদিবাদের বাসায় গেলাম।।
গেট দিয়ে ঢুকবো তখনই দাড়োয়ান এসে বাধা দিল।।
দাড়োয়ানঃ দাঁড়ান কোথায় যাচ্ছেন??
ইসমাইলঃ--- ভিতরে যাবো।।
দাড়োয়ানঃ কে আপনি যে ভিতর যাবেন??
ইসমাইলঃ--- আমি আদিবার বন্ধু।।
দাড়োয়ান আমার দিকে অনেকখন তাকিয়ে থেকে তারপর বললো।।
দাড়োয়ানঃ ফাইজলামি করেন।। আপনি কিভাবে আদিবা মেডামের বন্ধু হতে পারেন।।
আর কিছু বললাম না। চলে আসবো তখনই আদিবা ডাক দিল।।
আদিবাঃ সরি ইসমাইল।।
আপনি ওকে ঢুকতে দিলেন না কেনো??
দাড়োয়ানঃ দুঃখিত মেডাম আমি বুজতে পারি নাই।।
তারপর আদিবা আমাকে বাড়ির ভিতরে নিয়ে গেল।।
বাড়ির ভিতরে ঢুকেই তো আমি অবাক চোখে তাকিয়ে আছি।।
অনেক বড় বাড়ি আদিবাদের।। আর পুরো বাড়ি অনেক সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।।
এখানে যারা এসেছে তারা সবাই অনেক বড়লোক।।
আর আমাকে দেখে যে কেওই বুজে যাবে আমি কি রকম ছেলে।।
সবাই আমার দিকে তাকাচ্ছে।। কেমন জানি লাগছে আমার।।
এখানে না আসলেই বুজি ভালো হতো।।
এসব ভাবতে থাকলাম।।
তারপর আদিবা আমাকে নিয়ে কেক কাঁটতে গেলো।।
প্রথমে ওর বাবা-মা তারপর আমাকে খাইয়ে দিল।।
আমি বোকার মত আদিবার দিকে তাকিয়ে আছি।।
আর বাকিরা সবাই অনেক অবাক হয়েছে।।
কারন আমার মত একটা ছেলেকে আদিবা ওর বাবা-মায়ের পর কেক খাইয়ে দিল।।
আমি আদিবাকে কিছু বলতেও পারছি না।।
এখান থেকে তাড়াতাড়ি যেতে পারলেই বাচি।।
খাওয়া-দাওয়ার পর আদিবা বললো
আদিবাঃ বাবা-মায়ের সাথে কথা বলবি চল।।
ইসমাইলঃ--- ইয়ে মানে আজকে না বললে হয় না।।
আদিবাঃ কেনো?? কি হয়েছে??
ইসমাইলঃ--- আমার খুবই শরীর খারাপ লাগছে।। আমি এখন বাসায় যাই পরে এক সময় কথা বলবো।।
আদিবাঃ আচ্ছা যা।। বাসায় গিয়ে ফোন দিস।
ইসমাইলঃ--- এই প্যাকেটটা রাখ
আদিবাঃ কি আছে এতে??
ইসমাইলঃ--- খুলার পরই দেখতে পারবি।।
আদিবাঃ আচ্ছা এখনই খুলতেছি।।
ইসমাইলঃ--- এই না। এখন খুলতে হবে না।। পরে খুলিস।।
আদিবাঃ পরে খুলবো কেনো? কি আছে এতে??
ইসমাইলঃ--- সেটা পরে খুললেই দেখতে পারবি।। আমি এখন যাই।।
তারপর সেখান থেকে বাসায় চলে আসলাম।।
বিছানায় শুয়ে শুয়ে ভাবছি।।
আদিবা ওর বাবা-মায়ের পরই আমাকে কেনো কেক খাইয়ে দিল??
আমি কল্পনাই করতে পারি নাই যে, আদিবা আমাকে তখন কেক খাইয়ে দিবে।।
সেখানে উপস্থিত সবাই অনেক অবাক হয়েছে।।
আদিবার বাবা-মা কি ভাববে জানি না।।
এতকিছু হওয়ার পরও কিভাবে তাদের সাথে কথা বলতাম??
তাইতো দেখা না করেই চলে এসেছি।।
আদিবাকে যত দেখছি ততই অবাক হচ্ছি।।
ও কি শুধুই আমাকে ফ্রেন্ড ভাবে না অন্যকিছু।।
ওর সাথে যদি আর কিছুদিন এভাবে থাকি তাহলে আমি তো ওকে ভালোবেসে ফেলবো।।
এখনই ওর কথা না ভেবে একদিনও থাকতে পারি না।।
ওই আমার জিবনের প্রথম ব্যাক্তি যে আমার এতটা খেয়াল রেখেছে।।
জিবনে প্রথমবার মনে হয়েছে কোনো আপনজনের ভালোবাসা পেয়েছি।।
জানি না ওকে ছাড়া কোনোদিনও থাকতে পারবো কিনা।।
কিন্তু ও তো আর সবসময় আমার সাথে থাকবে না।।
আমার মনে হয় ও আমাকে ভালোবাসে।।
তাহলে কি ওকে আমার মনের কথা বলে দিব।।
কিন্তু ও যদি আমাকে ভালো না বাসে তাহলে তো আমাকে ভুল বুজবে।।
তারচেয়ে না বলাই থাক।।
শুধু বন্ধু হয়েই থাকি।।
সকালে ঘুম থেকে উঠে মোবাইল হাতে নিলাম।।
দেখলাম রাতে আদিবা অনেক গুলো কল করেছিল।।
মোবাইল সাইলেন্ট করা ছিল তাই শুনতে পাই নি।।
এখন আর কল দিলাম না।।
তারপর ফ্রেশ হয়ে কিছু খেয়ে কিছুখন পড়লাম।।
তারপর কলেজে গেলাম।।
কলেজে গিয়ে দেখলাম আদিবার আমার আগেই চলে এসেছে।।
আমাকে দেখেই রাগি কন্ঠে বলতে লাগলো
আদিবাঃ রাতে কই ছিলি??
ইসমাইলঃ---- কেনো?? বাসায় ছিলাম
আদিবাঃ কতগুলো কল করছি ধরলি না কেনো??
ইসমাইলঃ--- আসলে তোদের ওখান থেকে আসার পর পরই ঘুমিয়ে গেছিলাম।।
আর মোবাইল সাইলেন্ট করা ছিল তাই শুনতে পাই নি।।
আদিবাঃ তোকে বলেছিলাম না গিফট না আনতে তারপরও কেনো আনলি??
ইসমাইলঃ---- কেনো?? পছন্দ হয় নি??
আদিবাঃ দিবো এক থাপ্পর।। পছন্দ হবে না কেনো।। কত সুন্দর একটা শাড়ি।।
কিন্তু তুই এত টাকা কিভাবে জোগাড় করলি??
ইসমাইলঃ--- এতটাকা কোথায়।। মাএ ২০০০ টাকা। তোর জন্মদিনের সবথেকে কমদামী গিফট।।
টাকা আমার কাছে ছিল।।
আদিবাঃ তোকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে, তুই মিথ্যা কথা বলছিস।। সত্য কথা বল।।
ইসমাইলঃ--- আসলে একটু একটু করে ওই টাকাগুলো জমিয়ে ছিলাম।। ভেবেছিলাম বাবা-মায়ের নামে মিলাদ পড়াবো।।
এখন ভাবছি মিলাদ পড়ে পড়াবো।।
আদিবাঃ তারমানে ওই টাকা দিয়েই তুই আমার জন্য শাড়ি কিনেছিস??
ইসমাইলঃ--- হুমম।।
আদিবার দু-চোখ বেয়ে পানি পড়ছে।।
আর সাথে সাথেই আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বললো
আদিবাঃ কেনো তুই ওই টাকা দিয়ে শাড়ি কিনতে গেলি।।
তোর কাছে আমার কোনো গিফট চাই না।। আমার কাছে তুই সবথেকে বড় গিফট।।
চল এখন??
ইসমাইলঃ-- কোথায়??
আদিবাঃ একটা এতিমখানায় যাবো।।
ইসমাইলঃ---- কেনো??
আদিবাঃ তোর বাবা-মায়ের জন্য মিলাদ পড়াতে।।
ইসমাইলঃ--- দুঃখিত।। এটা আমি করতে পারবো না।।
আদিবাঃ কেনো??
ইসমাইলঃ--- আমি আমার নিজের টাকা দিয়ে বাবা-মায়ের জন্য মিলাদ পড়াবো।।
আদিবাঃ তো কি হয়েছে।। মনে কর আমার টাকাই তোর টাকা।।
ইসমাইলঃ--- কিছু মনে করিস না।। আমার নিজের উপার্জিত টাকা দিয়ে মিলাদ পড়াবো।। কারও কাছ থেকে নিয়ে নয়।।
এখন বল শাড়িটা কেমন লাগছে??
আদিবাঃ অনেক সুন্দর।।
ইসমাইলঃ-- তা কখনও কি শাড়িটা পড়বি??
আদিবাঃ পড়বো না কেনো??
ইসমাইলঃ-- না মানে শাড়িটা তো অনেক কম দামী তুই তো মনে হয় এত কমদামী জিনিস পড়িস না।। তাই বললাম।।
আদিবাঃ পড়িনি তো কি হয়েছে এখন থেকে পড়বো।।
কালকে বিকালেই শাড়ি পড়ে তোর সাথে নদীর পাড়ে ঘুরতে যাবো।।
ইসমাইলঃ--- দেখা যাবে এখন চল।
তারপর ক্লাস করে বাসায় চলে গেলাম।।
ফ্রেশ হয়ে হোটেলে আসলাম।।
ম্যানেজারকে বললাম
ইসমাইলঃ-- স্যার কালকে আমার ছুটি লাগবে
তারপর ম্যানেজার বললো,,,,,,,,,,,,,,?
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,, দৌড়াবে? 😍😍
...
#কেমন_হলো_জানাবেন_কিন্তু ☺️☺️
...
#বিঃদ্রোঃ_গল্পে_কোন_ভুল_হয়ে_থাকলে_ক্ষমা_দৃষ্টিতে_দেখবেন_plz,,,
...
#গল্পঃ_অবহেলিত_ছেলের_ভালোবাসা
#লেখক_ইসমাইল_মাহমুদ
(#পর্বঃ____০৫____)
.
ম্যানেজারঃ---রোজ রোজ তোমাকে ছুটি দিতে পারবো না।।
যদি কাজ করতে মন না চায় তাহলে আর আসার দরকার নেই
ইসমাইলঃ--- সরি স্যার।।
আর কখনও ছুটি নিব না।। শুধু কালকেই লাস্ট।।
ম্যানেজারঃ মনে থাকে যেন কথাটা।। কালকের পরে ছুটি নিতে হলে একবারে নিবে।।
এখন যাও কাজ করো।।
রাতে কাজ করে বাসায় এসে কিছুখন পড়লাম।।
পড়ার পর ঘুমাতে গেলাম।।
ভাবতে থাকলাম আদিবার কথা।।
প্রথম কোনো মেয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।।
আমি কল্পনাই করতে পারি নাই যে আদিবা আমাকে জড়িয়ে ধরবে।।
ওর সাথে থাকতে থাকতে কখন যে ওকে ভালোবেসে ফেলেছি তা নিজেও জানি না।।
এখন তো এমন হয়েছে ওর সাথে কথা না বলে থাকতেই পারি না।।
যখনই কেউ আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে তখনই আদিবার হাসি মুখটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে।।
তখন সেই সব অপমান আর গায়ে লাগে না।।
কালকে বিকালে আদিবা আমার দেওয়া শাড়ি পড়বে।।
তাহলে কালকেই কি আদিবাকে আমার মনের কথা বলে দিব।।
জানি না ও আমাকে কি ভাবে।।
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে কলেজে গেলাম।।
আজকে একটু আগেই কলেজে চলে আসলাম।।
গিয়ে দেখি আদিবা এখনও আসে নি।।
কিছুখন একটা বেন্চের উপর বসলাম।।
এর মধ্যে আদিবাও চলে এসেছে।। আমার কাছে এসে বলতে লাগলো
আদিবাঃ আজকে এত তাড়াতাড়িই চলে এসেছিস।। সব সময় তো আমার পরে আসতি।।
ইসমাইলঃ--- এমনি আগে চলে এসেছি।।
আদিবাঃ আজকে বিকালে যখন ঘুরতে যাবো তখন তোকে একটা কথা বলবো।।
ইসমাইলঃ--- আমিও তোকে কিছু বলবো।।
আদিবাঃ কি বলবি??
ইসমাইলঃ--- তা সময় হলেই জানতে পারবি।।
আদিবাঃ আচ্ছা ঠিক আছে।। এখন চল ক্লাসে যাই।
ইসমাইলঃ--- চল।।
ক্লাস শেষ করে বাসায় চলে আসলাম।। গোসল করে কিছু খেলাম।।
তারপর একটু ঘুমিয়ে তৈরি হয়ে নদীর পাড়ে গেলাম আদিবার সাথে দেখা করতে।।
আদিবার আসার আগেই আমি সেখানে চলে গেছি।।
আমি খুবই চিন্তিত।। জানি না আদিবাকে আমার ভালোবাসার কথা বললে ও কিভাবে নেবে সেটা।।
যদি ও আমাকে ভালো না বাসে তাহলে হয়তো আমাদের বন্ধুত্ত ভেংগে যাবে।।
কিন্তু আমি তো আদিবাকে ছাড়া থাকতে পারবো না।।
অনেক ভালোবেসে ফেলেছি ওকে।।
কিন্তু ও আমাকে কি কথা বলবে??
ও কি আমায় ভালোবাসে??
এসবই মাথায় ঘু্রপাক খাচ্ছে।।
এর ভিতরে আদিবা চলে এসেছে।।
আমার দেওয়া শাড়ি পড়ে এসেছে।।
খুবই সুন্দর লাগছে ওকে।। ওর দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে থাকলাম।।
ও আমার কাছে এসে বলতে লাগলো।।
আদিবাঃ এভাবে তাকিয়ে কি দেখছিস??
ইসমাইলঃ---- তোকে দেখছি।।
আদিবাঃ আমাকে আজকে নতুন দেখছিস মনে হয়??
ইসমাইলঃ---- তা না তোকে আজকে অনেক সুন্দর লাগছে।।
ভাবছি সত্তিই কি এটা তুই না অন্য কেউ।।
আর শাড়িটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।।
আদিবাঃ তাকিয়ে থাকতে হবে না আর ধন্যবাদ ও দিতে হবে না।।
এখন চল কিছুখন হাঁটি।।
তারপর আদিবার সাথে হাঁটতে থাকলাম।।
আদিবা কথা বলছে আর আমি নির্বাক শ্রোতার মত ওর কথা শুনছি আর ওকে দেখছি।।
আজকে আদিবাকে খুবই সুন্দর লাগছে।।
ভাবছি এখনই ওকে ভালোবাসার কথা বলবো।।
কিন্তু তার আগেই আদিবা বললো
আদিবাঃ চল ফুচকা খেয়ে আসি।।
ইসমাইলঃ--- চল।।
আদিবা আমাকে নিয়ে ফুচকা খেতে গেল।।
তারপর দুজনে মিলে ফুচকা খেলাম।।
ফুচকা খাওয়ার পর নদীর পাড়ের একটা বেন্চে দুজনে বসে আছি।।
আদিবা বললো
আদিবাঃ আচ্ছা তুই না আমাকে কিছু বলতে চাইছিলি??
ইসমাইলঃ-- তুইও তো কিছু বলতে চাইছিলি।।
আদিবাঃ আগে তুই বল তারপর আমি বলবো
ইসমাইলঃ-- না আগে তোরটা বলবি।।
আদিবাঃ আচ্ছা আমিই বলবো একটু পরে।।
দাঁড়া একজনকে ফোন করে নেই।।
আদিবাঃ কোথায়?? তাড়াতাড়ি আসো আমরা সেই কখন থেকে বসে আছি।।
ইসমাইলঃ-- কার সাথে কথা বললি?? আর কে আসবে??
আদিবাঃ আসলেই দেখতে পাবি।।
আচ্ছা ইসমাইল মনে কর তুই একজনকে ভালোবাসিস কিন্তু বলতে পারছিস না।।
কিন্তু হঠাৎ করেই সে যদি তোকে প্রপোজ করে তাহলে কি করবি??
ইসমাইলঃ-- অবশ্যই রাজি হবো।।
আদিবাঃ আমিও একজনকে ভালোবেসে ফেলেছি।।
তারমানে ও কি আমাকে ভালোবাসে।। খুবই আগ্রহ নিয়ে ওকে জিগ্গেস করলাম
ইসমাইলঃ-- কাকে ভালোবাসিস তুই??
আদিবাঃ বলবো একটু পড়ে এখন ঝারমুড়ি খাবো দুজনে।। তার ভিতরে ও চলে আসবে।।
ইসমাইলঃ--- কে আসবে??
আদিবাঃ আসলেই দেখতে পাবি।।
তারপর দুজনে মিলে ঝারমুড়ি খেলাম।।
এর মধ্যেই একটা ছেলে এসে আদিবাকে বলতে লাগলো
ছেলেঃ ওই ইসমাইল।।
আদিবাঃ হ্যা।।
তারপর ছেলেটা আমাকে বলতে লাগলো।।
তোমার কথা ও যে কতবার বলেছে তার কোনো ঠিক নেই।।
তুমি নাকি ওর লাইফে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একজন।।
আমি আদিবাকে জিগ্গেস করলাম ছেলেটা কে??
ও রাব্বি আর আমি ওকেই ভালোবাসি।।
আদিবার মুখে এই কথা শুনে মুহূর্তের মধ্যেই আমার মনে হলো কেও আমার বুকে চাবুক দিয়ে আঘাত করতেছে।।
আদিবাকে দেখে মনে হচ্ছে ও খুবই খুশি।।
কোনো রকমে চোখের পানি আটকে হাসি মুখে আদিবাকে বললাম
ইসমাইলঃ--- কবে থেকে ?? আগে তো বললি না??
আদিবাঃ ওকে আমি অনেক আগে থেকেই ভালোবাসি।। কিন্তু ওকে কখনও বলা হয় নি।।
আমাদের পাশেই ওর বাসা।। ওই আমার লাইফের ফাস্ট ক্রাশ।।
আর আমার জন্মদিনের পার্টির পর ও আমাকে প্রপোজ করে।।
আমি প্রথমে খুবই অবাক হয়ে গেছিলাম।।
কারন এর আগে কখনই ও আমার সাথে কথা বলে নাই।। আমি শুধু ওকে দূর থেকে দেখতাম।।
ও প্রপোজ করাই আমি এতটাই অবাক হয়ে গেছিলাম যে কিছুই বলতে পারছিলাম না।।
তারপর ও বলে যে,, আমাকে সময় নিতে।।
তারপর আমি আজকে ওকে হ্যা বলে তোর সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে আসলাম।।
ইসমাইলঃ---- ও ভালো করেছিস।।
রাব্বিঃ তুমিই তাহলে ওর লাইফের বিশেষ ব্যাক্তি।। আজকে ও বলেছিল যে আমাকে ও বিশেষ কারও সাথে পরিচয় করিয়ে দিবে।।
আদিবাঃ হ্যা ও খুব ভালো একজন বন্ধু
ইসমাইলঃ---- আমার আসলে একটা কাজ আছে তাই আমাকে এখন যেতে হবে।। তোরা আড্ডা দে।।
আদিবাঃ তুই না আজকে হোটেল থেকে ছুটি নিলি।।
ইসমাইলঃ--- হ্যা।। কিন্তু আমাকে এখন একজাগায় যেতে হবে।। আমি তোকে এখনই বলতাম।। কিন্তু তার আগেই রাব্বি ভাইয়া চলে এসেছে।।
রাব্বিঃ আচ্ছা তোমার যখন কাজ আছে তাহলে তোমাকে আর আটকে রাখা ঠিক হবে না।।
আদিবাঃ আচ্ছা যা তাহলে কালকে কলেজে কথা হবে।।
ওখান থেকে তাড়াতাড়িই চলে আসলাম।। ওখানে আর এক মুহূর্ত থাকাও আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না।
অনেক কষ্টে চোখের পানি আটকে রেখেছি।।
বাসায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম।।
কিছুই ভালো লাগছিল না।।কি করে পারতাম আদিবাকে অন্য কারও সাথে দেখতে।
আমি ভেবেছিলাম ও হয়তো আমাকে ভালোবাসে।।
কিন্তু ও শুধুই আমাকে ওর একজন ভালো বন্ধু ভাবে।।
জানি না এরপর কি ভাবে আদিবার সাথে স্বাভাবিক ভাবে কথা বলবো??
আদিবার সাথে পরিচয় হবার পর কিছুদিনের জন্য ভুলেই গেছিলাম যে আমার আসল পরিচয় কি??
যখন সবাই অপমান করতো তখন অনেক খারাপ লাগতো।।
আর এখন তার থেকেও অনেক বেশি কষ্ট হচ্ছে।।
এভাবে অনেকখন বিছানায় শুয়ে আছি কিন্তু ঘুম আসছে না।।
কিভাবে ঘুম আসবে চোখ বুজলেই তো আদিবার মুখটা ভেসে ওঠে।।
তবে আজকে একটা ব্যাপার খুবই অদ্ভুত লাগছে।।
প্রতিদিন তো আদিবা এই সময়ে ফোন দেয় কিন্তু আজকে তো দিলো না।।
তাই আমিই ফোন দিলাম কিন্তু আদিবার ফোন ওয়েটিং।।
অনেকবার ফোন দিলাম কিন্তু ওয়েটিং।।
হয়তো রাব্বির সাথে কথা বলছে তাই হয়তো আমার কথা মনে নেই।।
এখন হয়তো আদিবার কাছে আমার থেকে রাব্বি গুরুত্বপূর্ণ।।
থাকবেই না কেনো?? আমি তো ওর শুধু বন্ধু।
আর রাব্বি তো ওর ভালোবাসা।।
এসব কথা ভাবছি আর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।।
কিছুখন পর মোবাইলের স্কিনে আদিবা নামটা ভেসে উঠলো।।
চোখের পানি মুছে কল রিসিভ করলাম।।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,, দৌড়াবে? 😍😍
...
#কেমন_হলো_জানাবেন_কিন্তু ☺️☺
...
...
#বিঃদ্রোঃ_গল্পে_কোন_ভুল_হয়ে_থাকলে_ক্ষমা_দৃষ্টিতে_দেখবেন_plz,,,