প্রতারণা__or__ধোকা পর্ব ~ ০২

 #প্রতারণা__or__ধোকা

লেখক~ মতিউর রহমান

পর্ব ~ ০২


নীলাকে ভেবেই ঘোমটা সরাতেই বড়সড় একটা শকট খেলাম, এ আমি কাকে দেখছি! তাকে দেখার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। আসলে সে নীলার বোন লিমা,,


আমি- লিমা তুমি এখানে কি করছো নীলা কোথায়?? । (অবাক হয়ে)


লিমা- নিশ্চুপ.....

আমি- কি হলো চুপ করে আছো কেনো?

লিমা- আ'আ'মি আপনার স্ত্রী!

আমি- স্ত্রী মানে।

লিমা- মানে আপনার সাথেই আমার বিয়ে হয়েছে!


আমি- কি বলছো কি এসব আমার সাথে নীলার বিয়ে সেই জায়গায় তুমি কেনো আসবে আজব আমি কিছু বুঝতেছি না কি এসব ঘটছে আমার সাথে। 


লিমা- হুম নিলার সাথে হবার কথা ছিল কিন্তু...

আমি- কিন্তু কি থামলে কেনো!


লিমা- আসলে নিলা আপু আপনাকে বিয়ে করতে রাজি ছিল না তাই আজ সন্ধ্যার পর কার সাথে যেনো পালিয়ে যায় আমরা ঠিক জানতে পারলাম না অনেক খুঁজা খুজির পর কোথাও পেলাম না আপুকে তাই আমার পরিবারের সম্মান রক্ষার জন্যে আমাকে প্ল্যান করে আপনাকে বিয়ে করতে বলে বিশ্বাস করেন আমি এসবের রাজি ছিলাম না আমার পরিবারের জন্য রাজি হতে হয় দয়া করে আমাকে ভুল বুঝবেন না প্লিজ।।


আমি- তোর আমি কোনো কথাই শুনতে চাই না, তোকে আমি স্ত্রী হিসেবে মানি না!

 

লিমা- কিন্তু!

আমি- কোনো কিন্তু নয়!

আমি যাদের বেশি সম্মান করতাম বিশ্বাস করতাম শেষ পর্যন্ত কি না তোর বাবা মা আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারলো কেনো করলো।

আমাকে কিছু না জানিয়ে এভাবে আমার সাথে প্রতারণা করতে পারলো, কেনো করলো এমনটা আমার সাথে। তাদের কোনো ক্ষমা নেই আমি এক্ষণি তোকে তোর বাসায় দিয়ে আসবো চল আমার সাথে(অনেকটা রেগে)


লিমা- প্লিজ এমনটা করবেন না আপনার পায়ে পরি প্লিজ আপনি মাথা ঠাণ্ডা করুন আমাকে একবার বুঝার চেষ্টা করুন প্লিজ ।


আমি- কি বুঝাবো তোকে হুম তোর বোনকে অনেকটা ভালোবাসতাম সে কি না এভাবে আমাকে ধোকা দিবে ভাবতেও পারিছি না আমি। 

আমি তোকে স্ত্রী হিসেবে কখনওই মেনে নিবো না তোরা আমার সাথে প্রতারণা করেছিস তার জন্য তোদের কোনো ক্ষমা নেই!


লিমা- প্লিজ প্লিজ একবার আমার কথাটা শুনুন।


আমি- পা ছাড় বলছি সরে যা আমার সামনে থেকে তোর কোনো কথাই শুনতে চাই না কেনো আমাকে কষ্ট দিয়ে এতো বড় ধোকা দিলি তোরা আমাকে।

আমি কি এমন দোষ করেছি যার কারনে আমাকেই কষ্ট দিলো এভাবে।


নীলা আমাকে পাগলের মত ভালোবাসে সে এসব কি করে করতে পারে আমি বিশ্বাস করতে পারছি না


নীলাকে ফোন দিলাম ফোন বন্ধ এদিকে লিমা অনেকটা ভয়ে আমাকে কিছুই বলতে পারছে না এমন পরিস্থিতিতে পরবে ভাবতেও পারছে না। কি করবে সে এখন?


আমি- ফোন বন্ধ শালি তুই আমাকে এভাবে ধোকা দিতে পারলি। আমাকে এভাবে ধোকা দিয়ে তুই কোনোদিন শান্তি তে বেশিদিন থাকতে পারবি না তুই আমাকে এভাবে কষ্ট দিলি এর প্রতিদান তোকে পেতেই হবে কোনো একদিন।


এই লিমা চল বাইরে,


লিমা- কোথায় যাবো প্লিজ এরকম করবেন না যার কারনে সবাই কষ্ট পাক।


আমি- কষ্ট কিসের কষ্ট হু আমাকে কষ্ট দেওয়া হয়েছে আমি কিন্তু চুপ থাকবো না আমি এর কিছু একটা করেই তারপর ছাড়বো কথাটা মনে রাখিস।


লিমা- আপনি কিন্তু বেশি বাড়াবাড়ি করছেন এখন।


আমি- আমার ওপর দিয়ে কথা বলতে আসবি না সবাই কে এর উচিৎ শিক্ষা দিয়েই তারপর ছাড়বো!


লিমা- আমি থাকতে তা হতে দিতে পারি না।


আমি- আমার কাজে বাধা হস না নয়তো এর ফল ভালো হবে না বলছি


লিমা- কি করতে চাচ্ছেন!


আমি- তোকে আমি এই বাসর রাতেই ডিভোর্স দিয়ে তোর বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিবো এটাই তোদের সব থেকে বড় শাস্তি! 


লিমা- না এটা আপনি করতে পারেন না আমার জীবন এভাবে নষ্ট করবেন না প্লিজ। আর বাবার এমনি অসুস্থ এসব করলে বাবা হার্টএ্যাটাক করতে পারে প্লিজ এমন করবেন না। আমি আপনার মনের কষ্ট বুঝতে পারছি আমি কি করবো বলেন এ পরিস্থিতিতে আমাদের কিছুই করার ছিলো না। আর আমার তো এখানে কোনো দোষ নেই তাহলে কেনো আমাকে রাগ দেখাচ্ছেন কেনো আমায় ভুল বুঝছেন বলেন। 


আমি- নিশ্চুপ......  


লিমা- বিশ্বাস করেন এতে আমার কোনো হাত ছিল না, জানি না আমার আপু কোথায় আছে কি করছি কিচ্ছু জানি না।


আমি- আমি এসব কিছুই শুনতে চাই আমি যেটা বলছি সেটাই করেই ছাড়বো...


লিমা- খবরদার এক পা বাইরে যেতে পারবে না আমাকে নিয়ে নয়তো আমি এক্ষণি নিজেকে শেষ করে ফেলবো...


এরকম কথা শুনে খেয়াল করে দেখলাম লিমা গলাই ফল কাটা ছুরি ধরে আছে....


আমি- এই এটা কি করছিস তুই!


লিমা- আমি যা বলবো তাই শুনতে হবে নয়তো এখানেই আমার লাশ দেখতে পাবেন


তার কথা শুনে ভয় পেয়ে...


আমি- এই এই না না একদম এরকম করবি না। পাগল হয়ে গেছিস তুই। ছুরি টা ফেলে দে বলছি।


লিমা- আমার কথা শুনবেন নাকি এক্ষণি গলাই চালিয়ে দিবো।


আমি- হে হে শুনবো বল কি কথা।


লিমা- আমাকে আপনার বউ হিসেবে মেনে নিতে হবে।

আর আপনার সাথে এখন আর অতীত যা যা ঘটেছে সব ভুলে গিয়ে নতুন ভাবে আমার সাথেই সংসার করতে হবে।

আমার বাবা মা এমনকি পরিবারের কাউকে অপমান করতে পারবেন না। আর আপনি আমাকেই সারাজীবন ভালোবাসতে হবে কি রাজি তো আমার কথা রাখবেন নাকি রাখবেন না?


আমি- নিশ্চুপ.......(এখন কি করি))


লিমা- কি হলো কি এতো ভাবছেন?


আমি এক দৃষ্টি তে তাকালাম লিমার দিকে কি বলবো আর কি করবো বুঝতেছি না, এখন আমাকে কি করা উচিৎ.??? 


লিমা- আপনি তাহলে কথা রাখবেন না তাই না ওকে তাহলে আমার রক্তাক্ত লাশ দেখুন আপনার সামনে আমার লাশ, বলে যেই ছুরি গলাই টান দিতে যাবে ঠিক সেই সময়,,,


আমি- এ এ না কি করছিস এসব। এমনিতেই আমার মাথা একদম ঠিক নেই তার মাঝে তুই এরকম করছিস কেন। একদম কিছুই করবি না আমি তোর কথাই রাজি হলাম এবার তো ছুরিটা ফেলে দে প্লিজ। 


লিমা- না আপনি আবার একই কাজ করতে পারেন তাই আপনার মায়ের কসম করে বলতে হবে যা যা বললাম সে সব মানতে রাজি!


কি চিপাই পরলাম রে!


আমি- আচ্ছা ঠিক আছে আমি মায়ের তৃপ্তি করে বললাম তোর সব কথাই আমি রাজি! তবে আমার একটা শর্ত তোকে মানতে হবে।


লিমা- হুম কি শর্ত.?


আমি- তুই কখনওই দাবি করতে পারবি না আমাকে নিয়ে তোদের বাসায় যাওয়া নিয়ে। তুই তোর বাপের বাড়ি যেতে পারবি কিন্তু আমি বেচে থাকা কালে কখনো তোদের বাসায় পা দিবো না কখনওই না।


লিমা কেঁদে ফেলল কি আর করার মেনে না নিলে যে কোনো উপায় নেই


লিমা- আচ্ছা ঠিক আছে আপনি যা বলছেন তাই হবে


এবার তো ছুরিটা ফেলে দে


লিমা- হুম। ছুরি ফেলে দেওয়ার পর লিমাকে ঠাসসসস করে একটা থাপ্পড়


লিমা- আপনি আমাকে মারলেন।

আমি- তোর কিছু হলে সবার কাছে কি জবাব দিতাম হুম।


লিমা- আপনি তো আমার কথা শুনছেন না তাই বাধ্য হয়ে এমনটা করতে হল সরি!


আমি- ওকে সরি বলতে হবে না যা গিয়ে ঘুমিয়ে পড়।


লিমা- আর আপনি।

আমি- আমি শোফায় ঘুমাবো।

লিমা- আপনি কিন্তু আমার কথার খেলাফ করছেন।


আমি- আমি আবার কি করলাম।


লিমা- আপনি মায়ের তৃপ্তি করে আমাকে কথা দিয়েছেন নয়তো আপনার মা কষ্ট পাবেন!


আমি- ওহ আচ্ছা ঠিক আছে তার জন্য কি করতে হবে।


লিমা- আমার সাথেই এক সাথেই থাকতে হবে ঘুমাতে হবে।


আমি- আচ্ছা ওকে।

লিমা- হুম খুশি হশে)।

 

তারপর এক সাথেই শুয়ে পরলাম বিছানাই।


- (মানুষ এতোটা নিচে নামতে পারে এতোটা বেইমান হতে পারে কিভাবে আমি তো অবাক হচ্ছি যে আমাদের এতো দিনের রিলেশন মধুর মত পবিত্র ভালোবাসা সেই ভালোবাসা কি না সে এভাবে কোরবানি দিবে ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে আমার। বুকের ভিতর খুব কষ্ট হচ্ছে চিনচিন ব্যথা অনুভাবিত হচ্ছে কখন যে চোখ দিশে টপ করে চোখেরজল পড়লো সেটা লিমা বুঝতে পেরে,, আমার বুকে মাথা রেখে বলল,


লিমা- জানি আপনার কষ্ট হচ্ছে। আপমার এ কষ্ট কি আমাকে ভাগ দিবেন অনেকটা ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখবো


আমি আর কান্না থামাতে পারলাম না লিমাকে জড়িয়ে কাঁদতে লাগলাম কেনো আমার সাথে এমন হল কেনো আমায় ধোকা দিলো কেনো আমার সাথে প্রতারণা করলো, কেনো আমার স্বপ্নগুলো ভেঙে তচনচ করে দিলো.? বলে কাঁদতে লাগলাম। লিমা ও কাঁদতে কাঁদতে আমাকে বুঝিয়ে সান্তনা দিচ্ছিলো আমি বাচ্চার মত কেঁদেই যাচ্ছিলাম

কাঁদছে কাঁদুক মানুষ কাদলে নাকি মনটা হালকা পাতলা হয়।


কিছুক্ষণ পর দুজনই ঘুমিয়ে গেলাম অজানা এক স্বপের রাজ্যে.......


#চলবে______________



Post a Comment (0)
Previous Post Next Post