পাট ৯-১০
বন্ধুর_জি-এফ_যখন_বউ
#পর্ব-০৯
#লেখা:তৌহিদুর রহমান(সৌরভ)
ও আমাকে ছেড়ে বিছানাই গিয়ে শুয়ে পড়লো। আমি বিছানা থেকে বালিশ নিতে যাব এমন সময় ও বলছে আপনি উপরে ঘুমান😱।তোমার কনো সমস্যা হবে না🤔?তিথি জবাব দিল-- আমার কনো সমস্যা হবে না☺। মাঝে কোলবালিস দিয়ে নিয়েন।আর আপনার তো ঠান্ডা লেগেছে দেখছি তাই বললাম🤧।
আমি:অনেকটা পথ গাড়ি চালিয়ে আসছি তো তাই একটু ঠান্ডা লেগেছে🤧।ও নিয়ে তুমি ভেবোনা ঠিক হয়ে যাবে🙂।এই বলে আমি বিছানার এক কোণাই সুয়ে পড়লাম😴।আমি ফোন নিয়ে ফেসবুকে নিউজ ফিড ঘাটছি এমন সময় আমিনুরের এস এম এস।লিখেছে হাই🙋। কিন্তু আমি কনো রিপলে দিলাম না। একটু পর আবার Sorry লিখে পাঠিয়েছে🙏।
এবার আমি রিপলে দিলাম। লিখলাম Sorry তো আমার বলা উচিত🙏। সেদিন তো আমিয় তোর গায়ে হাত উঠিয়েছিলাম।তুই জানিস আমি কেন তোর গায়ে হাত উঠিয়েছিলাম😐।
আমিনুর:কেন?
আমি:আমি তোকে অনেক আপন ভাবি🤗।আমি মনে করি তোর প্রতি আমার একটু অধিকার আছে তাই।আমি বুঝতে পারি নি যে এই সামন্য কারণে তোর এতো মন খারাপ হবে😑।আমি এখনো বলবো Love You ভাই😘।
আমিনুর:তুই যা ভাবছিস তা না।আমি একটা ভাল জব পায়েছি তাই চলে আসলাম😎।
আমি:তুই দেশে চলে আই। যানিস আমার আব্বুর খবর😥।
আমিনুর :হ্যা সালিম বলেছে। আমি তোকে এর মধ্যে কল দেইনি তোর যদি মন খারাপ হয় তাই😑।
আমি:সেটা আমি বুঝতে পেরেছি।
আমিনুর :আমি বিয়ে করছি দোস্ত। আগামি রবিবারে দেশে আসছি বুধবারে বিয়ে করে শুক্রবারে আবার চলে যাব🛫।তোর আর ভাবির থাকতে হবে কিন্তু😯।
যেহেতু এক সময় আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল তাই আর না করতে পারলাম না।আমি সম্মতি প্রকাশ করে ফোন রেখে চোখ বুজে ঘুমানোর চেস্টা করছি😴।কিছুক্ষন পর তিথি আমার ফোন নিয়ে ঘাটছে দেখলাম, আমি দেখেও না দেখার ভান করে চোখ বুজে ঘুমানোর অভিনয় করছি😴।
১৫থেকে ২০ মিনিট ফোন ঘাটার পর তিথি উঠে ওয়াশ রুমে চলে গেল তারপর হাউমাউ করে কান্না শুরু করে দিল😭।কিছুক্ষন কান্নাকাটি করার পর ফ্রেশ হয়ে আবার বিছানাই শুয়ে পড়লো😴।তারপর আমি ঘুমিয়ে পড়লাম😴।
হটাৎ মাঝ রাতে আমার ঘুম ভেঙে গেল।চোখ মেলতেই দেখি তিথি আমাকে জোড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে 😍🤫আর কোল বালিশটা মেঝেতে পড়ে গেছে।আমি এই অবস্থা দেখে কনো নড়াচড়া না করে এইভাবেই থাকলাম🤩।
সকালে কে যেনো কানের কাছে এসে বলছে। আমি কনোদিন আপনাকে ছেড়ে যাব না। সুধু একবার বলেন আপনি আমাকে ভালোবাসেন😍👨❤️💋👨। আমি চোখ বুঝে ঘুমানোর অভিনয় করছি।আরো বলছে আমি আপনার মায়ায় পড়ে গেছি😘। আমি এখন আপনাকে ছাড়া থাকতে পারি না😍।প্লিজ একবার বলেন ভালোবাসেন আমাকে👨❤️💋👨। এইবলে তিথি ওয়াশ রুমে চলে গেল।আমি তখনো বিছানা থেকে উঠলাম না চোখ বুজেই থাকলাম🙈।সব কিছু শুনে না শোনার ভান করলাম।
কিছুক্ষন পর বিছানা থেকে উঠার চেস্টা করলাম কিন্তু উঠতে পারলাম না😟।শরীলের ভিতর কেমন যেন ব্যাথা অনুভব করলাম😣।শরীলে এতো ব্যাথা যে আমি উঠতে পারছি না😕।
তিথি ওয়াশ রুম থেকে বেরিয়ে এসে আমাকে বলছে আপনি উঠবেন না আপনার শরীলে প্রচন্ড জ্বর।আমি ডাক্তার কাকাকে খবর দিয়েছি উনি কিছুক্ষনের মধ্যে চলে আসবেন😯🤗।
ডাক্তার কাকা এসে আমার জ্বর মেপে দেখে বললো ১০২ডিগ্রী ফারেনহাইট🤒। ডাক্তার কাকা কিছু ঔশুধ দিয়ে চলে গেল আর বললো মাথাই ঘন ঘন পানি দিতে😨।
সকালে নাস্তা করে ঔশুধ খেয়ে নিলাম কিন্তু জ্বর কমছে না🤕। এইভাবে দিন কেটে গেল।আমি একরকম অজ্ঞান হয়েই ছিলাম সারাদিন। কি হয়েছে কিছুই বলতে পারবো না। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি শরীলে আর জ্বর নেই☺। মাথাই জল পট্টি দেওয়া আছে।আমার মাথার পাশে তিথি ঘুমিয়ে আছে😴।
তাহলে তিথি সারারাত আমার মাথাই জল পট্টি দিয়েছে।কিন্তু ওতো আমাকে!! এসব যখন ভাবছি ঠিক তখনি বাড়ি থেকে আম্মুর ফোন বলছে এখন কেমন আছিস বাবা🤔?তোর শরীল ঠিক হয়েছে?আমি😍 আম্মুকে বললাম এখন আমার শরীল ভাল আছে। আর বললাম আমি বিকালে বাড়ি চলে আসবো🙂।
আম্মু বলছে আমার বউমা আসছে তো?আমি কিছু না বলে ফোন কেটে দিলাম।আমি এখনো তিথিকে বলিনাই যে আমি ওকে নিতে আসছি🙄। কিন্তু গতরাতের ঘটনার পর আমি ওকে বলার অকেটা সাহস পেয়েছি☺।
কিন্তু আবার ভাবছি গত রাতে কি আমি স্বপ্ন দেখেছি।অনেকটা সন্দেহে পড়ে গেলাম🤔।তিথির গায়ে কাথা দিয়ে আমি ওয়াশ রুমে চলে গেলাম।ওয়াশ রুম থেকে এসে দেখি ও রুমে নেই। আমি আর ডাকাডাকি না করে রুমে বসে থাকলাম🙁।
এরমধ্যে শাশুড়ি আম্মা কিছু নাস্তা নিয়ে আসলো🍛🍞।আমি খেতে লাগলাম শাশুড়ি আম্মা পাশে দাড়িয়ে ছিল। আমি বললাম আমি আজকে বিকালে চলে যাব।কিন্তু আমাকে আরেকটা দিন থাকার জন্য অনুরোধ করলো🙏।আমি অফিসের দোহাই দিয়ে এবারের রক্ষা পেলাম😎।
নাস্তা শেষ করে রুমে শুয়ে আছি তখন তিথি পুকুর থেকে গসল করে এসে ডেসিনটেবিলের সামনে চুল আচড়াচ্ছে😮। ভেজা চুলে কেমন যেন লাকছে ওকে। আমি ওর পাশে গিয়ে চেয়ারে বসলাম।ও আমার দিকে তাকিয়ে বলছে কিছু বলবেন🙂?
আমি মাথা নেড়ে বললাম হ্যা। কিছুক্ষন চুপ থেকে বললাম। আসলে কথাটা যে আমি কি করে বলবো ঠিক বুঝতে পারছি না।ও বললো বলেন কনো সমস্যা নাই😊।
আসলে আম্মু তোমাকে বাড়িতে নিয়ে যেতে বললো আমাকে🙄।আমি আসতে চাচ্ছিলাম না কিন্তু ছোটবোন আর আম্মুর মুখের দিকে তাকিয়ে চলে আসলাম😏। তোমার যদি যেতে মন চাই তাহলো চলো। আমি তোমাকে জোর করবো না কারণ সে অধিকার আমার নেই😥।
তিথি হাঁসছে আর বলছে এতো কথা কোথাথেকে শিখেছেন😌।আম্মু আগের দিন রাতে আপনার ফোনে কল দিয়েছিল কিন্তু আপনার অনেক জ্বর ছিল তাই আমি ফোন রিসিভ করেছিলাম🙂। আম্মু আমাকে সব বলেছে।আর আমিই আম্মুকে বলেছিলাম যে আপনি অসুস্থ।আমরা কখন রউনা দেব😮।
তারমানে তুমি যাবে। সত্যি তুমি যাবে।দাড়াও আমি বাড়ির সবাইকে জানিয়ে দিই☺।তাই বলে ফোন বের করে আম্মুকে বললাম আমরা দুপুর পর এইখান থেকে রউনা দেব😍। আম্মু খবরটা শুনে অনেক খুশি হয়েগেল😊।আমি আমার জামা কাপড় ব্যাগে গুছাতে লাগলাম।তিথি ওর সব জামা কাপড় ব্যাগে নিয়ে নিল😎।ও যে ভাবে গুজগাজ করছে তাতে মনে হচ্ছে অনেক দিন থাকার উদ্দশ্যে ঐ বাড়ি যাচ্ছে😮😊।
###গল্প পড়ে কেউ কেটে পাড়বেন না। সবাই লাইক কমেন্ট করবেন।কারণ আপনাদের লাইক কমেন্ট আমার পরর্বর্তী পর্ব লেখার অনুপ্রেরণা।
♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥
এতো দখি মেঘ না চাইতেই জল।যাক ভালোই হবো। কিছুদিন একসাথে থাকার পর সব কিছু ঠিকঠাক হয়ে যেতেয় পারে।এতোদিনে তিথির প্রতি আমার একটা দুর্বলতা তৈরি হয়েছে।আমার ওকে ছাড়া অন্য কনো মেয়েকে ভাল লাগেনা।অফিসে অনেক সুন্দর সুন্দর মেয়ে আছে।কিন্তু ওদের ভাল লাগে না।
দুপুরে খাওয়া দাওয়া শেষ করে শাশুড়ি আম্মার কাছ থেকে বিদায় নিলাম।অবশ্য শাশুড়ি আম্মাকে আমাদের সাথে আসতে বলেছিলাম কিন্তু আসলো না।তাই আমরা দুজনই গাড়িতে উঠে পড়লাম।অনেকটা রাস্তা একা ড্রাইভিং করতে হবে তাই কিছুটা মানুষিক ভাবে প্রস্তুতি নিয়ে নিলাম।
ওকে পেছনের ছিটে বসতে বললাম কিন্তু সামনের ছিটে বসলো।ভালোকরে ছিটবেল্ট বেধে যাএা শুরু করলাম। কিছুদুর যেতেই সালিম ফোন দিল মাঝ রাস্তাই তাই রিসিভ করলাম না।সন্ধ্যার দিক বাড়ি পৌছে গেলাম। আমাদেরকে কাছে পেয়ে মা বোন মহাখুশি।আম্মু তিথিকে বড় মেয়ের মতো দেখে।তাই তাঁর অনন্দ অন্যরকম।
রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে সালিমকে কল দিলাম।সালিম আমাকে ওদের বাড়ি যেতে বললো তাই দেরি না করে সোজা ওদের বাড়ি চলে গেলাম।দুজনে ছাদে চলে গেলাম।আমি সালিমকে সব কিছু খুলে বললাম।সালিম বললো দোস্ত সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে অল্প কিছুদিনের মধ্যে। তুই আর ভাবি নিজেদের মধ্যে একটু বেশি সময় দিবি তাহলে ভালো হবে।পারলে আগামীকাল তোর অফিস দেখিয়ে নিয়ে আসিস।দেখবি অনেক খুশি হবে।দুজন প্রাণ খুলে আড্ডা দিলাম সাথে সিগারেট তো ছিলোই।সালিম দের বাড়ি থেকে রাতের খাবার খেয়ে নিলাম। সময়টা অনেক অনন্দে কাটালাম।
বাসাই ফিরে ওয়াশ রুম থেকে ফ্রেশ হয়ে সোফাই বসলাম।আমার বউটা খাবার বেড়ে বসে আছে।আসতে আসতে একটু রাত হয়ে গেছে তাই আম্মু আর ছোটবোন রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পেড়েছে।ও আমার কাছে এসে বলছে আপনি খাবেন না। চলেন একসাথে খেয়ে নিই।আমি বললাম আমিতো সালিমদের বাসা থেকে খেয়ে আসছি। তুমি না খেয়ে বসে আছো কেন?
তিথি বলছে - না মানে আব্বু যখন বেচে ছিল তখন আব্বু না খেলে আম্মু খেতো না।আব্বু আর আম্মু একসাথে খেতো তাই।
আমি:কিন্তু আমি আর তুমি তো আর সেইরকম না।আজ না হয় কাল তুমি তো চলেই যাবা। আর আমার কথাটা রাখার জন্য তোমাকে অনেক ধন্যবাদ।তোমার জন্য অনেকদিন পর মা আর ছোটবনের হাঁসি মুখ দেখতে পেরেছি। আমি তোমার কাছে ঋনি। যদি কনোদিন তোমার কনো প্রয়োজনে লাগে আমাকে ডাকবা।আমার জীবন দিতে হলেও দেব।
তিথি:একি আপনি এসব কি বলছেন!!আপনার আম্মু আমার আম্মু না। আমার আম্মুর হাঁসি মুখ আমার দেখতে ইচ্ছা করে না।আপনি আসলেই অনেক খারাপ কিছুই বোঝেন না,না বোঝার চেস্টা করেন না।
তিথির সাথে হালকা মনো দ্বন্দ হলো। ও আমার সাথে আর কথা না বলে ওয়াশ রুমে চলে গেল। আমি বিছানাই শুয়ে পড়লাম।ও ওয়াশ রুম থেকে বেরিয়ে এসে বিছানার মাঝে কোল বালিস দিয়ে শুয়ে পড়লো।দুইজন দুইদিকে ফিরে সুয়ে রইলাম।কিছুক্ষন পরে আমার মনে পড়লে ওতো রাতে না খেয়ে শুয়ে পড়েছে।
আমি বিছানা থেকে উঠে লাইট জ্বালিয়ে রেখে ডাইনিংয়ে গিয়ে একটা প্লেটে খাবার নিয়ে রুমে চলে এলাম।ওর হাত ধরে উঠানোর চেস্টা করলাম কিন্তু উঠতে চাচ্ছে না মনে হয় একটু বেশি রাগ হয়েছে।রাগ ভাঙানোর জন্য কান ধরে উটবস করতে লাগলাম কয়েকবার করার পর হেঁসে দিল।তখন হাতধরে উঠালাম।
আমি ওকে খাইয়ে দিতে গেলাম কিন্তু ও আমার হাতে না খেয়ে নিজে নিজে খেলে।কি জানি কি হলো আমি নিজেও বলতে পারবো না।আসলে আমার এই কাঁচা মাথাই মেয়েদের মন বোঝা সম্ভব না।
ওর খাওয়া শেষ হলে আমি আবার বিছানাই শুয়ে পড়লাম। ও লাইট অফ করে শুয়ে পড়লে। আমি আস্তে আস্তে বলছি কাল আমার সাথে আমাদের অফিসে যাবা অনেক ভাল ঘোরার যাইগা আছে।তোমার খুব ভাল লাগবে।আমার প্রশ্নের কনো জবাব না দিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে রইলো।তাই একরকম ধরেই নিলাম হয়তো যাবে না। ফোনে এলাম দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
আমি এখন আর ৮:০০টার সময় ঘুম থেকে উঠিনা।প্রতিদিন ৬:০০ টার সময় ঘুম থেকে উঠি কারণ আমার অফিস ৮:০০ থেকে।সকালে ফোনের এলামের শব্দ শুনে উঠতে যাব কিন্তু উঠতে পারছি না কে যেনো আমাকে শক্তকরে ধরে আছে।চোখ মেলতেই দেখি তিথি। আমি ছাড়ানোর চেস্টা করলাম কিন্তু ছাড়াতে পারলাম না।যেহেতু অফিসে যাওয়া লাগবে তাই বাধ্য হয়ে ওকে ডাক দিলাম।কয়েকবার ডাকার পরে উঠে লাজ্জা পেয়ে রুম থেকে বাইরে চলে গেল।
আমি বিছানা ছেড়ে উঠে ফ্রেশ হয়ে অফিসের জন্য রেডি হয়ে নিচে নাস্তা করতে চলে গেলাম। হালকা নাস্তা করে ড্রাইভারকে গাড়ি বের করতে বললাম।গাড়ির কাছে যেতেই দেখি ও সেই নীল শাড়িটা পরে আসছে।আমি ভেবেছিলাম ও হয়তো যাবে না কিন্তু ঠিক তার বীপরিতটা ঘটলো।আসলে তিথি যা বলে করে তার ঠিক উল্টাটা।আমি গাড়িতে উঠতে বললাম কিন্তু উঠছে না। কি যেনো ভাবছে।আমি ওর কাধে হাত দিতেই লাফিয়ে উঠলো।কি যে ভাবছে..................
চলবে.......................?
পর্ব১০:(শেষ পর্ব)আগামীকাল রাত ৯টাই।
আশা করি আপনারা বেশি বেশি করে লাইক, কমেন্ট,শেয়ার করবেন।পরবর্তী পর্বের জন্য কমেন্ট সেকশনে Next লিখে যান।
♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥
#[বিঃদ্র:আপনারা যদি পোস্ট কপি করে পোস্ট দেন তাহলে লেখক লিখে আমার নামটা দিয়েন]
বন্ধুর_জি-এফ_যখন_বউ
#পর্ব-১০(শেষ)
লেখা:তৌহিদুর রহমান(সৌরভ)
আমি গাড়িতে উঠতে বললাম কিন্তু উঠছে না। কি যেনো ভাবছে🤔।আমি ওর কাধে হাত দিতেই লাফিয়ে উঠলো।কি যে ভাবছে!তারপর গাড়িতে উঠে পড়লো🚘।আমরা অফিসে চলে গেলাম।একে একে অফিসের সবার সাথে ওর পরিচয় করিয়ে দিলাম😎।সব কিছু ও খুব উপভোগ করছে☺।
যেহেতু অনেকদিন পর অফিসে আসছি তাই আজকে একটু সব কিছুর হিসাব নেওয়া লাগবে🙂। আমি তিথিকে গেস্ট্ররুমে রেখে আসলাম।বললাম আমি তুমি এইখানে এক ঘন্টা অপেক্ষা কর আমি কিছু কাজ করে আসি😌 । এখানে টিভি আছে দেখতে লাগ।আর যদি ভাল না লাগে তাহলে আমার রুমে চলে এসো 🤗।
আমার অফিসের হিসাব রক্ষক একটা সুন্দরী মেয়ে😍। ওকে আমার রুমে ডাক দিলাম।আমি ওর কাছ থেকে সব হিসাব বুঝে নিচ্ছি📑। কখন যে এক ঘন্টা পার হয়ে গেল নিজেয় বুঝলাম না😏। হটাৎ কনো রকম দরজা নক ছাড়াই কে যেনো রুমে প্রবেশ করলো তাকিয়ে দেখি তিথি😮।
আমি হিসাব রক্ষক মেয়েটাকে চলে যেতে বললাম।মেয়েটা চলে যেতেই তিথি আমার শার্টের কলার ধরে বলছে😇 --ঐ মেয়ের সাথে এতোক্ষন কি করছিলেন।আমি আপনাকে না বলছি কনো মেয়ের সাথে মেলামেশা করবেন না☺।
আমি ওকে রাগানোর জন্য বললাম ঐ মেয়ের সাথে আমার একটা সম্পর্ক আছে😄।এই কথা শোনার পর তিথি চোখ মুছতে মুছতে অফিস থেকে বেরিয়ে গেল😥। আমি পেছন থেকে অনেক ডাকলাম কিন্তু কনো কথা শুনছে না।আমি একরকম বাধ্য হয়ে ওর পেছন পেছন যেতে লাগলাম।অফিসের কর্মচারীরা আমার এই অবস্থা দেখে হাঁসাহাসি করছে😆।
নিচে যেতেই তিথি অটোতে উঠে চলে গেল🤨।আমি আবার আমার রুমে এসে কাজে মন দিলাম।কাজ শেষ করতে করতে রাত ৮:০০ বেজে গেল😣।কাজ শেষ করে বাসাই চলে গেলাম☺।ওয়াশ রুম থেকে ফ্রেশ হয়ে আমি সোফাই বসে পড়লাম। দেখি তিথি ওর সব কাপড় গুছিয়ে নিচ্ছে 😮। আমি যেই বলছি কোথায়কি যাবা নাই তুমি🤔?
ও ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাঁদছে আর বলছে আমি বাড়ি চলে যাব কাল😏। এই বাড়িতে আর কিসের জন্য থাকবো। সব তো আপনি আজ শেষ করে দিলেন।আপনার অন্য যাইগাই সম্পর্ক আছে সেটা আপনি আগে বলবেন না🤫।তাহলে আমি আর কষ্ট করে আসতাম না😥।
আমি বললাম- আমার আরো কতো যাইগাই সম্পর্ক আছে😄।আমি যেখানে যাই সেখানেই আমার সম্পর্ক গড়ে উঠে এই বলে আমি হাসাছি😆।আর ও আস্তে আস্তে চাপা গলায় কাঁদছে😥।ওকে রাগাতে আমার বেশ ভালোই লাকছে😊।
আমি নিচে গিয়ে আম্মুর সাথে খেয়ে নিলাম🍜।আর আম্মু বললো তিথি এখনো খাইনাই। তাই ওর খাবার নিয়ে উপরে চলে আসলাম😎।খাবার রুমে নিয়ে এসে রেখে দিলাম বললাম খিয়ে নিয়ো।এই বলে আমি ছাদে চলে গেলাম😊।ছাদে যেতেই আমিনুরের ফোন দোস্ত আমি দেশে চলে আসছি কাল আমার বিয়ে তুই আর ভাবি চলে আসিস প্লিজ🙏।আমি বেশি কিছু না বলে ফোন কেটে দিলাম🙂।আমি একা একা ছাদে বসে আছি এমন সময় তিথি এসে আমার পাশে বসে পড়লো। বলছে ঐ মেয়ের সাথে সত্যি আপনার কিছু আছে🙄।
আমি বললাম হ্যা😉। আমার হ্যা সুচক বাক্য শুনতেই আবার কেঁদে দিল😥।আমি এখন বুঝতে পারছি যে তিথি আমাকে ভালোবেসে ফেলেছে🙂।কিন্তু এতো শিগ্রই সব কিছু ঠিকঠাক করতে ইচ্ছা করছে না। ওকে কাঁদাতে ভালোই লাকছে😆। কিন্তু পাগলিটা ধরা দিচ্ছে না। নিজেকে খুব চালাক ভাবে🙂।
##গল্প পড়ে কেউ কেটে পাড়বেন না। সবাই লাইক, কমেন্ট,শেয়ার করবেন।সবাই পরর্বর্তী গল্পের জন্য অপেক্ষা করেন।
♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥
আমি বললাম-আচ্ছা তুমি কাঁদাছো কেন? তুমি তো আমাকে ভালোই বাসো না🤔।আর তুমি তো কিছুদিন পরে চলে যাবে।এতো মায়া বাড়িয়ে লাভ আছে তুমি বল😣।এই বলে আমি নিচে চলে গেলাম।মেঝেতে একটা চাদর পেতে বালিস নিয়ে নিচে শুয়ে পড়লাম।তিথি রুমে এসে আমার ফোন নিয়ে ঘাটাঘাটি করছে দেখলাম কিন্তু কিছু বললাম না🙂।তারপর ও আমার পাশে শুয়ে পড়লো । আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে গেল আমিও ঘুমিয়ে গেলাম।সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার পাশে ও নেই। বিছানাই ঘুমিয়ে আছে । নিজেকে খুব চালাক মনে করে😉।
আমি ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে অফিসে চলে গেলাম।আজ কনোমতে অফিস করে আমিনুরের বিয়ের ফাংশানে চলে গেলাম তিথিকে নিলাম না।এসব দেখে যদি ওর খারাপ লাগে তাই ওকে আনলাম না😥🤗। আমিনুর আমার কাছে কয়েকবার শুনেছে আমি বলছি ও অসুস্থ😏। তাই আর কিছু বলে নাই।
আমিনুরের বিয়েতে এসে আমি পুরাই অবাক😮। আমার ভার্সিটির বান্ধবী বৈশাখীর সাথে আমিনুরের বিয়ে হচ্ছে😍। আমি বৈশাখীকে জিজ্ঞাসা করলাম কিরে হারামি কবে থেকে এইসব শুরু করেছিলির আমার তো বললি না🤔।বান্ধবী আমার লজ্জা পেয়েছে ।মুখ লাল হয়ে গেছে কনো কথা বলছে না।খাওয়া দাওয়া শেষ করে ওদের সাথে কিছু সময় কাটিয়ে বাসাই চলে আসলাম☺।
রুমের ভিতির প্রবেশ করে দেখি তিথি ঘুমিয়ে আছে🤗।ওর মুখের উপর একটা মশা বসে আছে।ওর পরিষ্কার মুখটাই দাগ লাগিয়ে দেবে তাই আমি আস্তে করে একটা থাপ্পর দিলাম😄। সাথে সাথেই তিথি ঘুম থেলে উঠে পড়লো।আমি বললাম তোমার মুখে একটা মশা বসেছিল তাই মারতে গেছিলাম😉।
ও আর কিছু বললো না। আবার শুয়ে পড়লো।কিন্তু অনান্য দিন তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে।সারাদিন অনেক পরিশ্রম করছি তো তাই ক্লান্ত😴। নিচে ঘুমাতে ইচ্ছা করছে না।ওকে না বলেই খাটের উপর ঘুমিয়ে পড়লাম😴।
সকালে কেমন যেন একটা শব্দে ঘুম ভেঙে গেল।চোখ মেলতেই দেখি তিথি ব্যাগ গুছিয়ে নিজে রেডি হয়ে বসে আছে।আমি উঠতেই বলছে আমাকে আম্মুর কাছে দিয়ে আসেন🙄।আমি বললাম কেন🤔?
ও বলছে আপনি আমার কনো কথা শোনেন না।আপনার সাথে আমি আর থাকবো না😥।আমি ওয়াশ রুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এসে ওকে বোঝানোর চেস্টা করতে লাগলাম।কিন্তু কিছুতেই কনো কথা শুনছে না।আমি অফিসের ম্যানেজারের কাছে কল দিয়ে বললাম আজকে আমি অফিসে আসতে পারবোনা😣।
সকালের নাস্তার জন্য আমি তিথিকে নিয়ে খাবার টেবিলে চলে গেলাম🍚🍩। খাবার টেবিলে বসতেই আম্মু বলছে সাগর আমার আর একা একা বাড়িতে ভাল লাগে না।আমি বললাম তিথিতো আছে এখন।মা বলছে আরে সেটা না বাড়িতে একটা বাচ্চা কাচ্চা না থাকলে ভাল লাগে বল বাবা🙈।ওরাই তো সারাবাড়ি মাথাই করে রাখে। আমি আর কয়দিন বাচবো বল বাবা! যদি নাতি পুতির মুখ না দেখে🙊।
আম্মুর কথা শুনে তিথির মুখ লজ্জায় লাল হয়ে গেছে🙈। আমি আম্মুকে বললাম আচ্ছা ঠিক আছে।আর আমি আজকে অফিসে যাচ্ছি না।তোমার বউমাকে নিয়ে একটু বাইরে যাব ওর নাকি মন খারাপ। আম্মু বলছে আচ্ছা বাবা জা। আসার সময় আমার জন্য পান নিয়ে আসিস।আজ সকালে ফুরাই গেছে।তোর করিম চাচা গ্রামের বাড়িতে চলে গেছে তাই তোকে বললাম😊।
আমি আম্মুকে বললাম ঠিক আছে😇।তিথিকে নিয়ে একটা লেকের পাড়ে চলে গেলাম।জাইগাটা আমার খুব ভালো লাগে।যখন আমার মন খারাপ থাকে তখন এই লেকের পাড়ে এসে বসে থাকি। কিছুক্ষন বসে থাকার পর মন এমনিতেই ভাল হয়ে যায়।
আমি তিথিকে জিজ্ঞাসা করলাম জাইগাটা তোমার কেমন লাকছে ও বললো ভালো।ও মন খারাপ করে একপাশে বসে আছে। আমি কথা বললে ও দুই-একটা কথা বলছে আর না বললে বলছে না।আমি বাসা থেকে মনে মনে ঠিক করছি ওকে প্রপোজ করবো তার জন্য অবশ্য একটা গোলাপ ফুল ও আনছি।কিন্তু এখন সাহস হয়ে উঠছে না।
আসলে আমি আগে নিজে থেকে কাউকে প্রপোজ করিনাই। একবার স্কুল লাইকে একটা মেয়ে সুধু বলছিলাম আমি তোমাকে....... তারপর আমার উপর দিয়ে টর্নেডো বয়ে যায়।সেখান থেকে আমার এতো ভয়।
দুই-একবার ওর সামনে গিয়ে বলবো বলবো ভাবছি কিন্তু বলতে পারছি না কি যে করি। এইভাবেই সময় কেটে গেল আজ আর বলা হলো না। বাসাই চলে গেলাম।রাতে দেখি আকাশে বড় একটা চাঁদ উঠেছে।তাই ছাদে চলে গেলাম চাঁদ দেখতে। দেখি তিথিও ছাদে বসে আছে।ওর পাশে গিয়ে বসলাম।মনে মনে ভাবছি এখনি বলে দেই।
হটাৎ করে ওর সামনে গিয়ে চোখ বুজে বলেই দিলাম। তারপর এক দৌড় দিয়ে রুমে চলে আসলাম। তিথি আমার সামনে এসে সুধু হাঁসছে। কিন্তু আমার খুব ভয় করছে। হাঁসি থামিয়ে তিথি বলছে আপনি ওইভাবে দৌড় দিলেন কেন আমি কি বাঘ না ভাল্লুক।আমার পাশে এসে বলছে আপনি সত্যি আমাকে ভালোবেসে ফেলেছেন।সারা জীবন আমার হাত ধরে রাখতে পারবেন।
আমি বললাম আমি তোমাকে ছাড়া কনোকিছু ভাবতে পারি না। তোমাকে না দেখলে আমার ভালো লাগে না। তুমি সামনে না থাকলে আমি তোমাকে অনেক মিচ্ করি। এটা যদি ভালোবাসা হয় তাহলে আমি তোমাকে ভালোবাসি একটু না অনেক অনেক। আমার শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করার আগ পযন্ত তোমার হাত ধরে রাখতে চাই যদি তুমি সুযোগ দাও।তিথির দিকে তাকিয়ে দেখি ওর চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরছে পাহাড়ি ঝরনার মতো। আমি নিজে হাতে ওর চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে বললাম কনোদিন তোমার চোখে পানি আসতে দেবা না।
তিথি কনো কিছু না বলে আমার বুকে মুখ লুকালো।আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে।অনেক শক্ত করে। ওর চোখের পানিতে আমার শার্ট ভিজে গেছে।হটাৎ আমাকে ছেড়ে দিয়ে বলছে অফিসের ঐ মেয়েটার সাথে..............
আরে ওরতো অনেক আগেই বিয়ে হয়ে গেছে একটা ছেলেও আছে।আর ওর সাথে আমার ভাই বোনের সম্পর্ক। আমাকে ভাই বলে ডাকে তাই বলে হাঁসছি।এই কথা শোনার পর আমার বুকে মারতে লাগলো তারপির আবার জড়িয়ে ধোরলো।
কিছুক্ষন পর আমি বলছি আম্মু যেইটা বলছিল ঐটার কি হবে।ও বলছে কোনট?আরে খাবার টেবিলে যেইটা বলেছিল।আমাদের বেবির বেপারে।
তিথি:আপনি চুপ করেন তো।আপনার মুখে কিছু আটকায় না।
আমি:তুমি আমার সাথে আর আপনা আপনি করে কথা বলবা না এখন থেকে তুমি বলবা। না হলে আমি তোমার সাথে কথা বলবো না।তুমি বলো না প্লিজ।
তিথি :তুমি!!!!!!!!!
আমি:ওহ বউয়ের মুখে তুমি ডাক শুনতে যে কি মজা লাগে।আচ্ছা আমাদের তো সেদিন বাঁশর রাত হয়নি।আজকে কি..............
তিথি :এই একদম না কিন্তু ।
আমি আস্থে আস্থে ওর কাছে যেতে লাগলাম তারপর যেটা হলো সেটা সেই বইয়ের ৭৭৮নাম্বার পৃষ্টা থেকে পড়ে নিয়েন।
দেখতে দেখতে ৫ বছর কেটে গেল,এখন আমাদের একটা ৪ বছেরের মেয়ে আছে।ওর নাম রিমি।রিমি বাড়িটা মাতিয়ে রাখে। সবার চোখের মণি।আমার ছোটবোনের ও ভালো যাইগাই বিয়ে দিয়েছি।আম্মু রিমিকে নিয়েই সারাদিন থাকে।তিথির আর আমার মধ্যে মাঝে মাঝে ঝগড়া হয় কিন্তু কেউ কারো সাথে বেশিক্ষন কথা না বলে থাকতে পারি না।আমিনুরের সাথে বন্ধুত্বটা আগের মতোই হয়ে যাচ্ছে দিন দিন।সুধু আব্বু নেই।
###গল্পটা পড়ে কেমন লাগলো জানাবেন###
## পরবর্তী গল্পের জন্য অপেক্ষা করুন।
♥______________সমাপ্ত______________♥
গল্পের মূলভাবঃ
---------------সময় বহমান,কেউ কারো জন্য অপেক্ষা করে না।আমরা নিজের জীবনকে আমরাই সুন্দর করতে পারি।সময়ের সাথে মানুষের পরিবর্তন হবে এটাই স্বাভাবিক।
♥___________ধন্যবাদ_____________♥