আর্মি_ছেলের_প্রেমে_অহংকারী_মেয়ে পর্ব_৩ + ৪

  #আর্মি_ছেলের_প্রেমে_অহংকারী_মেয়ে

#লেখক_মাহফুজ_মাহমুদ
#পর্ব_৩

স্যার, কি মাহফুজ তোমার কাজ কতো দূর আগালো..? 

মাহফুজ, জি স্যার সবকিছু ভালোভাবে চলছে, আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি এই কেসটা সলভ করে ফেলবো, কতা বলা শেষ হতেই ফোনটা কেটে গেলো, তারপর ঘুমিয়ে পরলাম, সকাল বেলা কলেজে গিয়ে রাজের সাথে আড্ডা দিতে লাগলাম, আর তখনই দেখি ৩ থেকে ৪ জন ছেলে প্রিন্সিপালের রুমে ঢুকলো, সবগুলোকেই দেখতে গুন্ডাদের মতো, সবাই মাস্ক পরে আসছে,যেনো মনে হচ্ছে জঙ্গল থেকে উঠে এসেছে, কলেজে আসার পর থেকে ওদেরকে দেখি নাই,তবে কি ওরা প্রিন্সিপালের সাথে মিলে কুকর্ম করে নাকি..? মনে প্রচুর পরিমান সন্দেহ হতে লাগলো,কি হচ্ছে দেখা দরকার,এই রাজ আমার একটা পার্সোনাল ফোন আসছে,আমাকে একটু সাইডে যেতে হবে,
রাজকে মিথ্যা বললাম, কারন এখন প্রিন্সিপালের রুমে যেতে হবে,

রাজের কাছে থেকে সরে গিয়ে প্রিন্সিপালের রুমের দরজায় গিয়ে দাড়ালাম,তারপর লুকিয়ে ওদের কথা শুনতে লাগলাম,

প্রিন্সিপাল, এই তোমরা এখন কলেজে আসছো কি জন্য,তোমাদেরকে না আমি বলেছিলাম যে আমি ফোন করবো..? যদি কেউ এটা দেখে নেয়,তাহলে তোমরা সহ আমাকেও জেলের গানি টানতে হবে,

ছেলেগুলো, আরে প্রিন্সিপাল রাখতো তোর জেল,আমরা ওসব জেলের ভয় পাই না,তোকে বলেছিলাম ষে ড্রাগ গুলো দেশের বাইরে পাঠাতে হবে,সেটা যে করেই হোক,তুই সেগুলো নিয়ে কোথায় রাখছিস বল তাড়াতারি,

প্রিন্সিপাল, তোমরা উত্তেজিত হচ্ছো কেন এতো..? আমি তো টাকার গোলাম,তোমাদের ড্রাগ গুলো আমি যথা সময়ে পাঠিয়ে দিবো,কারন আমিও চাই অনেক বড়লোক হতে,এই প্রিন্সিপাল হয়ে কতোদিন থাকবো, আমি একেবারে দেশের বাইরে চলে যাবো, আর জীবনটাকে উপভোগ করবো,

ছেলেগুলো, ঠিক আছে, আমরা এখন চলে যাচ্ছি, ঠিক সময়ে যেনো মালগুলো পেয়ে যায়, নাহলে তোকে এমন অবস্থা করবো, যে তোকে কবরও ভয় পেয়ে দাফন করতে দিবে না, বলে ছেলেগুলো চলে গেলো, 

মাহফুজ, এদিকে আমার সমস্ত কিছুর ভিডিও করা শেষ, ছেলেগুলো আসতেই লুকিয়ে পরলাম, তারপর আবার রাজের কাছে চলে গেলাম,কিন্তু আড্ডা দেওয়া আর হলো না, তানহা রাজের সাথে বসে আছে,

রাজ, কিরে তোর কথা বলতে এতো সময় লাগে..? সেই কখন চলে গেলি,

মাহফুজ, আরে এখন তো আসছি, আর ওয়েট করা লাগবে না,

তানহা, মাহফুজ তুমি কোথায় গিয়েছিলে..? আমি এসে দেখলাম রাজ বসে আছে, বাট তুমি নাই, ওকে জিজ্ঞাসা করলে বললো মোবািলে কথা বলতে গেছে, সো কথা বলতে কি এতো সময় লাগে নাকি..?

মাহফুজ, দুইজন মিলে আমার পিছনে লাগছে, এখন আমার কান্না পাচ্ছে,

রাজ, থাক আর কান্না করতে হবে না, অনেক ক্ষুদা লাগছে, পেটের মধ্যে ইঁদুর দৌড়াচ্ছে, এখন চল ক্যান্টিনে গিয়ে কিছু খেয়ে আসি,

মাহফুজ, এইরে তোর কতা শুনে তো ক্ষুদা আমারও লেগে গেলো,

তানহা, ওহহহ তোমাদের ক্ষুদা লেগেছে, সেটা আগে বলবে তো..? চলো তোমাদেরকে আজ রেস্টুরেন্টে নিয়ে খাওয়াবো, আমার পক্ষ তেকে ১ টা ট্রিট, কি তোমরা খুশি তো..?

রাজ, আরে খুশি না মানে..? এমপি সাহেবের মেয়ে ট্রিট দিবে, আর সেটাতে খুশি না হয়ে থাকা যায়..? 

মাহফুজ, তারপর সবাই মিলে ভালো একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম, ওয়েটারকে ডেকে নিয়ে খাবারের অর্ডার দিলাম, রাজ ওর মনের মতো করে অর্ডার দিলো, রাজের অর্ডার দেওয়া দেখে তো মনে হচ্চে যেনো একটা রাক্ষসকে কাওয়াতে নিয়ে আসছি, কিরে রাজ তুই এতো খেতে পারবি তো..?

রাজ, আরে বলিস কি..? খেতে পারবো না মানে, তুই শুধু তাকিয়ে থেকে দেখে যা,তারপর কথা বলবি,

তানহা, রাজের কথা শুনে হেসে দেয়,আচ্ছা ঠিক আছে, তোমার সেটা মনে চায় সেটাই খাও, আজ আমার পক্ষ থেকে ট্রিট বলে কথা,

মাহফুজ, একটু পর ওয়েটার এসে সব আইটেমগুলো দিয়ে যায়, তারপর সবাই মিলে খাওয়া শুরু করলাম, রাজ প্রচুর পরিমানে খেলো, যা দেখে আমিতো পুরাই অবাক, খাওয়া শেষে সব বিল মিটিয়ে বের হয়ে গেলাম,

তানহা, আচ্ছা এখন তাহলে বাসার দিকে রওনা দেওয়া যাক, কালকে আবার কলেজে দেখা হবে,

মাহফুজ, তারপর সবাইকে বিদায় জানিয়ে বাসায় চলে গেলাম,এখন একটাই কাজ, কবে এই ড্রাগ গুলো পাচার হবে সেটা জানতে হবে, আর আমার অভিজ্ঞতা অনুযায়ী এই কলেজ থেকেই ড্রাগ গুলো পাচার হবে, ওরা শুধু সময়ের অপেক্ষা করছে, বিকাল বেলা রিশা কে ফোন করলাম, 

রিশা, হা মাহফুজ বলো কি খবর তোমার..?

মাহফুজ, হা আমার খবর তো অনেক ভালো, তো তুমি কি এখন জ্যাকসন কফিশপ টাতে আসতে পারবে..?

রিশা, হা আসতে পারবো,

মাহফুজ, তবে একটা কথা, আসার সময় এই শহরের একটা ম্যাপ নিয়ে আসবে, আর ড্রাগ ডিলার ড্রাগনের এলাকারও একটা ম্যাপ নিয়ে আসবে, তুমি চলে আসো, আমি রওনা দিচ্ছি,

রিশা, ওকে আমি এখনি বের হচ্ছি, তুমি চলে আসো,

মাহফুজ, রিশার সাথে কথা বলে দ্রুত তৈরি হয়ে নিলাম, তারপর জ্যাকশন রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পরলাম, একটু পরে পৌছে গিয়ে দেখি রিশা বসে আছে, সরি রিশা একটু দেরি হয়ে গেলো নাকি..?

রিশা, না না দেরি হয় নি, আমারই একটু আগে আসার অভ্যাস,

মাহফুজ, তো জিনিসগুলো এনেছো তো..? 

রিশা, হ্যা সবকিছু এনেছি, তারপর ম্যাপ বের করে দিলো,নাও এইটা হলো আমাদের বন্ধুতের উপহার, তুমি চাইলে কিন্তু আমাদের পুরো C.I.D. টিম তোমাকে সাহায্য করতে পারি,

মাহফুজ, আরে নাহহহ, তার আর কোনো দরকার হবে না, আমি একা কাজটা করতে পারবো,

রিশা, তবুও একবার ভেবে দেখতে পারো, আচ্ছা তুমি একটা কথা বলো তো, তুমি এতো ফিট থাকো কেমন করে..?

মাহফুজ, আরে বাবা একজন কমান্ডো আমি, সারাদিন এই সব নিয়েই থাকতে হয়, তো এতোসব কাজ করতে গেলে তো ফিট থাকতেই হবে..! তারপর দুজন মিলে কফি খেলাম,

রিশা, আচ্ছা এখন যাওয়া যাক, ডিনারে কফির বিলটা আমি দিলাম, কিন্তু পরের ট্রিটটা কিন্তু তোমার,

মাহফুজ, আচ্ছা ঠিক আছে, এখন বের হওয়া যাক, রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে গেলাম, রিশা হাত বাড়িয়ে দিয়ে হ্যাডসেক করলো, ওকে তাহলে যাওয়া যাক, ওকে বিদায় দিয়ে রাস্তা পার হলাম, হঠাৎ করে পিছন থেকে রিশা চিৎকার শুনতে পেলাম,

রিশা, এই তোমরা কারা,আমাকে ছেড়ে দাও বলছি,

মাহফুজ, রিশার আওয়াজ শুনে পিছনচে তাকাতেই দেখি একটা গাড়িতে ওকে জোড় করে তুলে নিয়ে যাচ্ছে, নিশ্চয় ড্রাগনের লোকেরা আমার ব্যাপারে জেনে গেছে, আর ভুল করে রিশাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে, আমিও ওদের পিছনে দৌড়াতে লাগলাম, গাড়িটা স্পিডে চলছে, কিন্তু আমিও কমান্ডোতে দৌড়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি, সো সমস্ত শক্তি দিয়ে দৌড়াতে লাগলাম, ওরা আস্তে আস্তে জঙ্গলের মধ্যে চলে গেলো, কি করবো কিছুই মাথায় আসছিলো না, তখন রাস্তায় একটা মোটা লাঠি দেখতে পেলাম,ওইটা ওদের গাড়ির দিকে ছুড়ে মারলাম,সাথে সাথে গাড়ির সামনের কাচটা ভেঙে গেলো, আর ওরা কন্ট্রোল করতে না পেরে গাড়ি থামিয়ে দিলো,দৌড়ে গিয়ে রিশাকে গাড়ি থেকে বের করলাম, কিন্তু ১০ থেকে ১৩ জন আমাদেরকে ঘিরে ধরলো, রিশাকে সাইডে সরিয়ে দিয়ে সবকয়টাকে মারতে থাকলাম, একটু পর দেখি মটিতে সবকয়টা গড়াগড়ি খাচ্ছে, তারপর রিশার দিকে তাকাতেই একটা গুলি এসে সোজা আমার পেটের বাম পাশে লাগলো, সাথে সাথে চোখ দুইটা অন্ধকার হয়ে গেলো,

রিশা, এই অবস্থা দেখে মাহফুজ বলে একটা চিৎকার দেয়, কিন্তু মাহফুজের নিহর দেহ মাটিতে পরে আছে, কোনে সারা শব্দ নাই, সেই লোকগুলো এসে জোড় করে রিশাকে তুলে নিয়ে যায়,

মাহফুজ, হঠাৎ করে আমার ঘুমটা ভেঙে গেলো,পাশে তাকিয়ে দেখি ৩ টা লোক দাড়িয়ে আছে, চারপাশে তাকাতেই দেখি আমি হসপিটালের বেডে শুয়ে আছি, তখন সামনে দাড়ানো একটা লোক বলে উঠলো,

লোকটা, এই ছেলে রিশা কোথায়..?

মাহফুজ, মনে মনে এরা আবার কারা,যে রিশার খোজ নিতে আসতে,ব্যাপারটা এখন চেপে যেতে হবে, আমি কোনো রিশাকে চিনি না, আর আপনারা কে..?

লোকটা, আমরা C.I.D থেকে আসছি, আর রিশাও একজন C.I.D অফিসার, এইটা রিশার ছবি,একটা ছবি সামনে দিয়ে বললো, আর আমরা তোমাকে জঙ্গল থেকে অজ্ঞান অবস্থায় পেয়েছি,

মাহফুজ, ছবির দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে এটা রিশা, কিন্তু ওদেরকে এখন আমার সম্পর্কে বললে পুরো প্লানটাই বরবাদ হয়ে যাবে,তাছাড়া রিশাকে বলেছি যে আমি ওদের কোনে প্রকার সাহায্য নিবো না, তাই একটা প্লান মাথায় আসলো, শুনুন আমি এই মেয়েটাকে চিনি না, আর আমি কিভাবে জঙ্গলে ছিলাম সেটাও আমি জানি না, আমি তো সকালে কলেজের জন্য বেরিয়েছিলাম, তারপর আমার আর কিছু মনে নাই, 

আরেকটা লোক, স্যার তাহলে কি ওর স্মৃতি শক্তি চলে গেলো নাকি..?

মাহফুজ, না না আমার স্মৃতি শক্তি আলে যায় নাই, আমার সবকিছু মনে আছে, আমার নাম মাহফুজ, এখানেই একটা কলেজে আমি পড়ালেখা করি, বাট কলেজে বের হওয়ার পর থেকে আমার কিছুই মনে নাই, ডক্টর আমার মাথা ব্যাথা করছে,

ডক্টর, রাহাত (C.I.D অফিসার) এবার ছেলেটার একটু রেস্টের প্রয়োজন, নাহলে মাথায় অতিরিক্ত চাপ পড়বে,

রাহাত, কিন্তু ডক্টর আমাদের ওকে জিজ্ঞাসাবাদ করার আছে,

ডক্টর, দেখো রাহাত এখন যদি আর ওকে চাপ দাও, তাহলে নার্ভাস ব্রেকডাউন হয়ে যাবে, সো প্লিজ লিভ হিম এলোন,

তখন অফিসার রা আর কোনো কথা বলতে পারলো না, তারা কেবিন থেকে বের হয়ে গেলো, তার তখনই তানহা দৌড়ে ভিতরে প্রবেশ করলো,পিছনে রাজও আছে,

তানহা, এই মাহফুজ কি হয়েছে তোমার..? জানো তোমার জন্য কতো টেনশন হচ্ছিলো,
ডক্টর মাহফুজের কি হয়েছে..?

ডক্টর, দেখো তানহা চিন্তার কোনো কারন নাই, ওনার একটা গুলি লেগেছিলো,পেটের ডান পাশে, সেনসেটিভ এলাকা ছুয়ে বেড়িয়ে গেছে, এখন সম্পূর্ণ বিপদ মুক্ত,

তানহা, আপনি আমাকে কেমন করে চিনেন..?

ডক্টর, আরে তুমি আমাদের আনোয়ার সাহেবের মেয়ে,আর তোমাকে চিনবো না,এটা কেমন করে হয়..?

তানহা, এই মাহফুজ কেমন করে হলো এসব..? জানো তোমার জন্য আমার কতো চিন্তা হচ্ছিলো..? কতো বার যে তোমাকে ফোন করেছি,বাট তোমার কোনো খবর পাই নাই, তারপর অনেক কষ্টে তোমার খোজ পেয়ে চলে আসলাম,

মাহফুজ, এই তানহা আমার কিছুই হয় নাই, আমি এখন একদম ঠিক আছি, আর তুমি এতো উতলা হয়ো না, শরীর খারাপ করবে তো..!

তানহা, আমার শরীর নিয়ে তোমাকে ওতো চিন্তা করতে হবে না, নিজের পেটে গুলি লাগছে, সেটা নিয়ে কোনো চিন্তা নাই,এটা বলে কেদে দেয়,

মাহফুজ, আরে পাগলি তুমি কাদছো কেন..? কাদার মতো কিছু হয়েছে নাকি,আর ডক্টর তো বলেই দিয়েছে, যে আমি সম্পূর্ণ বিপদ মুক্ত,

তানহা, তুমি আর কি বুঝবে, আমার কোনো প্রিয় মানুষের কিছু হলে খুব কষ্ট হয় আমার, আর তুমি তো এখন আমার খুব ভালো একটা বন্ধু, আচ্ছা ডক্টর আপনারা ওর সমস্ত রকমের ট্রিটমেন্ট করুন, কোনো কমতি যেনো না থাকে, যতো টাকা লাগে আমি দিবো,

ডক্টর, নার্স রোগীকে একটা ঘুমের ঔষুধ দিন, এখন ওনার ঘুমের প্রয়োজন,

নার্স এসে মাহফুজকে একটা ঘুমের ঔষুদ দেয়, ঔষুধ খেয়ে মাহফুজ ঘুমিয়ে পরে,একটানা দুপুর পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকে মাহফুজ, পরে দুপুরে ঘুম ভেঙে যায়,

মাহফুজ, আস্তে করে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখি আমার পাশেই তানহা বসে আছে, আমার হাতের উপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে পরেছে, কিছু চুল ওর মুকের উপর এসে পরেছে, সব মিলিয়ে ওকে খুব মায়াবী লাগছে, ইচ্ছে করছে ওর কপালে ভালোবাসার একটা পরশ একে দিই, কিন্তু সেই দিক দিয়ে আমি বাধা গ্রস্থ, কারন দুজনের মধ্যে ভালো বন্ধুত্বের বেশি কিছু নাই, এসব ভাবতে গিয়ে হাতটা হালকা টান লাগে, আর তখনই তানহার ঘুমটা ভেঙে যায়,

তানহা, ওহহহ মাহফুজ তুমি উঠে পরছো..? এখানে বসে থাকতে থাকতে চোখটা যে কখন লেগে গিয়েছিলো, বুঝতে পারি নাই, তোমার তো এখন দুপুরের খাবার সময় হয়ে গিয়েছে,রাজকে খাবার আনতে পাঠিয়েছি, এখনি চলে আসবে,

মাহফুজ, দুজনে কথা বলতে বলতে রাজ খাবার নিয়ে চলে আসলো, আমার ফেবারিট খাবার বিরিয়ানি নিয়ে আসছে, রাজ খাবারটা তানহার হাতে দিলো, তারপর তানহা খাবারগুলো একটা প্লেটে নিয়ে নিলো, তারপর আমার হাতে দিলো,

তানহা, নাও এবার খাবারগুলো খেয়ে নাও,তোমার ঔষুধ খেতে হবে,

মাহফুজ, খাবার খাওয়ার জন্য উঠতে গিয়েই পেটে ব্যাথা লাগলো,ব্যাথায় কুকরে উঠলাম,

তানহা, এই এই তোমার আবার কি হলো, ইসসস আমার তো মনেই নাই যে তোমার পেটে গুলি লাগছে,তুমি উঠে খেতে পারবে না,সত্যিই বিষয়টা ভুলে গেছিলাম, আসো আমি খাইয়ে দিচ্ছি,

মাহফুজ, তানহার কথা শুনে পুরো অবাক বনে গেলাম,মেয়েটা বলছে কি,ও নাকি আমাকে খাইয়ে দিবে,মাথাটা পুরো খারাপ হয়ে গেলো নাকি..?

তানহা, এতো কিছু ভাবচো কেন তুমি..? আমার মাথা একটুও খারাপ হয় নাই, তুমি অসুস্ত বলে তোমাকে খাইয়ে দিচ্ছি, এখন চুপচাপ করে খাবারগুলো খেয়ে নাও তো,

মাহফুজ, ওরেব্বাস রে...! তানহার কি কোনো অলৌকিক শক্তি আছে নাকি, আমার মনের কথা কেমন করে জেনে গেলো..?🙄
চুপচাপ হয়ে ভদ্র ছেলের মতো খেয়ে নিলাম,তানহাও আমাকে অনেক যত্ন করে খাইয়ে দিলো, আহহহ এমন একটা বউ থাকলেও তো আরামে জীবনটা পার করে দেওয়া যেতো😇
খাবারটা শেষ করে ঔষুধ খেয়ে নিলাম,তারপর রাজ আর তানহার সাথে গল্প করতে লাগলাম,সন্ধ্যার দিকে রাজকে বললাম যেনো বাড়ি ফেরার পথে তানহাকে নামিয়ে দিয়ে যায়,

তানহা, না মাহফুজ, আমি তোমাকে ছাড়া এক পাও নড়ছি না, রাজ বাসায় চলে যাক, আমি এখানেই তোমার কাছে থাকবো, একেবারে তুমি সুস্থ হলে তারপর বাসায় যাবো,

মাহফুজ, আরে তানহা তোমার বাবা মা তো তোমার জন্য চিন্তা করবে,তাছাড়া তুমিই বা আমার জন্য এতো করছো কেন..? আর তুমিই বা কোথায় থাকবে,

তানহা, কে বলেছে আমার বাবা মা চিন্তা করবে.? তাদেরকে আমি বলে দিয়েছি,যে আমি এখানে থাকবো, আর বাবাও হ্যা বলে দিয়েছে,তাই রাজ চলে যাক, আর তুমি এখন আমার সবথেকে কাছের বন্ধু, তাই তোমাকে ছাড়া যাবো না, তোমাকে আমার থাকার জায়গার জন্য চিন্তাও করা লাগবে না,

মাহফুজ, জানি আর কিছু বলে কাজ হবে না,তাই রাজকে বাসায় চলে যেতে বললাম, আর তানহা আমার সাথেই থাকলো, এভাবে পুরো ৩ দিন কেটে গেলো, এই কয়দিনে তানহা আমার সাথে ছায়ার মতো লেগে ছিলো,ওর প্রতি অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েছি আমি, হয়তো ভালোবেসেই ফেলেছি ওকে......

চলবে......
ভুলত্রুটি গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।







#আর্মি_ছেলের_প্রেমে_অহংকারী_মেয়ে
#লেখক_মাহফুজ_মাহমুদ
#পর্ব_৪

তানহা, কে বলেছে আমার বাবা মা চিন্তা করবে.? তাদেরকে আমি বলে দিয়েছি,যে আমি এখানে থাকবো, আর বাবাও হ্যা বলে দিয়েছে,তাই রাজ চলে যাক, আর তুমি এখন আমার সবথেকে কাছের বন্ধু, তাই তোমাকে ছাড়া যাবো না, তোমাকে আমার থাকার জায়গার জন্য চিন্তাও করা লাগবে না,

মাহফুজ, জানি আর কিছু বলে কাজ হবে না,তাই রাজকে বাসায় চলে যেতে বললাম, আর তানহা আমার সাথেই থাকলো, এভাবে পুরো ৩ দিন কেটে গেলো, এই কয়দিনে তানহা আমার সাথে ছায়ার মতো লেগে ছিলো,ওর প্রতি অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েছি আমি, হয়তো ভালোবেসেই ফেলেছি ওকে,কিন্তু ওকে কথাটা বললে কষ্ট পাবে অনেক,তাই বলতে পারবো না,এভাবে আরো দুই দিন হসপিটালে থাকতে হলো,তারপর সকালের দিকে আমাকে রিলিজ করা হলো,

মাহফুজ, আচ্ছা রাজ আর তানহা তোমারা বাসায় চলে যাও, আমি এখন ঠিক হয়ে গেছি, একাই চলে যেতে পারবো,

তানহা, মাহফুজ তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে নাকি..? তুমি এখোনো সুস্থ হও নাই, তোমাকে একা কিভাবে ছেড়ে দেই..!

রাজ, হা তানহা তো ঠিকই বলছে, তুই এখোনো সুস্থ হোস নাই, এখন তুই আমার সাথে আমার বাসায় গিয়ে থাকবি,

মাহফুজ, মনে মনে আরে এরা তো জানে না যে আমি একজন কমান্ডো, আর এসব কতো গুলি আমাকে হজম করতে হয়েছে সেটা আল্লাহ জানে, এই একটা গুলি আমাকে আর কিভাবে কাবু করবে, আরে তানহা এই দেখো আমি একদম সুস্থ,বলে বেড থেকে নেমে হাটাহাটি করলাম, আমাকে দেখে তো তানহা আর রাজ দুইজনই অবাক হয়ে গেছে,কি এবার তোমাদের বিশ্বাস হয়েছে তো..?

রাজ, এই আমি বিশ্বাস করতে পারছি না, এইটা কি করে সম্ভব,গুলি খাওয়ার তিন চার পরেও কেউ এভাবে হাটতে পারে..?

তানহা, একভাবে মাহফুজের দিকে তাকিয়ে আছে,

মাহফুজ, তানহা এভাবে হা করে তাকিয়ে কি দেখছো, দেখতে হবে না যে আমি কাদের বন্ধু, তোমরা সাথে থাকলে আমাদের কিছুই হবে না, আচ্ছা চলো এখন বাসায় যাওয়া যাক,
হসপিটাল থেকে বের হয়ে সোজা বাসায় চলে গেলাম, হঠাৎ রিশার কথা মনে পরে গেলো, ওকে তো এতোক্ষনে নিশ্চয় ছেড়ে দিয়েছে, কারন ভুল করে আমার জায়গায় ওকে ধরে নিয়ে গেছে, সো ওর কাছে সিআইডির ব্যাজ আছে,সেটা দেখে তো এতোক্ষনে ছেড়ে দেওয়ার কথা, কারন রিশাকে নিয়ে ওদের কোনো কাজ নাই, বাড়িতে এসে বিছানায় শুয়ে পরলাম, কালকে তেকে আবার কলেজে যাওয়া শুরু করতে হবে,হঠাৎ পকেটে থাকা ফোনটা বেজে উঠলো, তানহা ফোন করেছে, হা তানহা বলো কি বলবে..?

তানহা, এই তুমি কি বাসায় পৌছে গেছো..? 

মাহফুজ, হা আমি একটু আগেই বাসায় আসছি, তোমার কোনো চিন্তা করতে হবে না আমাকে নিয়ে, তুমি নিশ্চিন্তে থাকতে পারো,

তানহা, নিশ্চিন্তে কিভাবে থাকবো বলো..?  তোমার জন্যতো অনেক চিন্তা হচ্ছে আমার, তুমি সুস্থ আছো,তবুও তোমার অসুস্থতার জন্য চিন্তা হচ্ছে, যদি আবার অসু্স্থ হয়ে পরো..?

মাহফুজ, আরে নাহহহ আমার কিছুই হবে,তুমি কোনো চিন্তা করো না, আচ্ছা এখন রাখি, আমি বিশ্রাম নিবো,

তানহা, আচ্ছা ঠিক আছে, কিন্তু তুমি কি কাল কলেজে আসতে পারবে..?

মাহফুজ, হা কলেজে আসতে পারবো,কোনো সমস্যা হবে না, তারপর ফোনটা কেটে দিয়ে বিছানায় শরীরটা এলিয়ে দিলাম,

অন্যদিকে সিআইডি টিমের মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে, রিশার কোনো খোজ পাওয়া যাচ্ছে না, সিআইডি অফিসার রা তাদের অফিসে আসতেই দেখলো এসিপি স্যার বসে আছে,

এসিপি, কি ব্যাপার তোমরা কি রিশার কোনো খোজ পেয়েছো..?

রাহাত, নো স্যার এখোনো খোজ পাওয়া যায় নাই, যে ছেলেটাকে আমরা জঙ্গল থেকে পেয়েছি, সেখানে রিশার ব্যাগ আর মোবাইলটা পাওয়া গেছে, কিন্তু রিশাকে নয়,

এসিপি, ওই ছেলেটাকে কিছু জিজ্ঞাসা করো নাই..? কিছু জানতে পারলে ওর কাছে থেকে..?

রাহাত, নো স্যার ছেলেটা বলছে, ওর সেই দিনের কথা কিছুই মনে নাই, বাট বাকি সবকিছু মনে আছে, শুধু সেই দিনকার ঘটনাটা মনে করতে পারছে না, আর ওর কাছে রিশার ছবিটাও দেখিয়েছি, বললো যে এই প্রথম নাকি রিশাকে দেখলো,

এসিপি, হা রাহাত..! এর মধ্যে বড় কোনো রহস্য লুকিয়ে আছে, শুধু মাত্র সেই দিনের কথা মনে নাঔ,এটা কিভাবে হতে পারে, আচ্ছা বাদ দাও এটা, এখন তোমরা খোজ করো যে রিশার মোবাইল লোকেশন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কোথায় কোথায় ছিলো, তাহলেই আমরা কিছু জানতে পারবো,

রাহাত, রাইট স্যার, এক্ষুনি খোজ নিচ্ছি,বলে সবাই বেড়িয়ে পরে,

এদিকে মাহফুজ রাতের বেলা ছাদে উঠে ব্যায়াম করা শুরু করে,এই ৭ দিন পর আজকে আবার ব্যায়াম করা শুরু করলো, প্রত্যেকদিন মাহফুজ দিনের প্রায় অধিকাংশ সময় ব্যায়াম করেই কাটিয়ে দেয়, কারন একজন কমান্ডোর বডি ফিট রাখার জন্য প্রচুর পরিমানে ব্যায়াম করতে হয়,প্রায় ৩০ মিনিট ধরে ব্যায়াম করার পর হঠাৎ ফোনটা কান্না করা শুরু করে দিলো,

মাহফুজ, ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে তার আম্মু ফোন করেছে, তারপর রিসিভ করে কানে নেয়, আর তখনই ওপাশ থেকে ঝড় উঠে যায়,মাহফুজ বুঝে নেয় যে এটা তার ছোট বোন জারা,

জারা, কুত্তা, বাদর, হনুমান, পচা টমেটো, পচা আলু, হাতি শিয়াল তোকে তো আমি মেরেই ফেলবো হারামজাদা,

মাহফুজ, এই মেরেছে, পেতনিটা তো দেখি সেই ভাবে ক্ষেপে আছে, সাবধানে কথা বলতে হবে, নাহলে কপালে আজ কি যে আছে, কিরে কি হইছে এতো চিল্লাস কেন..?

জারা, ওই হারামি তুই জীবনেও ভালো হবি না, না..! প্রত্যেক সময় কোনো না কোনো কাজে বাড়ি থেকে কোথায় চলে যাস, আর ফিরে আসার নাম গন্ধ নাই, আমার বাসায় সারাদিন একা একা ভাকো লাগে না,

মাহফুজ, এই পেতনি এতো রাগিস কেন, তুই তো জানিস ই যে আমার কাজ হলো দেশ রক্ষা করা, যখন তখন বেড়িয়ে পরতে হয়, আর কয়েকদিনের মধ্যেই বাড়িতে ফিরে যাবো, একটু একা থাক এই কয়দিন,

জারা,তুই এবার বাড়িতে ফিরে আয়, বাবার সাথে কথা বলে তোর বিয়ে ঠিক করতেছি, তারপর বিয়ে করে যেখানে খুশি সেখানে চলে যাবি,আমার কোনো সমস্যা থাকবে না,

মাহফুজ, আচ্ছা একটা জিনিস বুঝলাম না, বিয়ে করবো আমি, কিন্তু এতে তোর লাভ টা কোথায় হবে..? আর বিয়ের পর যেখানে খুশি সেখানে যাবো মানে, তাহলে তো তুই আবার বাড়িতে একা একা পেতনিদের মতো কান্না করবি,

জারা, এহহহ সেটা মোটেও না হাদারাম, তুই বিয়ে করলে পারে আমি একটা মিষ্টি ভাবি পাবো, আমার তখন গল্প করার মানুষও হয়ে যাবে,তখন আর তোকে লাগবে না, তের যেখানে ইচ্ছা হয় চলে যাবি,

মাহফুজ, ওরে ফাজিল, তাহলে তোর আসল মতলব এইটা..? আমার ঘাড়ে বিয়ে নামক একটা বোঝা চাপিয়ে দিয়ে তু মজা করবি..? তোর মতলব তাহলে এইটা ছিলো, দাড়া শুধু একবার বাসায় আসতে দে, তোর বিয়ের ব্যবস্থা আগে করতেছি, আচ্ছা এসব বাদ, কেমন আছিস তাই বল,

জারা, ভাইয়া তোকে ছাড়া খুব একা ফিল করি আমি, বাসায় আম্মু আমাকে সময় দেয়, কিন্তু সবসময় তো সংসারের কাজে ব্যাস্ত থাকে, আর আব্বু তো সারাদিন অফিসে থাকে,আমি বাসার ভিতরে খুব বোরিং ফিল করি, তুই থাকলে কতো মজা করি দুজন মিলে, কিন্তু এমন একটা কাজ করিস, যেখানে আমাদেরকে সময়ই দিতে পারিস না, ভাইয়ারে তোকে আমি খুব মিস করতেছি, তুই তাড়াতাড়ি চলে আয়,

মাহফুজ, এই জারা এতো মন খারাপ করিস না, আমি খুব তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসবো, আচ্ছা বাবা মা সবাই ভালো আছে তো..?

জারা, হা সবাই ভালো আছে,

মাহফুজ, আচ্ছা এখন রাখি, আবার পরে কথা হবে, আমার অনেক কাজ করতে হবে, তারপর ফোনটা কেটে দিয়ে আবার ব্যায়াম করা শুরু করে দিলো, ব্যায়াম করা শেষ করে নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে নেয়, তারপর রুমে আসতেই দরজায় কেউ নক করে, মাহফুজ গিয়ে দরজাটা খুলে দেয়, দেখে পাশের বাসার আন্টি আসছে,তার জন্য কিছু খাবার নিয়ে,এই আন্টিই আমাকে বাসাটা পাইয়ে দিতে সাহায্য করেছিলো,

আন্টি, এ যে মাহফুজ বাবা দেখো তোমার জন্য রাতের খাবার নিয়ে চলে আসলাম, আমিনজানি তুমি এখোনে কিছু রান্না করো নাই, তাই খাবারগুলো নিয়ে চলে আসলাম,

মাহফুজ, আরে আন্টি এসবের আবার কি দরকার ছিলো, আমি তো রান্না করতাম,

আন্টি, মাহফুজ বাবা তোমাকে তো আগেই বলেছি যে আমার কোনো ছেলে নাই, তুমি আমার ছেলের মতো, তাই মা হিসাবে তোমাকে আমি খাবারগুলো দিলাম, তুমি না খেলে কিন্তু আমি মনে খুব কষ্ট পাবো,

মাহফুজ, আন্টির এরকম কথার পর আর না করতে পারলাম না, তাই খাবার গুলো নিয়ে খেয়ে নিলাম, তারপর বিছানা ঠিক করে ঘুমের রাজ্যে চলে গেলাম,
পরেরদিন সকাল বেলা ফোনের আওয়াজে ঘুমটা ভেঙে গেলো, ঘগম ঘুম চোখে ফোনটা রিসিভ করলাম, হ্যালো কে বলছেন..?

ওপাশ থেকে, এই তুমি এখোনো ঘুমিয়ে রয়েছো..? জানো তুমি যে কখন সকাল হয়ে গেছে, আর একটু পর কলেজ শুরু হয়ে যাবে, তুমি এখোনে ঘুমিয়েই আছো,

মাহফুজ, কন্ঠটা চিনে গেলাম, তানহা ফোন করছে, ওহহ সরি তুমি কলেজে রওনা দাও, আমি আসছি, তানহা এখন আমার খুব কেয়ার করে, কখন কি করি, শরীর কেমন আছে, খাওয়া দাওয়া করছি কিনা, আরো অনেক কিছুর খবর রাখে, তানহার জন্য মনের মধ্যে একটা জায়গা তৈরি হয়ে গেছে নিজের অজান্তেই, জানি না এইটাকেই মনে হয় ভালোবাসা বলে, কতোক্ষন নিজেকে চেপে রাখতে পারবো জানি না, কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি আমার মনের কথাটা ওকে জানাবো,
তারপর ফ্রেস হয়ে নিয়ে ডিম ভাজি আর ভাত করে নিলাম, এটাই আমার সকালের প্রিয় একটা খাবার, তারপর খাওয়া শেষ করে কলেজে চলে গেলাম,

তানহা আগে থেকেই কলেজে এসে বসে আছে,মাহফুজ আস্তে করে গিয়ে তানহার পাশে বসে,

তানহা, তোমার আসতে এতো সময় লাগে..? সেই কখন আসচি আমি কলেজে, আর তুমি এখন আসলে,

মাহফুজ, সরি আমার একটু দেরি হয়ে গেছে, আসলে আজকেমযে কি হইছিলো..! ঘুম থেকে উঠছি দেরিতে,তাও তোমার ফোন পাওয়ার পর ঘুম ভাংছে, নাহলে তো আজ কলেজেই আসতে পারতাম না, আচ্ছা রাজকে তো দেখতে পাচ্ছি না, রাজ কি এখেনো আসে নাই, নাকি..?

তানহা, যাক রাজ বেচারা অনেকদিন বাচবে, তুমি বলার সাথে সাথেই হাজির,

মাহফুজ, তানহার কথা শুনে পিছনে তাকালাম, দেখি রাজ কলেজ গেট দিয়ে ঢুকতেছে,একটু পর রাজ আমাদের সাথে এসে আড্ডায় বসলো, এই যে নবাব, আপনি তো এসেই বসে পরলেন, এদিকে ক্লাসের সময় হয়ে গেছে, সেটা কি মাথায় আছে..?

রাজ, মাহফুজের কতা শুনে ঘড়ির দিকে তাকায়, ওহহহ সরি দোস্ত, আমি ঘড়ির দিকে খেয়ালই করি নাই,

মাহফুজ, ওইতে মানুষ যখন প্রেমে পড়ে তখন আরো কতো কি ভুলে যায়..!😁

তানহা, তার মানে রাজ প্রেমে পরেছে, তো আমাদের মিস্টিমুখ করাবে না তুমি..?

রাজ, ধুরররর রাখোতো তোমার মিষ্টিমুখ, এই মাহফুজ শুধু ফাজলামো করে, আন্দাজে একটা কথা বলে দিলো, আর আমাকে পেয়ে বসলো, আমি ওসব প্রেমে পরিনি, এবার চল তো ক্লাসে যায়..?

মাহফুজ, তানহার দিকে তাকিয়ে হেসে দিলাম, তানহাও আমার চালাকি বুঝতে পেরে হেসে দিলো, তারপর সবাই মিলে ক্লাসে চলে গেলাম,দুইটা ক্লাস করে তিনজন মিলে বাইরে চলে আসলাম,

তানহা, মাহফুজ এখন আমরা তিনজন একটা জায়গায় ঘুরতে যাবো,

মাহফুজ, এই কি বলছো,এখন যেতে পারবো না, অন্যদিন যাবো,

তানহা, আমি কোনো কথা শুনতে চাই না, রাজ তুমিও চলো, আমরা সবাই মিলে এখনই ঘুরতে যাবো,

রাজ, আরে আমি তো এক পায়ে রাজি, শুধু বলো কোথায় যেতে হবে,

তানহা, এটা তোমাদের জন্য সারপ্রাইজ, তুমি যদি মাহফুজকে নিতে পারো, তাহলে আমি তোমাকেও নিয়ে যাবো,

রাজ, এটা আর এমন কি বিষয়, ওকে আমি নিয়ে যাচ্ছি, আর তুমি আমাকে নিয়ে যাও, হি হি হি

তারপর রাজ মাহফুজকে জোড় করে ধরে ন্সাথে নিয়ে গেলো, তিনজন মিলে কলেজ থেকে বের হয়ে গেলো, তানহা দুইটা রিক্সা ডাকলো, তারপর মাহফুজকে নিয়ে একটাতে উঠে পরলো, আর রাজ আরেকটা রিক্সায়,

মাহফুজ, রিক্সায় তানহা আমাকে জোড় করে উঠালো, আমার এখন কোথাও যেতে ভালো লাগছে না, এই তানহা আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো, আমি এখন কোথাও যাবো না তো, আরে বলো না কোথায় নিয়ে যাচ্ছো,

তানহা, এই একদম চুপ করে তাকবা, এতো কথা বলো কেন তুমি..? যেখানেই নিয়ে যায় তাতে তোমার কি, তুমি চুপ করে রিকশায় বসে থাকো, আর একটা কথা বললে খুব খারাপ হয়ে যাবে কিন্তু,

মাহফুজ, ওরে বাপরে এটা মেয়ে নাকি শাকচুন্নি, এমন করে কেউ বলে নাকি..? একটু ভালোবেসে বললেও তো হতো,এতো রাগ করার কি আছে😒
ভদ্র ছেলের মতো চুপচাপ বসে থাকলাম, নাহলে কখন কি করে বসে তার হিসাব নাই, একটু পর শহরের সবথেকে বড় শপিংমলের সামনে তানহা রিকসা দাড় করালো,

তানহা, প্রথমে নিজে নেমে গেলো রিকশা থেকে, এই মাহফুজ এবার তুমি নামো, বসেই তাকবা নাকি..?

মাহফুজ, আরে নামছি তো, এতো রাগ করছো কেনো..? তারপর রিকশা থেকপ নেমে গেলাম, রাজও আমাদের পিছনে চলে আসলো, 

তানহা, ভাড়া মিটিয়ে মাহফুজকে নিয়ে শপিংমলের ভিতরে চলে গেলো, তারপর একটা দোকানে  ঢুকলো, আচ্ছা মামা এই চেলেটার জন্য সবচেয়ে ভালো ব্রান্ডের জিন্স দেখান তো..? মাহফুজের দিকে ইশারা করলো,

মাহফুজ, তানহার কতা শুনে আমিতো পুরাই অবাক, কারন আমার জন্য কাপড় কিনছে...!

চলবে.......
ভুলত্রুটি গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post