পর্ব : ১
লেখক : নিরব আহমেদ কাওছার
..
রিকশা নিয়ে বের হচ্ছিলাম বস্তি থেকে ঠিক তখনি ছোট্ট বোনটা দৌড়ে পিছন থেকে এসে জরিয়ে দরলো আর বললো
> ভাইয়া আমিও তোমার সাথে যাবো রিকশা চালাবো আমায় নিয়ে চলো তোমার সাথে ( লিমা বললো৷)
তখন আমি বোনটাকে আমার সামনে নিয়ে আসলাম আর হাঁটু গেড়ে বসে বললাম
> আমার
পাগলি পিচ্চি বোন আবার পাগলামি শুরু করে দিছে ( আমি বললাম )
> হুম কি করবো বলো তুমি না থাকলে আমার ভাল লাগে না এখন তো আমি সুস্থ আমায় নিয়ে চলো তোমার সাথে তুমি কিছুখন চালাবে তারপর আমি কিছুখন চালাবো তাহলে আর তোমার কষ্ট হবে না ( লিমা বললো৷)
বোনটার কথা শুনে মনটা কেদে উঠলো । ছোট্ট বোন যাকে কি না আমায় এখন খাবারটা খাইয়ে দিতে হয় আর আমার কষ্ট কমানোর জন্য সে নিজে রিকশা চালাতে চাইছে । বোনটার কপালে একটা চুমু দিয়ে বললাম।।
> নারে পাগলি বোন আমার একটুও কষ্ট হয় না।
দিন শেষে তর এই মুখের ☺ হাসিটাই যথেষ্ট।
আমার সব কষ্ট দূর হয়ে যায় তুই গিয়ে ওই সামনের বাসায় আসিফা মিম দের সাথে খেলতে থাক আমি দুপুর বেলা তর জন্য চকলেট নিয়ে আসবো । তর রিকশা চালাতে হবে না ( আমি বললাম )
> নাহ আমি খেলবো না ওদের সাথে আজ আমি তোমার সাথে রিকশা চালাবো ( লিমা বললো)
> পাগলামি করিস না বোন তুই ওদের সাথে গিয়ে খেল তর রিকশা চালাতে হবে না ( আমি বললাম)
> তাহলে আমায় নিয়ে যাবে না তোমার সাথে ( মন খারাপ করে বললো লিমা)
বোনটা মন খারাপ করে থাকলে একদম ভালো লাগে না । পাগলি বোনটা মন খারাপ করে দাড়িয়ে আছে দেখে তখন আমি বললাম ।।
> আচ্ছা চল তকে রিকশায় নিয়ে এই বস্তিতে ঘুরি ( আমি বললাম )
এটা শুনে বোনটা খুব খুশি ☺ হলো আর দৌড়ে গিয়ে রিকশায় উঠে বসলো চালানোর জন্য আর বললো ।
> ভাইয়া তুমি পিছনে বসো আমি চালাচ্ছি ( লিমা বললো৷)
> এই শক্তি নিয়ে রিকশা চালাতে আসলে রিকশা বকা দিবে তকে। থাক তুই পিছনে বস আমি চালাচ্ছি ( আমি বললাম )
> নাহ আমি চালাবো তুমি বসো আমর শক্তি তোমার চেয়ে বেসি বসো তুমি আমি চালাচ্ছি ( লিমা বললো)
> তাই নাকি এত শক্তি ( আমি বললাম)
> হুম তুমি বসো ( লিমা বললো)
আমি জানি রিকশা একটু ও নড়াতে পারবে না দেখি বসে কি করে আমি পিছনে বসার পর নেমে রিকশা টানছে কিন্তু নড়াতে পারছে না তখন বললো।
> ভাইয়া রিকশা অনেক বড় হয়ে গেছে আমার থেকে একটু ছোট করে দাও আর অনেক ওজন নড়াতে পারছি না একটু হালকা করে দাও ( লিমা বললো )
এটা শুনে আমি ফিক করে হেসে দিলাম আর তখন আমি নেমে বোনটিকে কুলে নিয়ে বললাম।
> তর এই ভাই থাকতে তর কষ্ট করতে হবে না তুই বসে থাক আমি চালাচ্ছি ( আমি বললাম)
> আচ্ছা ঠিক আছে ভাইয়া আমি তাহলে আর একটু বড় হয়ে নেই তারপর আমি রিকশা চালাবো তুমি বসে থাকবে ( লিমা বললো৷)
> আচ্ছা আগে তুই বড় হয়ে নে তারপর দেখা যাবে ( আমি বললাম )
তারপর বোনটাকে নিয়ে কিছুখন ঘুরাঘুরি করার পর নামিয়ে দিয়ে আসলাম আসিফা মিম দের কাছে সেখানে গিয়ে বোনটা খেলতে লাগলো তারপর আমি চলে আসলাম রিকশা নিয়ে রুটে এখন ছোট্ট করে পরিচয় দিয়ে ফেলি।
।।
আমার নাম নিরব আহমেদ । এই পৃথিবীতে কেউ আছে কি না আমার তা যানি না শুধু এতটুকু যানি এক পাগলি আমায় রাস্তায় পেয়েছে তারপর পাগলি নাকি এই বস্তিতে নিয়ে আসছে এখানেই থাকতো পাগলি তারপর একদিন পাগলিটা নাকি হঠাত কোথায় চলে যায় আমায় রেখে । তখন রহিম চাচা আমায় তার কাছে রাখে রহিম চাচা এই বস্তিতে থাকে ।।
।।
আর পাগলিটাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি চাচা খুঁজেছিলো অনেক না পেয়ে তখন থেকেই আমায় রহিম চাচার কাছে রেখেছিলো রহিম চাচা এই বস্তিতে থাকে খুব ভালবাসতো আমায় কিন্তু আল্লাহ তাকেও আমার কাছে বেসি দিন রাখে নি ছয় বছর পর মৃত্যু হয়েছে তারপর থেকে একাই ছিলাম।।
।।
মাজে মাজে খুব কষ্ট লাগতো সবার বাবা মা আছে আর আমার কে আছে তা যানি না প্রতিটি ঈদের দিন কান্না করতাম সবাই ঈদের দিন গিয়ে আব্বু আম্মুর সাথে বসে খাবার খায় আর আমি কান্না করতাম বাসায় যেতেও কষ্ট লাগতো কারণ বাসাটা ফাকা মাজে মাজে নিজেকে শেষ করে দিতে চাইতাম কিন্তু কেন যানি পারিনি তখন থেকে রিকশা চালিয়ে নিজের জিবন চালাতাম সাথে লেখা পড়া করতাম একদিন রাতে রিকশা নিয়ে বাসায় আসার সময় জঙ্গলে একটা বাচ্চা শিশুর কান্নার শব্দ পাই তারপর সাহস করে গিয়ে দেখি একটা মেয়ে তারপর সেখান থেকে নিয়ে এসেছিলাম বাসায় আল্লাহ মনে হয় কষ্ট গুলো কে একটু কমানোর জন্য আমার কাছে পাঠিয়েছে সকালে দেখার পর বস্তির অনেক মানুষ বলছে তাদের এই মেয়েটাকে দিয়ে দিতে কিন্তু আমি দেই নি আমার বোন বলে দিয়েছি আর নাম দিয়েছিলাম লিমা। বোনটা একটুও কাদেনি ছোট বেলা আমার কোলে সব সময় থাকতো অনেক কষ্টে দিন কাটছিলো লিমাকে নিয়ে যেখানে যা পেয়েছি খেয়েছি তবুও বোনটাকে নিজের থেকে আলাদা করেনি যখন ও একটু বড় হলো তখন আবার রিকশা চালাতে লাগলাম।
।।
এখন আমি সবে মাএ ইন্টারে উঠলাম এখানো ভর্তি হয়নি। কলেজ খুলেনি বলে। আর বোনটা ইস্কুলে যেতে চায় না অনেক কষ্টে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করেছি বোনটা অনেক অসুস্থ হয়ে ছিলো এখন সুস্থ হয়েছে আর আজ আসার সময় কি বললো তা আপনার তো শুনলেন।।
তারপর রাস্তায় আসার পর দেখি আরমান চাচা রিকশা নিয়ে রাস্তার সাইটে বসে আছে মন খারাপ করে তখন আমি তার কাছে গিয়ে বললাম।
> কি হয়েছে চাচা তোমার মন খারাপ করে বসে আছো কেন এখানে কিছু হয়েছে ( আমি বললাম)
তখন চাচা আমায় বললো।
> নাহ কিছু হয়নি তুই চলে যাহ ( চাচা নিচের দিকে তাকিয়ে বললো)
> চাচা তুমি আমার থেকে লুকাতে চাইছো কি হয়েছে বলো চাচা ( আমি বললাম)
> তর চাচি কিছুদিন দরে বলছে একটা শাড়ি কিনে দিতে আগের শাড়ি ছিড়ে গেছে তাই কিন্তু আমি কি করে কিনে দিবো বল যা রিকশা চালিয়ে পাই তা দিয়ে সংসার চলে দিন শেষে বাসায় যাওয়ার পর ৫০ টাকা অথবা ২০ টাকা থাকে আমি নিজে কিছু খাইনা কারন সকালে আবার ছেলেটাকে টাকা দিতে হয় বাসা থেকে শূন্য পকেটে বের হই এখন কি করে শাড়ি কিনে দেই বল আসার সময় ঝগড়া করছে এই নিয়ে তর চাচি আর বলেছে আজ একটা শাড়ি নিয়ে তারপর বাসায় যেতে ( চাচা কান্না করে বললো)
>............
আজ এতটুকু থাক
বানান গুলো ভুল হলে ক্ষমা করে দিবেন।
গল্পটা কেমন হয়েছে তা অবশ্যই কমেন্ট করে বলে দিন।
আপনাদের সারা পেলে এই গল্পটার পরের পর্ব লিখবো
চলবে লিখবো।