গল্প : রিকশা চালক ছেলেটি যখন কোটি পতির ছেলে পর্ব : ২


গল্প : রিকশা চালক ছেলেটি যখন কোটি পতির ছেলে 
পর্ব : ২
লেখক : নিরব আহমেদ কাওছার 
..

> চাচা তুমি আমার থেকে লুকাতে চাইছো কি হয়েছে বলো চাচা ( আমি বললাম) 

> তর চাচি কিছুদিন দরে বলছে একটা শাড়ি কিনে দিতে । আগের শাড়ি ছিড়ে গেছে তাই। কিন্তু আমি কি করে কিনে দিবো বল ।  যা রিকশা চালিয়ে পাই তা দিয়ে সংসার চলে । দিন শেষে বাসায় যাওয়ার পর ৫০ টাকা অথবা ২০ টাকা থাকে ।  আমি নিজে কিছু খাইনা কারন সকালে  আবার ছেলেটাকে টাকা দিতে হয়  বাসা থেকে  শূন্য পকেটে বের হই এখন কি করে শাড়ি কিনে দেই বল আসার সময় ঝগড়া করছে এই নিয়ে তর চাচি আর বলেছে আজ একটা শাড়ি নিয়ে তারপর বাসায় যেতে ( চাচা কান্না করে বললো)  

> কান্না  করো না চাচা শান্ত হও তুমি  ( আমি বললাম) 

> জানিস মাঝে মাঝে সকালে বাসা থেকে না খেয়ে   তারপর রিকশা নিয়ে বের হয়ে যায় কারন খাবার থাকে না ঘরে তবুও কষ্ট করে রিকশা চালাই না খেয়ে । খুব কষ্ট হয় তবুও ওদের কথা ভেবে চালাই। ( চাচা কান্না করে বললো।) 

> ...............( আমি চুপ করে শুনছিলাম কি বলবো আমি বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না  ) 

তখন চাচা আবার বললো। 

 > আমার ছেলেটা আজ দশ পনেরো দিন দরে বলছে গরুর  মাংস দিয়ে ভাত খাবে মাংস নিয়ে আসতে  কিন্তু আমি পারিনি এখনো কিনে খাওয়াতে  ( চাচা কান্না করে বললো)  

তখন আমি বললাম। 

> চাচা মন খারাপ করো না কষ্ট হলেও কিছু কারার নেই।  গরিব মানুষের ভাগ্যটাই এমন সব কিছু কপালে জুটে না ।। ( আমি বললাম ) 

> এত কষ্ট করে বেচে থাকতে ইচ্ছে করে না যানিস ( চাচা বললো)  

  > চাচা এমন কথা বলছো কেন।  ( আমি বললাম) 

> কি বলবো বল ছেলেটা প্রতিদিন একটা না একটা কিছু  বলে কিনে নিয়ে যেতে কিন্তু আমি পারি না  নিয়ে যেতে আর রোজ মিথ্যা কথা বলি পরে কিনে দিবো এটা দোকানে নাই শেষ হয়ে গেছে এটা ওটা বলে শান্ত করি  ।  তর চাচিও মাজে মাজে অনেক কিছু বলে নিয়ে যেতে কিন্তু নিয়ে যেতে পারি না ( চাচা বললো)  

>  চাচা শুনো তুমি এই রৌদ বৃষ্টির মাজে সারা দিন কার জন্য রিকশা চালাও বলো । তুমি রিকশা চালাও যাতে তোমার পরিবার এর মুখে তিন ভেলা কিছু খাবার দিতে পারো । একমাত্র গরিব মানুষেরা বুঝতে পারে তিন বেলা খাবার এর জন্য কতটা কষ্ট করতে হয় আর আমি সেটা বুঝতে পারছি আমিও তো তোমার মতো একজন।  তোমার পরিবারকে তুমি যা নিয়ে দিয়েছো খেয়েছে। মাজে মাজে ভালো কিছু খাওয়ার জন্য আবদার করবে তোমার কাছে আর তোমার সামর্থ্য যতটুকু আছে অতটুকু নিয়ে যাও দেখবে তাতেই খুব খুশি হয়ে গেছে।  তুমি সারাদিন রিকশা চালিয়ে বাসায় ফেরার সময় ভাবো কি নিয়ে যাবে আর  তোমার পরিবার তোমার  ফেরার অপেক্ষায় বসে থাকে কি নিয়ে আসবে তুমি । চাচা ভেঙে পড়ো না। এখন কষ্টে তোমার চোখের পানি ঝড়ে পড়ছে দেখবে একদিন তুমি সুখের জন্য কান্না করবে।  
( আমি বললাম)  

...............................

গরিব মানুষের স্বপ্ন অনেক আছে কিন্তু পূরণ করার সামর্থ্য নেই। 
বুকে হাজার কষ্ট আছে।  কিন্তু কেউ দেখার মতো নেই 

কষ্ট গুলো প্রকাশ করতে চায় কিন্তু করার মতো ভাষা হয়তো তার নেই। 

 মুখে হাসিটা থাকে ।  ভিতরে কষ্ট গুলো চাপা দিয়ে রাখে ।  আর সব শেষে ভালো আছি এটা বলে 

...............................

তারপর চাচা বললো। 

> হুম দোয়া করিস আল্লাহ যেনো এই কষ্টটা সারাজীবন না দেয় ( চাচা বললো )  

> হুম দোয়া করি চাচা আল্লাহ যেনো তোমায় এই কষ্টটা সারাজীবন না দেয়।  চাচা তুমি সকালে কিছু খেয়েছো। ( আমি বললাম)  

> নাহ খাইনি আর খাবো না ( চাচা বললো) 

> না খেয়ে থাকলে হবে চলো হোটেল থেকে কিছু খেয়ে আসি  ( আমি চাচাকে টানে নিয়ে যেতে যেতে বললাম)  

> নাহ এখন কিছু খাবো না শুধু শুধু জোর করিস না ( চাচা বললো) 

> আচ্ছা চলো তাহলে চা আর বিসকুট খাই ( আমি বললাম)  

এটা বলে টেনে নিয়ে গিয়ে খেয়ে আসলাম তারপর চাচা  বললো এখানে কিছু খন বসে থাকবে  রিকশা নিয়ে আমায়  চলে যাতে বললো তখন আমি বললাম। 

> চাচা আজ বিকেলে একটু দেখা করবে আমার সাথে খুব দরকার তোমাকে নিয়ে একটা যায়গায় যাবো ( আমি বললাম)  

> ঠিক আছে কয়টায় আসবো ( চাচা বললো )  

> পাঁচ টার সময় আসবে এই চায়ের দোকানে মনে থাকবে ( আমি বললাম)  

> হুম মনে থাকবে আমি পাঁচ টার আগে আসবো এখানে ( চাচা বললো) 
 
> আচ্ছা ঠিক আছে  চাচা ( আমি বললাম)  

তারপর আমি সেখান থেকে রিকশা নিয়ে চালিয়ে আসছিলাম কিছু দূরে আসার পর  তখন হঠাত রাস্তার পাশে একটা গাছের নিচে তাকিয়ে দেখি আরাফাত বসে আছে একটা কিসের পেকেট নিয়ে মনে হচ্ছে কান্না করছে ।  ওহ আপনারা তো আরাফাত কে চিনবে না ছোট করে বলছি আরাফাত রিকশা চালক কিন্তু বয়স ১৬ বছর ওর আব্বু নেই আম্মু আছে  লেখাপড়া করতে পারেনি কারন ওরা বস্তিতে থাকে  । তখন আমি কাছে গিয়ে বললাম। 

> কিরে তুই এখানে বসে আছিস কেন রিকশা চালাবি না আজ ( আমি বললাম ) 

> হুম ভাইয়া চালাবো ( আরাফাত বললো৷)  

> তাহলে এখানে বসে আছিস কেন  তর হাতে এটা কিসের পেকেট বলতো আর মনে হচ্ছে কান্না করছিস  কিছু হয়েছে বলতো  ( আমি বললাম)  

> হুম ভাইয়া হয়েছে  ( আরাফাত বললো )  

> কি হয়েছে বলতো ( আমি বললাম)  

> সেদিন আমার এক বন্ধু ফেসবুক চালাচ্ছিলো তখন সামনে একটা ফোন আসলো খুব পছন্দ হয়েছিলো আমার  দাম ২৬৫০ টাকা । বাসার যাওয়ার পর আম্মু বললো একটা ফোন লাগবে আগের Nokia ফোনটা নষ্ট হয়ে গেছে পানিতে পরে তাই ভাবলাম কমদামি এই ফোনটা  Android কিনে ফেলি । গত ছয়মাসে আমি  ২৫০০ টাকা কষ্ট করে জমিয়েছিলাম লুকিয়ে লুকিয়ে  তারপর সেটা নিয়ে ফোনটা অডার দিয়েছিলা কিন্তু আজ যখন নিয়ে আসছি তখন এটা দিয়েছে ভিতরে খুলে দেখে  তুমি ( আরাফাত বললো ) 

তখন আমি খুলে দেখি একটা নষ্ট  বাটন ফোন তখন আমি বললাম। 

> একি এটাতো নষ্ট  বাটন ফোন।  তুই ফোন করে কিছু বলিস নাই ( আমি বললাম)  

> হুম  জিজ্ঞেস করেছি তখন এটা বললো ভুল করে এসে গেছে তারপর এটা বলে ফোনটা কেটে বন্ধ করে রাখছে।  ভাইয়া অনেক কষ্টের টাকা এই এগুলো অনেক দিনে জমিয়েছিলাম সব শেষ করে দিলো আমার ( আরাফাত কান্না করতে লাগলো এটা বলে )

> তুই এই অনলাইনে ফোন অডার দিতে গেলি কেন একটা মোবাইল ফোন এর দোকান থেকে কিনে নিয়ে আসতি ( আমি বললাম )    

তারপর ওকে বুঝিয়ে শান্ত করে বাসায় পাঠিয়ে দিলাম।    
হায়রে মানুষ এত কষ্টের টাকা মেরে দিলো কত দিন এই টাকা আর খেতে পারবে ওরা।  তারপর আমি সেখান  এসে পড়লাম রিকশা চালিয়ে আসছিলাম তখন কেউ একজন ডাকলো মেয়ের গলায় তাকিয়ে দেখি একটা মেয়ে তখন যাওয়ার পর বললো । 

> এই রিকশা সামনে বড় মার্কেট এর পিছনে যাবো যাবে। ( মেয়েটি )  

> হুম ওঠেন মেডাম ( আমি বললাম)  

> ভাড়া কত ( মেয়েটি বললো )  

> আরে উঠেন যা খুশি দিয়েছেন ( আমি বললাম)  

তারপর মেয়েটা উঠে পড়লো আমি চালিয়ে নিয়ে যেতে লাগলাম কিছু খন পর মার্কেট এর পিছনে আসলাম তখন মেয়েটি নেমে বললো।  

> ফোন নাম্বার দাও তোমার ( মেয়েটি বললো) 

আমিতো কথা শুনে অবাক বলে কি তখন আমি বললাম। 
> কেন মেডাম ফোন নাম্বার দিয়ে কি করবেন ( আমি বললাম ) 

> কিছুখন দাড়াও আমি আবার যাবো তাই আর এই নাও অগ্রিম একশো টাকা দিলাম এখন দাও ( মেয়েটি)  

> আচ্ছা ঠিক আছে এই নিন 013.................এটাই  আমার ফোন নাম্বার ( আমি বললাম)  

>.............. 

বানান গুলো ভুল হলে ক্ষমা করে দিবেন। 

সরি একটু লেট হলো গল্পটা দিতে।  কারন এই আইডির লগইন করতে সমস্যা হয়েছে তাই দিতে পারি নাই। 

আজকের পর্বটা ছোট করে দেওয়া জন্য ক্ষমা করে দিবেন। পরের পর্বটা আরো বড় করে দিবো। 

গল্পটা কেমন হচ্ছে তা কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন 

অপেক্ষায় থাকুন তার পরের পর্ব জন্য।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post