পর্বঃ ৯
লেখকঃ শাওন আহমেদ নীল
আমিঃ আমি সিম এটা অফ রাখব।
রানাঃ তাহলে যোগাযোগ হবে কি করে?
আমিঃ নিউ সিম নিবো।
রানাঃ ওকে।
আমিঃ বাস ছেরে দেওয়ার সময় হয়েছে আসি আমি।।
জয়ঃ ওকে সাবধানে থাকিস।
আমিঃ হুম তরাও ভালো থাকিস।
আমি বাসে উঠে গেলাম। আমি ভিতরে গিয়ে সিটে বসলাম। সকালেই জয় অনলাইনে টিকেট কেটে রেখেছিলো। বসে আছি বাস ছেরে দেওয়ার সময় হয়ে গেছে। ভাবলাম পাসের সিটে কেউ নেই হয়তো। তাই এক সিটে বসে আরেক সিটে পা দিলাম। কানে হেডফোন লাগিয়ে নিলাম। গান শুনতেছি।
তখনি কেউ একজন আমার শরীরে দাক্কা দিলো।
আমি তাকিয়ে দেখি একটা মেয়ে। অচেনা মেয়েটি আমার দিকে রাগি লুকে তাকিয়ে আছে। বুঝলাম না এভাবে কেন তাকিয়ে আছে।
আমিঃ কিছু বলবেন?
অচেনা মেয়েঃ সিট কি দুইটাই আপনার?
আমিঃ না।
অচেনা মেয়েঃ তাহলে দুই সিট দখল করে বসে আছেন কেন?
আমিঃ আসলে আমি মনে করছিলাম এই সিট টা কেউ বুকিং করে নি।
অচেনাঃ এটা আমার সিট।
আমিঃ স্যরি।
এই বলে পা টা সড়িয়ে নিলাম। আমি জানালা দিয়ে বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছি।। বাস ছেরে দিলো আমার নানুর বাসা চট্রগ্রাম যেতে যেতে
সকাল হয়ে যাবে। ফোনে সিম ও নেই যে অনলাইনে যাবো অনেকটাই বোরিং লাগতেছে।
পাসের সিটে কোনো ছেলে বসলেও গল্প করতে করতে যাওয়া যেতো। মেয়েদের সাথে ত আমি এমনিতেই কথা কম বলি আর আগ বাড়িয়ে কথা বলার ত কোনো প্রশ্নই আসে না। তখনি মেয়েটি বলে উঠলো।
মেয়েটিঃ হাই আমি হিয়া।
আমিঃ হুম
হিয়াঃ আপনার নাম বলেন।
আমিঃ আমার নাম নীল।।
হিয়াঃ কিসে পড়েন?
আমিঃ অনার্স প্রথম বর্ষে
আপনি?
হিয়াঃ ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে।
তা কোথায় যাচ্ছেন?
আমিঃ সিলেট
হিয়াঃ এটা ত চট্রগ্রামের বাস?
আমিঃ আযব ত জানেন যখন ত প্রশ্ন করেন কেন?
হিয়াঃ আরে বোকা বলতে চাচ্ছি চট্রগ্রাম কোথায় যাচ্ছেন?.
আমিঃ নানুর বাসায়।
হিয়াঃ আপনি কি বিরক্ত হচ্ছেন।
আমিঃ আসলে মেয়েদের সাথে কথা বলার অভ্যাস নেই ত।
হিয়াঃ আমিও ছেলেদের সাথে বেশি কথা বলি না
বাট আপনাকে দেখে অন্যরকম মনে হলো তাই পরিচিত হলাম।
আমিঃ কেন আমাকে দেখতে কি এলিয়েনের মতো যে অন্যরকম লাগে।
হিয়াঃ না, অন্য কোনো ছেলে থাকলে এতোক্ষনে অনেক কথায় বলতো,,,ফেসবুক আইডি চাইতো
নাম্বার চাইত। বাট আপনি ওরকম না।।
আমিঃ ওহ আচ্ছা।
হিয়াঃ আপনার বাসা কি ঢাকায় ই?
আমিঃ হ্য।
তারপর হিয়া নামের মেয়েটি আর কিছু বললো না।
আমিও আাগ বাড়িয়ে কিছু বলে নি৷ এমনিতে মনটা খারাপ আজকে নিধী আপুর ব্যবহারে।
রাত প্রাই এগারোটা বাজে।আম্মুকে একটা কল করা উচিত বাট আমার ত সিম ই নেই ফোনে। এই মেয়েটার কাছে কি ফোন টা চাবো ,, আবার যদি কিছু মনে করে।
হিয়াঃ কিছু বলবেন?
আমিঃ আসলে বাসায় একটু কল করতে চেয়েছিলাম, বাট আমার ফোনে সিম নেই।
হিয়াঃ ওহ আমার টা দিয়ে করেন।
এই বলে হিয়া ওর ফোনটা দিলো,, আমি আম্মুর নাম্বার উঠিয়ে কল দিলাম। আম্মু কল রিসীভ করলো।।
আমিঃ আম্মু আমি নীল
আম্মুঃ তর নাম্বার বন্ধ কেন?
আমিঃ আমি ওই সিম টা আর ইউজ করবো না।
আম্মুঃ কি পাগলামি শুরু করলি বল ত এদিকে
নিধী পাগলের মতো করছে।
আমিঃ নিধী আপু দুপুরে খেয়েছে।
আম্মুঃ হ্য অনেক কষ্ট করে খাওয়াতে হইছে।
আমিঃনিধী আপু কে বইলো না যে আমি নানুর বাসায় আছি।
আম্মুঃ ওকে।।
এটা কার নাম্বার?
আমিঃ অচেনা একজনের।
ভালো থেকো রাখি বাই
আম্মুঃ বাই
আমি কলটা কেটে দিলাম। তারপর হিয়া কে মোবাইল দিয়ে দিলাম। আমি হিয়াকে একটা ধন্যবাদ দিলাম। বাসের সিটে হেলান দিয়ে শুয়ে আছি।
হিয়াঃ আচ্ছা আপনার কিছু হয়েছে?
আমিঃ আমাকে বলছেন?
হিয়াঃ আপনি ছারা এখানে কে আছে?
আমিঃ না ত আমার কি হবে?
হিয়াঃ তাহলে আপনার চোখে পানি কেন?
তারপর আমি চোখে হাত দিয়ে দেখি সত্যিই চোখে পানি আমি চোখটা মুছে ফেললাম। ওমনেই বাস টা থেমে গেলো,, একটা রেস্তোরাঁয় সামনে বাস পার্ক করল। সবাইকে রাতের খাবারের জন্য বলা হলো।
হিয়াঃ চলেন খেয়ে আসি
আমিঃ মুড নেই
হিয়াঃ এতো কথা বলেন কেন?
আসতে বলছি আসেন। খেতে খেতে আপনার গল্প শুনব।
আমরা আর না করলাম না। বাস টা একটা গ্রামে
এসে থামছে। আমরা দুজন রেস্তোরাঁয় চলে গেলাম
হিয়া খাবার অর্ডার করলো। তারপর আমি সব কিছু হিয়া কে বললাম। এসব শুনে হিয়া আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।
হিয়াঃ এই ছোট একটা কাহিনী নিয়ে এতো কিছু?
আমিঃ হুম।
হিয়াঃ মেয়েটিকে বুজানো উচিত ছিলো আপনার।
আমিঃ সে ত শুনতেই চাই নি।
হিয়াঃ খোব খারাপ হয়েছে আপনার সাথে
আমিঃ বাস ছেরে দিবে চলেন।
তারপর আমি বিল দিয়ে বাসে চলে গেলাম।
বাসে গিয়ে আমি আমার সিটে বসে পড়লাম।।
আমার প্রচন্ড গুম পাচ্ছে। আমি গুমিয়ে পড়লাম
হঠাৎ করে আমার গুম ভেঙে গেলো, উঠে দেখি
আমি হিয়ার কাঁদে আমার মাথা। আমি একটু অপস্তুুত হয়ে গেলাম।
আমিঃ স্যরি
হিয়াঃ ইটস ওকে
তারপর আর গুমালাম না হিয়ার সাথে টুকটাক কথা বলতে লাগলাম। সকালে গিয়ে চট্রগ্রাম বাসস্টপে বাস থামলো। আমি আর হিয়া বাস
থেকে নেমে গেলাম৷
হিয়াঃ অনেক কথা বলছি পরিচয় হয়েও ভালো লাগল আপনার নাম্বার টা দেওয়া যাবে।
আমিঃ স্যরি আমার সিম নেই।
হিয়াঃ ইট’স ওকে
তাহলে আসি ভালো থাকবেন।
আমিঃ হুম আপনিও।
তারপর হিয়া চলে গেলো। আমিও একটা রিক্সা নিয়ে নানুর বাসায় চলে গেলাম৷ গিয়ে কলিংবেল দিলাম দরজা টা খুলে গেলো। আমি যাকে দেখলাম অবাক হয়ে গেলাম। ওনিও আমাকে দেখে অবাক হয়ে গেছে।
#চলবে