গল্পঃ পাশের বাড়ির বড় আপু পার্ট: ১ | Pasher Barir Boro Apu Part 01

 
গল্পঃ পাশের বাড়ির বড় আপু পার্ট: ১ | Pasher Barir Boro Apu Part 01

__নিজের বোরিং ভাবটা দুর করার জন্য। বক্সের মধ্যে ফুল সাউন্ড দিয়ে গান শুনছিলাম। আর মনের সুখে নাচতেছিলাম। হঠাৎ কে জানি বেলকনিতে ঢিল দিলো। আমি বক্সের সাউন্ড কমিয়ে বেলকনিতে গেলাম। দেখি অনেক বড়সড় একটা ইটের কনা। কারো মাথায় পড়লে সে এতক্ষনে শেষ ছিলো। আমি বাইরে তাকিয়ে দেখি পাশের বাড়ির ছাদ থেকে একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে আছে কেমন একটা রাগী ভাব নিয়ে । আমি জুড়ে বললাম 

আমি: ঢিল দিয়েছে কে জানেন?

মেয়ে: জানি 

আমি: কে ?

মেয়ে: আমি

আমি: সাহস কতো বড় দেখছেন। নিজে ঢিল মেরে আবার কি করে বলে। আমি ঢিল মারছি। (বললাম মুখটা ভেংচি মেরে)

মেয়ে: বলবো নাতো কি করবো ? তুই যে এতো জোরে সাউন্ড দিয়ে গান শুনতাছত। আর এদিকে আমার যে ঘুমের সমস্যা হইতাছে সেটা খেয়াল রাখস।

__আমি মনে মনে ভাবলাম আরে এই মেয়েতো গায়ে পড়ে ঝগড়া করতে আসছে। আমিও কম‌ না দেখি কতক্ষন ঝগড়া করতে পারে।

আমি: আমার ঘরে আমি গান শুনতাছি তাতে আপনার কি?

মেয়ে: কিহ তর সাহস তো কম না। জানিস আমি কে ?

আমি: কে আবার?যত্তসব আজাইরা মেয়ে।

মেয়ে: তরা যে বাসাত থাকস। এটা কার বাসা জানস। এটা আমার কাকার বাসা । এখন বললে সাথে সাথে তদের বের করে দিবে। 

__ভাবলাম যদি বলে দেয় । আর যদি বলে বাসা ছেড়ে দিতে। পরে কি হবে। ধুর আমি হার মানবোনা। পরেরটা পরে দেখা যাবে।

আমি: বলেন বলেন। তাতে আমার কিছু যায় আসে না। বক্স একটা না দশটা  লাগিয়ে শুনবো ।

মেয়ে: দাঁড়া তরে দেখাচ্ছি মজা। 

__এই বলে আরেকটা ইটের কনা হাতে নিয়ে। ঢিল দিয়ে বসলো। আমি প্রস্তুত ছিলাম না ভাবছিলাম ভয় দেখাবে । কিন্তু না ডাইরেক্ট মেরে দিলো আর সোজা আমার হাতের এক সাইটে গিয়ে লাগলো । সাথে সাথে সেখান থেকে রক্ত বের হওয়া শুরু করলো । আমি দৌড় দিয়ে ঘরের ভিতর চলে আসলাম। বক্স বন্ধ করে দিলাম। ভাবলাম মেয়েটা মনে হয় পাগল ।
পাগল না হলে‌ কি করে এভাবে ঢিল মারতে পারে। 
কেটে যাওয়া অংশটা ধুয়ে সেবলন লাগিয়ে ওয়ান টাইম বেন্ডেজ লাগিয়ে নিলাম। বেলকনিতে উঁকি দিয়ে দেখি মেয়েটা আছে নি । দেখি এই কড়া রোদের মধ্যে বসে আছে । পাগল নাকি। থাক পাগলকে ডিস্ট্রাব করে লাভ নেই। ভাবলাম কোনো সুস্থ মানুষ এরকম করতে পারে না।  যদি ঢিলটা মাথায় লাগতো। তাহলে এতক্ষনে আকাশে থাকতাম। এমন সময় কে জানি দরজায় টোকা দিলো । খুলে দেখি মা বাবা আর ছোট বোন । মা আমার হাতে বেন্ডেজ দেখে বলল।

মা: কিরে তর হাতে বেন্ডেজ কেনো? 

আমি: আরে দরজার একটো আঁচড় লাগছে।

মরিয়ম: ভালো হয়েছে খুশি হয়েছি। 

__আমার বোনের নাম মরিয়ম। মার নাম আসমা ।আব্বার নাম আব্দুল হাসান।

আমি: আমি মরে গেলেও তো তুই খুশি হবি।

আব্বা: হয়েছে চুপ কর এখন ঘরে ডুক।

__দরজা খুলে আমার ঘরে চলে আসলাম। এসে শুয়ে রইলাম । আসলে আমরা এই বাড়িতে নতুন ওঠছি ।আমাদের আসল বাড়ি নরসিংদী । আমি হয়েছি ঢাকায় ছোট বেলা থেকে ঢাকায় কিন্তু সমস্যা হলো কোনো বাসা আর এলাকা স্থায়ীভাবে হলো না। আমার এই ২২ বছরে মনে হয় ১০ বার বাসা চেঞ্জ করছে আব্বায়। এই বারো তাই হয়েছে । আমার আব্বা একজন উকিল। সে অনুযায়ী সবাই সম্মান করে। গত দু'দিন আগে এই বাসায় উঠছি আমরা । আজকে সকালে নতুন বাসার কিছু কেনাকাটার জন্য তারা বাজারে গিয়েছিলো । সকাল থেকে একা তাই একটু গান‌ শুনছিলাম । তারপরও এই কাহিনী। 
বেলকনিত থেকে উঁকি দিয়ে দেখি । মেয়েটা নাই।
মেয়েটাকে মনে হলো আমার থেকে বড়। মরিয়ম এসে দরজায় টোকা দিলো বলল।

মরিয়ম: ভাই মা ডাকতাছে খেয়ে যাইতি।

আমি: তুই যা আমি আসতাছি। 

__খেয়ে দেয়ে দিলাম এক ঘুম। ঘুম থেকে ওঠে বিকালে বের হলাম। একটা সিগারেট না খাইলে হবে না। এলাকার এক চিপার চায়ে দোকানে গিয়ে বসলাম। একটা চা আর একটা বেনসন খাইলাম। শরীরটা চান্গা হয়ে গেলো। সন্ধ্যায় বাসায় এসে পড়াত বসলাম। পরদিন সকালে কলেজে যাওয়ার জন্য বের হলাম। রিকশার জন্য দাড়িয়ে রইলাম বাসার নিচে। পাশের বাসা থেকে একটা মেয়ে বের হলো। আমি আড়চোখে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলাম আরে এতো ঐ মেয়েটা। আমি না দেখার ভান করে দাঁড়িয়ে রইলাম। কে জানি আমাকে ডাক দিলো মনে হলো মেয়েটা মনে হয় গতকালের ঘটনার জন্য মাফ চাইবে।

মেয়ে: ঐ দেখে যা।

আমি : আমাকে ডাকছেন?

মেয়ে: হুম।

আমি কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। মেয়েটি বলল।

মেয়ে: গতকাল কি তুই । ফুল সাউন্ড দিয়ে গান শুনছিলি।

আমি মনে মনে ভাবলাম। এখন যদি বলি আমি তাহলে আবার মাইর দিবে নাকি। তারচেয়ে ভালো না করে দেই।

আমি: নাহ। আমারতো মোবাইলই নাই। গানতো দুরের কথা।

মেয়ে: মিথ্যা বলবি না। মোবাইল যদি পাই তাহলে মোবাইল কিন্তু আমার।

আমি: না মানে মোবাইল আছে কিন্তু। গান আমি শুনি নাই। সত্যি বলছি।

মেয়ে: মিথ্যা কথা বলার আর যায়গা পাস না। আমার স্পস্ট খেয়াল আছে । তুই ছিলি এটা।

আমি: সত্যি বলছি আপু।

মেয়ে: থাবড়াইয়া সবগুলো দাঁত ফালায় দিবো। আবার মিথ্যা বললে। 

আমি: সরি আপু মাফ করে দেন। (ভয় পেয়ে)

মেয়ে: নেক্সট টাইম যদি এরকম জুড়ে সাউন্ড দিয়ে গান শুনস। তাহলে তর খবর আছে। চড় খাওয়ার আগে ভাগ। 

আমি সেখান থেকে রিকশা নিয়ে চলে আসলাম। ভাবলাম মাফ চাইবে। কিন্তু হলো কি আমি মাফ চেয়ে কুল পাইনা। ধুর এসব আলতু ফালতু মেয়েদের থেকে দুরে থাকায় ভালো। কলেজ থেকে এসে লিফটের জন্য ওয়েট করতেছি। আমাদের ফ্ল্যাট হলো ৬ তলায় । তখনই বাড়ির মালিকের ছেলের সাথে দেখা হলো । ওনার নাম নিলয় । নিলয় ভাই বলল

নিলয়: সাকিব কি খবর? (সরি আমার নাম সাকিব বলতে ভুলে গেছি)

আমি: এইতো ভাই আলহামদুলিল্লাহ ভালো। 
আপনার?

নিলয়: ভালো। কোথায় গিয়ে ছিলা?

আমি: কলেজে ।

নিলয়: তুমি জানি কোন ইয়ারে?

আমি: সেকেন্ড ইয়ার। 

নিলয়: ভালো করে পড়াশোনা করো । 

আমি: জী ভাই। 

নিলয়: তুমি বলে জুড়ে সাউন্ড দিয়ে গান শুনো।

আমি: আরে ভাই তেমন কিছু না। একটু শুনছিলাম
নিলয়: গান শুনো ঠিক আছে। কিন্তু সাউন্ড কমিয়ে শুনো। পাশের বাড়ি থেকে কমপ্লেন দিয়েছে আমার কাছে ।

আমি: ওকে ভাই।

নিলয়: ওকে যাও তাহলে।

আমি: হুম।

__আমি রুমে চলে আসলাম। ভাবলাম কি আজব মেয়েরা বাবা নিজে কতক্ষন বকলই আবার বাড়ি ওয়ালার কাছে বিচার দিলো। আবার আমার হাতও ঢিল দিয়ে কেটে ফেলল। এসব ফালতু মেয়েদের থেকে দুরেই থাকায় ভালো। আমি পাশের বাড়ির ছাদে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলাম। দেখি ঐ মেয়েটা মনের সুখে সিগারেট টানতাছে। আমি মোবাইল দিয়ে ছবি তুলে নিলাম। ভাবলাম পরে ব্যাকমেল করে কোনো মাইর এর যায়গা থেকে বাঁচা যাবে। আমি বেলকনিতে গিয়ে কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনতে লাগলাম। আর মেয়েটাকে দেখতে লাগলাম 
কি করে। বেলকনিতে আমাকে দেখে সিগারেট খাওয়া বন্ধ করে ফেলে। আমাকে লক্ষ্য করে বলল।

মেয়ে: কিরে তুই সারাদিন বেলকনিতে কি করস?

আমি কান থেকে হেডফোন খুলে বললাম। 

আমি: সারাদিন বেলকনিতে মানে। মাত্রইতো আসলাম। আর আমাদের বেলকনিতে আমি আসবো না?

মেয়ে: না তুই আসবি না।

আমি: কেনো আসবো না। ভাড়া দিয়ে থাকি না।

মেয়ে: আবার মুখের‌ উপর তর্ক করস। 

আমি: তর্কের কি আছে। আমাদের বেলকনিতে আমি আসবো না তো কে আসবে । যত্তসব আজাইরা কথা বার্তা। আপনার নামে বাড়িওয়ালার কাছে বিচার দিবো।

মেয়ে: আমি আজাইরা কথা বার্তা বলি। 

আমি: হুম। 

মেয়ে: তর সাহস দেখে আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি। তরে যদি আমি এ বাসা থেকে বের না করি তাহলে আমার নাম সুবর্না না । 

তাহলে মেয়েটির নাম সুবর্না। যাইহোক নামটা পছন্দ হয়েছে। 

আমি: আপনি বালডা ফালাইবেন।

আমি বকা দিয়ে সাথে সাথে মুখে হাত দিয়ে বসলাম।

সুবর্ণা: কি বললি তুই?

আমি: কিছু না। বলছি আপনার‌ নামটা অনেক কেউট।

সুবর্ণা: ফাইজলামি করস। তুই ভুলে যাস না আমি তর থেকে বড়। 

আমি: জানি আপু। 

সুবর্ণা: যা ভিতরে যা বেলকনিতে যাতে না দেখি।

আমি: ওকে আপু।

(গল্প পড়তে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে নক করেন।)

এই বলে আমি ভিতরে চলে আসলাম। আসলে ওদের বাড়িটা ৫ তলা। কিন্তু আমরা থাকি ছয় তলা যার কারণে ওদের ছাদ আমার বেলকনির সমান সমান হয়। আমি বিকালে বের হলাম। একটা চিপা
বিচারতাছি যেখানে শান্তি মতো সিগারেটটা খাওয়া যাবে। অবশেষে মনে হলো পাইছি। আমি সোজা চিপায় ঢুকে গেলাম। গিয়ে যা দেখলাম সেটা দেখার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। দেখি সুবর্ণা আর আরেকটা মেয়ে বসে আছে।

চলবে.....

#নাম: পাশের বাড়ির বড় আপু
#লেখক: Osman
#পার্ট: ১

পাঠক-পাঠিকারা আমরা তোমাদের জন্য গল্প লেখি।
গল্পের এক পার্ট লেখতে আমাদের ২-৩ ঘন্টা চলে যায় । আর তোমাদের একটা রিয়েক্ট দিতে এক সেকেন্ড লাগবে। তাই কেউ রিয়েক্ট না দিয়ে যাবেন না। আর ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।
ভুল ক্রটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

1 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post