গল্পঃ পাশের বাড়ির বড় আপু পার্ট: ২ | Pasher Barir Boro Apu Part 02

 
গল্পঃ পাশের বাড়ির বড় আপু পার্ট: ২ | Pasher Barir Boro Apu Part 02

#নাম: পাশের বাড়ির বড় আপু
#লেখক: Osman
#পার্ট: ২

__এই বলে আমি ভিতরে চলে আসলাম। আসলে ওদের বাড়িটা ৫ তলা। কিন্তু আমরা থাকি ছয় তলা যার কারণে ওদের ছাদ আমার বেলকনির সমান সমান হয়। আমি বিকালে বের হলাম। একটা চিপা
বিচারতাছি যেখানে শান্তি মতো সিগারেটটা খাওয়া যাবে। অবশেষে মনে হলো পাইছি। আমি সোজা চিপায় ঢুকে গেলাম। গিয়ে  দেখলাম সেটা দেখার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। দেখি সুবর্ণা আর আরেকটা মেয়ে বসে আছে।তারা মনের সুখে সিগারেট টানতাছে। আমাকে দেখে অবাক হয়ে যায়। সাথে সাথে সিগারেট খাওয়া বন্ধ করে ফেলে। বলল

সুবর্ণা: কিরে তুই এখানে কি করছ?

আমি: তেমন কিছু না আপু। এলাকাটা একটু ঘুরে দেখছিলাম।

সুবর্ণা: এলাকা ঘুরবি ভালো কথা। কিন্তু তুই এই চিপায় কেনো?

আমি: আমি ভাবছিলাম এখান দিয়ে কোনো রাস্তা আছে।

সুবর্ণা: আমারতা বিশ্বাস হয় না।  এই সাদিয়া ওরে চেক করতো।

__সাদিয়া চেক করে আমার কাছ থেকে একটা বেনসন পেলো। বেনসনটা নিয়ে সুবর্ণার কাছে দিলো। সুবর্ণা বলল

সুবর্ণা: আমিও ভাবছিলাম তুই কি করে এতো সাধু হতে পারস?

আমি: আসলে আপু এইটা আমার না। ঐ সামনে আমার এক বন্ধুর জন্য কিনছিলাম। 

সুবর্ণা: চুপ একদম চুপ এতো মিথ্যা‌ কথা  তুই কোথা থেকে বলস?

আমি: সরি আপু।

সুবর্ণা: তুইযে সিগারেট খাস । এটা সোজা তর বাপের কাছে বিচার যাইবে। 

আমি: কিন্তু আপনিওতো খান?

সুবর্ণা: আমার সাথে তর তুলনা। 

আমি: হুম। 

সুবর্ণা: এখন বিচার না দিতে পারি একটা শর্তে।

আমি: কি?

সুবর্ণা: আমাদের দুজনকে তর খাওয়াতে হবে ‌।

___আমি এই ফাকে ঐ দিন যে ছাদে দাঁড়িয়ে সিগারেট টানছিলো । ঐ ছবিটা সুবর্ণাকে দেখাইলাম। সুবর্ণা দেখে কতক্ষন হাসলো। তারপর নিজের ফেসবুক প্রোফাইলের ছবি গুলো দেখাইলো। দেখে আমি পুরো অবাক । দেখি সুবর্ণা ওপেনলি সিগারেট মুখে নিয়ে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে। তারপর একটা দুইটা না অনেক গুলো। আমার মুখের অবস্থা দেখে সুবর্ণা বলল।

সুবর্ণা: এখন যাবি নাকি । তর বাপের কাছে যাবো?

আমি: যাইতাছি আপু।

__আমি দোকান থেকে তাদের জন্য আইসক্রিম নিয়ে গেলাম। আইসক্রিম পেয়ে ওদের আনন্দ আর দেখে কে। এতক্ষনে আমার ঐ বেনসনটা ওরা সাবার করে ফেলেছে। আমি বললাম

আমি: আপু আমি তাহলে যাই।

সুবর্ণা: দাঁড়া আমিও যাবো। সাদিয়া যাইগা পরে কথা হবে।

__রাস্তায় রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে আমাকে জিজ্ঞেস করলো।

সুবর্ণা: কিরে তর নাম কি?

আমি: সাকিব।

সুবর্ণা: কিসে পরস?

আমি: অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে।

সুবর্ণা: ভালো।

এতক্ষনে সে আইসক্রিম খেয়ে শেষ করলো । আর বলল।

সুবর্ণা: শুন এখন থেকে আমাকে প্রতিদিন একটি করে আইসক্রিম খাওয়াতে হবে । নাহলে তর বাপের কাছে বলে দিবো।

আমি এমন কথা শুনে অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম । 
আমার অবস্থা দেখে সুবর্ণা হেসে শেষ। আমি তার হাসির দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম এটা কোনো মেয়ে হাসছে নাকি কোনো পরি হাসছে সেটাই ধরা মুস্কিল। হাসতে হাসতে বলল।

সুবর্ণা: আরে মজা করছিলাম। 

আমি: মজাতো করবেনই। এখন একটা দোষ পাইছেন না। 

সুবর্ণা: ঐ দেখ তর বাপ। এখন কিন্তু গিয়ে বলবো।

__দেখি আব্বা কার সাথে ‌জানি কথা বলতাছে। কিন্তু 
সুবর্ণা আপু জানলো কি করে এইটা আমার আব্বা।

আমি: না আপু প্লিজ বইলেন না  । আপনি যা বলবেন তাই খাওয়াবো। 

সুবর্ণা: হা হা ভয় পাসনা। যা বলবো না।

আমি: ধন্যবাদ আপু। আর ভুলেও আপনার সামনে পরবো না। 

__বলে দিলাম এক দৌড়।দৌড়ে বাসায় চলে আসলাম। কিছুক্ষন পড়ালেখা করলাম। কিছুক্ষণ পর মরিয়ম একটা অংক নিয়ে আসলো । ঐটা সমাধান করে দিতাম। সে এবার jsc দিবে। আমি তাকে কিছুক্ষণ বুঝাইয়া অংকটা সমাধান করলাম। যাওয়ার সময় বলল।

মরিয়ম: ভাই ১০০ টাকা দেতো?

আমি: একশো টাকা দিয়ে কি করবি?

মরিয়ম: দে তুই মজা খামু।

আমি: বাইরের জিনিস খাইলে পেটে অসুখ করবে। 
যা ভাগ।

মরিয়ম: দে ভাই। দাঁড়া তর মানিব্যাগে ‌কই?

__মানিব্যাগ আমার টেবিলের উপর ছিলো। ঐখান থেকে মানিব্যাগ নিয়ে । মানিব্যাগ থেকে একশো টাকার নতুন নোটটা নিয়ে। মানিব্যাগ ঢিল দিয়ে ভেংচি মেরে চলে গেলো। আমি কিছু বলারও টাইম পাই নাই। আমি ইশারারের নামাজ পড়ে ফেসবুকিং করছিলাম। এমন সময় মা এলো বলল।

মা: সাকিব যাতো মরিয়ম পাশের বাসায় সুবর্ণাদের কাছে গেছে। কোন সময় গেছে এখন ও আসেনি।
যা গিয়ে নিয়ে আয়। ওর কয়দিন পর পরিক্ষা।

আমি: ঐখানে কি করে?

মা: জানিনা। কার বলে বার্থডে। 

আমি: ঐখানে যেতে দেও কেনো? চিনি না জানি।

মা: তার এক ক্লাসমেট থাকে ঐ বাসায়। আমি যেতে দেয় নাই। পরে সুবর্ণা  এসে নিয়ে গেছে।

আমি: সুবর্ণা আবার কে?

মা: পাশের বাড়ির বাড়িওয়ালার বড় মেয়ে। 

আমি: আমি যেতে পারবো না। 

মা: জানা অনেক রাত হয়ে গেছে। 

আমি: কতো তলার । কোন ফ্ল্যাট ?

মা: ৪ তলার  বাম পাশের ফ্ল্যাট।

 আমি: যাইতাছি। 

__মা চলে গেলো। ঐ বাসায় গেলে আবার যদি সুবর্ণার সাথে দেখা হয়। পরে আবার কি জানি হয়? যাইহোক আমি শরীরে বডিস্প্রে মেরে বের হলাম। পাশের বাড়ির দরজার মধ্যে দিয়ে ঢুকলাম । ভাবলাম সিঁড়ি দিয়ে ওঠে যাই। আমি দুই তলায় ওঠলাম। খেয়াল করলাম ওপর থেকে কে জানি গান গাইতে গাইতে নিচে নামতাছে। আমাকে পাশ কেটে চলে গেলো । মনে মনে ভাবলাম মনে হয় বেঁচে গেছি। এ বাসার সব মেয়ে মনে সুবর্ণার মতোই হবে। এসব মেয়েদের থেকে দুরেই থাকা ভালো। কিন্তু না । মেয়েটি মনে হয় কিছু বলল

মেয়ে: এই যে শুনছেন। 

আমি: জি আমাকে বলছেন।

মেয়ে: হ্যা আপনাকে। আপনাকে আগেতো এই বাসায় দেখি নাই। এখানে কি করছেন?

আমি: আমি পাশের বাসায় থাকি এখানে এসেছি সুবর্ণা আপুদের বাসায়। 

মেয়ে: কিন্তু এ বাসায়তো কোনো সুবর্ণা থাকে না। 

আমি: কি বলেন। আমার মাতো বলল । ৪ তলার বাম পাশের ফ্ল্যাটে থাকে। 

মেয়ে: আপনার মা কিছু জানে না। সুবর্ণারা থাকে এই বাড়ির পরে বাড়িতে। 

আমি: না এই বাসায় থাকে। 

মেয়ে: শুনেন আমি এ‌ বাসায় দশ বছর ধরে থাকতাছি আমি জানি না। 

আমি: কিন্তু মাতো বলল। আর আমিও দেখছি সুবর্ণা এই বাসায় থাকে ।
‌‌
মেয়ে: বললাম না এই বাসায় থাকে না। এখন যদি আপনি উপরে যান তাহলে আপনার নামে কমপ্লেন দিবো । আপনি এ বাসায় চুরি করার জন্য ঢুকছেন। 

__এই মেয়ের এই কথা শুনে আমি কথা বলার বাসা হারিয়ে ফেলেছি। মেয়েটি বলে কি দেখো? জানতাম মালিক যেমন ভাড়াটিয়ারাতো ঐ রকম হবে।  কি বলবো কিছুই বুঝতাছিনা। আমি বললাম

আমি: যান আপনি গিয়ে বলেন?

__মেয়েটা আমার হাত ধরে চিৎকার করতে থাকে 

মেয়ে: চোর ধরছি চোর... চোর চোর

আমি: ছাড়েন আমাকে ছাড়েন। ছাড়েন বলছি।

__ওপর থেকে এক মেয়ে এসে বলল। 

মেয়ে: মিলি কি হচ্ছে এখানে। 

__আমি চেয়ে দেখি সুবর্ণা যাক মনে হলো বাঁচা গেলো। তারমানে শয়তান মেয়েটার নাম মিলি।

মিলি: আপু চোর ধরছি। আপনাদের ফ্ল্যাটে চুরি করতে আসছে। 

সুবর্ণা: মিলি ওকে ছাড়। আর নিচে যা। সবার সাথে এরকম করতে নেই। 

মিলি: যাচ্ছি আপু। 

__মিলি চলে গেলো। আমি বললাম

আমি: আপু আমি কিছুই করি নাই। ও আমাকে কথার পেচে ফেলে চোর চোর বলতাছে।
এই কথা শুনে সুবর্ণা কিছুক্ষন হাসলো বলল।

সুবর্ণা: তর মতো বোকা আর আমি দেখিনি। একটা পিচ্চি মেয়ে তাকে কি বোকাটায় না বানালো। 

এই বলে আরো কতক্ষন হাসলো । আমি বোকার মতো দাঁড়িয়ে রইলাম। সুবর্ণার হাসিটা আমার খুব ভালো লাগছে। সুবর্ণা একটা আধুনিক ডিজাইনের থ্রিপিস পড়ছে একেবারে তাকিয়ে থাকার মতো। সারাদিন তাকিয়ে থাকলেও মনের তৃপ্তি মিটবে না। কিন্তু আমার তো বড় আপু লাগে আমি কেনো‌ তাকাতে যাবো সুবর্ণা বলল।

সুবর্ণা: বল কেনো? আসছত?

আমি: মরিয়মকে নিতে।

সুবর্ণা: ওহ উপড়ে আয়।

আমি সুবর্ণার পিছনে পিছনে ওদের ফ্ল্যাটে গেলাম। মরিয়মকে ডাক দিলো। মরিয়ম আসলে । সুবর্ণা মরিয়মের হাতে একটা ব্যাগ ধরিয়ে দিলো। আমি মরিয়মকে নিয়ে আসার সময় জিজ্ঞেস করলাম। 

আমি: তুই সুবর্ণা আপুদের সাথে এতো তাড়াতাড়ি ফ্রেন্ড করলি কিভাবে।

মরিয়ম: সুবর্ণা আপুর ছোট বোন আমার ক্লাসমেট ।

আমি: ও । 

মরিয়ম: তুই সুবর্ণা আপুর নাম জানলি কোথা থেকে।

আমি: মা‌ বলছে।

মরিয়ম: সুবর্ণা আপুকে আমার খুব ভালো লাগে। 

আমি: কেনো?

মরিয়ম: আমাদের সাথে খুব হাসিখুশি থাকে। আর অনেক অনেক মজার কথা বলে। যেগুলো শুনলে তুই ও হাসতে হাসতে শেষ হয়ে যাবি।

আমি: ভালো। (মনে মনে ভালো না ছাই। )

___আমি বাসায় এসে। রাতে শুয়ে শুয়ে ফেসবুক চালাইতাছি। অনেক কষ্টে সুবর্ণার আইডি বের করি। তাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাই। এভাবে কিছুদিন চলে যায়। একদিন রাতে সিগারেট খাওয়ার জন্য আমাদের বাসার ছাদে গিয়েছিলাম। গিয়ে যা দেখলাম তা বিশ্বাস করার মতো না। দেখি সুবর্ণা আপু আর নিলয় ভাই অন্তরজ্ঞ হয়ে বসে আছে। 

চলবে.....

পাঠক-পাঠিকারা আমরা তোমাদের জন্য গল্প লেখি।
গল্পের এক পার্ট লেখতে আমাদের ২-৩ ঘন্টা চলে যায় । আর তোমাদের একটা রিয়েক্ট দিতে এক সেকেন্ড লাগবে। তাই কেউ রিয়েক্ট না দিয়ে যাবেন না। আর ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।
ভুল ক্রটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

1 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post