#লেখক: Osman
#পার্ট: ৯
__এই বলে সুবর্ণা দরজা লাগিয়ে দিলো। সুবর্ণা প্রথমে সুপটা রান্না করলো । রান্না করে সাকিবের মাকে খাইয়ে দিলো । তারপর ঔষধ খাওয়ালো। সুবর্ণা বলল
সুবর্ণা: আজ যদি আপনার ছেলের বউ থাকতো। তাহলে আপনার এতো কষ্ট করতে হতো না।
আন্টি: তা তুমি ঠিক বলেছো মা। কিন্তু এই বলদরারে কে বিয়ে করবে? পরিক্ষার রেজাল্ট ভালো না। না পাবে কোনো চাকরি । হেরে নিয়ে খুব টেনশনে আছি। হেরে কতো বলি ভালো করে পড়াশোনা করতে কিন্তু কে শুনে কার কথা?
সূবর্না: বিয়ে করলে সব ঠিক হয়ে যাবে।
আন্টি: কিন্তু হেরে কে বিয়ে করবে?
সুবর্ণা: চাকরি নিয়ে টেনশন করতে হবে না। আমার ব্যাংকের কোনো এক পোষ্টে তারে ঢুকিয়ে দিবো সমস্যা নেই।
আন্টি: ওকে মা। সেটা পরে দেখা যাবে।
সুবর্ণা: এখন শরীরটা কেমন লাগছে?
আন্টি: আগের থেকে অনেক ভালো।
সুবর্ণা: আন্টি তাহলে আমি যাই।
আন্টি: বসো আরেকটু পড়ে যাও।
সুবর্ণা: ওকে।
আন্টি: মা তোমাদের ব্যাংক থেকে কি লোন নেয়া যায়?
সুবর্ণা: হুম। লোন নিয়ে কি করবেন?
আন্টি: তোমার আংকেল একটা ফ্ল্যাট কিনার চিন্তা করছে। এভাবে আর কতো অন্যার বাসায় ভাড়া থাকবো তাই একটা ফ্ল্যাট কিনার চিন্তা ভাবনা করছে। কিন্তু ফ্ল্যাট কিনতে যে টাকা লাগে তা এখন তোমার আংকেল এর কাছে নাই ১০ লক্ষ্য টাকার মতো শর্ট পড়ে । এখন তোমার আংকেল ভাবতাছে
ব্যাংক থেকে টাকা লোন নিবে।
সুবর্ণা: লোন দেয়া যাবে। এ বিষয়ে আমি আংকেলের সাথে কথা বলবো।
আন্টি: ওকে তুমি আংকেলের সাথে কথা বইলো। অনেক উপকার হবে।
সুবর্ণা: আপনি কোনো টেনশন কইরেন না আমি আংকেলের সাথে কথা বলতাছি।
আন্টি: ওকে যাও। যাওয়ার সময় মরিয়মকে ডাক দিয়ে যেও।
সুবর্ণা: ওকে।
__সুবর্ণা ঘর থেকে বেরুতে যাবে। এমন সময় আবার সাকিবের সাথে দেখা। সাকিবকে দেখে সুবর্ণা ভেংচি মেরে বলল।
সুবর্ণা: আমাকে ঐদিন নোংরা ভাষায় গালিগালাজ করছিলি না। সেই বিচার তর করতাছি । কিছুদিন অপেক্ষা কর।
সাকিব: কি গালিগালাজ করছি ?যেটা সত্যি সেটাইতো বললাম।
সুবর্ণা: আবার । এর শাস্তি আমি তকে নিজ হাতে দিবো।
সাকিব: দেখবো নে। প্লিজ আমাদের বাসায় আইসেন না।
সুবর্ণা: আসবো না কেনো? একশো বার আসবো।
সাকিব: যানতো এখান থেকে।
সুবর্ণা: তর মা বলছে মরিয়মকে ডাক দিতি।
__এই বলে মুখে ভেংচি মেরে চলে আসলো । সুবর্ণা। সুবর্ণা বাসায় এসে ভাবলো কাজ অর্ধেক হয়ে গেছে এখন শুধু প্রস্তাব দেয়া। আগে নিজে দিবে পরে আব্বার হাতে দেয়াবে।
__আমি সুবর্ণার আচরণ কিছুই বুঝতে পারছি না। ভাবছিলাম ঐদিন যে অপমান করলাম। তারপর থেকে আর আমার আর আমাদের বাসার ত্রিসীমানায় দেখবো না। এখন দেখছি সে সারাক্ষণ আমাদের বাসায় থাকে । কি মুস্কিল? না করি আসতে। তারপরও বেহায়ার মতো বলে আসবে। আসলে আসুক তাতে আমার কি? এদিকে আমার পরিক্ষা চলছে। পরিক্ষা কেনো জানি ভালো হচ্ছে?মনটাও খুব ভালো। রাতে আমরা সবাই এক সাথে বইসা খাইতাছি । মা বললো
মা: তর আব্বা একটা ফ্ল্যাট কিনতাছে?
আমি: কোথায়?
আব্বা: ঐযে সামনে দেখছত না। একটা নতুন বাড়ি হচ্ছে ঐটাতে । বাড়ি বানানো প্রায় কম্প্লিট আর বোধহয় দুই তিন মাসের মতো লাগবে।
আমি: কিন্তু টাকা।
মা: টাকা কিছু শর্ট পড়ে । সে টাকা ব্যাংক থেকে লোন নিবে। পাশের বাড়ির সুবর্ণার সাথে কথা বলছি। ও বলছে তাদের ব্যাংক থেকে দেয়া যাবে।
আমি: লোন নেয়ার কি দরকার ? দেশের বাড়ি থেকে জায়গা বিক্রি করলেই তো হয়।
আব্বা: ঐ একই । দেখা যাক । আগে সুবর্ণার সাথে কথা বলি। দেখি কি বলে ? বুঝে হয় নিবো না হলে অন্য ব্যাবস্থা করতে হবে।
আমি: হুম।
আমি ভাবলাম। ভালই হবে নিজেদের একটা পারমানেট বাসা থাকলে । কিছুদিন পর পর বাসা চেঞ্জ আর ভালো লাগে না। আমি খেয়ে দেয়ে রুমে এসে পড়াত বসলাম। পরিক্ষা খুব ভালো করতে হলো পরদিন পরিক্ষা দিয়ে আসার সময় নিলয় ভাই এর সাথে দেখা। নিলয় ভাই বললো।
নিলয়: সাকিব কি খবর? কেমন আছো?
আমি: জী ভাই ভালো।
নিলয়: ইদানিং দেখতাছি সুবর্ণা তোমাদের বাসায় ।
খুব আশা যাওয়া করতাছে। কারণ টা তুমি জানো।
আমি: না ভাই মার সাথে দেখা করে। ব্যাংক সম্পর্কে কি যেনো কথা এগুলো। তেমন কিছু জানিনা।
নিলয়: ওরে বেশি প্রস্রয় দিয়ো না। তোমার জীবন শেষ করে ফেলবে।
আমি: কিন্তু ভাই আমি শুনলাম । আপনার সাথে তার বিয়ে হওয়ার কথা। কিন্তু বিয়ে দেখি হলো না।
নিলয়: আরে ঐ মেয়েটাকে কে বিয়ে করতে যাবে? সে আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে। সে এতো পরিমাণ জালান ঝালায়ছে আমারে । তা বলে শেষ করা যাবে না। আমি ভাবছিলাম বিয়ের পর জানি আমার কি করবে? সেই ভয়ে আমি তাকে বিয়ে করি নাই।
আমি: কিন্তু ভাই আমরাতো শুনলাম। বয়স বেশি হওয়ায় কারনে আপনি তাকে বিয়ে করেন নি।
নিলয়: সেটাও একটা কারন আছে। কিন্তু সে আমাকে খুব প্যারা দিতো।
আমি: কিন্তু তার কাছে আপনি সারাজীবন ঘৃণার পাত্র হয়ে থাকবেন।
নিলয়: আরে ছোটভাই জীবনে এরকম সমস্যা কিছু আসবেই। সেটা কোনো প্রোবলেম না। তোমাকে আমি একটা সাজেশন দেই। তাকে সবসময় এরিয়ে চলবা না হলে তোমার জীবন শেষ করে দিবে।
আমি: ওকে ভাই।
__আমি বাসায় আসলাম। এসে দেখি সুবর্ণা মার সাথে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। আমি আমার রুমে চলে আসলাম। নিলয় ভাই এর কথা গুলো মনে পড়ছে
সে খুব প্যারা দেয়। সেটা ঠিক কিন্তু বয়স কোনো ফ্যাক্টর না । আমি বুঝতে পারছি না সুবর্ণা চাচ্ছেটা কি ? সারাক্ষণ মার সাথে থাকে। ধুর সেসব দেখে লাভ নাই । আমি আমার মতো থাকি। পরিক্ষা শেষ হলো পরিক্ষা সব গুলো ভালো হলো। মনটাই অন্যারকম লাগছে। কলেজ থেকে বন্ধ পাওয়া গেছে। এখন ভাবছি কিছুদিন শান্তি মতো রেষ্ট করতে পারবো আর ঘুরতে পারবো । পরিক্ষা যেদিন শেষ করলাম পরদিন আব্বা এসে বলল।
আব্বা: কিরে তরতো পরিক্ষা শেষ। যাতো গ্রামের বাড়ি থেকে ঘুরে আস।
আমি: কেনো সেখানে কোনো কাজ আছে?
আব্বা: হুম। জমি গুলো দেখে আসবি মোট কতোটুকু জমি আছে। সেগুলো মাপতে হবে আর হিসেব করতে হবে কতো লক্ষ্য টাকার জমি আছে। ফ্ল্যাটের জন্য টাকা বের করতে হবে। তাই চিন্তা করলাম জমি টুকু বিক্রি করে ফেলি।
আমি: কখন যাবো।
আব্বা: এখন চলে যা । আজকে সারারাত থাইকা পরদিন সন্ধ্যায় সেখান থেকে রওনা দিস।
আমি: ওকে।
__আমি রেডি হয়ে। দেশের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
__সুবর্ণা পরদিন ঠিক করলো। সাকিবের মাকে বলবে। যথারীতি দুপুরের পর সুবর্ণা সাকিবের বাসায় এসে হাজির। সাকিবের মা দেখে অনেক খুশি হলো । সুবর্ণা বললো।
সুবর্ণা: এই নিন আন্টি । সুবর্ণা আসার সময় শুটকির ভর্তা নিয়ে আসছিলো।
__সাকিবের মা দেখে খুব খুশি হলো। সুবর্ণা বললো
সুবর্ণা: আন্টি একটা কথা বলার ছিলো। কিন্তু সাহস হচ্ছিলো না।
সাকিবের মা: সাহসের কি আছে? তুমি তো আমার মেয়ের মতোই বলো কি বলবা?
সুবর্ণা: কি করে যে বলি?
আন্টি: আরে বলোতো লজ্জার কি আছে?
সুবর্ণা: আন্টি সাকিবকে আমি বিয়ে করতে চাই।
আন্টি সুবর্ণার এমন কথায় স্তম্ভিত হয়ে যায়। কিছুক্ষণ সুবর্ণার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। সুবর্ণা বোকা মেয়ের মতো মাথা নিচু করে বসে রইলো।
সাকিবের মা বললো।
আন্টি: কিন্তু মা সাকিবেরতো বিয়ের বয়স হয় নাই।
সুবর্ণা: আন্টি ওর বয়স কতো?
আন্টি: ২২ হবে হয়তো।
সুবর্ণা: আন্টি বিয়ে করার একদম পারফেক্ট।
আন্টি: কিন্তু মা সে এখনো পড়াশোনা করে।
তোমাকে খাওয়াবে কি ? আর কবে না কবে চাকরি পায় । তার কোনো ঠিক ঠিকানা আছে।
সুবর্ণা: আন্টি আমি চাকরি করি । সেসব টেনশন আপনাকে করতে হবে না।
আন্টি: কিন্তু মা আসল কথা হলো। সে তোমাকে পছন্দ করে কিনা। সে যদি তোমাকে পছন্দ করে তাহলে আমাদের বিয়ে দিতে প্রোবলেম নাই।
সুবর্ণা: আন্টি তার পছন্দ দিয়ে আমার কোনো আসে না । পছন্দ হলো আপনাদের হাতে আপনি আর আংকেল যদি হ্যা বলে দেন। তাহলে সে কখনো না করতে পারবে না।
আন্টি: তারপরেও তার পছন্দ দেখা উচিত না।
__সুবর্ণা কেঁদে কেঁদে বলতে লাগলো ।
সুবর্ণা: আন্টি প্লিজ না কইরেন না । আব্বা কার কাছে জানি বিয়ে দেয় তার কোনো ঠিক ঠিকানা নাই। এমন হতে পারে আমার সারাজীবন কুমারী হয়ে থাকতে হবে। প্লিজ আন্টি না কইরেন না। 😭😭
__সূবর্নার চোখের পানি দেখে । সাকিবের মা এসে সুবর্ণাকে জড়িয়ে ধরলো। সুবর্ণা সাকিবের মাকে জড়িয়ে ধরে আরো জুড়ে জুড়ে কাঁদতে লাগলো।
সাকিবের মা বললো।
সাকিবের মা: কেঁদো না মা । কেঁদো না। এর জন্য কাঁদতে হবে। আমি তোমার আংকেলের সাথে কথা বলবো।
চলবে.....
পাঠক-পাঠিকারা আমরা তোমাদের জন্য গল্প লেখি।
গল্পের এক পার্ট লেখতে আমাদের ২-৩ ঘন্টা চলে যায় । আর তোমাদের একটা রিয়েক্ট দিতে এক সেকেন্ড লাগবে। তাই কেউ রিয়েক্ট না দিয়ে যাবেন না। আর ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।
ভুল ক্রটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
❤️❤️💯💯❤️❤️
ReplyDelete