#পার্ট: ১
#লেখক: Osman
(সিজন ১ এরপর)
__আমি আমার কাঁপা কাঁপা হাতে মেয়েটার ঘোমটা ওঠালাম । ঘোমটা উঠিয়ে যা দেখলাম তা আমার পক্ষে মেনে নেয়া সম্ভব না । দেখি আমার চির চেনা শত্রু সুবর্ণা। আমি অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার অবস্থা । এ আমি কি দেখতাছি আমি যেনো বিশ্বাস করতে পারতেছি না। আমার শরীর থেকে টপটপ করে ঘাম বের হচ্ছে আমি বললাম।
আমি: আপনি এখানে? আপনি এখানে কেনো?
সুবর্ণা: আমি থাকবো না তো অন্য কেউ থাকবে।
আমি: এই বিয়ে আমি মানি না। আমি এখনি আব্বাকে বলছি ।
সুবর্ণা আমার পাঞ্জাবির করার ধরে বললো ।
সুবর্ণা: কোথায় যাও চান্দু । তোমার খবর আছে?
আমি: প্লিজ আপু আমাকে ছেড়ে দেন।
সুবর্ণা: তুই এতো দেরি করছত কেনো? আমি সেই কখন থেকে বসে আছি।
আমি: প্লিজ আপু আমাকে ছেড়ে দেন আমি আর জীবনেও আপনার সামনে আসবো না। আপনাকে গালি দিবো না।
সুবর্ণা: আমি লুচ্চা । নিলয় আমাকে খেয়ে দিয়েছে । আর কি কি জানি বলছিলি?
আমি: জীবনে আর বলবো না প্লিজ আমাকে ছেড়ে দেন।
সুবর্ণা: ছেড়ে দিবো একটা শর্তে ।
আমি: আপনি যা বলবেন তাই করবো।
সুবর্ণা আমার পাঞ্জাবির কলার ছেড়ে বললো।
সুবর্ণা: এদিকে আয় আমার কাছে আয়। একেবারে আমার সাথে লেগে বস।
__আমি সুবর্ণার সাথে লেগে বসলাম। এক জনের শরীর আরেক জন অনুভব করতে পারছিলাম। সুবর্ণা বললো
সুবর্ণা: আমার শরীর থেকে গয়না গুলো খুলে দেতো।
আমি কাঁপা কাঁপা হাতে গয়না গুলো খুলে দিলাম । সুবর্ণা বললো।
সুবর্ণা: বল আমাকে কেমন লাগছে?
আমি: খুব সুন্দরী। (আসলেও খুব সুন্দরী 😁)
সুবর্ণা: আমি তকে মাফ করে দিবো একটা কাজ করলে।
আমি: কি কাজ?
সুবর্ণা: নিজের ইচ্ছায় আমার ঠোঁটে কিস কর?
__সুবর্ণা বলে কি নিজের ইচ্ছায় কিস করতে । পাগল নাকি । এই সুবর্নাকে যাবো আমি কিস করতে। আমার শরীরে রাগ উঠতাছে। আমি বললাম
আমি: রাখেন আপনার কিস । রাখেন আপনার শর্ত।
যত্রসব ফালতু। আর আমি আপনাকে বিয়ে করছি কে বলছে?
সুবর্ণা: চুপ আস্তে কথা বল।
আমি: আস্তে বলবো কেনো? আর আপনি একটু ও সুন্দরী না আপনি কালো ভুত । একেবারে পেতনি।
সুবর্ণা: এবার কিন্তু বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে।
আমি: বাড়াবাড়ি হলে হোক। তাতে আমার কি?
সুবর্ণা: ওকে বুঝছি তর মাথা ঠিক নেই। শুন তুই বাথরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয় । এই নে কাপড়।
আমি হাত থেকে কাপড় নিয়ে বাথরুমে চলে গেলাম।
বের হলে সুবর্ণা বললো ।
সুবর্ণা: এই নে শুয়ে পড়।
__সুবর্ণার পাশে বালিশ দিয়ে বললো।
আমি: পাগল নাকি আপনার সাথে আমি শুবো। জীবনেও না। আপনারতো চরিত্র ভালো না। পরে কি জানি কি করেন?
__এমন কথা শুনে সুবর্নার মুখটা কালো হয়ে গেলো । মনে হয় অনেক কষ্ট পেয়েছে । কষ্ট পেলে পাক তাতে আমার কি? যেই যেমন তার সাথে তেমনই হওয়া উচিত। সুবর্ণা মুখটা কালো করে কাপড় পাল্টাতে লাগলো । আমি একটা বালিশ নিয়ে নিচে শুয়ে পড়লাম । কিছুক্ষণের মধ্যেই চোখে ঘুম চলে আসলো। সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি সুবর্ণা আমাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে রয়েছে নিচে। এমন ভাবে শুয়ে রয়েছে নড়তে পারছিলাম। আমি তাকে ডাক দিলাম আমি ।
আমি: এভাবে শুয়ে আছেন কেনো? ওঠেন আমাকে উঠতে দিন।
সুবর্ণা: আরেকটু ঘুমা।
আমি: আমাকে জড়িয়ে ধরেছেন কেনো। আল্লাহ জানে রাতে আমার সাথে কি করছেন ? ছাড়েন বলছি।
সুবর্ণা: আজ আমার আর তর বাসর রাত । এই দিনেই যদি দুজন আলাদা শুই । খুব খারাপ দেখাবে।
এই জন্য প্রথম দিনে তর সাথে শুয়েছি।
আমি: খারাপ হলে হোক । আপনাকে কে অধিকার দিয়েছে ? আমার সাথে শুয়ার । ওঠেন ওঠেন।
__সুবর্ণা ওঠে চলে গেলো বাথরুমে। এই রুমের সাথেই একটা এটাচ বাথরুম আছে যেটা শুধু এই রুমের মানুষ ব্যাবহার করতে পারবে। আমি বিছানায় উঠে শুয়ে রইলাম। সুবর্ণা বাথরুম থেকে বের হয়ে বললো।
সুবর্ণা: কিরে আরো ঘুমাবি । যা ফ্রেস হয়ে নে। আমি চা নিয়ে আসছি।
আমি: আমি যেটা মনে চায় করবো। সেটা আপনাকে নিয়ে ভাবতে হবে না। আপনি আপনার নিজের চরকায় তেল দিন।
সুবর্ণা: তুই মুখে মুখে তর্ক করস কেনো? আমি কি তর খারাপ বলছি?
আমি: করবো একশো বার করবো। আপনি আমাকে আদেশ দেওয়ার কে। দেখেন আপু আমার উপর অধিকার খাটাতে আইসেন না।
সুবর্ণা: ওকে তর যা ইচ্ছা কর। এই বলে সুবর্ণা বের হয়ে গেলো ঘর থেকে।
আমি বাথরুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে । বিছানায় শুয়ে রইলাম । সুবর্ণা চা নিয়ে আসলো। আমি বললাম।
আমি: আমি চা খাবো না।
সুবর্ণা: চা খাবি না তো কি সিগারেট খাবি।
আমি: হুম। (হেসে বললাম।)
সুবর্না: এখন থেকে যদি সিগারেটের নাম মুখে উঠেছে তর এই মুখ আমি পুরে ফেলবো।
আমি: দেখবো নে আমি এখন গিয়ে সিগারেট খাবো।
সুবর্ণা: দাঁড়া তর আব্বাকে বলতাছি।
আমি: এ না না আপু আব্বাকে বইলেন না।
সুবর্ণা: এখন চা খা।
__সুবর্ণা চা দিয়ে একটা কাগজ আমার দিকে দিয়ে বললো।
সুবর্ণা: নে এটা ধর।
আমি: কি এটা?
__আমি খুলে দেখলাম । ১০ লক্ষ্য টাকার একটা চেক। আমি বললাম
আমি: এটা কিসের জন্য।
সুবর্ণা: এটা আমার আব্বা । তর আব্বাকে উপহার দিয়েছিলো । কিন্তু তর আব্বা নেয়নি ।
আমি: এখন আমি কি করবো?
সুবর্ণা: এটা তুই তর আব্বাকে দিস।
আমি: দেখো একেতো আপনাকে আমার ভালো লাগে না। দ্বিতীয় এটা আমি নিবো না। কারণ পরে কিছু হলে আমাকে এই টাকার খোঁটা দিবেন।
সুবর্ণা: এমন ফালতু কথা বলিস কেনো? এটা উপহার যৌতুক না।
আমি: তারপরেও এটা আমি নিবো না।
সুবর্ণা: এমন করিস না সাকিব । তর আব্বার এখন টাকাটা দরকার । তরা না ফ্ল্যাট কিনবি । সেজন্য তদের টাকাটা দরকার।
আমি: সেই চিন্তা আপনাকে করতে হবে না।
সুবর্ণা: প্লিজ টাকাটা নিয়ে তর আব্বাকে দে। নাহলে তর আব্বাকে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হবে। পরে ঋণ না শোধ করতে পারলে । ঋণের বোঝা আরো বাড়বে। প্লিজ না করিস না। তর আব্বার টাকাটা দরকার।
আমি: ওকে দিবোনে ।
সুবর্ণা: তাহলে আমি যাই । তুই চা খা।
আমি চা খেলাম। চা খেয়ে কি করবো কলেজ বন্ধ? কোথায় ঘুরতে যাবো সেটাও সম্ভব নয়। ভাবলাম সুবর্ণা আসুক তার সাথে মজা করা যাক। আমি বসে বসে বেলকনিতে গিটার বাজাইতাছি । কিছুক্ষণ পর সুবর্ণা আসলো বললো ।
সুবর্ণা: কিরে তুই গিটার বাজাইতাছত কেনো?
জানিস না গিটার বাজানো 😁 ভালো না।
আমি: জানি ।
সুবর্ণা: তাহলে বাজাস কেনো?
আমি; ভালো লাগে।
সুবর্ণা: সামনে থেকে আর বাজাবি না। দে গিটার দে।
আর খেয়ে যা।
__সুবর্ণা আমার হাত থেকে গিটার নিয়ে । চলে গেলো। আমি খেতে গেলাম। খেয়ে দেয়ে রুমে এসে শুয়ে শুয়ে মোবাইল টিপতাছি। আর কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনতাছি। কিছুক্ষণ পর সুবর্ণা আসলো এসে বললো
সুবর্ণা: কিরে কি করস?
আমি: দেখতাছেন না।
__ সুবর্ণা আমার পাশে শুইয়ে আমার সাথে একেবারে নিজের শরীর লাগিয়ে বললো।
সুবর্ণা: দে একটা তার আমাকে দে । আমিও শুনবো।
আমি: না আপনার মোবাইল আছে না। আপনার মোবাইল দিয়ে আপনি শুনুন।
সুবর্ণা: তুই এখনো আমাকে আপনি করে বলস। আমরা না এখন জামাই বউ।
আমি: আপনাকে আমি বউ হিসাবে মানি না।
সুবর্ণা: এমন করস কেনো? শুন বিয়ের আগে আমি তকে মারছি বকছি তকে আমি অনেক কষ্ট দিয়েছি।
এই মুহূর্তে আমি তর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আমাকে মাফ করে দিয়ে । চল দুজনে ভালোভাবে সংসার করি।
আমি: আপনাকে আমি কি করে ক্ষমা করি? আপনি আমাকে রাস্তায় চড় মারছেন । শুধু শুধু অপমান করছেন। আপনার কারনে আমি আরেকজনের কাছে অপমানিত হয়েছি ।
সুবর্ণা: জানি তরে আমি কষ্ট দেয়েছি। তুই আমাকে মন থেকে মাফ করে দে।
আমি: যান মাফ করে দিলাম । এখন এখান থেকে চলে যান । নিলয় ভাই বলছে আপনি খুব নিলয় ভাইকে জালাইছেন । সে জন্য আপনাকে বিয়ে করে নাই । না জানি আমার কপালে কি আছে? প্লিজ আপু আমাকে ছেড়ে আপনি চলে যান।
সুবর্ণা: এমন কথা বলিস না ।
আমি: কেনো বলবো না? আমার আপনাকে একটু ভালো লাগে না।
সুবর্ণা: ভালো না লাগলেই পারে । সে জন্য চলে যেতে বলিস কেনো?
আমি: হুম আপনি চলে যান।
সুবর্ণা: প্লিজ এমন কথা বলিস না। আমি আর তকে কষ্ট দিবো না। তর প্রত্যোকটা কথা আমি শুনবো। প্লিজ এমন কথা বলিস না।
আমি: আপনাকে আমি মেনে নিতে পারছি না।
__সুবর্ণা কাছে এসে আমার হাত ধরলো। সুবর্ণা বললো।
সুবর্ণা: সাকিব আমি তকে ভালোবাসি।
আমি: কিন্তু আমিতো বাসিনা। আমার হাত ছাড়েন।
__এই বলে আমি ওঠে ঘর থেকে বের হবো । সুবর্ণা বললো।
সুবর্ণা: কোথায় যাস?
আমি: কেনো আপনাকে বলতে হবে?
সুবর্ণা: যেখানে চাস । তাড়াতাড়ি আসিস । আর ফোন দিলে ফোন ধরিস।
আমি: না ধরবো না।
সুবর্ণা: সাকিব 🤬।
__এই বলে আমি ঘর থেকে বের হয়ে বাইরে চলে আসলাম।
চলবে....
পাঠক-পাঠিকারা আমরা তোমাদের জন্য গল্প লেখি।
গল্পের এক পার্ট লেখতে আমাদের ২-৩ ঘন্টা চলে যায় । আর তোমাদের একটা রিয়েক্ট দিতে এক সেকেন্ড লাগবে। তাই কেউ রিয়েক্ট না দিয়ে যাবেন না। আর ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।
ভুল ক্রটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
❤️❤️💯💯
ReplyDelete