গল্পঃ সিনিয়র বস পার্ট ১২ | Senior Boss Part 12

গল্পঃ সিনিয়র বস পার্ট ১২ | Senior Boss Part 12

 #নাম: সিনিয়র বস
#পার্ট: ১২
#লেখক: Osman

__একটু পর দেখি । মেয়েটা আসলো। মেয়েটাকে চিন্তে পারছি। তার লেপটপই আমি ঠিক দিয়েছিলাম। ম্যানেজার বললো

ম্যানেজার: এই হলো আমার মেয়ে ইকা । ইকা আজকে থেকে তকে রাফিদ দেখাশোনা করবে। 

ইকা: কেনো আমি কি একা চলতে পারিনা। আমাকে দেখা শুনা করার কি আছে?

ম্যানেজার: ইকা তুই আমার এই পর্যন্ত তেরো লক্ষ্য টাকার জিনিস পত্র ভেঙে ফেলেছত শুধু ‌রাগ করে। 
এখন বলস তকে দেখাশোনা করার কি আছে?

ম্যানেজার: আজ থেকে রাফিদ কে মেনে চলবি। যা এখান থেকে। 

__ইকা চলে গেলো। আমি বললাম

আমি: কিন্তু স্যার যদি ম্যাডাম কিছু বলে। 

ম্যানেজার: ওসব তুমি চিন্তা করো না। তোমাকে যেই কাজ দিলাম। সেটা তুমি মন দিয়ে করো। 

আমি: ওকে। স্যার আমার বেতনটা যদি বলতেন। 

ম্যানেজার: ওভারটাইম এর জন্য বিশ হাজার টাকা।আর অফিসে কাজের জন্য ৩০ হাজার টাকা। মোট ৫০ হাজার টাকা। 

আমি: অনেক ধন্যবাদ স্যার। 

ম্যানেজার: আর কোম্পানিতে কোয়ার্টার আছে সেখানে তোমার থাকার ব্যাবস্থা করে দিচ্ছি। দয়া করে আমার মেয়েকে একটু দেখে রাখো। 

আমি: স্যার বিয়ে দিয়ে দিলেইতো পারেন। 

ম্যানেজার: আমার একটা মাত্রই মেয়ে। সে এখন পড়ালেখা করে । পাশাপাশি আমাকে একটু টাইম দেই। সেটা ভেবে দেখেনি। আমি তাকে জিজ্ঞেস করবো। 

আমি: ওকে সার। 

__আমি রুমটা পেয়ে খুব খুশি হলাম। একা এক রুম। রুমের মধ্যে সকল কিছুর ব্যাবস্থা আছে। এভাবে পনেরো দিন চলে গেলো। ইকা মেয়েটার সাথে খুব ভালই সম্পর্ক হয়েছে। যতই যেদি হোক মনটা একদম ফ্রেশ। কোনো সময় আমাকে অবহেলা করেনি। আমার সাথে খুব রাগ দেখায়। কিছুদিনের মধ্যেই সব কিছুর সাথে মানিয়ে নিলাম। আমার মা বাবার মৃত্যুর খবর শুনে অনেক কেঁদেছে। আমি সেটা বুঝলাম না। আমাকে চিনে না জানে না এরপরেও আমার কষ্টে সেও কেঁদেছে। কেনো জানি ইকার জন্য ভিতরে দুর্বলতা কাজ করে। ইকা সারার বয়সী। মনি আপুর মতো সুন্দরী ফেস কাটিংটা একটু ভিন দেশী মেয়েদের মতো। ইকা ও কেনো জানি আমাকে একটুও বেশি কাছে পেতে চায়। সারাক্ষণ আমার সাথে ঘুরে খায়। এটা সেটা কতো কিছু। একদিন রাতে ঘুমাতে যাবো চট্টগ্রামে আসার ১৫ দিন পর । দেখি রাত ১০টা সময় সারা কল‌ দিয়েছে। আমি ফোন ধরলাম। ওপার থেকে মনি আপুর কন্ঠ ভেসে আসলো।

মনি আপু: কুত্তা তরে ঐখানে আমি ম্যানেজারের মেয়ের সাথে লুতুপুতু করার জন্য পাঠিয়েছি। তরে আমি পাঠাইছি মন দিয়ে কাজ করার জন্য। তুই সেখানে কিনা ইকার সাথে প্রেম করছ। তর‌ চাকরি নট। এক্ষুনি তুই ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে যা। 

আমি: ম্যাডাম কথাটা শুনেন। ম্যানেজার ওভারটাইম হিসেবে তার মেয়ের দেখা শুনা করার‌ জন্য বলছে। 

মনি আপু: তুই ও কি লুচ্চা তুই রাজি হয়ে গেলে । বাহ মেয়ের দেখাশোনা করার জন্য তুই রাজি হয়ে গেলি। তরতো চরিত্র ভালো না। টাকার নেশায় তুই অন্ধ হয়ে গেছস। এখন আমি দেখবো তুই কিভাবে টাকা ইনকাম করস। তর চাকরি নট। 

আমি: প্লিজ ম্যাডাম। আপনি যা বলবেন আমি তাই করবো।

মনি আপু: যদি চাকরি বাঁচাতে চাস। সকালে ঘুম থেকে উঠে যেনো তকে দেখতে পাই। 

__এই বলে ফোন কেটে দিলো। আমি আবার ফোন করলাম। সারা ধরলো

আমি: সারা আপনি বলেন। আমি আগামীকাল আসতাছি। এতো রাতে কি করে আসবো?

সারা: ম্যাডাম প্রচন্ড রেগে আছে। আমি কিছু জিজ্ঞেস করতে পারবো না। যা বলছে তাই কর। 

আমি: আচ্ছা আমি অফিসে ম্যাডামের সাথে দেখা করবো। 

সারা: ম্যাডাম আগামীকাল অফিসে যাবে না। সকালে ম্যাডামের সাথে দেখা কর। 

আমি: ওকে‌ । 

__আমি রাতটা কাটিয়ে । খুব সকালে বেরিয়ে পড়লাম। যেহেতু পূর্ব প্রস্তুতি ছিলোনা অনেক কিছুই নিতে পারলাম না। ইকার কাছ থেকেও বিদায় নিতে পারলাম না। সে নিশ্চয় ঘুম থেকে উঠে ফোন করবে। 
আমি বাস দিয়ে ঢাকায় আসলাম। আসতে আসতে রৌদ্র উঠে গেছে। মনি আপুর সাথে দেখা করতে হবে। কিন্তু মনি আপুর বাড়িতো চিনি না। আমি সারাকে কল দিলাম। সারা ফোন ধরছে না। মনে হচ্ছে ঘুমাচ্ছে। আমি রুমে গেলাম। রাহাত এসে দরজা খুললো। রাহাত এতো সকালে আমাকে দেখে অবাক। রাহাত আমাকে বললো

রাহাত: এতো সকালে তুই। 

আমি: হরে । একটা সমস্যা হয়েছে। 

রাহাত: কি সমস্যা?

আমি: পরে বলবো । এখন বেরুতে হবে। 

রাহাত: কোথায়? 

আমি: মনি আপুর সাথে দেখা করতে হবে। নাহলে আমার চাকরি শেষ। 

দেখি সারা কল ব্যাক করলো। 

আমি: তাড়াতাড়ি ম্যাডামের বাসার ঠিকানা দেন। আমার এক্ষুনি দেখা করতে হবে। 

সারা: আমার ঠেকা পরছে না দিতাম। 

আমি: এসব কি বলছেন? ম্যাডামের সাথে দেখা করতে হবে। নাহলে আমার চাকরি শেষ। 

সারা: দিতে পারি একটা শর্তে। তর বন্ধু রাহাতের নাম্বার দে। 

__আমি মোবাইলটা দুরে নিয়ে রাহাতকে বললাম। 

আমি: এটা সারা তর সাথে কথা বলতে চাচ্ছে। শুধু হাই হেলো বল। 

__আমি লাউড স্পিকার দিয়ে রাহাতকে মোবাইলটা দিলাম। রাহাত সালাম দিয়ে বললো।

রাহাত: হাই আমি রাহাত কেমন আছেন?

সারা: ভালো আলহামদুলিল্লাহ। আপনি

রাহাত: জী ভালো।‌ ধন্যবাদ আমাকে ঐদিন শার্ট টা দেওয়ার জন্য। 

সারা: আপনার পছন্দ হয়েছে। 

রাহাত : হুম। 

__আমি রাহাতের হাত থেকে মোবাইল নিয়ে। বললাম

আমি: তাড়াতাড়ি ম্যাডামের বাসার ঠিকানা দেন।
 
সারা: ওকে দিচ্ছি। 

__আমি ফোন কেটে দিলাম। দেখি সারা আমাকে ঠিকানা টেক্সট করলো । এটা বলে দিলো। বাসার সামনে গিয়ে ফোন দিতে। নাহলে দারোয়ান ঢুকতে দিবে না। ম্যাডাম কতো তলায়। কতো নাম্বার রুমে থাকে সেটা বলে দিলো। আমি রাহাতের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে। ম্যাডামের বাসার সামনে গেলাম। দারোয়ানের সাথে সারার কথা বলালাম। দারোয়ান ঢুকতে দিলো। আমি বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করলাম। বাড়িটা এতো সুন্দর কল্পনার বাইরে। আমি দ্বিতীয় তলায় বামের রুমটার‌ সামনে গিয়ে ‌। দরজার কড়া নাড়লাম। ভিতর থেকে আওয়াজ আসলো কে?
 
আমি: ম্যাডাম আমি রাফিদ। 

__একটু পর দরজা খুললো। বললো ভিতরে আসতে।  দেখি মনি আপু । একটা হাতাকাটা গেঞ্জি আর লেহেঙ্গা পড়ে‌ বসে আছে। মনি আপুর বুকের উরু দুটো স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। চুল গুলো খুলা এলোমেলো হয়ে আছে এটাই মনে হয় স্টাইল।  আমি মনি আপুকে এমন অবস্থায় দেখবো কল্পনাও করিনি। আমি লজ্জায় মাথা নিচু করলাম। মনি আপু বললো

মনি আপু: তর চাকরি নট। এইখানে সাইন কর। আর আমার চোখের সামনে থেকে ভাগ । 

আমি: ম্যাডাম আমিতো ঠিক টাইমেই আসলাম। 

মনি আপু: তাতে আমার কিছু যায় আসেনা। 

আমি: প্লিজ ম্যাডাম আমার সাথে এরকম করবেন না। আমি আপনার সব কথা মেনে চলবো। 

মনি আপু: রাখ তর মিষ্টি মিষ্টি কথা। আর কোনো কথা বলবি না। 

আমি: ওকে ম্যাডাম। 

__এমন সময় দেখি ইকা কল দিলো। আমি ফোন কেটে দিলাম। একটু পর আবার কল দিলো। আমি কাটতে যাবো মনি আপু বললো

মনি আপু: কে? 

আমি: ইকা। 

মনি আপু: ফোন ধর । দিয়ে লাউড স্পিকার দে? 

__আমি ফোন ধরে লাউড স্পিকার দিলাম। ইকা বললো

ইকা: কিরে ফোন ধরিস না কেনো?

আমি: ব্যাস্ত ছিলাম। 

ইকা: ওহ। আজকে এখন একটু দেখা করতে পারবি। আজকে শপিং এ যাবো। 

আমি: আসলে হয়েছে কি.... 

মনি আপু: ইকা আমি তোমাদের ম্যাডাম মনি আপু। রাফিদ কে সেখান থেকে ট্রান্সফার করে ঢাকায় নিয়ে আসছি। চট্টগ্রাম সে আর যাবে না। 

ইকা: ম্যাডাম কেমন আছেন?

মনি আপু: ভালো ।‌ আর শুনো রাফিদ কে আর ফোন দিবা না। 

ইকা: জী ম্যাডাম। 

__মনি আপু ফোন কেটে দিলো। বললো

মনি আপু: এক্ষুনি নাম্বার ব্লক মার। 

আমি: জী ম্যাডাম।

__একটু পর কাজের মেয়ে এসে কফি দিয়ে গেলো। মনি আপু কফি খাওয়া শুরু করলো। কাজের মেয়ে বললো 

কাজের মেয়ে: ম্যাডাম আরেকটা নিয়ে আসবো।

মনি আপু: না। 

কাজের মেয়ে: ম্যাডাম নাস্তা রেডি আছে। 

মনি আপু: নাস্তা এখানে নিয়ে আয়।

কাজের মেয়ে: জী ম্যাডাম। 

__কাজের মেয়ে চলে গেলো । একটু পর কাজের মেয়ে এসে নাস্তা দিয়ে গেলো। মনি আপু খেতে শুরু করলো। আমি মাথা নিচু করে বসে আছি। কি আজব মেয়েরে বাবা একা একা খাচ্ছে একবার আমাকে জিজ্ঞেসও করলো না। আমি বললাম

আমি: ম্যাডাম আমি যাই। 

মনি আপু: নাহ বস। 

আমি: ওকে। 

__মনি আপু একা একা খেলো। একটি বারো জিজ্ঞেস করলো না। এদিকে আমি সেই রাতে খেয়েছিলাম এখন সকাল ১০টা বাজে একটু পানি পড়ে নাই পেটে খিদায় পেট ঘুরতাছে। আমি বিরক্ত হয়ে বললাম

আমি: ম্যাডাম আমি বাসা থেকে ফ্রেশ হয়ে আসি। 

মনি আপু: না ।

আমি: প্লিজ ম্যাডাম আমাকে আর একটা সুযোগ দেন। এবার যদি কোনো ভুল হয়। আমি নিজেই চলে যাবো। 

মনি আপু: সত্যি। 

আমি: হুম। এখন যাই। 

মনি আপু: তর জন্য নাস্তা অর্ডার দিয়েছিলাম। খেয়ে যা। 

আমি: না আপু আমি এখনো ফ্রেশ হয়নি। আমি বাসায় যাবো। 

মনি আপু: ওকে। আগামীকাল অফিসে দেখা করিস। 
আমি বাসায় চলে আসলাম। 

চলবে....

পাঠক-পাঠিকারা আমরা তোমাদের জন্য গল্প লেখি।
গল্পের এক পার্ট লেখতে আমাদের ২-৩ ঘন্টা চলে যায় । আর তোমাদের একটা রিয়েক্ট দিতে এক সেকেন্ড লাগবে। তাই কেউ রিয়েক্ট না দিয়ে যাবেন না। আর ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।
ভুল ক্রটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

3 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post