#পার্ট: ১১
#লেখক: Osman
__আমি বাসায় চলে আসলাম। সবাই চলে গেলো। এই পুরো বাড়িতে আমি এখন একা। আপনার বুঝতেই পারছেন আমার মনের অবস্থা। মনটা খুব খারাপ। মার প্রত্যাকটা কথা মনে হচ্ছে। আর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। আমি আমাদের ক্ষেতটুকু ডগি দিয়ে দিলাম কারন আমি চলে গেলে ক্ষেত দেখার কেও নেই। (ডগি মানে হলো দুই অথবা এক বছরের একটা চুক্তি । কিছুটাকার বিনিময়ে আমি আমাদের ক্ষেতটুকু তাকে দিয়ে দিলাম। মানে দুই বছরের জন্য ক্ষেতটা তার )। আমি পরদিন বাড়িটা পরিস্কার করে।
বিছানা উল্টিয়ে সবকিছু কাপড় দিয়ে ডেকে দিলাম। বাড়িতে তালা দিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম আসার সময় মার কবরের পাশে গিয়ে অনেকক্ষন খবর যিয়ারত করলাম। ঢাকায় আসতে আসতে রাত হলো। ঠিক করলাম পরদিন অফিসে যাবো। আমার নিয়ত হলো। দূই থেকে তিনবছর মন দিয়ে কাজ করে কিছু টাকা ইনকাম করে। একেবারে বাড়িতে চলে যাবো। বাড়ির পাশে বাজারে একটা দোকান নিয়ে ব্যাবসা করবো । নিজের পছন্দ মতো একটা বিয়ে করে। মা বাবার কবরের পাশে সারাটা জীবন পার করে দিবো। আমি পরদিন অফিসে গেলাম। মনি আপুর সাথে দেখা করতে হবে। কারণ আমার ওভারটাইম কাজ করা দরকার। অফিসে গিয়ে চুপচাপ বসে রইলাম। কিছুক্ষণ পর সারা আসলো। বললো
সারা: এই নে । এই শার্ট_ টা তর বন্ধু রাহাতকে দিস।
আমি: ওকে।
সারা: তর বন্ধু রাহাত কি করেরে?
আমি: কেনো?
সারা: এমনি।
আমি: তার অজান্তেই আমি কাওকে তার পরিচয় দিতে পারবো না।
সারা: ওকে।
আমি: মনি আপু অফিসে আছে। আমি তার সাথে দেখা করতে পারবো।
সারা: আছে। কিন্তু তিনি এখন দেখা করার অবস্থায় নেই।
আমি: কেনো?
সারা: এখন তিনি তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে একান্তে কথা বলছে সেজন্য।
আমি: ওহ । উনার বয়ফ্রেন্ডের সাথে কথা শেষ হলেই। আমাকে কথা বলার ব্যাবস্থা করে দেন।
সারা: দিতে পারি একটা শর্তে।
আমি: কি শর্ত?
সারা: তর বন্ধু রাহাতের নাম্বার লাগবে।
__আমি ভাবলাম সারা নিজেই দেখি রাহাতকে পছন্দ করে। আমি আর রাহাতকে সারাকে কি দেখাবো?কিন্তু আমার মন চাচ্ছে সারার মারামারি দেখতে। বাস্তবে কোনোদিন মেয়েদের মারামারি দেখিনি। রাহাতকে দিয়েই ফাঁসাতে হবে। আমি বললাম
আমি: যদি আমাকে মনি আপুর সাথে কথা বলার সুযোগ দেন । তাহলে আমি দিবো।
সারা: ওকে। আমি ফোন দিলে চলে আসিছ।
আমি: ওকে।
,__সারা চলে গেলো। দুই একটা কাজ আসলো। কাজ গুলো করলাম। কিছুক্ষণ পর সারা কল দিয়ে বললো মনি আপুর অফিসে যেতে। আমি মনি আপুর অফিসে গেলাম। গিয়ে দেখি মনি আপু আর সারা বসে আছে। আমি বললাম
আমি: বসতে পারি।
মনি আপু: বস।
আমি: ধন্যবাদ।
মনি আপু: কি বলবি বল?
আমি: ম্যাডাম ওভারটাইম কাজ করার কোনো ব্যাবস্থা আছে।
মনি আপু: নাহ এই অফিসে ওভারটাইম এর কোনো ব্যাবস্থা নেই। কিন্তু আমাদের অন্যন্যা শাখা আছে। ঐগুলোতে ওভারটাইম এর ব্যাবস্থা আছে।
আমি: ওহ। দেখেন না ম্যাডাম ওভারটাইম এর কোনো ব্যাবস্থা আছে কিনা।
মনি আপু: সারা ম্যানেজারকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করতো ওভারটাইম হবে কিনা।
সারা: ওভারটাইম থাকলেও তো রাফিদ কে দেওয়া যাবে না। আমাদের অফিসে যারা পুরোনো তারা কানাঘুষা করবে।
মনি আপু: ঠিক। রাফিদ ওভারটাইম নেই। চট্টগ্রাম শাখায় অনেক ওভারটাইম আছে। ঐখানে এখন লোক নেওয়া হচ্ছে। তুই চাইলে সেখানে ট্রান্সফার করে দিতে পারি।
সারা: রাফিদ ওভারটাইম দিয়ে কি করবে? আর ওভারটাইম এ তো বেশি টাকা পাবি না। তারতো কোনো বাড়িওয়ালা নেই।
আমি: বাড়িওয়ালা হতে কতক্ষন।
__আমার এই কথা শুনে মনি আপু আর সারা হাসতে লাগলো। মনি আপু বললো
মনি আপু: আচ্ছা আচ্ছা। তকে চট্টগ্রামে ট্রান্সফার করে দিচ্ছি। তূই রাজি।
__আমি ভাবলাম। আমার দরকার টাকা এখন যেখানে বলবে সেখানে যাবো। আমি বললাম
আমি: সেখানে কতো টাকা পাবো।
সারা: সেটা তর কাজের উপর নির্ভর করবে।
আমি: ওকে। আমি যাবো।
আমার রাজির কথা শুনে মনি আপু আর সারা অবাক। ভাবছিলো হয়তো আমি মজা করছি। মনি আপু বললো।
মনি আপু: সারা রাফিদ কে ভালো একটা পোষ্টে ঢুকিয়ে দে।
সারা: আচ্ছা দেখছি।
__দেখি সারা কাকে জানি কল দিয়ে কথা বলতে লাগলো। একটু পর বললো
সারা: ম্যাডাম ভালো কোনো পোষ্টে ঢুকানো যাবে না। কারন সে গুলো অলরেডি বুক। আর কাজের দক্ষতা ছাড়া উনি কাওকে ভালো কোনো পোস্টে চাকরি দিবে না।
মনি আপু: বল এটা আমার আদেশ।
সারা: কি করে বলবো? এটাতো আপনারই আদেশ। আপনার আদেশ আপনি নিজেই অমান্য করবেন।
__মনি আপু আমার মুখের দিকে তাকালো মুচকি হাসি দিয়ে বললো
মনি আপু: তুই এখন সিন্ধান্ত নে।
আমি: ম্যাডাম আমি কাজকে সব সময় বড় করে দেখি। যদি ভালো পরিমাণ বেনিফিট পাই । তাহলে আমি যাবো।
মনি আপু: আচ্ছা। সারা আমাদের চট্টগ্রাম যাওয়ার কোনো সিডিউল আছে।
সারা: আছে আগামীকাল।
মনি আপু: আমরা চট্টগ্রাম যাচ্ছি। তুই চাইলে আমাদের সাথে যেতে পারিস।
আমি: ওকে। ধন্যবাদ আমি আগামীকাল তৈরি হয়ে আসবো।
__এই বলে আমি চলে আসলাম বাসায়। এসে রাহাতকে সব বললাম। রাহাত বললো।
রাহাত: তর যেটা ভালো মনে হয় কর। আমি যেখানে আছি সেখানেই থাকবো।
আমি: এই নে তর শার্ট সারা দিয়েছে।
রাহাত: দেখি মামা। আসল কথা জানিস। সারাকে আমার ভালো লাগছে।
আমি: দেখ আমি চট্টগ্রাম চলে যাচ্ছি। সারা কিন্তু অনেক জেদি। কোনো ঝামেলা হলে পরে সামলাতে পারবি কিনা দেখ। শুন আমি তকে একটা গল্প শুনাই।
__আমি তাকে মনি আপুযে আমাকে মার ছিলো সেটা বললাম। রাহাত বললো
রাহাত: তাহলে ভাই আমি নাই। তুই যদি কোনো একটা ব্যাবস্থা করে দিতে পারতি তাহলে আমি কিছু করতাম। এখন তুই চলে যাচ্ছিস আমি আর এগুলোর মধ্যে নেই।
আমি: সেটাই।
রাহাত: কিন্তু তারে যে আমার ভালো লাগে।
আমি: ওয়েট কর । আমিই তকে সুযোগ বের করে দিবো। আমি তাদের কোম্পানির অন্য শাখায় যাচ্ছি। আমিতো আর বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছি না।
রাহাত: ওকে আমি তর মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম। মামা চল না আজ রেষ্টুরেন্ট থেকে খেয়ে আসি।
আমি: আচ্ছা চল ।
__আমি আর রাহাত ভালো একটা রেস্টুরেন্টে গেলাম। রাহাত সারার দেওয়া শার্ট টা পড়লো। সারার চয়েস আছে ভালো। রেষ্টুরেন্টে গিয়ে আমরা কিছু পিক তুললাম। খাওয়া দাওয়া করে বাসায় চলে আসলাম। পরদিন প্রয়োজনীয় সব কিছু নিয়ে । সারার দেওয়া লোকেশনে গিয়ে হাজির হলাম। দেখি মনি আপু একটা যা ড্রেস পড়ছে তাকাতেই লজ্জা করছে। টাইট প্যান্ট মেচিং করা শার্ট। চোখে চশমা। সারারো একি ভাব। আমি সারার কাছে গিয়ে বললাম।
আমি: আপনি যে পোশাক পড়ছেন। রাহাত সেটা কোনো ভাবেই পছন্দ করবে না।
__সারা ভাব ধরে বললো।
সারা: পছন্দ না করলে করুক। তাতে আমার কি ?
আমি সারাকে গত রাতের রাহাতের একটা পিক ওয়াটসআপে দিলাম। সারা ছবিটা অনেকক্ষন লাগিয়ে দেখলো বললো।
সারা: রাহাত শার্ট পছন্দ করছে। ইয়েস ইয়েস। এই প্রথম মনে হয় কেও আমার পছন্দ করা জিনিস পছন্দ করছে।
আমি: আচ্ছা আমি রাহাতকে বলবো আপনি কেমন। আপনি কেমন পোশাক পড়েন এখানে।
সারা: রাফিদ ভাইয়া তুই না আমার ভাই লাগস। আজকেই শেষ আর পড়বো না। ।
আমি: ওকে।
__মনি আপু এসে বললো।
মনি আপু: রাফিদ গাড়ি চালাতে পারস।
আমি: না।
সারা: গাড়ি আমি চালাবো ওঠেন।
আমি মনি আপুর সাথে পিছনে বসলাম। সারা বলে গাড়ি চালানোর সময় যদি পাশে কোনো পুরুষ মানুষ থাকে। তাহলে সে বলে গাড়ি চালাতে পারে না। যত্তসব ফালতু কথা। আমি গাড়িতে বসে বিভিন্ন ডকুমেন্টরি ভিডিও দেখতাছি। মনি আপু বললো ।
মনি আপু: এটা বন্ধ কর না ভালো লাগছে না। সারা আর কতক্ষন লাগবে।
সারা: আর এক ঘন্টা।
মনি আপু: আমি ঘুমাই।
__মনি আপু চোখের মধ্যে কাপড় দিয়ে ঘুমাতে লাগলো। কিছুক্ষণ পর আমার কাধে হেলে পড়লো। আমি সারাকে ইশারা দিয়ে বললাম। কি করবো?
সারাও ইশারায় বুঝালো থাক এভাবে থাক। মনি আপুর গরম নিঃশ্বাস আমার ঘাড়ে এসে পড়ছে। আমার ভিতর কেমন শির শির করছে। আমি রোবটের মতো বসে রইলাম। সারা আমার অবস্থা দেখে হাসছে। কিছুক্ষণ এর মধ্যে চট্টগ্রাম তাদের আরেক কোম্পানিতে চলে আসলাম। দেখি ম্যানেজার আরেকটি সুন্দরী মেয়ে মনি আপুদের রিসিভ করছে। মেয়েটাকে আমি চিনেছি। আগে মনে হয় একবার দেখছিলাম। ওনার লেপটপে সমস্যা হয়েছিলো। পরে আমি ঠিক করে দিয়েছিলাম। ম্যানেজার সাহেব মনি আপুদের নিয়ে । মিটিং এ বসলো । অনেকক্ষন মিটিং করলো। মিটিং শেষে আমার সাথে ম্যানেজারের পরিচয় করিয়ে দিলো। মনি আপুরা চলে গেলো । ম্যানেজার সাহেব বললো
ম্যানেজার: তুমি যেহেতু এই পুরো কোম্পানির বসের স্পেশাল গেষ্ট । তাই তোমাকে পার্মানেট কাজ হলো এখানে বসে তুমি বসে থাকবা। অফিসের অকম্প্লিট কাজ গুলো করবা। এখানে তুমি 3 ঘন্টা সময় দিবে ।
আর বাকি 3 ঘন্টা হলো তোমার ওভারটাইম।
আমি: ওভারটাইমে আমি কি কাজ করবো?
ম্যানেজার: আসলে কি জানো? আমার মেয়েটা একটু পাগলামো টাইপের। মাঝে মাঝে কি জানি হয়। সব ভেঙ্গে ফেলে। তাই আমি ঠিক করছি তোমার ওভারটাইম হলো আমার মেয়েকে সময় দেওয়া।
__এই বলে কাকে জানি ফোন দিলো বললো আসতে।
ম্যানেজার: আমার মেয়ে আসতাছে।
__একটু পর দেখি । মেয়েটা আসলো। মেয়েটাকে চিন্তে পারছি। তার লেপটপই আমি ঠিক করে দিয়েছিলাম।
Spoiler: (মনি আপু গল্পের নায়িকা)
চলবে....
পাঠক-পাঠিকারা আমরা তোমাদের জন্য গল্প লেখি।
গল্পের এক পার্ট লেখতে আমাদের ২-৩ ঘন্টা চলে যায় । আর তোমাদের একটা রিয়েক্ট দিতে এক সেকেন্ড লাগবে। তাই কেউ রিয়েক্ট না দিয়ে যাবেন না। আর ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।
ভুল ক্রটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
13 pat koe galo
ReplyDelete