অন্তিম পার্ট****
**আমি বাসার ভিতর যেতেই,,, আব্বু বলল,,
আব্বু : সারাদিন কোথায় ছিলে তুমি,,, ( খুব রেগে আছে মনে)
আমি : আব্বু একটা কাজ ছিল তাই একটু বাহিরে ছিলাম
আব্বু : যাও তারাতারি এগুলা পরে রেডি হয়ে আস( বলেই আব্বু আমার হাতে পানজাবি পায়জামা দরিয়ে দিল)
**আমিতো আব্বু ব্যবহারে অভাক হয়ে গেছি।কারণ আব্বু কখনো আমার সাথে রাগ করে কথা বলে না।আর তার চাইতে বেশি অভাক হয়েছি বাসায় যখন নিধির পরিবারের সবাইকে দেখলাম।তখন আমি বললাম,,,,
আমি : আব্বু এখন পানজাবি পরে কী হবে....
আব্বু : তুমার আর নিধির বিয়ে এখন। বেশি কথা না বলে তারাতারি এগুলা পরে রেডি হয়ে আস।কাজি এখনি চলে আসবে। ( রাগ দেখিয়ে বলল)
**আমি আর কিছু বলার সাহস পেলাম না। কারণ আব্বু এমনিতেই রেগে আছে। কিন্তু রেগে থাকার কারণটা এখনো আমার অজানা আর কারো কাছে কিছু জানতে চাইব যে,সে অবস্থাও নাই কারণ সবাই যে যার মত ব্যস্ত। তাই আর কিছু না বলে চলে গেলাম আমার রুমে। কিন্তু নিধিকে আসার পর থেকে দেখলাম না। কোথায় আছে কে জানে। আমি রেড়ি হয়ে রুমে বসে আছি এমন সময় আমার বোন সারা এসে বলে,,,
সারা : ভাইয়া নিচে আস, সবাই তুমার অপেক্ষা করছে।
আমি : আসতেছি। কিন্তু এগুলা কী হচ্ছে আমাকে একটু বলবি বোন ( খুব অনুনয় করে বললাম)
সারা : কী আবার হবে তুমার বিয়ে হচ্ছে। বাকিটা বিয়ের পর জানতে পারবে,,,এখন নিচে আস তারতারি,,,
**কী আর করা গেলাম নিচে। গিয়ে দেখি কাজি সহ সবাই চলে আসছে। নিধিকেও খুব সুন্দর করে বউ সাজানো হয়েছে দেখতে একদম ডানা কাটা পরীর মত লাগবে। তারপর আমাকেও নিধির পাশে বসানো হল। কিন্তু একটা বিষয় খেলায় করলাম আমি নিধির দিকে দুই,তিন বার তাকালেও নিধি আমার দিকে সেভাবে তাকায় নি। আর নিধির চেহার দেখে স্পট বুঝা যাচ্ছে যে নিধি কোন বিষয়ে রেগে আছে। কারন নিধির চেহারায় তখন রাগটা স্পট ভেসে ওঠেছে,,
**কিছুক্ষন পর কাজি আমাদের বিয়ের কাজ শুরু করল। তখন কাজি সাহেব আমাকে কবুল বলার জন্য বলে।আমি একটু সময় নিয়ে কবুল বলে দিলাম।তখন কাজি সাহেব নিধিকে বলে কবুল বলতে। আর নিধি সাথে সাথেই কবুল বলে দেয়। মনে হয় কবুল বলার জন্য কোন কবুল প্রতিযোগিতায় ওঠছে যে তারাতারি বললেই জিতে যাবে। তারপর আমাদের বিয়ে সমর্পূণ হয়ে গেল।
**আমাদের বিয়ের পরে বাহির থেকে যারা আসছিল তারা খাওয়া দাওয়া করে চলে গেল। আর এতখন সময় আমি আর নিধি একসাথে বসে ছিলাম কিন্তু নিধি আমার সাথে কোন কথা বলে নি। আমি ওর দিকে তাকালেই রাগি চোখে আমার দিকে তাকায় তাই আমিও ভয়ে কিছু বলতে পারি নাই।
""সবাই চলে যাওয়ায় এখন শুধু আমাদের বাসায় নিধির পরিবারের লোকজন ছারা আর কেও নাই। আর তখন আমার আব্বু বলে,,,
আব্বু : এই তোমার সবাই এখানে আস এখন সিমান্তের বিচার হবে,,,,
""আমার বিচারের কথা শুনে সুফায় বসা ছিলাম সেখান থেকে লাফ মেরে দাড়িয়ে গেলাম। আর বললাম,,
আমি : আমার বিচার মানে, কী করছি আমি যে আমার বিচার করবেন,,,?(অভাক হয়ে প্রশ্ন করলাম)
আশে থেকে আম্মু বলল...
আম্মু : তুই মনে হয় জানিস না তুই কী করছিস...
আমি : তুমরা যদি না বল তাহলে আমি কী করে জানব যে আমি কী করছি। আর আমার জানা মতে এমন কিছু আমি করি নাই যার জন্য তুমরা আমার বিচার করবা (কথাটা খুব আত্ম বিশ্বাসের সাথে বললাম)
""আমার এভাবে কথা বলা দেখে আব্বু বলল,,,,
আব্বু : তুমি কালকে কোন মেয়েকে কাজি অফিসে নিয়ে বিয়ে করতে চাইছস।তুমার সাথে নিধির বিয়ে ঠিক হয়ে আছে তারপরেও তুমি কিভাবে এমনটা করতে পারলা,তুমি না নিধিকে ভালবাস,,,,(আব্বু কথাটা খুব রাগ দেখিয়ে বলল)
""আমিতো আব্বু কথা শুনে ঠাস করে মনে হয় আকাশ থেকে মাটিতে পরলাম। আমি আবার কোন মেয়েকে বিয়ে করতে যাব। তখন আমি বললাম,,,,
আমি : এসব মিথ্যা কথা। কে বলছে এসব আপনাকে,,,
আব্বু : মিথ্যা কথা কেন হবে, নিধি নিজে আমাদের সব বলছে,,,
""আব্বুর কথা শুনে আমি নিধির দিকে তাকাই দেখি নিধি কান্না করছে। তখন আমি নিধিকে বলি,,,,
আমি : নিধি তুমি এগুলা কী বলছ আমি কাল বিয়ে করছি মানে কী আর তুমি এই খবর কোথায় শুনলা,,,
নিধি : তুমি যাকে বিয়ে করবা তার বান্ধুবী নিজে আমাকে বলছে। আর আমি তুমার বন্ধু আতিককে জিঙ্গাসা করছি সেও বলল তুমি কাজি অফিস গেছ কী কাজ করতে। তার মানে তুমি কালকে বিয়ে করবে এটা নিশ্চিত।
আমি এখন মোটামুটি দরতে পারছি ভুলটা কোথায় হইছে। কিন্তু শিওর হাওয়ার জন্য বললাম,,,
আমি : আমি যাকে বিয়ে করব তার নামটা কী তুমি যান। জানলে বল,,,
নিধি : জানি। তার নাম হল মায়া,,,,
** এবার আমার হাসি চলে আসল। আর আমি সবার সমানে হু হু করে হাসতে লাগলাম।আর এভাবে হাসতে দেখে সবাই অভাক হয়ে যায়।তখন আব্বু বলল,,,
আব্বু : তুমি এ ভাবে হাসতাছ কেন। আগে আসল কারণটা বল নিধি যা বলল তা সত্যি নাকি মিথ্যা,,,
আমি : সত্যি,,,,,কিন্তু (কথা বলার আগেই আব্বু)
আব্বু : কীহ তুমার এত বড় সাহস তুমি অন্য একটা মেয়েকে বিয়ে করবে। আজকে তুমার খবর আছে
""বলে আব্বু যখন আমাকে মারতে আসবে তখন আমি বললাম,,,
আমি : আব্বু প্লিজ থামেন। আগে আমার কথা পুরটা শুনেন তারপর আমার বিচার করেন,,,
আব্বু : হুম বল কিন্তু অন্যায় তুমার হলে খবর আছে আজকে,,,,
**তারপর আর কী, আমি একে একে সারাদিনের সব কাহিনী খুলে বললাম। আর আমার কথা শুনে সবাই মাথা নিচু করে ফেলে। তখন নিধির মা বলল,,
নিধির মা : আমি আগেই বলেছিলাম সিমান্ত এমন কাজ করতেই পারে না। শুধু শুধু নিধির কথা শুনে এতকিছু করতে হল। আর সিমান্তকে এত কথা শুনতে হল। সব দোষ নিধির,,,
**এ কথা শুনেই নিধি ব্যা করে কেদে দিয়ে বলে,,,
নিধি : আমি কী জানতাম নাকি ঐ মেয়ে আমাকে মিথ্যা বলছে। আমি জানলে কী আর এমন করতাম নাকি। আমি সব করছি সিমান্তকে হারানোর ভয়ে। কারণ ও যদি কিছু করে ফেলে তাহলে আমার কী হবে। এর পর শুধু ব্যা, ব্যা, ব্যা,,,,,,,
তখন আমার আম্মু নিধির মাথায় বুলিয়ে বলে,,
আম্মু : না মা তুই কোন ভুল করিস নি। যা হবার হয়ে গেছে এখন দুজনে মিলে জীবনটা সুন্দর করে সাজিয়ে নে।আর আমরা যেন সামনের বছর দাদা দাদী হতে পারি মনে রাখিস কিন্তু।
*আম্মুর এ কথা শুনেই নিধি লজ্জায় লাল হয়ে সেখান থেকে চলে যায়। আর আমি চলে যাই ছাদে।ছাদে গিয়ে ভাবতে থাকি কী থেকে হয়ে গেল। যেখানে আজ দিনের বেলায়ও কত সুন্দর সিঙ্গেল ছিলাম আর রাত না হতেই হয়ে গেলাম ডাবল।ভাবছিলাম আরো কয়েক দিন। সিঙ্গেল লাইফের মজা নিব কিন্তু ডাইনিটা তা আর হতে দিল না।
**ছাদে একা দাড়িয়ে এসব ভাবছিলাম তখন আমার বোন এসে বলে,,,
সারা : কিরে ভাই আজ রাত কী ছাদেই পার করবা নাকি কয়টা বাজে সে খেয়াল আছে। তারাতারি রুমে যাও ভাবি তোমার অপেক্ষা করছে(বলেই একটা হাসি দিয়ে চলে গেল)
আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ১২:৩০ বাজে। তাই রুমে দিকে যেতে লাগলাম। আর ভাবছি নিধিকে একটু মজা দেখাব। তাই বুকের সাহস নিয়ে ডুকলাম রুমে। রুম ডুকেই দেখি পুরা রুম ফুল দিয়ে সাজানো। আর খাটের মাঝে বসে আছে নিধি।আর আমাকে দেখেই নেমে এসে সালাম করল।আর বলল,,,
নিধি : অজু করে আস এক সাথে নামাজ পরে নেই।
তারপর আমি অজু করে এসে দুজনে একসাথে নামাজ পরে নিলাম। আর নামাজ পরে আমি খাটে বসতেই নিধি আমাকে জড়িয়ে দরে। আর বলে,
নিধি : প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও আমি বুঝতে পারি নি।
আমি : ঠিক আছে দিলাম ক্ষমা করে (মুখ অন্যদিকে ঘুড়িয়ে বললাম)
নিধি : তাহলে এখন আমাকে আদর কর। আমার না খুব আদর আদর পাচ্ছে (কথা আমার কাছে বলল)
আমি : আমি এখন কিছুই করতে পারব না। সর আমি ঘুমাব (একটু রাগ দেখিয়ে বললাম)
নিধি : নিচে আম্মু কী বলল ভুলে গেছ। আদর না করলে তাদের কথা কেমনে রাখব,,,
আমি : আমি কিছু জানি না তুমি কীভাবে তাদের কথা রাখবে। আমি কিছু করতে পারব না
**আমার কথা শুনার সাথেই নিধি রেগে যায়। আর আমাকে বিছানায় ফেলে দিয়ে আমার ওপরে সুয়ে বলে,,,,
নিধি : ঠিক আছে, তুমার কিছু করতে হবে না যা করার আমিই করছি।আজকে আর কোন বাধা মানব না সব কিছু নিজের করে নিব,,,
আমি : আরে আরে কী করছ,,,, (আমাকে কিছু বলতে না দিয়ে নিধি বলল)
নিধি : চুপ একদম চুপ, তুমার গল্পের নাম কী দিছ ভয়ংকর রাগী রংবাজ সিনিয়র চাচাতো বোন তাই না। এখন আমি তোমার ভয়ংকর রাগী রংবাজ সিনিয়র বউ।আর রংবাজ বউ এখন তুমার সাথে রংবাজি করবে।
**এ কথা বলে নিধি সিমান্তের ওপর জাপিয়ে পরে রংবাজি করতাছে,,,, আর বাকিটা ....... ****************************************************************ইতিহাস
সমাপ্ত