পার্ট : ১২
**আমি আর কিছু না বলে বাহিরে চলে আসি। তারপর আর আমি বাহিরে বের হই নাই।আর এভাবেই বাকি ক্লাস করে ছুটি হলে বাসায় চলে আসি। কিন্তু আমি কল্পনাও করতে পারি নাই যে আমার জন্য বাড়িতে এত বড় একটা সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে।আমি বাড়িতে আসতেই,,, আমার ছোট বোন,,,
সারা : ভাইয়া হা কর আমি তোকে মিষ্টি খাইয়ে দেই,,, (বলে আমার মুখে একটা মিষ্টি ডুকিয়ে দিল)
**আমি মিষ্টিটা খেয়ে ওকে বললাম,,,
আমি : কিরে বাড়িতে কোন খুশির খবর আছে নাকি যে মিষ্টি খাওয়ানো হচ্ছে,,,,
সারা : আছে কিন্তু আমি তোমাকে বলতে পারব না নিষেধ আছে আম্মু বলবে তোমাকে,,,
আমি : কেন তোর কী বিয়ে ঠিক হইছে নাকি যে তোর বলতে লজ্জা লাগে যে আম্মু এসে বলবে।
সারা : আমার না তোর বিয়ে ঠিক হইছে,,,
আমি : আচ্ছা এত ভাল খবর তাহলে তুই যা গিয়ে রেডি হতে থাক আমার বিয়েতে যাবি না।
**আমি জানি যে আমার বোন আমার সাথে প্রায়শই দুষ্টুমি করে এটা ঐটা বলে বেড়ায়। তাই আমি ওর কথাটার কোন মুল্য না দিয়ে আমার চলে আসলাম। তারপর ফ্রেস হয়ে নিচে গিয়ে আম্মুকে বললাম,,,
আমি : আম্মু খুব ক্ষুদা লাগছে তারাতারি খেতে দাও। (টেবিলে বসে বললাম)
আম্মু : একটু অপেক্ষা কর আমি খাবার দিচ্ছি
**তারপর আম্মু আমাকে খাবার দিল। আমি খাবার খাচ্ছি আর একটা বিষয় খেয়াল করলাম আম্মুকে আজ একটু অন্য রকম লাগছে। কিন্তু সকালে যখন কলেজে যাই ঐ সময়তো সবকিছু ঠিক ছিল তাহলে এখন কী হল,,
তাই আমি আম্মুকে বললাম,,,
আমি : আম্মু বাসায় কী কিছু হইছে?
আম্মু : কেন বাসায় কী কিছু হওয়ার কথা ছিল নাকি,,,( আম্মু কথায় কেমন যেন একটা রাগ রাগ গন্ধ পাচ্ছি)
আমি : না মানে, বাসায় আসতেই সারা আমাকে মিষ্টি খাওয়াল। ওকে জিঙ্গাসা করলাম মিষ্টি কেন খাওয়াল তখন বলল ওর নাকি বলা নিষেধ। আর এখন তুমিও জানি কেমন করে কথা বলছ তাই বললাম আর কী,,,,বাসায় কিছু হইছে নাকি,,,
আম্মু : বাসায় কী হইছে তা তুমার আব্বু আসলে বলবে। এখন খাবার খেয়ে তুমার রুমে যাও,,,
**আমি আর কিছুই বললাম না। সবার ব্যবহার জানি কেমন লাগছে। কেউ এসে মুখে মিষ্টি গুজে দিচ্ছে আবার কেউ এমন ভাবে কথা বলছে যে পেট থেকে মিষ্টি বেরিয়ে আসার উপক্রম। তাই আমি আর কিছু না বলে চুপচাপ খেয়ে রুমে চলে আসি। একটু একটু টেনশন হচ্ছে যে বাসায় কী হল এটা ভেবে আবার নিজেকে এতটুকু শান্তনা দিচ্ছি যে আমিতো কিছু করি নাই তাহলে আর আমার কী হবে,,।
**এ ভাবে সারাটা দিন চলে গেল। এর ভিতর অবশ্য নিধি তিন বার কল দিছিল কিন্তু আমি রিসিভ করি নাই। রাতে আমার রুমে সুয়ে সুয়ে মোবাইল টিপছিলাম এমন সময় আমার বোন সারা এসে বলল,,,
সারা : ভাইয়া তুমাকে আব্বু ডাকছে তার রুমে যেতে।
আমি : আচ্ছা, তুই যা আমি আসছি...
**এ কথা বলেই সারা চলে গেল।আর আমি আব্বুর রুমে যাচ্ছি আর ভাবছি যে আব্বু কী জানি বলে। তখন আবার আম্মু বলল আব্বু নাকি কী বলবে।আর এসব ভাবতে ভাবতে আব্বুর রুমে চলে আসি,,,
আমি : আব্বু আমাকে ডাকছেন,,,( হাসি দিয়ে বললাম)
আব্বু : হুম ডাকছি এখানে বস তুমার সাথে কথা আছে।
আমি : হুম বলেন আমি শুনছি
আব্বু : দেখ আমি কথা সরাসরি বলতে পছন্দ করি তাই যা বলব তুমিও সরাসরি উত্তর দিবে
আমি : হুম বলেন,,,
আব্বু : তুমাদের সম্পর্ক কত দিন ধরে চলছে,,,,,
""আব্বুর কথা শুনে আমি ঠাস করে মনে হয় আকাশ থেকে পড়লাম। আব্বু কিসের আর কার সম্পর্কের কথা বলছে। তখন আমি বললাম,,
আমি : আপনি কার আর কিসের সম্পর্কের কথা বলছেন,,,,?
আব্বু : এখন না জানার অভিনয় কর না। আমি তুমার আর নিধির সম্পর্কের কথা বলছি
**এখন আমার অবস্থা যায় যায়।আব্বু বলে কী আমার সম্পর্ক তাও আবার আস্তা গুন্ডি আর রংবাজ নিধির সাথে ইম্পসিবল। তখন আমি বললাম,,,
আমি : আব্বু সব মিথ্যা কথা। আপনাকে মনে হয় কেউ মিথ্যা বলছে আমার নামে। নিধি আপুর সাথে আমার কোন রকম সম্পর্ক নাই (এক দমে বলে দিলাম)
""পাস থেকে আম্মু বলে ওঠে,,,
আম্মু : অন্য মানুষ কেন বলতে যাবে হুম।নিধি নিজে বলছে তোর আর নিধির সম্পর্কের কথা।তোদের দুই বছরের রিলেশন আর তোরা একে অপরকে নাকি অনেক ভালবাসিস।
আমি : আম্মু তোমরা বিশ্বাস কর সব মিথ্যা কথা।
আম্মু : হইছে এখন আর মিথ্যা বলতে হবে না আমরা সব জানি। তোরা একে অপরকে ভালবাসিস, বিয়ে করতে চাস এটাতো ভাল কথা। তুই নাকি আমাদের কাছে বলতে লজ্জা পাস তাই বলছিস না বিয়ে কথা। তাই নিধি ওর বাবা-মা, আর আমাদের কাছে সব বলছে।
আমি :..............( চুপ করে বসে আছি। মাথায় ওপর দিয়ে এমন ভাবে কথা গুলা যাচ্ছে যে আমি যেকোন সময় অঙ্গান হতে পারি)
""আমার চুপ থাকা দেখে আম্মু আবার বলতে শুরু করল,,,,
আম্মু : আমরা কী তোকে কখনো কোন কিছুতে না করছি নাকি কোন কিছুতে বাধা দিছি।সব সময় তোর সিন্ধান্তকে সাপোর্ট করছি।তাহলে আজ তুই কিভাবে ভাবলি যে তোর লাইফের এত বড় একটা সিন্ধান্ত আমরা বাধা দিব। কিন্তু তুই আমাদের কাছ থেকে এত বড় একটা বিষয় লুকিয়ে রাখলি।নিধি যদি না বলত তাহলেত আমরা জানতেই পারতাম না।তাই তোর প্রতি একটু অভিমান করে ছিলাম।
**এইটুকু বলে আম্মু চুপ হলে তখন আব্বু বলে,,,
আব্বু : আজ তোমার বড় চাচ্চু আর বড় চাচী আসছিল বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে। আমি তাদের কাছেই এসব শুনছি।এখন আমাদের কারো এ বিয়ের অমত নেই। কারণ আমরা আগেই চেয়ে ছিলাম তুমার আর নিধির বিয়ে দিতে। কিন্তু তুমার চেয়ে নিধি একটু বড় তাই তোমাকে বলতে চাইনি। কিন্তু এখন যেহেতু তুমরাই একজন আরেক জনকে পছন্দ কর তখনতো ভালই হল আমাদেরও মনের আসা পুরণ হবে। এখন তুমি বল কবে বিয়ের তারিখ ঠিক করব,,,
**আমার এখনো তাদের কথা শুধু কানের ভিতর দিয়ে মাথায় ভিতর ডুকছে আর মাথা ভিতর গিয়ে হরতাল শুরু করে দিছে,,, আমার এখন কী বলা উচিত বা কী করা উচিত জানি না। আমি শুধু বেভলা কান্তের মত একবার আম্মুর দিকে তাকাচ্ছি আর একবার আব্বুর দিকে তাকাচ্ছি। আমার এ ভাবে তাকানো দেখে আব্বু আমাকে দমক বলল,,
আব্বু : কী হল তুমার এমন বোকার মত এদিক ওদিক কোন তাকাচ্ছ। বল কবে বিয়ে করতে চাও নাকি আমরাই আগামী মাসে বিয়ের ডেট ঠিক করে ফেলব,,,
**না আমার মনে হয় এদের কথা শুনে আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারলাম না। আমি শুধু,,,
আমি : বিয়ে,,,ডেট,,,,,তারিখ,, হরতাল হরতাল হরতাল ....( সেন্সলেস হয়ে পরে গেলাম। আমি কী বললাম আমি নিজেও জানি না । কারণ এত সুন্দর মিথ্যা কথা শুনে কয়জনি বা পারে নিজেকে ঠিক রাখতে)
**এদিকে সিমান্তের এভাবে সেন্সলেস হয়ে পরে যাওয়া দেখে তার বাবা- মা বুকা হয়ে যায়। কারণ বিয়ের কথা শুনে ছেলে অঙ্গান হয়ে যাবে তারা ভাবতেও পারে নাই।তখন তারা ডাক্তার কে কল দেয় আসতে আর সাথে নিধির বাসায়ও খবর পাঠিয়ে।
**অন্যদিকে সিমান্তের অঙ্গান হওয়ার কথা শুনে নিধি পাগল হয়ে ছুটে আসে সিমান্তের বাসায়। এসে সারার কাছে জানতে চায় সিমান্তের কী হইছে।সারা তখন নিধির কাছে পিছনের সব ঘটনা খুলে বলে। আর এসব শুনে নিধির মনে মনে হাসতে থাকে। বলে শুধু এতটুকু করলাম তাতেই অঙ্গান বাকিটাতো এখনো বাকিই আছে।
**আমার যখন ঙ্গান ফিরল তখন দেখি নিধি আমার মাথার পাশে বসে আমার চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। আর আমাকে চোখ খুলতে দেখেই একটা হাসি দিয়ে বলল,,,
চলবে,,,,,
শেষ করে দিব তারাতারি,,,,,