#লেখকঃরনি হাসান
#পর্বঃ৬
মনে মনে হাজারো ভয় লাগা কাজ করছে। রিদিতাও মেসে গিয়ে আমাকে শাসিয়ে আসছে। মুন্না ভাইয়ের হাত থেকে আজ আর রক্ষা নেই। আনমনে এসব ভাবতেই মুন্না ভাই সিড়ি বেয়ে নামতেই বলল " কীরে তোর সাহস দেখছি অনেক বেড়ে গেছে -
--"ইয়ে মানে ভাইয়া আপনি কি বলতে চাচ্ছেন
--"একটু অপেক্ষা কর সবই বুঝতে পারবি
মুন্না ভাইয়ের কথায় ভয়ে গলা একদম শুকিয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে আজ আর নিজেকে বাচাতে পারবো না। এখন শুধু রিদিতার উপর রাগ হচ্ছে ও তো জানতোই এসব ঝামেলায় নিজেকে জড়াতে চাই না। এসব জেনে শুনে আমাকে বিপদের মুখে ফেলে দিলো। তারপর ভেবে নিলাম আজ মুন্না ভাইয়ের হাতে মরতেই যখন হবে। তাহলে এত ভয় পেয়ে লাভ কি। এসব ভেবেই বলে উঠি
ভাই আমি খুব সাধারণ একজন মানুষ এসব ঝামেলায় নিজেকে জড়াতে চাই না।তাছাড়া আপনার সঙ্গে ব্যক্তিগত কোনো শত্রুতাও আমার নেই। তাহলে এখানে আমাকে আনার উদ্দেশ্য কি (ভয়েই)
--"উদ্দেশ্য অবশ্যই আছে। একটু অপেক্ষা কর সব বুঝিয়ে দিচ্ছি। মুন্না ভাই এই বলে রিদিতাকে ডাক দিলো। রিদিতা ও সঙ্গে সঙ্গে এসে পড়লো। আমাকে দেখেই হাসি উজ্জ্বল চেহারা উপস্থাপনা করে মুন্না ভাইয়ের উদ্দেশ্যে বলে উঠে
--"ভাইয়া ডেকেছো কেন-
--"এই ছেলেটার নাম কি রনি (জিজ্ঞেস করে)
--"হ্যা ভাইয়া (রিদিতা)
--"একেই তো ভালোবাসিস_? (মুন্না)
--"হুম (মাথা নাড়িয়ে বলল রিদিতা)
রিদিতার সঙ্গে কথা শেষ করে মুন্না ভাই আমাকে উদ্দেশ্যে বলে" রিদিতাকে শুধু ভালোবাসিস নাকি বন্ধুই ভাবিস কোনটা (মুন্না)
মুন্না ভাইয়ের কথাটা শুনার জন্য আমি মোটুও প্রস্তুত ছিলাম না। অবাক প্লাস ভয় নিয়ে বলি" ভাইয়া আপনি ভুল ভাবছেন । রিদিতাকে আমি ভালোবাসি না শুধুই বন্ধু ভাবি। রিদিতা তুই চুপ আছিস কেন ভাইয়াকে সবকিছু বল (আমি)
এত ভয় পাবার কি আছে ভাইয়াকে বলে দে তুই আমাকে ভালোবাসিস (রিদিতা)
(রিদিতার কাছ থেকে এ কথা শুনে আকাশ ভেঙে যেন আমার মাথার উপর পড়ার উপক্রম প্রায়। কি বলছে মাথা কি খারাপ হয়ে গেলো নাকি)
--"রিদিতা এটা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না। আমাদের মাঝে কখনো ভালোবাসার সম্পর্ক ছিলো না। বন্ধুত্বর সম্পর্কই ছিলো। আজ হঠাৎ এসব উল্টো পালটা কথা বানিয়ে বলছিস কেন (আমি)
--"কি আমি বানিয়ে বলছি তুই আমায় ভালোবাসি নাহ। আচ্ছা ঠিক আছে তোকে আমায় ভালোবাসতে হবে না(রিদিতা এই বলে ছোটো বাচ্চাদের মতো কান্না করে তার রুমে চলে গেলো। এইদিকে রিদিতার চোখের জল দেখে মুন্না ভাই রাগান্বিত হয়ে আমার শার্টের কলার চেপে ধরে বলে উঠে " আমার বোনের চোখের জল দেখলে আমার মাথা ঠিক থাকে না। ইচ্ছা করছে তোকে এখানে শেষ করে দেই (প্রচন্ড রেগে)
--"ভাই আপনি বিশ্বাস করুন আমার আর রিদিতার মাঝে কোনো ভালোবাসার সম্পর্ক ছিলো না। ও বানিয়ে এসব বলছে (আমি)
--"রিদিতা আমার শুধু বোন নাহ ও আমার মেয়ের মতো। ছোট থেকেই যখন যা চেয়েছে তাই এনে দিয়েছি। এবারেও তার আবদার আমি পুরুন করবো আর তা এই দুইদিনের মধ্যেই। জয়নাল বিয়ের সমস্ত আয়োজন প্রস্তুত কর কালকেই এদের বিয়ে সম্পুর্ন করবো ইনশাআল্লাহ (মুন্না)
জি আচ্ছা ভাই আমি বরং এখনি ডেকোরেশন এবং লাইটিং এ পুরো বাড়ি আলোকিত করার ব্যবস্থা করছি (খুশিতে গদগদ হয়ে জয়নাল বলে)
মুন্নার ভাইয়ের কাছ থেকে বিয়ে নামক শব্দটি শুনে পায়ের নিচে মাটি যেন সরে গেলো। পরিশেষে মাফিয়ার বোনকে বিয়ে করতে হবে। নাহ কোনোভাবেই সম্ভব না। এই বিয়ে আমি করতে পারবো না। আনমনে ভেবেই বলি " --"ভাইয়া আপনি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রিদিতাকে আমি বিয়ে করতে পারবো না -
--"মুন্না ভাই রাগান্বিত সুরে বলে উঠে" ছোট ভাই এত বেশি বুঝো নাহ। হীতে নিজের জীবন্টাই কিন্তু হারাতে হবে (মুন্না চোখ রাঙিয়ে)
এবার মনের মধ্যে ভয় ঢুকে গেলো নিমিষেই চুপ হয়ে গেলাম। সন্ত্রাসীর পালায় পড়েছি তাদের কথার প্রতিবাদ করলেই নিশ্চিত জীবন হারাতে হবে। তার থেকে চুপ করে থাকাই শ্রয় ও
--"একদিন পর"--
বিয়ের সকল নিয়মকানুন মেনে আমার আর রিদিতার বিয়ে সম্পুর্ন হয়ে গেলো। বিয়েতে সকল বন্ধুবান্ধব উপস্থিত ছিলো। শুধু আমার পরিবার আর আত্নীয়স্বজনরাই উপস্থিত ছিলো না। তাদের কথা ভেবে খুব খারাপ লাগছে। রিদিতা ওর জিদকে প্রধান্য দিয়ে হইত আমাকে বিয়েটা করতে বাধ্য করেছে। কিন্তু আমার মনের অবস্থা একবারেও বুঝতে চেষ্টা করলো না" ছাদের কিনায় এসে আনমনে ভাবছি --"পড়াশোনা করতে এসে বিয়ের চক্রে যে এভাবে পড়ে যাবো তা কখনো কল্পনা করেনি। অইদিকে বাবা মা ভাইয়া ভাবি তারা হইত আমার বিয়ের কথা জানতে পারলে অনেক কষ্ট পাবে। এখন এসব ভেবেই বা কি হবে বিয়ে তো আমি স্বইচ্ছায় করেনি। আনমনে ভেবে পিছনে দিকে ফিরে তাকাতেই নিলয় তানবীর তানিয়া তাদের কে দেখতে পেলাম। চুপ হয়ে আছি দেখে তানিয়া বলে উঠে
--"কিরে মন খারাপ করে আছিস কেন হুম (তানিয়া)
--"এটা তোরাই ভালো জানছোস (আমি)
--"রনি প্লিজ মন খারাপ করিস না। রিদিতা তোকে আগে থেকেই পছন্দ করত। যার দারুণ ও নিজেই আগ বাড়িয়ে তোর সঙ্গে বন্ধুত্ব করেছে। এসব কিছুই ভালোবাসার স্বার্থে করেছে।মুন্না ভাইকে নিয়ে রিদিতাও অনেক ভয় পেত যদি তোর সত্যিই কোনো ক্ষতি করে ফেলে। এ ভয়ে ভালোবাসার কথাটি প্রকাশ করেনি। বরং তোকেও বুঝতে দেইনি। ইভেন আমাকে ও অনেক দিন পর জানিয়েছে।পরিশেষে তুই কি করলি" মুন্না ভাইয়ের সামান্য তম ধমকানোতে রিদিতাকে ইগনোর করতে শুরু করলি। তোর এই ইগনোর করাটা সত্যিই নিতে পারছিলো না তারপর আর কি রিদিতা ওর ভাইয়াকে সবটা বলে প্ল্যান করেই তোকে blackmail করে বিয়েটা করে ফেলে
তানিয়ার কথা শুনে আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম। রিদিতা আমাকে সত্যি সত্যিই ভালোবাসত আর আমি কিছুই টের পেলাম না। তবে রিদিতাকে একটু শাস্তি ভোগ করতেই হবে। আমাকে ভয় দেখিয়ে বিয়েতে মত নিয়েছে এর শাস্তি যদি না দেই তো কেমনে কি (আনমনে ভেবে)
--"কিরে কোথায় হারিয়ে গেলি
তানিয়ার কথায় ভাবনার ঘোর কেটে গেলো " ইয়ে মানে কি যেনো বলছিলি_?
--"কিছুই না তুই এখন বাসর ঘরে যা। রাত প্রায় ১২ টা বাজতে গেলো।অইদিকে বেচারা রিদিতা তোর অপেক্ষায় প্রহর গুনছে মনে হই (হেসে)
--"ধ্যাৎ রি আমি আছি টেনশনে তুই আছিস ফাজলামোর মুডে
--"বন্ধু লেট করছিস কেন যা বিড়ালটা আগে ভাগেই মেরে আয় নইত হাত ছাড়া হয়ে যাবে
(নিলয়)
তানিয়া নিলয় তানবীর তারা আমাকে নিয়ে দুষ্টমি ফাজলামো করছে এরমধ্যে হঠাৎ রিদিতা ছাদে এসে কোনো কথা না বলে আমার হাত ধরে টেনে রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে বলে উঠে
!
!
(চলবে)