পর্বঃ১
#আবির হাসান নিলয়
আম্মুঃনিলয়,আমি আর তোর ভাবি একটা আত্মীয়ের
বাসায় যাচ্ছি। তুই কি যাবি?
আমিঃনা আমি যেতে পাড়বো না।
আম্মুঃঠিক আছে।তাহলে আমি আর আমার বউমা
তো মামার বাসায় থেকে ঘুরে আসি
আমিঃমামার বাসা মানে?
ভাবিঃহুম।আমরাতো মামার বাসাই যাচ্ছি
আমিঃসেটা আগে বলবা না।৫মিনিট অপেক্ষা কর
আমি রেডি হয়ে আসছি
আম্মুঃতো তুই না বললি যাবি না।
আমিঃমুখ ফসকে বেড়িয়ে গেছে
আম্মুঃঠিক আছে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আয়
কথা শেষ হতে না হতেই দিলাম এক দৌড়।রুমে
এসে রেডি হতে লাগলাম।
...............
এখন আমার পরিচয় দেয়।আমি আবির হাসান
নিলয়।অনেকেই জানে।তারপরেও বললাম।দুই
ভাইয়ের মধ্যে আমি ছোট।আর আব্বু বিজনেসের
জন্য অনেক সময় দেশের বাইরে থাকেন।
রেডি হওয়া শেষ তাই বাইরে এলাম..
-----------
ভাবিঃএতো তাড়াতাড়ি হয়ে গেলো?
আমিঃআমি কি তোমার মতো নাকি?যে সারাদিন
সাজুগুজু করতে হবে
ভাবিঃআম্মু, আমি কিন্তু তোমার ছেলেকে এখন
পিটাবো😡😡
আমিঃএতো রাগ দেখিয়ে লাভ নেই।এখন চলো
আম্মুঃআরে একটু দাড়া
আমিঃআবার কি হলো
আম্মুঃতোর রহিম চাচাকে(দারোয়ান)বলতে হবে না
আমিঃসেটা বলবো তুমি আগে চলো
আম্মুঃকিন্তু.....
আমিঃকোনো কিন্তু না দেরী হয়ে যাচ্ছে চলো
--------------
আর কোনো কথা না বলতে দিয়ে গাড়িতে উঠতে
বললাম।এদিক দিয়ে রহিম চাচাকে বললাম আমরা
মামার বাসায় যাবো।
গাড়িতে উঠার পর......
গাড়ি চালাচ্ছি এমন সময় আম্মু বলল..
আম্মুঃনিলয়..!
আমিঃহুম বলো
আম্মুঃতোর মামার বাসার কথা বললে তুই এতো
খুশি হস কেনো
আমিঃভালোবাসার জন্য
আম্মুঃভালোবাসা মানে
আমিঃআরে মামার বাসার প্রতি একটা আলাদা
টান আছে না।তুমি তোমার ভাইকে ভালোবাসো না?
আম্মুঃঅবশ্যই বাসি।কিন্তু তুই কাকে ভালোবাসিস
আমিঃকেনো, তোমার ভাইয়ের মেয়েকে..(জিহ্বায়
কামড় দিলাম।সালা কথা বলতে বলতে একদম
সত্যিটাই বলে দিলাম😳)
আম্মুঃকি বললি?
আমিঃআমি আবার কি বললাম
ভাবিঃওলে বাবু,তুই জানিস না কি বলছিস
আমিঃআমি কি করে বলবো
আম্মুঃতুই কাকে ভালোবাসিস?আমার ভাইয়ের
মেয়েকে তাই না??😡
আমিঃআম্মু,তোমার ভাইয়ের মেয়েতো আমার বোন
হয়।আর বোনকে ভালোবাসাই যায় তাই না।
আম্মুঃহুম মনে থাকে যেনো।
------------
এখন আপনাদের বলি।
আম্মুর ভাইয়ের মেয়ে মানে আমার মামাতো বোনের
নাম জান্নাতুল মাওয়া।তবে ডাকনাম জান্নাত।অনার্স
থার্ড ইয়ারে।আর আমার দুইবছর ছোট।ছোটবেলা
থেকেই আমি ওকে ভালোবাসি।সবাই আমাদের
মামাতো ভাই বোনের চোখে দেখলেও আমি ওকে
সব সময় অন্য চোখে দেখছি।যখনি আম্মু বলতো
মামার বাসায় যাবো ঠিক তখনি মনের ভিতরে
একটা অচেনা অজানা ভালোলাগা কাজ করা
শুরু করে দেয়।আজকেও বিপরীত নয়।
---------
জান্নাতের সব থেকে ভালো লাগে ওর চোখ জোড়া।
একটা মায়া ওর চোখে।রাঙা রাঙা চোখ।অনেকবার
ওকে বলতে চেয়েও বলতে পারিনি।ওর চোখ
দুটোর দিকে তাকালেই সব এলোমেলো লাগে।
জানিনা জান্নাত আমাকে ভালোবাসে কিনা।তবে
আমি বাসি।অনেক বেশি ভালোবাসি।
---------
ভাবিঃএইয়ে মি. দেবর শুনছেন?
আমিঃহুম বলো
ভাবিঃকি এতো ভাবছিস?
আমিঃতেমন কিছু না
আম্মুঃতোর ভাইকে কল দিছিস
আমিঃভাইয়ের বউকে বলো
আম্মুঃঅরিতা, তুই কল দিস নাই
ভাবিঃহুম আম্মু।ওকে বলছি আমরা মামার বাসায়
যাবো।
আম্মুঃতাহলে ঠিক আছে।
---------
মামার বাসায় এসে...
আমিঃএসে গেছি।এবার নামো।
গাড়ি থেকে নামার পর। আমি গাড়িটাকে পার্ক
করেই বাসার ভিতরে চলে এলাম।সবাই আম্মু আর
ভাবির সাথে কথা বলছে।কিন্তু জান্নাত নেই।
আমিঃমামি, জান্নাত কোথায়?
মামিঃআমরা কেমন আছি সেটা না জানতে চেয়েই
জান্নাতের কথা শুনলি যে?
আমিঃওর থেকে তোমাদের কথা শুনে নিবো।এখন
বলো তিনি কোথায়
মামিঃকলেজে গেছে
আমিঃআসবে কখন?
মামিঃআর কিছু সময় পর
আমিঃঠিক আছে আমি রুমে গেলাম
----------
জান্নাতের রুমে এসে ফ্রেস হয়ে শুয়ে পড়লাম।
—মাআআ ভুততততত(চিৎকার দিয়ে)
চিৎকার শুনে লাফ দিয়ে ঘুম থেকে উঠলাম।দেখি
জান্নাত। মেজাজটা পুড়াই খারাপ করে দিলো।
আমিঃচিৎকার করার কি আছে?
জান্নাতঃতুই এখানে কেনো
আমিঃবাইরে দেখিস নাই।আম্মু আর ভাবি আসছে
জান্নাতঃতারা আসবেই কিন্তু তুই কেনো আসবি
আমিঃসেটা আমার ইচ্ছা।
জান্নাতঃওকে।এখন তুই রুম থেকে বের হো
আমিঃবের হবো কেনো
জান্নাতঃকারণ আমি ড্রেস চেঞ্জ করবো
আমিঃতো কর আমাকে বলার কি আছে
জান্নাতঃলুচ্চা তুই রুম থেকে বের না হলে আমি
চেঞ্জ হবো কি করে
আমিঃআমি থাকলে সমস্যা কি
জান্নাতঃকুত্তা তোর লজ্জা লাগে না😡
আমিঃলজ্জা করার কি আছে।
জান্নাতঃতুই বের হবি কিনা বল
আমিঃযেতে পারি যদি একটা কাজ করিস
জান্নাতঃকি কাজ
আমিঃবিকেলবেলা আমি আর তুই ঘুরতে যাবো
জান্নাতঃআমি রাজি
আমিঃধন্যবাদ মামাতো বোইন
জান্নাতঃবের হো সালা
---------
রুম থেকে বের হয়ে আমার রুমে চলে আসলাম।
আমার রুম না।তবে যখনি আসি তখনি ঐ রুমটাতেই
থাকি।ফ্রেস হয়ে ফোন টিপতে লাগলাম।হঠাৎ
জান্নাতের কথা মনে পড়তেই ডাকলাম...
আমিঃজান্নাত রুমে আয় তো
জান্নাতঃপারবো না।তোর দরকার তাই তুই বাইরে
আয়(বাইরে থেকে)
আমিঃআমি আসলে কিন্তু মাইর খাবি
জান্নাতঃফুফুর সাথে আছি এখন
আমিঃ😡😡
বাইরে এসে......
আমিঃআমার সাথে আয়
জান্নাতঃকি বলবি এখানে বল
আমিঃতুই আসবি না?
জান্নাতঃনা
আমিঃ...(আর কোনো কথা না বলে জান্নাতের চুল ধরে রুমে আনতে লাগলাম।এটা অবশ্য আজ প্রথম
না। যখনি আমার কথা শোনে না তখনি এমন করি।)
রুমে এসে.....
জান্নাতঃকুত্তা আমার বুঝি ব্যথা লাগে না(স্বাভাবিক হয়ে)
আমিঃআর আমার বুঝি কষ্ট লাগে না
জান্নাতঃতোর আবার কিসের কষ্ট
আমিঃএইযে তুই আমার কথা শুনিস না
জান্নাতঃতোর কথা আমি শুনবো কেনো?
আমিঃতুই কি আমাকে এখনো বুঝিস না
জান্নাতঃতোকে নতুন করে বোঝার কি আছে
আমিঃবাদ দে।তুই যা
জান্নাতঃকি বলতে চাইলি বল
আমিঃআমার ফোনে চার্জ নাই
জান্নাতঃতাহলে তোর ফোন দে আমি চার্জ দিচ্ছি
আমিঃনা।তুই চার্জার দিয়ে যা আমায় তাতেই হবে
জান্নাতঃঠিক আছে।আনছি অপেক্ষা কর
--------------------
জান্নাতঃএই নে।আর রাতে কিন্তু আমার লাগবে
আমিঃকেনো
জান্নাতঃতোকে বলবো কেনো
আমিঃনা বললে পাবি না
জান্নাতঃআরে কাজ আছে
আমিঃকিন্তু কাজটা কি
জান্নাতঃহারামি আমার ফোন চার্জ দেয়া লাগবে
আমিঃসেটা বললেই পারতি
জান্নাতঃহুম।আর খাবি না?
আমিঃনা খাইলে খাওয়াই দিবি?
জান্নাতঃআমার ঠেকা পড়ছে তোরে খাওয়াতে যাবো
আমিঃতাহলে বললি কেনো
জান্নাতঃফুফাতো ভাই তাই বললাম
আমিঃদুপুরে আমি খাবো না
জান্নাতঃঠিক আছে মাকে বলছি তুই খাবি না
-----------
জান্নাত চলে যাওয়ার পড় আবার ফোনে গেম
খেলতে লাগলাম।কিছু সময় পর বাইরে থেকে
মামির ডাক শুনে রুমের বাইরে আসলাম।
মামিঃআই খেতে বস
আমিঃহুম দাও
জান্নাতঃতুই তো বললি খাবি না😱😱
আমিঃসেটা আমার ইচ্ছা তোর কি
জান্নাতঃঢং দেখে আর বাচিনা।ফুফু তুমি কি
জানো তোমার ছেলের মাথায় সমস্যা আছে
আম্মুঃসেটা আমাকে নতুন করে বলতে হবে না মা।
তারপর সবাই মিলে খাওয়া দাওয়া শেষ করে রুমে
চলে আসলাম।দেখতে দেখতে বিকেল হয়ে গেলো।
-----------
বিকেলবেলা......
জান্নাতঃকিরে রেডি হোস নাই এখনো
আমিঃএকটু অপেক্ষা করো বাবু আমি আসছি
জান্নাতঃ????
চলবে..........
(সাড়া না পেলে পরের পর্বগুলো আর দিবো না।)