পর্বঃ২
#আবির হাসান নিলয়
জান্নাতঃঐ তুই কি ঘুরতে যাবি?
আমিঃহুম যাবো তো
জান্নাতঃতাহলে রেডি হোস নাই কেনো?
আমিঃএকটু অপেক্ষা করো বাবু
জান্নাতঃঐ হারামি আমি তোর কোন কালের বাবু
লাগি রে😡😡
আমিঃআরে রাগছিস কেনো,আমি তো মজা করে
বলছি।আর এতেই এতো রাগ
জান্নাতঃতুই বলবি কেনো
আমিঃআমার মুখ বলতেই পারি
জান্নাতঃআল্লাহ এ কোন পাগলের পাল্লাই পড়লাম
আমিঃপাগল না পাগলি।একদম ইনোসেন্ট ছেলের
পাল্লাই পড়ছো
জান্নাতঃতোরে চেনা আছে তুই কত ইনোসেন্ট
আমিঃতাহলে গুড
জান্নাতঃতুই রেডি হয়ে আয় আমি বাইরে আছি
আমিঃআচ্ছা
জান্নাত চলে যাওয়ার পর রেডি হতে লাগলাম।
---------------
জান্নাতঃএত্তো সময় লাগে..??
আমিঃমাত্র ৫মিনিট লাগছে।এখন চল
জান্নাতঃএকটু দাড়া ভাবিও যাবে
আমিঃভাবি কেনো
ভাবিঃকেনো আমি গেলে কি সমস্যা
আমিঃতুমি গেলে তো হবেনা
ভাবিঃতোর কি হবেনা শুনি
জান্নাতঃভাবি এই পাগলের কথা বাদ দাও।আর চলো
ভাবিঃহুম।কিরে দাঁড়িয়ে রইলি যে...!
আমিঃচলো
----------------
গাড়িতে উঠে....
ভাবিঃজান্নাত তুই সামনে বসলি যে?
জান্নাতঃমনটা চাইলো তাই
ভাবিঃবুঝতে পারছি 😀
জান্নাতঃকি বুঝতে পারছো তুমি
ভাবিঃযেটা বোঝার সেটা
জান্নাতঃভাবি তুমিও তোমার দেবরের মতো পাগলি
হয়ে গেছো।তোমাদের খুব দ্রুত মেন্টাল হাসপাতালে
নিতে হবে।
আমিঃতুই থাকলেই আর কোথায় যেতে হবে না
জান্নাতঃআমি থাকতে যাবো কেনো
আমিঃআমার সেবা করার জন্য
জান্নাতঃতোর সেবা আমি করবো?হাস্যকর,তুই মরে
গেলেও আমি তোর সেবা করবো না
আমিঃদেখা যাবে
ভাবিঃঐ তোরা কি ঝগড়া থামাবি না
জান্নাতঃতুমি তোমার দেবরকে বলো চুপ থাকতে
আমিঃতুই চুপ থাক কুত্তী
------------
ড্রাইভ করতে করতে একটা জনশূন্য স্থানে এসে
পৌছালাম।এটা অবশ্য আগে থেকেই প্ল্যান ছিলো।
আরো একটা প্ল্যান ছিলো,জান্নাতকে মনের ভিতরে
থাকা কথাটা বলবো।কিন্তু সেটা আর হলো না।
জান্নাতঃকিরে নামবি না
আমিঃহুম নামছি।
ভাবিঃনিলয়,তোর ভাইয়া কল দিছে তার সাথে
আমি কথা বলছি আর তোরা দুজন কথা বল
আমিঃতুমি হাটো আমরা তোমার পিছু আসছি
ভাবিঃঠিক আছে(বলে ভাইয়ার সাথে কথা বলতে লাগলো)
-----------------------
জান্নাতঃকুত্তা তুই কাজ করিস না কেনো
আমিঃকি কাজ করবো
জান্নাতঃভাইয়াকে অফিসে সাহায্য করবি
আমিঃসময় এলে করবো।তোর পড়াশোনার কি অবস্থা
জান্নাতঃচলছে কোনোরকম।
আমিঃতোর কোনো বয়ফ্রেন্ড আছে?
জান্নাতঃআছে তো তুই জানিস না
আমিঃকিহহহহ,কোন সালা?
জান্নাতঃমামুন
আমিঃকোন মামুন?
জান্নাতঃআমাদের ক্লাসের মামুন
আমিঃঐ কানাটা?
জান্নাতঃখবরদার ওকে কানা বলবি না
আমিঃবললে কি করবি তুই
জান্নাতঃতোকে মেরে ফেলবো(গলা ধরে)
আমিঃধরে রাখ ভালোই লাগছে
জান্নাতঃতুই বিশ্বাস কর তোর মতো লুচ্চা আমি
জীবনেও দেখি নাই
আমিঃআর কখনো দেখবিও না
জান্নাতঃসেটাই যেনো হয়।
----------------------
ভাবিঃকি করিস তোরা?
আমিঃপ্রেম করছি ভাবি
জান্নাতঃতোর লজ্জা লাগে না ভাবির সামনে এমন
কথা বলতে
আমিঃলজ্জা কিসের ভাবিও তো প্রেম করেই
বিয়ে করছে
জান্নাতঃতারা প্রেম করছে অন্য ভাবে।তাই বলে
কি আমরাও প্রেম করছি
আমিঃএখন না করলে পরে তো করতেও পারি
ভাবিঃহয়েছে হয়েছে এবার চল ওদিকটাই যায়
জান্নাতঃহুম চলো
আমিঃভাবি তোমার বোন নাই কেনো(জান্নাতকে
রাগানোর জন বললাম)
জান্নাতঃদেখলে ভাবি ও কতো নাম্বারের লুচ্চা
একটা ছেলে
আমিঃএটা জিজ্ঞাস করলেই বুঝি লুচ্চা হয়ে যাওয়া
হয় নাকি
জান্নাতঃহ্যা হয়।তুই অন্য কথা জিজ্ঞাস করতে
পাড়িস না
আমিঃনা, আমি পাড়ি না
জান্নাতঃলুচ্চা তো তাই পারবিও না
আমিঃআ....(থামিয়ে দিয়ে)
ভাবিঃপ্লিজ তোরা চুপ কর।আর নিলয় তুই জানিস
না আমার বোন আছে কিনা।সবার থেকে তুই
আমার সম্পর্কে ভালো জানিস
জান্নাতঃনিলয় জানবে কি করে?(অবাক হয়ে)
ভাবিঃকারণ আমি আর নিলয় বেষ্ট ফ্রেন্ড ছিলাম
কলেজে।তুই হয়তো জানিস না। তোদের ভাইয়ার
সাথে রিলেশন করতে নিলয় আমাকে সাহায্য
করছিলো।
জান্নাতঃকিভাবে?
আমিঃতোর জানতে হবে না।চল বাসায় যায়
জান্নাতঃনা।ভাবি তুমি বলো
---------------
অনেক কষ্ট করেও থামাতে পাড়লাম না।জান্নাতের
জোরাজুরিতে ভাবি সব বলতে লাগলো....
ভাবিঃতুই তো জানিস আমি আর নিলয় একই
ক্লাসে পড়তাম।
জান্নাতঃহুম সেটা জানি
ভাবিঃকলেজে একটা প্রোগ্রাম থাকায় আব্বুকে
মানে তোর ফুফাকে ইনভাইট করা হয়।কিন্তু আব্বুর
কাজ থাকায় তিনি দেশের বাইরে চলে যান। আর
সেই জন্য তোদের ভাইয়া কলেজে উপস্থিত হয়।
প্রথম দেখায় আমি তাকে চিনতেই পারিনি ওটা
নিলয়ের ভাই।নিলকে দেখে অনেকটা অবাক
হয়েছিলাম।কারণ নিলয়ের চেহারা আর নিলের
চেহারাই অনেক মিল আছে।এসবের থেকেও আমি
নিলকে দেখেই ফিদা হয়ে যায়।ওর স্টাইল, কথা
বলা,হাটা যা দেখে যে কেউ ওর প্রেমে পড়ে যাবে।
তাই আমিও ব্যতিক্রম নয়।ওর প্রেমে পড়ে গেছিলাম
প্রথম দেখাতেই।কিন্তু কাউকে বলিনি।যখন নিলকে
নিয়ে ভাবছিলাম ঠিক তখন নিলয় আসে.....
নিলয়ঃকিরে পাগলি কি ভাবিস
অরিতা(ভাবির নাম)ঃদোস্ত আমি তো প্রেমে
পড়ে গেছি রে
নিলয়ঃকি বলিস আর কার প্রেমে
অরিতাঃ মি. নিল চৌধুরী
নিলয়ঃকি বলিস এগুলা😆😆
অরিতাঃকুত্তা তুই হাসছিস
নিলয়ঃতুই একটু অপেক্ষা কর
নিলয় কার সাথে যেনো ফোনে কথা বলে আবার
আমার কাছে আসে।।।
নিলয়ঃতুই কি সত্যি নিল চৌধুরীকে ভালবেসে ফেলছিস
অরিতাঃহুম(লজ্জা পেয়ে)
নিলয়ের সাথে কথা বলতে বলতে হঠাৎ নিল
আমাদের কাছে আসে।আমি তখনো জানতাম না
নিল আর নিলয় দুই ভাই।কিন্তু যখন ওরা কথা
বলতে শুরু করে তখন আমি অবাক না হয়ে
পারলাম না।
নিলঃহ্যা বল কি বলবি
নিলয়ঃভাইয়া তোমাকে কেউ একজন ভালোবাসে
নিলঃফ্রেন্ডের সামনে মজা নিচ্ছিস
নিলয়ঃমজা না ভাইয়া সত্যি
নিলঃতা কে সে
নিলয়ঃতোমার সামনে যে দাঁড়িয়ে আছে
নিলঃএই মেয়েটা?
নিলয়ঃহুম। ঐ পেত্নী কথা বলিস না কেনো?
অরিতাঃতো....তো....তোরা দুই ভাই
নিলয়ঃজ্বি ম্যাডাম
অরিতাঃসরি স্যার।ভুল করে বলে ফেলছি(বাচ্চাদের
মতো করে)
নিলয়ঃকাকে স্যার বলছিস
অরিতাঃতোর ভাইয়াকে
নিলয়ঃআমার ভাই কিন্তু এখন থেকে তোর বয়ফ্রেন্ড
নিলঃমানে
নিলয়ঃভাইয়া অরিতা তোমাকে সত্যি ভালোবাসে
অরিতাঃকিন্তু উনি তো আমাকে চেনেও না
নিলয়ঃতবে এখন থেকে চিনবে।তোরা কথা বল
আমি ওদিকে যায়।
----------------
সেদিন থেকেই নিলের সাথে কথা বলা শুরু হয়।
আস্তে আস্তে দুজনই আমরা একে অপরকে খুব
বেশি ভালোবাসতে শুরু করি।আর নিলয়ও তুই
থেকে তুমি করে বলতে শুরু করে।কারণ ভাবিকে
নাকি কখনো তুই করে বলতে নাই।আর তারপর
তো সবাই জানো।এখন আমি তোদের ভাবিই।
কিন্তু আমরা তিনজন ছাড়া কেউ জানতো না
আমাদের রিলেশনের মাথা নিলয় ছিলো।
-----------------
আমিঃভাবি তোমার কথা বলা হলে বাসায় যায়
ভাবিঃহুম চল
জান্নাতঃকিন্তু তোমাদের মধ্যে এতো কিছু হলো
আমাদের বলো নাই কেনো
আমিঃতোকে বললে তুই মাইক দিয়ে সবাইকে
বলে দিতি আমি জানি
জান্নাতঃআমাকে এতোটা অবিশ্বাস করিস😥
ভাবিঃওলে বাবুতা মন খারাও করো না।এখন চল
তারপর বাসায় চলে আসি।
-------------
বাসায় আসার পর রুমে গিয়ে রেস্ট নিতে লাগলাম।
কিন্তু হঠাৎ জান্নাতের বয়ফ্রেন্ড মানে মামুনের
কথা মনে পড়তেই মাথা গরম হয়ে গেলো।সালাকে
আমি জান্নাতের বন্ধু ভাবতাম আর সেই নাকি
তলে তলে কাঁঠাল খাচ্ছে।দাড়া তোর প্রেম করা
বের করছি।ফোনটা হাতে নিয়ে জয়কে কল দিলাম।
জয়ঃহ্যা নিলয় বল
আমিঃএকজনের ব্যান্ড বাজাতে হবে
জয়ঃকার
আমিঃজান্নাতের ক্লাসমেট মামুন
জয়ঃঐ চশমা পড়া ছেলেটা?
আমিঃহুম
জয়ঃঠিক আছে তুই কলেজে আয় তারপর দেখছি
আমিঃনা আমি যেতে পারবোনা
জয়ঃকেনো
আমিঃআমি জান্নাতদের বাসায় আসছি
জয়ঃওহহ সালা ভাবিদের বাসায় গেছিস একবার
বললিও না
আমিঃতোদের যদি বলতাম তাহলে কাজটা কে করতো?
জয়ঃসেটাও ঠিক।
আমিঃহুম
জয়ঃকিন্তু কেনো মারবো, কারণ বলতে পারবি?
আমিঃঐ সালা জান্নাতের সাথে প্রেম করে
জয়ঃকিহহ,কিন্তু ওদের দেখে তো বোঝায় যায় না।
আমিঃআগে তো আমিও জানতাম না
জয়ঃতাহলে কার থেকে শুনলি
আমিঃজান্নাত বলছে
জয়ঃতুই শুধু কালটুকু সময় দে তারপর ওর প্রেম
করা বের করছি
আমিঃঠিক আছে।কিন্তু তুই এখন কোথায়?
জয়ঃসবাই যেখানে থাকি(আড্ডা খানায়)
আমিঃআমার তাহলে মিস হয়ে গেলো।
রাফিঃহ্যালো ভাই তুই আসলে আজ খেতে পারতি
আমিঃকেনো আজ নতুন কিছু আনছিস নাকি
জয়ঃহুম।আজ রাহুল এক বোতল আনছে
আমিঃআচ্ছা এগুলা বাদ দে।আর ভাই কাজটা
প্লিজ করিস
রাহুলঃদোস্ত তুই আমাদের উপর বিশ্বাস রাখ
আমিঃসেটা কি আর বলতে হবে
জয়ঃঠিক আছে নিলয় এখন তাহলে রাখছি
আমিঃহুম ভালো থাকিস
জয়ঃহুম বাই
কথা বলা শেষ করে কল কেটে দিয়ে বিছানায়
গাঁ টা এলিয়ে দিলাম।
-----------------------
জান্নাতঃঐ কুত্তা কি মরার মতো ঘুমাচ্ছিস উঠ এবার
আমিঃহুম😴
জান্নাতঃআবার হুম,টানা ১৫মিনিট ধরে হুম হুম
করেই যাচ্ছিস উঠ(হাত টেনে ধরে)
আমিঃআরে উঠছি(উঠে)
জান্নাতঃফ্রেস হয়ে খেতে আয় সবাই বসে আছে
আমিঃসবার বসে থাকতে হবে কেনো?
জান্নাতঃমানে
আমিঃসবাইকে খেতে বল আমি পরে খেয়ে নিবো
জান্নাতঃকিন্তু.......(থামিয়ে)
আমিঃতুই যা এবার
জান্নাত আর কিছু না বলে চলে গেলো।
বুঝতেই পারিনি কখন ঘুমিয়ে গেছি।আর বসে না
থেকে ফ্রেস হতে গেলাম।টানা ১০মিনিট চোখে
জল দিলাম। কারণ ঘুমটা ভালো করে হয়নি।
ফ্রেস হয়ে ফোন হাতে নিয়ে গেম খেলতে লাগলাম।
প্রায় ৩০ মিনিট গেম খেলার পড় রুমের বাইরে
আসতেই দেখলাম কেউ নেই।আরে সবাই গেলো
কোথায়।মনে হচ্ছে সবাই মিলে রুমে গল্প করছে।
তাতে আমার কি......😇
----------------------
আমিঃবাসায় কি কেউ আছেন যে আমাকে খাবারটা
দয়া করে বেড়ে দিবে.....!
আম্মুঃসেরকম মানুষ নেই(ভিতর থেকে বলল)
আমিঃতাহলে কি আমি না খেয়ে থাকবো?
মামিঃতুই বেড়ে খেলে খাঁ। না হলে আমরা কেউ
বেড়ে দিতে পারবো না।
আমিঃকেনো?
মামিঃকারণ আমরা সবাই গল্প করছি এখন
আমিঃথাকো তোমাদের গল্প নিয়ে আমি গেলাম
(রুমে আসতে যাবো ঠিক তখনি পিছন থেকে
হাত ধরলো।তাকিয়ে দেখলাম জান্নাত)
জান্নাতঃকোথায় যাস
আমিঃরুমে
জান্নাতঃখাবি না?
আমিঃনা
জান্নাতঃকেনো
আমিঃআমার ইচ্ছা
জান্নাতঃচুপচাপ এখানে বস(টেবিলে বসিয়ে)
তারপর জান্নাত নিজেই খাবার বেড়ে দিতে লাগলো।
আমিঃবউয়ের মতো আদর করছিস যে
জান্নাতঃলাথি খাবি কিন্তু
আমিঃসত্যি কথা বললেই দোষ।আর তোকে বিয়ে
করলে সত্যিই ভালো হবে
জান্নাতঃসেটা হবে না। এখন খা
আমিঃতুই বসলি কেনো
জান্নাতঃবাহরে আমি খাবো না
আমিঃকেনো তুই খাস নাই?(অবাক হয়ে)
জান্নাতঃনা
আমিঃকেনো
জান্নাতঃপড়ছিলাম।আর একটা প্রশ্ন জিজ্ঞাস
করলে সত্যি আমি খাওয়া বাদ দিয়ে চলে যাবো
আমিঃঠিক আছে আর বলবো না
জান্নাতঃহুম খা এখন
দুজন মিলে খাওয়া শেষ করে রুমে চলে এলাম।
কিছু সময় ফোন টিপাটিপি করে ঘুমিয়ে গেলাম।
চলবে............