গল্পঃ মাফিয়ার শহরে অন্তিম_পর্ব (রহস্য উন্মোচন)


 #মাফিয়ার_শহরে
#Jahedur_Rhaman_Saikat 
#অন্তিম_পর্ব (রহস্য উন্মোচন) 

রাত প্রায় আড়াইটা চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার।  কলেজে সকল রহস্যের উন্মোচন করতে যাচ্ছে রাফি,, মাঝরাস্তায় যেতেই ফোনকল পেয়ে বাইকটা দাঁড় করায়, ফোনটা তাসনিয়ার ফোন থেকে এসেছে কলটা রিসিভ করতেই একজন উচ্চ সরে হাসতে থাকে,, যার মানেটা বোধগম্য হয় না রাফির? 
কোন বিপদ হল না তো তাসনিয়ার? রাফির ক্ষতি করতে গিয়ে আবার কেউ তাসনিয়ার কিছু করে দেয় নি তো?  

রাফিঃ হ্যালো..হ্যালো..হ্যালো..কথা বলছেন না কেন আপনি?  কে আপনি?  তাসনিয়া কোথায়?

ওপাশ থেকেঃ চুপ তোর তাসনিয়া একদম ঠিক আছে,, তবে বেশিক্ষণ ঠিক থাকবে না যদি তুই এই মূহুর্তে হবি**বা** এই ঠিকানায় না আসিস তো।

রাফিঃ মানে তাসনিয়া ওখানে কি করছে? আর আপনি ই না কে??

ওপাশ থেকেঃ আমি কে?  সেটা একটু পরই জানতে পারবি সময় মাএ ১০ মিনিট যদি আসতে না পারিস তাহলে তোর তাসনিয়াকে মেরে পার্সেল করে পাঠিয়ে দিব। 

রাফিঃ না না আমার তাসনিয়ার যেন কিছু না হয় আমি আসছি..

ওপাশ থেকেঃ Your Time Start now...

বাইক ঘুরিয়ে ফুল স্পিডে ওই লোকটার দেওয়া ঠিকানায় যেতে লাগলো রাফি। আকাশকেও ইনর্ফোম করে দিয়েছে,,  আকাশ নিজ জায়গা থেকে সবকিছু রেডি করে নেয় এবং রাফিকে ওখানে একা যেতে নিষেধ করে। কিন্তু রাফি তাসনিয়ার চিন্তায় এতটাই বিভোর ছিল যে তার আকাশের কথা শুনেই নি?
রাফির ফোন অটো রেকর্ডিং এ থাকায় খুব সহজেই তাদের ফোনকল রেকর্ড হয়ে যায়,, রাফি সেটা আকাশকে সেন্ড করে দেয়। 

আকাশ বা রাফির মাথায় ডুকছে না তাদের সাথে শএুতামি ওই লোকগুলো তাদের প্রিয়মানুষগুলোর কেন ঝাড়েঁ?  তাদের কোন ক্ষতি করতে না পেরে তাদের কাছ থেকে কাছের মানুষগুলোকে কেড়ে নেয়? 

আধাঘন্টার রাস্তা ছয় মিনিটে গিয়ে পৌঁছে রাফি,,এর আগে কখনো রাফি এত স্পিডে বাইক চালায় নি,,প্রিয় মানুষটাকে হারানোর ভয়ে হয়তো আজ চালিয়েছে তাইতো আধাঘণ্টার রাস্তা ছয় মিনিটে এসে পৌঁছায়। 

রাত এখন প্রায় তিনটা" আকাশ অনেক্ক্ষণ যাবত রাফির ফোনে ট্রাই করে যাচ্ছে কিন্তু ফোন বারবার সুইচ স্টপ বলছে,, এই ছেলেটা একটা কথাও শুনে না,,বারবার বলেছি ভিতরে না যেতে তবুও কথা শুনে না।।
কিছুক্ষণ এভাবেই ফোন দিতে দিতে একপ্রকার বিরক্তি চলে আসে আকাশের। কি করবে না করবে কিছুই বুজে উঠতে পারছে না।  ফোনটা ট্যাপ করেও এটাই লাস্ট লোকেশন দেখাচ্ছে?  কোন বিপদ হল না তো আবার?  না না রাফির কিচ্ছু হতে পারে না,, রাফির কিছু হয়ে গেলে আকাশ কি নিয়ে বাঁচবে?  রাফি ব্যাতিত আপন বলতে তো কেউ নেই আকাশের? যদি এই রাফির কিছু হয়ে যায় তাহলে আকাশ বেচেঁ থাকবে তো?
ভাবনার বিচ্ছেদ ঘটে ফোনের রিংটোন এ,, তাকিয়ে দেখে অচেনা নাম্বার থেকে ফোন আসছে,, ফোনটা আসার সঙ্গে সঙ্গে মনের ভিতরে ভয় তৈরি হয় আকাশের?  এই বুজি নতুন এক দুঃসংবাদ এসে উপস্থিত হল তার দরবারে?  কিন্তু এভাবে বসে থাকলেতো কিছুই হবে না তাই অনিচ্ছা থাকা সত্বেও ফোনটা রিসিভ করে,,, 

ওপাশ থেকেঃ কিরে ভীতুর বাচ্চা বাহিরে দলবল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? একা আসতে পারিস নাই? হা হা হা হা হা হা হা হা ভয় পেলি? আমায় দেখার অনেক ইচ্ছে তাই না তোর?  অনেক খুঁজেছিস আমায় হা হা হা হা কিন্তু কিছুই করতে পারিস নি হা হা হা হা হা কিন্তু আজ আমি নিজেই তোর সামনে আসবো,,  যদি নিজের বন্ধু ও তাসনিয়াকে বাচাতেঁ চাস তাহলে তুই যেই রিল্ডিং এর নিচে  দাড়িয়েঁ আছিস সেই বিল্ডিং এর দশতালায় আয়।  আজ সব হিসাব নিকাশ চুকিয়ে দিব। 

লোকটার এমন বিকট শব্দের হাসী, তার উপর এমন ট্রেড আকাশের পায়ের রক্ত মাথায় উঠে যায়,,মনে মনে সিদ্ধান্ত নেয় এদের এমন ভাবে মারবে যেন সারাজীবন মনে থাকে,, প্রাণে মারবে না তবে বেচে থেকেও মরে যাওয়ার মত করে রাখবে? যদি অন্য সময় এসব কথা বলতো তাহলে হয়তো আকাশের এতটা রাগ হত না,, কিন্তু তার প্রিয় বন্ধুটাকে মারার হুমকি তাও আবার এই অন্ধকার জগতের কিং আকাশ চৌধুরীকে? যে বন্ধুকে নিজের জীবনের চাইতেও বেশি ভালবাসে তাকে মারবে?  তা কি আকাশ চৌধুরী হতে দিবে?? 

এই মূহুর্তে আকাশ সেই বিল্ডিংটার পাঁচ তলায় অবস্থান করছে,, যেখানে ওই অজ্ঞাত ব্যাক্তিটা তাকে আসতে বলেছিল। কিন্তু রুমটা চারদিকে অন্ধকার,,  কোন আলো নেই,, রুম বললেও ভুল হবে কারণ চারদিকটা অনেক বড়,,শুধু দেয়াল দেওয়া, মাঝখানে পাটিশন এখনও দেওয়া হয় নি,, আকাশ পকেট থেকে ফোনটা বের করে টর্চ অন করে। আর চারদিকটা ভাল করে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। কিন্তু কিছুই বুজে উঠতে পারছে না,, রাফি আর তাসনিয়াকে কোথায় রেখেছে ওই অজ্ঞাত ব্যাক্তিটা। 

আচ্ছা নীলাদ্রি?  এতকিছুর মধ্যে আকাশের নীলাদ্রির কথা একটাবার ও মনে পড়ে নাই? আচ্ছা তাহলে কি নীলাদ্রিই এসব কিছু করাচ্ছে?   কিন্তু নীলাদ্রি কেন এসব করাবে?  
ভাবনার বিচ্ছেদ ঘটে মাইকের আওয়াজে,,

অজ্ঞাত ব্যাক্তিঃ হা হা হস হা হা হা এসেছিস তুই আকাশ?  অনেক দিন যাবত তকে দেখার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু তুই এসে ধরা দিস নাই,, কিন্তু আজকে তকে আসতেই হল হা হা হা হা হা হা হা। 

আকাশঃ আরে শুন এই আকাশ চৌধুরীকে সবাই সম্মুখে দেখার সামর্থ্য রাখে না,, আর যদিও কখনো কারো সামনে আসি সেটা ওই লোকটার শেষ দিন হয় এটা নিশ্চয়ই এতদিনে বুজতে পারছিস?? 

অজ্ঞাত ব্যাক্তিঃ হা হা হা হা হা আজকে কার শেষ দিন হয় দেখতে পারবি।  শুন তোর তিনটা কলিজা আমার হাতে?  তুই একা কি করবি আমার?  

আকাশঃ তোর মত একশতটার জন্য এই আকাশ চৌধুরী একাই যথেষ্ট।  সাহস থাকলে সামনে আয় পিছনে লুকিয়ে আছিস কেন?  

অজ্ঞাত ব্যাক্তিঃ তোর পিছনে তাকিয়ে দেখ হা হা হা। 
হুট করে পুরো আলোকিত হয়ে যায়,, পুরো ঘরে লাইট জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। পিছনে তাকাতেই আকাশের পায়ের নিচের মাটি সরে যায়। কারণ রাফি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। পাশেই নীলাদ্রি আর তাসনিয়া ও রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।  আকাশ দৌড়ে গিয়ে দেখে সবাই এখনও বেচে আছে।  তরিগড়ি করে সবাইকে ফোন দেয় কিন্তু কেউই ফোন ধরছে না সবার ফোন সুইচটপ। 

অজ্ঞাত ব্যাক্তিঃ কি হলো সবাইকে আসতে বলবি? সবাইকে এই মূহুর্তে লাশ হিসেবে তোর গোডাউনে পরে থাকতে দেখবি হা হা হা রাফি,,নীলাদ্রি,, তাসনিয়াকে মারি নি,, কারণ এদেরকে তোর চোখের সামনে মারবো। 
যাতে করে তুই বুজতে পারিস প্রিয় মানুষগুলকে হারানোর কষ্ট কতটা ত্বীর্ব।  কতটা অসহায় লাগে প্রিয় মানুষগুলোকে হারালে?

আকাশঃ কে তুই?? 

অজ্ঞাত ব্যাক্তিঃ আমি সেই যাকে তুই মাএ ছয় বছর বয়সে এতিম করেছিস।  যাকে পঁচিশ বছর বয়সে ভাই হারা করেছিস?  যাকে প্রতিনিয়ত কষ্টের তীর্ব যন্ত্রণা দিয়েছিস।  

আকাশঃ তার মানে তুই সেই আয়ান এর ভাই?  আয়ুস? হা হা হা এই আকাশ চৌধুরী কখনোই কোন নির্দোস মানুষকে কিছু করে না বুজলি। মহান আল্লাহ এই বিবেক টুকু আমাকে দিয়েছেন যা তুই আর বাবা-মা আর তোর ভাইকে ও দিয়েছেন কিন্তু সেটা তরা অন্যায় পথে ব্যায় করেছিস?  আর শুন আজ তরা এই বিশাল ধন-সম্পদের মালিক সবকিছু আমার বাবার তিল তিল করে গড়ে তোলা সম্পদ।  যা তোর বাবা আমার বাবা-মায়ের থেকে কেড়ে নিয়েছে।  নির্দোস একটা মানুষকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে।  মিস্টার কাউসার অরুপে আয়ুস । 

আয়ুসঃ এত তারাতাড়ি চিনে ফেলবি সেটা কল্পনা ও করতে পারি নি।  তবে চিনেই যেহেতু ফেলেছিস তাহলে আজ সবকিছুর হিসেব চুকিয়ে দিই।  হা হা হা হা আজ তোর চোখের সামনে তোর প্রিয় মানুষগুলোকে মারবো। তোর পিছনে তাকিয়ে দেখ তোর জম তোর পিছনে হা হা হা হা হা হা হা।। 

আকাশঃ তকে এতিম মনে করে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনেছিলাম।  কিন্তু তুই এত বড় বেইমানি করবি সেটা কখনোই কল্পনা করি নি।  তোর সমস্ত শএুতামি তো আমার সাথে তাহলে এদের মারবি কেন? 

আয়ুসঃ প্রিয় মানুষ হারানোর কষ্ট উপলব্ধি করতে পারিস?  আমি প্রতিটা ক্ষণে ক্ষণে প্রিয় মানুষদের হারানোর কষ্ট উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছি।  কারণ তুই আমার থেকে আমার প্রিয় মানুষগুলোকে কেড়ে নিয়েছিস।  বাবা-মায়ের ভালবাসা পেতে দিস নি আমায় আর আমার সেই দুইবছরের ছোট্ট ভাইটাকে। যাকে মাএ ছয় বছর বয়স থেকে আমি আগলে রেখেছি।  শেষ পযর্ন্ত সেই ভাইটাকেও কেড়ে নিলি?  কি করেছিল আমার ভাই? কি অন্যায় ছিল আমার বাবা-মায়ের? 

আকাশঃ এনাফ মিস্টার আয়ুস এনাফ।  অনেক বলেছিস তুই,,বলছিস না কি অন্যায় তোর বাবা-মায়ের? কি অন্যায় তোর ভাইয়ের?
আরে শুন তুই বলছিস না মাএ ছয় বছর বয়সে তকে এতিম করেছি? তাহলে তোর বাবা-মায়ে যে মাএ দশ বছর বয়সে আমার থেকে আমার জান্নাত আমার বেচে থাকার একমাএ ভরসার হাত আমার বাবা-মাকে কেড়ে নিয়েছে?  আমায় রাস্তার ফকির বানিয়েছিস? যে আমি কোনদিন বাবা-মাকে ছাড়া থাকতে পারি নাই সেই আমি কি করে এতটা বছর তাদের না দেখে থেকেছি? যেই রমিজ চাচা আমাকে ছোট বেলা থেকে তুলে পিঠে করে বড় করে তুলছিল সেই রমিজ চাচাকে আমার বাবা-মায়ের খুনি বানানোর জন্য জজকে মোঠা'টাকা ঘুস দিয়ে তাকে যাবতজীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল?  কিন্তু কি অপরাধ ছিল আমার বাবা-মায়ের কি অপরাধ ছিল সেই রমিজ চাচার? আর বললি না প্রিয় মানুষ হারানোর কষ্ট উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছি কিনা আমি? জম্মের দশ বছর বছর বাবা-মাকে হারানোর পর পেয়েছি এই ছেলেটাকে। যার সাথে রক্তের কোন সম্পর্ক না থাকা সত্বেও আমায় তিল পরিমাণ কষ্ট উপলব্ধি করতে দেয় নি।  কেন জানিস শুধু বন্ধুত্বের কমিটমেন্ট এর জন্য।  আর তুই আমার রক্তের সম্পর্কের ভাই হয়েও আমার থেকে আমার প্রিয় মানুষগুলোকে কেড়ে নিয়েছিস?  কিন্তু এই ছেলেটা নিজের সবকিছু দিয়েও আমায় হাসিখুশি রাখার চেষ্টা করেছে।  

বন্ধুত্ব কি জিনিস তোর মত বেইমান কখনোই উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে না।  কারণ তদের রক্তে শুধু টাকার নেশা লাগানো।  কখনোই তরা ভালবাসার কি মূল্য সেটা বুজতে পারবি না।  তদেরতো চাই শুধু টাকা?  আচ্ছা দুনিয়াতে কি টাকাই সব?  ভালবাসার কোন মূল্য নেই তদের মত নিকৃষ্ট মানুষদের কাছে?? 
কথাটা শেষ হওয়া মাএই আকাশ আয়ুসের বুক বরাবর সজোরে একটা লাথি মারে.।
লাথি খেয়ে নিজের ব্যালেন্স ঠিক রাখতে না পেরে চার কদম পিছনে গিয়ে মাটিতে বসে পড়ে আয়ুস। 

হঠাৎ পিছন থেকে কে আকাশকে একটা লাথি মারে।  যার তাল সামলাতে না পেরে আকাশ খানিকটা দূরে গিয়ে পড়ে।  পিছনে তাকিয়ে দেখে ইমন।  ইমনকে দেখে আকাশ তেমন একটা অবাক হয় নি কারণ আকাশ আগে থেকেই জানতো ইমনই এসব কিছুর মাস্টার মাইন্ড।  কিন্তু অনেক দেড়ীতে  জানতে পেরেছে।  আজ সকালেই ডাক্তার আংকেল ফোন করে বললো কথাটা ইমতিয়াজ রহমানকে ইমনের বন্দুক থেকেই গুলি করা হয়েছে।  তখন থেকেই আকাশ বুজতে সক্ষম হয় এসব কিছুর মাস্টার মাইন্ড হচ্ছে ইমন।  যাকে সাহায্য করেছে আয়ুস।  

ইমনঃ অবশেষে তোর সামনে আসতেই হল?  আমার এতদিনের সব কাটনি তুই আর রাফি এক নিমিষেই শেষ করে দিলি?  কি ভাবলি এত সহজে এই ইমন তদের ছেড়ে দিবে?  দেখ তোর প্রিয় বন্ধু রাফির কি অবস্থা করে রেখেছি?  খুব কষ্ট হচ্ছে তাই না ওর এই অবস্থা দেখে? 
আকাশের বুকে পরপর কয়েকটা লাথি মেরে কথাগুলো বললো ইমন।  নিজেকে কিছুটা স্বাভাবিক করে আকাশ বলতে শুরু করলো....

আকাশঃ আজ যদি আমার অথবা রাফির কিছু হয় তাহলে একটা ইতিহাস তৈরি হয়ে যাবে।  কারণ কি জানিস?  তদের মত কিছু বেইমান মানুষ সেগুলো বুজবে না।  বন্ধুত্ব সেটা এই ছেলেটার কাছ থেকে শিখ?  আরে আমি তুই রাফি একসঙ্গেইতো বড় হয়েছি যদিও তুই অনেকটা দেরি করে আমাদের জীবনে এসেছি তবুও তুই আমাদের কলিজার বন্ধু ছিলি?  কিন্তু সামান্য কিছু অর্থের জন্য তুই ড্রাগের মত একটা মারাত্মক নেশা এই তরুন/তরুনীদের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছিস? যারা এই দেশের ভবিষ্যত তাদের জীবনটাকে এই ভাবে অর্থের লোভে তোরা নষ্ট করে দিচ্ছেিস যার মাধ্যম হিসেবে তরা আমাদের কলেজটাকেই বেচে নিলি? কিন্তু কেন?  আবার আমার থেকে আমার প্রিয় মানুষগুলোকে কেড়ে নিয়েছিস এখন আমার থেকে আমার কলিজা কেড়ে নিবি?  আরে এতক্ষণ কিছু বলি নি। কিন্তু কি ভাবলি এই আকাশের সামনে তরা রাফির কিছু করতে পারবি? যদি তদের বুকে এক ফোটা সাহস থাকে তাহলে রাফির গায়ে হাত দিয়ে দেখ কলিজা টেনে ছিঁড়ে ফেলবো তদের।  

আয়ুস যেই রাফিকে মারতে যাবে তখনই রাফি আয়ুসের পিঠে একটা লাথি মারে।  এবং পরপর কয়েকটা ঘুসি আয়ুসের নাকের মাঝে মারে যার ফলে নাক ফেটে প্রচুর পরিমাণে রক্ত পড়তে শুরু করে। ধীরে ধীরে মৃত্যুর কুলে ডলে পড়ে আয়ুস।  প্রায় আধমরা করে আয়ুসকে ছেড়ে দেয় আকাশ।  এতক্ষণ ইমন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সবকিছু দেখছিল। 
অতঃপর ইমুন পকেট থেকে বন্দুক বের করে যেই আকাশের উপর গুলি চালাতে যাবে এই মূহুর্তে রাফি ইমনকে সজোরে একটা লাথি মারে।  যার ফলে হাত থেকে বন্দুক পড়ে যায় ইমন এর।  হঠাৎ করে এমন রক্তাক্ত অবস্থায় রাফিকে উঠে ফাইট করতে দেখে সত্যিই আকাশ হতভম্ব না হয়ে পারলো না?  
আকাশ পুরো " থ " হয়ে দাড়িয়ে আছে,, এমন অবস্থায় আকাশের কি করনীয় সে বুজে উঠতে পারছে না।  অতঃপর যখন পরপর চারটা গুলির আওয়াজ শুনলো তখন রাফির দিকে এক পলক তাকায় আকাশ?  এই ছেলেটা এমন কেন সেই দশ বছর থেকে আগলে রেখেছে আমায়? তাহলে কি বন্ধুত্ব এমনই??

অতঃপর সবাইকে এক এক করে মারে আকাশ ও রাফি দুজনে।  তারপর তাসনিয়া ও নীলাদ্রিকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশ্য রওনা দেয়। কারণ তাদের শরীর থেকে অনেক রক্ত করণ হচ্ছিল।  
পনেরো দিন হাসপাতালে থাকার পর আজ আকাশ,, রাফি,,নীলাদ্রি,, তাসনিয়া বাসার উদ্দেশ্য রওনা দেয়।  অতঃপর বাসায় পৌঁছে সবাই নিজ নিজ রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে নেয়।  রাফি ও আকাশ এক রুমে। তাসনিয়া ও নীলাদ্রি এক রুমে।  

কিছুক্ষণ পর আকাশ বাইক নিয়ে রওনা দেয় তার প্রিয় মানুষটার কাছে।  হ্যা আজ মুনালিসার মৃত্যু বার্ষিকী।  এক বছর কেটে গেল মুনালিসা আকাশকে  ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেছে। 

আকাশঃ এই রাগ করে আছো? 

আচ্ছা শুনো না।  এতদিন রাফি অসুস্থ থাকার কারণে তোমার কাছে আসতে পারি নি। সরি বললাম তো?  এই দেখো কান ধরছি আর এমন হবে না প্রমিশ।  ওই কথা বলবা না তুমি?  এত অভিমান করে আছো আমার উপর?  
কাদেঁ কারো উষ্ণ হাতের ছোঁয়া পেয়ে পেছনে থাকায় আকাশ।  কিছু বুজে উঠার আগেই নীলাদ্রি আকাশকে ঝাপটে ধরে৷ আচমকা এমন হওয়ায় আকাশ খানিকটা অবাক হলেও কিছু বলে নি।  আকাশ এই কদিন এ বুজতে সক্ষম হয়েছে যে এখনকার নীলাদ্রি আর আগের অহংকারী নীলাদ্রির মধ্যে অনেকটা ব্যবধান।  

নীলাদ্রিঃ আপুর জায়গাটা কি আমায় দেওয়া যায় না? 

আকাশঃ কেউ কখনো কারো জায়গা নিতে পারে না৷  

নীলাদ্রিঃ জানি।  কিন্তু বড্ড ভালবেসে ফেলেছি এই আমি তোমায়.. 

আকাশঃ তোমার আচরণেই বুজতে পেরেছি আমি। 

নীলাদ্রিঃ একটাবার কি আমায় ক্ষমা করা যায় না.? আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলেতো ওনিও ক্ষমা করে দেন। আর আপনি আমায় ক্ষমা করে আপন করতে পারবেন না?? 

আকাশঃ সময়ের সাথে সাথে অনেককিছু পরিবর্তন হয়ে যায়,, কিন্তু তুমিও পরিবর্তন হবে এটা আশা করি নি।  আমার কিছুটা সময় লাগবে নিজেকে গুছিয়ে নিতে।। 

নীলাদ্রিঃ বড্ড ভালবাসী তোমায়। 
দীর্ঘদিন অপেক্ষা করার পর আজ আমি বলতে সক্ষম অনেক ভালবাসী আপনাকে। আশা করি আমায় ফিরিয়ে দিবেন না? 

আকাশ আর কিছু না বলে একটা মুচকি হাসি দিয়ে কবর জিয়ারত করে নীলাদ্রিকে নিয়ে বাসায় চলে আসে।  
রাফির মত একটা বন্ধু পেয়ে আকাশ সত্যি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছে।  এমন বন্ধু পাওয়া সত্যি ভাগ্যের বেপার যে নিজের মৃত্যুর পরোয়া না করে বন্ধুকে বাচাঁয়।  আর ইমনের মত কিছু অর্থলোভি মানুষদের জন্য বন্ধুত্ব জিনিসটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তাই ইমনের মত মানুষদের থেকে সাবধান।। 

অতঃপর অনেক বাধা বিপওি পেরিয়ে আজ আকাশ ও নীলাদ্রি আর তাসনিয়া ও রাফির চারহাত এক করে দেওয়া হয় তখন সবাই খুশি।  নিষ্টুর এই পৃথিবীতে এই চারজনের আর কেউ নিই,,
হ্যা সেদিন রাফির অনুরোধ আর নীলাদ্রির পরিবর্তন ই মূলত আজ তাদের এক করতে সক্ষম হয়েছে।। প্রিয় বন্ধুটার কথা কি আর ফেলা যায়??  

#হ্যাপি_রিডিং 

........................................সমাপ্তি..................................... 

আসসালামু আলাইকুম।  #মাফিয়ার_শহরে গল্পটা সম্পর্কে আপনাদের ভাল লাগা খারাপ লাগা বিষয়গুলো তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাদের।  দীর্ঘদিন অপেক্ষা করানোর পর অবশেষে গল্পের সমাপ্তি টানলাম।  এতদিন আমাকে সাপোর্ট করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাদের। এতদিন তো চুপচাপ  #মাফিয়ার_শহরে গল্পটা পড়লেন এবার নিশ্চয়ই একটা রিভিউ দিবেন গল্পটা সম্পর্কে?  গল্পের কোন চরিত্র টা বেশি ভাল লেগেছে?  আর শুরু থেকে সমাপ্তিটা কেমন লেগেছে।  আর হ্য অনেক এ এখন বলবেন নীলাদ্রির সঙ্গে আকাশের মিল না দিলেও পারতাম,,  আচ্ছা মানুষ চাইলে কি পরিবর্তন হতে পারে না?  যদি সে পরিবর্তন হয় তাহলে তাকে  অন্তত একটা সুযোগ দেওয়া উচিত??  ভালবাসী প্রত্যেক পাঠক পাঠীকা ভাইবোনদের।।   সবাই ভাল থাকবেন,, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।  আসসালামু আলাইকুম।।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post