পর্বঃ৫
#আবির হাসান নিলয়
জান্নাতঃআরে তুই তো জানিস আমি এই সব
ভালোবাসা আমি পছন্দ করি না।করলে একদম
বিয়া।আর ঐ সালা কানা বলে আমাকেও নাকি
ওদের সাথে যেতে হবে ওর কপাল ভালো ও সুমুর
বয়ফ্রেন্ড না হলে ওকেও তোর মতো দিতাম
আমিঃপ্রেম করেও তো বিয়া করা যায় তাই না
জান্নাতঃনা করা যায় না
আমিঃকেনো করা যায় না
জান্নাতঃযদি প্রেম করার পরেও বিয়ে না হয়
আমিঃআর যদি হয় তাহলে?
জান্নাতঃকি গ্যারান্টি আছে
আমিঃ.......(নিশ্চুপ)
জান্নাতঃএসব আজাইরা প্যাঁচাল বন্ধ কর
আমিঃএকটা কথা বলি
জান্নাতঃবলে ফেল
আমিঃআমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই
জান্নাতঃকুত্তা তোরে থাপ্পড় দিয়ে দাত ফেলে দিবো
আর একবার যদি এসব বলিস
আমিঃএই মামা লেকের পাড় যাবা(রিক্সা চালককে)
চালকঃহ্যা মামা যাবো
আমিঃতাহলে চলো
জান্নাতঃলেকের পাড় যাওয়ার কি আছে
আমিঃএকটু কাজ আছে
জান্নাতঃতো তুই যা আমার কি
আমিঃতুমি কি আমাকে কখনো তুমি করে বলবে না
জান্নাতঃবলতে পারি যদি তুই আমাকে হাসি খুশি
রাখিস।বাট তোর ঐসব ভালোবাসার কথা বলবি না
আমিঃওকে চেষ্টা করবো
জান্নাতঃএসে গেছি নাম এখন
আমিঃহুম।
রিক্সা চালককে ভাড়া দিয়ে সামনে এগুতে লাগলাম।
পুড়ো বিকেল ঘুরাঘুরি করলাম দুজনে।এর মাঝে
জান্নাত হাজারটা প্রশ্ন করছে কিন্তু একটারও
সত্যি উত্তর দেয় নাই।ঘুরাঘুরি করে প্রায় সন্ধ্যা
হয়ে আসলো।
ভাবছি এখন কি করা যায়।যেটার জন্য আসলাম
সেটা এখনো হলো কিনা জানিনা।দেখি কল করি।
আমিঃঐ হলো নাকি
ওপাশ থেকেঃহয়ে গেছে। তোরা কোথায়
আমিঃঠিক আছে আমরা আসছি বাই
কল কেটে দিলাম।
---------------------------------------
জান্নাতঃকি হবে রে
আমিঃতোকে যে বললাম না সেই কাজটা
জান্নাতঃহয়ছে
আমিঃহুম
জান্নাতঃতাহলে চল
আমিঃকিন্তু একটা কাজ করতে হবে
জান্নাতঃকি কাজ
আমিঃতোকে চোখ ঢেকে যেতে হবে
জান্নাতঃকেনো কেনো😳
আমিঃপ্লিজ কথাটা রাখ
জান্নাতঃরাখতে পারবো না
আমিঃআমি তো তোর কেউ না।কেনো আমার
কথা রাখবি(অভিমানী কণ্ঠে)
জান্নাতঃওলে আমার ফুফাতো ভাইটা ওকে আমি রাজি
আমিঃথ্যানকু জানু
জান্নাতঃকুত্তা লাথি খাবি
আমিঃ😁😁
জান্নাতের চোখটা রুমাল দিয়ে বেধে দিলাম।
কি ভাবছেন সারপ্রাইজ দিবো?একদম সঠিক
ধরেছেন।আজ জান্নাতের বার্থডে। কিন্তু পাগলিটার
কি মন। নিজের বার্থডে আর সে নিজেই জানে না।
রুমাল দিয়ে চোখটা বেধে আস্তে আস্তে সামনে
এগুতে লাগলাম।
আমিঃজান্নাত এবার থাম
জান্নাতঃহয়ছে
আমিঃহুম
জান্নাতঃচোখটা খুলি
আমিঃদাড়া আমি খুলতেছি
চোখ খুলে দিয়েও হাত দিয়ে ওর চোখ ধরে রাখলাম।
জান্নাতঃআবার হাত দিয়ে আটকালি কেনো
আমিঃঅপেক্ষা করো বাবু
Friends let's start.. (জোড়ে বললাম)
জান্নাতের চোখ থেকে হাত সরাতেই চারপাশ থেকে
লাইটার বার্থডে বেলুন আকাশে উড়িয়ে দিলো।
এখানে আমার আর জান্নাতের সব ফ্রেন্ডস আছে।
এমনকি সুমু আর মামুনও আছে।সবাইকে আগে
থেকেই বলছিলাম যেনো কেউ ওকে উইশ না করে।
সবাই মিলে জান্নাতকে উইশ করলো।এমনটা
দেখে জান্নাত হঠাৎ করেই কেঁদে দিলো।
আমিঃআরে আরে কাদছো কেনো
জান্নাতঃনিলয়, আমি কখনো ভাবতেই পারিনি
সবাই আমাকে এভাবে উইশ করবে(কান্না করে)
আমিঃহাহাহা, পাগলি তাই বলে কান্না করতে হবে
(কথা বলতে বলতে চোখের জল মুছে দিলাম)
তারপর সবাই মিলে ছোট্ট একটা কেক কাটলাম।
জান্নাতঃহা কর
আমিঃ......(হা করলাম)
জান্নাতঃতুই না সুমু
--বলার সাথে সাথে সবাই হেসে দিলো শুধু আমি
ছাড়া।কেমন যেনো ইতস্তত বোধ লাগছিলো।
সাথে অপমানবোধটাও।জান্নাতের কাছ থেকে
পিছু চলে আসলাম।একে একে জান্নাতের সব
ফ্রেন্ডকেই কেকে খাওয়ালো শুধু মামুনকে ছাড়া।
ভালোই লাগছে সালাকেও আমাদের মতো উপশ
রাখছে😂
জান্নাতঃনিলয় এই নিলয়....!
আমিঃহুম বলো
জান্নাতঃহায় আল্লাহ তোকেই তো কেক খাওয়াতেই
ভুলে গেছি
আমিঃথাক লাগবে না
জান্নাতঃএটুকু খা(মুখের কাছে এনে)
আমিঃলাগবে না তো বলছি
জান্নাতঃদেখলি সুমু তোর জন্য নিলয় রাগ করলো
সুমুঃআমি আবার কি করলাম
জান্নাতঃতোকে প্রথমে খাওয়ানোর জন্যই নিলয়
এখন খাচ্ছে না
সুমুঃনিলয় খাও একটু প্লিজ
জয়ঃহ্যা নিলয় খা একটু
আমিঃসবাই বাসায় চলে যা(কথা ঘুরানোর চেষ্টে করে)
জয়ঃথাক নিলয় আমরাও যায় তাহলে
আমিঃনা তোরা জান্নাতের ফ্রেন্ডদের বাসা অবধি
পৌছে দিবি
রাহুলঃআমরা তিনজন ওদের চারজনকে কিভাবে
পৌছে দিবো
আমিঃচারজন না তিনজন। সুমুকে মামুন নিয়ে যাবে
রাফিঃতাহলে ঠিক আছে।
জান্নাতঃতাহলে আমি এই রাতের বেলা কি করবো
আমিঃআমাদের বাসায় যাওয়ার কথা ভুলে গেছো
জান্নাতঃওহ ঠিক আছে।
আমিঃযা তাহলে তোরা
জয়ঃঠিক আছে বাই
আমিঃআর ঐ দুই আশিকি সাবধানে যাস(মামুনকে)
মামুনঃঠিক আছে।
-----------------------------------------
সবাই চলে একে একে চলে গেলো।আপনাদের
তো বলাই হয়নি।ড্রাইভারকে কল করে গাড়ি
আনতে বলছিলাম তাই ড্রাইভার গাড়ি রেখে চলে
গেছে।গাড়ির কাছে আসতেই জান্নাত বলল....
জান্নাতঃগাড়ি কার
আমিঃতোমার শ্বশুর আব্বুর
জান্নাতঃগাড়ি আনলো কে
আমিঃআমি আনতে বলছিলাম
জান্নাতঃকিন্তু আমি তো গাড়িতে যাবো না
আমিঃকেনো
জান্নাতঃআমার এসব বিলাশবহুল জীবন ভালো লাগেনা তাই
আমিঃদেখো এখন রিক্সাই যেতে পারবো না।
জান্নাতঃচলো না যায়
আমিঃগাড়িতে উঠো
জান্নাত আর কোনো কথা না বলে গাড়িতে উঠলো।
আমিঃকি হলো মুখটাকে ওইভাবে ঘুরিয়ে আছো কেন
জান্নাতঃতুমি কে যে তোমাকে বলবো
আমিঃকি বললে তুমি আবার বলো(গাড়ি থামিয়ে)
জান্নাতঃআমি আবার কি বললাম
আমিঃতুমি আমাকে কি করে সম্মোধন করলে
জান্নাতঃতুমি করে করছি তাতে কি হয়ছে।আমাকে
হ্যাপী করছো তাই বলছি
আমিঃথ্যাংস বাবু(গাল টেনে)
জান্নাতঃকুত্তা তুই কখনো ভালো হবি না
আমিঃহিহিহিহি
-----------------------------
বাসায় আসার সাথে সাথে বাসার সব লাইট বন্ধ
হয়ে গেলো।
জান্নাতঃকিরে কি হলো
আমিঃমনে হয় লোডশেডিং চলছে
জান্নাতঃতাই বলে এখনি যেতে হবে
আমিঃজেনারেটর লাগালেই হবে।ভিতরে চল
জান্নাতকে সাথে করে বাসার ভিতরে আসতেই
ধুম করে লাইট জ্বলে উঠতেই চারপাশ থেকে
শুরু হলো...
----হ্যাপি বার্থডে টু ইউ, হ্যাপি বার্থডে টু ইউ,হ্যাপি
বার্থডে ডিয়ার জান্নাত, হ্যাপি বার্থডে টু ইউ
জান্নাতঃওয়াও আমি সত্যি অনেক অবাক হচ্ছি
সবাই আমাকে কত্তো ভালোবাসো
আম্মুঃকেনো রে আমরা তোকে ভালোবাসি না
জান্নাতঃসবাই আমাকে অনেক ভালোবাসে শুধু
এই মহিলাটি ছাড়া(জান্নাতের আম্মুকে বলল)
মামিঃআমি আবার কি করলাম
জান্নাতঃতুমি আমাকে সেদিন থাপ্পড় মারলে কেন
মামিঃবেয়াদবী দেখলে আবার মারবো
জান্নাতঃদেখলে ফুপু
আম্মুঃএসব বাদ দে।চল কেক কাটি
জান্নাতঃওকে চলো
তারপর সবাই মিলে কেক কাটতে লাগলো।আসলে
এই প্ল্যানটাও আমার ছিলো।জান্নাতকে দুবার করে
সারপ্রাইজ দিবো। আমি আর সেখানে দাঁড়িয়ে না
থেকে রুমে চলে আসলাম।কারণ আবার যদি
আগের বারের মতো অপমান করে।রুমে এসে
ড্রেস খুলতে লাগলাম। তারপর ফ্রেস হতে গেলাম।
ফ্রেস হয়ে রুমে আসতেই দেখলাম জান্নাত বসে
আছে সাথে একটুকরো কেক হাতে।
জান্নাতঃএতো সময় লাগে ফ্রেস হতে
আমিঃতুমি রুমে কেনো
জান্নাতঃকেক খাওয়াতে এলাম
আমিঃখাবো না। এখন তুমি যাও আমি ড্রেস পড়বো
জান্নাতঃএটুকু খেলে কি হয়
আমিঃবলছিনা খাবো না।😡
জান্নাতঃএতো রাগ করো কেনো। বোন হয়ে ভাইকে
খাওয়াতে পারি না বুঝি
আমিঃআমার কোনো বোন নাই।আর তুই আমার
কোন কালের বোন লাগিস।বের হো সালি
জান্নাতঃআগে খা তারপর যাচ্ছি।জানিস কাউকে
খাওয়াইনি প্রথম তোমার জন্য নিয়ে আসছি।এখন
হা করো তাড়াতাড়ি না হলে যাবোনা
আমিঃ.......(অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও খেতে হলো)
জান্নাতঃসবটুকুই খেলে আমাকে খাওয়াবে না
আমিঃওয়েট।
জান্নাতকে কিছু বলতে না দিয়ে দুহাত দিয়ে ওর
গালটা ধরে ওর ঠোট জোড়াকে আমার ঠোটের
সাথে মিলিয়ে নিলাম।প্রায় ৫মিনিট লম্বা কিস করে
জান্নাতকে ছেড়ে দিতেই জান্নাত.....??
চলবে.........