গল্পঃ বেস্টফ্রেন্ড নাকি বয়ফ্রেন্ড পর্ব ৩ | Romantic Love Story




বেস্টফ্রেন্ড নাকি বয়ফ্রেন্ড 
#Maishara_Jahan
part.........3 

আলো,,, মানে,, এখন আমার কি হবে, কি করবো। আল্লাহ আমাকে এ কি মুছিবতে ফেললা। কার কথা শুনবো বয়ফ্রেন্ড নাকি বেস্টফ্রেন্ডের৷ 

রাতে,,,,,,,,,

আলো,,,,,,, কালকে অনেক কাজ আছে, মা বাবার জন্য পার্টি এরেন্জ করতে হবে, আমার তো অনেক ঘুম পাচ্ছে। 

আলো শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। তখনি আবির ফোন করে। কিন্তু আলো ফোন ধরে না। 

আবির,,,,,,,,, ফোন ধরছে না কেনো, নিশ্চয়ই আয়ানের সাথে কথা বলছে। উফফ আলো ফোন ধরো, না হলে আজ আমার আর ঘুম হবে না। 

আয়ান,,,,,,, রাতের বেলায় প্রেমিক প্রেমিকা বেশি কথা বলে৷ আবির নিশ্চয়ই ফোন দিবে আলোকে, না, দরকার পড়লে আজ সারা রাত কথা বলবো আলোর সাথে।আবল তাবল যাই আসে মুখ দিয়ে বলবো তাও ওদের কথা বলতে দিবো না। 

আয়ান ফোন করে আলোকে, কিন্তু আলো ঘুমের দেশে চলে গেছে। 

আয়ান,,,,,,, কি ব্যাপার আলো আমার ফোন ধরছে না, আমার (অভিমানে) আলো ঐ লন্ডনের বান্দরের সাথে কথা বলছে না তো। না না হতেই পারে না৷ যদি হয় তাহলে। ঐ আবির মনে হয় আলোর সাথে রোমান্টিক রোমান্টিক কথা বলছে। না না আমি আবার কল করি। 

দুজনে ইচ্ছে মতো কল করছে কিন্তু আলোর কোনো হুশ নেয়, সে ফোন সাইলেন্সে রেখে ঘুমাচ্ছে।

আবির,,,,,,,, দুরর আর ভালো লাগছে না। ঐ আয়ানের সাথে কথা বলছে তো বলোক। কাল আলোকো ধরবো। 

আয়ান,,,,,,, এখনো কল ধরছে না, কি এমন কথা বলছে ওরা। আলোর তো রোমান্টিক গল্প পড়তে অনেক ভালোবাসে, আবির ওর সাথে ঐ সব ঐ সব কোনো কথা বলছে না তো। 

দূররর আমার আর সহ্য হচ্ছে না। আমাকে রেখে ঐ বান্দরের সাথে কথা বলবে। দাড়া এখনি গিয়ে মজা বুঝাচ্ছি। (যেতে নেয় আবার থেমে যায়) 

প্রায় ১ টা বাঝতে নিলো, এতো রাতে কিভাবে যাবো। আয়ডিয়া আলো যেভাবে আসে আমার রুমে লুকিয়ে সেইভাবে যাবো। কিন্তু একটা মেয়ের রুমে এতো রাতে লুকিয়ে যাবো তা ঠিক হবে না। 

কিন্তু আয়ান তুইতো ছোটো বেলায় কতো যেতি। কিন্তু আমরা এখন বড়ো হয়ে গেছি, এখন কিভাবে যাবো। আর গেলেই বা কি হয়েছে ঐ আলো তো যখন তখন আমার রুমে অর্ধেক রাতে চলে আসে। এক বার তো আমি রাতে গোসল করে টাওয়াল পড়ে বের হয়েছিলাম তখন আলো এসে বলে, ওয়াও নাইস বডি। 

ও আসতে পারে, তাহলে আমি গেলে দোষ কি। কিন্তু ও তো মেয়ে ( নিজের সাথে ঝগড়া করছে আয়ান ) দূরর আয়ান তুই ভাবতে ভাবতে ঐ আবির আলোকে নিয়ে যাবে। না যায় হোক দেখা যাবে আমি যাচ্ছি আলোর রুমে। 

আয়ান লুকিয়ে লুকিয়ে তার বাড়ি থেকে বের হয়, তারপর দেওয়ার টপকিয়ে,মই এনে আলোর বেলকনিতে উঠে রুমে যায়,চোরের মতো। 

আয়ান,,,,,,, আল্লাহ এখন যদি দেখি বান্দরনি হেঁসে হেঁসে ফোনে কথা বলছে তাহলে আজ ওরে আমি উঠিয়ে এই শীতে পানিতে ফেলে দিবো। 

আয়ান আস্তে আস্তে গিয়ে দেখে আলো এমন ভাবে কম্বল ধরে ঘুমিয়ে আছে, যেনো কেও ওটা চুরি করে নিয়ে যাবে৷ 

আয়ান,,,,,,,,, এই পাগলি তো ঘুমিয়ে আছে, তাও আবার ঘুটি সুটি মেরে। ওর ফোন কোথায়, এই তো  টেবিলে। 

আয়ান ফোন নিয়ে চেক করে৷ 

আয়ান,,,,, আলো শুধু আমার না আবির ও ফোন ধরে নি। যাক বাচাঁ গেলো তার মানে এই বান্দরনী ঘুমাচ্ছিলো৷ আর দেখ বেশরম কতো বার ফোন দিছে আলোকে। 

যাক এখন আমি শান্তিতে ঘুমাতে পারবো। আয়ান ঘুমন্ত আলোর দিকে তাকায়। আয়ান আলোর মুখের সামনে থেকে চুল গুলো সরায়। 

,,,, আরে আমার গুলগুলিটা রে, কতো কিউট। ঘুমন্ত অবস্থায় কতো শান্ত, শিষ্ট ভদ্র লাগে৷ ( নাক টেনে ) এখন আমি যায়, বেশি ক্ষন থাকা সেফ না। 

আয়ান আবার লুকিয়ে চলে যায়, আর শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়ে।      

সকালে,,,,,,, 

আয়ান আলোর বাড়িতে যায় পার্টির ব্যবস্থা করার জন্য, আর সেই বাহানায় আবির ও যায়। আয়ান আর আবির সামনা সামনি বসে আছে। দুজন দুজনকে দেখে মুশকি হাসছে কিন্তু চোখ তার উল্টোটা দেখাচ্ছে। 

আলোর মা,,,,, আলোর যে আয়ান ছাড়া আরো বন্ধু আছে সেটা জানতাম না৷ 

আয়ান,,,,,,,,, কিন্তু আন্টি সব থেকে ভালো বন্ধু কে। 

মা,,,,,,, সেটা তুই এটা তো সবাই জানে। 

আবির,,,,,,, আন্টি আমিও কিন্তু আলোর কাছের বন্ধু। 

মা,,,,,,, ও আচ্ছা,,,,  তা বাবা কি খাবে,তোমার জন্য নাস্তা নিয়ে আসি। 

আবির,,,,,,, না আন্টি জাস্ট কফি। 

মা,,,,,, ঠিক আছে। 

আলোর মা রান্না ঘরে চলে যায়৷ 

আবির,,,,,,, কি আয়ান তোমাকে তো এক গ্লাস পানির জন্যও জিজ্ঞেস করলো না। সো সেড। 

আয়ান,,,,,, যারা মেহমান তাদের এই সব জিজ্ঞেস করা হয়, ঘরের লোককে না। একটু পরে তার প্রমান পেয়ে যাবে। 

আলোর মা আবিরের জন্য কফি আনে, আর আয়ানের জন্য, পরোটা, সবজি, আলুর দম আর জুস নিয়ে আসে। 

আয়ান,,,,,,, আরে আন্টি এতো কিছু কেনো। 

মা,,,,,, চুপ কর, জানি কিছু খেয়ে আসিস নি। তোর মা কি কিছু খাওয়ায় না এমন শুকিয়ে যাচ্ছিস কেনো। 

আয়ান,,,,,,, আমি যদি হাতি ও হয়ে যায় তাও তোমার আর মার নজরে আমি শুকনোই থাকবো। 

মা,,,,,, চুপচাপ সব গুলো খা, না হলে খবর আছে, তুই খা আমার একটু কাজ আছে। 

আলোর মা চলে যায়, আয়ান একটু ভাব দেখিয়ে খেতে থাকে, আবির মুখ ফুলিয়ে বসে থাকে। তখনি আলো উপর থেকে নিচে নামে। 

আবির,,,,,,, আলো তোমার এতো দেরি লাগে গোসল করে রেডি হতে। 

আয়ান,,,,,,, আজ এতো তাড়াতাড়ি গোসল করে রেডি হয়ে গেলি যে, অন্য দিন তো ২ ঘন্টা লাগে গোসল করতে। ( খেতে খেতে ) 

আলো,,,,,, তোরা এসেছিস না তাই তাড়াতাড়ি করলাম। 

আবির,,,,,,,  ১ ঘন্টা ধরে বসে আছি এটা তাড়াতাড়ি। 

আলো,,,,,, আর আয়ান কাল তুই আমাকে এতো কল করেছিস কেনো। 

আয়ান,,,,,,, এমনি তোর সাথে কথা বলার ছিলো, তারপর যখন তুই ধরলি না তখন বুঝলাম তুই ঘুমিয়ে গেছিস তাই বেশি কল করিনি। 

আলো,,,,,,, আচ্ছা ৭০ টা কল করার পর তুই বুঝতে পেরেছিস আমি ঘুমিয়ে গেছি। 

আবির,,,,,,,, এতো কল কেও করে। 

আলো,,,,,,, আচ্ছা, তা আপনি আমাকে ৫৫ টা কল কেনো দিয়েছেন একটু শুনি। 

আবির,,,,,, কথা বলার জন্য। 

আয়ান,,,,, আমার থেকে কম কল দিয়েছে ( হেঁসে হেঁসে) 

আলো,,,,,,, তুই তো এমন ভাবে বলছিস যেনো, তোকে এর জন্য মেডেল দেওয়া হবে। তোরা এমন ভাবে ফোন দিয়েছিস, সকালে উঠে আমি ভেবেছি কেও মরে টরে গেলো নাকি। 

আলো আয়ানের পাশে বসে, তার প্লেট থেকে খাবার খেতে থাকে, আর কথা বলতে থাকে। আবির কফি খাচ্ছে আর ওদের দেখছে, চোখ দিয়ে আগুন ঝড়ছে। 

আবির,,,,,,,  আলো তুমি অন্য দিকে বসো। 

আলো,,,,, অন্য দিকে বসলে খাবো কিভাবে। 

আবির,,,,, তোমার মাকে বলো অন্য প্লেটে খাবার দিতে। 

আলো,,,,, দূরর এতে আমাদের দুজনের হয়ে যাবে। 

আয়ান,,,,,, আমরা বেশির ভাগ এভাবেই খায়। ( আবিরকে টিটকারি দিয়ে ) 

আলো,,,,, আচ্ছা এখন আমার কথা শুনো, এখন আমরা বের হবো পার্টির জন্য কিছু জিনিস পত্র লাগবে৷ তারপর সব ব্যাবস্তা করবো। ঠিক আছে চলো। 

আলো আয়ানের খাওয়া অর্ধেক জুসটা খেতে নেয়। 

আবির,,,,,,, আরে কি করো কি, এটা তো জুটো। 

আলো,,,, আরে আয়ানই তো খেয়েছে অন্য কেও তো আর না। 

বলে খেয়ে নেয়, আয়ান আবিরের দিকে তাকিয়ে হাসে,আর আবির রাগে ফাটে। 

তিনজনে মার্কেটের ভিতরে যায়, আবির গিয়ে আলোর হাতের ফাঁকে হাত ডুকায়। আয়ান রাগে ফায়ার, আয়ান ও গিয়ে আলোর অন্য হাতের ফাঁকে হাত ডুকায়। 

দুজন দুজনার দিকে রাগে তাকিয়ে আছে। মাঝখানে আলো বেচারি। দুজনে পারে না আলোকে উঠিয়ে নিয়ে যেতে। বেচারি দুই লম্বুর মাঝখানে ভালো করে হাঁটতেও পারছে না। 

দুজনে মনে হয় আলোকে নিয়ে টানা টানি লাগিয়ে দিয়েছে৷ আলো বিরক্ত হয়ে, এক ঝটকায় দুজনের হাত ছাড়িয়ে নেয়৷ 

আলো,,,,,,, বেস এখন কেও আমাকে ধরবে না, কি শুরু করে দিয়েছে। আমার হাত ধরার কমপিটিশন হচ্ছে এখানে নাকি। চুপচাপ নিজেদের হাত পকেটে ঢুকিয়ে হাঁটো৷ 

তিন জনের শপিং করা প্রায় শেষ। আলোর হালকা শীত লাগছে। একটু একটু কাঁপা কাঁপা অবস্থায় হাঁটছে। আলো সামনে হাঁটছে আর দুজন পিছনে পিছনে। 

আয়ান,,,,,, কতো বার বলবো শীতের কাপড় পড়ে বের হতে, না মেডামের স্টাইল লাগবে। নে ধর আমার জেকেট। 

আবির,,,,,, আলো তুমি যে কি করো না। 

আলো পিছনে তাকিয়ে দেখে দুজনে তার জেকেট খুলে তার সামনে ধরেছে। 

আলো,,,,( কারটা রেখে কারটা নিবো, উফফ ) আলো আয়ানেরটা নিতে যায়, আবির রাগি চোখে তাকায়, আবিরেরটা নিতে গেলে আয়ান রাগি চোখে তাকায়। 

আলো বিরক্ত হয়ে দুজনারটা নিয়ে এক সাথে পড়ে নেয়। 

আলো,,,,,,, আসলে আমার অনেক বেশি শীত করছে। 

তিনজনে শপিং করে বাসায় যায়, পার্টির জন্য সব সাজানোর কাজে সাহায্য করছে। আবির আর আয়ান নিজের কাজ রেখে তারা বার বার আলোর কাছে যায় তার সাহায্য করতে। 

রাত হয়ে যায় সবাই যার যার বাড়িতে যায়। 

সকালে, আয়ান আর আলো মিলে কাজ করে । সন্ধ্যা হয়ে যায়। 

পার্টি শুরু হয়৷ সব মেহমান আসে। সাথে আবির আর আয়ান ও আসে। তারা দুজন সেম নেবিব্লু কালারের কোর্ট পড়ে এসেছে বলে দুজনের মন খারাপ৷ 

তার মধ্যে আলো এখনো নিচে আসেনি। 

আবির,,,,,,  দেখবে আলো আমার দেওয়া সাদা গ্রাওনটা পড়ে আসবে৷।। 

আয়ান,,,,,,, (মানে কি এই বান্দরটাও আবার আলোকে ড্রেস গিফট করেছে। তাতে কি আলো আমারটাই পড়ে আসবে সিউর) 

আলো নিচে নামে, দুজনেই তাকিয়ে আছে, আবির আলোর কাছে যায়। কিন্তু আয়ানের মনটা খারাপ হয়ে যায়৷ কারন আলো আবিরের দেওয়া গিফটা পড়ে আসে৷ 

আয়ান এতে অনেক কষ্ট পায়৷ কিন্তু বুঝতে দেয় না। 

আয়ান,,,,,,,( একটা দুদিনের আসা ছেলে আমার থেকে বেশি আপন হয়ে গেলো তোর কাছে। রাগ না কষ্ট লাগছে৷) চোখ দিয়ে পানি বের হবে এমন অবস্থা। এটা অনেক ছোট বিষয় হলেও, যারা কাওকে ভালোবাসে তারা বুঝতে পারবে। 

আলো হেসে হেসে কথা বলছে, আয়ানের কাছে যায়। 

আলো,,,,,, কিরে আজ এতো চুপচাপ কেনো, কি হয়েছে৷ 

আয়ান,,,,,,, কিছু না। ড্রেসটাতে অনেক সুন্দর লাগছে তোকে৷ 

আলো,,,,, ( আলো বুঝতে পেরেছে, আয়ান কি বলতে চায়ছে) তাই নাকি ধন্যবাদ। তবে তোকেও আজ সেই লাগছে৷ 

অনেক খন হয়ে গেছে, আয়ান বেস চুপচাপ আছে, আলো বকবক করছে, আর আবির শুনছে আর জবাব দিচ্ছে। 

আলো,,,,,, তোমরা এখানে থাকো আমি আসছি। 

আবির,,,,,,, এখন কোথায় যাচ্ছো। 

আলো,,,,, জাস্ট ওয়েট। 

আলো উপরে চলে যায়। অনেক ক্ষন হয়ে গেলো আসে না।

আবির,,,,,, আয়ান কি হলো এখনো আলো আসছে না কেনো। 

আয়ান,,,,,,, আলো আসুক তারপর ওকে জিজ্ঞেস করে তোমাকে বলছি হুমম ( রাগে ) 

তখন আলো উপর থেকে নিচে আসছে, প্রায় সবার নজর আলোর দিকে। 

আবির ব্রু কুঁচকে তাকায়, আর আয়ান তাকিয়ে বসা থেকে উঠে যায়, মুখ ভরা হাসি নিয়ে। 

চলবে,,,,,,,,,

ভালো লাগলে like, comment করে সাথে থাকুন ধন্যবাদ।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post