গল্পঃ_চরিত্রহীন_ছেলের_ভালোবাসা_পর্ব০৫_শেষ_পর্ব

 #গল্পঃ_চরিত্রহীন_ছেলের_ভালোবাসা_পর্ব০৫_শেষ_পর্ব

লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল। 

রাতে রনির গিটার নিয়ে ছাদে চলে গেলাম। অনেক দিন পর গিটার হাতে নিলাম। আসলে গিটার বাজানো আমার পুরনো শখ। তবে নিশির সাথে বিয়ে হওয়ার পর থেকে আর হাতে নেওয়া হয়নি। আস্তে আস্তে গিটার বাজানো শুরু করলাম। কিছুক্ষণ হুদাই বাজানোর পর, আমার প্রিয় গানের টিউন তুলে গান গাওয়া শুরু করলাম।।গান গাওয়া শেষে যেই না ঘুরে নিচে 
আসতে যাবো ঠিক তখনই দেখি নিশি দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আমি নিশিকে বললাম..........

আমিঃ কি ব্যাপার তুই এখানে? 

নিশিঃ না মানে তোমার গিটারের সুর আর গান শুনে এখানে আসলাম। তুমি তো অনেক সুন্দর করে গান গাইতে পারো? 

আমিঃ তোকে কি আমি জিজ্ঞেস করেছি,,, আমার গান শুনতে কেমন লাগে। আমি গিটার কেমন বাজাই হে। 
আর হ্যা কালকে সকালে তোকে বাড়িতে দিয়ে আসবো আমার প্রতিশোধ নেওয়া হয়ে গেছে? 

নিশিঃ না আমি যাবো না? ( মাথা নিচু করে ) 

আমিঃ যা বলেছি এটাই ফাইনাল কালকে সকালে রেড়ি হয়ে থাকবি। সকালে বাসায় দিয়ে আসবো আমি। এর উপর আজকে তোর সাথে যা হলো...?? 😁😁

আমি এই কথাটা বলার সাথে সাথে নিশি আমার দিকে তাকালো। হালকা আলোয় নিশির চোখ দেখে বুঝতে পারলাম কান্না করতেছে..। আমি কিছু না বলে সোজা নিচে চলে আসলাম।

পরের দিন সকালে নিশিকে তাদের বাসায় নামিয়ে দিয়ে আসলাম। চলে যাচ্ছি এই দেশ ছেড়ে। নিজের পরিবার কে ছেড়ে। পরিবার..সে তো অনেক আগেই আমাকে ছেড়ে দিয়েছে। আমি আর কি ভাবে তাদের কে ছেড়ে যাবো?? রনিকে কল দিয়ে শেষ বারের মতো কথা বলে নিলাম।

রনি আমাকে বিদেশে যেতে মানা করতেছে।। সে নাকি ঢাকায় ব্যাক করতেছে। কিন্তু আমাকে থাকা যাবে না।কারন রনি আসলে আমাকে কখনও যেতে দিবে না। আমাকে যেতেই হবে,আর এখানে থাকা যাবে না। এই বলে রওয়ানা দিলাম,,,নতুন ঠিকানায়....

দীর্ঘ ১বছর পর.........

চলে আসলাম নিজের দেশ ছেড়ে। দেখতে দেখতে প্রায় এক বছর শেষ হয়ে গেছে। এর মধ্যে হাজার বার 
বাবা মা, আর রনির কথা অনেক মনে পড়েছে৷ সত্যি তাদের কে খুব মিচ করছি। যা আমার মুখ দিয়ে প্রকাশ করা অসম্ভব। 

নিশির কথাও খুব মনে পড়ে।। এতোদিনে মনে হয় নিশি আরও একটা বিয়ে করে নিয়েছে। দেখতে দেখতে চার বছর পুর্ণ হয়ে গেছে।। আজকেই চার বছর পর আবার নিজের দেশে পিরে আসলাম।

দেশে এসে সোজা রনির বাসায় চলে গেলাম।। রনিকে সারপ্রাইজ দিবো বলে অনেকক্ষণ ধরে রনির বাসার কলিং বেল বাঝাচ্ছি কিন্তু কেউ দরজা খুলছে না। অনেকক্ষণ পর একটা মেয়ে এসে দরজাটা খুলে দেয় আর আমাকে বলে........... 

**যারা কষ্ট করে গল্প পড়ে লাইক কমেন্ট করে আমাকে উৎসাহিত করেন। এবং যারা গল্প সেয়ার করেন। তাদের প্রতি অন্তরের অন্তস্তল থেকে ভালোবাসা রইলো😍😍

দয়া করে আপনার কাছে সমস্ত গল্পটা কেমন লেগেছে লাইক কমেন্ট করে আপনার মতামত জানাবেন। 
আমার প্রিয় গল্প পাঠক ভাই ও বোনদের প্রতি আমার অন্তরের অন্তস্তল থেক ভালোবাসা রইলো 😍😍
গল্পের মাঝে বিরক্ত করার জন্য আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত 🙏🙏 ইতিঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল। 

মেয়েঃ জ্বি বলুন কাকে চান? 

আমিঃ রনি আছে কি? 

মেয়েঃ জ্বি আছে? 

আমিঃ দাঁড়ান আমি ঢেকে দিতেছি? 

মেয়েঃ কই গো.... ( রনির উদ্দেশ্য )? 

রনিঃ কি হয়েছে? ( ভিতর থেকে ) 

মেয়েঃ তোমার সাথে কে দেখা করতে এসেছে? 

রনিঃ কে এসেছে আমার সাথে দেখা করতে? ( বাহিরে আসতে আসতে )

বাহিরে এসে রনি আমাকে দেখে থ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে আছি। কিন্তু কেউ কোনো কথা বলছি না।

শুধু আছে দুজনের চোখে হাজারো অভিমান।হটাৎ করে রনি এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আর কান্না করে দিলো, আমিও কান্না করে দিলাম। এরপর রনি আমাকে বললো....... 

রনিঃ এতোদিন পরে এই হতো ভাগা বন্ধুর কথা মনে পড়লো? 

আমিঃ হুমম মনে তো পড়েছে প্রতিটা দিন,,,তাইতো তোর সাথে দেখা করতে চলে আসলাম? 

রনিঃ আসার কি দরকার ছিলো। কেনো আসলি,না আসলেও পারতি। চলে যা তুই? 

আমিঃ চলে যাবো? 

রনিঃ হুমমম যা চলে যা তুই? 

আমিঃ সত্যি সত্যি কিন্তু চলে যাবো? 

রনিঃ হুমমমম যা? 

আমিঃ ওকে? 

এই বলে,, যেই আমি চলে আসতে যাবো। রনি আমাকে টেনে তার বুকে নিয়ে নিলো। আর আমাকে বলতে শুরু করলো.........

রনিঃ হালা দীর্ঘ চার বছর পর দেখা দিলি। আর বলছিস চলে যাবি?

আমিঃ তুই তো বলছিস চলে যেতে? 

রনিঃ আমি বললে তুই চলে যাবি হুমম? 

আমিঃ আরে না আমি তো একটু মজা করলাম? 

রনিঃ হুমম। ও এই কে জানিস? 

আমিঃ কে....? 

রনিঃ তোর ভাবি,,,ওর নাম নিধি। দুই বছর হয়েছে বিয়ে করেছি। আর নিধি ও হচ্ছে....?( পুরোটা না বলতে দিয়ে )

নিধিঃ থাক আর বলতে হবে না,, উনার নাম নিশান। যার কথা তুমি প্রতিদিন বলো? 

রনিঃ চলে ভিতরে চল। অনেক কথা জমে আছে, আজ সব বলবো। আগে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে রেস্ট নে? 

আমিঃ হুমমম চল? 

দিনটা রনি আর নিধির সাথে গল্প করে কাটিয়ে দিলাম। পরের দিন সকালে ঘুমিয়ে আছি। হটাৎ করে মনে হলো আমার বুকের উপর কিছু আছে। যার কারনে হালকা ভারি ভারি লাগছে।

আমি আস্তে আস্তে চোখ খুলে দেখি একটা বাচ্চা মেয়ে আমার বুকের উপর বসে আছে। এই দরেন ৩/৪ বছর বয়স হবে।

মেয়েটা দেখতে অনেক কিউট? কিছুটা আমার চেহারার সাথে মিল রয়েছে। কিন্তু কে এই মেয়ে। রনি আর নিধির তো কোনো সন্তান নেই।

যাই হোক বাচ্চা টা কার সেটা পরে জানা যাবে।। আমি একটু খেলা করি বাচ্চাটার সাথে। বাচ্চাদের সাথে 
খেলা দুলা করতে আমার আমার অনেক ভালো লাগে।

অল্প কিছুক্ষণ খেলা ধুলা করলাম মেয়েটার সাথে। কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো মেয়টি একবারের জন্য কান্না করেনি।। কিছুক্ষণ পর মেয়েটাকে কোলে করে বাহিরে আসলাম,,ডাইনিং রুমে।

বাহিরে এসে আমি পুরাই অবাক।থথ হয়ে এক যায়গায় দাঁড়িয়ে আছি.। মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছে না। চোখ দিয়ে দুই ফোটা নোনা ঝল বের হলো। কারন বাহিরে এসে দেখি আব্বু,আম্মু,বোন, মামা, মামি সবাই বসে আছে। আর রনির সাথে কথা বলতেছে।

আম্মু আমাকে দেখে দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো। আমিও কান্না করে দিলাম।। আমার ছোট বোন এসে আমার কোল থেকে বাচ্চা মেয়েটাকে নিয়ে নিলো। আর আম্মু আমাকে বললো..... 

আম্মুঃ আমাদের কে ছেড়ে কি ভাবে এতোদিন ছিলি৷ আমাদের কথা একুটও মনে পড়েনি? 

আমিঃ পড়েছে মা প্রতিটা দিন মনে পড়েছে। কিন্তু তুমি আব্বু মানা করেছো বাসায় না যাইতে তাই যাইনি? 

আম্মুঃ তুই কি এখনও আমাদের উপর রাগ করে আছিস? 

আমিঃ এগুলো কি বলো আম্মু। আমি তোমার উপর রাগ করতে পারি বলো? 

আম্মুঃ তুই দেশ ছেড়ে যাবার পর নিশি আমাদের কে সব খুলে বলেছে৷ আর আমরা আমাদের ভুল বুঝতে পারছি। ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে?

আমিঃ এসব কথা থাক না এখন? 

আম্মুঃ আমাদের মাফ করে দে? 

আমিঃ তোমাদের উপর কখনো রাগ করিনি৷ তাহলে মাফ করার কথা কোথায় থেকে আসে......? 

আম্মুঃএটা কে জানিস? ( পিচ্চি মেয়েটার কথা বললো)

আমিঃ কে....? 

আম্মুঃ তোর আর নিশির মেয়ে....? 

আমিঃ কিহহহহ? 

আম্মুঃ হুমমম? 

তারপর আমি মেয়েটাকে আবার কোলে তুলে নিলাম।। নিয়ে কান্না করে দিলাম। আম্মু আমার কান্না করা দেখে বললো......... 

আম্মুঃ কিরে কান্না করতেছিস কেনো? 

আমিঃ এমনিতেই খুশিতে আম্মু? 

এরপর আমি একবার চারপাশে তাকিয়ে দেখলাম নিশি এসেছে কিনা। তখনই আম্মু আমাকে বললো.........

আম্মুঃ কিরে কি খুঁজতেছিস 

আমিঃ কিছু না? 

আম্মুঃ আমি জানি তুই কাকে খুঁজতছিস। খুঁজে লাভ নাই। সে আসে নাই? 

তারপর বিকেলের দিকে নিজের বাসায় চলে গেলাম।।
বাসায় এসে দেখি বাসা টা সেই রকম করে সাজানো। ঠিক যেই রকম টা আমি চলে যাবার সময় ছিলো নিশির জন্মদিনে। বাসায় আসছি দুই ঘন্টা হয়ে গেলো এখনো নিশিকে একটা বারের জন্য দেখলাম না। 
আমি আমার ছোট বোনকে বললাম..........

আমিঃ এই জেরিন? 

জেরিনঃ হুমমম?

আমিঃ আমার মেয়েটাকে একটু নিয়ে আয় তো। কতক্ষণ হয়েছে দেখিনি? 

জেরিনঃ জ্বি ভাইয়া আনতেছি? 

তারপর নিজের মেয়ের সাথে অনেকক্ষণ খেলা দুলা করলাম। এমন সময় মনে হলো কে যেনো দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু যখনই দরজার দিকে তাকাই তখনই সরে যায়। রাতে ছাদে দাঁড়িয়ে আছি। এখন পর্যন্ত নিশির দেখা পেলাম না।

আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবতেছি,, কি কারনে নিশি আমার কাছে আসছে না। না আমার কাছে আসতে নিজেকে অপরাধী ভাবছে। এই সব কিছু ভাবতেছি আকাশের দিকে তাকিয়ে।

তখনই মনে হলো কেউ একজন ছাদে এসেছে। তাই আমি একটু সাইডে গিয়ে দাঁড়ালাম।

নিশি ছাদে এসেছে.।। ছাদে এসে কি জেনো খুঁজতেছে হয়তো আমাকে।। চাঁদের আলোয় নিশিকে অনেক সুন্দর লাগছে। আমার মুখে কিভাবে তার সুন্দর্য বর্ণনা করবো, আমি বুঝতে পারছি না। এতটা সুন্দর লাগছে নিশিকে....

হটাৎ করে গিয়ে নিশিকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম। নিশি অনেক টা ভয় পেয়ে গেলো। আর আমাকে দেখে মাথা নিচু করে রাখলো। আমি নিশিকে বললাম........ 

আমিঃ তুমি আমার কাছ থেকে দুরে দুরে পালিয়ে আছো কেনো। কি হলো কথা বলো? 

নিশিঃ আমি তোমার সাথে যা করেছি,, তাতে তোমার সাথে কথা বলার অধিকার হারিয়ে ফেলেছি? 

আমিঃ আমি কি তা বলেছি। যেদিন এ দেশ ছেড়ে চলে গেছি। সে দিন আমি সব কিছু ভুলে গেয়েছি। আচ্ছা আমরা কি সব কিছু আবার নতুন করে শুরু করতে পারি? 

এই কথা শুনে নিশি মাথা তুলে আমার দিকে তাকালো।
নিশির চোখে পানি টলোমলো করছে।। এরপর নিশি আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিলো। আর বলতে লাগলো.......... 

নিশিঃ হুমমম পারি? 

আমিঃ আমাকে কি ভালোবাসবে? 

নিশিঃ হুমমম ভালোবাসবো। যতদিন এই দেহে প্রাণ আছে ততদিন। আর কখনো অবহেলা করবো না? 

আমিঃ আমিও ভালোবাসবো তোমাকে? 

নিশিঃ চলো একটু ওই খানে গিয়ে বসে বসে চাঁদ দেখি। অনেক দিনের স্বপ্ন দুজন এক সাথে চাঁদ দেখবো? 

আমিঃ নিশি একটা কথা বলি? 

নিশিঃ কি বলবে বলো? 

আমিঃ আমাদের মা-মনির জন্য একটা বাবু দরকার না। দুজনে এক সাথে খেলা দুলা করবে৷ চলো একটা বাবু আনার ব্যাবস্থা করি? 

নিশিঃ যাহ সবার সামনে কি বলো এসব আমার লজ্জা করেনা,গল্প পড়ে যারা ওরা সব কথা শুনতেছে। ওদের কে তুমি বলে দাও চলে যেতে? 

~~~এই যে গল্প পাঠক ভাই বোনেরা আর থাকিয়েন না প্লিজ। আমার বউ খুব লজ্জা পাইছে তো। আপনারাও আজব লোক, অন্যের বাসর দেখার জন্য বসে থাকেন। আপনার বাসর দেখতে কি আমি যাই বলেন, যাইনা 😁😁 তাহলে আপনারা আমার রোমান্টিক সময়ে ডিস্টার্ব করতে আসেন কেনো 🤗 লজ্জা করেনা বুঝি আমার।

******************সমাপ্ত ************************ 

আমার গল্প পাঠক ভাই ও বোনেরা চুপি চুপি গল্প পড়ে লাইক কমেন্ট না করে কেটে পড়বেন না প্লিজ।

আপনাদের লাইক কমেন্ট দেখলে গল্প লিখার আগ্রহ বাড়বে এবং লিখতে সুবিধা হবে। আপনাদের লাইক কমেন্ট দেখলে ইচ্ছে করে গল্প প্রতিদিন লিখতে☺

ভালো রিসপেন্স ফেলে নতুন গল্প নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হবো😍😍

ততক্ষণ সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন শুভ কামনা রইলো 😍😍



ভুলক্রটি ক্ষমা ও সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ভালো লাগলে
অবশ্যই লাইক কমেন্ট করে সব সময় সাথে থাকবেন।

ধন্যবাদ সবাইকে.....
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post