গল্প: কিং
লেখক: মোঃ শাহরিয়ার ইফতেখায়রুল হক সরকার
পর্ব: ৬ এবং শেষ
শাহরিয়ারকে ব্রিজ থেকে পরে যেতে দেখে
পুলিশ গাড়ি থামায় গাড়ি থেকে ওসি ওকিছু পুলিশ
নেমে শারিয়ারকে খুজতে থাকে কিন্তু ব্রিজের উপর
থেকে অন্ধকারের জন্য নিচে কিছুই ঠিকমতো দেখা
যাচ্ছে না ।
কিছুক্ষন পর মেঘলাও গাড়ি থেকে নেমে এসে
চিৎকার করে কান্না করতে থাকে।
ওসি, ম্যাডাম শান্ত হন আমরা কিছু একটা ব্যাবস্থা
করছি।
,,,,,,,,কিন্তু মেঘলা শুধু কান্না করতেই থাকে,,,,,,,
ওই দিন নদী সহ আশেপাশের সমস্ত জায়গায়
পুলিশ কিংকে খুজেছে কিন্তু কিং কে কোথাও
পাওয়া যায় নায়। তাই সবাই ধারনা করেছে যে
কিং আর বেঁচে নেই নদীর পানিতে ডুবে মারা গেছে
পরের দিন শহরে নেমে পরে শোকের ছায়া। কিং
আর বেঁচে নেই। শহরের অনেক মানুষ ভাবতেই
পারছেনা।শহরের এমন জায়গা নাই যে কিং এর
মৃত্যুর খবর পৌছে নাই। পুরো শহর জুড়েই হৈচৈ
কিং এর মৃত্যু নিয়ে লেগে গেছে। শহরের মানুষ
বিশ্বাসী করতে পারছেনা যে কিং এর মতো একজন
মহান মানুষ আর বেঁচে নেই। শহরের প্রতিটি
মানুষের চোখেই শুধু জল টপটপ করছে।কিন্তু
যেটা সত্যি সেটা তো মেনে নিতেই হবে।
,,দুই মাস হয়ে গেছে।মেঘলা একটা অন্ধকার
রুমের মধ্যে পরে আছে। ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া
করেনা।চোখের নিচে কালো
দাগ পরে গেছে। রাতে ঠিকমতো ঘুমায় না।
চোখের জলে শুধুই বালিশ ভিজিয়েছে।
শহরিয়ারের মৃত্যু মেঘলা কিছুতেই মেনে নিতে
পারছে না। হ্যা মেঘলা শাহরিয়ারকে ভালোবেসে
ফেলেছে সেদিন থেকেই যেদিন শাহরিয়ার মেঘলার
জীবন বাঁচিয়েছে। কিন্তু মেঘলা শাহরিয়ারকে
কোনোদিন বলার সাহস পায়নি।
মেঘলা, মা মা দেখো আমার কিং অর্থাৎ শাহরিয়ার
এসেছে। এই যে দেখো আমার সামনে বসে আছে
দেখো দেখো তোমাকে দেখে কেমন লজ্জা পাচ্ছে।
,,,,,, মেঘলার মা তাকিয়ে দেখে যে মেঘলা
একটা বালিশের সাথে কথা বলছে এবং বালিশ
কেই শাহরিয়ার মনে করতাছে।মেঘলার এমন
অবস্থা দেখে মেঘলার মায়ের চোখ থেকে টপটপ
করে জল বেয়ে পড়ছে।
,,দিন দিন মেঘলার পাগলামো গুলো বেড়েই
চলেছে,,,,
মেঘলার এমন অবস্থা দেখে মেঘলার মা বাবা
মেঘলাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়।
প্রায় ছয়মাস মেঘলা হাসপাতালে ছিলো ।এখন
মেঘলা অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছে। এখন আর
শাহরিয়ারকে নিয়ে পাগলামি করেনা কিন্তু এখনো
মেঘলার মনে সবটা জুড়ে শাহরিয়ারেরির অস্থিত্ব
রয়েছে।শাহরিয়ারকে মেঘলার রিদয়ে এখনো গেথে
রেখেছে।এখন মেঘলা তাদের বড় বড় কম্পানিগুলো
দেখাশুনা করছে।
,,,,,,,,এক বছর হয়ে গেছে কিং এর মৃত্যু হয়েছে।
এই এক বছরে কিং এর ভয় শহর থেকে আস্তে
আস্তে ওঠে গেছে।আবারো দিন দুপুরে অনেক
মেয়ে ধর্ষন হচ্ছে শহরে। শহরে আবারো অশান্তির
সৃষ্টি হচ্ছে।শহরে আবারো কালো ছায়া নেমে
পড়েছে।হঠাৎ একদিন আবারো পাওয়া গেলো এক
বাড়িতে পুরুষ অঙ্গ কাটা এক পুরুষের লাশ এবং
তার পিট কেটে লেখা "কিং ইস ব্যাক"
,,,খুব দ্রুতই খবরটা সারা শহরে ছড়িয়ে পরে।
শহরের মানুষ থরথর করে কাপতে থাকে । আবারো
কিং এর ভয় সব মানুষের মনে ডুকে পরে।
খবরটা মেঘলার কানে যেতে খুব একটা দেরি
হয় নাই।
মেঘলা, আমার বিশ্বাস ছিলো শাহরিয়ার তুমি
এতো সহজে মরতে পারো না। কিন্তু তুমি কোথায়
এখন। যেখানেই থাকো না কেনো আমি তোমাকে
খুজে বের করবোই।
ম্যানেজার, ম্যাডাম ভিতরে আসতে পারি।
মেঘলা, হ্যা আসেন।
ম্যানেজার, ম্যাডাম কালকে আমাদের কম্পানির
সাথে বড় একটা কম্পানির ডিল হবে।
মেঘলা,ডিলটা কোথায় হবে ।
ম্যানেজার, ম্যাডাম আমাদের কম্পানিতেই হবে ।
মেঘলা, ঠিক আছে আপনি যেতে পারেন
,,তারপর ম্যানেজার চলে গেলো,,,,,,,।
পরের দিন অন্য কম্পানির লোকজন ডিল
ফাইলান করার জন্য মেঘলার কম্পানিতে
আসে ।আর মেঘলা তাদের দিকে তাকাতেই
দেখতে পেলো অনেকজন গার্ড চারপাশে গিরে
রেখেছে আর তাদের মাঝখানে যাকে দেখে
তাতে মেঘলার পায়ের নিচের মাটি সরে যায়
সে আর কেউ ছিলো না শাহরিয়ারি ছিলো।
মেঘলা শাহরিয়ারকে দেখে বসা থেকে ওঠে যায়
আর শাহরিয়ারের দিকে এক দৃষ্টিতেই তাকিয়ে
আছে। মেঘলার মন চাচ্ছে এখনি শাহরিয়ারকে
জড়িয়ে দরতে।
,,,,,,,অবশেষে ডিল ফাইনাল করে যখন শাহরিয়ার
মেঘলার কম্পানি থেকে বের হয়ে তার গাড়তে
উঠতে যাবে তখনি পিছন থেকে মেঘলা ডাক দেয়।
মেঘলা, ওই শুনো
,,শাহরিয়ার পিছনে তাকিয়ে বলতে লাগলো,,,,,,,,
শাহরিয়ার, জী বলুন
মেঘলা, আমি জানতাম তোমার কিছু হতে পারেনা
আমি তোমাকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছি।
তোমার জন্য ছয় মাস পাগল হয়ে হাসপাতালে
ছিলাম।
শাহরিয়ার, কি বলছেন কি আজেবাজে কথা।
আপনার সাথে আমার দেখাই হলো আজকে।
আর আপনি কি উল্টাপাল্টা বলছেন।
যত্তসব। তারপর আমি গাড়িতে করে আমি বাড়িতে
চলে যাই।
,,,,.. আর মেঘলা কি করবে কিছুই বুঝতে পারছেনা
মেঘলার চোখ বেয়ে পানি পড়তে থাকে।
,,,শাহরিয়ার গাড়ি করে এক বিশাল বাড়িতে
ডুকে। শাহরিয়ার এখন তার নিজ বাড়িতেই থাকে।
(...আপনারা ভাবছেন শাহরিয়ার কিভাবে বেচে
আছে তাই তো।)
ওইদিন একজন জেলে শাহরিয়ারকে তার
নৌকায় টেনে তুলছিলো। যার কারনে আজ
শাহরিয়ার বেঁচে আছে।তারপর শাহরিয়ার তার
নিজ শহরে চলে যায়।
শাহরিয়ার, বাসায় এসে আমি আম্মু আম্মু বলে
চিৎকার করতে লাগলাম
আম্মু, কি হয়েছে বাবা চিৎকার কেনো করছিস
শাহরিয়ার, খিদা লাগছে খেতে দাও
আম্মু, তাই বলে জোড়ে জোড়ে চিৎকার করবি।
শাহরিয়ার, ইয়ে মানে আমার গলার আওয়াজের
জোর কত দেখছিলাম আরকি।
আম্মু, তুই ও না।
শাহরিয়ার, তারপর আম্মু ডাইনিং টেবিলে
খাবার বেড়ে দিলো আর আমি খেতে শুরু
করলাম।খাওয়া শেষে আমি আমার রুমে চলে
গেলাম ।
,,,,,,বিকালে শাহরিয়ার তার নিজ শহরের একটা
পার্কে বসে ছিলো। ,,,,,
মেঘলা শাহরিয়ারকে খুজতে শাহরিয়ারদের
শহরে আসলে। মেঘলা শাহরিয়ারকে একটা পার্কে
বসে থাকতে দেখে গাড়ি থেকে নেমে মেঘলা
শাহরিয়ারের সামনে যায়।
শাহরিয়ার, আপনি আর এখানে
মেঘলা, কেনো এরকম করছো। আমাকে দয়াকরে
মাপ করে দেও। যেদিন থেকে তুমি আমার
জীবন বাচিয়েছো সেদিন থেকেই তোমাকে
মনের অজান্তেই ভালোবেসে ফেলেছি।প্লিজ
আমাকে ফিরিয়ে দিয়োনা। তোমাকে ছাড়া
আমি বাঁচবো না।
শাহরিয়ার, দেখেন কে আপনি আমি আপনাকে
আগে কোনোদিনি দেখি নিই। কি উল্টাপাল্টা
কথা বলছেন। আর দিতীয় বার যানি আপনাকে
আমার সামনে না দেখি।নইলে আমার থেকে
খারাপ আর কেউ হবেনা। বলেই সেখান
থেকে সোজা আমার বাসায় চলে আসলাম।
,,মেঘলা ওখানেই কিছুক্ষন দাড়িয়ে থেকে
গাড়ি নিয়ে তার বাসার উদ্দেশ্যে চলে যায়।
,,,,,রাতের খাবার খাওয়ার সময় শাহরিয়ারের
বাবা বলতে লাগলো।
আব্বু, কিরে বাপ অফিস কেমন লাগছে।
শাহরিয়ার, হা আব্বু খুব ভালো।
আব্বু, ভাবছি তোর বিয়ের জন্য পাত্রি দেখবো।
আম্মু, তোর কোনো মেয়ে পছন্দ থাকলে বলে
দে।
শাহরিয়ার, কিযে বলোনা তোমরা আমি বিয়াই
করমু না। বলেই তারাতারি খাবার খাওয়া শেষ
করে আমার রুমে চলে আসলাম।
,,আর আম্মু আব্বু আমার কান্ড দেখে হাসতে
লাগলো।
শাহরিয়ার,রুমে এসেই দিলাম এক ঘুম
সৃষ্টি, আচ্ছা আর কয়দিন একা একা জীবনটা
পার করবা
শাহরিয়ার, জানিনা কিন্তু তোমার সৃতি বুকে
জড়িয়েই জীবনটা পার করে দিবো।
সৃষ্টি, আমার একটা কথা রাখবা
শাহরিয়ার, তোমার কোনো কথা কি আজো আমি
ফেলেছি।
সৃষ্টি, আগে কথা দেও রাখবা।
শাহরিয়ার, আচ্ছা কথা দিলাম
সৃষ্টি, তুমি একটা বিয়ে করে সুন্দর করে সংসার
করো।
শাহরিয়ার, তোমার কথা কি আমি ফেলতে পারি
আচ্ছা ঠিক আছে।
,,,হঠাৎ ফোনের শব্দে শাহরিয়ারের ঘুম ভেঙ্গে
যায়।
শাহরিয়ার, ধুর সকাল সকাল কে আবার কল
দিলো। তারপর কল রিসিব করে যা শুনলাম
তাতে আমার বুক ধুপধুপ করতে থাকে।
মেঘলা বিষ খেয়েছে শুনে আর দেরি করলাম
না।তারাতারি ওঠে ফ্রেস হয়ে কিছু। না খেয়েই
হাসপাতালে গেলাম। আমি এসেছি দেখে
মেঘলা মুখ ঘুরিয়ে নেয়।
শাহরিয়ার, পাগল হয়ছো নাকি। এখন যদি
তোমার কিছু হয়ে যেতো।
মেঘলা, কেনো এসেছো এখানে চলে যাও
তুমি তো আমাকে ভালোবাসোনা।
শাহরিয়ার, ভালোনাবাসলে এখানে আসতাম
নাকি।
মেঘলা, তাহলে আমাকে কষ্ট দিলে কেনো।
শাহরিয়ার, তুমি কি আমাকে কম কষ্ট আর অপমান
করছিলা
মেঘলা, আচ্ছা যাও আর তোমাকে কোনোদিন
কষ্ট দিবো না আর আমাকেও কোনোদিন কষ্ট
দিবানা।
শাহরিয়ার, হু।
,,,,,,,তারপর শাহরিয়ার আর মেঘলার ধুমধাম
করে বিয়ে হয় আর এখন শাহরিয়ার বাসুর ঘরের
সামনে দাড়িয়ে আছে।
তারপর শাহরিয়ার বাসুর ঘরে ডুকলে মেঘলা
শাহরিয়ারকে ছালাম করে।
শাহরিয়ার, বেচে থাকো বেচে থাকো। আর
এখন আমি ঘুমাবো।বিরক্ত করোনা।তারপর যখন
বিছানায় ঘুমাতে যাবো তখনি মেঘলা আমার
হাত টেনে দরে।
মেঘলা, ঘুমাবা মানে আজকে আমাদের বাসুর রাত
এখন একটু ডান্স করবো। তারপর রোমেন্স
করবো। তারপর গল্প করবো আর তারপর ঘুমাবো
শাহরিয়ার, তারপর আর কি মেঘলার সাথে
কিছুক্ষন ডান্স করলাম তারপর মেঘলা আমাকে
ধাক্কা মেরে বিছানায় ফেলে দিয়ে
আমার উপর সুয়ে পরে তারপর আমার মুখের অতি
নিকটে মেঘলা তার মুখ এনে আমার ঠোটের
সাথে মেঘলার ঠোট লাগিয়ে দেয়।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,পাচঁ বছর পর,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
মিমি, মাম্মা মাম্মা
মেঘলা, কি হয়েছে মা
মিমি, মাম্মা বাবা আমাকে আবার বকা দিছে।
মেঘলা, কি আবার তোমাকে বকা দিছে ।দাড়াও
আজকে তোমার বাবার হচ্ছে।
,,,,তারপর মেঘলা ঝাড়ুটা নিয়ে রুমে গিয়ে দেখে
শাহরিয়ার ল্যাপটপ নিয়ে অফিসের কিছু কাজ
করছে। কোনা কথা ছাড়াই মেঘলা ঝাড়ু দিয়ে
শাহরিয়ার কে একটা বারি মারে
শাহরিয়ার, আউ কি করছো ব্যাথা পাচ্ছি তো।
মেঘলা, ব্যাথা পাওয়ার জন্যই তো মারছি
শাহরিয়ার, কিন্তু আমি করেছিটা কি।
মেঘলা, তুমি আবার মিমিকে বকা দিছো কেনো।
শাহরিয়ার, এইরে পাজিটা মনে হয় মেঘলাকে
বলে দিছে।(মনে মনে)
মেঘলা, কি হলো।
শাহরিয়ার, ওই দেখো তোমার পিছনে তেলাপোকা
যখন মেঘলা পিছনে তাকায় তখনি দিলাম এক
দৌড়। আমার পিছনে মেঘলাও ছুটতে লাগলো
সারা বাড়ি দৌড়াতে দৌড়াতে আমি আম্মুর পিছনে
গিয়ে লুকিয়ে পরি।
আম্মু, কি হলো এভাবে দৌড়াচ্ছিস কেনো।
শাহরিয়ার, আম্মু দেখো তোমার আদরের বৌ মা
আমাকে মারছে।
আম্মু, কি হয়েছে মা।
মেঘলা, আম্মু আপনি সরেন আজকে ওর একদিন
কি আমার একদিন। ও আবারো মিমি কে বকা দিছে।
আম্মু, কি ও আজকেও মিমিকে বকা দিছে
তাহলে বেশি করে পিটাও
মেঘলা, হু
শাহরিয়ার, শাশুরী বৌমা এক যখন।তাহলে ধরতে পারলেই আজকে আমি শেষ।তারপর দিলাম এক
দৌড়।এক দৌড়ে সোজা বাসার বাহিরে চলে আসলাম।
....এভাবেই মেঘলা আর শাহরিয়ারের চার বছরের
মেয়েকে নিয়ে দুষ্টু মিষ্টি সুখের
সংসার চলতে থাকে.......
...থাকুক তারা সুখে.......
,,,,,,,,,,,,,,,,,, ,,,,,,,,,,,,সমাপ্ত,,,,,,,,,,,,,,,,, ,,,,,,,,,,,,,,,,,
নভুল ক্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন
জানিনা গল্প কেমন হয়েছে
কিন্তু আমি আমার সাধ্যমতো
চেষ্টা করে গল্প লিখেছি
যারা যারা গল্পের সাথে ছিলেন তাদের
সবাইকে ধন্যবাদ..........