গল্পঃ #নেট_দুনিয়ার_কিং
লেখক: #মোঃ_শাহরিয়ার_ইফতেখায়রুল_হক_সরকার
পর্বঃ ৬
অবশেষে শাহরিয়ার ধানমন্ডি পৌছিলে বাস থেকে
নামার সাথে সাথে মুখোমুখি হয় নিজের চাচাতো
বোন সেই ফারিয়া নামক মেয়েটার.........................
দুজনে দুজনের দিকে কেমন দৃষ্টিতে যেনো তাকিয়ে
আছে।শাহরিয়ার কখনো ভাবতে পারেনি আবার
সেই বোন নামক অভিশাপ্তার সাথে দেখা হবে।
প্রচুর রাগের উদ্ভব হচ্ছে শাহরিয়ারের মাথা নামক
স্থানে।ইচ্ছে করছে কোষে কয়েকটা থাপ্পর ফারিয়ার
গালে বসিয়ে দিতে।কিন্ত সে কিছু করতে বা বলতে
পারছে না।ফারিয়াকে দেখেই তার ঘৃনা নামক
জিনিসটা বারবার জেগে উঠছে।
___ ফারিয়া এক ধ্যানে এখনো তাকিয়ে আছে
শাহরিয়ারের দিকে কেনো যানি বারবার শাহরিয়ার
কে তার চেনা চেনা লাগছে।মুখ ডাকা থাকলেও
কেনো যানি পারফিউম এর মিষ্টি সুগন্ধটা বেশ
চেনা পরিচিত লাগছে ফারিয়ার।আমতা আমতা
করে কিছু বলতে যাবে তার আগেই শাহরিয়ার
তার পাশ কাটিয়ে চলে যায়।
___ অবশেষে শাহরিয়ার ধানমন্ডি যে কাজে
আসছিলো সেটা সমাপ্ত করে নিজের বাসায় চলে
আসে।এবং শুরু করে দেয় তার কাজ গুলো।
কাজ করতে করতে হঠাৎ শাহরিয়ারের কানে
মধুর কন্ঠে আজান ভেসে আসলো আর সঙ্গে সঙ্গে
শাহরিয়ার তার কাজ ফেলে রেখে অজু করে
নামাজে দাড়িয়ে গেলো।
আমরা অনেকেই আছি যারা ইন্টারনেটে এতো
বেশিই আসক্ত যে, আজান কানে শুনলেও না
শুনার ভান করে সব সময় ডুবে থাকি নেট দুনিয়ায়।
এসব ভুল গুলো সবাই সংশদন করুন নাহলে
এর জন্য নিশ্চয়ই একদিন আপনাকে কঠিন
শাস্তি পেতে হবে।
__ নামায পড়া শেষ করে শাহরিয়ার আবার
নিজের কাজে ব্যাস্ত হয়ে যায়। লড়াই করে যাচ্ছে
বিভিন্ন বাজে সাইট গুলোর বিরুদ্ধে।
___ শাহরিয়ার কখনো নিজের ইনবক্সের মেসেজ
চেক করে না কিন্তু আজ কেনো জানি তার
খুব করে চেক করতে ইচ্ছে করছে।তারপর
শাহরিয়ার আর কিছু না ভেবে নিজের ইনবক্স
ওপেন করতেই শাহরিয়ারের সর্বপ্রথম একটি
মেসেজ চোখে পড়ে মেসেজে লেখা ছিলো যে..
---- প্রিয় শাহরিয়ার ভাইয়া ওরফে সেরু ভাই
প্রথমে আমার সালাম নিবেন।তাহলে মূল কথায়
আসি? আমার নাম রাজিব। ক্লাস সেভেন থেকে
বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে বিভিন্ন পর্ন ভিডিও দেখতে
থাকি এবং চটি গল্প পড়তে থাকি।এক সময়
চটি গল্প বা পর্ন ভিডিও না দেখলে আমার ঠিক
করে দিন পার হতো না।জানেন নিজেকে অনেক
বুজিয়েছি এসব দেখা বা পড়া পাপ।কিন্তু
তারপরেও আমি কেনো যানি সেগুলোর নেশা
থেকে বের হতে পারছিলাম না।কিন্তু আপনি
সেসব বাজে সাইট গুলো নষ্ট করে দেওয়ার পর
থেকে ঠিক মতো পর্ন ভিডিও বা চটি গল্প পড়তে
পারতাম না। প্রথমে আপনার প্রতি আমার অনেক
রাগ হয়েছিল কিন্তু পরবর্তীতে আপনার জন্য
আমার মনে গভির শ্রদ্ধায় ভরে যায়। কারন
শুধু মাত্র আপনার জন্য যখন ঠিক মতো চটি গল্প
বা পর্ন ভিডিও দেখতে পাইনি বলেই আজ আমি
এই সব পাপের আসক্ত থেকে বের হতে পেরেছি।
এখন আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি যা আগে
ওইসব বাজে নেশার কারনে পড়তে পারতাম না।
বিশ্বাস করুন এখন আমি খুব সুখী।আমার
বারবার কেনো যানি মনে হয় আমিই পৃথিবীর
সবচেয়ে বেশি সুখি ব্যাক্তি।আপনার একটা
পোষ্ট পড়েছিলাম যেই পোষ্টে লিখা ছিলো
"" আমাদের ওইসব বন্ধুদের সাথে চলা উচিত না
যেইসব বন্ধুদের কাছ থেকে অন্যায় বা পাপ কাজ
ছাড়া আর কিছুই শিখা যায় না""""
হ্যা এটা আপনি সত্যিই বলেছেন?জানেন ভাই
আপনার জন্য যখন আমরা চটি গল্প পড়া বা
পর্ন ভিডিও দেখতে পারছিলাম না তখন রোজ
আমার বন্ধুরা এসে আমাকে পারার মোরে নিয়ে
যেতো মেয়েদের অঙ্গ পতঙ্গ গুলো কু নজরে দেখে
নিজের জ্বালা মিটানোর জন্য?কিছুদিন বন্ধুদের
সাথে আমি রোজ পারার মোরে যেতাম কিন্তু
একসময় কেনো যানি আমি প্রতিদিন আপনার
পেইজে এসে আপনাকে ফলো করতে লাগলাম।
একসময় আপনার শিক্ষানীয় কথা বা আপনার
সুন্দর সুন্দর ন্যায়বাচক পোষ্ট দেখে আমার
মনটা নাড়া দিয়ে উঠে,এবং আমাকে খুব করে
ভাবায় আমি সত্যিই কি পাপ কাজ করছি?
হ্যা আমি নেট দুনিয়ার অন্ধকার পৃথিবীতে মগ্নো
হয়ে সত্যিই আমি পাপ কাজ করে যাচ্ছিলাম।
আমি যখন নিজের ভুল বুঝতে পারি তখন সর্ব
প্রথম বাজে বন্ধুদের সাথে চলাফেরা ত্যাগ করি।
এবং সেইসব বন্ধুদের সাথে চলাচল করতে
থাকি যাদের কাছ থেকে সব সময় ভালো কিছু
শিখতে পারবো।
এখন আমি সত্যিই খুব সুখে আছি। আপনাকে
হাজার ধন্যবাদ দিলেও কেনো যানি আমার কাছে
কম মনে হবে তাই ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবো না।
পরিশেষে একটা কথাই বলবো আপনি এগিয়ে
যান।আর ওইসব বাজে সাইট গুলো বন্ধ করে যান।
কারন ওই সব বাজে সাইটের জন্যেই আমাদের
দেশ ধব্বংসের দিকে এগোচ্ছে। ভালো থাকবেন
------- আল্লাহ হাফেজ
___ একজন ১৮ - ১৯ বছরের একটি ছেলের
এমন মেসেজ দেখে
শাহরিয়ার মুচকি একটা হাসি দিয়ে রিপ্লে দিলো
---- একজন অন্যায় পথে যাওয়া ব্যাক্তিও খুব
ভালো করে জানে সে যে পথে যাচ্ছে সে পথে
তার ধব্বংস নিশ্চিত। কিন্তু তা জানা সত্যেও তারা
সেই পথেই চলতে থাকে।যারা নিজেকে সংযত
করে, সেই পথ থেকে ফিরে আসে তারাই
পরবর্তীতে বেঁচে যায় আর যারা ফিরে আসতে
সক্ষম হয় না তারাই হয়ে যায় ধব্বংস..........
____ মেসেজের রিপ্লে দেওয়ার পর শাহরিয়ার
আবার নিজের কাজে ব্যাস্ত হয়ে যায়।
পরের দিন সকাল সকাল বাসার কলিংবেল এর
শব্দে শাহরিয়ারের ঘুমটা ভেঙে যায়। কিন্তু
তাকে খুব করে ভাবাচ্ছে কে কলিংবেল বাজালো।
তার বাসায় তো কারো আসার কথা না।
অতএব তড়িগরি করে শাহরিয়ার নিজের মুখটা
কোনো মতো ডেকে দরজা খুলে যাকে দেখলো
তাতে সঙ্গে সঙ্গে শাহরিয়ার ভয়ে কিছুটা
পিছিয়ে যায়..................
_____________________চলবে__________________
প্লিজ কেউ কোনো রকম বাজে কমেন্ট করবেন না
এই গল্পের লেখক মোঃ শাহরিয়ার ইফতেখায়রুল
হক সরকার অর্থাৎ আমি।আমার নাম ছাড়া এই
গল্প যেখানে দেখবেন মনে করবেন কপিবাজ আর
কপিবাজ কে সবাই উপহার হিসেবে নিশ্চয়ই
রিপোর্ট মারবেন🙂