গল্প: ‌কিং ‌লেখক: ‌‌মোঃ শাহরিয়ার ‌ইফতেখায়রুল ‌হক ‌সরকার ‌‌পর্ব: ১

 


গল্প: ‌কিং

‌লেখক: ‌‌মোঃ শাহরিয়ার ‌ইফতেখায়রুল ‌হক ‌সরকার

‌‌পর্ব: ১

প্রতিবারের ‌মতো ‌‌আবারো ‌এক ‌বাড়িতে ‌পাওয়া ‌গেলো ‌‌‌পুরুষ ‌অঙ্গ ‌কাটা ‌এক ‌পুরুষের ‌লাশ। ‌এবং ‌তার ‌পিট ‌কেটে ‌লেখা ‌ছিলো ‌""' কিং' '" ‌। ‌এই ‌‌‌নিয়ে ৮০টা ‌লাশ ‌পাওয়া ‌যায় ‌যাদের ‌পুরুষ ‌অঙ্গ ‌কাটা ‌এবং ‌পিট ‌কেটে ‌‌‌লেখা ‌কিং । ‌কে ‌এই ‌কিং ‌কেনোই ‌বা ‌একের ‌‌পর ‌এক ‌পুরুষকে ‌তার ‌পুরুষ ‌‌‌অঙ্গ ‌কেটে ‌হত্যা ‌করছে ।‌কি ‌তার ‌উদ্দেশ্য ‌এরকম ‌অনেক ‌প্রশ্নো ‌ঘুরপাক ‌খায় ‌মানুষের ‌মনে । ‌‌পরবর্তিতে পুলিশ ‌ভালো ‌করে ‌তদন্ত ‌করে ‌দেখে ‌যাদের ‌যাদের ‌পুরুষ ‌অঙ্গ ‌কাটা ‌লাশ ‌পাওয়া ‌‌গেছে তারা ‌‌‌সবাই ‌ছিলো ধর্ষনকারি ‌অর্থাৎ ‌তারা ‌‌প্রত্যেকেই ‌কোনো না ‌কোনো ‌মেয়েকে ‌জোড় ‌করে ‌ধর্ষন ‌করছে ‌বা ‌ধর্ষন ‌করে ‌হত্যা ‌করছে ।‌এতএব ‌শহরের ‌সব ‌মানুষের ‌কাছেই ‌‌খুব ‌সহজ ‌ভাবে ‌‌‌পরিষ্কার ‌হয়ে ‌যায় ‌যে ‌কিং ‌শুদু ‌ধর্ষন ‌কারিকেই ‌হত্যা ‌করে ।‌শহরের ‌কিছু ‌মানুষ ‌বাদে ‌সব ‌মানুষী ‌কিং কে ‌‌সাপোর্ট ‌করে । ‌প্রতিদিনের ‌মতো ‌আজো ‌গ্রামের ‌সহজ ‌সরল ‌ছেলে ‌শাহরিয়ার ‌ভার্সিটিতে ‌যাচ্ছে।ভার্সিটির ‌গেট ‌পার ‌হতে ‌না ‌হতেই শাহরিয়ারের ‌ডাক ‌পরলো ‌‌বড় ‌লোকের ‌‌‌অহংকারি ‌মেয়ে ‌মেঘলার।‌শাহরিয়ার ‌মেঘলার ‌সামনে ‌গিয়ে ‌‌বলে 

‌‌শাহরিয়ার, ‌আমাকে ‌ডাক‌‌ছিলেন ‌মেঘলা।

‌‌মেঘলা, ‌বসা ‌ ‌থেকে ‌উঠে ‌শাহরিয়ারের ‌গালে ‌ঠাশঠাশ ‌করে ‌দুটো ‌থাপ্পর ‌মারে।

‌‌শাহরিয়ার, ........,................

‌মেঘলা, ‌ছোট ‌লোকের ‌বাচ্চা ‌আমার ‌‌‌নাম ‌‌‌ধরে ‌‌‌ডাকার ‌‌‌সাহস ‌পাইলি ‌কেমনে।

‌শাহরিয়ার, ‌মাপ ‌করে ‌দেন ‌ম্যাডাম ‌আমার ‌ভুল ‌হয়ে ‌‌গেছে ।

‌‌‌মেঘলা, ‌এবারের ‌মতো ‌মাপ ‌করলাম ।‌‌‌‌আরেকবার ‌এরকম ‌ভুল ‌করলে ‌তোর ‌হাত ‌পা ‌ভেঙ্গে ‌রাস্তায় ‌ফেলে ‌দিবো ‌ভিখারির ‌বাচ্চা।

‌‌শাহরিয়ার, ..........................

‌‌মেঘলা, ‌ওই ‌ছোট ‌লোকের ‌‌বাচ্চা ‌আমার ‌জুতাটা ‌মুছে ‌দে।

‌‌শাহরিয়ার, ‌আমি ‌ ‌কেনো ‌আপনার ‌জুতা ‌মুছে ‌‌‌দিবো।

‌মেঘলা, ‌‌‌তোর ‌এতো ‌বড় ‌সাহস ‌আমার ‌কথা ‌অমান্য ‌করিস।‌ছোট‌লোকের ‌বাচ্চা ‌তোর ‌‌‌পিছনে ‌‌‌তাকিয়ে ‌দেখ ‌‌ভালোকরে ।

‌তারপর ‌শাহরিয়ার ‌‌পিছনে ‌তাকিয়ে ‌‌দেখে ‌মেঘলার ‌গার্ডরা ‌হাতে ‌লাঠি ‌নিয়ে ‌দাড়িয়ে ‌আছে । ‌প্রায় ‌এক‌মাস ‌আগে ‌মেঘলার ‌কথা ‌না ‌শুনার ‌কারনে ‌শাহরিয়ারকে ‌মেঘলার ‌‌‌দশ জন ‌গার্ড ‌মিলে ‌ইচ্ছা ‌মতো ‌পিটায়। ‌যার ‌ফলে ‌‌এক ‌‌সপ্তাহ ‌হাসপাতালে ‌ভর্তি ‌‌‌‌ছিলো ‌শাহরিয়ার।

‌‌,,‌তারপর শাহরিয়ার ‌ভয়ে ‌পকেট ‌থেকে ‌রুমাল ‌‌বের ‌করে মেঘলার ‌জুতাটা ‌মুছে ‌দেওয়ার ‌জন্য ‌যখন ‌জুতা ‌স্পর্শ ‌করবে।‌তখন ‌মেঘলা ‌শাহরিয়ারকে ‌‌‌জোরে একটা ‌লাত্তি ‌মারে ।

‌মেঘলা, ‌তোর ‌মতো ‌ছোট ‌লোক ‌আমার ‌জুতা ‌মুছলেও ‌‌‌জুতার ‌অপমান ‌হবে । ‌যা ‌ভাগ ‌এখান ‌থেকে। 

‌শাহরিয়ার, ‌তারপর ‌আমি ‌ক্লাসের ‌দিকে ‌যেতে ‌লাগলাম।

‌‌

,,,,ভার্সিটির ‌সবাই ‌‌শাহরিয়ারকে দেখে ‌হাসাহাসি ‌করছে ।‌এতে ‌আবার ‌নতুন ‌কি ‌‌‌প্রতিদিনি ‌‌মেঘলা ‌‌শাহরিয়ারকে ‌কোনো না ‌‌‌‌কোনো ‌‌‌ভাবে ‌অপমান ‌করেই। ‌যা ‌বেচারা ‌‌সরল ‌সোজা ‌ছেলে ‌শাহরিয়ার ‌মুখ ‌বুঝে ‌সয্য ‌করে ‌নেয়।আর ‌এসব ‌দেখে ‌ ‌সবাই ‌হাসাহাসি ‌ ‌করে।,,,,,

‌ ‌ক্লাসে ‌এসে ‌শাহরিয়ার ‌সবার ‌পিছেনের ‌ছিট‌ে গিয়ে ‌বসলো।‌এমনিতেই ‌শাহরিয়ারের ‌সাথে ‌কেউ ‌বসতে ‌চায় ‌না।

‌ক্লাসের ‌সবাই ‌হৈচৈ ‌‌‌করছে ‌কেউ ‌কেউ ‌শাহরিয়ারকে ‌‌নিয়ে ‌মজা ‌‌করছে।‌কে ‌কি ‌বলল ‌এসব ‌নিয়ে ‌শাহরিয়ার ‌‌মাথা ‌ঘামায়না 

‌কারন ‌শাহরিয়ারের ‌এসব ‌সয্য ‌করতে ‌করতে ‌অভ্যাস ‌‌হয়ে ‌গেছে। কিছুক্ষন ‌পর ‌মেঘলা ‌ ‌ক্লাসে ‌ডুকলো ‌আর ‌ক্লাসের ‌সবাই

‌মেঘলাকে ‌দেখে ‌চুপচাপ ‌হয়ে ‌‌গেলো । ‌‌কারন ‌মেঘলাকে ‌ভার্সিটির ‌সবাই ‌ভয় ‌পায়।

‌‌একটু ‌পর ‌স্যার ‌ক্লাসে ‌আসলো। ‌আর ‌এসেই সবাইকে ‌একটা ‌কঠিন ‌প্রশ্নো ‌করলো। ‌কিন্তু ‌‌একজন ‌বাদে ‌কেউ ‌উত্তর ‌দিতে ‌‌পারলো ‌না। ‌আর ‌সে ‌একজন টা ‌হলো ‌শাহরিয়ার ।‌‌শাহরিয়ার ‌প্রশ্নের ‌উত্তর টা ‌খুব ‌সহজ ‌ভাবেই ‌দিলো। ‌আর ‌‌ক্লাসের ‌সবাই ‌অবাক ‌হয়ে ‌শাহরিয়ারের ‌দিকে ‌তাকিয়ে ‌আছে।

‌একটা ‌ক্ষেত ‌‌মার্কা ‌ছেলে ‌কিভাবে ‌‌উত্তর ‌দিলো ‌যা ‌ক্লাসের ‌সবচেয়ে ‌‌‌ব্রিলিয়েন্ট ‌স্টুডেন্ট ‌‌মেঘলাও ‌দিতে‌ ‌পারলোনা। ‌মেঘলার ‌রাগে ‌পুরাই ‌মাথা ‌গরম।

‌ভার্সিটি ‌‌‌ছুটির ‌সময় ‌মেঘলা ‌শাহরিয়ারের ‌পথ ‌আটকায়

‌শাহরিয়ার, ‌ম্যাডাম ‌দয়াকরে ‌আমার ‌পথ ‌‌‌ছাড়ুন ‌আমাকে ‌বাসায় ‌যেতে ‌হবে।

‌‌মেঘলা, ‌চুপকর ‌‌‌ছোটলোকের ‌বাচ্চা ‌খুব ‌‌‌ব্রিলিয়েন্ট ‌‌‌হয়েছিস ‌তাই না । ‌এই ‌বলে ‌গার্ডদের ‌কাছ ‌ ‌‌ ‌থেকে ‌একটা ‌লাঠি ‌নিয়ে ‌‌শাহরিয়ারের ‌পায়ে ‌বারি ‌মারে।

‌শাহরিয়ার, ‌‌ব্যাথায় ‌‌‌চিৎকার ‌দিয়ে ‌মাটিতে ‌পরে ‌‌‌যায়।

‌‌মেঘলা, ‌‌খুবই ব্রিলিয়েন্ট ‌হয়েছিস । ‌বলেই ‌শাহরিয়ারকে ‌মারতে ‌থাকে।

‌শাহরিয়ার, ‌‌মাইরের ব্যাথায় ‌ছটপট ‌‌করতে ‌‌থাকি ‌‌‌তারপর ‌আমি ‌‌‌‌‌মেঘলার ‌পা ‌ধরে ‌বলি। ‌আর ‌মারবেন না ‌ম্যাডাম ‌দয়া ‌করুন। ‌আমার ‌খুব ‌কষ্ট ‌হচ্ছে।

‌মেঘলা, ‌তোর ‌‌‌ব্রিলিয়েন্ট ‌হওয়ার ‌অনেক ‌শখ ‌তাইনা ‌বলেই।

‌‌একটা ‌লাত্তি ‌মেরে ‌‌আবারো ‌পিটাতে ‌থাকে।

‌শাহরিয়ার, ‌ব্যাথায় ‌আমি মাটিতে ‌ছটপট ‌গড়াগড়ি ‌করতে ‌থাকি।

,,তারপর ‌মেঘলা ‌তার ‌‌‌‌গার্ডদের ‌বলে,,

‌মেঘলা, ‌ওকে ‌নিয়ে ‌‌‌‌ডাস‌বিনে ‌ফেলে ‌দিয়ে ‌আসো।

‌,,‌তারপর ‌শাহরিয়ারকে ‌তুলে ‌নিয়ে ‌‌ডাসবিনে ‌‌ফেলে ‌‌দিয়ে ‌গার্ডরা ‌চলে ‌গেলো। 

‌,,‌‌তারপর ‌‌মেঘলা ‌তার ‌দামি ‌গাড়ি ‌করে ‌তার ‌‌‌বাসায় ‌চলে ‌গেলো।,,,,,,,,

‌‌শাহরিয়ার ‌‌কিছুতেই ‌ডাসবিন ‌থেকে ‌উঠতে ‌পারছেনা।‌ডাসবিনের ‌ময়লা ‌আবর্জনার ‌গন্ধে ‌শাহরিয়ারের ‌প্রায় ‌‌মুখে বমি ‌চলে ‌আসছে। ‌অনেক ‌কষ্ট ‌করে ‌ওঠে ‌শাহরিয়ার ‌‌খুরিয়ে ‌খুরিয়ে ‌তার

‌বাসার ‌উদ্দশ্যে ‌চলে ‌যেতে ‌লাগলো ।‌শাহরিয়ারের ‌‌মাথা ‌ফেটে ‌রক্ত ‌পরতেছে।

‌‌শাহরিয়ার, ‌আজ ‌মানুষ ‌কতো ‌নিষ্ঠুর। ‌‌নিষ্ঠুর ‌এই ‌সমাজে ‌গরিব দের ‌কোনো ‌দাম ‌নেই । ‌‌সব ‌জায়গায় ‌গরিবরাই ‌নির্যাতিত ‌হচ্ছে

‌গরিবরা ও ‌তো ‌মানুষ।‌আজ ‌টাকার ‌‌অহংকারে ‌মানুষ ‌‌কতো ‌অন্যায় ‌কাজ ‌করছে।‌মনে ‌মনে ‌‌এসব ‌ভাবছি। ‌হঠাৎ ‌সামনের ‌এক ‌বাড়ি ‌থেকে ‌একটা ‌মেয়েলী ‌কন্ঠের ‌‌‌‌‌‌চিৎকার ‌‌শুনলাম। ‌আরে ‌চিৎকারটাতো ‌নেতার ‌বাড়ি ‌থেকে ‌আসছে। ‌আমি ‌নেতার ‌‌বাড়িতে ‌‌ডুকে ‌জানালা ‌দিয়ে ‌উকি মেরে ‌যা ‌দেখি ‌সেটা ‌দেখে ‌আমার ‌মাথার ‌রক্ত ‌টগবগ‌ টগবগ ‌করছে।

‌নেতার ‌‌দুই ‌‌ছেলে ‌মিলে ‌‌একজন ‌মেয়েকে ‌‌জোর ‌করে ‌ধর্ষন ‌করছে। ‌‌একজ‌‌‌ন ‌মেয়েটির ‌দুই‌হাত ‌চেপে ‌ধরেছে ‌ ‌আর আরেকজন জন ‌নির্মম ‌‌ভাবে ‌‌মেয়েটিকে ধর্ষন ‌করেই ‌যাচ্ছে।

তারপর ‌আমি ‌নেতার ‌বাসার ‌‌ভিতরে ‌ডুকলাম ‌আর ‌কিছুক্ষন ‌পর ‌‌নেতার ‌বাসা ‌‌‌থেকে ‌বের ‌হয়ে ‌আমার ‌বাসায় ‌চলে ‌‌আসলাম।

‌বাসায় ‌এসে ‌‌‌টিভিটা ‌চালু ‌‌করলাম ‌।

,,ব্রেকিং ‌নিউস ‌ব্রেকিং ‌নিউস ‌‌‌‌শহরের নেতার ‌বাড়িতে ‌পাওয়া ‌গেলো ‌নেতার ‌দুই ‌ছেলের ‌পুরুষ ‌অঙ্গ ‌কাটা ‌‌‌লাশ।আর ‌তাদের ‌‌পিট ‌‌‌কেটে ‌লেখা ‌ ""কিং"" ।‌ ‌‌‌শহরে আবারো ‌‌হৈচৈ ‌পরে ‌গেছে ‌শহরের ‌মানুষের ‌কাছে ‌আবারো ‌ব্যাপারটা ‌পরিষ্কার ‌হলো ‌যে ‌নেতার ‌ছেলেরা ‌ছিলো ‌ধর্ষনকারি ‌তাই ‌কিং ‌এর ‌‌হাতে হত্যা ‌হয়েছে।

‌,,,‌খবর ‌‌শুনে ‌শাহরিয়ার ‌জোড়ে ‌জোড়ে ‌হাসতে ‌থাকে,,,

‌‌‌শাহরিয়ার, ‌ধর্ষন ‌কারিদের ‌‌একটাই ‌‌‌শাস্তি

‌সেটা ‌হলো ‌মৃত্যু( ‌চিৎকার ‌দিয়ে)


.............,,,,,,,,,,,,,,‌‌চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,............


     ভুল ‌ক্রুটি ‌ক্ষমার ‌চোখে ‌দেখবেন

‌উৎসাহ ‌পেলে ‌‌পরবর্তী ‌‌পর্ব ‌লিখবো ‌‌ইনশোআল্লাহ


_____________২৫ এ জুন ২০২০_________😊

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post