গল্প/::: অফিসের বস যখন বউ। * * * লেখক/:::: রাসেল চৌধুরী * * পর্ব/:::;;;; ( ৫ ) ::::::::: ( পাঁচ )


 গল্প/::: অফিসের বস যখন বউ।

*

*

* লেখক/:::: রাসেল চৌধুরী 

*

* পর্ব/:::;;;; ( ৫ ) ::::::::: ( পাঁচ )

*

*

*

*

* হঠাৎ একটা টেবিলে চোখ পড়তেই আমি পুরো অবাক হয়ে গেলাম। এ আমি কাকে দেখছি। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছি না। 


এ আর কেউ প্রেমা, দেখি ফারহান কোম্পানির, ফারহান এর সাথে বসে কফি খাচ্ছে। আর দুজনে হেসে হেসে কথা বলছে। 


নদী এখনো দেখে নাই। আমি আর নদী কপি খেয়ে বাহিরে চলে আসলাম। নদীকে বিদায় দিয়ে অফিসে চলে আসলাম। নিজের কেবিনে মনমরা হয়ে বসে আছি। হঠাৎ রাফি আমার কেবিনে আসলো। একটা চেয়ারে বসে বসে বললো।


রাফি/: কিরে, তোকে কেমন মনমরা লাগছে। কি হয়েছে তোর।


আমি/: আজকে নিজের চোখে যেটা দেখলাম। সেটা আমি কখনো প্রেমার কাছ থেকে আসা করি নাই।


রাফি/: কি হয়েছে, আমাকে একটু বলতো।


আমি/: আজকে প্রেমার বান্ধবী নদীকে নিয়ে একটা কফি সপে, কপি খাচ্ছিলাম। তখন একটা টেবিলে দেখি প্রেমা আর ফারহান দুজনে বসে কফি খাচ্ছে, আর হেসে হেসে কথা বলছে।


রাফি/: তুই কোন ফারহান এর কথা বলছিস।


আমি/: আরে আগে আমাদের যে ডিলটা দিয়েছে, ফারহান কম্পানির মালিক ,। ফারহান কে দেখলাম। তার মানে কি প্রেমা আর ফারহান এর ভিতরে কিছু চলছে, ফারহান ছেলেটা দেখতে অনেক সুন্দর। প্রেমা কি তার সুন্দর চেহারার প্রেমে পড়ে গেছে। 


রাফি/: আমার মনে হয় তোর কোথাও ভুল হচ্ছে। আর প্রেমাকে দেখে মনে হয় না, অন্য ছেলের সাথে প্রেম করবে। তুই একটা বার প্রেমার সাথে কথা বলে দেখ। 


আমি/: তুই ঠিকই বলছিস। আমি ওর সাথে এ ব্যাপারে কথা বলবো। 


রাফি/: ঠিক আছে, মন খারাপ করিস না। এখন কাজ কর, আমি নিজের কাজ করি গিয়ে।


আমি/: ঠিক আছে যা। 


রাফি আর কোনো কথা না বলে চলে গেল। আমি মোবাইল টা হাতে নিয়ে প্রেমা কে ফোন দিলাম

 

প্রেমা/: হুম বলো।


আমি/: তুমি এখন কোথায় আছো।


প্রেমা/: আমি তো বাসায় যাচ্ছি। কেনো বলোতো।


আমি/: তোমার আব্বুর কাছে অনেকক্ষণ আগে ফোন দিয়েছি। আব্বু বলছে, তুমি নাকি বাসায় চলে গেছো। তাহলে এতো দেরি কেনো ।


প্রেমা/: আসলে , তুমি কিছু মনে করো না। বাসায় যাওয়ার সময় হঠাৎ ফারহান এর সাথে রাস্তায় দেখা। ফারহান এর জোরাজুরিতে এক কপি খেয়ে আসতে লেইট হয়ে গেছে। 


আমি/: আমাকে তো, ফোন করে বলতে পারতে। 


প্রেমা/: আমি তো মনে করছি বেশি সময় লাগবে না। কিন্তু কথা বলতে বলতে অনেক দেরি হয়ে গেছে। আর কথা না বলে থাকতে পারছি না। ওর কারনে আমাদের কম্পানি টা এতো ওপরে উঠছে। 


আমি/: আচ্ছা ঠিক আছে। এখন বাসায় যাও। 


বলে ফোন টা কেটে দিলাম। আমি মনে মনে বললাম। প্রেমা তো ঠিক কথাই বলেছে, ফারহান এর কারণে আমাদের কম্পানি টা এতো ওপরে উঠেছে। 


আমি আর কিছু না ভেবে কাজে মন দিলাম। বিকালে অফিস থেকে বাসায় গিয়ে কলিং বেল চাপ দিলাম। প্রেমা এসে দরজা খুলে দিল। 


প্রেমা/: তুমি এসেছো। যাও রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও। 


আমি/: ঠিক আছে।


আমি আর কোনো কথা না বলে রুমে চলে আসলাম। ওয়াস রুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় শুয়ে মোবাইল টিপতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পর প্রেমা রুমে আসলো। হাতে দুই টা কফি নিয়ে। আমার পাশে বসে, একটা কফি আমাকে দিলো। 


আমি মোবাইল টিপতে আছি আর কফি খাচ্ছি। তখন প্রেমা বললো।


প্রেমা/: তুমি আমার ওপরে রাগ করে আছো। 


আমি/: না হ, আমি কারো ওপর রাগ করে নেই। 


প্রেমা/: তাহলে তুমি আমার সাথে কথা বলছো না কেন। আমি তো ফারহান এর সাথে কথা বলতে চাইনি। 


আমি/: আমি এখন ও ব্যাপারে তোমার সাথে কথা বলছি। আমার এমনে ভালো লাগছে না। 


প্রেমা /: তোমার কি শরীর খারাপ। আমার কোলে মাথা দাও। আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি। 


আমি/: না থাক, লাগবে না। এমনে ঠিক হয়ে যাবে।


প্রেমা/: তোমার না লাগলেও, আমার লাগবে। 


বলে আমার মাথাটা প্রেমার কোলে নিয়ে গেলো। আমার মাথায় প্রেমা হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। আমার কাছে অনেক ভালো লাগছে। 


পরের দিন সকালে সবাই মিলে নাস্তা করছি। হঠাৎ প্রেমা মাথা ঘুরে পড়ে গেলো। আমি প্রেমা কে কোলে নিয়ে দ্রত গাড়িতে শুয়ে দিয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসলাম। 


আমার আব্বু আম্মু এসেছে। ডাক্তার প্রেমা কে কেভিনের ভিতরে নিয়ে গেলো। শশুর শাশুড়ি কে ফোন দিয়ে হাসপাতালে আসতে বললাম। 


কিছুক্ষণ পর শশুর শাশুড়ি হাসপাতালে চলে আসলো। 


শশুর/: রাসেল প্রেমার কি হয়েছে। 


আমি): আব্বু চিন্তা করবেন না। হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যায়। আমি ওকে দ্রত হাসপাতালে নিয়ে আসি। ডাক্তার ভিতরে প্রেমাকে দেখছে। এখনো বাহিরে আসে নাই। 


কিছুক্ষণ পর একজন ডাক্তার বেরিয়ে আসলো। আমি ডাক্তারের কাছে গিয়ে বললাম।


আমি/: ডাক্তার আমার প্রেমার কি হয়েছে। 


তখন ডাক্তার হাসতে হাসতে বলল।


ডাক্তার/: আরে চিন্তার কোন কারন নেই। আপনাদের জন্য একটা খুশির সংবাদ আছে। 


আমি): খুশির সংবাদ মানে। 


ডাক্তার/: মানে হলো, আপনি বাবা হতে চলেছেন। এখনি সবাইকে মিষ্টি খাওয়ান। 


আমি/: ডাক্তার , আপনি সত্যি বলছেন। আমি বাবা হতে চলেছি। 


ডাক্তার/: হুম। তবে ওকে ভারি কাজ করতে দিবেন না। এতে আপনার সন্তান এর ক্ষতি হতে পারে। 


আমি/: ঠিক আছে ডাক্তার, আমরা কি প্রেমার সাথে দেখা করতে পারি। 


ডাক্তার): অবশ্যই। আর আপনারা এখনি তাকে বাসায় নিয়ে যেতে পারেন। 


আমি/: ধন্যবাদ ডাক্তার। 


ডাক্তার আর কোনো কথা না বলে চলে গেল। আমরা সবাই প্রেমার কেবিনে ঢুকলাম। সবাই অনেক খুশি। আব্বু আম্মু দাদা দাদি হবে। শশুর শাশুড়ি নানা নানী হবে। আম্মু গিয়ে প্রেমার পাশে বসে বললো।


আম্মু/: এখন কেমন লাগছে মা। 


প্রেমা/: মাথাটা কেমন ঘুরছে। 


আম্মু/: সমস্যা নেই। কিছুক্ষণ পর ঠিক হয়ে যাবে। 


আরো কিছুক্ষণ কথা বলে প্রেমা কে বাসায় নিয়ে আসলাম। শশুর শাশুড়ি তাদের বাসায় চলে গেলো। আমি প্রেমা কে বিছানায় শুয়ে কিছুক্ষণ রেস্ট নিতে বললাম। 


দুই দিন পর।


সবাই বসে রাতের খাবার খাচ্ছি , তখন প্রেমা বললো। 


প্রেমা/: আব্বু আম্মু আমি কালকে থেকে অফিসে বসতে চাই। 


আব্বু/: তুমি তো অসুস্থ। তুমি কি ভাবে অফিসের কাজ করবে। 


প্রেমা/: আমি এখন সুস্থ আছি। আর হতে এখনো অনেক দেরি আছে। 


আমি/: তুমি কি পারবে, অফিসে কাজ করতে।


প্রেমা/: আমি না পারলে তুমি তো আছো। 


আম্মু/: ঠিক আছে মা। তুমি যা বলবে তাই হবে। 


আমি ও আর কিছু বললাম না। খাবার খেয়ে নিজের রুমে চলে আসলাম। রুমে এসে বিছানায় শুয়ে মোবাইল টিপতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পর প্রেমা রুমে আসলো। আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।


আমি/: আচ্ছা প্রেমা, তুমি বাচ্ছা না হওয়া পর্যন্ত বাসায় থাকলে কি হয়।


প্রেমা/: আমি বাসায় থেকে কি করবো। আমার বাসায় ভালো লাগছে না। আর এখনো তো অনেক দেরি আছে বাচ্ছা হতে। 


আমি/: ঠিক আছে। এখন শুয়ে পড়ো। 


তার পর প্রেমা আমাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়লো। 


এভাবে দেখতে দেখতে এক টা মাস চলে গেল। ফারহান এর সাথে আমাদের বন্ধুত্ব হয়ে গেছে। কয়দিন পর পর আমাদের অফিসে আসে। 


আজকে ফারহান প্রেমা কে অফিসের কি কাজের জন্য রেস্টুরেন্টে ডাকছে। আমাকেও বলছে যাওয়ার জন্য, তবে অফিসের কাজের চাপের জন্য আমি যেতে চাইনি। 


প্রেমা একা গেছে গাড়ি নিয়ে। আমি অফিসে বসে কাজ করতে লাগলাম। এবার একটু ওদিক থেকে ঘুরে আসি। প্রেমা আর ফারহান এর মধ্যে কি কথা হচ্ছে। 


প্রেমা/: বলো , কি কাজের জন্য ডেকেছো। 


ফারহান এই বার একটা গোলাপ নিয়ে, প্রেমার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে বলতে লাগলো। রেস্টুরেন্টে তারা দুজন এবং রেস্টুরেন্টের লোক ছাড়া কেউ নেই। 


ফারহান/: প্রেমা আমি তোমাকে প্রথম যেদিন আমার অফিসে দেখি, সেদিন থেকে আমার তোমাকে ভালো লাগে। এরপর আস্তে আস্তে তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি। প্লিজ তুমি আমাকে ফিরিয়ে দিও না। আমি সত্যি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। 


প্রেমা): এটা তুমি কি বলছো। আমি তোমাকে বন্ধু ছাড়া অন্য কিছু কখনো ভাবি নি। আর তুমি জানো আমার স্বামী আছে। আমার পেটে রাসেল এর সন্তান। তুমি কি করে এ কথা বলতে পারলে। আমি তোমার কাছে এরকম কথা কখনো আসা করি নাই। 


ফারহান/: আমি জানি তোমার স্বামী আছে। তোমার পেটে রাসেল এর সন্তান। তুমি চাইলে রাসেল কে ডিভোস দিয়ে দাও। আমি তোমার সন্তান এর কোনো ক্ষতি করতে বলবো না। আর ওই রাসেল এর কি আছে, । আমার সবকিছু আছে। আমি তোমাকে অনেক সুখে রাখবো।


প্রেমা/: তোমাকে আমি অনেক ভালো মনে করছি। কিন্তু তুমি যে এতোটা খারাপ , তা আমার জানা ছিলো না। আমি রাসেল কে নিয়ে অনেক সুখেই আছি। আজকে থেকে তুমি আর আমার সাথে যোগাযোগ করবে না। আমি চাইনা তোমার কারনে আমাদের সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হোক। 


ফারহান/: তুমি কি জানো, তুমি অফিসে না থাকলে, তোমার স্বামী অফিসে কি করে। তোমার স্বামী , তোমার বান্ধবী নদীর সাথে প্রেম করে। 


প্রেমা): এটা আমি কখনো বিশ্বাস করি না। রাসেল কে আমি ভালো করে চিনি। সে এরকম কাজ কখনো করবে না। 


ফারহান/: আমি জানতাম তোমার বিশ্বাস হবে না। ঠিক আছে, আমার সাথে তোমার অফিসে চলো। তার পর দেখবে, তোমার স্বামী অফিসে বসে কি করে। 


প্রেমা/:: আমার স্বামীর ওপর অনেক বিশ্বাস আছে। ঠিক আছে, তুমি যখন বলছো, তাহলে চলো। 


তার পর প্রেমা আর ফারহান অফিসে আসতে লাগলো। আর এদিকে আমি অফিসে বসে কাজ করতে আছি। হঠাৎ নদী আমার কেভিনের সামনে এসে বললো। 


নদী/: ভিতরে কি আসতে পারি। 


আমি/: আরে নদী তুমি। আসো। বসো।


নদী ভিতরে ঢুকে একটা চেয়ারে বসলো। 


নদী/: কি ব্যাপার আজকে প্রেমা কে দেখছি যে। প্রেমা কোথায়। 


আমি/: প্রেমা অফিসের কাজের জন্য , ফারহান কম্পানির সাথে দেখা করতে গেছে। 


নদী/: ওহ। 


আমি/: তা বলো, কি খাবে, চা না কফি। 


নদী /: কফি হলে চলবে। 


আমি পিয়ন কে ফোন দিয়ে বললাম, দুই টা কফি নিয়ে আসতে। কিছুক্ষণ পর পিয়ন কফি নিয়ে আসলো। দুজনে বসে কফি খেতে লাগলাম। 


নদী): রাসেল তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে। 


আমি/: কি কথা বলো।


নদী/: আসলে তোমাকে যেদিন না বুঝে থাপ্পড় মারি। সেদিন থেকে আমার কেমন জানি লাগছে। তোমার সাথে কথা বলতে আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি। 


আমি/: এটা তুমি কি বলছো নদী। আমার বিয়ে হয়ে গেছে। আর প্রেমা যদি এটা জানতে পারে। তাহলে তোমাকে অফিসে আর আসতে দিবে না। এবং তোমার সাথে বন্ধুত্ব নষ্ট করে দিবে। 


নদী/: তোমাকে সত্যি আমি অনেক ভালোবেসে ফেলেছি। প্লিজ তুমি আমাকে ফিরিয়ে দিও না। 


আমি/: তুমি প্রেমার বান্ধবী দেখে, কিছু করলাম না। তা না হলে এখনি ঘাড় ধাক্কা দিয়ে অফিস থেকে বের করে দিতাম। 


নদী/: ঠিক আছে। তুমি যখন আমাকে ভালোবাসতে পারবে না। তাহলে আমাকে একটা বার জড়িয়ে ধরবে। প্লিজ তুমি না করো না। আমি আর কখনো তোমার কাছে ভালোবাসার কথা বলবো না। 


আমি ভাবলাম, জড়িয়ে ধরতে তো বলছে। এর থেকে তো বেশি কিছু বলে নাই। 


আমি/: ঠিক আছে। শুধু বন্ধু বলে জড়িয়ে ধরতে বললাম। 


নদী চেয়ার থেকে উঠে আসলো। আমি ও দাঁড়িয়ে গেলাম। আপনাদের একটা কথা বলে রাখি, নদীর কথা গুলো আমার কেমন খটকা লাগলো। তাই আমার মোবাইলের অডিও চালু করে রাখলাম। এতোক্ষণ নদী আমার সাথে কি কথা বলছে। সব মোবাইলে সেফ করে রাখলাম। 


নদী আমাকে জড়িয়ে ধরল। হঠাৎ কেউ একজন হাত তালি দিয়ে কেভিনের ভিতরে ঢুকলো। আমি নদীকে ছাড়িয়ে দেখি প্রেমা আর ফারহান আমার কেবিনে।


আমি/: প্রেমা তুমি কখন আসলে। 


প্রেমা/' কেনো , আমি আসাতে বুঝি তোদের সমস্যা হয়ে গেছে। 


আমি/: প্রেমা তুমি আমার কথাটা আগে শুনো। 


প্রেমা/: কি শুনবো তোর কথা। আমি তোকে অনেক বিশ্বাস করেছি। কিন্তু তুই শেষ পর্যন্ত আমাকে ধোঁকা দিলি। কেনো রে আমি কি তোকে কম ভালোবাসা দিয়েছি। তার জন্য তুই নদীর সাথে কেবিনে বসে রোমান্স করবি। 


আমি/: প্রেমা তুমি আমাকে ভুল ভাবছো। আমাদের মধ্যে কিছুই নেই। আগে আমার কথাটা শুনো। 


প্রেমা): আমি তোর কোনো কথা শুনতে চাই না। তুই একটা দোকাবাজ । তোকে ভালোবেসে বিয়ে করে। আমি জীবনের বড় ভুল করেছি। 


আমি/: আমি ধোঁকা বাজ না। আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। 


এর ফাঁকে ফারহান আর নদী কেভিন থেকে বেরিয়ে চলে গেল। 


প্রেমা/: তাহলে এই ছিলো তোর ভালোবাসা। লাষ্ট পর্যন্ত আমার বান্ধবীর সাথে এরকম করলি। তুই আজকে বাসায় আয়। আমি তোর মতো বেইমান এর সাথে আর সংসার করবো না। 


এই বলে প্রেমা কেভিন থেকে বেরিয়ে গেল। আমাকে সত্য টা বলার সুযোগ দিলো না। আমি দাঁড়িয়ে না থেকে প্রেমার পিছনে কেভিন থেকে বেরিয়ে আসলাম। 


অফিস থেকে বেরিয়ে দেখি প্রেমা গাড়ি চলে গেছে। আমি ম্যানেজারের গাড়ি নিয়ে প্রেমার পিছনে যেতে লাগলাম। যেতে যেতে দেখি প্রেমা তাদের বাসায় আসলো। 


প্রেমা বাড়ির ভিতরে ঢুকে গেল। আমি তার পিছনে বাসার ভিতরে ঢুকলাম। আমার আগে প্রেমা ভিতরে ঢুকে গেলো। আমি গাড়ি পার্কিং করে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কলিং বেল চাপ দিলাম। কিছুক্ষণ পর শশুর বাড়ীর কাজের লোক দরজা খুলে দিলো। 


আমি ভিতরে ঢুকে দেখি শশুর শাশুড়ি সোফায় বসে কফি খাচ্ছে আর গল্প করছে। আমাকে দেখে শশুর বললো।


শশুর): আরে রাসেল প্রেমার কি হয়েছে। দেখলাম কান্না করতে করতে রুমে চলে গেল। তোমার সাথে কিছু হয়েছে। 


আমি/: আসলে আব্বু আমাদের মাঝে একটু ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। প্রেমা সত্য টা না জেনে আমাকে ভুল বুঝছে।


শশুর/: কি এমন হয়েছে তোমাদের মধ্যে। যে প্রেমা তোমাকে ভুল বুঝলো।


আমি শশুর শাশুড়ি কে অডিও টা শুনালাম। তখন শশুর বললো। 


শশুর/: আমার মনে হয়, নদী তোমাদের সংসার ভাঙ্গতে চেয়েছে। 


আমি/: নদী আমাদের সংসার কেনো ভাংবে। 


শশুর/: আচ্ছা নদীর সাথে তোমাদের কিছু হয়েছে। 


আমি/: একদিন নদীর সাথে আমি অফিসে ধাক্কা খাই। সেদিন নদী আমাকে না চিনে গায়ে হাত তোলে। তখন প্রেমা এটা শুনে নদীকে দুই টা থাপ্পড় মারে


শশুর/: তাহলে এটা নদীর সাজানো নাটক। তার থাপ্পড় এর প্রতিশোধ নিতে এমন টা করছে। 


আমি): আমার মনে হয় তাই হবে। আগে প্রেমার ভুল টা ভেংগে দিই। তা না হলে অন্য কিছু করে বসবে।


শশুর/: ঠিক আছে যাও। 


আমি আর কোনো কথা না বলে ওপরে প্রেমার রুমের সামনে এসে বললাম। 


আমি/: প্রেমা দরজা খুলো। তুমি একটা বার আমার কথা গুলো শুনো।


প্রেমা রুমের ভিতর থেকে বললো।


প্রেমা/: তুই এখানে কেনো এসেছিস। তুই আমাদের বাসা থেকে বেরিয়ে যা। আমি তোর সাথে কথা বলতে চাই না।


আমি/: আমি তোমার সাথে দুইটা মিনিট কথা বলবো। তার পর তুমি আমাকে যেটা খুশি করো। আমি তোমাকে বাধা দিবো না। একটা বার তুমি দরজা টা খোলো। 


প্রেমা কি বুঝে দরজা খুলে দিলো। আমি ভিতরে ঢুকে দেখি প্রেমা বিছানায় বসে কান্না করছে। আমাকে বললো।


প্রেমা/: কেনো এসেছিস এখানে ‌ তুই তোর নদীর কাছে যা। আমাকে ফারহান বলেছে তুই নাকি খারাপ, কিন্তু আমার তোর প্রতি বিশ্বাস ছিলো। তুই এমন কাজ করবি না। কিন্তু অফিসে এসে নিজের চোখে যেটা দেখলাম। তার পর আমার সব কিছু এলোমেলো হয়ে যায়। 


আমি/: আমার সাথে নদীর কোনো সম্পর্ক নেই। তুমি জানো নদী আজকে অফিসে এসে আমাকে কি বলেছে। 


প্রেমা/: কি বলেছে নদী। 


আমি/: তাহলে শুনো। 


আমি মোবাইল থেকে অডিও চালু করে দিলাম। প্রেমা অডিও টা শুনে এমন কিছু করবে , আমি তো পুরো অবাক হয়ে গেলাম। 


- পৃথিবীতে প্রত্যেকটা মানুষের হৃদয়েই কষ্ট আছে।


 - শুধু প্রকাশ করার ধরনটা আলাদা।


- প্রতিটা হাসির পিছনেই একটা রহস্য থাকে।

 - হয়তো ভালোবাসার নয়তো ঘৃনার।

*

*

*

*

* চলবে

*


আগামী পর্বে শেষ করে দিবো। 

*

*

*

* তো কেমন হয়েছে জানাবেন। আজকেও হঠাৎ মাথা করছে, তার পরেও লিখলাম। ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই লাইক এবং কমেন্ট দিয়ে পাশেই থাকবেন। 

*

*

*

* ধন্যবাদ সবাইকে পরবর্তি পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন 🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿 রোমান্টিক গল্প লেখক রাসেল চৌধুরী 🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post