ছদ্মবেশী ছেলে বনাম মেজরের মেয়ে পর্ব/:::::::::::::: ( ৩ )।

 


গল্প):::: ছদ্মবেশী ছেলে বনাম মেজরের মেয়ে।

*

*

* লেখক):::: রাসেল চৌধুরী 🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷

*

*

* পর্ব/:::::::::::::: ( ৩ ) ::::::::: ( তিন ) 

*

*

*

*

* আজকে কলেজে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি। হঠাৎ জান্নাত আমার সামনে এসে , এমন কিছু বলবে , আমি তো কল্পনাও করতে পারিনি। 


 জান্নাত/: রাসেল , আমার তোমার সাথে কিছু কথা আছে। যদি একটু শুনতে ।


আমি তো জান্নাত এর মুখে তুমি ডাক শুনে অবাক হয়ে গেলাম। যে মেয়ে আমাকে সবসময় অপমান এবং থাপ্পড় মারতো। সে মেয়ে আজকে আমাকে তুমি করে বলছে। আমি জান্নাত কে বললাম।


আমি/: বলো , কি কথা বলবে।


জান্নাত/: এখানে না, একটু চাইডে আসো। 


আমি রাফি আর আলাউদ্দিন কে বলে জান্নাত এর সাথে একটু দূরে গেলাম। তখন জান্নাত বললো।


জান্নাত/: রাসেল , আমি জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো। কিন্তু আমি তোমাকে ভালোবাসতে পারবো না। আমি একটা ছেলেকে ভালোবাসতাম। কিন্তু কেউ কাউকে দেখি নাই। কারন আমি ওর সাথে ফেসবুকে কথা বলছি। তাই তোমাকে আমি এক্সেপ করতে পারবো না। তুমি হয়তো ভাবছো, যে মেয়ে গরীব এবং তোমাকে দেখতে পারতাম না। সে মানুষ টা হঠাৎ এতো পরিবর্তন হলো কেমন করে। আসলে আমি আগে এমন ছিলাম না। শুধু ওই ছেলেটার জন্য, আমি সব ছেলেকে আমি দেখতে পারি না। 


আমি): শুনো জান্নাত। তুমি একটা ছেলের জন্য সবাইকে খারাপ বলতে পারো না। সে ছেলে হয়তো তোমার থেকে প্রেমের অভিনয় এবং টাইম পাস করেছে। তাই কিছু দিন মায়া লাগিয়ে , তোমার থেকে সরে গেছে। একটা কথা মনে রাখবে, সব ছেলেরা এক না। মানুষের ভিতরে ভালো খারাপ আছে। তাই বলছি সবার সাথে ভালো ব্যবহার করো। 


জান্নাত): আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমি তোমার গায়ে অনেক বার হাত তুলছি। 


আমি/: সমস্যা নেই। আমি তোমাকে মাফ করে দিছি। 


জান্নাত/: তাহলে আজ থেকে আমরা বন্ধু হয়ে থাকবো। কখনো আমাকে ভালোবাসার কথা বলতে পারবে না। আমি সবসময় তোমার সাথে বন্ধু হয়ে থাকতে চাই। 


আমি/: হঠাৎ এই গরীব এবং ক্ষেত এর সাথে বন্ধুত্ব করতে কেনো আসলে। 


জান্নাত/: আমি তো বলছি , আমার ভুল হয়ে গেছে। ঠিক আছে, তোমাকে যতো আঘাত করেছি, তুমি সেই আঘাত আমাকে দিতে পারো। আমি তোমাকে কিছু বলবো না। 


আমি/: আচ্ছা ঠিক। আজকে থেকে তুমি আর আমি বন্ধু। 


জান্নাত/: আজকে থেকে তুমি হবে না। হয়তো তুই,আর না হয় নাম ধরে বলবি। 


আমি/: ওকে ঠিক আছে। এখন চল রাফি আর আলাউদ্দিন এর সাথে বন্ধুত্ব করবি। 


জান্নাত/: আমি শুধু তোর সাথে বন্ধুত্ব করবো। অন্য কারো সাথে করবো না।


আমি/: আরে ওরা দুজন তো আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড। 


জান্নাত/: তো কি হয়েছে। তুই তোর বন্ধুদের সাথে আগের মতো কথা বলবি। তার পর আমার সাথে বলবি। আমি তোকে ছাড়া অন্য কোনো ছেলের সাথে বন্ধুত্ব করবো না। 


আমি/: আচ্ছা ঠিক আছে। তাহলে তুই এখন ক্লাসে যা। আমি ওদের সাথে আসছি। 


জান্নাত/: ঠিক আছে। 


জান্নাত আর কোনো কথা না বলে ক্লাসে চলে গেল। আমি দাঁড়িয়ে না থেকে বন্ধুদের কাছে যেতে লাগলাম। আপনারা হয়তো ভাবছেন, আমি ওকে ভালো না বেসে বন্ধুত্ব কেনো করলাম। 


আসলে আগে তার সাথে বন্ধুত্ব করে, আমার প্রতি দুর্বল এবং ওই ছেলের চিন্তা জান্নাত এর মাথা থেকে সরিয়ে, তার পর জান্নাত কে ভালোবাসার কথা বলবো। আমি জানি জান্নাত এখনো ওই ছেলেটা কে ভালোবাসে। বন্ধুদের কাছে যাওয়ার পর রাফি বললো।


রাফি/: কিরে মেজরের মেয়ে , তোর সাথে কি কথা বললো। 


আলাউদ্দিন/: তোকে দেখে বুঝা যাচ্ছে, ভালো কিছু বলেছে। 


আমি/: আসলে জান্নাত এতো দিনে আমার সাথে যে অন্যায় করেছে, তার জন্য ক্ষমা চেয়েছে। আর আমার সাথে বন্ধুত্ব করেছে। 


রাফি/: তাহলে তো ভালোই। এখন তাকে তোর প্রতি দুর্বল করে, একদিন ভালোবাসার কথা বলে দিবি। 


আলাউদ্দিন/: ঠিক আছে, এখন ক্লাসে চল। 


তার পর তিন জনে মিলে ক্লাসে গেলাম। কিছুক্ষণ পর স্যার ক্লাসে ঢুকলো। সব গুলো ক্লাস শেষ করে বাহিরে আসলাম। রাফি আর আলাউদ্দিন আমাকে বলে তারা বাসায় চলে গেলো। 


আমি গেটের সামনে রিকশার জন্য দাঁড়িয়ে আছি। হঠাৎ জান্নাত এর গাড়ি এবং সাথে সেনাবাহিনীর গাড়ি আমার সামনে থামালো। তখন জান্নাত গাড়ির ভিতর থেকে বললো।


জান্নাত): এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন। চল তোকে বাসায় নামিয়ে দি। 


আমি/: সমস্যা নেই। তুই যা, আমি রিকশা করে চলে যাবো। 


জান্নাত/: ওই তোকে বলছি না, গাড়িতে উঠতে। তা না হলে, সেনাবাহিনী কে বলে জোর করে গাড়িতে উঠাবো। 


আমি আর কোনো কথা না বলে জান্নাত এর গাড়িতে উঠলাম। দুজনে পিছনে বসে আছি। কথা বলতে বলতে বাসা থেকে কিছুটা দূরে গাড়ি থামাতে বললাম। গাড়ি থামানোল পরে , আমি গাড়ি থেকে নামলাম। তখন জান্নাত বললো।


জান্নাত/: কিরে তুই এখানে নামলি কেনো। আসে পাশে তো কোনো বাসা দেখছি না। 


আমি/: আসলে আমার বাসা ,এ গলির মাথায়, তোর গাড়ি ভিতরে ঢুকবে না। তাই এখানে নেমে গেলাম। 


জান্নাত): ওহ, ঠিক আছে, তাহলে বাসায় যা, কালকে কলেজে দেখা হবে। 


আমি): আচ্ছা ঠিক আছে। 


জান্নাত চলে গেল। আমি হেঁটে বাসায় চলে গেলাম। বাসার ভিতরে ঢুকে কলিং বেল চাপ দেওয়ার পর রাইসা এসে দরজা খুলে দিল। 


আমি): কিরে তুই আজকে কলেজে গেলি না কেন। 


রাইসা/: আজকে সকালে মাথা ব্যথা করছিলো। তাই যাইনি। কাল যাবো। 


আরো কিছুক্ষণ কথা বলে রুমে চলে আসলাম। ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে একটা ঘুম দিলাম। 


সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গেছে। তাই তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নাস্তা না করে কলেজে চলে গেলাম। রাইসা খাচ্ছুনি আমাকে আজকে ঠেকে তোলে নাই। 


কলেজে এসে দেখি সব হারামি কলেজ মাঠের এক কোনায় বসে আড্ডা দিচ্ছে। তাদের সাথে বসে কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে ক্লাসে চলে গেলাম। আজকে জান্নাত কলেজে আসে নাই। তার নাম্বার নিতে ভুলে গেছি। তা না হলে ফোন দিয়ে জিগ্গেস করতাম। 


তার পর সব ক্লাস শেষ করে বাহিরে চলে আসলাম। রাফি আর আলাউদ্দিন কে বিদায় দিয়ে আজকে হেঁটে হেঁটে বাসায় যাচ্ছি। 


হঠাৎ দেখি একটা ছেলে, একজন বাবার বয়সী লোক কে মারতে মারতে নিয়ে যাচ্ছে। তখন আমি ওই লোকটার সামনে গিয়ে বললাম।


আমি): কি ব্যাপার ভাই। আপনি ওনাকে এভাবে মারতে মারতে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন। 


লোকটা /: সেটা কি তোকে জিগ্গেস করবো। তোর রাস্তা তুই মাফ। 


হঠাৎ বুড়ো লোকটা বললো। 


বুড়ো /: বাবা আমাকে বাঁচাও। আমার মেয়েকে ওর সাথে একরাত কাটাতে না দেওয়ায়, আমাকে মারতে মারতে থানায় নিয়ে যাচ্ছে। 


বুড়ো লোকটার কথা শুনে মাথা পুরো গরম হয়ে গেলো। আমি ঠাসসস করে ওই লোকটার নাক বরাবর একটা গুশি মারলাম। লোকটার নাক দিয়ে রক্ত বের হয়ে গেছে। 


লোকটা তার রক্ত দেখে আমাকে মারতে আসলে, আবার মেডেল স্ট্যাম্প বরাবর একটা লাথি মারলাম। লোকটা জায়গায় বসে গেলো। এবার আমি ওই লোকটা কে বললাম। 


আমি/: তুই যদি আর কখনো , এই চাচার এবং অন্য মেয়েকে এসব প্রস্তাব দিস। তাহলে তোর অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে। কথা টা মনে রাখিস। 


এই বলে চাচাকে নিয়ে ওখান থেকে চলে আসলাম। আশেপাশের সবাই এতোক্ষণ তাকিয়ে তাকিয়ে সব দেখছে। কিন্তু কেউ কোনো প্রতিবাদ করে নাই। চাচা আমাকে বললো।


চাচা/: বাবা তুমি কে , সেটা আমি জানি না। কিন্তু তুমি আজকে আমার বড় উপকার করলে। 


আমি/: চাচা এটা আমার কর্তব্য ছিলো। আপনি কি কাজ করেন। 


চাচা): আমি একটা ছোট খাটো দোকানে পান সিগারেট বিক্রি করি। আমার বউ। নাই। একটা মেয়ে আছে, মেয়েটার যখন পাঁচ বছর, তখন তার মা মারা যায়। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে আর বিয়ে করি নাই। 


আমি/: আচ্ছা চাচা, আমি যদি আপনাকে কিছু টাকা দিই‌ , আপনি সে টাকা দিয়ে দোকান টা আরো বড় করতে পারবেন। 


চাচা/: তোমাকে দেখে তো, তেমন ছেলে মনে হয় না। তোমাকে দেখে মনে হয়, আমার মতো গরীব ছেলে। 


আমি/: আপনি আমার বিষয় পরে জানতে পারবেন। এখন বলেন, আপনি টাকা নিবেন। 


চাচা/: ঠিক আছে দাও। 


আমি পকেট থেকে ২০ হাজার টাকা বের করে চাচার হাতে দিলাম। আসলে সকালে রাফি আমাকে টাকা গুলো দিয়েছে, কোনো গরীব মানুষ কে বিলিয়ে দিতে। 


আমি/: চাচা আপনি এই টাকা টা দিয়ে , দোকানে আরো কিছু জিনিস উঠাবেন। দেখবেন আস্তে আস্তে আপনার দোকান অনেক বড় হয়ে যাবে। 


চাচা): তুমি অনেক ভালো ছেলে। আমি তোমার জন্য সবসময় দোয়া করি। আল্লাহ যেনো সবসময় সুস্থ রাখে। 


আমি/: চাচা আমার জন্য শুধু দোয়া করলে হবে না। আমার আরো দুইটা কলিজার বন্ধু আছে। তাদের জন্য ও দোয়া করবেন। আর ওই লোকটা যদি আপনার ক্ষতি করার চেষ্টা করে। শুধু আমাকে একটা বার বলবেন। 


চাচা/: ঠিক আছে বাবা। তোমাদের সবার জন্য দোয়া করবো। 


আর কোনো কথা না বলে, বাসায় আসার সময় একটা এতিম খানায় বাকি টাকা গুলো দিয়ে আসলাম। বাসায় এসে কলিং বেল চাপ দেওয়ার পর আম্মু এসে দরজা খুলে দিলো। 


আম্মুর সাথে কিছুক্ষণ দুষ্টুমি করে নিজের রুমে চলে আসলাম। রাতে খাবার টেবিলে আব্বু বললো। 


আব্বু/: আমার এক বন্ধুর মেয়ের কালকে জম্মদিন, । তাই আমাদের সবাইকে দাওয়াত করেছে। তোমরা সবাই কাল সন্ধ্যায় রেডি থাকবে। 


আমি/: আব্বু আমাকে ও কি যেতে হবে। আমি না গেলে হয় না। 


আব্বু/: সুফিকুল ( বন্ধুর নাম) সবাইকে যেতে বলেছে। তাহলে তোমার সমস্যা কোথায়। 


আমি/: আব্বু কালকে আমার হাতে কিছু কাজ আছে। তাই আমি যেতে পারবো না। 


আব্বু): তুই কি আমাকে সবার সামনে লজ্জা দিতে চাস। এমনে কলেজে প্রতিদিন রিকশা এবং পুরোনো জামা কাপড় পড়ে যাস। আমার মান সম্মান থাকে। আমি কোনো কথা শুনতে চাই না। কালকে রেডি থাকবে। 


আমি আর কোনো কথা বললাম না। খাবার খেয়ে নিজের রুমে চলে আসলাম। কিছুক্ষণ মোবাইল টিপে ঘুমিয়ে পড়লাম। 


পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে কলেজে চলে গেলাম। মাঠের কোনায় গিয়ে বন্ধুদের সাথে বসলাম। তখন রাফি বলল। 


রাফি): কিরে তোর আজকে কলেজে আসতে দেরি হলো কেন। আজকে একজনে এসে তোর কথা জিজ্ঞেস করছে। 


আমি): আমার কথা আবার কে জিজ্ঞেস করবে।


আলাউদ্দিন/: আরে তোমার ভালোবাসার মানুষ জান্নাত। পুরো কলেজে তোকে না পেয়ে আমাদের কাছে আসে। আমরা বলছি তুই এখনো আসিস নাই। তার পর কলেজ থেকে চলে গেলো। হাতে দেখলাম কিসের কাট । 


আমার তো কাটের কথা শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেলো। তার মানে কি জান্নাত এর বিয়ের কাট। ওর নাম্বার টাও নেই ‌ । 


আমি ওদের সাথে কোনো কথা না বলে বাসায় চলে আসলাম। আজকে আর ভালো লাগছে না। এজন্য মনে হয় জান্নাত কলেজে আসে নাই। 


সন্ধ্যায় সবার সাথে রেডি হয়ে , সফিকুল আনকেল এর বাসায় যেতে লাগলাম। আজকে সবকিছু ম্যাচ করে পড়েছি। আব্বুর কথা চিন্তা করে। 


প্রায় ৩০ মিনিট পর আব্বুর বন্ধুর বাসার সামনে চলে এসেছি, আমরা সবাই গাড়ি থেকে নেমে ভিতরে গেলাম। বাড়িটা অনেক সুন্দর করে সাজিয়েছে। 


ভিতরে যাওয়ার পর একজন লোক আমাদের সামনে আসলো। এসে আব্বুকে জড়িয়ে ধরলো। তাহলে ওনি হয়তো সফিকুল আনকেল। 


আমাদের সবার সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে, আমাদের গেষ্ট রুমে নিয়ে গেল। আমার একটা জিনিস মাথায় ঢুকছে না। বাড়ির চার পাশে সেনাবাহিনী দিয়ে ভরা, সফিকুল আনকেল কি সেনাবাহিনীর কোনো পদে আছে। 


একটু পর হঠাৎ ওপরের দিকে চোখ গেলো। দেখি একটা মেয়ে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে আসছে। তাকে দেখে আমি পুরো অবাক হয়ে গেলাম। ও এখানে কি করছে। তার মানে ও সফিকুল আনকেল এর মেয়ে। 


কোনো একদিন ধুলোয় মিশে যাবো আমরা সবাই।

 তারপরে অহংকার কমে নি আমাদের।


- মাঝে -মাঝে চিৎকারে করে বলতে ইচ্ছে করে।


 - আমি সত্যিই ভালো নেই.।

*

*

*

*

* চলবে

ছদ্মবেশী ছেলে বনাম মেজরের মেয়ে গল্পের সকল পর্বের লিংক এক সাথে 


রাতে আরেক পর্ব দিবো। সবাই লাইক এবং কমেন্ট করে পাশেই থাকবেন

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post