গল্প/::: অফিসের বস যখন বউ। * * * লেখক/:::: রাসেল চৌধুরী * * পর্ব/::::::: ( ২ ) :::::::: ( দুই ) *

 


গল্প/::: অফিসের বস যখন বউ।

*

*

* লেখক/:::: রাসেল চৌধুরী 

*

* পর্ব/::::::: ( ২ ) :::::::: ( দুই ) 

*

*

*

*

* বিছানায় থেকে নেমে ওয়াস রুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে, একটা জামা গায়ে দিয়ে নিচে আসলাম। তখন আব্বু আম্মু এবং রাইসা আমার দিকে কেমন চোখে যেনো তাকিয়ে আছে। আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। 


আমি/: তোমরা সবাই আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছো কেন। আমি কি কোনো এলিয়েন নাকি। 


আম্মু/: বাবা তোর কিছু হয়েছে। শরীর খারাপ নাকি। 


আমি/: এ কথা বললে কেনো। আমি তো ঠিকই আছি। 


রাইসা/:মানে আম্মু বলতে চাইছে। সূর্য আজকে কোন দিকে উঠেছে। 


আমি/: কেনো , প্রতিদিন যে দিকে উঠে। আজকেও সেদিকে উঠেছে। 


আম্মু/: রাইসা আমার মনে হয়, রাসেলের কিছু হয়েছে। যে ছেলেকে সকালে এতো ডাকার পরেও উঠে না। সে ছেলে আজকে এতো সকাল সকাল কি ভাবে উঠলো। 


আমি/: আমি কি সকাল সকাল উঠতে পারি না। 


রাইসা/: সেটাতো আমরা , আজ এক বছর ধরে দেখে আসছি। 


আমি/: আরে , অফিসের ম্যাম অনেক কড়া , । গতকাল আমাকে যে বাসন দিছে। তাই সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে গেলাম। ম্যামের আব্বু হলে কোনো সমস্যা ছিলো না। কিন্তু বসের মেয়ের অনেক রাগ। 


রাইসা/: এবার ঠিক হয়েছে। এখন থেকে দেরি করে অফিসে গেলে, তোর ম্যামের ঝাড়ি খেতে হবে। 


আমি/: ঠিকই বলছিস। আম্মু নাস্তা কি হয়েছে। 


আম্মু/: এখনো হয়নি। তোরা বসে গল্প কর। আধা ঘন্টার মধ্যে হয়ে যাবে। 


ঠিক আছে বলে , আমি সোফায় গিয়ে বসলাম। তখন রাইসা আমার পাশে বসে বললো।


রাইসা/: ভাইয়া তোর ম্যাম দেখতে কেমন রে।


আমি/: আমি এখনো ম্যামের চেহারা দেখি নাই। যে সময় আমাকে কেবিনে ডাকবে। তখন ম্যাম চেয়ার ঘুরিয়ে আমার সাথে কথা বলে। 


রাইসা/: এভাবে কথা বলে কেনো। বাকিদের সাথে কি এভাবে কথা বলে।


আমি/: নাহ, শুধু আমার সাথে এভাবে কথা বলে।


রাইসা/: তাহলে আমার মনে হয়, এখানে কোনো কারণ আছে। অফিসের সবার সাথে সামনাসামনি কথা বলে। তোর সাথে চেয়ার ঘুরিয়ে কথা বলে কেনো। 


আমি/: সেটা আমি বলতে পারবো না। দেখি সামনে কি হয়। মাএ তো প্রথম দিন এমন করছে। কোনো একদিন তো অবশ্যই দেখতে পাবো। 


তার পর আমি আর রাইসা আরো কিছুক্ষণ কথা বললাম। কিছুক্ষণ পর আম্মু টেবিলে নাস্তা নিয়ে আসলো। সবার সাথে নাস্তা করে রুমে এসে রেডি হয়ে , বাসা থেকে বেরিয়ে বাইক নিয়ে অফিসে চলে আসলাম।


বাইক পার্কিং করে অফিসের ভিতরে ঢুকে, নিজের কেবিনে চলে আসলাম। আজকে বিশ মিনিট আগে অফিসে চলে আসলাম। 


আমি বসে বসে মোবাইল টিপতে লাগলাম। অফিসের সবাই আস্তে আস্তে আসা শুরু করলো। কিছুক্ষণ পর রাফি অফিসের ভিতরে ঢুকে, আমাকে দেখে কেবিনে আসলো। তখন রাফি বলল।


রাফি/: কিরে , তুই কি রাসেল। নাকি অন্য কেউ।


আমি/: আমি রাসেল না , রাসেল এর ফোটো কপি। 


রাফি/: আমার তো তাই মনে হয়। আজ এক বছর পর তুই, অফিসে আগে এসেছিস। 


আমি/: কি করবো বল। সালার ঘুমের কারণে ঠিক টাইমে আসতে পারি না। 


রাফি/: ঠিক আছে চল। দুজনে কপি খেয়ে আসি। কপি খেয়ে এসে কাজ করবো।


আমি/: ঠিক আছে চল।


আমি আর রাফি কেভিন থেকে বেরিয়ে কেন্টিনে চলে গেলাম। দুজনে দুইটা কফি খেয়ে অফিসে চলে আসলাম। রাফি ওর কেবিনে চলে গেল। আমি আমার কেভিনে বসে কাজ করতে লাগলাম।


কাজ করতে করতে দুপুরের লাঞ্চ এর টাইম হয়ে গেছে। কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো আজকে ম্যাম আমাকে তার কেবিনে ডাকে নাই। মনে হয় টাইম মতো আসার কারণে ডাকে নাই। 


আর ডাকে নাই, ভালো করছে। তা না হলে আমাকে কিছুক্ষণ বাসন দিতো। এই যাহ শালির কথা বলতে না বলতেই পিয়ন এসে বললো। 


পিয়ন/: স্যার , ম্যাম আপনাকে ওনার কেবিনে ডাকছে। 


আমি/; এখন তো দুপুরের লাঞ্চ এর টাইম। আমি এখন খাবার খেতে যাবো।


পিয়ন/: আমাকে বলে লাভ নেই। ম্যামের কাছে গিয়ে বলেন। আপনাকে তাড়াতাড়ি যেতে বলছে। 


এ কথা বলে পিয়ন কেভিন থেকে বেরিয়ে গেল। এখন লাঞ্চ এর টাইমে কেনো ডাকলো। আবার অনেক খিদে ও লাগছে। মনে কয় শালির মাথা ফাটিয়ে দিই। 


আমি কেভিন থেকে বেরিয়ে ম্যামের কেভিনের সামনে গিয়ে বললাম। 


আমি/: ম্যাম ভিতরে আসতে পারি। 


ম্যাম/: হুম আসুন। 


আমি ভিতরে গিয়ে দেখি, ম্যাম আগের মতো চেয়ার ঘুরিয়ে বসে আছে। 


আমি/: ম্যাম আমাকে কেনো ডেকেছেন। এখন তো দুপুরের লাঞ্চ টাইম। 


ম্যাম/: আপনি আজকে আমার সাথে লাঞ্চ করবেন। তাই কেভিনে আসতে বললাম। 


আমি/: আপনি আমার সাথে কি ভাবে খাবার খাবেন। আপনি তো আপনার চেহারা এখনো পর্যন্ত আমাকে দেখান নাই। 


ম্যাম/: আমার চেহারা দেখলে, আপনি চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে যাবেন। কারন আপনি আমাকে ভালো করে চিনেন। 


আমি/: আমি আপনাকে চিনি মানে। কে আপনি। 


ম্যাম/: মনে করে দেখেন তো। কলেজে আপনাকে প্রতিদিন একটা মেয়ে প্রফোজ করতো। কিন্তু আপনি রাজি হতেন না। 


আমি/: আপনি প্রেমার কথা বলছেন। কিন্তু আপনি ওকে চিনেন কি ভাবে। 


ম্যাম/: আপনি সেটা পরে জানতে পারবেন। এখন বলেন, প্রেমার প্রফোজে রাজি হতেন না কেন। সে কি দেখতে খারাপ। 


আমি/: আসলে ম্যাম , প্রেমা মেয়েটা কে আমার ও অনেক পছন্দ। কিন্তু সে ছিলো বড়লোক বাবার একমাত্র মেয়ে। আমার বাবা ছিলো। সাধারণ একটা অফিসের কর্মচারী। প্রেমার বাবা কখনো আমাদের সম্পর্ক মেনে নিবে না। তাই প্রেমা যতো বার প্রফোজ করতো, আমি তাকে ফিরিয়ে দিতাম। 


ম্যাম/: তোমার বাবা অফিসের কর্মচারী তো কি হয়েছে। ওনি কি মানুষ না। টাকা পয়সা দিয়ে কখনো ভালোবাসা হয়না। দুজনের দুই মনের মিল থাকলে ভালোবাসা হয়। 


আমি/: সেটা ঠিক আছে। কিন্তু প্রেমার বাবা কখনো মানবে না। 


ম্যাম/: সত্যি করে বলুন তো। আপনি কি এখনো প্রেমাকে ভালোবাসেন। যদি সে আপনার কাছে ফিরে আসে, তখন তাকে আপন করে নিবেন। সে যদি আপনাকে বিয়ে করতে চায়। আপনি তাকে বিয়ে করবেন। 


আমি/: হুম আমি এখনো তাকে ভালোবাসি। কিন্তু সে এখন কোথায় থেকে ফিরে আসবে। তাকে তো পড়ালেখা ছাড়ার পর আর দেখতেই পাইনি। 


ম্যাম/: সে আপনার আশেপাশে আছে। আপনি বলুন, তাকে আপন বিয়ে করবেন।


আমি/: বিয়ে করতে রাজি আছি। যদি তার বাবা মা এবং আমার বাবা মা রাজি থাকে। 


ম্যাম/: প্রেমার বাবা মা সবাই রাজি আছে। এখন আপনি রাজি কিনা সেটা বলুন। 


আমি/: আপনি জানলেন কিভাবে, যে প্রেমা রাজি আছে। আপনি কে, । 


হঠাৎ ম্যাম চেয়ার ঘুরিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে। আমি তো ম্যাম কে দেখে অবাক হয়ে গেলাম। এ আর কেউ নয় প্রেমা। তখন প্রেমা আমাকে বললো। 


প্রেমা/: কি ব্যাপার, শখ খেলে নাকি। মিষ্টার রাসেল। 


আমি/: প্রেমা তুমি এখানে। তার মানে এটা তোমাদের অফিস। 


প্রেমা/: হুম এটা আমাদের অফিস। চার দিন আগে অফিসে আব্বুর কাছে আসলাম। তখন হঠাৎ তোমাকে অফিসে দেখি। তার পর আব্বু কে বুঝিয়ে আমি অফিসে জয়েন্ট করি। আব্বু আমাকে আগের থেকে বলছে , অফিসের দায়িত্ব হাতে নেওয়ার জন্য। কিন্তু আমার অফিসে কাজ করতে ভালো লাগে না। তোমাকে দেখেই অফিসে বসের দায়িত্ব পালন করতে এসেছি। 


আমি/: এ জন্য তো বলি, তুমি আমাকে চেহারা দেখাও না কেনো। তোমার গলার কন্ঠ কেমন যেনো চেনা চেনা লাগছে। আচ্ছা তুমি পড়াশোনা শেষ করার পর কোথায় ছিলে। 


প্রেমা/: আসলে পড়ালেখা শেষ করার কিছুদিন পর আমার ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়ে।প্রায় ছয় মাস বাংলাদেশে অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। কিন্তু কোনো উন্নতি দেখছি না। তার পর আব্বু আমাকে আমেরিকা মামাদের কাছে কাছে নিয়ে যায়। সেখানে একটা হাসপাতালে আমার অপারেশন হয়। আল্লাহ দিলে ছয় মাসে আমি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাই। সুস্থ হলে বাংলাদেশে ফিরে আসি, । 


আমি/: ওহ। 


প্রেমা/: রাসেল তুমি আমাকে একটু ভালোবাসা দিবে। আমি সারাজীবন তোমার আগলে রাখবো। কখনো কষ্ট পেতে দিবো না। 


আমি চেয়ার থেকে উঠে প্রেমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললাম। 


আমি/: আমি ও তোমাকে ভালোবাসি। একমাত্র তোমার কারনে , সব মেয়েদের রিজেক্ট করে দিছি। আমি তোমাকে প্রথম দিন কলেজে দেখে পছন্দ করে ফেলি। কিন্তু যখন শুনলাম, তুমি বড়লোক বাবার একমাত্র মেয়ে। তখন পিছিয়ে গেলাম। 


প্রেমা/: তুমি জানো, আমি আব্বুর কাছে তোমার ব্যাপারে সবকিছু খুলে বলছি। আব্বু তোমার কথা অনেক খুশি হয়েছে। আব্বু তোমার মতো একটা ছেলে খুজছে আমার জন্য। 


আমি/: তাহলে তো আর কোনো সমস্যা নেই। কিছুদিন পরেই তোমাকে বিয়ে করে বাসায় নিয়ে যাবো। 


প্রেমা/: ঠিক আছে। লাঞ্চ এর টাইম তো শেষ হয়ে গেছে। তুমি ফ্রেশ হয়ে আসো। আজকে তোমার জন্য নিজ হাতে বিরিয়ানি বানিয়ে নিয়ছ আসলাম। 


আমি/: ওকে আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি। 


বলে ওয়াস রুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে আসলাম। প্রেমা আমার সামনে একটা টিফিন বক্স দিলো‌ । আমি খুলে দেখি বিরিয়ানি। আমি খেতে শুরু করলাম। 


হঠাৎ মনে হলো, প্রেমা তো এখনো খাবার খাইনি। আসলে পেটের খিদায়, প্রেমার কথা ভুলে গেছি। প্রেমার দিকে তাকিয়ে দেখি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। 


আমি কোনো কথা না বলে প্রেমার মুখের সামনে খাবার ধরলাম। প্রেমা কোনো কথা না বলে খেতে লাগলো। 


ও তার মানে আমার হাতে খাওয়ার জন্য এতোক্ষণ মহারানি বসে ছিলো। প্রেমাকে আমি খাইয়ে দিতে লাগলাম, প্রেমা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। 


আমি/: এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছো কেন। 


প্রেমা /: তুমি কি আমার সেই রাসেল। যাকে হাজার বার প্রফোজ করার পরেও রাজি হলো না। 


আমি/: তুমি সবকিছু শুনে, তার পরেও কথা টা কিভাবে বলছো। 


প্রেমা/: হুম, এইভাবে সারাজীবন আমাকে খাইয়ে দিবে তো ‌ 


আমি/: তোমার কি হাত নেই। আমি তোমাকে খাইয়ে দিতে যাবো কেনো। 


প্রেমা/: তোমার আর খাইয়ে দিতে হবে না। আমার আর খাবো না। 


আমি/: ওমা , মহারানি দেখি আবার রাগ করতে যানে। তুমি চাইলে, আমি সবসময় তোমাকে খাইয়ে দিবো। 


প্রেমা/: এই না হলে , আমার জামাই। 


আমি/: হয়েছে হয়েছে, এখন তাড়াতাড়ি খাও। হাতের কিছু কাজ বাকি আছে। 


প্রেমা): আজকে তোমাকে আর কাজ করতে হবে না। দুজনে মিলে বাহিরে ঘুরতে যাবো। 


আমি): ঠিক আছে। 


তার পর দুজনে খাবার খেলাম। প্রেমা আমার থেকে টিফিন বক্স টা নিয়ে ওয়াস রুমে চলে গেল। কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে আসলো। 


হাতে করে এক গ্লাস পানি নিয়ে আসলো। আমার হাত টা ধুয়ে দিলো। তার পর প্রেমার উড়না দিয়ে মুখ মুছে দিলো। 


তার পর কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে , প্রেমা আর আমি অফিস থেকে বেরিয়ে, বাইক নিয়ে ঘুরতে গেলাম। প্রেমা আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে আছে। 


রাত নয়টার সময় বাসায় ফিরে আসলাম। প্রেমাকে তাদের বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে, আমার বাসায় চলে আসলাম। 


দেখতে দেখতে আমাদের বিয়ে টা হয়ে গেল। দুই ফ্যামিলি মিলে আমাদের বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করলো। তার পর বিয়েটা হয়ে গেলো। 


বিয়ের এক মাস পর থেকে প্রেমা অফিসে বসে। এতে আব্বু আম্মু কিছু বলে না। তারা চায় আমি আর প্রেমা মিলে অফিস টা চালাই। 


এরপর থেকে প্রেমা অফিসে বসের দায়িত্ব পালন করে। কিন্তু তার সব কাজ আমার হাতে করায়। প্রেমা সারাদিন অফিসে বসে ছোট বাচ্চাদের মতো কার্টুন দেখে। 


এই ছিলো অতিতের কাহিনী। এবার বর্তমানে আসা যাক। 


প্রেমার কেভিন থেকে বেরিয়ে আসতেই কারো সাথে ধাক্কা খেলাম। কিন্তু আমি পড়ি নাই। যে আমার সাথে ধাক্কা খেয়েছে, সে পড়ে গেছে। 


নিচের দিকে তাকিয়ে দেখি একটা মেয়ে। কিন্তু তাকে কখনো এই অফিসে দেখি নাই। তখন মেয়েটি উঠে এসে আমাকে একটা থাপ্পর মেরে দিলো। তার পর বলতে লাগলো। 


মেয়েটা): কুত্তার বাচ্চা দেখে চলতে পারিস না। দেখে তো মনে হচ্ছে এই অফিসে কাজ করিস। 


আমি/: আমি ইচ্ছে করে আপনাকে ধাক্কা দি নাই। আর একটা কথা, আমার মা বাবাকে গালি দিয়ে কথা বলবেন না। 


মেয়েটা/: যদি গালি দি, তাহলে তুই কি করবি। তুই জানিস, আমি চাইলে প্রেমাকে বলে, তোকে এ অফিস থেকে বের করে দিতে পারি। 


আমি/: আপনি বলে দেখতে পারেন। কোনো লাভ হবে না। আর একটা কথা, আপনি শুধু মেয়ে মানুষ দেখে আজকে বেঁচে গেছেন। তা না হলে আমার থাপ্পড় এর প্রতিশোধ আমি নিয়ে ছাড়তাম। 


মেয়েটা/: তুই বেশি বেড়ে গেছিস। দাড়া তোর চাকরি এখনি আমি খেয়ে দিচ্ছি। 


বলে মেয়েটা প্রেমার কেভিনে চলে গেল। আমি দাঁড়িয়ে না থেকে নিজের কেবিনে চলে আসলাম। একটা ফাইলের কাজ করতে আছি। হঠাৎ প্রেমা ফোন দিয়ে বললো, তার কেভিনে একটু যেতে। 


আমি কেভিন থেকে বেরিয়ে সোজা প্রেমার কেবিনে ঢুকে গেলাম। ওই মেয়েটা আমাকে দেখে বলল। 


মেয়েটা): দেখছিস প্রেমা, কি অসভ্য ছেলে। তোর কেবিনে ঢুকতে অনুমতি নিয়ে আসলো না। আমি তোর কেবিনে আসার সময়, এই ছেলেটা আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিছে। 


আমি/: প্রেমা আমি ইচ্ছে করে ওকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দি নাই। তোমার কেভিন থেকে বেরিয়ে যেতে , ওনার সাথে ধাক্কা লাগে। তার পর ওনি পড়ে যায়। তার পর আমার মা বাবাকে গালি দিছে এবং আমার গালে একটা থাপ্পড় মারছে। 


প্রেমা চেয়ার থেকে উঠে ওই মেয়েটার দুই গালে দুইটা থাপ্পড় মেরে দিলো। ওই মেয়েটা গালে হাত দিয়ে বললো। 


মেয়েটা/: প্রেমা , তুই আমার বান্ধবী হয়ে , ওই ছেলের কথায় আমার গায়ে হাত তুললি। 


প্রেমা/: তোর সাহস কি করে হলো , ওর গায়ে হাত তোলার। আবার ওর আব্বু আম্মু কে গালি দেওয়ার। তুই জানিস ও কে। 


মেয়েটা/: কে ও। যার জন্য আমার গায়ে হাত তুললি। 


প্রেমা/: ও আমার স্বামী। আর তুই ওর গায়ে হাত তুলছিস, আমার শশুর শাশুড়ি কে গালি দিছোস। আমি রাসেল এর সমন্ধে ভালো করে জানি। ও কোনো মেয়েকে ধাক্কা তো দুরের কথা, কোনো মেয়ের হাত তুলবে না। তুই শুধু আমার বান্ধবী দেখে , আর কিছু করলাম না। তা না হলে উচিত শিক্ষা দিয়ে ছেড়ে দিলাম। 


মেয়েটা/: সরি প্রেমা , আমি বুঝতে পারি নাই, ও যে তোর স্বামী, । আমি যদি তোর স্বামীকে আগে দেখতাম। তাহলে এমন টা হতো না। তুই আমাকে মাফ করে দেয়। 


প্রেমা/: আমার কাছে মাফ না চেয়ে, রাসেল এর কাছে ক্ষমা চা, ও যদি তোকে ক্ষমা করে, তাহলে আমিও তোকে মাফ করে দিবো। 


মেয়েটা/: আপনি আমাকে ক্ষমা করে দেন। আমি আপনাকে চিনতে পারি নাই। 


আমি): আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিছি। ভবিষ্যতে এমন কাজ, আর কারো সাথে করবেন না। তা না হলে তোমাকে পস্তাতে হবে। কথা মনে রাখিস। 


এ বলে আমি নিজের কেবিনে চলে আসলাম। তার পর বিকালে অফিস ছুটির পর গাড়ি নিয়ে প্রেমার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। 


কিছুক্ষণ পর প্রেমা অফিস থেকে বেরিয়ে আসলো। প্রেমা এসে আমার সাথে সামনের সিটে বসলো। তখন প্রেমা বললো।


প্রেমা/: কি ব্যাপার, তুমি আমাকে নিয়ে আসলে না কেনো। 


আমি/: আমি মনে করছি, ওই মেয়েটা তোমার কেবিনে। তাই আর যাইনি। আচ্ছা মেয়েটা কে।


প্রেমা): ও হচ্ছে নদী, আমার সাথে হাই স্কুল লাইফ পর্যন্ত পড়ছে। আমরা দুজন বান্ধবী। SSC পাস করার পর, তার আব্বু ওকে বাহিরের রাষ্টে পাঠিয়ে দেয়। তার পর পড়ালেখা শেষ করে দেশে এসে , তাদের নিজেদের অফিস দেখাশোনা করে। 


আমি/: ওহ, তাহলে ও আমাকে দেখে নাই। তোমার সাথে যোগাযোগ ছিলো না।


প্রেমা /: যোগাযোগ থাকলে কি, আজকের এই ঘটনা ঘটতো। 


আমি): তাও ঠিক বলছো। 


তার পর আমি আর প্রেমা কথা বলতে বলতে বাসায় চলে আসলাম। আপনাদের একটা কথা বলে রাখি, প্রেমা বাসায় আসলে , আব্বু আম্মুর সেবা যত্ম করা শুরু করে। 


বাসায় প্রেমা আমার সাথে তেমন শয়তানি করে না। অফিসে আমার অবস্থা খারাপ করে ফেলে। তার এসব পাগলামি আমার অনেক ভালো লাগে। 


- স্মৃতিশক্তি টা হারিয়ে গেলে ভালো হতো।

 - পুরনো সব স্মৃতি ভুলে যেতে পারতাম.।


- চাইলেই তো প্রতিশোধ নিতে পারতাম।

 - কিন্তু তার মুখের হাসিটা আমার কাছে ভীষন দামী.।

*

*

*

*

* চলবে

*

*

*

*

* তো কেমন হয়েছে জানাবেন। সাড়া তেমন পাচ্ছি না। তাই ভাবছি তাড়াতাড়ি শেষ করে দিবো। তো সবাই লাইক এবং কমেন্ট দিয়ে পাশেই থাকবেন। 

*

*

*

* ধন্যবাদ সবাইকে পরবর্তি পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন 🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿 রোমান্টিক গল্প লেখক রাসেল চৌধুরী 🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post