গল্পঃ #সিনিয়র_আপু_যখন বউ। লেখক: #আবির_মাহমুদ শান্ত। পর্ব - ০৪ -️ ️[Love♥️Story]


 গল্পঃ #সিনিয়র_আপু_যখন বউ।

লেখক: #আবির_মাহমুদ শান্ত।

পর্ব - ০৪ -️ ️[Love♥️Story]


--আরেকদিন যদি এই আবাল মার্কা কথা বলেছিস তাহলে তোর খবর করে দিবো বলদ কোথা কার ৷ (রিমঝিম আপু)


তখন রিমঝিম আপুর বান্ধবি কোথা থেকে এসে জেনো পাশে বসলো ৷৷ 

তখন রিমঝিম আপু যা করলো,

রিমঝিম আপু রেগে আগুন হয়ে গেলো ৷

আমার হাত ধরে নিজের পাশে বসালো ৷


--আয়েশা তুই এখানে ! (রিমঝিম আপু)


--কেনো আসা যাবে না নাকি ? (আয়েশা)


--আমি কি সেটা বলছি নাকি। (রিমঝিম আপু)


--আসলে একা একা ভালো লাগছে না তাই তোদের সাথে গল্প করতে চলে এলাম ৷ (আয়েশা)


--ও খুব ভালো করেছিস (রাগে কটমট করে আপু)


--ছেলেটা কে রে ? (আয়েশা)


--দারা পরিচয় করিয়ে দেই ৷ আবির এ হচ্ছে তোমার বড় আপু আয়েশা । আজ থেকে ওকে বড় বোনের মতো সম্মান দিবি ঠিক আছে ।। আর আয়েশা এ হচ্ছে আবির ।। আজ থেকে ওকে নিজের ভাইয়ের মতো দেখবি (রিমঝিম আপু)


--কি বলছিস এসব? (আয়েশা আপু)


--ঠিকি তো বললাম!! (রিমঝিম আপু)


আমি শুধু ওদের কথা শুনছি ৷ তারপর আয়েশা রিমঝিম আপুকে সাউডে নিয়ে গেলো ৷ দুজনে কি যে কথা বলছে কিন্তু দূর থেকে যা বুঝলাম খুব ঝগড়া করছে।।


এক পর্যায়ে রিমঝিম আপু কি জেনো বললো আর আয়েশা আপু ওখান থেকে চলে গেলো রিমঝিম তখন আমার কাছে আসলো !!


--এত্তক্ষন লাগে আসতে কি কথা বললা? (আমি)


চুপচাপ পাশে বসে পরলো ৷।


--কি হলো কিছু বলছো না যে? (আমি)


--শুন কাল থেকে তুই কলেজে আসবি না ! (রিমঝিম আপু)


--আসবো না কেন ? (আমি)


--তাহলে আয়েশা তোর সাথে কথা বলতে পারবে না (রিমঝিম আপু)


--কিন্তু কথা বললে কি সমস্যা ? (আমি)


--সমস্যা আছে ওর সাথে কথা বলার দরকার নেই ৷(রিমঝিম আপু)


--আমি কথা না বললেই তো হলো তাতে কলেজ না আসার কি হলো? (আমি)


--সেটাও কথা, তুই আয়েশার সাথে কথা বলবি না ৷ এমন কি কোনো মেয়ের সাথে কথা বলবি না ঠিক আছে আর যদি দেখি তাহলে তোর একদিন কি আমার এক দিন ৷৷ (রিমঝিম আপু)


কি বলবো ভেবে পাচ্ছি না। রিমঝিম আপুর এমন আচরন আমায় বেশ অবাক করেছে ৷


--কি হলো কি, কথা বল । মনে থাকবে তো ? (রিমঝিম আপু)


--হুম থাকবে। (আমি)


--এই তো ভালো ছেলে। এখন ক্লাসে যা! (রিমঝিম আপু)


রিমঝিম আপু নিজের ক্লাসে গেলো আমি আমার ক্লাসে চলে গেলাম ৷৷ এভাবেই বেশ কয়েকদিন পার হয়ে গেলো ৷ রিমঝিম আপু আমার জীবনটাকে নিজের মতো চালাতে শুরু করলো ৷ যেমন, কোন আপন জন করে ৷ এসব করার অধিকার আমি রিমঝিম আপুকে অনেক আগেই নিজের মন থেকে দিয়ে দিছি । কারন আমি মনে মনে রিমঝিম আপুকে অনেকটা ভালোবেসে ফেলেছি৷ 


নিজের এই মনটাকে অনেকবার বোঝাতে চেষ্টা করেছি । তার সাথে আমার যায় না । কিন্তু মনটা মানেনি ছুটে গেছে তার কাছে ৷আমি জানি আমি যেদিন রিমঝিম আপুকে আমার ভালোবাসার কথা বলবো সেদিন হয়তো সবশেষ হয়ে যাবে আর আমি সেটা চাই না তাই আমি তাকে নিরবে ভালোবেসে যাব ৷ কখনো তার কাছে নিজের ভালোবাসার দাবি নিয়ে যাব না ৷ হয়তো শেষে আমার ভালোবাসাটা এক কোনে পরে রয়ে যাবে ৷ কথাগুলো ভাবতে ভাবতে মনটা খারাপ হয়ে গেলো ।


--কি রে মন খারাপ করে এভাবে বসে আছিস কেনো ? (রিমঝিম আপু)


পিছন থেকে হটাৎ রিমঝিম আপু এসে বলে।


--কই না তো । (আমি)


--মিথ্যা বলবি না । (রিমঝিম আপু)


--তেমন কিছু না আপু । (আমি)


--আচ্ছা বাদ দে । আয় তোর সাথে একজনকে পরিচয় করিয়ে দেই ৷ (রিমঝিম আপু)


আমি রিমঝিম আপুর সাথে গেলাম ৷রিমঝিম আপু কাকে জেনো ফোন দিয়ে ডাকলো ৷ 

একটু পর একটা ছেলে বাইক নিয়ে আসলো ৷


-- আবির এ হলো রনি । আমার কাজিন আর রনি এ হলো আবির৷ (রিমঝিম আপু)


--হায় কেমন আছেন ৷ (আমি)


--হ্যালো । তুমি তাহলে আবির? (রনি)


-- হুম । আপনি আমাকে চিনেন ? (আমি)


--না । কিন্তু রিমঝিমের মুখে তোমার কথা অনেক শুনেছি । এই বয়সে তুমি একাই চলাফেরা করো এটা অনেক ভালো ব্যাপার সবাই পারে না ৷ (রনি)


--আমার আব্বু একটা কথা বলতেন পাশে যখন কেউ থাকবে না তখন নিজে উঠে দারাতে হয় । উঠে দারানোর সময় কাউকে পাশে পাবি না । তাই নিজে নিযে চলতে শিক্ষতে হবে আর আমি একাই চলতে শিক্ষে গেছি ৷ সামনের দিন গুলোতেও একাই হয়তো থাকতে শিক্ষে যাব ৷৷ (আমি)


কথাটা বলার পর রিমঝিম আপু আমার দিকে তাকালো ৷ তারপর তিনজনে বসে অনেক কথা বললাম ৷ রিমঝিম আপু রনির বাইকে করে বাসায় চলে গেলো আর আমি আমার বাসায় চলে আসলাম ৷৷ রনি নাকী এখন থেকে আমাদের কলেজেই পরবে ৷


পরেরদিন.....!!


ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে কলেজের দিকে বেরিয়ে পরলাম ৷

কলেজে ঢুকার আগে চায়ের দোকানে গেলাম এক কাপ চা অর্ডার দিলাম চা আসতে আসতে একটা সিগারেট কিনে ধরালাম ৷

এর মধ্যে রিমঝিম আপুর ফোন ৷


--হ্যালো (আমি)


--কই তুই ৷ (রিমঝিম আপু)


--এইতো যাচ্ছি ৷ (আমি)


--তারাতাড়ি আয় ৷ (রিমঝিম আপু)


চা আর সিগারেট খেয়ে কলেজে গেলাম ৷

রিমঝিম আপু মাঠের এক কোনে বসে আছে ৷আমি রিমঝিম আপুর থেকে একটু দূরে গিয়ে বসলাম ৷ রিমঝিম আপু আমার কাছে চেপে আসলো ৷ আমি চুপচাপ আছি ৷৷


--তোকে কতোবার বলেছি সিগারেট খাস না (রিমঝিম আপু)


--তুমি হয়তো এক দিন চলে যাবে । কিন্তু সিগারেট হয়তো আমার পাশে সুখ দুঃখেও থেকে যাবে ৷ 


আমার কথাটা শুনে কিচ্ছুক্ষন চুপচাপ আমার দিকে তাকিয়ে রইলো ৷


--তুই কি কিছুই বুঝিস না? (রিমঝিম আপু)


--কেন কি আবার বুঝলাম না? (আমি)


--কিছু না।। (রিমঝিম আপু)


রিমঝিম আপু মন খারাপ করে বসে রইলো ৷

আমি চুপচাপ তার মায়াবী মুখটা দেখতে লাগলাম ৷ তারপর আপু উঠে কিছু না বলে চলে যেতে লাগলো ৷ আমি পিছন থেকে ডাক দিলাম কিন্তু শুনলো না ৷ নিজের গাড়িতে গিয়ে বসলো ৷ 

আমি গাড়ির সাইডে দাড়িয়ে রইলাম ৷ কিচ্ছুক্ষন পরে গাড়ির গ্লাস খুললো ৷ চোখ দুটো লাল হয়ে আছে ৷


--উঠ বাসায় নামিয়ে দেই ৷ (রিমঝিম আপু)


আমি উঠে বসলাম ৷রিমঝিম আপু আমাকে নামিয়ে দিয়ে চলে গেলো ৷ অন্যদিন আসার সময় হাজারটা কথা বলতো কিন্তু আজ একটাও কথা বললো না ৷৷ এরপর কাজের চাপে এক সপ্তাহ কলেজে যাওয়া হলো না ৷


এক সপ্তাহ পর....!!


কলেজে গিয়ে দেখলাম রিমঝিম আপু আর রনি বসে আছে ৷ দুজনে বসে আছে আর হেসে হেসে কথা বলছে ৷ আজ রিমঝিম আপু কলেজে আসলো তবুও একবার ফোন দিলো না ৷ খুব অবাক হলাম ৷


এই কয়দিন অনেকবার দেখা করতে বলেছে কিন্তু এই এক সপ্তাহে প্রায় সারাদিন ল্যাপটপ নিয়ে বসে থাকতে হয়েছে । অনেক বড় একটা ক্লাইন্ট পাওয়ায় কাজ অনেক বেশি ছিলো ৷

আমি ভাবলাম হয়তো ভাবছে আমি কলেজে আসবো না । তবুও একটা ফোন তো দিতে পারতো ৷ আমি ওদের না দেখার ভান করে ক্লাসে যেতে লাগলাম ৷ তখন পিছন থেকে রিমঝিম আপু ডাক দিলো ৷৷ আমি ওদের কাছে গেলাম ৷


--কেমন আছিস ? (রিমঝিম আপু)


--ভালো আপু তুমি (আমি)


--হুম ভালো বস এখানে ৷ (রিমঝিম আপু)


ওদের থেকে একটু দুরত্ব বজায় রেখে বসলাম ৷ ওরা দূজনে কথা বলছে ৷ আমি চুপচাপ ফোন টিপছি ৷৷


এর মাঝে রিমঝিম আপু আমার সাথে একটা কথাও বলে নি ৷ ব্যাপারটা খুব খারাপ লাগলো ৷

অন্যদিন কলেজে না আসলে ডেকে এনে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলতো আর আজ পাশে বসে আছি তাও মুখ ফুটে একটা কথা বলছে না ৷ এক সপ্তাহে এতটা বদল ৷৷


--তোমরা একটু কথা বলো আমি স্যারের সাথে কথা বলে আসি ৷ (রিমঝিম আপু)


রিমঝিম আপু উঠে চলে গেলো ৷


--জানো আবির রিমঝিমের মতো মেয়ে পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার ৷ (রনি)


--মানে বুঝলাম না? (আমি)


--তুমি জানো না রিমঝিম আর আমার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে ৷ আমাদের পরিক্ষা শেষ হলে বিয়ে হবে। (রনি)


রনির কথাটা শুনে বুকের ভেতরটা কেমন যেনো করতে লাগলো ৷ চোখ মুখ অন্ধকার হয়ে গেলো জানতাম এমন কিছু হবে ৷ কিন্তু এত তারাতাড়ি হবে তা বুঝতে পারি নি ৷ খুব খারাপ লাগছিলো ৷কি করবো বুঝতে পারছি না ৷এক নিমেষে মনে হয় সব শেষ হয়ে গেলো ৷ মনে হয় রনির কথা গুলো কোনো স্বপ্ন ৷৷


--কি হলো আবির তুমি ঠিক আছ তো এমন অস্থির লাগছে কেনো তোমাকে? ৷ (রনি)


--কই আমি তো ঠিক আছি ৷ (আমি)


-না মনে হচ্ছে খুব অস্তির হয়ে আছো ৷ (রনি)


--আসলে বাসায় যেতে হবে তারাতাড়ি তাই একটু তারা হুরোই আছি ৷ (আমি)


--ও আচ্ছা (রনি)


--আচ্ছা আমি তাহলে যাই। রিমঝিম আপু আসলে বলে দিয়েন আমি চলে গেছি ৷ (আমি)


--এখুনি চলে যাবে । রিমঝিম আসুক? (রনি)


--না একটা বড় ক্লাইন্ট নক দেওয়ার কথা আছে ৷ আমাকে যেতেই হবে ৷ (আমি)


--আচ্ছা তাহলে যাও ৷ (রনি)


আমি ওখান থেকে বাসায় চলে আসলাম ৷ বাসায় এসে আব্বু আম্মুর ছবিটা হাতে নিয়ে বসে পরলাম ৷ খুব মিস করছি তাদেরকে আজ 

কেনো তোমরা আমাকে এত তারাতাড়ি ছেরে চলে গেলে ৷ আমার মতো অভাগা হয়তো খুব কমি আছে ৷৷


ভালোবাসার মানুষ গুলো সব একে একে ছেরে চলে যায় ৷ প্রথমে তোমরা চলে গেলে ৷ এখন রিমঝিম আপু ৷ আম্মু যানো...

আমি না রিমঝিম আপুকে খুব ভালোবাসি ৷

রিমঝিম আপুর সাথে থাকলে তোমার কথা খুব মনে পরে ৷ রিমঝিম আপু একদম তোমার মতো শাসন করে ৷ তুমি যেমন আমাকে খাইয়ে দিতে রিমঝিম আপুও আমাকে মাঝে মাঝে খাইয়ে দিতো ৷ কোনো ভূল করলে বকা দিতো ৷

তুমি যেমন আমাকে একা করে ছেরে গেলে ৷ 

সেও চলে যাবে একদিন কিন্তু আম্মু জানো কি আমি না ওকে ভূলতে পারবো না ৷


তোমাদের যেমন আমি কোনোদিন ভূলতে পারবো না তেমনি তাকেও আমি কোনোদিন ভূলতে পারব না ৷ আমি কি করবো তোমরাই বলো খুব কষ্ট হচ্ছে আমার ৷ বুকের ভেতরটা পুরে ছারকার হয়ে যাচ্ছে ৷ শুধু তার কথাই মনে পরছে......!!


আম্মু আব্বুর ছবি জড়িয়ে ধরে কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে পরলাম ৷ মাঝ রাতে ঘুম ভাংলো ৷

ঘুম ভাংগার পরে মনে হলো ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো স্বপ্ন ছিল কিন্তু পরে বুঝতে পারলাম কিছুই মিথ্যে না শুধু আজ আমার ভালোবাসাটা মিথ্যে হয়ে গেলো ৷৷ চাপা পরে গেলো কষ্টের ভাজে ঘুম থেকে উঠে যখন বুঝতে পারেন যে প্রিয় মানুষটা আর আপনার জীবনের অংশ হবে না তখন যন্ত্রণার সিমানা থাকে না ৷ তখন ইচ্ছে করে হয়তো আর ঘুম হয় না !!


সিগারেটের প্যাকেট টা নিয়ে জানালার পাশে গিয়ে বসলাম ৷ আজ চাদের আলোটাও কেমন যেন ফ্যাকাশে মনে হচ্ছে ৷ যে করেই হোক এই কষ্ট থেকে আমাকে সামলে উঠতে হবে । জীবনে অনেক কষ্ট পেয়েছি আর কষ্ট নিতে পারবো না ৷

সিগারেট ধরিয়ে বসে রইলাম ৷ এক সময় লক্ষ্য করলাম সিগারেট এর ফিলটার টা ভিজে গেছে ৷ 

তারপর চোখে হাত দিয়ে দেখি চোখ দিয়ে পানি পরছে ৷ হাতটা কাপছে , জোরে জোরে কান্না কর‍তে লাগলাম ৷


আম্মু বলতো কান্না করলে বুকটা হালকা লাগে ৷ আজ খুব একা লাগছে ৷

সারা রাত কান্না করলাম ৷ কিছুটা হলেও বুঝতে পারলাম যে দুনিয়ায় কেউ কারো নয় । একা থাকাটাই ভালো যত কারো প্রতি মায়া বারাবেন ততো কষ্ট পেতে হবে (রিয়েল লাইফেও আমি এটাই ভাবি )


প্রায় এক সপ্তাহ লাগলো ৷ রিমঝিম আপুর মায়াটা কিছুটা কাটিয়ে উটতে ৷ তারপরে ও তার সামনে গেলে নিজেকে আটকে রাখতে পারব কি না জানিনা ৷ তাই আর কলেজে যাব না ঠিক করলাম ৷ এভাবে দশ দিন কেটে গেলো ৷


ফোন টাও অফ করে রেখে দিছি যাতে কেউ ফোন দিতে না পারে ৷ এখনো রাতে ঘুমাতে পারি না ৷ তাই ঘুমের ওষুধ কিনে রাখছি ৷ ঘুমের ওষুধ খেয়ে রাতটা পার হয়ে যায় আর দিনের বেলা সিগারেট তো আছেই ৷ এই দশ দিনে সিগারেট খাওয়াটা একটু বেরে গেছে ৷ সকাল ঘুম থেকে উঠে একটা সিগারেট ধরিয়ে শেটা শেষ করে ব্রাশ করে বাইরে বের হলাম ৷ নাস্তা করে বাসায় গেলাম ৷ গিয়ে কাজ করতে লাগলাম ৷


এই দশ দিনে কাজ একদম করা হয়নি ৷ নিজের এক বছর চলার মতো যথেষ্ট টাকা আছে আর আব্বু আম্মু চলে যাওয়ার আগে যা রেখে গেছে তাতে আমার সারাজীবন চলে যাবে । তারপরেও ফ্রিল্যান্সিং করি ৷ সিগারেট খেতে খেতে কাজ করতে লাগলাম ৷


একটু পর দরজার বেল কে জেনো বাজালো

দরজা খুলে দিতেই ৷ সামনে দেখি রিমঝিম আপু দারিয়ে ৷ হাত উঠালো মারার জন্য তারপর কি যেন ভেবে হাতটা নামিয়ে নিলো ৷ চোখের নিচে কালো দাগ পরে গেছে ৷


--কেমন আছিস ? (শুকনো কন্ঠে আপু)


--ভালো আপু তুমি? (আমি)


--ভালো ৷ কেমন শুকিয়ে গেছিস খাওয়া দাওয়া করিস না নাকি ? (রিমঝিম আপু)


--আসলে কাজের চাপে খাওয়ার কথা মনেই থাকে না!! (আমি)


--ও আমি তো ভাবছিলাম...!! (রিমঝিম আপু)


--কি ভাবছিলা? (আমি)


--কিছু না । ভিতরে আসতে বলবি না ৷ (রিমঝিম আপু)


--হ্যা,, আসো ৷ (আমি)


রিমঝিম আপু ভিতরে এসে চারদিকে তাকালো ৷


--এটা বাসা নাকি সিগারেটের দোকান ৷ যেখানে সেখানে সিগারেটের প্যাকেট আর এত গন্ধ কেন? (রিমঝিম আপু)


--আসলে অনেকদিন ধরে পরিষ্কার করা হয় নি তো ৷(আমি)


--ওহহ আজকেই এগুলো পরিষ্কার করবো চল ৷ (রিমঝিম আপু)


--কি বলছ আপু ৷ তোমার হবু বর দেখলে আমাকে মেরে ফেলবে ৷ (শুকনো হাসি দিয়ে আমি) 


--হবু বর মানে ? (রিমঝিম আপু)


--রনি ভাই আমাকে সব বলেছেন যে তোমাদের বিয়ে ঠিক হয়ে আছে ৷ (আমি)


--তুই কথাটা শুনে খুব খুশি হয়েছিস না? (রিমঝিম আপু)


--অবশ্যই ৷ কাজের চাপে তোমাকে শুভেচ্ছা জানানোর কথা মনেই নেই ৷ এখন বলছি অনেক অনেক শুভেচ্ছা । রনি ভাইয়ের মতো একজন মানুষ জীবন সাথি হিসেবে পাওয়া খুব ভাগ্যের ব্যাপার ৷ (আমি)


--হুম । চল আমার সাথে আজ কলেজে যাবি! (রিমঝিম আপু)


--আমি কলেজে গিয়ে কি করবো কলেজে গিয়ে আমার কেউ নেই কার সাথে আড্ডা দিবো বলো! (আমি)


--কেউ নেই ৷ (রিমঝিম আপু)


--আমার জানা মতে তো কেউ নেই ৷ তুমি যাও রনি ভাই হয়তো তোমার জন্য অপেক্ষা করে আছে কলেজে ৷ দেরি করে গেলে হয়তো অভিমান করতে পারে ।। (আমি)


আমার কথাটা শুনে রিমঝিম আপুর মুখটা শুকিয়ে গেলো ৷ কিছু না বলেই চলে গেলো ৷

আমি একটা সিগারেট ধরিয়ে ওখানে বসে পরলাম ৷ মাথাটা খুব ব্যাথা করতিছে ৷


সন্ধ্যার দিকে ব্রিজে গিয়ে বসলাম ৷ ব্রিজের রেলিং এ বসে আছি ৷ তখন সামনের দিক থেকে কেউ একজন ডাক দিলো ৷গাড়ি চলা চল করায় ভালো ভাবে দেখতে পারছিলাম না ৷ 

গাড়িগুলো সরে যাওয়ার পর দেখলাম ৷

একটা মেয়ে আমার দিকে আসছে ৷৷


--কেমন আছো ? (মেয়েটি)


--ভালো কিন্তু আপনাকে চিনলাম না?? (আমি)


--কিন্তু আমি তোমাকে চিনি ৷ (মেয়েটি)


--কেমন করে? (আমি)


--তুমি আমার ক্লাসমেট তোমাকে চিনবো না ৷৷ (মেয়েটি)


--ওহহ কিন্তু আমি আপনাকে চিনলাম না কেন ৷ (আমি)


--আমি দিশা!! (হাত বারিয়ে)


--ওহহ (আমি)


--কলেজে আসো না কেন আর ? (দিশা)


--ভালো লাগে না তাই ৷ (আমি)


--কাল থেকে আসবে মনে থাকে যেন৷ (দিশা)


--দেখি ৷ (আমি)


--দেখি না আসতেই হবে । তোমার নাম্বারটা দেও! (দিশা)


--কেন ? (আমি)


--দিতে বলছি দেও!! (দিশা)


ফোন বের করার সাথে সাথে রিমঝিম আপুর ফোন !!


(চলবে............!!)


প্রিয় পাঠক পাঠিকা আশা করছি গল্পটি আপনাদের অনেক ভালো লাগছে। তবে এই পর্বটি কেমন হয়েছে আপনার মূল্যবান মতামত জানিয়ে আমাকে উৎসাহিত করবেন।। ধন্যবাদ।।


#পরবর্তী_পর্বের_জন্য_অপেক্ষা_করুন

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post