সিনিয়র চাচাতো বোন যখন বউ। পর্ব/:::;;;;;:: ( ৭ ) :::::::::: সাত এবং শেষ। *

 

 : সিনিয়র চাচাতো বোন যখন বউ।

*

*

* লেখক/::: রাসেল চৌধুরী 🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷

*

*

* পর্ব/:::;;;;;:: ( ৭ ) :::::::::: সাত এবং শেষ।

*

*

*

"

*

* কলিং বেল চাপ দেওয়ার পর, একজন এসে দরজা খুলে দিলো। তাকে দেখে অবাক হয়ে গেলাম। ওনি এখানে কখন আসলো‌ সে আর কেউ নয়, নীলা আপু। তবে আপুর কোলে একটা বাচ্চা দেখি। নীলা আপু আমাকে দেখে বলল। 


নীলা/: কিরে কেমন আছিস। বাহিরে গিয়ে তো, আমাদের ভুলে গেছিস। একটা বার ফোন দিয়ে খুঁজ খবর নেস নাই। 


আমি/: আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো আছি। তুমি কেমন আছো আপু। আসলে লেখাপড়ার চাপে কারো সাথে তেমন যোগাযোগ করতে পারি নাই। আর আমি বাহিরে কেনো গেছি, সেটা হয়তো তুমি জানো। 


নীলা/: আমি ও ভালো আছি। তাই বলে একটা ফোন দিয়ে যোগাযোগ করবি না। তো এখন কি করবি, লেখাপড়া আরো করবি। 


আমি/: না আপু, নিজেদের অফিস দেখাশোনা করবো। আচ্ছা আপু, তোমার কোলে এই বাচ্চাটা কে। 


নীলা/: ও আমার মেয়ে মাইশা । তুই বাহিরে যাওয়ার এক বছর পর আমার বিয়ে হয়। আর মাইশার বয়স মাত্র এক বছর। ওর আব্বু বাহিরে থাকে। 


আমি/: ওহ। তো আমাকে কি বাহিরে দাড় করিয়ে রাখবে। ভিতরে যেতে বলবে না। 


নীলা/: সরি রে, তোকে অনেক বছর পর দেখছি তো। তাই কথা বলা শুরু করছি। আচ্ছা ভিতরে আয়। 


আমি আর নীলা আপু ভিতরে ঢুকলাম। ভিতরে ঢুকে দেখি বড় আম্মু আর মারিয়া আপু সোফায় বসে কথা বলছে। বড় আম্মু আমাকে দেখে বললো। 


বড় আম্মু/: কিরে বাবা এসেছিস। আয় আমাদের সাথে বসে গল্প কর। আমি তোর জন্য কপি নিয়ে আসছি। রান্না শেষ হতে আরো কিছুক্ষণ সময় লাগবে। 


এ কথা বলে বড় আম্মু ভিতরে চলে গেল। আমি সোফায় গিয়ে বসলাম। নীলা আপু ও আমাদের সাথে বসলো। তখন নীলা আপু বললো। 


নীলা/: তো রাসেল। এখন কি বিয়ে সাদি করবি। পছন্দের কোনো মেয়ে আছে। যদি না থাকে, তাহলে তোর জন্য মেয়ে দেখি। 


নীলা আপুর কথা শুনে মারিয়া আপু চোখ গরম করে নীলা আপুর দিকে তাকালো। আমি ও কম কিসের। আমি বললাম। 


আমি): তোমাকে আমার জন্য মেয়ে খুঁজতে হবে না। আমার পছন্দের একটা মেয়ে আছে। বিয়ে করলে তাকেই করবো। 


আমার কথা শুনে তো, মারিয়া আপুর মুখে হাসি ফুটেছে। ওনি হয়তো ভাবছে তার কথা বলছি। তখন নীলা আপু বললো। 


নীলা/: তা মেয়েটা কে। কোথায় থাকে। কি করে। তার বাসা কোথায়। 


আমি/: আরে আস্তে। এতো প্রশ্ন একসাথে করলে , আগে কোনটার উত্তর দিবো। 


নীলা/; ঠিক আছে। তাহলে একটা একটা করে উত্তর দেয়। 


আমি/: মেয়েটার নাম প্রেমা। আমি আর প্রেমা বাহিরে একসাথে পড়াশুনা করেছি। ও যদি না থাকতো, তাহলে আমি কখনো বাহিরে পড়তে পারতাম না। ও সবসময় আমার কেয়ার করছে। ওর বাসা ঢাকায়। ওর একটা কাজ আছে। তাই সে কিছুদিন পর বাংলাদেশে আসবে। 


আমার কথা শুনে মারিয়া আপুর মনটা খারাপ হয়ে গেল। আপু হয়তো ভাবছে ওনার কথা বলবো। আপু আর এক মিনিট না বসে ভিতরে চলে গেল। তখন নীলা আপু বললো। 


নীলা/: রাসেল, তুই আমাকে সত্যি করে বল তো। তুই কি সত্যিই প্রেমা কে ভালবাসিস। নাকি মারিয়াকে কষ্ট দেওয়ার জন্য বলছিস। 


আমি/: তুমি ঠিকই ধরেছো আপু। প্রেমা নামে আমি কাউকে চিনি না। শুধু মারিয়া আপুকে কষ্ট দেওয়ার জন্য বলেছি। তুমি তো জানো, আপু আমাকে ভালোবাসার কথা বলাতে, কি বলেছে। আর ওনার জন্য আমি কতো কষ্ট পেয়েছি। একটা দিন ও রাতে ঠিক ভাবে ঘুমাতে পারি নাই। খাওয়া দাওয়া ঠিক মতো করতে পারি নাই, ।


নীলা/: আমি তো সব জানি। তুই জানিস, আমি মারিয়াদের বাসায় কেনো। কারন মারিয়া আমাকে ফোন দিয়ে আসতে বললো। আর তুই এসেছিস, সেটাও বললো। তুই মারিয়ার সাথে কি কথা বলছিস, সবকিছু আমাকে খুলে বলছে।


আমি/: আমি কি কোনো খারাপ কথা বলছি। আমি যা সত্যি, তাই বললাম। ওনাকে আমি এখন আর ভালোবাসি না। আমি ওনার জন্য অনেক কষ্ট পেয়েছি। নিজের মা বাবাকে ছেড়ে বাহিরে গেছি। 


নীলা/: তুই একটা বার মারিয়ার চেহারার দিকে লক্ষ্য করছিস। আগের সেই মারিয়া কি এখনো আছে। মেয়েটা তার ভুল বুঝতে পেরেছে। তাকে তুই ক্ষমা করে দেয়। মানুষ বলতে ভুল আছে। আর তখন তো মারিয়ার তোর প্রতি ভালোবাসা ছিলো না। জোর করে তো আর কারো মন পাওয়া যায় না। তুই চলে যাবার পর, মারিয়া তোর অভাব বুঝতে পেরেছে। আমি চাই তুই মারিয়াকে ভালোবেসে আপন করে নেয়। 


আমি/: আপু যতোই বলি , আমি মারিয়া আপুকে এখন ভালোবাসি না। কিন্তু ঠিকই ওনার জন্য এখনো আমার মন কাঁদে। আবার কষ্টের কথা মনে পড়লে , রাগ উঠে যায়। 


নীলা/: তুই যেমন মারিয়ার জন্য কষ্ট পেয়েছিস। ঠিক তেমনি মারিয়াও তোর জন্য কষ্ট পেয়েছে। তুই ওকে মাফ করে দেয়। 


আমি/: না আপু, আমি ওনাকে এতো সহজে মাফ করবো না। ওনাকে আরো কষ্ট পেতে হবে। যদি আকাশ এর ওই ঘটনা , না ঘটতো, তাহলে তো এতো দিনে ওনি বিয়ে করে শশুর বাড়িতে থাকতো। তখন তো আমার কথা ভুলেও মনে করতো না। এখন বিয়ে না হওয়া, আমাকে মনে পড়ছে। 


নীলা/: তাও তোর কথা ঠিক আছে। কি আর করার, কপালে যা লিখা ছিলো, তাই হয়েছে। তবে বেশি কষ্ট দিস না। এমনেতে মারিয়া আগের থেকে অনেক শুকিয়ে গেছে। আগের মতো এমনটা করিস না। যেটাতে মারিয়া , দুনিয়া ছেড়ে চলে যায়। 


আমি/: না আপু, আমি ওনার সাথে এমন কিছুই করবো। ওনাকে আমি আগে বিয়ে করবো। বিয়ের পর একটু জালাবো, তার পর আপন করে নিবো। 


কথা বলতে বলতে বড় আম্মু এসে খাবার খাওয়ার জন্য ঠেকে গেছে। এর আগে আমাদের দুজনকে বড় আম্মু কপি দিয়ে গেছে। 


আমি ওয়াস রুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে খাবার টেবিলের সামনে আসলাম। টেবিলের ওপর তাকিয়ে তো, পুরো অবাক হয়ে গেলাম। সবগুলো আমার প্রিয় খাবার রান্না করছে। যেই না আমি প্লেট নিতে যাবো‌ । ঠিক তখনই বড় আম্মু বললো। 


বড় আম্মু/: ওই , রাসেল, তুই প্লেট নিচ্ছিস কেনো। তোকে বলছি না, আজকে রাতে আমি তোকে। নিজ হাতে খাইয়ে দিবো। 


আমি/: সরি বড় আম্মু। আমার মনে ছিলোনা। খাবার দেখে সবকিছু ভুলে গেছি। এখন আমাকে তাড়াতাড়ি খাইয়ে দাও। আমার তো আর সইছে না। 


তার পর বড় আম্মু প্লেটে খাবার নিয়ে আমাকে খাইয়ে দিতে লাগল। কিছুক্ষণ পর দেখি নীলা আপু আর মারিয়া আপু আসলো। মারিয়া আপু আমার পাশে একটা চেয়ার টেনে বসলো। 


আর নীলা আপু এটা দেখে মুচকি মুচকি হাসতে। আমি আর ওদের দিকে না তাকিয়ে বড় আম্মুর হাতে খাবার খেতে লাগলাম। 


খাওয়া দাওয়া শেষ করে সোফায় গিয়ে বসলাম। আজকে অনেক বছর পর বড় আম্মুর হাতে খাবার খেয়েছি। পেট টা পুরো পুল হয়ে গেছে। 


তার পর বড় আম্মু এবং নীলা আপুকে বলে , আমাদের বাসায় চলে আসলাম। নীলা আপু কালকে বাসায় চলে যাবে। আজকে বেশি রাত হবার কারণে জায় নাই। 


বাসায় এসে কলিং বেল চাপ দিলাম। কিছুক্ষণ পর আম্মু এসে দরজা খুলে দিলো। তখন আম্মু বললো। 


আম্মু/: কিরে এতোক্ষণ কোথায় ছিলি। তোর বড় আম্মুর সাথে দেখা করছিস। 


আমি/: বিকালে বড় আম্মুর সাথে দেখা করছি। আমার ওপর অনেক অভিমান করে ছিলো। কিন্তু বেশিক্ষণ অভিমান করে থাকতে পারলো না। বড় আম্মুর সাথে দেখা করে, রাফির সাথে দেখা করছি। রাতে বড় আম্মুর আমাকে নিজ হাতে খাইয়ে দিছে। এতোক্ষণ বড় আম্মুর বাসায় ছিলাম। 


আম্মু/: ঠিক আছে, এখন ভিতরে আয়। 


আমি/: আম্মু তোমাদের সাথে আমার কিছু কথা আছে। আব্বু কোথায় সেটা বলো। 


আম্মু/: তোর আব্বু তো রুমে আছে। তা কি কথা বলবি। 


আমি/: আগে আমার সাথে , তোমাদের রুমে চলো। তার পর সব খুলে বলছি। 


আম্মু আর কোনো কথা না বলে, দরজা লাগিয়ে আমার সাথে , তাদের রুমে আসলো। রুমে এসে দেখি আব্বু মোবাইলে কার সাথে যেনো কথা বলছে। আমাদের মা ছেলেকে একসাথে দেখে ফোন কেটে দিলো। তখন আব্বু বললো। 


আব্বু/: কি ব্যাপার হঠাৎ মা ছেলে একসাথে রুমে আসলে। কিছু বলবে নাকি। 


আম্মু/: আমি কিছু বলবো না। তোমার ছেলে নাকি , আমাদের কি বলবে। 


আব্বু/: তো রাসেল বাবা। আমাদের কি কথা বলবে শুনি। 


আমি আব্বু আম্মুর মাঝখানে বসে বলতে লাগলাম।


আমি/: তোমরা তো, আমার বাহিরে যাওয়ার সব কাহিনী জানতে পেরেছো। এখন বলছি কি, তোমরা বড় আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলে , আমার আর মারিয়া আপুর বিয়ের কথা বার্তা বলবে। তবে এটা যে আমি বলছি, তারা কেউ যেনো জানতে না পারে। 


আব্বু/: তোর কথা শুনে আমি অনেক খুশি হয়েছি। মেয়েটা তোর চিন্তায় কেমন যেনো হয়ে গেছে। আমি আর তোর আম্মু কালকে তোর বড় আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলে, তোদের বিয়ে ঠিক করবো। 


আমি/: ঠিক আছে। আর বিয়ে কিন্তু বড় করে অনুষ্ঠান করবে। তোমাদের একমাত্র ছেলে বলে কথা।


আম্মু/: এটা কি তোকে বলতে হবে। সব আত্মীয় স্বজনদের দাওয়াত দেওয়া হবে। তুই চিন্তা করিস না। 


আমি/: তাহলে এ কথা থাকলো। আমি আমার রুমে গেলাম। 


বলে আব্বু আম্মুর রুম থেকে বেরিয়ে না নিজের রুমে চলে আসলাম। রুমে এসে বিছানায় শুয়ে কিছুক্ষণ মোবাইল টিপে ঘুমিয়ে পড়লাম। 


দেখতে দেখতে আজ ১৫ দিন পরে আমাদের বিয়ে টা হয়ে গেল। বিয়েতে সব আত্মীয় স্বজন এসেছে। অনেক ধুমধাম করে বিয়েটা হয়ে গেলো। 


বড় আব্বু বিয়ের পাঁচ দিন আগে বাহির থেকে চলে এসেছে। বিয়েতে রাফি এবং রিয়া। নীলা আপু এবং তার পরিবার ও এসেছে। নীলা আপুর জামাই আসতে পারে নাই। ওনার নাকি কাজের অনেক ছাপ। 


তো যাই হোক। রাফি আর আমি ছাদের ওপরে বসে কথা বলছি। কিছুক্ষণ পর আম্মু ছাদে এসে বললো। 


আম্মু/: কিরে, তুই ছাদের ওপরে বসে আছিস কেন। আমার মেয়েটা সেই কখন থেকে রুমে একা একা বসে আছে। তাড়াতাড়ি রুমে যা। 


রাফি/: আন্টি আপনি যান, আমি রাসেল কে নিয়ে আসছি। 


আম্মু আর কোনো কথা না বলে নিচে চলে গেলো। তখন রাফি বললো। 


রাফি/: অনেক কথা হয়েছে। এবার চলেন বাসর ঘরে। আপনাকে তো বিড়াল টা মারতে হবে। 


আমি/: আমি এতো তাড়াতাড়ি বিড়াল মারবো না। কিছুদিন বিড়াল টাকে একটু কষ্ট দিবো। তার পর ওকে মারবো। 


রাফি/: তবে বেশি কষ্ট দিলে কিন্তু হারিয়ে যেতে পারে। তখন তুই কি করবি। 


আমি/: আমি তাকে হারিয়ে যেতে দিলে তো। আমি মারিয়াকে কখনো হারিয়ে যেতে দিবো না। 


রাফি/: ঠিক আছে। এখন চল নিচে যাই। আপু একা একা রুমে বসে আছে। 


ঠিক আছে চল। তার পর আমি আর রাফি ছাদ থেকে নিচে নেমে আসলাম। রুমের সামনে আসার পর নীলা আপু আটকালো। তখন নীলা আপু বললো। 


নীলা/: এতো সহজে তো ভিতরে যেতে দিবো না। আমাদের পাওনা দিয়ে, তার পর ভিতরে যাবে। 


আমি/: তাই নাকি আপু। তা রাফি , তুই বাসর ঘরে ঢুকার সময় কতো টাকা দিয়ে ঢুকছিস। 


রাফি/: আমার কথা বলিস না। পুরো দশ হাজার টাকা নিচে। আমার অনেক কষ্টের টাকা। কিন্তু পরে আমার সিনিয়র বউয়ের কাছ থেকে টাকা গুলো উদ্ধার করছি। তাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে। 


আমি/: ওহ তাই। তা আপু তোমাকে কতো টাকা দিতে হবে। আমি কিন্তু গরীব মানুষ। আমার কাছে বেশি টাকা নেই। 


নীলা/: ঠিক আছে, তুমি যেহেতু গরীব মানুষ। তাহলে তুমি ৫০ হাজার দিলে চলবে। বেশি কথা বললে আরো বেশি দিতে হবে। 


আমি/: আল্লাহ গো, তুমি দড়ি ফালাও আমি ওপরে উঠে যাই। এখানে তো আমাকে মারার কথা বলছে। আমি এতো টাকা দিতে পারবো না। আরো কিছু টাকা কমাও। তুমি গরীব ছেলেটা কে এভাবে মারতে পারো না। 


নীলা/: ঠিক আছে, দশ হাজার কম ৪০ হাজার টাকা দাও। এর থেকে নিচে নামতে পারবো না। তুমি জানো, এখন করোনার কারনে সব জিনিসের দাম অনেক। তাই কথা না বাড়িয়ে টাকা দাও। 


কি আর করার। পকেট থেকে ২০ হাজার টাকা বের করলাম। তার পর আপুকে বললাম। 


আমি/: নীলা আপু, আমি ভিতরে যাওয়ার পর টাকা গুলো গনবে। এর আগে গনলে, আমি কিন্তু টাকা দিবো না। দরকার হয় বাসর করবো না। 


নীলা আপু কি জানি চিন্তা করে বললো। ঠিক আছে। তার পর আমি নীলা আপুর হাতে টাকা গুলো দিয়ে ভিতরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলাম। তার পর দরজায় কান পেতে শুনতে লাগলাম, আপু কি বলে। 


নীলা আপু বাহির থেকে আমার চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করছে। আল্লাহ অনেক বড় বিপদ থেকে ৪০ হাজারের জায়গায় বিশ হাজার দিয়ে বেঁচে আসলাম। 


তো যাই হোক, আমি ভিতরে ঢুকে দেখি মারিয়া আপু বিছানার ওপর বসে আছে। আমি সামনে এগিয়ে যেতে লাগলাম। মনের ভিতরে কেমন ভয় কাজ করছে। তার পরেও বুকে সাহস নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে লাগলাম। 


বিছানার কাছে আসার পর মারিয়া আপু খাট থেকে নেমে আমার পা ধরে সালাম করতে আসলে, আমি সরে যাই। তখন মারিয়া বললো। 


মারিয়া/: কি ব্যাপার রাসেল। তুমি সরে গেলে কেনো। বাসর রাতে স্বামীর পা ধরে সালাম করা , এটা নিয়ম। 


আমি/: আমি তো আপনাকে স্ত্রী হিসেবে মানি না। একমাত্র বাবা মার কথার কারনে এই বিয়েতে রাজি হলাম। তা না হলে আমার প্রেমা কে বিয়ে করতাম। 


মারিয়া/: তাই নাকি মি: রাসেল। তুমি একটু সোজা হয়ে দাড়াও। তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে। 


এ বলে মারিয়া আপু যেটা বের করলো। সেটা দেখে তো আমি ভয় পেয়ে গেলাম। আরে আপনারা বুঝতে পারছেন না, মারিয়া আপু খাটের নিচ একটা বড় লাঠি বের করছে। তখন আমি আপুকে বললাম।


আমি/: আপনি লাঠি কোথায় পেলেন। আর এটা নিয়ে আমার সামনে আসলেন কেনো। 


মারিয়া/: কুত্তা , বিলাই, ছাগল গরু , হারামি পাঁচ বছর কষ্ট দিয়ে তোর মন ভরে নাই। নাকি আমি মরে গেলে তোর মন ভরবে। তুই আমার চেহারা দেখছিস। তোর জন্য কি হয়ে গেছি আমি। তুই কি মনে করছিস, আমি কিছুই জানি না, তোর আম্মু এবং নীলা আমাকে সব খুলে বলছে। 


আমি মনে মনে ওদের চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করলাম। সালার মেয়েরা পেটের ভিতর কথা রাখতে পারে না। সব কথা মুখ থেকে বের করে ফেলে। তখন মারিয়া আপু লাঠি ফেলে দিয়ে আবার কান্না করে বলতে লাগলো।


মারিয়া/: আমি তো বলছি, আমার ভুল হয়ে গেছে। তুই আমাকে ক্ষমা করে দেয়। আমি তখন তোর ভালোবাসা বুঝতে পারি নাই। তুই আমাকে আগে বলতি, তখন আমি ভেবে দেখতাম। কিন্তু আমি যখন অন্য একটা ছেলেকে ভালোবাসলাম। তখন তুই আমাকে ভালোবাসার কথা বললি। তাহলে তুই বল, নিজের ভালোবাসার মানুষ কে ছেড়ে, তোকে ভালবাসি কেমন করে। 


আমি/: তাহলে আমাকে পরে আমাকে ভালোবাসলেন কেনো। আপনি তো বলছেন, আপনার সামনে কখনো ভালোবাসার কথা নিয়ে, না আসতে। 


মারিয়া/: আমি কি জানতাম, আকাশ ছেলেটা এতো খারাপ। জানলে কখনো তাকে ভালোবাসতাম না। যখন আমার বিয়ে ভেঙ্গে যায়, তখন অনেক মন খারাপ হয়েছে। আস্তে আস্তে তোর জন্য কেমন খারাপ লাগছে। তার পর বুঝতে পারলাম, আমি তোকে ভালোবেসে ফেলেছি। আমি হিরের টুকরো হারিয়ে ফেলছি। প্লিজ তুই আমাকে ক্ষমা করে, আপন করে নেয়। আর যদি তোর শাস্তি দিতে মন চায়। তাহলে আমাকে তুই মেরে ফেল। আমি আর থাকতে পারছি না, তোকে ছাড়া। 


আমি কি বলবো, ভেবে পাচ্ছি না। পরে চিন্তা করলাম, মারিয়া তো ঠিকই বলেছে, নিজের ভালোবাসার মানুষ ছেড়ে আমার কাছে কি ভাবে আসে। আর আমারি ভুল ছিলো। ওই সময় নীলা আপুর সাথে অভিনয় না করে, সরাসরি বলে দিতাম। তাহলে এতো কষ্ট কেউ পেতো না। 


আমি মারিয়ার চোখের পানি মুছে দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। মেয়েটা অনেক কষ্ট পেয়েছে। তাকে আর কষ্ট পেতে দিবো না। এখানে দুজনের ভুল ছিলো। তাই আর ওনাকে কষ্ট না দিয়ে আপন করে নিলাম। 


আমি/: এই পাগলি আর কান্না করো না। আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিছি। তোমাকে আর কষ্ট পেতে হবে না। এখন থেকে তোমাকে প্রচুর ভালোবাসবো। 


মারিয়া/: রাসেল, আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরো। যেনো কেউ আমাকে তোমার কাছ থেকে আলাদা করতে না পারে। 


আমি/: এই রাসেল এর বুক থেকে, একমাত্র আল্লাহ ছাড়া , কেউ তোমাকে আলাদা করতে পারবে না। আমি সবসময় তোমার পাশে থাকবো। 


মারিয়া/: ঠিক আছে। এখন চল, তুই আর আমি অযু করে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করি।


আমি/: ওই, তুমি আমাকে এখনো তুই করে বলছো কেন। এখন আমি তোমার স্বামী, সো এখন থেকে তুমি করে বলবে। 


মারিয়া/: সরি , এখন থেকে তুমি করে বলবো। এখন চলো ওয়াস রুম থেকে অযু করে আসি। 


তার পর দুজনে ওয়াস রুমে ঢুকে অযু করে এসে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করার পর, মারিয়াকে কোলে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলাম। 


তার পর আমি গায়ের পাঞ্জাবি খুলে, পাশে রাখলাম। মারিয়ার শরীরের কাপড় সরিয়ে পুরো শরীরে কিস করতে লাগলাম। মারিয়ার ঠোঁটের সাথে ঠোট লাগিয়ে দিলাম। তার পর আস্তে আস্তে হারিয়ে গেলাম অজানা ঠিকানায়। ধন্যবাদ সবাইকে। 


  এমনি ভাবেই কাছে থেকো, দূরে যেও না। তোমায় নিয়ে গড়া মন, ভেঙে দিও না।


  রিক্ত আমি, নিঃস্ব আমি, আমার দেওয়ার কিছু নাই। আছে শুধু মোর ভালোবাসা, দেবো তোমায় তাই।

*

*

*

*

*

* ::::::::::::::::::::::::::::::: সমাপ্ত::::::::::::::::::::::::::

*

*

*

* তো পুরো গল্পটা কেমন হয়েছে। জানিনা লাষ্ট পর্ব কতটা সাজিয়ে লিখতে পেরেছি। যদি ভালো লাগে, তাহলে সবাই লাইক এবং কমেন্ট দিয়ে আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাবেন। আর যদি ভালো না লাগলে ইগনোর করবেন। 

*

*

* বি দ্র/: প্রমান ছাড়া গল্প কপি বললে, কোনো কথা ছাড়াই ব্লক মারতে বাধ্য হবো। 

*

*

* ধন্যবাদ সবাইকে পরবর্তি গল্পের জন্য অপেক্ষা করুন 🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿 রোমান্টিক গল্প লেখক রাসেল চৌধুরী 🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post