সিনিয়র চাচাতো বোন যখন বউ। পর্ব/::;;:::: ছয় ----- ৬ *

 

 গল্প/::: সিনিয়র চাচাতো বোন যখন বউ।

*

*

* লেখক/:: রাসেল চৌধুরী 🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷

*

*

* পর্ব/::;;:::: ছয় ----- ৬ 

*

*

*

*

* আজ পাঁচ টা বছর পর। 


নিজের দেশে যাচ্ছি। বাহিরে অনার্স কমপ্লিট করছি। আল্লাহ রহমতে আমি ভালো রেজাল্ট করছি। এখন দেশে গিয়ে বাবার অফিস দেখাশোনা করবো। বাবাকে এবার রেষ্ট দিবো। 


এবার চলুন একটু পাঁচ বছর আগে থেকে ঘুরে আসি। 


আব্বু কে ওদিন বাহিরে যাওয়ার কথা বলার পর, আব্বু সাতদিনের মধ্যে আমার সবকিছু রেডি করে ফেলছে। ওই সাত অনেক কষ্টে কাটিয়েছি। 


আসার সময় শুধু রাফি কে বলে এসেছি। বড় আব্বু আম্মু কেউ জানে না। তাদের সাথে কোনো যোগাযোগ করি নাই। আব্বু আম্মু মারিয়া আপুর কথা জিজ্ঞেস করলে, আমি ফোন কেটে দিতাম। 


আপুর কথা শুনতে চাই না। আজকে ওনার জন্য নিজের বাবা মা কে ছেড়ে দূরে এসেছি। আমি মারিয়া আপুকে একদম ভুলে গেছি। বাহিরে আসার পর অনেক বন্ধু হয়েছে, তাদের সাথে সময় কাটাতে, অনেক ভালো লেগেছে। 


মারিয়া আপুর হয়তো বিয়ে হয়ে এতো দিনে বাচ্চা কাচ্ছা হয়ে গেছে। থাক আপু সুখে। এখন আর আমি ওনাকে ভালোবাসি না। ওনার জন্য আমার অনেক চোখের পানি ঝরছে। 


রাফির সাথে মাঝে মাঝে কথা বলতাম। রাফি আর রিয়া আপুর বিয়ে হয়ে গেছে। রাফিও মারিয়া আপুর কথা বলতে গেলে, আমি ফোন রেখে দিতাম। তো যাই হোক। 


সবকিছু গুছিয়ে হোষ্টেল থেকে বেরিয়ে, একটা টেক্সি নিয়ে এয়ার পোর্টে চলে আসলাম। ভাড়া মিটিয়ে এয়ার পোর্টের ভিতরে ঢুকে গেলাম। সবকিছু শেষ করে বিমানে গিয়ে বসলাম। 


প্রায় ৫/৬ ঘন্টা পর বাংলাদেশ এয়ার পোর্টে বিমান লেন্ড করলো। আব্বু আম্মু কেউ জানে না, আমি যে বাংলাদেশে আসছি। তাদের সারপ্রাইজ দিবো বলে, বলি নাই। 


তো যাই হোক, বাংলাদেশ এয়ার পোর্টের ভিতরে সব কাজ শেষ করে বাহিরে আসলাম। বাহিরে এসে একটা টেক্সি নিয়ে বাসায় যেতে লাগলাম। 


এই পাঁচ বছরে বাংলাদেশের দৃশ্য অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে। সবকিছু নতুনের মতো লাগছে। 


আমি আপনাদের একটা কথা বলি, আব্বু আম্মুর সাথে মাসে একবার দুইবার কথা বলতাম। আমার যখন টাকার প্রয়োজন হতো, তখন আব্বু কে ফোন দিতাম। আর রাফির সাথে দুই তিন মাস পর একবার কথা বলতাম। 


তো যাই হোক আপনাদের সাথে কথা বলতে বলতে বাসার সামনে চলে আসলাম। ভাড়া মিটিয়ে গেট দিয়ে ঢুকলাম ভিতরে, দারোয়ান চাচা আমাকে দেখে বললো।


দারোয়ান/: আরে রাসেল বাবাজি যে। তুমি বাসায় আসবে, আমি তো জানতাম না। 


আমি/: চাচা, আমি বাসায় আসবো, এটা কেউ জানে না। সবাইকে সারপ্রাইজ দিবো। 


চাচা/: ওহ, ব্যাগ গুলো আমার হাতে দাও। আমি ভিতরে নিয়ে যাচ্ছি


আমি/: চাচা লাগবে না। আমি নিতে পারবো। তোমাকে কষ্ট করতে হবে না। আমি তো মনে করছি, তুমি আর আমাদের বাসায় নেই।


চাচা/: কি যে বলো, এই তোমাদের মতো বাসা, তোমার আব্বু আম্মুর মতো মানুষ কে ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করে না। তাই এখনো রয়ে গেছি। 


আমি/: ঠিক আছে চাচা, তাহলে আপনি থাকেন। আমি ভিতরে গেলাম।


এ বলে দরজার সামনে চলে আসলাম। তার পর কলিং বেল চাপ দিলাম, কিছুক্ষণ ওর একটা মেয়ে এসে দরজা খুলে দিলো। 


তাকে দেখে আমি তো অবাক হয়ে গেলাম। এ আর কেউ নয় মারিয়া আপু। কিন্তু আপুর চেহারার এই অবস্থা কেনো। আগের থেকে অনেক শুকিয়ে গেছে। চেহারা কেমন পাল্টে গেছে। 


আপু আমাকে দেখে এমন কিছু করবে, সেটা আমি কখনো ভাবিনি। আপু আমাকে দেখে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো। তখন আমি আপুকে আমার কাছ থেকে জোর করে ছাড়িয়ে বললাম। 


আমি/: আরে আপু, আপনি আমাকে জড়িয়ে ধরলেন কেনো। আপনার স্বামী যদি দেখে, তাহলে খারাপ ভাববে। 


মারিয়া/: তুই আমাকে আপনি করে বলছিস কেন। আর আমার তো বিয়ে হয়নি, তাহলে স্বামী আসবে কোথায় থেকে। 


আমি/: আপনি আমার বড় , তাই আপনাকে আপনি করে বলছি। আর আপনার বিয়ে হয়নি মানে। আমি তো বিদেশে যাওয়ার পর আপনার বিয়ে হবার কথা ছিলো। 


মারিয়া/: হুম হবার কথা ছিলো, কিন্তু হয়নি। কারন আকাশ ছেলেটা , আগে একটা মেয়েকে বিয়ে করছে। সেটা আমরা কখনো জানতামই না। ওই মেয়েটা বিয়ের দিন পুলিশ এবং সব প্রমান নিয়ে এসেছে। তার পর পুলিশ আকাশ কে ধরে নিয়ে গেছে। 


আমি/: ওহ, তাহলে পরে আবার বিয়ে করেন নাই কেনো। আর আপনার চেহারার এই অবস্থা কেনো। আগের থেকে এরকম শুকিয়ে গেছেন কেনো। 


মারিয়া/: পরে আর বিয়ে করার ইচ্ছা ছিল না, তাই আর বিয়ে করি নাই। আর শরীরের এই অবস্থা হয়েছে, আমি একজন কে অনেক কষ্ট দিছি। তাই নিজেকে কষ্টের মধ্যে রাখছি, । খাওয়া দাওয়া ঘুম ঠিক মতো না যাওয়ার কারণে এই অবস্থা। 


আমি/: এভাবে জীবন চলে না। আবার নতুন করে শুরু করেন। এভাবে নিজেকে কষ্ট দিয়ে কি লাভ। 


মারিয়া/: তুই কি আমাকে এখন আর ভালো বাসিস। 


আমি/: আমি তোমাকে অনেক আগেই ভুলে গেছি। পড়াশোনায় মন দিয়েছি। আল্লাহ রহমতে ভালো রেজাল্ট করে আসছি। 


মারিয়া/: আমাকে কি ক্ষমা করে, আপন করে নেওয়া যায় না। আমি কথা দিচ্ছি, তোকে আর কখনো কষ্ট পেতে দিবো না। সবসময় তোর কথা মতো চলবো। 


আমি/: সরি আপু। সেটা আপনি অনেক আগেই হারিয়ে ফেলছেন। তখন তো আবেগের বশে ভালোবেসেছি। এখন আবেগ কেটে গেছে। আমারি ভুল ছিলো, ছোট হয়ে আপনাকে ভালোবাসা। 


মারিয়া/: তুই কি সত্যি আমাকে ভুলে গেছিস। এখন আর আমাকে ভালোবিসিস না। 


আমি/: আপনাকে আমি বলছি না। আমি আর আপনাকে ভালোবাসি না। আর এখন কেনো আমাকে ভালো বাসতে আসছেন। যখন ভালোবাসার কথা বলছি, তখন তো বলছেন, ভালোবাসার কথা নিয়ে আপনার সামনে না যেতে। 


মারিয়া/: তখন আমি বুঝতে পারি নাই। কিন্তু তুই চলে যাবার পর, তোর অভাব টা বুঝতে পারছি। আমি বুঝতে পারছি, আমার জীবনে তুই ছাড়া কোন কোল কিনার নাই। আর ওই সময় তোর ওপর রাগ হয়েছে। তুই আর নীলা আমাকে কিছু না বলে, প্রেম করছিস। তখন আমি তোকে ছোট ভাই হিসেবে এতো খেয়াল রাখছি, কিন্তু আমি বুঝতে পারি নাই, তুই যে আমাকে ভালোবাসিস। আর আকাশ ছেলেটা কে দেখে আমার অনেক ভালো লেগে যায়। তাই ওকে প্রপোজ করি, আকাশ ও রাজি হয়ে যায়। তার পর কি হলো তুই তো জানিস। 


আমি/:যদি বিয়ের দিন ওই মেয়েটা না আসতো‌ । তাহলে তো এতো দিন আপনার বিয়ে হয়ে যেতো। আপনি জানেন, একমাত্র আপনাকে ভুলে থাকার জন্য মা বাবা কে ছেড়ে বাহিরে গেছি পড়ালেখা করার জন্য। আমি দাঁড়িয়ে থেকে আপনার বিয়ে দেখতে পারবো না। এমন কোনো দিন নেই, আপনার জন্য চোখের পানি ফেলি নাই। আপনার জন্য আমি অনেক কষ্ট পেয়েছি। এখন আপনি আপনার জীবন সাথী অন্য কাউকে খুঁজে নেন। আমি আর আপনাকে ভালোবাসি না। এবার আমার পথ ছাড়েন। 


মারিয়া আপু আর কোনো কথা না বলে, আমার পথ থেকে সরে দাঁড়ালো। আপুর  সাথে কথা বলে মাথা পুরো গরম হয়ে গেল। এখন আসছে ভালোবাসতে। যখন আমি ভালোবাসার কথা বলেছি। তখন আমাকে দূর করে তাড়িয়ে দিছি। আমার সামনে আকাশের হাত ধরে ঘুরা ঘুরি করছে। 


আমি তাকে কখনো ভালোবাসবো না। নিজের রুমে এসে শুয়ে পড়লাম। হঠাৎ আম্মু আমার রুমে আসলো। তখন আম্মু আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো। আমি বললাম।


আমি/: এ আম্মু, তুমি কান্না করছো কেন। 


আম্মু/: তুই আমাদের না বলে আসলি কেন। তুই আমাদের ফোন করে বলিস নাই। আর বাসায় এসে, আমার সাথে দেখা না করে, রুমে এসে শুয়ে পড়লি কেনো। 


আমি/: তোমার সাথে দেখা করতাম। কিন্তু একজন কে দেখে মাথা গরম হয়ে যায়। তাই রুমে এসে শুয়ে পড়লাম। 


আম্মু/: তুই কার কথা বলছিস। বাসায় তো আমি মারিয়া আর তোর আব্বু ছাড়া কেউ থাকি না। 


আমি/: আমি মারিয়া আপুর কথা বলছি, ওনি আমাদের বাসায় কেনো। 


আম্মু/: ওহ বুঝেছি। বাবা তুই মারিয়াকে ক্ষমা করে দেয়। মেয়েটা তখন বুঝতে পারে নাই। মারিয়া আমাদের সবকিছু খুলে বলছে। 


আমি/: আমি কখনো ওনাকে ক্ষমা করবো না। ওনার কারনে তোমাদের ছেড়ে বাহিরে চলে গেছি। যতো দিন দেশে ছিলাম, আমার চোখ দিয়ে শুধু পানি ঝরছে। তোমাদের বলি নাই, কষ্ট পাবে বলে। তাই নিজের কষ্ট বুকে চেপে বাহিরে গেছি। 


আম্মু/: তুই চলে যাবার পর মেয়েটা অনেক কষ্ট পাইছে। এখন সবসময় আমার সাথে থাকে। ওদের বাসায় তেমন জায়না। যদি দেখিস নি, মেয়েটা আগের থেকে কেমন হয়ে গেছে। 


আমি/:  ওসব কথা বাদ দাও। এখন বলো আব্বু কোথায়। 


আম্মু/: তোর আব্বু তো অফিসে আছে। আমি ফোন দিয়ে বলছি, কিছুক্ষণ এর মধ্যে চলে আসবে। 


আমি/: ঠিক আছে, আমি ফ্রেশ হচ্ছি, তুমি আমার জন্য খাবার রেডি করো। আজকে তোমার হাতে খাবার খাবো। 


আম্মু ঠিক আছে বলে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। আমি আর শুয়ে না থেকে ওয়াস রুমে চলে আসলাম। গোসল করে একটা জামা গায়ে দিয়ে নিচে নেমে আসলাম। 


নিচে এসে দেখি মারিয়া আপু টেবিলে খাবার সাজিয়ে রাখছে। আমি একটা চেয়ার টেনে বসলাম। আম্মু একটা প্লেটে খাবার নিয়ে, আমার পাশে বসে, আমাকে খাইয়ে দিতে লাগলো। 


খাওয়া দাওয়া শেষ নিজের রুমে চলে আসলাম। আপু মাথা নিচু করে খাবার খাচ্ছে। আমি একবার ওনার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। 


রুমে এসে আমার পুরোনো সিম কার্ড টা মোবাইলে ঢুকালাম। হঠাৎ দেখি আব্বু আমার রুমে আসলো। আমার পাশে বসে বললো। 


আব্বু/: কিরে কেমন আছিস। আর আমাদেরকে না বলে আসলি কেনো। আমাকে ফোন করে বলতি, তাহলে এয়ার পোর্টে গাড়ি পাঠিয়ে দিতাম। 


আমি/: বলিনি, তোমাদের সারপ্রাইজ দিবো বলে

 । আর আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। তুমি কেমন আছো। 


আব্বু/: আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। তো এখন কি করবি, পড়ালেখা আরো করবি, না কি অফিস দেখাশোনা করবি। 


আমি/: আব্বু আমি আর পড়াশোনা করবো না। এখন থেকে তোমাকে রেষ্ট দিয়ে অফিস দেখাশোনা করবো। তবে আমি কিছুদিন ঘুরা ঘুরি করবো। তার পর অফিসে যাবো। 


আব্বু/: ঠিক আছে। তুই যেটা ভালো মনে করিস। আমি নিচে গেলাম। তুই কিছুক্ষণ রেস্ট নেয়। 


এ বলে আব্বু রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। আমি কিছুক্ষণ মোবাইল টিপে ঘুমিয়ে পড়লাম। 


বিকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে একটা জামা গায়ে দিয়ে নিচে এসে, আম্মুকে বললাম।


আমি/: আম্মু আমি একটু বাহিরে যাচ্ছি। রাফির সাথে দেখা করবো। 


আমমূ/: ঠিক আছে যা, তবে তার আগে তোর বড় আম্মুর সাথে দেখা করে যাস, তোর ওপর রাগ করে আছে। তুই বাহিরে চলে যাওয়ার পর অনেক কান্না করছে। তুই তাকে বলে যাস নি কেনো। 


আমি/: আচ্ছা ঠিক আছে। তাহলে আগে বড় আম্মুর সাথে দেখা করে, তার পরে রাফির কাছে যাবো। বড় আব্বু কি বাহিরে।


আম্মু/: হুম, তোর বড় আব্বু কিছু দিনের ভিতরে আসবে। 


ঠিক আছে বলে বাসা থেকে বেরিয়ে আসলাম। কিন্তু আপুকে দেখলাম না, হয়তো তাদের বাসায় আছে। আমি বাসা থেকে বেরিয়ে বড় আম্মুর বাসার ভিতরে গেলাম। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কলিং বেল চাপ দিলাম। 


কিছুক্ষণ পর মারিয়া আপু এসে দরজা খুলে দিলো। আমি কোনো কথা না বলে ভিতরে ঢুকে গেলাম। ভিতরে ঢুকে দেখি বড় আম্মু সোফায় বসে কফি খাচ্ছে। আমি সোজা গিয়ে আম্মুর কোল মাথা দিয়ে শুয়ে পড়লাম। তখন আমি বললাম। 


আমি/: বড় আম্মু, তুমি কেমন আছো। আমার ওপর বুঝি রাগ করে আছো। প্লিজ বড় আম্মু আমাকে তুমি মাফ করে দাও। আর কখনো তোমাকে না বলে , কোথাও যাবো না। প্লিজ প্লিজ প্লিজ আম্মু।


বড় আম্মু/: আমি কারো বড় আম্মু নয়। যদি কারো বড় আম্মু হতাম। তাহলে আমাকে ভুলে থাকতে পারতো না। আমার সাথে যোগাযোগ পর্যন্ত করে নাই। আমার কাছে না বলে চলে গেল। আমি কারো বড় আম্মু না। 


বুঝেছি, বড় আম্মু আমার ওপর অভিমান করে আছে। তাই বড় আম্মুকে বললাম। 


আমি/: ঠিক আছে, তুমি যদি আমাকে মাফ না করো‌। তাহলে আর কোনো দিন তোমার বাসায় আসবো না। আমি এখনি তোমার বাসা থেকে চলে যাচ্ছি। 


এ বলে যেইনা উঠতে যাবো। ঠিক তখনই বড় আম্মু আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে বলতে লাগলো। 


বড় আম্মু/: তুই কেমন করে পারলি, তোর এই বড় আম্মুকে ভুলে থাকতে‌ । আমাকে না বলে কেনো বাহিরে গেলি। মারিয়া তোর সাথে অপরাধ করছে। তাই বলে তোর এই মাকে ভুলে যাবি। তুই জানিস না, তোর এই বড় আম্মু তোকে না দেখলে থাকতে পারে না। তুই জানিস, তোর জন্য আমি অনেক কান্না করছি। তুই একটা বার ফোন দিয়ে আমার খবর নিলি না। 


আমি বড় আম্মুর চোখের পানি মুছে দিয়ে বললাম। 


আমি/:বড় আম্মু প্লিজ তুমি কান্না করো না। আমি আর এমন ভুল করবো না। এখন থেকে তুমি যা বলবে , আমি তাই করবো। তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাবো না। প্লিজ আম্মু। 


বড় আম্মু/: ঠিক আছে, এবারের মতো তোকে মাফ করে দিছি। আর যদি। কখনো এমন করিস, তাহলে তোর এই মাকে হারিয়ে ফেলবি। তুই জানিস না, তোকে আমি নিজের ছেলে মনে করি। 


আমি/: সেটা জানি তো আম্মু। ঠিক আছে বড় আম্মু, তুমি তাহলে থাকো। আমি রাফির সাথে গিয়ে দেখা করে আসি। কাউকে বলি নাই, যে আমি দেশে আসবো। 


বড় আম্মু/: ঠিক আছে। তবে রাতে আমাদের বাসায় খাবি। আজকে তোকে আমি নিজ হাতে খাইয়ে দিবো। তোর পছন্দের জানিস রান্না করবো। 


আমি/: ওকে বড় আম্মু। এখন আমি আসি। রাতে আসবো। 


বলে বড় আম্মুর কপালে একটা চুমু দিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে আসলাম। বাসা থেকে বেরিয়ে কলেজের সামনে চলে আসলাম। রাফিদের বাসা যাইনি। কলেজের পাশে, মামার দোকান টা এখনো আছে। 


মামার দোকানে বসে রাফি কে ফোন দিতে যাবো। হঠাৎ দেখি রাফির মতো দেখতে , একটা ছেলে আর একটা মেয়ে রিক্সায় করে কোথায় যাচ্ছে। আমি সিউর হবার জন্য রাফি বলে ডাক দিলাম। 


সাথে সাথে রাফি আমার দিকে তাকালো। তাহলে ঠিকই ধরেছি, এটা তাহলে রাফি, সাথে মনে হয় রিয়া আপু। আমার ডাকে রাফি আর ওই মেয়েটা রিকশা থেকে নেমে আমার সামনে আসলো। রাফি আমার সামনে এসে জড়িয়ে ধরলো। তখন আমি বললাম।


আমি/: কিরে কেমন আছিস। আর ওনি কি আমাদের রিয়া আপু নাকি । 


রাফি/: আমি এতো দিন ভালো ছিলাম না। আজকে তোকে দেখে ভালো লাগছে। তা বলা নাই কয়া নন নাই, হঠাৎ দেশে আসলি। আমাকে তো একটা ফোন করে বলিস নি। 


আমি/: আরে আমি কাউকে বলে আসি নি নাই। আর রিয়া আপু তুমি কেমন আছো। 


রিয়া/: আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। তুমি কেমন আছো রাসেল। 


আমি/: আমিও ভালো আছি আপু। তা রিকশা করে কোথায় যাচ্ছেন।


রিয়া/: আমরা একটু মার্কেটে গেছিলাম। মার্কেট থেকে বাসায় যাচ্ছি। 


রাফি/: তুই এসেছিস, এখন প্রতিদিন আড্ডা দেওয়া যাবে। সালার সিনিয়র মেয়ে বিয়ে করে, জীবন টা তেজপাতা হয়ে গেছে। 


রিয়া/: কি , তুই আমাকে বিয়ে করার পর, তোর জীবন তেজপাতা হয়ে গেছে। আজকে তুই বাসায় আয়। আজকে তোর একদিন, আমার যে কয়দিন লাগে। 


রাফি/: সরি জানু। আমার ভুল হয়ে গেছে। আর কখনো এমন কথা বলবো না। প্লিজ তুমি আমাকে মাফ করে দাও। তুমি অনেক ভালো একটা মেয়ে। 


আমি/: হয়েছে হয়েছে। তোদের জগড়া বন্ধ কর। চল কোথাও গিয়ে বসি। অনেক বছর পর দেখা। 


রিয়া/: রাসেল, আমার বাসায় একটু কাজ আছে। তুমি রাফি কে নিয়ে ঘুরতে যাও। পরে একদিন আমি তোমাদের সাথে ঘুরবো। 


আমি ঠিক আছে বললাম। তার পর রাফি রিয়া আপুকে একটা রিকশায় উঠিয়ে দিয়ে, আমার কাছে আসলো। দুজনে একটা পার্কে গেলাম। তখন রাফি বলল। 


রাফি/: তো বল, এখন কি করবি, । লেখাপড়া চালিয়ে যাবি, না কি তোর আব্বুর অফিস দেখাশোনা করবি। 


আমি/: ভাবছি আব্বুকে এবার রেষ্ট দিবো। আমি অফিস দেখাশোনা করবো। আব্বু একা একা আর কতো করবে। 


রাফি/: ঠিক বলছিস, আনকেল এর তো বয়স হয়েছে। তা এবার একটা বিয়ে করে নেয়। 


আমি/: নারে এখন বিয়ের ব্যাপারে ভাবি নাই। আচ্ছা তুই কি জানিস, মারিয়া এখন বেশির ভাগ আমাদের বাসায় থাকে। তবে মারিয়া আপুর চেহারা আগের থেকে অনেক পাল্টে গেছে। 


রাফি/: তোকে তো মারিয়া আপুর ব্যাপারে বলতে গেলে, ফোন কেটে দিস। আকাশ ছেলেটা ভালো না। ও অন্য একটা মেয়েকে বিয়ে করে, দেশের বাড়ি থেকে ঢাকায় চলে আসে। তার পর ওই মেয়ে বিয়ের সময় পুলিশ নিয়ে আসে। পুলিশ আকাশ কে ধরে থানায় নিয়ে যায়। 


আমি/: আমি এসব শুনেছি। এখন তুই কি জানিস, মারিয়া আপু আমাকে ভালোবাসার কথা বলে। তাকে আপন করে নেওয়ার জন্য। 


রাফি/: তাহলে নিয়ে নেয়। মারিয়া আপু এই পাঁচ বছরে নিজের শরীরের কোনো যত্ম নেয় না। খাওয়া দাওয়া ঠিক মতো করে না। তাই আপুর চেহারা এরকম হয়ে গেছে। আপুর দিকে তাকালে অনেক মায়া লাগে রে। 


আমি/: আচ্ছা এসব বিষয় বাদ দেয়। এখন বল, তুই কি পড়ালেখা করবি‌ নাকি তোর আব্বুর অফিস দেখাশোনা করবি। 


রাফি/: নারে, আমি আর পড়াশোনা করবো না। আব্বুর অফিস দেখা শোনা করবো। তুই জানিস, আমাদের ঘর আলো করার জন্য মেহমান আসছে। মানে আমি বাবা হতে চলেছি। 


আমি/: তাহলে তো ভালোই। ট্রিট যেনো পাই। 


আরো কিছুক্ষণ কথা বলে , রাফি কে বিদায় দিয়ে , বাসায় চলে আসলাম। আমাদের বাসায় না , বড় আম্মুর বাসায় এসেছি। 


কলিং বেল চাপ দেওয়ার পর, একজন এসে দরজা খুলে দিলো। তাকে দেখে অবাক হয়ে গেলাম। ওনি এখানে কখন আসলো‌ 


এখানে কে হতে পারে। আপনারা কমেন্ট করে জানাবেন। 


আজ স্মৃতির পাতা উল্টে দেখলাম কত মানুষ জীবন থেকে হারিয়ে গেছে।কত চেনা মানুষ , অচেনা হয়ে গেছে হয়তো কোন এক দিন ,আমিও অচেনা হয়ে যাবো এই পৃথিবী থেকে !!


আজ নিজে নিজে নীরবে কাঁদছি, যে কান্না হয়তো মরণ হলে শেষ হবে ।তবে সত্য বলতে কি জানো আমি তোমাকে আজও ঠিক আগের মতই ভালোবাসি ।

*

*

*

* চলবে

*

*

*

* পারলাম না শেষ করতে। আগামী পর্বে চেষ্টা করবো শেষ করে দেওয়ার জন্য। তো কেমন হয়েছে জানাবেন। ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই লাইক এবং কমেন্ট দিয়ে পাশেই থাকবেন। আর ভালো না লাগলে ইগনোর করবেন। 

*

*

* বি দ্র/: প্রমান ছাড়া গল্প কপি বললে, কথা ছাড়াই ব্লক মারতে বাধ্য হবো। 

*

*

* ধন্যবাদ সবাইকে পরবর্তি পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন 🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿 রোমান্টিক গল্প লেখক রাসেল চৌধুরী 🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿🌷🌿

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post