বাবা মা হারা ছেলেটা যখন মাফিয়া কিং পর্ব ১+২

 রাইসা/: আব্বু আব্বু তুমি জানো। আমাদের স্কুলে একজন নতুন টিচার আসছে। দেখতে অনেক ভালো। আমাকে অনেক গুলো চকলেট দিছে। আমাকে অনেক আদর করে। 


আমি/: রাইসা তোমাকে বলছি না। বাহিরের মানুষ তোমাকে কিছু দিলে , নিতে না। তার পরেও তুমি ওনার কাছ থেকে কেনো নিলে।


লাইসা/: আব্বু আমি তো নিতে চাইনি। ম্যাম আমাকে জোর করে দিছে। 


আমি/: আজকের পর থেকে, তুমি কখনো ওই টিচার থেকে কিছু নিবে না। যদি তোমার টিচার কিছু বলে। তাহলে বলবে , আব্বু মানা করছে। কথাটা মনে থাকবে। 


রাইসা/: ঠিক আছে আব্বু। আমি আর কখনো ম্যাম থেকে কিছু নিবো না। 


আমি/: ওকে, এখন রুমে গিয়ে পড়তে বসো। আব্বু তোমার রাফি চাচ্চুর সাথে কথা বলবো।


রাইসা ঠিক আছে বলে রুমে চলে গেলো। তখন রাফি আমাকে বললো। 


রাফি/: তুই রাইসার সাথে এভাবে কথা বলছিস কেন। তুই তো জানিস, রাইসা এখনো ছোট। তাই এখনো কিছু বুঝতে পারে না। 


আমি/: তুই তো জানিস। আমার রাইসা কে অন্য কেউ ভালোবাসলে, আমি সয্য করতে পারি না। তাহলে রাইসা আমাকে কম ভালোবাসবে। 


রাফি/: তোর ধারনা ভুল। সব মেয়েরা চায় মায়ের ভালোবাসা পেতে। কিন্তু রাইসা কখনো কি তার মায়ের ভালোবাসা পেয়েছে। পায়নি, তাই হয়তো টিচারের সাথে কথা বলতে ওর ভালো লাগছে। 


আমি/: আমি চাই না। রাইসা কে অন্য কেউ ভালোবাসুক। রাইসার বাবাও আমি , মাও আমি। তাকে ঘিরে আমার সব। আমার বাবা মা থেকেও না থাকার মতো। আর আমি ওদের কখনো ক্ষমা করবো না। তারা নিজেদের স্বার্থে , আলাদা হয়ে গেছে। আমার কথা একটা বার চিন্তা করলো না। দোষ করেছে তারা। আমার কি দোষ ছিলো। তারা আমাকে এতিমের মতো রেখে চলে গেল কেনো। 


কথা গুলো বলতে চোখ দিয়ে পানি পড়ে গেলো। তখন রাফি বললো। 


রাফি/: থাক কান্না করিস না। এটা তোর কপালে লিখা ছিলো। আগের কথা ভুলে গিয়ে, সামনের দিকে এগিয়ে চল। 


আমি/: আমি তো তাদের কথা ভুলে গেছি। হঠাৎ তুই রাইসার বাবা মার কথা বললি। তাই ওদের কথা মনে পড়লো। 


রাফি/: আচ্ছা ওসব কথা বাদ দেয়। আজকে মন্ত্রী বলছে, তার সাথে দেখা করতে। আমি বলছি তুই ফ্রি হলে দেখা করে আসবি। 


আমি/: ঠিক আছে চল। এখন গিয়ে দেখা করে আসি। 


এ বলে আমি আর রাফি বাসা থেকে বেরিয়ে আসলাম। আসার সময় খালাকে ( কাজের বুয়া) বলে আসলাম। রাইসা কে খাবার খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিতে। 


আমি আর রাফি, আমার নিজের গাড়িতে উঠলাম। আমাদের গাড়ির সামনে এবং পিছনে চারটা গাড়ি আসছে। সবগুলো আমার লোক। প্রায় ৩০ মিনিট পর মন্ত্রীর বাসায় চলে আসলাম। 


আমাকে দেখে মন্ত্রীর সিকিউরিটি গার্ড তাড়াতাড়ি গেট খুলে দিলো। বাসার ভিতরে ঢুকে গাড়ি থেকে নেমে মন্ত্রীর বাসার দরজায় দাঁড়ালাম। রাফি কলিং বেল চাপ দিলো। কিছুক্ষণ পর আন্টি দরজা খুলে দিলো। আমাকে আর রাফি কে দেখে বললো। 


আন্টি/: আরে রাসেল রাফি তোমরা। আসো ভিতরে আসো। তা হঠাৎ আমার বাসায়, কি মনে করে। 


আমি/: আসলে আন্টি, আনকেল আমাকে দেখা করতে বলেছে। তাই আসলাম আর কি। তা আনকেল কোথায়। 


আন্টি/: তোমার আনকেল তো ওয়াস রুমে আছে। তোমরা সোফায় বসো। আমি তোমাদের জন্য নাস্তা পাঠিয়ে দিচ্ছি। 


আমি/: থাক আন্টি লাগবে না। আনকেল কি জন্য ঠেকেছে, কথা গুলো শুনে চলে যাবো। আপনাকে কষ্ট করতে হবে না।


আন্টি/: তুমি একটু বেশি কথা বলো। আমি তোমার কোনো কথা শুনতে চাই না। আজকে রাতের খাবার খেয়ে, তার পর বাসায় যাবে। 


এ বলে আন্টি চলে গেলো। আসলে আন্টি অনেক ভালো একজন মানুষ। কিন্তু মন্ত্রী এতোটা ভালো না। একারনে আন্টির সাথে ভালো ভাবে কথা বলি। আর আন্টি আমার জীবনের কাহিনী সব জানে। 


কিছুক্ষণ পর দেখি মন্ত্রী সাহেব ওপর থেকে নিচে নেমে আসলো। আমাকে দেখে বলল। 


মন্ত্রী/: আরে রাসেল। তুমি কখন আসলে। আসার সময় কোনো অসুবিধা হয়নি তো। ( সোফায় বসতে বসতে কথা গুলো বললো)


আমি/: আমার কোনো অসুবিধা হয়নি। কেনো ডেকেছেন , আগে সেটা বলেন। আমার হাতে সময় নেই। একটা কাজে যেতে হবে। 


মন্ত্রী/: তুমি তো জানো। সামনে নির্বাচন আসছে। গেছে বার তো তোমার কারনে মন্ত্রী হয়েছি। আমি চাই এই বারো যেনো কেউ মন্ত্রী হতে না পারে। এইবার আমি থাকতে চাই। 


আমি/: কথা ঘুরিয়ে পিছিয়ে না বলে , সোজা সুজি বলেন। আমাকে কি করতে হবে। 


মন্ত্রী/: আমি চাই আমার বিপক্ষে প্রার্থী যেনো, এবার নির্বাচন করতে না পারে। তাকে তুমি বসিয়ে দিবে। তোমার যতো টাকা লাগে আমি দিবো। 


আমি/: সেটা ঠিক আছে। কিন্তু টাকার অ্যামাউন্ট এবার বেশি লাগবে। এক কোটি টাকা লাগবে। যদি দিতে পারেন, তাহলে কাজ হয়ে যাবে। 


মন্ত্রী/: ঠিক আছে, আমি রাজি আছি। তুমি এখন অ্যাডভান্স পঞ্চাশ লাখ নিয়ে যাও। কাজ শেষ হলে বাকি টাকা পেয়ে যাবে। 


আমি/: আপনি ভালো করে জানেন। আমি কাজের আগে সব টাকা না নিয়ে কাজ করি না। সো আগে সব টাকা পরিশোধ করতে হবে। তার পর আপনার কাজ হয়ে যাবে। 


মন্ত্রী/: ঠিক আছে। সালাম , ( মন্ত্রীর ম্যানেজার ) রাসেল কে এক কোটি টাকা দিয়ে দাও। 


ম্যানেজার ঠিক আছে বলে , ভিতরে গিয়ে এক কোটি টাকার একটা সুটকেস নিয়ে আসলো। মন্ত্রী আমার হাতে টাকা দিয়ে বললো। 


মন্ত্রী/: এই নাও, এখানে পুরো এক কোটি টাকা আছে। আমার কাজটা যেনো হয়ে যায়। 


আমি/: আজ পর্যন্ত এই রাসেল, কোনো কাজে ব্যর্থ হয়নি। আপনার কাজ মনে করেন হয়ে গেছে। আমরা এখন আসি। 


হঠাৎ আন্টি আমাদের সামনে এসে বললো।


আন্টি/: খাওয়া দাওয়া না করে, কোথাও যাওয়া হচ্ছে না। খাবার খেয়ে, তার পর বাসায় যাবে। আমি সবকিছু রেডি করেছি, তোমরা ফ্রেশ হয়ে টেবিলে গিয়ে বসো। 


কি আর করার, আন্টির কথা ফেলতে পারলাম না। আমি আর রাফি ওয়াস রুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে, তাদের সাথে খাবার খেয়ে , বিদায় নিয়ে চলে আসলাম। 


তার পর আমি আমার আস্তানায় গেলাম। আস্তানা গিয়ে দেখি আমার লোক নয়ন কে চেয়ারে বেঁধে রাখছে। নয়ন আমাকে দেখে বললো। 


নয়ন/: তুই আমাকে ধরে এনেছিস কেনো। যদি আমার ভাই জানতে পারে, তুই আমাকে ধরে আনছিস, তাহলে তোকে দুনিয়া বাঁচিয়ে রাখবে না। 


আমি/: তুই ভালো করে জানিস। আমার কাজে কেউ বাধা দিলে, আমি তাকে দুনিয়ায় বাঁচিয়ে রাখি না। তাহলে কেনো আমার কাজে বাধা দিলি। 


নয়ন/: তোর লোক আমার ভাইয়ের এড়িয়া থেকে চাঁদা তুলতে গেছে। তাই ওদের বাধা দিছি। আমরা কি কখনো তোর এড়িয়া থেকে কখনো চাঁদা তুলেছি। তাহলে তুই কেনো আমাদের এড়িয়া থেকে চাঁদা তুলতে গেলি।


আমি/: শুন ভালো করে। আমি রাসেল সব জায়গায় থেকে চাঁদা তুলবো। তোর ভাই রকি , আমার কিছুই করতে পারবে না। তুই আবার আমার লোকের গায়ে হাত তুলছিস, আজকে তোকে মেরে , তোর ভাইয়ের কাছে পাঠিয়ে দিবো। দেখি তোর ভাই আমার কি বা*** পালাতে পারে। 


নয়ন/: তুই একটা ভিতু। তোর যদি সাহস থাকে। আমার ভাইয়ের সামনে আমাকে মেরে দেখা। তাহলে বুঝবো তোর অনেক সাহস। তোকে আমরা মাফিয়া কিং জানবো। 


আমি/: ঠিক আছে। তাহলে আমি তোর চ্যালেঞ্জ এক্সেপ করলাম। কালকে বিকালে তোর ভাইয়ের আস্তানায় গিয়ে তোকে মারবো। ওই ওকে ছেড়ে দেয়। 


আমার কথা শুনে রাফি বললো। 


রাফি/: ওকে ছেড়ে দেওয়া কি ঠিক হবে। তাকে যদি মারতে না পারিস, তাহলে ওদের সাহস বেড়ে যাবে। 


আমি/: আরে ওকে আমি মারবো না। এই সব ছোট খাটো পাতি নেতা কে মেহেদী মারবে। মেহেদী একাই ওদের জন্য যথেষ্ঠ। 


রাফি/: মানে, মেহেদী তাহলে বেঁচে আছে। ও এখনো মরে নাই। আমরা তো ভেবেছিলাম, মেহেদী আর দুনিয়া বেঁচে নাই। 


আমি/: সেটা সময় হলে দেখতে পাবি। ওই তুই এখনো দাঁড়িয়ে আছিস কেনো। যাহ তাড়াতাড়ি। তা না হলে তোকে আমার লোক মারতে মারতে বের করবে। এমনেই কালকে তোর দুনিয়ায় শেষ দিন। 


আমার কথা শুনে নয়ন দৌড় দিয়ে আস্তানা থেকে বেরিয়ে গেলো। আমি সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। কলিং বেল চাপ দেওয়ার পর খালা এসে দরজা খুলে দিলো। আমি খালাকে বললাম। 


আমি/: খালা , রাইসা কি ঘুমিয়ে গেছে। ও কি খাবার খেয়েছে। আমার কথা কিছু বলছে। 


খালা/: হালকা খাবার খেয়েছে। তোমার কথা জিজ্ঞেস করছে, আমি বলছি তোমার আব্বু একটু কাজে বাহিরে গেছে। তুমি ঘুমিয়ে পড়ো, তোমার আব্বু কিছুক্ষণ পর চলে আসবে। তার পর অনেক কষ্টে ঘুম পাড়িয়ে দিছি। 


আমি/: ওহ , ঠিক আছে আমি রুমে গেলাম। খাবার খাবো না। মন্ত্রীর বাসা থেকে খেয়ে আসছি। তুমি খাবার খেয়েছো। 


খালা/: তুমি তো জানো, তুমি না আসা পর্যন্ত আমি খাবার খাই না। 


আমি/: খালা তোমার এই জিনিস টা আমার ভালো লাগে না। খালি খালি আমার জন্য না খেয়ে বসে থাকো কেনো। 


খালা/: আমার কোনো ছেলে মেয়ে নেই। তোমাকে আমি নিজের ছেলের মতো দেখি। তাই তোমাকে ছাড়া খাবার খেতে পারি না। তুমি আমাকে রাস্তা থেকে তুলে এনে ঠাঁই দিছো। তোমাকে ছাড়া খাবার খাবো কেমন করে। 


আমি/: খালা আপনি আমার কেউ না। তার পরেও আপনি আমাকে নিজের ছেলের মতো দেখেন‌ । তাহলে আমার আপন বাবা মা আমার সাথে এরকম করলো কেনো। সেটা কি তুমি বলতে পারবে খালা। 


খালা/: থাক বাবা, হয়তো তোমার কপালে লিখা ছিলো। তুমি ওসব নিয়ে চিন্তা করো না। তুমি রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়ো। আমি খাবার খেয়ে রুমে যাবো। 


আমি ঠিক আছে বলে নিজের রুমে চলে আসলাম। রুমে এসে দেখি রাইসা কোল বালিশ জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে। মেয়েটার চেহারার দিকে তাকালে কেমন যেনো খারাপ লাগে। 


ওর বাবা মা যদি বেঁচে থাকতো। তাহলে মেয়েটা বাবা মা ছাড়া হতো না। আমারি ভুল ছিলো। রাইসার সাথে ওইভাবে কথা বলা। সব মেয়েরা চায় তার বাবা মা তাকে আদর করুক। কোলে বসিয়ে খাবার খাইয়ে দিবে। কপালে চুমু দিয়ে স্কুলে পাঠাবে। 


তাহলে রাইসার ব্যাপারে আপনাদের সংক্ষিপ্ত ভাবে ঘটনা খুলে বলি। 


আমি একদিন একটা কাজ শেষ করে বাসায় যাচ্ছিলাম। হঠাৎ রাস্তার পাশে দেখি, একটা মেয়ে বসে বসে কান্না করছে। তখন আমি গাড়ি থামিয়ে ওর কাছে গেলাম। তখন আমি ওকে বললাম।


আমি/: কি হয়েছে মামুনি। তুমি এতো রাতে এখানে বসে বসে কান্না করছো কেন। তোমার আব্বু আম্মু কোথায়। 


মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে , আরো জোরে জোরে কান্না করতে করতে বললো। 


রাইসা/: ওরা আমার আব্বু আম্মু কে মেরে ফেলেছে। ওই জঙ্গলে আমার আব্বু আম্মু পড়ে আছে। আপনি আমার আব্বু আম্মু কে বাচান। আমি আব্বু আম্মু কে ছাড়া থাকতে পারবো না। 


আমি মেয়েটার কথা শুনে জঙ্গলের ভিতরে গেলাম। ভিতরে ঢুকে দেখি মেয়েটা ঠিক কথা বলছে। দুজন  চুরি দিয়ে আঘাত করে মেরে ফেলছে। আমি তাদের নাকের ডগায় হাত নিয়ে দেখি, তারা আর বেঁচে নেই। 


তার পর রাফি এবং আমার কিছু লোক কে ফোন দিয়ে আসতে বললাম। তারা দশ মিনিটের মধ্যে চলে এসেছে। পরে রাইসার আব্বু আম্মু কে একটা কবর স্থানের সামনে একটা হুজুর কে খবর দিয়ে এনে, তাদের জানাজা দিয়ে দাফন সম্পন্ন করলাম। 


তার পর আমি রাইসা কে আমার বাসায় নিয়ে আসি। রাইসা ঠিক হতে প্রায় তিন মাস সময় লেগে গেছে। আমি সবসময় রাইসার পাশে ছিলাম। তাকে বলছি এখন আমি তার সব। আজকে থেকে আমি তার বাবা মা। এরপর একটা কেজি স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিলাম। আমার লোক তাকে প্রতিদিন নিয়ে যায়, এবং নিয়ে আসে। 


এই ছিলো রাইসার কাহিনী। এবার বর্তমানে ফিরা যাক। আমি আপনাদের এখনো পরিচয় দি নাই। অনেক কথা বলে ফেলছি। শুধু আমার নামটা জেনে রাখুন, আমি রাসেল। সবাই মাফিয়া কিং নামে চিনে। আর কিছু জানা লাগবে না। গল্পের সাথে থাকুন সব জানতে পারবেন। 


আমি আর কোনো কিছু না ভেবে ঘুমিয়ে পড়লাম।রাইসার কপালে একটা চুমু দিলাম। তার রাইসা কে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পরলাম।  পরের দিন সকালে রাইসা আমাকে ডাকতে লাগল। আমি ঘুম ঘুম চোখে বললাম। 


আমি/: কি হয়েছে মামুনি। এতো সকাল সকাল ডাকছো কেন। আব্বু আরেক টু ঘুমাবো। 


রাইসা/: আব্বু আজকে তুমি আমাকে স্কুলে দিয়ে আসো। অনেক দিন হয়েছে তুমি আমাকে স্কুলে দিয়ে আসো না। 


আমি/: মামুনি আজকে আমার শরীর টা ভালো লাগছে না। আরেক দিন তোমাকে নিয়ে যাবো। আজকে তুমি ওদের সাথে যাও। 


রাইসা/: নাহ, আজকে তুমি আমাকে স্কুলে নিয়ে যাবে। আমি তোমার লোকের সাথে যাবো না। তুমি যদি আমাকে না নিয়ে যাও। তাহলে আমি স্কুলে যাবো না। 


কি আর করার রাইসার জোরাজুরিতে শুয়া থেকে উঠে রাইসা কে বললাম। 


আমি/: ঠিক আছে মামুনি। তুমি রেডি হয়ে নিচে গিয়ে নাস্তার টেবিলে আব্বুর জন্য অপেক্ষা করো। আব্বু ফ্রেশ হয়ে আসছি। 


রাইসা/: ঠিক আছে আব্বু। তুমি আমার লক্ষী আব্বু। তুমি আমার বেষ্ট আব্বু। ওম্মা। 


রাইসা আমার কপালে একটা চুমু দিয়ে রেডি হতে লাগলো। আমি দাঁড়িয়ে না থেকে ওয়াস রুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে আসলাম। রাইসা রেডি হয়ে নিচে চলে গেল। আমি একটা জামা গায়ে দিয়ে নিচে চলে আসলাম। 


চোখে এখনো অনেক ঘুম । রাতে দেরি করে ঘুমাইছি তো, । আমি নিচে এসে রাইসার পাশে একটা চেয়ার টেনে বসলাম। রাইসা কে নিজের হাতে নাস্তা খাইয়ে দিতে লাগলাম। সাথে আমিও খাচ্ছি।


বাপ মেয়ে নাস্তা করে বাসা থেকে বেরিয়ে, গাড়ি নিয়ে রাইসার স্কুলে যেতে লাগলাম। রাইসা প্রথম শ্রেণীতে পড়ে। আমার সামনে পিছে , আমার লোক গাড়ি নিয়ে আসছে। 


কিছুক্ষণ পর রাইসার স্কুলের সামনে চলে আসলাম। রাইসা গাড়ির থেকে নামার পর হঠাৎ একটা মেয়ে আমাদের সামনে আসলো। 


আমি মেয়েটাকে দেখে, পুরো অবাক হয়ে গেলাম। ও এখানে কেমন করে। ওর তো বাসা দিনাজপুরে। তার মানে এখানে শিক্ষকতা করতে আসছে। কিন্তু ওদের তো কোনো কিছুর কমতি নেই। 


তাহলে এখানে কেনো আসলো। আগের থেকে অনেক সুন্দর লাগছে তাকে। হঠাৎ রাইসার ডাকে দেন ভাংলো। রাইসা বললো। 


  হাঁসাতে সবাই পারে, তেমনি কাঁদাতেও পারে সবাই, কাঁদিয়ে যে মানাতে পারে, তারই হয় জয়। আর কাঁদিয়ে যে নিজেও কেঁদে ফেলে, তার মনে থাকে ভালোবাসা হারানোর ভয়...

*

*

*

*

* চলবে

*

*

*

* তো কেমন হয়েছে জানাবেন। ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আপনাদের কাছে লাইক এবং কমেন্ট চাইবো না। ভালো লাগলে করবেন। না লাগলে চলে যাবেন। 


গল্প/: বাবা মা হারা ছেলেটা যখন মাফিয়া কিং। ( গল্পের নাম চেঞ্জ করে দিছি)

*

* লেখক): রাসেল চৌধুরী 🌷♥️♥️♥️♥️♥️♥️♥️♥️♥️♥️♥️

*

* :::::::: সূচনা পর্ব::::::::::

*

*

* ধন্যবাদ সবাইকে পরবর্তি পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন 🌿🌷


গল্প/:: মা বাবা হারা ছেলেটা যখন মাফিয়া কিং।

*

*

* লেখক/:::: রাসেল চৌধুরী 🌷♥️♥️♥️♥️♥️♥️♥️♥️♥️♥️♥️♥️

*

*

* পর্ব/:::::::::: ( ২ ) ::::::::: ( দুই ) 

*

*

*

*

* তাহলে এখানে কেনো আসলো। আগের থেকে অনেক সুন্দর লাগছে তাকে। হঠাৎ রাইসার ডাকে দেন ভাংলো। রাইসা বললো। 


রাইসা/: আব্বু তুমি কোথায় হারিয়ে গেলে। তোমাকে সেই কখন থেকে ডাকছি। ওনি হচ্ছেন আমাদের নতুন টিচার। তোমাকে ওনার কথা গতকাল বলছি। 


রাইসার কথা শুনে পায়েল ( গল্পের নায়িকা ) বললো।


পায়েল/: কেমন আছো রাসেল। তোমাকে অনেক বছর পর দেখছি। তোমার মেয়েটা কিন্তু অনেক লক্ষী ।

পায়েল এর কথা শুনে আমি বললাম। 


আমি/: আলহামদুলিল্লাহ , আমি ভালো আছি। তা বড়লোক বাবার একমাত্র মেয়ে, হঠাৎ কেজি স্কূলে চাকরি করতে আসলেন কেনো। আপনাদের তো টাকা পয়সার অভাব নেই। 


পায়েল আমার কথা শুনে বললো।


পায়েল/: আসলে আমি এখানে চাকরি করতে আসি নাই। আমার এক বান্ধবী এই স্কূলে চাকরি করে। তার মা অনেক অসুস্থ। তাই ওর হয়ে আমি এইখানে আসি। সিমার ( বান্ধবীর নাম) আম্মু ভালো হয়ে গেলে। আমি বাসায় ফিরে যাবো। তা তুমি এখন কি করো। তোমার স্ত্রী কেমন আছে। 


আমি/: আমার কাজ হচ্ছে , খারাপ মানুষের ক্ষতি করা । তুমি হয়তো বাংলাদেশের একজন মাফিয়ার নাম শুনেছো। সেই মাফিয়া কিং আমি রাসেল। আর আমার সাথে যাদের দেখছো। ওরা সবাই আমার লোক। 


পায়েল/: তুমি তো এরকম কখনো ছিলে না। হঠাৎ তুমি এই পথে গেলে কেনো। তুমি তো অনেক ভালো একজন ছেলে ছিলে। সবাই তোমার অনেক সুনাম করতো। 


আমি/: সেটা অনেক কাহিনী। তাই আমি কাউকে বলতে চাই না। আর তুমি বলছে না, আমার স্ত্রী কেমন আছে। আমি এখনো বিয়ে করি নাই। আর করার কোনো ইচ্ছে নেই। তা এখন কি তোমার সেই অহংকার আছে। সবার সাথে কি বাবার ক্ষমতা দেখাও। 


পায়েল/: আমি এখন বাবার ক্ষমতা দেখাই না। আমি আগের থেকে ভালো হয়ে গেছি। আমি নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি। আচ্ছা রাইসা তাহলে কোথায় থেকে আসলো। আর ও তোমাকে বাবা বলে ডাকে কেনো। 


আমি/: আসলে রাইসার আব্বু আম্মু কারা যেনো মেরে ফেলেছে। ( তার পর সব কিছু খুলে বলি) এরপর রাইসা কে আমার বাসায় নিয়ে আসি। রাইসা আমাকে বাবা বলে ডাকে। আমি রাইসা কে নিয়ে সারাজীবন কাটিয়ে দিতে চাই। 


পায়েল/: তুমি যে কাজ করতে আছো। এই কাজে বেছে থাকার গ্যারান্টি নেই। তোমাকে যদি সন্ত্রাসীরা মেরে ফেলে। তাহলে তো রাইসা পুরো একা হয়ে যাবে। তুমি এই কাজ টা ছেড়ে দাও। 


আমি/: তোমাকে আমি বলি নাই, আমাকে জ্ঞান দিতে। আমাকে কেউ কিছু করতে পারবে না। একমাত্র আল্লাহ ছাড়া। তুমি রাইসা কে নিয়ে ভিতরে যাও। আমার একটা কাজ আছে। সেখানে যেতে হবে। আমি কাজটা শেষ করে রাইসা কে নিয়ে যাবো। 


এ কথা বলে , আমার লোক গুলোকে নিয়ে , নিজের কাজে যেতে লাগলাম। মোবাইল বের করে মেহেদী কে ফোন দিলাম। মেহেদী ফোন রিসিভ করার পর বললো। 


মেহেদী/: কিরে কি অবস্থা তোর। হঠাৎ ফোন দিলে যে। কোনো কাজ আছে নাকি। 


আমি/: আমি ভালো আছি। তোকে যে কারণে ফোন দিছি। সবাইকে ট্রেনিং দেওয়া কি হয়ে গেছে।


মেহেদী/: হুম, সবাইকে ট্রেনিং দেওয়া হয়ে গেছে। এখন আমরা নিচ থেকে উঠতে পারি। যে ট্রেনিং দিছি সবাইকে। ওদের একজন এর সাথে পাঁচ ছয়টা কিছু না ‌ 


আমি/: শুনে খুশি হলাম। এখন তাদের নিয়ে ওপরে উঠে আয়। রনির আস্তানায় গিয়ে, নয়ন কে তার সামনে মেরে আসবি। যদি মারতে পারিস, তাহলে আমাকে মাফিয়া কিং বলে জানবে। 


মেহেদী/: আরে ওদের মতো টোকাই মাস্তান কে মারতে আমার লোক গুলোই যথেষ্ট। তুই কোনো চিন্তা করিস না। তোর কাজ হয়ে যাবে। তা কোন সময় যেতে হবে। আর এখন তুই কোথায়। 


আমি/: তুই ওদের নিয়ে, বিকাল পাঁচটায় রনির আস্তানায় যাবি। আর আমি এখন রাফি এবং কিছু লোক নিয়ে, মন্ত্রীর বিপক্ষ প্রার্থীর বাসায় যাচ্ছি। ওকে বসিয়ে দিতে হবে। এ কাজের জন্য মন্ত্রী এক কোটি টাকা দিয়েছে। 


মেহেদী/: ঠিক আছে, তুই তাহলে ওই কাজ শেষ করে আয়। আমি সবাইকে রেডি করছি। নয়ন কে মেরে , তোর কাছে ফোন দিয়ে জানিয়ে দিবো। 


আমি ঠিক আছে বলে ফোন টা কেটে দিলাম। প্রায় ৩০ মিনিট পর মন্ত্রীর বিপক্ষ প্রার্থীর বাসায় চলে আসলাম। সিকিউরিটি গার্ড আমাদের আটকালে , রাফি ঠাসস করে দুই টা থাপ্পড় মেরে দেয়। 


সিকিউরিটি গার্ড আর কোনো কথা বলে নাই। গালে হাত দিয়ে চুপ হয়ে গেছে। আমরা সবাই বিপক্ষ প্রার্থীর দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কলিং বেল চাপ দিলাম। কিছুক্ষণ পর একজন মায়ের বয়সী লোক এসে দরজা খুলে দিলো। দেখে মনে হচ্ছে বিপক্ষ প্রার্থীর স্ত্রী ।


আমাকে আর রাফি কে দেখে বললো। 


মহিলা/: তোমরা কারা। আমার বাসায় কি। 


রাফি/: আপনার স্বামী কোথায়। তাকে একটু ডাক দেন। তার সাথে আমাদের কিছু কথা আছে। কথা গুলো বলে , আমরা চলে যাবো। 


রাফির কথা শুনে, মহিলা আমাদের ভিতরে গিয়ে বসতে বললো। তার পর মহিলা ভিতরে চলে গেল। আমি আর রাফি ভিতরে ঢুকে , চার পাশে তাকিয়ে দেখতে লাগলাম। 


মনে মনে বললাম। হায়রে সবকিছু অবৈধ টাকায়। করা। কিছুক্ষণ পর বিপক্ষ প্রার্থী আমাদের সামনে আসলো। আমাকে দেখে চিনে ফেলছে। তখন আমাকে বললো। 


বিপক্ষ প্রার্থী/: আরে রাসেল, তুমি আমার বাসায় কেনো। আমার লোকেরা কি, তোমার কোনো ক্ষতি করেছে। তুমি শুধু একবার বলো। আমি তোমার সামনে ওদের কঠিন শাস্তি দিবো। 


আমি/: আরে আমার কেউ কিছু করে নাই। আর কারো করার সাহস নেই। আমি যেটা বলার জন্য এসেছি। শুনেছি আপনি নাকি এবার মন্ত্রী নির্বাচন করবেন। 


বিপক্ষ প্রার্থী/: হুম, তুমি ঠিকই শুনেছো। আমি ওই সফিকুল কে, এবার হারিয়ে ছাড়বো।দেশের মানুষ আমার পক্ষে আছে। এবার আমার মন্ত্রী নির্বাচন কেউ ঠেকাতে পারবে না। 


আমি/: তাই নাকি। তাহলে আমি বসে বসে ললিপপ খাবো। আপনাকে বসানোর জন্য এক কোটি টাকা পেয়েছি। এখন আমি চাই আপনি বসে পড়ুন। তা না হলে এই রাসেল কি করতে পারে। আপনি তা ভালোই করে জানেন। 


বিপক্ষ প্রার্থী/: আমি কখনো, এবার বসবো না। এবার আমি নির্বাচন করবোই। তুমি আমার কিছুই করতে পারবে না। তুমি জানো না, আমার হাত বড় বড় মাফিয়াদের সাথে আছে। 


আমি/: আপনি মনে হয় জানেন না। আপনার কোথায় কি আছে, আমি সবকিছু জানি। আপনার ঢাকায় ছয়টা বাড়ি আছে। সব অবৈধ টাকায় করা। গুলশানের ভিতরে পাঁচ টা মদের গোডাউন আছে। তিনটা আবাসিক হোটেল আছে। এখানে মেয়েদের দিকে ব্যবসা করেন। আরো অনেক কিছু আছে। সেগুলোর কথা নাই বললাম। আমি যদি এগুলো দেশের মানুষ কে দেখাই, এবং ধংস করে দি। তাহলে আপনি কি ভাবে নির্বাচন করবেন। আমি যদি সরকার এর কাছে সবকিছু বলে দি। তাহলে আপনি কোথায় যাবেন। 


বিপক্ষ প্রার্থী/: প্লিজ রাসেল। তুমি আমার এতো বড় সর্বনাশ করো না। আমি তোমার কথায় রাজি আছি। আমি মন্ত্রী নির্বাচন করবো না। তার পরেও তুমি আমার ক্ষতি করো না। 


আমি/: কথা টা যেনো মনে থাকে। তা না হলে আমি কি করতে পারি, আপনি ভালোই করে জানেন। আমি যেনো , আপনার বাসায় আর আসতে না হয়। আবার যদি আসি, তাহলে আপনি দুনিয়া বেঁচে থাকবেন না। 


এ বলে বিপক্ষ প্রার্থীর বাসা থেকে সবাই বেরিয়ে আসলাম। বিপক্ষ প্রার্থীর বাসা থেকে বেরিয়ে সোজা স্কুলের সামনে চলে গেলাম। গেটের সামনে গিয়ে দেখি, রাইসা আর পায়েল দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে দেখে রাইসা দৌড় দিয়ে আমার সামনে আসলো। 


আমি/: কি ব্যাপার মামুনি, আজকে তোমার পড়ালেখা কেমন হয়েছে। কোনো শিক্ষক তোমার গায়ে কি হাত তুলছে। 


রাইসা/: না আব্বু।এই স্কূলের সবাই অনেক ভালো। আমাকে সবাই আদর করে। আব্বু ম্যাম তোমাকে কিছু কথা বলবে। ম্যাম আপনি কি বলবেন আব্বু কে। 


রাইসার কথা শুনে পায়েল আমার সামনে এসে বললো। 


পায়েল/: আসলে রাসেল, এখানে আমাকে কি একটা বাসা নিয়ে দিতে পারবে। সিমার বাসায় থাকতে , আমার ভালো লাগছে না। তাদের দুই টা রুম, একটায় ওর আব্বু আম্মু ঘুমায় , আরেক টায় সিমা আর ওর ভাই ঘুমায়, তার ওপরে আমি। তাই বলছি আমাকে একটা বাসা খুঁজে দাও। 


পায়েল এর কথা শুনে রাইসা , আমাকে বললো। 


রাইসা/: আব্বু , তুমি ম্যাম কে আমাদের বাসায় নিয়ে চলো। এখন থেকে ম্যাম আমাদের বাসায় থাকবে। আমার সাথে খেলবে, একসাথে কার্টুন দেখবে। আমার কাছে অনেক ভালো লাগবে। প্লিজ আব্বু তুমি না করো না। 


রাইসার কথা শুনে, আর মানা করতে পারলাম না। তাই আমি পায়েল কে বললাম। 


আমি/: তুমি আমার বাসায় থাকতে পারো। তবে আমার কোনো কিছুতে কথা বলতে পারবে না। আমি কখন কি করি, কোথায় যাই। অনেক রাতে বাসায় ফিরি কেনো। এসব কথা আমাকে বলতে পারবে না। শুধু রাইসার কথা ভেবে, তোমাকে বাসায় নিয়ে যাচ্ছি। 


পায়েল/: ঠিক আছে। আমি তোমার কোনো কিছুই তে কথা বলবো না। শুধু কিছুদিনের জন্য । সিমার আম্মু সুস্থ হলে , আমি বাসায় ফিরে যাবো। 


আমি ঠিক আছে বলে, পায়েল কে গাড়িতে উঠতে বললাম। রাইসা কে মাঝখানে বসালাম ‌ । আমি আর পায়েল রাইসার দুই পাশে বসলাম। 


কিছুক্ষণ পর বাসায় চলে আসলাম। গাড়িতে কেউ কোনো কথা বললাম না। গাড়ি থেকে নেমে আমি পায়েল এবং রাইসা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কলিং বেল চাপ দিলাম। কিছুক্ষণ পর খালা এসে দরজা খুলে দিলো। আমাদের সাথে পায়েল কে দেখে খালা বললো। 


খালা/: রাসেল, এই মেয়েটা কে। তাকে তো চিনতে পারলাম না। তোমার কি , কিছু হয়। 


আমি/: আসলে খালা, ও হ্চ্ছে পায়েল। আমরা দুজনে একসাথে দিনাজপুরে পড়েছি। এখানে একটা বান্ধবীর বাসায় এসেছে। ( তার পর সব খুলে বললাম) 


খালা/: ওহ, এই ব্যাপার, তোমার কোনো সমস্যা নেই মা। তোমার যতোদিন মন চায় থাকতে পারো। রাইসা আর আমি বাসায় সবসময় থাকি। রাসেল কাজে কামে বেশির ভাগ বাহিরে থাকে। 


আমি/: ঠিক আছে খালা। তুমি পায়েল কে একটা রুম দেখিয়ে দাও। আমি আমার রুমে গেলাম। আমি এখন একটু রেস্ট নিবো। কোনো কিছুর দরকার হলে রাফি অথবা বাহিরের লোক কে বলবে। তারা এনে দিবে। 


খালা/: ঠিক আছে রাসেল। তুমি রুমে গিয়ে রেষ্ট নাও। যদি খাবার টা খেয়ে ঘুম যেতে, তাহলে অনেক ভালো হতো। 


আমি/: ওকে খালা। আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি। তুমি খাবার রেডি করো। আর পায়েল তুমি ওপরে ডান পাশের রুমে চলে যাও। রুমে সবকিছু আছে। 


পায়েল ঠিক আছে বলে ওপরে চলে গেল। আমি ও আর কোনো কথা না বলে, রাইসা কে কোলে করে নিয়ে রুমে চলে আসলাম। 


বাপ মেয়ে দুজনে একসাথে গোসল করে, রাইসা কে জামা কাপড় পড়িয়ে দিয়ে, আমি একটা জামা গায়ে দিয়ে , দুজনে নিচে চলে আসলাম। 


আমি খালা এবং রাইসা চেয়ার টেনে বসলাম। তার পর পায়েল এর জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পর সিঁড়ির ওপর চোখ পড়তেই আমি চমকে উঠলাম। 


দেখি পায়েল একটা নীল রঙের জামা গায়ে দিয়ে নিচে নামতে আছে। দেখতে অনেক কিউট লাগছে। আরে এ আমি কি বলছি, আমার জীবনে এসব ভালোবাসা হবে না। 


পায়েল নিচে এসে, রাইসার পাশে একটা চেয়ার টেনে বসলো। তার পর খালা খাবার বেড়ে দিতে লাগলো। হঠাৎ দেখি রাফি এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে । তখন আমি বললাম।


আমি/: কিরে , তুই ওখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন। তোকে কি বলে বসাতে হবে। নাকি তোর লজ্জা করছে, আমাদের সাথে বসতে।


রাফি/: আসলে তেমন কিছু না। তোরা খেয়ে নেয়। আমি পরে খাবো। 


আমি/: আর একটা কথা বলবি। তোর মাথা পাঠিয়ে ফেলবো। তাড়াতাড়ি চেয়ার টেনে বস। 


রাফি আর কোনো কথা না বলে, একটা চেয়ার টেনে বসলো। খালাও আমাদের সাথে বসে পড়লো। সবাই মিলে খাবার খাচ্ছি। আমি রাইসা কে খাইয়ে দিতে লাগলাম। নিজেও খেতে লাগলাম। 


হঠাৎ রাইসা বলে উঠলো। 


রাইসা/: ম্যাম , আপনি একা একা খাচ্ছেন। আমাকে খাইয়ে দিবেন না। আমার খুব ইচ্ছে করছে, আপনার হাতে খাবার খেতে। 


পায়েল/: সরি রাইসা। আমি মনে করছি, তুমি তোমার আব্বুর হাতে ছাড়া অন্য কারো হাতে খাবার খাও না। তাই তোমাকে বলি নাই। তুমি হা করো , আমি তোমাকে খাইয়ে দিচ্ছি। 


পায়েল এর কথা মতো রাইসা হা করলো। তার পর পায়েল রাইসা কে খাবার খাইয়ে দিতে লাগলো। 


আমি মনে মনে বলছি। রাইসা এই দুই দিনে পায়েল কে কতো আপন করে নিচে। আমার কাছেও অনেক ভালো লাগছে। সারাদিন কাজের মধ্যে থাকি। রাইসা কে ঠিক ভাবে সময় দিতে পারি না। রাইসা কি সুন্দর করে পায়েল এর হাতে খাবার খাচ্ছে। 


আমার খাওয়া শেষ হলে, আমি রুমে চলে আসি। তার পর বিছানায় শুয়ে একটা ঘুম দিলাম। হঠাৎ মোবাইলের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি, সন্ধ্যা হয়ে গেছে। 


তার পর মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি মেহেদী ফোন দিছে। আমি ফোন রিসিভ করার পর মেহেদি বললো। 


মেহেদী/: রাসেল কাজ শেষ। নয়নের শরীর থেকে মাথা আলাদা করে ফেললাম। রনিকে পায়ের মধ্যে দুই টা গুলি করেছি। রনি তার ভাইয়ের মরা দেহের সামনে বসে কান্না করছে। আসার সময় রনিকে ওয়ার্নিং দিয়ে এসেছি‌ । আর কখনো যেনো, তোর কাছে বাঁধা দেয়। যদি কখনো দেয়, তাহলে ওর ভাইয়ের মতো, তাকেও ওপরে পাঠিয়ে দিবো। 


আমি/: শুনে খুব খুশি হলাম। রনি হয়তো আমাকে ছোট খাটো মাস্তান মনে করছে। আমার পাওয়ার সমন্ধে তার কোনো আইডিয়া নেই। ও সিংহের গুহায় পা দিচে। 


মেহেদী/: ঠিক কথা বলেছিস। এখন বল, আমরা কি করবো। আবার কি মাটির নিচে চলে যাবো। নাকি ওপরে থাকবো। 


আমি/: নাহ, তোরা ওপরে থাকার দরকার নেই। তোরা আবার নিচে চলে যা। দরকার হলে, আমি তোকে জানাবো। 


মেহেদী ঠিক আছে বলে ফোন কেটে দিলো। আমি বিছানা থেকে উঠে ওয়াস রুমে ফ্রেল হতে চলে গেলাম। 


ফ্রেশ হয়ে, একটা জামা গায়ে দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসতেই কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে দুজনে নিচে পড়ে গেলাম। 


  শুধুমাত্র তোমার হাসিটা দেখার জন্য, কয়েক হাজার বছর এক নিমেষেই বেঁচে থাকা যায়। হোক সে হাসির কারণ অন্য কেউ... তবু...


  মনের মধ্যে প্রবাহমান ঝর্ণা, এনে দিলো ভালোবাসার বন্যা। ভাসিয়ে নিলো বিস্মৃতির ভেলা, শুরু হলো ভালোবাসার খেলা।

*

*

*

* চলবে

*

*

*

* তো কেমন হয়েছে জানাবেন। কালকের পর্বে আপনাদের কিছু কথা ক্লিয়ার করবো। তাহলে আপনাদের মাথায় সবকিছু ঢুকবে। 


ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। ভালো লাগলে লাইক এবং কমেন্ট করবেন। তা না হলে এড়িয়ে চলবেন। 


*

*

* ধন্যবাদ সবাইকে পরবর্তি পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন 🌿🌷

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post