গল্পঃআপুর_দুষ্টু_বান্ধবী পর্বঃ৬ + ৭

 #গল্পঃআপুর_দুষ্টু_বান্ধবী 


#লেখকঃRJ_Rafy


#পর্বঃ৬


মিম আপুর কথা শুনে আমি বোকা বুনে গেলাম, হায় আল্লাহ এ মেয়ে বলে কি?🙄 ও নাকি আমাকে লাভ করে। 


আচ্ছা ওনি আবার আমার সাথে মজা করছেন নাতো, হলেও হতে পারে ওনি যে পরিমাণ দুষ্টু!😅 একথা মনে আসতেই আমি হেসে ফেললাম।


পরে আবার কালকে উত্তর জানার কথাটা মাথায় আসতেই আমি কি বলবো বুঝতে পারছিনা, যদি না বলে দিয় তাহলে যদি আম্মুর কাছে আমার সিগারেট খাওয়ার বিষয়টা বলে দেয় তখন আমার কি হবে!🥺


এসব ভাবতে ভাবতে বাসায় ঢুকছি তখনি নীলা আপু বলে উঠলো?😪


—কিরে মিমের সাথে কই গেছিলো, হুম!🤨

(নীলা আপু আমার পথ আটকিয়ে)


—প্রেম করতে!😬

(আমি দাঁতে দাঁত চেপে) 


—মিম তো আমায় এ বিষয়ে কিছু বলেনি হুম?🙄

(নীলা আপু)


—দেখ ভাল লাগছে না,

পথ ছাড়!😡

(আমি রেগে)


—হুম।

(নীলা)


আমি নিজের রুমে গিয়ে দরজাটা আটকিয়ে ভাবতে লাগলাম গত দুদিনের ঘটনা গুলো, আর সবথেকে আমার কাছে একটা বিষয় খটকা লাগলো যেটা হলো?🤔 


মিম আপু যদি সত্যিই আমাকে ভালো না বাসে তাহলে তো সাথিকে থাপ্পড় মারতো, আর যদি ওনি সত্যিই আমাকে ভালোবেসে থাকে। তাহলে আমি তাকে কি উত্তর দিবো, আমি তো তাকে ভালোবাসি না!🙄


মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল, কি করবো ভেবে পারছি না, নাকি হ্যাঁ বলে দিবো। দ্যাট ভালোই লাগছে না,😟 সেদিন পুরো রাত এমন ভাবেই কেঁটেগেল।


সকালে রেডি হয়ে নাস্তা খেয়ে রুমে এসে বসে আছি, ভাবছি আজকে কি কলেজে যাবো না-কি যাবো না।🙄 যদি যায় তাহলে তো উত্তরটা দিতে হবে তখন তো!🥺


হঠাৎই আমার ফোনে একটা মেসেস আসলো, যেটা দেখে আমি চমকে গেলাম। কারণ মেসেসে লিখা ছিল, আমি যেন ৩০ মিনিটের ভেতর কলেজের ক্যানটিনে যায়। আর মেসেস টা ছিল মিম আপুর!🤨 আরো লিখা ছিল, যদি আমি ৩০ মিনিটের আগে ক্যানটিনে গিয়ে মিম আপুর সাথে দেখে না করি তাহলে ওনি আমার সিগারেট খাওয়ার কথা আম্মুকে বলে দিবে!😟


এবার মেজাজটাই গরম হয়ে গেল, দ্যাট যা হবার পরে হবে আগে গিয়ে দেখ করি আসি!😤 আমি বাসা থেকে বেরিয়ে বুকের ছাতি টা ৫৬ ইঞ্চি ফুলিয়ে কলেজে ভিতরে প্রবেশ করলাম আর যখনি ক্যানটিনে ঢুকে মিম আপুকে দেখলাম তখনি আমার ৫৬ ইঞ্চির ছাটি ট নড়েচড়ে একবারে দিশেহারা!😅


আমি গিয়ে মিম আপুর পাশে বসলাম। দেখলাম, ওনি এক ধ্যানে আমার দিকে তাকিয়ে আছে!🙈 আমি হালকা কাশি দিতেই ওনার ধ্যান ভেঙে গেল।😁


—তা কি সিদ্ধান্ত নিলে, হুম।

(মিম আপু উত্তরের আশায় আমার দিকে তাকিয়ে) 


ওনার এমন আপনি বলে সমবেদনায় আমার বুকে ঢড়ফড়ানো শুরু করলো, যেন আমার বুকে একরাশ ভূমিকম্প হচ্ছে!😇 


—কি হলো বলছ না যে?🤨

(মিম আপু আমার দিকে তাকিয়ে) 


—কি বলবো!😔

(আমি)


ভয়ে আমার গা বেয়ে ঘাম পড়ছে, আসলে কি উত্তর দিবো সে টেনশনে। হঠাৎ খেয়াল করলাম, মিম আপু ওনার ওড়না দিয়ে আমার মুখের ঘাম মুছে দিচ্ছে!🙈 


—কেন তুমি জানো না!🤗

(মিম আপু হালকা হেসে)


—দেখেন, আপনি যা চাচ্ছেন তা কখনো সম্ভব না আর হবারও!😔

(আমি মাথা নিচু করে)


—কেন?🥺

(মিম) 


—প্রথমত তো আপনি বয়সে আমার বড়, দ্বিতীয়ত আপনি যা চাচ্ছেস তা কখনো সম্ভব না। তার চেয়ে বরং আমি একটা ছেলে দেখে বিয়ে করে নেন সেটাই আপনার জন্য বেটার হবে, কারণ আপনি আমার চেয়েও অনেক ভালো ছেলে পাবেন, হুম!

(আমি) 


—আমি তোমার কাছে এতকিছু শুনতে আসিনি, আমি শুধু তোমার উত্তরটা শুনতে আসছি!🥺

(মিম হালকা কাঁদোকাঁদো গলায়) 


—আমি আপনাকে ভালোবাসি না।

(আমি এবলেই যেই উঠে চলে যাবো তখনি মিম আপু হাত ধরে কাঁদতে কাঁদতে বললো)


—তুমি কেন আমায় ভালোবাসো না, হুম!🙁

(মিম)


—কারণ, আপনার প্রতি আমার কোনো ফিলিংস নেই। আর থাকতো ভালোবাসা!🤨

(আমি আমার থেকে ওনার হাতটা ছাড়িয়ে ক্লাসে দিকে গেলাম)


আচ্ছা সত্যিই কি ওনার প্রতি আমার কোনো ফিলিংসে নেয়, তাহলে গত ১ দিনের ওনার প্রতি আমার যে ফিলিংস গুলো ছিল সেগুলো। আর আজকে ওনাকে দেখে আমার বুকের ধড়ফড়ানো তা কি মিথ্যে। ঠিক ভুল কি তা আমি জানি না, তবে আমার যা মনে হয়েছে তা ঠিক তা-ই করেছি!😊 


কয়েকটা ক্লাস করে বাসায় চলে আসলাম, বাসায় ফিরে দেখি নীলা আপু আজকে তাড়াতাড়ি চলে আসছে। আমি ওনার কাছে উত্তর জানতে চাইলে ওনি বলেন।


—আজকে মিমের শরির টা খারাপ লাগছিল তাই তাড়াতাড়ি চলে আসছি!🤨

(নীলা আপু)


—তা কি হয়েছে ওনার।🙄

(আমি জেনেও না জানার ভান করে)


—জানি নাহ্,

কালকে থেকে আজ সকাল পর্যন্তই মেয়েটা খুশি জানি নাহ্ হঠাৎ করে ওর কি হল। আচ্ছা আমি গেলাম!

(নীলা আপু এবলেই চলে গেল)


আচ্ছা মিম কি সত্যিই আমাকে ভালোবাসে?🙄 দূর ওনি আমাকে ভালোবাসলেই বা আমার কি, আমি তো আর ওনাকে ভালোবাসি না।😊 


বিকেলে ঘুমিয়ে আছি তখনি চেঁচামেচির আওয়াজে ঘুম ভেঙে গেল, আমি তাড়াতাড়ি ফ্রেস হয়ে নিচে নামতেই শুনি মিম আপু নাকি সুইসাইড করেছে।😳


#চলবে................

#গল্পঃআপুর_দুষ্টু_বান্ধবী 


#লেখকঃRJ_Rafy


#পর্বঃ৭


আচ্ছা মিম আপু কি আমাকে ভালোবাসে!🙄 যদি ভালো না বাসে তাহলে তো সুইসাইড করতো না, দূর এখন এসব ভাববার সময় না।


তাড়াতাড়ি বাসায় থেকে আমি আর আম্মু বের হয়ে হাসপাতালের উদ্দেশ্য রওনা হলাম নীলা আপু আগেই চলে গেছে!🤨


হাসপাতালে গিয়ে দেখি মিম আপুকে একটা কেবিনে করে ওটিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে!😔 এমন সময় আমার বুক মোচড় মেরে উঠলো? আমার বুকের ধড়ফড়ন যেন বাড়তে লাগলো।🙄


আন্টি বসে বসে কাঁদছেন আর আম্মু আর নীলা আপু ওনাকে শান্তনা দিচ্ছেন!🙁 আমি আন্টিকে শান্তনা দিয়ে হাসপাতালের বাহিরে চলে আসলাম।


তারপর ফোন করে রাজ আর আবিরের কাছে পুরো বিষয়টা শেয়ার করলাম। দেখি ওরা কোনো সাজেশন দিতে পারেনি!🤨 


—দোস্ত, মিম আপু কিন্তু হেব্বি কিউট একটা চাঞ্জ নিলেও নিতে পারিস!😍

(আবির হাসতে হাসতে) 


—আমি মরি জ্বালায় আর তুই বলছিস চাঞ্জের কথা, বাইনচোদ একবারও ভেবে দেখছিল। যদি ওনি কোনো ভাবে আমার কথা আমার আর ওর পরিবারের কাছে বলে দেয় তখন আমার কি হবে!🥺

(আমি)


—তা-ও ঠিক।

(আবির)


—আচ্ছা দোস্ত রাখি রে?😤

(আমি) 


আমি ফোন কেঁটে দিয়ে হাসপাতালের বাহিরের দোকান থেকে একটা বেনসন সিগারেট কিনে দোকানে বসে খেতে লাগলাম!🤨 আল্লাহ ই জানে, আজ কি আছে আমার কপালে?🙄


সিগারেট টা শেষ করে এটার বিল মিটিয়ে হাসপাতালে গিয়ে দেখলাম মিম আপুকে বেডে দেওয়া আছে, তবে ওনি এখনো ঘুমিয়ে আছে। ডাক্তার বলেছে, ২,৩ ঘন্টার মধ্যে ওনার জ্ঞান ফিরবে!


আম্মু আন্টিকে সাথে করে বাসায় চলে গেলেন আসলে আন্টি এখানে শুধু কাঁদতে ছিলেন, যার কারণে আম্মু ওনাকে নিয়ে চলে যান আর তারা রাত্তে খাবার নিয়ে একবারে আসবে!😊


আর এইদিকে আম্মু যাবার আগে বলে গেছে, আমি আর নীলা আপু যেন এখান থেকে এক চুলও না সরি! তাহলে না-কি আমাদের খবর করে ছাড়বে।🤨


আম্মু আর আন্টি যেতে দেরি কিন্তু নীলা আপু আমার সার্টের কলার ধরতে দেরি করেনি!🙈 


—এই তুই মিমকে কি বলছিস?😬

(নীলা আপু দাঁতে দাঁত চেপে) 


—কি আবার কি বলবো!😟

(আমি ভয় পেয়ে)


—দেখ আমার দেখে কিছু লুকাছ না,

মিম যে তোকে ভালোবাসে সেটা আমি জানি।🤨

(নীলা আপু)


তারপর আপুকে সবটা বললাম, আমার বলা শেষ হতেই নীলা আপু আমার গালে ঠাস করে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলো!😔


—তাই বলে, তুই তো ওকে বলতে পারতি।

মিম আমার কিছুদিন সময় দাও তারপর আমি তোমার উত্তরটা জানাচ্ছি।😡

(নীলা আপু রেগে)


নীলা আপু আমার কলার ছেড়ে দিয়ে মিম আপুর পাশে বসলো, আর আমি দাঁড়িয়ে রইলাম। একটুপর আপু বললো!😪


—তুই এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন,

চলে যা এখানে থেকে!😡

(নীলা আপু রেগেমেগে) 


আমিও চলে যেতে লাগলাম, দরজার কাছে যেতেই আপু বলে উঠলো!


—মেয়েটা কষ্ট দিয়েও তোর পেট ভরেনি আবারো ওকে কাঁদাতে তোর মন চাচ্ছে বুঝি।😟

(নীলা আপু কাঁদোকাঁদো গলায়)


—তুমিই তো বললা, এখান থেকে চলে যেতেই।

(আমি)


—তাই বলে তুই চলে যাবি,

বস এখানে।

(নীলা আপু)


আমি গিয়ে একটা চেয়ার টেনে বসলাম। 


—দেখ লক্ষি ভাই আমার, প্লিজ তুই ওকে মেনে নে। ও তোকে খুব সুখি রাখবে।

(নীলা)


—প্লিজ, আমাকে ভাববার সময় দাও। আমি আর প্যারা নিতে পারছি না!😤

(আমি রেগে)


ঘন্টাখানেক পর আমি বাহিরে একটু হাঁটতে আসলাম আসলে ভিতরে বোরিং লাগছিল!😅 একটুপর রুমের সামনে যেতেই দেখি ডাক্তার বের হচ্ছে!🙄 


আমি তাড়াতাড়ি রুমে ঢুকে দেখি মিম আপুর জ্ঞান ফিরছে, আর ওরা দুজন গল্প করছে। আমি রুমে ঢুকতেই নীলা আপু একটা মুসকি হাসি দিয়ে বাহিরে চলে গেল!😇


—কেন আসছিস এখানে?😡

(মিম আপু রেগে)


—তোমাকে দেখতে!

(আমি)


—আমি বাঘ না ভাল্লুক যে আমাকে দেখতে হবে?😡

(মিম আপু রাগি গলায়) 


—হতেও পারে!😌

(আমি মুসকি হেসে)


—কিইইইই।

(নীলা রেগে)


—শরির এখন কেমন লাগছে?🤨

(আমি ওনার পাশে বসে)


—জানি না।😔

(মিম)


—এই যে আমি চলে আসছি, তাড়াতাড়ি খাবার গুলো খেয়ে নে এখন ওষুধ খেতে হবে।😊

(নীলা আপু)


আমি বাহিরে চলে আসলাম, বুঝলাম মেয়েটা বড্ড কষ্ট পাচ্ছে। কিন্তু আমি কি করবো হ্যাঁ, ওর জন্য তো আমার মনে কোনো ফিলিংস নেই!🙄


তারপর বাহিরে ঘুরাঘুরি করে একবারে রাত্তে হাসপাতালে এসে দেখি আম্মু আর আন্টি আগেই চলে আসছে। সবাই মিম আপুর সাথে সবাই কথা বলতেছে!


আমি রুমে ঢুকতেই আম্মু এসে আমার গালে দুটো থাপ্পড় বসিয়ে দিলো, আমি নীলা আপুর তাকাতেই ওনি ইশারায় বুঝিয়ে দিলেন মিম আপু সবটা বলে দিছে!😔


আমার এখন যে কি পরিমাণ রাগ বলে বোঝাতে পারবোনা।😡 আমি মিম আপুর দিকে তাকাতেই দেখি ওনি আমাকে একটা চোখ টিপ মারলো।😳


কি দুষ্টু মেয়েরে বাপু, এমন সিচুয়েশনে বুঝি মানুষ এমন দুষ্টুমি করে!🙄 যাই হোক এখন আমার রক্ষি হলেই আমি বাঁচি বাপু!😇


#চলবে................


গল্প পড়তে চাইলে আমার ওই আইডিটা ফলো করে পাশে থাকুন, নিচে লিংক দেওয়া আছে!😍 


Post a Comment (0)
Previous Post Next Post