
#গল্পঃআপুর_দুষ্টু_বান্ধবী
#লেখকঃRJ_Rafy
#পর্বঃ৪
—এ-ই রাফি!
(নীলা)
আমি পাশ ফিরে দেখি নীলা আপু দাঁড়িয়ে,
—হুম।
(আমি)
—মন খারাপ করে আসিছ যে?🤨
(নীলা)
—নাহ্ এমনিই।😊
(আমি হালকা হেসে)
—দেখ, মিম না বুঝেই সাথির গায়ে হাত তুলে ফেলছে তার জন্য আমি ওর হয়ে তোর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি!🙁
(নীলা আপু মুখটা মলিন করে)
—এখানে ক্ষমা করার আমি কে হুম,
ক্ষমা চাইতে হলে তোমার বান্ধবীকে বলো সাথির কাছে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে আসতে!🤨
(আমি এবলেই গোসল করতে চলে গেলাম)
বিকেলে ঘুমিয়ে আছি, হঠাৎ কারো হাতের স্পর্শে আমার ঘুম ভেঙে যায়। আমি চোখ মেলে তাকিয়ে দেখি, মিম আপু আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে!😳 হঠাৎই আমাদের দু'জনের চোখাচোখি হতেই মিম আপু লজ্জায় আমার মাথা থেকে ওনার হাতটা নামিয়ে নিলো তারপর!😌
—রাফি, সকালের ঘটনার জন্য আমি সরি।
(মিম)
—নিশ্চুপ।
(আমি চুপ করে আছি)
—কিরে চুপ করে আসিছ যে,
আমি ওই ঘটনার সত্যিই সরি হুম।😔
(মিম মুখটা কালো করে)
—এখানে ক্ষমা করার আমি কে হুম।
ক্ষমা চাইতে হলে ওর কাছেই চাও, যত্তসব ঢং!🤨
(আমি মিম আপুকে মুখটা ভেংচি মেরে ফ্রেস হতে চলে গেলাম)
ফ্রেস হয়ে নিচে গিয়ে দেখি নীলা আপু আর মিম আপু ওখানে বসে মুভি দেখতেছে, মিম আপুর দিকে তাকাতেই দেখি ওনি মুখটা গোমড়া করে বসে আছে। ওনার এমন লুক দেখে আমার সত্যিই হাসি পাচ্ছে, হিহিহি!😁
তারপর আম্মুকে বলে বাসা থেকে বাহিরে আসলাম, অবশ্য আজকে কোথাও যাওয়ার প্ল্যান নেই তবে রাজ আর আবিরকে অনেক দিন দেখি না। হারামি দু'টো প্রেম করে বহুত প্যারাই আছে, হিহিহি.....!!!😅 তাই ওদেরকে ফোন করে মিন্টু মামার চা দোকানে বসতে বললাম! আমি ওখানে গিয়ে দেখি তারা আমাকে বাদ দিয়েই চা খাচ্ছে।😡
—মাম্মা কেমন আছ?😏
(আবির চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে)
—এ-ই তো গার্লফ্রেন্ড ছাড়া একটা মানুষ যেমনটা থাকে আর-কি.....!!!!😁
(আমি হালকে হেসে)
—হু।😔
(আবির মুখটা কারো করে)
—দেখ রাফি,
আমাদের রাগাস না কিন্তু!🤨
(রাজ চায়ের কাপটা টেবিলে রেখে)
—রাগাবো না তো কি করবো শুনি, গত দুদিন ধরে তোদের পাত্তা ও নেই আর থাকতো ফোন! আর এখন আমাকে বাদ দিয়েই চা খাওয়া বাহ্ বেশতো!🤗
(আমি ভাব নিয়ে)
দেখলাম ওরা দুজনে একবারে চুপ হয়ে গেছে।
—আরেহ তোরা আবার মন খারাপ করিস না, আমি তো জাস্ট মজা করলাম, হিহিহি!😁
(আমি ওদেরকে হাসানোর জন্য বললাম)
—নারে দোস্ত তুই ঠিকিই বলেছিস, গার্লফ্রেন্ডের প্যারাই নিজের বন্ধুদের সময়ই দিতে পারি না হুম। আমি কালকেই মিথিলার সাথে ব্রেকাপ করে দিবো!😊
(রাজ হালকা হাসার চেষ্টা করে)
—আমিও রানির সাথে কালকেই সম্পর্ক শেষ করে দিবো, এ-ই প্যারা নিয়ে আর চলা সম্ভব না।
(আবির মুখটা মলিন করে)
—তোরা আমার জন্য,
(আমি)
ওরা আমাকে থামিয়ে দিয়ে বলা শুরু করলো,
—দেখ, ভালোবাসা সবসময় থাকে না। কিন্তু বন্ধুত্ব সারাজীবন অটুট থাকে!❤️
(আবির হেসে)
আমিও আর কিছু বললাম না, তিবে একটাই চিন্তা যদি ওরা সত্যিই ওদের সাথে রিলেশন শেষ করে দেয়। ওরা তো ঠিক থাকতে পারবে না কারণ, শত হলেও ওরা দু'জন ওদেরকে ভিষণ ভালোবাসে!🙁
আমরা তিনজনে প্রায় সন্ধ্যা পর্যন্ত আড্ডা দিয়ে যে যার বাসায় ফিরলাম। বাসায় ফিরে দেখলাম বাসায় তালা মারা!😳 খানিকটা অবাক হলাম, ওই সন্ধায় আম্মু আর আপু আবার কই গেল। একটু চিন্তায় পড়লাম, নাহ্ একবার মিম আপুদের বাসায় যাওয়া যাক। ওখানে থাকতে পারে। যেই ভাবা সেই কাজ ওখানে গিয়ে দেখি আম্মু, আপু ওরা এখানে। আন্টির কাজ থেকে শুনলাম, আজকে রাত্তে আমরা এখানে ডিনার করবো!😪
এখানে দেখলাম সবাই যে যার মতো ব্যস্ত, আন্টির সাথে আম্মুও কিচেনে কাজ করছে আর নীলা আপু ওদেরকে সাহায্য করছে। তবে মিম আপুকে দেখছি না!🙄
—আন্টি মিম আপুকে দেখছি না যে!🙄
(আমি কিচেনে গিয়ে)
—ওর না-কি শরিরটা ভালো লাগছে তাই শুয়ে আছে, তুমি বরং গিয়ে ওর সাথে গল্প করো!
(আন্টি কাজ করতে করতে)
আন্টির কথা আপু আমার দিকে তাকিয়ে একটু মুসকি হাসলো!😳 বাট হুয়াই.....!!!🙄
আমি মিম আপুর রুমে গিয়ে উঁকি মেরে দেখি ওনি বিছানায় শুয়ে আছে, হয়তো শরির খারাপ তাই। আমি ওনার রুমে ঢুকে হালকা কাশি দিয়ে বললাম।
—শরির খারাপ না-কি!🙄
(আমি)
—নারে মনটা খারাপ!😤
(মিম আপু বিছানা থেকে উঠে বসে)
—কি বেয়াদব মেয়েরে বাপু,
একটু বসতে ও বললো না!😅
(আমি মুসকি হেসে)
—বস!😡
(মিম রেগে)
আমি গিয়ে বিছানায় বসলাম!🤗
—তা মন খারাপ কেন,
কারো প্রেমে পড়লে বুঝি, হিহিহিহি.....!!!😁
(আমি হাসতে হাসতে)
—দেখ ভালো হচ্ছে না কিন্তু!😤
(মিম)
—তা ছেলেটা কে শুনি তো?🤨
(আমি ওনার দিকে তাকিয়ে)
—আমার ডিয়ার হবু জামাই।😍
(মিম মুসকি হেসে)
—ওমা মাইয়া কই কি,
তা সেই সৌভাগ্যবান পোলা টার নাম কি!😁😁
(আমি মুসকি হেসে)
—রাফি!😅
(মিম আপু হাসতে হাসতে)
—কিইইইই।😳
(আমি বিছানা থেকে উঠে)
—হুম রে,
বিয়ে করবি আমারে.....!!!😁
(মিম এবলেই আবারো হাসতে লাগলো)
—দ্যাট!😡
(আমি রেগেমেগে নিচে চলে আসলাম)
কি বেয়াদব মেয়েরে বাপু!🙄 তে আমারে বিয়ার অপার দে, আর শালার সিম কোম্পানি এখনো আমারে কোনো অপার তো ছাঁই একখান প্রেমের প্রপোজালও দেয়নাই!😅 তোগোরে মুই কিত্তাম কইতাম হারিয়ের না!😁 নিচে গিয়ে সোফায় বসে টিবিতে মুভি দেখছিলাম তখন আপু এসে নাস্তা দিয়ে যায়।
—আপু শুনো!😏
(আমি)
—কি বলবি বল?🙄
(নীলা আপু আমার সামনে এসে)
—তোমার বান্ধবী টা কি বেয়াদব মেয়েরে বাপু!🤗
(আমি নাস্তা খেতে খেতে)
—কেন রে ও আবার কি করলো?🤨
(নীলা আমার দিকে তাকিয়ে)
—তে আমারে বিয়ের অপার দেই!😤
(আমি)
—কিইইইই!😳
(নীলা আপু অবাক হয়ে)
—হুম।🙁
(আমি)
—তাহলে তো হয়েই গেল!😁
(নীলা হাসতে হাসতে চলে গেল)
আর এদিকে আপুর কান্ড থেকে আমি অবাক!😳 ওমা দুইটারই তার ছিড়া।😁 নইলে কি, আপুর নিজের বান্ধবী আমারে বিয়ের অপার দেয়ার পরও আপু হাসতো হুম!😔 আল্লাহ ই জানে, মিম আপু যদি মজা করে বলে তাহলে তো আমি বিন্দাস তবে ভুল বসত যদি ওনি আমার ঘাড়ে বসে পড়ে। তাহলে আমার সাধের জীবন তেজপাতা বানিয়ে ছাড়বে!🤨 এমনিতেই যা করে আর যদি বিয়ে করে তাহলে তো!😟
রাত ১০ টার আমরা সবাই একসাথে খেতে বসলাম, নীলা আপু আমার পাশে বসলেও মিম আপু আমার সামনাসামনি!🤨 খাবার খাচ্ছি এমন সময় কে যেন আমার পা দুটো তে সুরসুরি দিচ্ছে, আমি রাগি লুক নিয়ে সামনে তাকিয়ে দেখি মিম আপু হাসতেছে তারমানে এটা ওনারি কাজ!😡 অনেক কষ্টে খাওয়া শেষ করে বাসায় ফিরলাম।🤗 সকালে কলেজে যেতেই আরেক কান্ড ঘটে বসলো কারণ, কলেজে ঢুকতেই দুটো মেয়ে এসে পা দুটো জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি শুরু করলো!😳 আর আমি ওদের পা জড়িয়ে ধরার সুরসুরিতে একবারে দিশেহারা।😁
#চলবে..................
যারা আমার গল্প পড়তে ভালোবাসেন তারা আমার ওই আইডিটা ফলো করে পাশে থাকুন, নিচে লিংক দিয়ে দিচ্ছি!😍
আর যারা আমার গ্রুপে এড হন নাই তারা আমার গ্রুপে এড হয়ে নিন, নিচে লিংক দেওয়া আছে!❤️
#গল্পঃআপুর_দুষ্টু_বান্ধবী
#লেখকঃRJ_Rafy
#পর্বঃ৫
—ভাইয়া ওদেরকে বলুন না, আমাদের সাথে যেন এমন না করে প্লিজ ভাইয়া!🥺🥺
(রানি)
ওরা দুজন কাঁদতে কাঁদতে একবারে গড়াগড়ি খাওয়ার মতো অবস্থা!😅 যায় হোক, ওদের লাইনটা ক্লিয়ার করে দিলাম। ওহ, আপনারা তো বুঝেন নাই ওরা কারা, ওরা হচ্ছে রানি আর মিথিলা। আর আজকে সকালেই আমার প্রাণ প্রিয় বন্ধু রাজ, আবির ওরা রানি আর মিথিলার সাথে রিলেশন শেষ করে দেয়। আর বাকিটা তো আপনারা জানেনই!🤗
কলেজ থেকে বের হয়ে একটা খালি যায়গায় গিয়ে যেই সিগারেট ধরিয়ে দুই টান দিলাম তখনি কোন হালায় যেন আমায় হালকা ধাক্কা দিলো!😡
—হাব্বে হালায় কে রে ধাক্কা মারলি!😡
(আমি রাগি লুক নিয়ে পিছনে তাকিয়ে দেখি মিম আপু দাঁড়িয়ে)
—কি যেন বলেছিলি?🤨
(মিম)
—কই কিছু না তো!😔
(আমি ভয় পেয়ে)
ভয়ে আমার অবস্থা নাজেহাল, কি করবো নিজেই বুঝে উঠতে পারছি না।🙄
—বুঝলাম কিছু বলিস নি,
তো তোর হাতে ওইটা কি!😪
(মিম আপু রাগি লুক নিয়ে)
ভয়ের চোটে হাত থেকে সিগারেট টাও ফেলতে মনে নেই, আল্লাহ ই জানে কি আছে আজ আমার কপালে!😟
—কিরে চুপ করে আছিস যে!😬
(মিম দাঁতে দাঁত চেপে)
—আসলে হয়েছে কি!🤔
(আমি মাথা চুলকাতে চুলকাতে)
ঠাস করে মিম আপু আমার একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলো।🙈
—সিগারেট কবে থেকে খাস, হুম।🤨
(মিম)
—এইতো, আজ অল্প কয়েকদিন হবে!🙈
(আমি গালে হাত দিয়ে)
ডাহামিথ্যে কথা, যদি সত্যিটা বলতাম তাহলে আমার গাল দু'টো একবারে টমেটোর মতো লাল হয়ে যেত!😅
—এসব খেতে আর যেন না দেখি,
নাহলে!😬
(মিম আপু ওনার হাতটা দেখিয়ে)
—হু।
(আমি)
—চল আমার সাথে!🤗
(মিম আপু আমার হাত ধরে)
এবার আমরা দুজন রাস্তার পাশের বেঞ্চ টাই বসলাম, কিছুক্ষণ নিরবতার পর মিম আপু বলল।😪
—রাফি তোর কি রঙ পছন্দ?🤨
(মিম আমার দিকে তাকিয়ে)
—নীল।
(আমি)
—তুই বিকেলে রেডি থাকিস আমরা দুজনে কিন্তু ঘুরতে যাবো!😇
(মিম একটু লজ্জা পেয়ে)
—আমি কেন আপনার সাথে ঘুরতে যাবো, হুম।
(আমি)
—যদি না যাস তাহলে,
তোর কুকর্মের কথা তোর আম্মুকে বলে দিবো!😍
(মিম আপু মুসকি হাসি দিয়ে)
—এ-ই না, আমি যাবো।
(আমি ভয় পেয়ে)
আমাকে ব্ল্যাকমেইল করা তাই-না দাঁড়াও বাবাজি সুযোগ মতো পাই না, তখন খেলা হব্বে!😅
একটুপর আমরা বাসায় চলে আসলাম।
বিকেলে রেডি হয়ে মিম আপুদের বাসার সামনে গিয়ে আপুকে কল দিতেই ওনি নেমে আসলেন। ওনাকে দেখে আমি তো অবাক!😳 এত সুন্দর মেয়ে তা-ও আমার সামনে দাঁড়িয়ে,🙈 আমার তো ভাবতেই হেব্বি লাগছে।😍 আসলে ওনি আজকে নীল শাড়ি পড়েছেন আর ওনার সাজ সবকিছু মিলেয়ে ওনাকে নীল পরি লাগছিল!😇
—ওই কি দেখস এমন করে।😌
(মিম আপু লজ্জা পেয়ে)
—পরি দেখি!😍
(আমি এখনো ওর রুপের মোহনায় ঢুবে আছি)
—সত্যি।😇
(মিম আপু লজ্জা মাখা মুখ নিয়ে আমার দিকে চেয়ে)
ওনার কথা শুনে আমার ভাবনার ছেদ ঘটল!😔
—নাহ্, মানে।🙈
(আমি লজ্জা পেয়ে)
—চল!
(মিম আপু আমার হাত ধরে)
আজকে ওনি আমার হাত ধরাতে আমার মনে কেমন যেন এক অদ্ভুত ফিলিংস হচ্ছে!😍 আমি পারছি না ওখানে বলতে যে, আমার হাতটা ছেড়ে দিতে। তবে ওনার হাত ধরা টাও আমার কাছে ভালো লাগছিল, গাই বলেনি!🙈
একটা রিক্সায় করে আমরা দুজন নদীর পাড়ে গেলাম, সারাবিকেল ওনার সাথে নদীর পাড়ে থাকলাম।🤗 তারপর একটা রেস্টুরেন্টে গিয়ে নাস্তা সেরে আমরা আবার রিক্সা করে বাসায় ফিরছিলাম, তবে আজকে ওনি আমার একটা হাত জড়িয়ে ধরে আমার কাধে মাথা রাখছিল।😍 যেটা আমার কাছে অন্যরকম অনুভূতির জন্ম দিচ্ছিলো, সারা রাস্তা ওনি এভাবেই আসলেন তবে বাসার কাছাকাছি আসতেই ওনি স্বাভাবিক হয়ে বসলেন।😌 রিক্সার ভাড়া মিটিয়ে আমরা দুজন যে যার বাসায় চলে যাচ্ছিলাম তখনি,,,
—রাফি শোন?😇
(মিম আপু লজ্জা পেয়ে)
—কি!🙄
(আমি দাঁড়িয়ে গেলাম)
—তোকে আমার অনেক পছন্দ, খুব ভালো লাগে তোকে, আর তোর সাথে দুষ্টুমি করতে। আই লাভ উ রাফি, আমি সত্যিই তোকে খুব ভালোবাসি!😍
(মিম আপু এক দমে বলে ফেললো)
যেই আমি কিছু বলতে যাবো তখনি ওনি বলে উঠলেন!
—এ-ই এখন কিছু বলবে না, উওরটা আমি কালকে শুনবো বুঝলে!😇
(মিম আপু এবলেই এক গাল লজ্জা নিয়ে দৌড়ে বাসায় চলে গেল)
#চলবে..............