#রাগী_ম্যাডাম 🍂
#Part_11
#Writer_Srabon
আম্মু এসে দরজা খুলে দিল।।
--- কিরে মুখ কালো করে আছিস কেন..? মন খারাপ নাকি?(আম্মু)
--- না আম্মু। (আমি)
--- তাহলে কিছু তো একটা হয়েছে।।
--- ভিতরে চলো বলতেছি।
--- হুম চল। আর তুই একবারে ফ্রেশ হয়ে নিচে আয়।
--- হুম
আমি সোজা উপরে চলে ফেলাম। এরপর ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলাম।
--- আম্মু কই তুমি..??(আমি)
--- --- হুম। বল কি হইছে..?(আম্মু)
--- আমি কাল থেকে আর ভার্সিটিতে যাবো না।
--- কেন..?
--- বাসায় বসেই পরব এই দুই মাস।
--- ওহ,, বুজলাম। আমার ছেলে সেই আগের মতোই লেখা পড়ায় মন দিতে চায়।।
--- হুম।।।
--- আচ্ছা ঠিক আছে। এবার দুপুরের খাবার খেয়ে নে।
--- হুম। দাও।
আমি খাবার টেবিলে বসে খেতে লাগলাম। আর আম্মু আমার পাশে বসে দেখতে লাগল।
তখনই আমি বললাম।
--- আম্মি রফিক স্যার আছে না??
--- কোন স্যার..??(আম্মু)
--- আরে ওই যে আমার ভার্সিটির, আগে কয়েকবার বাসায় এসেছিল আব্বুর সাথে।
--- ওহ,, হুম চিনছি। কিন্তু কেন.??
--- রফিক স্যার কাল থেকে রোজ বিকালে আসবে আমাকে পড়াতে।।
--- ও,, তাহলে তো ভালোই।
--- হুম।।
খাবার শেষ করে আমি আমার রুমে চলে এলাম।
একটু বসে থেকে আমার পড়ার টেবিল পরিষ্কার করলাম। অনেক দিন পড়া হয় না। তাই অনেক ময়লা জমে গেছে। সব কিছু শেষ করে যখন পড়তে বসব, তখনই আসল কথা মনে পরল।
আমার সব বই খাতা এখানে নেই।
[আপনাদেরকে একটা কথা বলা হয় নি। আমি আগে সিলেট থেকে পড়াশোনা করতাম। ওখানে আমার নামে নিজস্ব একটা ফ্লাটও আছে। কিন্তু একটা কারনে আমি সিলেট থেকে চলে আসি। সেটা পরে জানতে পারবেন।]
ওই বই গুলো না হলে আমি শিওর ডাব্বা খাবো।
আর এখন বছরের শেষ তাই বইগুলো কিনতেও পারব না। তাই আমাকে আবার ওই শহরে যেতে হবে। কিন্তু আব্বু,আম্মু কি যেতে দিবে..??
আমি আর কিছু না ভেবে নিচে চলে যাই।।
নিচে গিয়ে আম্মুকে জিজ্ঞেস করি,
--- আম্মু...?(আমি)
--- কি হয়েছে...??(আমি)
--- আমামে একটু সিলেট যেতে হবে।।
--- কিহ..?? না কখনই না।
--- আম্মু প্লিজ। আমাকে যেতেই হবে।
--- না, আমি যেতে দিব না।
--- আম্মু তুমি বুজতেছ না। ওখানে আমার সব বই খাতা রয়েছে। ওগুলো না হলে পড়ব কিভাবে??
--- আমি জানি না।।।
আম্মুকে অনেক বুঝিয়ে রাজি করালাম। আর আমি এখনই রেডি হয়ে রওনা দিলাম। কারন এখন রওনা দিলে রাতে গিয়ে পৌছাবো। আবার কালকে সকালের মধ্যেই চলে আসব।। আব্বুকে আমি বলি নাই যে সিলেট যাচ্ছি। বললে হয়তো যেতে দিত না।।
প্রায় ঘন্টা পরে সিলেট গিয়ে পৌছালম।
গাড়ি থেকে নেমেই সোজা বাসার দিকে হাটাশুরু করলাম। কারন রাত অনেক হয়েছে। আনুমানিক ৯ টা বাজে। বাসস্ট্যান্ড থেকে আমার বাসা ৫ মিনিটের রাস্তা। তাই আর রিক্সা না নিয়ে হেটে যেতে লাগলাম।
বাসার সামনে এসে চাবি দিয়ে দরজা খুললাম।
২ বছর আগেও বাসাটা যেমন ছিল। এখনও ঠিক তেমনই আছে। চারিদিকে সব কিছু ঠিকঠাক। কোন নোংরা নেই। দেখে মনে হচ্ছে যেনো এখানে মানুষ থাকে। আসলে মানুষ থাকে না। একজন কাজের লোক আছে। যে সপ্তাহে ২/৩ বার এসে সব কিছু পরিষ্কার করে দিয়ে যায়।
এ গুলো ভাবতে ভাবতে চিরচেনা আমার সেই রুমে চলে গেলাম। সব কিছু ঠিকঠাক।
আমি দেরি না করে সব কিছু গুছাতে লাগলাম।
কারন আর ১ ঘন্টা পরেই রওনা দিব। বেশি দেরি করা যাবে না।
সব কিছু গুছিয়ে যখন রুম থেকে বের হবো, তখনই চোখের সামনে আমার পুরনো ডাইরিটা চোখে পরল।
প্রায় দুই বছর এটা খুলে দেখা হয় না। আর কিছু লেখাও হয় না। তাই পড়ে দেখার খুব ইচ্ছে হলো।
আমি ডাইরিটা হাতে নিয়ে বিছানার উপরে বসে খুললাম।
প্রথম পাতায় আমার সম্পর্কে কিছু লেখা।
এরপর শুরু হয় আমার আর নীলার প্রেম কাহিনি।
আসুন আমি খুলে বলি।
নিজের ইচ্ছায় সিলেট এসেছিলাম ঘুরতে। কিন্তু সিলেট শহরটা আমার এতো ভালো লাগে যে আমি এখানে থাকব বলে ঠিক করি। এরপর আব্বু, আম্মুকে অনেক জোরাজুরি করে রাজি করালাম।
আব্বু টাকা দিয়ে একটা ফ্লাট বানিয়ে দেয় আমাকে।
আমিও খুব খুশি হয়েছিলাম।
সবেমাত্র ইন্টার ২য় বর্ষের ছাত্র। নতুন নতুন অনেক ফ্রেন্ড হয়ে যায় নতুন কলেজে গিয়ে। প্রথম ১ মাস ভালোই কাটল। তবে কলেজে আমাকে সবাই নিম্নমানের পরিবার থেকে আসা সাধারণ ছেলে জানে। তাই আমিও কাউকে কিছু বলি নাই। অনেক পিওর বন্ধুও পেয়ে গেছিলাম। যারা টাকা ছাড়া বন্ধুত্ব করে, তারাই হচ্ছে পিওর বন্ধু।
কোন এক বড় ভাই বলেছিল। প্রেম ভালোবাসার ভিতরে না যেতে। শুধু মন দিয়ে পড়াশোনা করতে।
আমিও হ্যা বলেছিলাম।
কিন্তু আমি একজনকে দেখে সেই সব কিছু ভুলে গিয়েছিলাম। চেয়েছিলাম তাকে নিজের করে পেতে। কিন্তু কথায় আছে না, টাকা ছাড়া কাউকে কেউ ভালোবাসে না। তবে নীলা আমাকে টাকা পয়সা ছাড়াই ভালোবেসেছিল। অবশ্য আমি পরে জানতে পেরেছিলাম এটা শুধু নাকি তার টাইম পাস ছিল। নীলা আমাকে অবাক করে দিয়ে সে নিজে এসে আমাকে একদিন প্রপোজ করেছিল। আমিও তাকে কিছু প্রশ্ন করেছিলাম। সে সব কিছু মেনে নিয়ে রাজি হয়েছিল। এই ভাবেই শুরু হয়েছিল আমাদের ভালোবাসাটার শুরু। কিন্তু সেটা দুই বছরের বেশি স্থায়ী হয় নি। এটা না হয় অন্য কোন দিন বলব।
এরপর ডাইরিটাকে তার নিজের জায়গায় রেখে বেরিয়ে গেলাম বাসা থেকে।
এরপর আর কোথাও দেরি না করে সোজা ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা দিলাম।
বাসায় আসতে আসতে ভোর হয়ে যায়।
আমি বাসায় গিয়ে কলিং বেল বাজালাম।
আব্বু এসে দরজা খুলে দিল। আমি অনেক অবাক হলাম। আব্বু এতো সকালে কিভাবে উঠল..?? কিছুটা ভয় পেলাম। কি জানি, যদি আবার বকাবকি করে🥺
--- কিরে কি ভাবতেছিস..??(আব্বু)
--- কিছু না আব্বু।
--- বাইরে দাড়িয়ে থাকবি?? নাকি ভিতরে আসবি।
--- হুম। চলো।
যাই হোক, ভালো হইছে। আব্বু কিছু বলে নাই।
আমি সোজা আমার রুমে চলে এলাম। সব কিছু রেখে নিচে চলে এলাম।
--- যাতায়াতে কোন অসুবিধা হয়েছে নাকি..??(আব্বু)
--- না আব্বু। (আমি)
--- যাবার আগে আমাকে একবার বলে যাবি না..??(আব্বু)
--- সরি, মনে ছিল না।৷ (আমি)
--- হুম।।। আর শোন, এখন থেকে মন দিয়ে পড়াশোনা কর।
--- ওকে।
আমি আর আব্বু বসে বসে গল্প করতেছিলাম। তখনই আম্মু এসে বলল।।
--- কি.?? সকাল সকাল দুই জনে কি আলোচনা করতেছ..??(আম্মু)
--- তেমন কিছু না আম্মু।।
--- শ্রাবন, তোকে কফি করে দিব..??(আম্মু)
--- না, আম্মু। আমি এখন একটু ঘুমাব। খুব ক্লান্ত
--- ওকে। তাহলে গিয়ে ঘুমা। আমি বরং তোর আব্বুকে চা করে দি। (আম্মু)
--- হুম।।।
এরপর আমি এসে সোজা বিছানায় ঘুমিয়ে গেলাম।
সারা রাত ঘুম হয় নি। তাই একটু ঘুমিয়ে নেই।
দুপুরে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে বই পড়তে বসলাম।
বিকালে বসে বসে রসায়ন এর একটা অধ্যায় পড়তেছিলাম। সালা কিছুতেই মাথায় ঢুকতেছে না।
তখনই কে জেনো আমাকে ডাক দিল। আমি পিছে ফিরে দেখি রফিক স্যার৷ আমি অনেক খুশি হলাম।
--- কিরে.?? কি পড়া হচ্ছে দেখি..?(স্যার)
--- স্যার কি বলব..? এই অধ্যায়টা কিছুতেই বুজতেছি না।
--- কই দেখি?? এদিকে দে।
--- এই নেন স্যার।।
স্যার অধ্যায়টা দেখে আমার মাথায় আস্তে করে একট গাট্টি(চর) দিয়ে বলল।
--- ২ দিন আগে এটা আমি ক্লাসে বুজিয়েছি। আর আপনি তো আমার ক্লাস করেনই না।
--- সরি স্যার
--- হুম।
এরপর স্যার আমাকে বুঝিয়ে দিল। কিছু সময় পরে স্যার চলেও গেল।।
সন্ধ্যা হয়ে গেছে। তাই আমি বাসা থেকে বের হয়ে একটু রাস্তায় বের হলাম। আজকে সারা দিন শুধু ঘরেই ছিলাম।
রাস্তায় এসে শাওনকে ফোন দিলাম।
দুজনে কিছু সময় আড্ডা দিয়ে আবার বাসায় চলে এলাম।।
বাসায় এসে রাতের খাবার খেয়ে আবার বই নিয়ে বসলাম। বাড়ির সবাই তো অনেক খুশি। কারন তাদের বাড়ির ছেলে সব সময় বই নিয়ে বসে থাকে। 😁😁
2 months later [দুই মাস পরে]
এইভাবে দেখতে দেখতে দুই মাস কেটে গেল। এই কয়েক দিন মন দিয়ে বই পড়েছি। এখন আশা করি পরিক্ষায় মোটামুটি ভালোই রেজাল্ট হবে।
কালকে পরিক্ষা। আমি শাওনকে ফোন দিলাম।
--- কি ভাই..?? তোর তো এখন আর কোন খোজই পাওয়া যায় না। (শাওন)
--- আরে ভাই,,, ব্যাস্ত ছিলাম।
--- হুম,,,
--- এ ভাই,, একটা কথা জানার ছিল।
--- কি বল..??(শাওন)
--- আমি ভার্সিটিতে যাই না। ম্যাম কিছু বলে নাই..?(আমি)
--- বলেছিল একদিন।
--- কি বলেছিল বল....(উত্তেজিত হয়ে)
--- তুই না আসার ১০ দিন পরে। ম্যাম বলে, এই শাওন দাড়াও। আমি দাড়িয়ে গেলাম। এরপর বলে, তোমার সাথের আরেকটা বান্দর কই..??
--- তুই কি বলিস..??(আমি)
--- আমি বলি যে, জানি না।(শাওন)
--- ধুর শালা।
--- কেন?? কি হয়েছে???
--- তুই বলতে পারতি যে, এক্সিডেন্ট করছে। তাহলে আমার জন্য একটু মায়া হতো😁😁
--- ওরে বাটপার।
--- হাহাহাহাহহা (আমি)
--- তবে...(শাওন)
--- তবে কি..???
--- ম্যাডাম রোজ ক্লাসে এসে কাকে জেনো খুজত..? হয়তো তোকে??(শাওন)
--- কি বলিস.?? তুই শিওর??
--- শিওর না,। তবে দেখছি ম্যাম ক্লাসের সব জায়গায় তাকিয়ে দেখে। দেখে মনে হয় কাউকে খুজে।
--- হতেও পারে।
--- কালকে তো এক্সাম।
--- হুম।
--- আমাকে কিন্তু দেখাস। আমি কিছু পড়ি নাই।
--- ওকে ভাই। রাখ এখন।
--- ওকে বায়।
দেখতে দেখতে আজকের দিনটাও কেটে গেল।
পরের দিন সকালে আমি রেডি হয়ে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। প্রায় দুই মাস পরে।
ভার্সিটিতে যেয়ে..........
Wait for next part......
#রাগী_ম্যাডাম 🍂
#Part_12
#Writer_Srabon
পরের দিন সকালে আমি রেডি হয়ে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। প্রায় দুই মাস পরে।
বাসা থেকে বের হয়ে শাওনকে ফোন দিলাম।
--- হুম, ভাই কই তুই..??(শাওন)
--- এইতো রাস্তায় বের হয়েছি এইমাত্র। তুই..?
--- আমিও। তাড়াতাড়ি আয়।
--- ওকে,, আর শোন..(আমি)
--- হুম, বল
--- বাইক নিয়ে আসব.??? নাকি হেটেই আসব।(আমি)
--- বাইক নিয়ে আয়। তুই শালা কিছু বুঝিস না। এতো দিন পরে ভার্সিটিতে যাচ্ছিস। একটু স্টাইল দিবি না😀
--- হাহাহাহাহ। ফোন রাখ তুই।
শাওনকে বাইকে পিক করে নিয়ে ভার্সিটির ভিতরে চলে গেলাম সোজা।
বাইক পার্ক করে যেই মাতে আমি আর শাওন পিছে ফিরে তাকাই তখনই দেখি বদমাশ এর দল সব গুলো হাজির। মানে আমার ক্লাসমেটরা।
--- এ হারামি কয় বছর পরে..??
--- আমি তো ভাবছিলাম তুই মনে হয় পরিক্ষা দিবি না।।।
--- আরে তুই চুপ কর। আমি তো ভাবছিলাম ওই মারা গেছে।
--- হাহাহাহাহাহহা (সবাই এক সাথে উঠলাম)
[আমরা ছিলাম রাস্তার মাজখানে। মানে মেইন রাস্তা ভার্সিটির। এখান দিয়ে হেটে ভিতরে যেতে হয়। আমরা সকলে রাস্তার মাঝখানে বসে ফাজলামি করতেছিলাম। তখনই রাইসা ম্যাডাম এলো]
--- এই ছাত্ররা এখানে এত শব্দ কিসের..?? আর রাস্তায় এভাবে দাঁড়িয়ে আছো কেন তোমরা..??(ম্যাম)
--- সরি ম্যাম।। (সবাই)
--- ঠিক আছে
এতক্ষণ ম্যাম আমাকে দেখে নাই। আমাকে দেখেই ম্যাম খুব অবাক হয়েছে। সেটা তার চোখমুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। আমার দিকে অপলকভাবে কিছুক্ষণ তাকিয়ে ছিল। পরিবেশ ঠিক রাখতে আমি হালকা একটা কাশি দিলাম।🙃😁 হটাৎ করেই যেন ম্যাম বাস্তব জগতে ফিরে এলো। ম্যাডাম আর কিছু না বলে চলে গেল। হয়ত লাজ্জা পেয়েছে। আমি আর কিছুই ভাবতে পারতেছি না। তার মানে কি ম্যামও😀💓😍
--- কি মাম্মা কি ভাবো..???
--- কি ভাবব..??(আমি)
--- এ ভাই ম্যাম দেখি তোর দিকে সিনেমার নাইয়কাদের মতো করে চেয়ে ছিল।।
--- তাকাবে না। আমিও তো তার হিরো। (আমি)
--- হাহাহাহাহাহা
আরো কিছু সময় গল্প করে সবাই এক্সাম হলের ভিতরে গেলাম।
পরিক্ষা শুরু হয়ে গেলো।
প্রশ্ন মোটামুটি কমন হয়েছে। তাই আর কিছু না ভেবে এক ভাবে লিখে দিলাম। পুরো খেলে দিলাম🤣
পরিক্ষা হলের বাইরে এসে...
--- ধুর, শালার আজাদ তোর কোন দিন ভালো হবে না।🥺(শাওন)
--- কেন?? কি হয়েছে? আজাদ স্যার আবার কি করল তোর..?(আমি)
--- আমি কোথায় ভেবেছিলাম তোর পাশে বসব। আর এই স্যার আমাকে সোজা আরেক রুমে পাঠিয়ে দিল।।(শাওন)
--- হাহাহাহাহা।
--- আরো কি করেছে জানিস..??
--- কি করেছে..???
--- আমার খাতা নিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিয়েছে।
--- হাহাহাহাহাহা। চল বাসায় যাই।
--- হুম চল।।।
আমি আর শাওন বাসায় চলে এলাম।
--- আমার আব্বুর এক্সাম কেমন হয়েছে..??(আম্মু)
--- খুব ভালো আমার আম্মু।
--- আমি জানি তো। ভালো হবেই।
--- হুম।
--- তুই উপরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নে। আমি তোর জন্য খাবার রেডি করতেছি।
--- হুম।।।
এইভাবে দেখতে দেখতে সব গুলো পরিক্ষা হয়ে গেল।
শেষ পরিক্ষার দিনে আমি আর শাওন রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি। (পরিক্ষার শেষে)
কারন ম্যাডামকে অগ্রিম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাবো। কালকে ম্যাডামের জন্মদিন।
--- শ্রাবন আমি বাসায় যাচ্ছি। (শাওন)
--- কেন..?(অবাক হয়ে)
--- আম্মু ফোন দিয়ে বাসায় যেতে বলছে। আর লায়লা-মজনুর মধ্যে আমি থেকে কি করব..?(শাওন)
--- হাহাহা। ওকে যা তাহলে।
--- হুম।
শাওন চলে গেলে। আমি বাইকের উপরে বসে মনে মনে গান গাইতেছি।
রাস্তাটা এখন পুরাই ফাকা। দুপুর টাইমে এমনিতেই সব রাস্তা ফাকা থাকে।
কালকে রাইসা ম্যামকে আবার প্রপোজ করব। যদি সে গ্রহণ করে তাহলে তো ভালো। আর না করলে আরো ভালো। তাকে আর ডিস্টার্ব করব না। আর যাই হোক ভালোবাসা জোর করে হয় না।
এই সব ভাবতেছিলাম তখনই দেখি ম্যাম রিকশা করে বাসার দিকে যাচ্ছে।
আমি বাইক থেকে নেমেই রিক্সার সামনে গেলাম।
রিকশাওয়ালা মামা দাঁড়িয়ে গেল।
ম্যাম আমাকে দেখেই বলে উঠল।।
--- আরে শ্রাবন যে.? আমি তোমাকেই খুজতেছিলাম এতোদিন ধরে। কিন্তু তোমার তো কোন খোজই পাওয়া যায় না। (ম্যাম)
--- জী, ম্যাম আপনি আমাকে খুজতেছিলেন..??(অবাক হয়ে)
--- হুম।। তার আগে বলো তুমি আমাকে কি জন্য দার করালে???(ম্যাম)
--- শুভ জন্মদিন ম্যাম।
--- কিন্তু আমার জন্মদিন তো কালকে।??
--- হুম জানি। আপনি তো জানেন আমি একটু ফার্স্ট। তাই আগে থেকেই বলে দিলাম।
--- হাহাহাহা, অনেক ফাজিল হয়েছ। (ম্যাম)
--- হুম। ম্যাম এবার আপনি বলেন কি বলবেন..??
ম্যাডাম কিছু না বলে তার ব্যাগ থেকে একটা কার্ড বের করে আমার হাতে দিল।
--- ম্যাম এইটা কি..?? আপনার বার্থডে ইনভিটেশন কার্ড নাকি..??(আমি হাতে নিয়ে)
--- না।
--- তাহলে কিসের কার্ড এটা..??
--- এটা আমার বিয়ের কার্ড। (ম্যাম)
এই কথাটা শোনার পরেই আমার মনে হতে লাগল পুরো পৃথিবীটা মনে হয় থমকে গেছে। চারিদিকের কোন শব্দই আমি শুনতে পাচ্ছি না। আমার মনে হচ্ছে কেউ আমার বুকের বাম পাশে জোরে জোরে আঘাত করতেছে। আবার পুরনো সেই অতীতের পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে। না আমি আর মেনে নিতে পারব না। আর এক মুহুর্তও এখানে থাকা যাবে না। এই সকল মায়া ত্যাগ করে দূরে চলে যেতে হবে।
ম্যামকে কিছু বুজতে দেওয়া যাবে না যে আমি অনেক কষ্ট পেয়েছি। তাই মুখে একটা হাসি নিয়ে বললাম।
--- congratulations ম্যাম। (আমি)
--- হুম। অবশ্যই আসবে কিন্তু বিয়েতে৷(ম্যাম)
--- চেষ্টা করব। আমি এখন আসি।
ম্যাম কিছু বলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আমি কোন সুযোগ না দিয়েই বাইকে করে সোজা বাসায় চলে আসি।
বাসায় এসে আমার কিছু জামা-কাপর একটা ব্যাগে ভরে বাসার বাইরে চলে এলাম।
বাইরে আসার সময় আম্মু,আপু অনেক জিজ্ঞেস করেছে কি হয়েছে। এইসব গুছিয়ে কোথায় যাচ্ছি..?
আমি কোন উত্তর না দিয়ে বাইক নিয়ে রওনা দেই সিলেট এর উদ্দেশ্যে। আজকে খুব জোরে বাইক চালিয়েছি। তাই আসতে খুব একটা সমস্যা হয় নি। আর যেহেতু আমার বাইকের সব কাগজ পত্র ঠিক আছে, তাই রাস্তায় পুলিশ কোন ঝামেলা করে নাই।
বাসায় ঢোকার আগে বাইরে থেকে খাবার নিয়ে যাই। বাসায় ঢুকে ফোনটা হাতে নিলাম। অনেক গুলো কল এসেছে। ফোন সাইলেন্ট ছিল। তাই খেয়াল করি নাই। আর খেয়াল করলেও ধরতাম না। ফোন সুইচ অফ করে রেখে দিলাম।
খাবার খেয়ে দুইটা ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে গেলাম। (আগে থেকেই আনা ছিল।)
#অপরদিকে
বাসার সকলে অস্থির হয়ে পরেছে। শ্রাবনের আম্মু তো কিছুই বুজতেছে না। আজ হটাৎ করে কি এমন হলো যে শ্রাবন কাউকে কিছু না বলে ব্যাগ পত্র ঘুছিয়ে নিয়ে বাসার বাইরে চলে যায়। শ্রাবনের বোন তার আম্মুকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করতেছে। কিন্তু কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। আর শ্রাবনের আব্বু বুজতে পারতেছে যে শ্রাবন হয়তো কিছু একটা নিয়ে খুব কষ্ট পেয়েছে যার কারনে সে সিলেট চলে গেছে হয়তো। কিন্তু লাভ নেই। ওই বাসার নাম্বার কেউ জানে না শ্রাবন ছাড়া।
শ্রাবনের আব্বু অনেক চিন্তিত হয়ে শাওনকে ফোন করে। কারন তিনি জানেন কিছু হলে শাওনই একমাত্র বলতে পারবে কি হয়েছে।।
--- হ্যালো স্যার.. আসসালামু আলাইকুম (শাওন)
--- সালামের জবাব দিয়ে, শাওন তুমি কোথায় এখন..??(আব্বু)
--- স্যার, আমি এখন তো বাসায়। কেন স্যার..?
--- না মানে তুমি কি জানো শ্রাবন কোথায়.???
--- কেন স্যার.?? ও বাসায় নেই.??
--- না, আজকে বিকালে বাসায় এসে.....(সব খুলে বলল)
--- কিহ.?? আমাকে তো কিছু বলে নাই।
--- তুমি কি কিছু জানো, যে ও কেন এমন করল.??
--- না, স্যার তবে একটু একটু আন্দাজ করতে পেরেছি। (শাওন)
--- কি.? আমাকে খুলে বলো।।
--- স্যার আপনি চিন্তা কইরেন না। আমি শিওর হয়ে সব কিছু বলতেছি আপনাকে।
--- আচ্ছা।
এরপর শ্রাবনের আব্বু কিছুটা নিশ্চিন্ত হলেন।
এবং শাওন বুজতে পারছে যে ম্যাডামের সাথে কিছু হয়েছে যার কারনে এই রকম ভাবে চলে গেছে শ্রাবন।
মোবাইলে তাকিয়ে দেখে রাত ৮ টা বাজে। তাই শাওন আর দেরি না করে অনেকটা অস্থির হয়ে ম্যাডামের বাসার দিকে রওনা দেয়।
এখন যা বলার ম্যাডামই সব কিছু বলতে পারবে। শাওন মনে মনে ভাবতেছে।।
শাওন ম্যাডামের বাসায় গিয়ে........
Wait for next part.........
[যারা বলেন যে গল্প বড় করে লিখে তারপরে পোস্ট করুন। তাদের উদ্দেশ্যে একটা কথা, আমি গল্প বড় করেই লেখার চেষ্টা করি। তবে পারসোনাল কিছু কাজের জন্য সম্ভব হয়ে উঠে না। আর আমি তো রোজই এক পর্ব করে দেই। যদি এর থেকে বড় চান তাহলে একদিন পর পর গল্প দিব বড় করে লিখে। এখন আপনারাই কমেন্ট করে বলুন রোজ গল্প চান নাকি একদিন পরপর??
ধন্যবাদ ]
Nc
ReplyDelete